শরতের বৃষ্টি পর্ব-৪১

0
1890

#শরতের_বৃষ্টি
#লেখনীতে_তাশরিফা_খান
পর্ব–৪১

সকালের আবহাওয়া উপভোগ করার মজাই আলাদা। পাখিদের কলকাকলী আর মধুর ডাক যেনো মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করে। হরেক রকম পাখি দেখা যায়। মাঝে মাঝে ঠান্ডা শীতল বাতাস। আঁখির সকালের আবহাওয়া খুবেই ভালো লাগে। যদিও এখন আগের মতো করে আর সকাল উপভোগ করা হয়না। নিজের বাড়িতে থাকতে মাঝে মাঝে ফজরের পর সকালে বেলকনিতে কফি নিয়ে মিষ্টি সকাল উপভোগ করতো তারপর নিজের নাচ প্রাক্টিজ করতো। কিন্তু এখন আর কফি হাতে সকাল উপভোগ করতে পারেনা। নিজের নাচ প্রাক্টিজ করতে পারেনা। সকাল হতেই দৌড়ে যেতে হয় রান্না ঘরে। যদিও ও না গেলে ওর শ্বাশুড়ি মুখে কিছু বলে না। তিনি খুব ভালো মানুষ। কিন্তু মনে মনে খারাপ অবশ্যই ভাববে। জগৎ ভরেই এই নিয়ম বাড়ির মেয়েরা কাজ না করলে কিছুনা কিন্তু বাড়ির বউয়েরা না করলেই কানাঘুষো। তাদের চোখে পরে ব্যাপারটা। এজন্য আঁখি আগে থেকেই সাবধান থাকে যেনো কিছু কথা না হয়। ওর শখের নাচটাও এখন হয়না মাঝে মাঝে মোবাইলে গান ছেড়ে বিকাল বেলা একটু নাচে। আজ আঁখির মনটা বেশ খারাপ। অনেক দিন সকালে ঘুম হয়না আজ খুব ঘুম আসছে ঘুমালে হয়তো ১০টার আগে উঠতে পারবেনা। একেতো বাসার লোকজন কি বলবে তার উপর কলেজ আছে। আজ নিজের বাসায় থাকলে ওর এত কিছু ভাবতেই হতো না। দরজা আটকে ঘুমিয়ে পড়তো কলেজে সময় হলে ওর মা ডেকে নিতো। কেনো যে মেয়েদের পরের বাড়ি যেতে হয় আঁখি ভেবেই পায়না। ও যদি পার তো এই নিয়ম বদলে দিতো। আসলেই এটা বদলানো উচিত। মেয়েদের ভয় পেয়ে চলা উচিত না। আঁখি বারবার ভাবে কে কি ভাবলো তা দিয়ে ওর কি? এসব ভেবে চলবে না, স্বাধীন মতো চলবে কিন্তু এই মত বেশিক্ষণ থাকে না। শ্বশুর বাড়ি মেয়েরা স্বাধীন হলেও ভিতর থেকে সারাজনমেই পরাধীন। বাসার মন মন খুলে কথা বলা যায় না। নিজের মন মতো চলা যায় না। সব কিছুতেই ভয় শ্বাশুড়ি কি ভাববে? মাকে যত সহজে কথা বলা যায় শ্বাশুড়িকে বলতে গেলে ১০বার ভাবতে হয়। আজ যদি আঁখি ছেলে হতো কত ভালো হতো! এখন আখির এমন আফসোস হয়। আঁখি দীর্ঘশ্বাস ফেলে চুপ করে রেলিং ধরে দাড়িয়ে রইলো।

সকাল ৬.৫০। ঘড়িতে টিট টিট করে তুমুল শব্দে এর্লাম বেঁজে উঠলো। আঁখির ধ্যান ভাঙলো। বেলকনি থেকে তাড়াতাড়ি রুমে গেলো। এর্লাম টা বন্ধ করে সাজ্জাদের দিকে তাকালো। সাজ্জাদ এলোমেলো ভাবে শুয়ে আছে, চুলগুলো ওর কপালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। খুবেই সুন্দর লাগছে সাজ্জাদ কে। আঁখি মলিন হেসে ভাবলো ওর ভাগ্যটা অতটাও খারাপ না। কত সুন্দর একটা জামাই পেয়েছে। বেশির ভাগ মেয়েদের ক্রাশ। ওদের মাঝে সম্পর্ক ঠিক না থাকলে কি? লোকে তো আর এসব জানে না। সবাই ভাবে কত সুখি ও। কেউতো জানেনা এক বিছানায় শুয়েও কত দুরত্ব ওদের। আঁখি কথাটা ভেবেই জোরে নিঃশ্বাস ছেড়ে চুলগুলো হাত খোঁপা করতে ব্যস্ত হয়ে পরলো। পরক্ষনেই মাথায় ওড়না দিয়ে তড়িঘড়ি করে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। ড্রইং রুম ফাঁকা কেউ নেই। আঁখি রান্নাঘরে চলে গেলো। সকাল ৭টা বাজেই সকালের নাস্তা তৈরি করতে লেগে। যাতে ৮টার পরেই সব শেষ হয়। যদিও আঁখি একা করে না ওর শ্বাশুড়িও আসে। তবে আজ এখনও আসেন নি। আঁখি আলু, পেঁয়াজ কেটে এক চুলাতে আলু ভাজি বসিয়ে দিলো। অন্য চুলেতে আটা সেদ্ধ করার জন্য পানি বসিয়ে পরোটার জন্য আটার খামির বানাতে লাগলো। ওকে রুটি, আলু ভাজি, ডিম ভাজি, পরোটা করতে হয় প্রতিদিন। একেজন একেকটা খায় তাই সব গুলোই করতে হয়। যদিও রুটি বেলতে হয়না রুটি মেকার আছে। আঁখি আটা মাখাতে ছিলো এর মাঝেই মিসেস শাহনাজ রান্না ঘরে প্রবেশ করলেন। আঁখি কে দেখে মুচকি হেসে বললেন।

“আজ এত তাড়াতাড়ি উঠে গেছো? এত তাড়াতাড়ি করার কি দরকার? আরও পরে করলেও তো হতো!”

কথাটা বলতে বলতে তিনি ইলেক্টিক ওয়াটার হিটারে চা বানানোর জন্য পানি গরম করতে দিলেন। আঁখি জিভে কামর দিলো। চা বসানোর কথা ওর মনেই ছিলো না। আশরাফ খানের জন্য চা বসাতে হতো এখন। তিনি প্রতিদিন সকালে চা খান। আঁখি মুচকি হেসে বললো।

“চা বসাতে ভুলে গিয়েছিলাম। তাছাড়া বাবাকে ড্রইংরুমে দেখিনি তাই বসানো হয়নি। দেখলে আবার মনে হতো!”

মিসেস শাহনাজ আরিবার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন। চায়ের কাপ পরিস্কার করতে করতে বললেন।

“আরে সমস্যা নাই এটা আমি করতে পারবো। আগে তো সব একা হাতে সামলাতে হতো, এখন তো আমার সৌভাগ্য তুমি আছো হেল্প করার জন্য। ছেলেটাকে এত বলতাম বিয়ে করতে শুনতোই না। তাহলে আমার অনেক আগেই কথা বলার জন্য রান্না ঘরে কাউকে পেতাম। আসলে আগে একা একা বোর লাগতো। মাঝে মাঝে তো বিরক্ত হয়ে যেতাম। ইচ্ছা করতো সব ছেড়ে দূরে কোথাও চলে যাই। কিন্তু বললেই কি চলে যাওয়া যায়? আদর্শ মেয়েরা সংসার ছেড়ে কোথাও যেতে পারে না। বিয়ের পর সংসারেই ওদের সব!”

হাসি মাখা মুখে কথাগুলো বলে নিজের কাজ করতে লাগলেন মিসেস শাহনাজ৷ আঁখির হঠাৎ করেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো ও কিছুই বললো না নিঃশ্চুপ হয়ে রইলো। হুট করেই ওর মায়ের কথা মনে পড়লো। ওর মাও তো একা হাতে সব সামলাতো। বাসার সব কাজ একা একা করতেন। ও একটু কথা বলতেও যেতো না। তিনিও তো বিরক্ত হতেন কিন্তু ও তো কখনও ওর মাকে হেল্প করতে যায়নি। আজ খুব আফসোস হচ্ছে আঁখির। আগে যদি বুঝতো তবে ওর মাকে অবশ্যই সাহায্য করতো। কিন্তু সময় থাকতে কোনো মেয়েই এটা বুঝতে পারে না। যখন বুঝে তখন অনেকটা দেরি হয়ে যায়। আঁখি এসব ভাবনা ছেড়ে তাড়াতাড়ি কাজে হাত লাগালো।

—————————

নাস্তা রেডি করে আঁখি গোসল করতে গেলো। গোসল করে খেয়ে তারপর কলেজে যাবে। আঁখি ওয়াশরুম থেকে বের হতেই দেখলো সাজ্জাদ এখনও ঘুমাচ্ছে। সাজ্জাদ প্রতিদিনেই আঁখির পরে ঘুম থেকে উঠে। তবে এতক্ষণে প্রতিদিন উঠে গোসল করতে যায়। তবে আজ অফ ডে বলে এখনও ঘুমাচ্ছে। আঁখির মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি এলো। ও কোমরে হাত দিয়ে নিজে নিজেই বললো। “আমি সকাল থেকে কাজ করে শেষ আর উনি মহা সুখে ঘুমাচ্ছে তাইনা? এ তো হতে দেওয়া যাবে না। কিছুতেই না।” আঁখি ঠোঁট বাকিয়ে হেসে ওয়াশরুম থেকে মগে করে অল্প পানি নিয়ে আসলো। ওগুলো সাজ্জাদের চোখের উপর মারতেই সাজ্জাদ লাফিয়ে উঠলো। আঁখি ওকে উঠতে দেখে উচ্চ স্বরে হেসে উঠলো। সাজ্জাদের খুব মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। ওর এত সুন্দর ঘুমটা ভেঙে দিলো৷ সাজ্জাদ চোখ ডলতে ডলতে সামনে তাকাতেই ওর রাগ ৫০% উধাও হয়ে গেলো। আঁখি মন খুলে হাসছে। হাসিতে যেনো সকালের সব সৌন্দর্য জড়ো হয়েছে। ভেজা চুল থেকে টপ টপ করে পানি ঝরছে। ওকে যেনো শরতের বৃষ্টিতে ভেজা রূপসী কন্যার মতো লাগছে। সাজ্জাদ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ওকে এভাবে তাকাতে দেখে আঁখির হাসি থেমে গেলো। সাথে একটু লজ্জাও পেলো। আমতা আমতা করে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে চুল মুছতে লাগলো। সাজ্জাদ ওকে যেতে দেখে নিজেও বোকা হয়ে গেলো। এদিক ওদিক তাকিয়ে মাথা চুলকে ভাবলো আঁখি ওকে তাকাতে দেখে আবার কিছু ভাবলো না তো? সাজ্জাদ হালকা কেশে বিছানা থেকে উঠে পড়লো। কোমড়ে হাত দিয়ে আঁখির পিছনে দাড়িয়ে ভ্রু কুচকে বললো।

“এই! তুমি আমার চোখে এভাবে পানি মারলে কেনো? কি দোষ পেয়েছিলে হুম? সবসময় শুধু বলতে থাকো আমার দোষ! আমি নাকি তোমাকে আগে খোঁচা মারি। তো আজ কে খোঁচা মারছে বলো?”

সাজ্জাদের কথায় আঁখি আহাম্মক হয়ে গেলো। হা করে আয়নার মধ্যে সাজ্জাদের দিকে তাকিয়ে রইলো। ও নিজের কথায় নিজেই ফেসে গেলো। সবসময় তো এটাই বলে আসছে সাজ্জাদ ওর সাথে আগে ঝগড়ায় লাগে তারপর ও ঝগড়া করে। এখন কি হবে? যে করেই হোক ওকে ব্যাপারটা ঘুরাতে হবে হবে নাহয় সাজ্জাদ ওকে মাছ ভাজা করে দিবে।আঁখি সাজ্জাদের দিকে ঘুরে আমতা আমতা করে বললো।

“আমি কবে বলছি আপনি কেঁচো?”

সাজ্জাদ আঁখির কথার মানে বুঝতে পারলো না। অবাক হয়ে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বললো।

“What? What do you means?”

“আই মীন ইউ আর এ কেঁচো!”

সাজ্জাদ সত্যি সত্যি বোকা হয়ে গেলো। আমতা আমতা করে আঁখির দিকে তাকালো। সাজ্জাদ বুঝতে পারেনি আঁখি ওকে ডাইরেক্টলি কেঁচো বলবে? কিন্তু কেনো বলছে? আঁখি সাজ্জাদের মুখ দেখে ঠোঁট চেপে হাসছে। সাজ্জাদ আঁখি কে হাসতে দেখে এদিক ওদিক তাকিয়ে হালকা কেশে ধমক দিয়ে বললো।

“এই চুপ! তুমি আমায় কেঁচো বললে কেনো?”

আঁখি মুখ ধরে হালকা হেসে বললো।

“আপনি নিজেই তো বললেন আমি বলছি আপনি কেঁচোর মতো আমায় খোঁচান!”

কথাটা বলেই আঁখি মাথায় ওড়না দিয়ে হাসতে হাসতে রুম থেকে বেড়িয়ে যেতে লাগলো। সাজ্জাদ পিছন থেকে জোরে জোরে বললো।

“এই এই কোথায় যাও! এটা চিটিং! মোটেও আমি কেঁচোর কথা উল্লেখ করিনি। মিথ্যুক মেয়ে!”

আঁখি ওর কথা শুনতে ওখানে দাড়িয়ে নেই হাসতে হাসতে ড্রইংরুমে খেতে চলে গেছে। খাওয়া শেষ করে ওকে আবার কলেজে যেতে হবে।

—————————–

সাজ্জাদ গোসল শেষ করে বেলকনিতে দাড়িয়েছে। আজ অফিস নেই বন্ধুদের সাথে গেটটুগেদার পার্টি আছে। ওখানেই যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে একটু বেলকনিতে আসলো। প্রতিদিন অফিসেস জন্য তাড়া থাকে তাই বেলকনিতে দাড়াতে পারেনা। ড্রেস শুকাতে দিয়েই তাড়াতাড়ি অফিসে চলে যায় এখান থেকে। সাজ্জাদ নিচে তাকাতেই ওর মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। আঁখি নিচে দাড়িয়ে হেসে হেসে নিরবের সাথে কথা বলছে। দুজনের মুখেই হাসি। দুজনের হাসি দেখে সাজ্জাদের মেজাজ যেনো তরতর করে রেগে আগুন হয়ে যাচ্ছে। ওই নিরবের সাথে এত কি কথা আঁখির? কি সুন্দর হেসে হেসে কথা বলছে আর ওর বেলাতেই ঝগড়া? সাজ্জাদ রেগে রেলিংয়ে ঘুষি দিয়ে রুমে চলে আসলো। বাইকের চাবিটা হাতে নিয়ে হনহন করে বাসা থেকে বেড়িয়ে গেলো।

নিরব আঁখি কে ওর পড়ার কথা জিজ্ঞাসা করতে ছিলো। আঁখি সবে মাত্র কথার উওর দিতে নিচ্ছিলো তার আগেই সাজ্জাদ ওদের দুজনের মাঝে বাইক নিয়ে থামালো। দুজনেই চমকে ভয় পেয়ে দু পা পিছিয়ে গেলো। আঁখি সামনে তাকিয়ে সাজ্জাদকে দেখে রেগে গেলো। বুকে থুতু দিয়ে সাজ্জাদের দিকে এগিয়ে এসে বললো।

“এই আপনার কোনো কমনসেন্স নাই? এভাবে আমাদের মাঝে বাইক থামালেন কেনো? একটু এদিক সেদিক হলে তো এতক্ষণে হসপিটালে এ্যাডমিট নিতে হতো।”

সাজ্জাদ ওর সিল্কি চুলগুলো হাত দিয়ে পিছনে ঠেলে ঠোঁট প্রসারিত করে নিরবের দিকে তাকালো। ওর পকেট থেকে দুটো সেন্টারফ্রুট বের করে একটা ছিড়ে নিজে মুখে দিয়ে চিবাতে লাগলো। অপরটা নিরবের দিকে এগিয়ে দিতে নিরব খাবে না বললো। সাজ্জাদ ওটাও ছিঁড়ে মুখে দিয়ে চিবাতে চিবাতে বললো।

“এখানো কোনো কাজ আছে আপনার? কাজ না থাকলে আসতে পারেন। স্বামী স্ত্রী পারসোনাল কথা বলবো। এর মাঝে আপনার থাকাটা বেমানান!”

কথাটা শুনে নিরব অপমানিত বোধ করলো। আঁখি সাজ্জাদের কথার মানে খুঁজে পেলো না। নিরবের ভিতর থেকে একটু খারাপও লাগলো। আজ আঁখি ওর না বলে চলে যেতে হচ্ছে। নিরব ওদের দুজনের দিকে তাকিয়ে জোর পূর্বক হেসে চলে গেলো। অগত্যা সাজ্জাদ রেগে আঁখির দিকে তাকালো। আঁখি অবাক চোখে সাজ্জাদের দিকে তাকালো। রাগলেও আজ সাজ্জাদকে খুবেই সুন্দর লাগছে। সাজ্জাদ সাদা কালারের একটা গেঞ্জি পড়ে উপরে জিন্সের কাপরের জ্যাকেট পড়েছে। বরাবর ওর পোশাক এমনেই থাকে থাকে। অফিসে প্রতিদিন একটু ভিন্ন লুকে যায়। আজ একটু অন্য লুক! সাজ্জাদ হালকা আঁখির দিকে ঝুকে দাঁতে দাঁত চেঁপে বললো।

“আমি অতটাও খারাপ বাইক চালাই না। তোমার না কলেজ আছে? তাহলে এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি করছো? আমি কলেজের দিকেই যাচ্ছি তোমার ড্রপ করে দিবো। উঠো!”

আঁখি সাজ্জাদের বিষয়টা বুঝতে পারে ঠোঁট চেঁপে হাসলো। প্রতিদিন জোর করে বাইকে উঠতে হয় আর আজ ওকে দিয়ে আসতে চাইছে। আঁখি হাসি লুকিয়ে বললো।

“দাড়িয়ে দাড়িয়ে মশা মারছি আপনি মারবেন? আমি যাবো না, আপনি চলে যান! আমি একাই আসতে পারবো।”

আঁখির কথাটা সাজ্জাদের ঠিক হজম হলো না। ওর কথার কথার অবাধ্য হওয়া ও মোটেই পছন্দ করে না। আঁখির দিকে তাকিয়ে রাগে চেয়াল শক্ত করে বললো।

“তোমার উঠার জন্য অনুরোধ করিনি। আদেশ করেছি, চুপচাপ উঠে বসো!”

আঁখি বাইকে উঠতে উঠতে ঠোঁট চেঁপে হেসে বললো।

“কোথা থেকে যেনো পোড়া পোড়া গন্ধ পাচ্ছি। আপনি পাচ্ছেন?”

কথাটা বলে আঁখি বাইকের আয়নায় তাকাতে দেখলো সাজ্জাদ রেগে আয়নার মাঝেই ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আঁখি হালকা কেশে চুপচাপ হয়ে বসলো। সাজ্জাদ গেঞ্জিতে ঝুলিয়ে রাখা কালো চশমাটা পড়ে বাইক স্টার্ট দিলো। নিরব দূর থেকে ওদের দেখে চোখের কোনে জমিয়ে রাখা জলটা মুছে দীর্ঘশ্বাস ফেললো। এখন ওর কাছে জল আর দীর্ঘশ্বাস ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই।

ইনশাআল্লাহ চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here