#শুভ্র_নীলের_প্রেমপ্রহর
লেখক- এ রহমান
পর্ব ৩
‘রাতের শহর’ কথাটা বইতেই পড়েছে ঈশা। এসব সাহিত্যিক কথা বার্তা ঠিক কতো খানি সত্য সেটা সম্পর্কে সিকি খানিও ধারনা নেই তার। রক্ষণশীল পরিবারে সন্ধ্যার আগেই মেয়েদের বাড়িতে ফেরা কঠিন নিয়মের মধ্যেই পড়ে। সব মেনে নেয়া যায় কিন্তু সন্ধ্যার পরে মেয়েদের বাইরে থাকাটা যেন ঘোরতর অপরাধ। এটা কোন ভাবেই মাফ করা যায়না। তাই রাতে শহর দেখার ভাগ্যটা এতো বছরেও কখনও হয়নি ঈশার। দোতলার বারান্দায় বসে আলো আধারের খেলা দেখছে সে। রাস্তার হলদেটে নিয়ন বাতির আলোয় সারা শহর এক মহনীয়ও বর্ণ ধারন করেছে। দোতলা থেকে খুব একটা বেশী দূর পর্যন্ত দেখা না গেলেও যা দেখা যায় তাতেই ঈশা বেশ সন্তুষ্ট। কারন এটাই দেখার ভাগ্য হয় না তার। এখন নেহাত পড়ালেখা নেই তাই এতো সময়। নাহলে তার নিস্তার কই। মাথাটা আর একটু গ্রিলের দিকে বাড়িয়ে নিচের দিকে তাকাতেই দেখল এক প্রেমিক যুগলের রিকশা ভ্রমন। দেখেই বোঝা যাচ্ছে মেয়েটা সাদা জামদানি শাড়ি পরেছে আর ছেলেটা নীল পাঞ্জাবী। তাদের এই শুভ্র নীলের প্রেমপ্রহর হলদেটে নিয়ন আলোয় সম্পূর্ণ বিপরীত বর্ণ ধারন করেছে। যার তুলনা কোনভাবেই করা সম্ভব না। সাদা শাড়ীটা ঈষৎ কালচে হলুদ লাগছে। আর নীল পাঞ্জাবী এক গাড় কালচে রঙ ধরেছে। সামনের শপিংমলের বিলবোর্ডের ছবির মেয়েটা মাঝে মাঝে উজ্জ্বল শুভ্র আলোয় হেসে উঠছে। সম্ভবত কোন ফেয়ারনেস ক্রিমের বিজ্ঞাপন হবে। গালে হাত দিয়ে সেদিকে কিছুক্ষন ঘোর লাগা চোখে তাকিয়ে থাকলো। রিকশাটা পার হয়ে যেতেই ঘোর কেটে গেলো তার। স্বাভাবিক জীবনের অভ্যাসেই ডাইরি আর কলমটা হাতে তুলে নিলো। কিছুক্ষন আগেই দেখা দৃশ্যের পটটাতে নিজেকে আর পাশে তার বিশেষ মানুষকে কল্পনা করে লিখে ফেলল কিছু কল্পনাময় প্রহর। নিজের মনের ইচ্ছাটার গতিবিধি ঠিক কতদুর। আদৌ সে গুটি গুটি পায়ে তার গন্তব্য মানে বাস্তবতায় পৌছাতে পারবে কিনা সেটা জানা নেই তার। তবুও ভাবতে তো মানা নেই। মন সে তো দিগ্বিদিক ভুলে ছুটে বেড়ায় এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে। অসীম সাহস তার। আর সেটা যদি কিশোরী মন হয় তাহলে তো কথাই নেই। তার যে এক অন্য জগত আছে। সেই জগতের রানি শুধু সেই। নীল রঙের কালি দিয়ে শুভ্র রঙের পাতায় ফুটিয়ে তুলল নিজের কল্পনার কিছু প্রেমপ্রহর।
“এই যে শুনছো?
‘এই ঘনায়মান রাতের অন্ধকার রুপের অপার সৌন্দর্য দেখে যেখানে মন ভালো হওয়ার কথা ছিল সেখানে আমি আজ বড্ড উদাসীন। কারণটা আমার অজানা। কিন্তু জানো কোথাও একটা সুপ্ত আশা জমে আছে যেখানে বেহায়া মন চিৎকার করে বলছে,
তুমি আসবেই। আর এই রাতের শহরের মোহনীয় সৌন্দর্য, শরীরে হলদেটে আলোর ছোঁয়া, মাথার উপরের আকাশে হাজার তারার পসরা সাজিয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করবে। আমাকে ডাকবে। আর আমি কোনদিকে না তাকিয়েই ছুটে চলে যাবো। তোমার হাত ধরে খালি পায়ে হাঁটবো পিচ ঢালা রাস্তায়। সময়টা থমকে দাঁড়াবে। প্রেমিক যুগলের পাগলামো দেখে সময় নিজের গতি ভুলে মুগ্ধতায় ভরে উঠবে। আর সেই সুযোগে অনন্তকাল চলবে তোমার আমার এই প্রেমপ্রহর।’
ইতি
তোমার মায়াজালে আবদ্ধ এক কিশোরী ”
–এখানে এভাবে বসে কাকে দেখছিস?
পাশের বারান্দা থেকে ভারি গলার আওয়াজ পেয়েই চমকে উঠল ইশা। হাত থেকে ডাইরি কলম দুইটাই মেঝেতে পড়ে গেলো। চোখ তুলে পাশের বারান্দায় তাকাল। ইভান ভ্রু কুচকে তার দিকে তাকিয়ে আছে। মাত্র গোসল করেছে মনে হয়। ভেজা চুলগুলো খুব যত্ন করে গুছিয়ে রাখা। চিরুনি না করলেও হাত দিয়েই চুল গুছিয়ে রাখাতে ইভান বেশ পটু। আর মনে হয় তার চুল গুলাও এই হাত দিয়ে গোছানটা উপভোগ করে। অবশ্য ঈশাও কম উপভোগ করেনা।
–দেখা শেষ হলে আমার উত্তরটা দিয়ে ধন্য করুন ম্যাডাম।
আবারো ইভানের কথায় এবার ঘোর কাটল ঈশার। একটু ঝাঝাল কণ্ঠে বলল
–তোমার সব সময় কেন মনে হয় আমি কাউকে দেখি?
ইভান তোয়ালেটা মেলে দিল। দেয়ালে হেলানি দিয়ে মেঝেতে বসে পড়ল। সামনে তাকিয়েই বলল
–না দেখলে বারান্দায় বসার কি কোন কারন আছে? কাউকে না কাউকে তো অবশ্যই দেখিস। অবশ্য তোর……।
কথা শেষ করতে দিলনা ঈশা। মাঝেই থামিয়ে দিয়ে বলল
–তুমিও কি কাউকে দেখ?
ইভান বিস্ময় নিয়ে ঘুরে তাকাল ইশার দিকে। কিছুক্ষন শান্ত চাহুনিতে তাকিয়ে থেকে বলল
–দেখি তো। এত দেখি তবুও মন ভরেনা। দেখতেই ইচ্ছা হয় বারবার। একেক সময় একেক রুপ তার। ভীষণ মায়া তার মাঝে। ঐ এক সমুদ্র সম্মোহনী দৃষ্টির গভিরে হারিয়ে যাই আমি।
বলেই থামল। ঈশা এতক্ষন নিস্পলক তাকিয়ে ইভানের কথা শুনছিল। থেমে যেতেই আবেগি কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল
–কাকে দেখ এতো এভাবে?
ইভানের কপালে ভাজ পড়ে গেল। ভালবাসায় ভরা চোখ দুটো হঠাৎ করেই অভিমানী হয়ে উঠল। তীব্র অভিমান আর এক বুক জ্বালার বহিপ্রকাশ ঘটাতেই সামনে তাকিয়ে চোখ দিয়ে ইশারা করল। ঈশা চোখের ইশারা অনুসরন করে সামনে তাকিয়েই দেখতে পেল ঠিক রাস্তার ওপাশের বারান্দা ওয়ালা ঘরের মেয়েটা জানালার পাশে বসে মনের সুখে নেইল পলিশ পরছে। সেদিকে সরু চোখে তাকিয়েই অস্ফুট সরে উচ্চারন করল
–সোনিয়া আপু।
ইভান কঠিন দৃষ্টিতে তাকাল। ঈশা সেই মেয়েটার দিকেই তাকিয়ে আছে। ইভানের দৃষ্টির মানে হয়ত ঈশা দেখলেও বুঝতে পারত না। কঠিন দৃষ্টি হুট করেই অসহায় হয়ে উঠল। কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো। দেয়ালে মাথা ঠেকিয়ে শান্ত সরে বলল
–ঈশা।
ঈশা ঘুরে তাকাল। ইভান কে সামনে তাকাতে দেখে ধরেই নিল সে সোনিয়ার দিকেই তাকিয়ে আছে। তাই কোন কথা বলল না। ইভান সবটা বুঝেও না বোঝার ভান করে বলল
–ঘরে যা। শুয়ে পড়।
ঈশা দিরুক্তি করল না। উঠে চলে গেলো ঘরে। ইভান সামনেই তাকিয়ে আছে। পাশের বারান্দার দরজা লাগানোর আওয়াজে বুক চিরে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো। কিন্তু চোখ ফেরালনা। ইচ্ছা করছে না কিছুতেই। সামনের দিকে তাকিয়ে থাকলেও মন যে অন্য জায়গায় আটকে আছে। আকাশের ঝলমলে তারা গুলর দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকল। তারপর উঠে চলে গেলো একদম নিচে। একাকীত্ব কাটাতে কিছুক্ষন একা একা রাস্তায় হাঁটলে খারাপ লাগবে না। বাসা থেকে বের হয়ে একা একা সোজা রাস্তা ধরে হাঁটছে সে।
ঈশা এতক্ষন নিজের সব কাজ গুছিয়ে নিয়ে জানালার পাশে এসে চেয়ার টেনে বসে পড়ল। তারও মনটা বেশ খারাপ। জানালা দিয়ে নিচে তাকাতেই চোখ পড়ল ইভানের দিকে। বাসার সামনে দাড়িয়ে ফোনে মনোযোগ দিয়ে কি যেন দেখছে। অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশে ফোনের আলোটা ইভানের মুখে পড়ছে সরাসরি। কি সুন্দর লাগছে দেখতে। ইভান সামনের দিকে চোখ তুলে তাকাল। সেই জানালায় বসে থাকা মেয়েটির দিকে চোখ পড়ল। মেয়েটি ইভান কে দেখেই মিষ্টি হাসি দিয়ে হাত উচিয়ে ইশারা করল। ইভান বেশ বিরক্ত হয়ে চোখ ফিরিয়ে বাসার ভিতরে চলে গেলো। সবটা দেখে ঈশা নিজের অজান্তেই হেসে ফেলল। জানালা বন্ধ করে ঘুমাতে গেলো।
—————-
পাইপ দিয়ে আনমনে নিজের ছাদ বাগানে পানি দিচ্ছে ইরিনা। সূর্যের তেজটা বেশী। বেলা গড়িয়ে দুপুর হয়ে যাচ্ছে। ঈশা পিছনে গিয়ে দাঁড়াল। মৃদু সরে বলল
–আপুউ।
ইরিনা চমকে ফিরে তাকাল। কঠিন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বুকে থুথু দিয়ে বলল
–আস্তে ডাকতে পারিস না। এতো জোরে চিল্লাস কেন? হায় আল্লাহ! এই মেয়ে শশুর বাড়িতে গিয়ে যে কিভাবে সংসার করবে?
ঈশা বিস্ময়কর দৃষ্টিতে তাকাল। অবাক হয়ে বলল
–আমি আবার কখন জোরে কথা বললাম?
ইরিনা পানি দিতে দিতেই সাভাবিক ভঙ্গিতে বলল
–কি বলবি বল?
–কাল ইশান ভাইয়ার জন্মদিন।
ইরিনার হাত থেকে পাইপটা পড়ে গেলো। লাফ দিয়ে ঘুরে দারিয়ে ইশার কাধে হাত দিয়ে বলল
–একদম ভুলে গেছিলাম রে। ভাল কথা মনে করেছিস। আজ রাতে অন্তত একটা সারপ্রাইজ পার্টি এরেঞ্জ করা দরকার। ইভান ভাইয়াকে বলতে হবে এখন। চল তাড়াতাড়ি।
ইরিনা পা বারাতেই পিছন থেকে গম্ভির গলার আওয়াজ আসলো
–কোথায় যাচ্ছিস?
তখনি ইরিনার ডাক আসলো নিচ থেকে। ঈশা পিছনে ঘুরে সাভাবিক ভাবেই উত্তর দিল
–তোমার কাছে।
ইভান কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকল। ইরিনা নিচে চলে গেলো। ইভান ধির পায়ে এগিয়ে যেতে যেতে কঠিন ভাবে বলল
–বেলা শেষে আমার কাছেই তোকে আসতে হবে। এটাই তোর জিবনের বড় সত্য।
ঈশা ইভানের চোখের দিকে দৃষ্টি স্থির করল। দুজনের দৃষ্টি দুজনের চোখে। অজানা এক নিরব অনুভুতির আদান প্রদান। মস্তিষ্ক সেই ভাষা না বুঝলেও মন অক্ষরে অক্ষরে বুঝে গেলো। ঝনঝন আওয়াজে দুজনেই চোখ নামিয়ে নিলো। ইরিনার হাত থেকে কাচের প্লেট পড়ে গিয়েছে। পুরো ছাদে বিছিয়ে পড়েছে কাচের টুকরো। সবাই সেদিকে বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছে। ইরিনা ভিত দৃষ্টিতে নিচের দিকে তাকিয়েই কাদকাদ সরে বলল
–মা জানলে আমাকে মেরে ফেলবে।
ঈশা হতাশ শ্বাস ছেড়ে বলল
–সেটা পরের কথা। আগে এগুলো তোলার ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে পায়ে লেগে যাবে।
–দাড়া আমি ঝাড়ু আনি।
ইভান একটু বিরক্ত হয়ে ধমকের সুরে বলল
–পুরো ছাদে যে বন্যা বয়ে ফেলেছিস সেটা কি মাথায় আছে? পানিটা আগে বন্ধ কর।
ইরিনা জিভ কেটে পার হয়ে আসতে নিলেই ঈশা হাত দিয়ে থামিয়ে দিয়ে বলে
–এদিকে আসিওনা। পায়ে কাচ লাগবে। তুমি ঝাড়ু আনো। আমি পানি বন্ধ করছি।
ইরিনা সিঁড়ির ঘরে গেলো ঝাড়ু আনতে। ঈশা পা টিপে টিপে এদিক সেদিক দেখে সামনে এগুতে লাগল। ইভান গম্ভির ভাবে বলল
–পা খালি কেন? স্যান্ডেল কই?
ঈশা পায়ের দিকে তাকিয়েই মৃদু কণ্ঠে বলল
–সিঁড়ির নিচে খুলে রেখেছি।
ইভান নিজের পায়ের স্যান্ডেল খুলে বলল
–এগুলা পরে যা। পায়ে কাচ ঢুকবে।
ঈশা মিনমিনে কণ্ঠে বলল
–ঢুকবে না।
বলেই পা বাড়াতেই ইভান হাত টেনে ধরল। ঈশার পুরো শরিরে কাটা দিয়ে উঠল। পিছনে ঘুরে কিছু বলার আগেই ইভানের মুখ দেখে থেমে গেলো। রাগি চোখে তাকিয়ে আছে। কঠিন গলায় বলল
–মতামত জানতে চাইনি। সিদ্ধান্ত জানায়ে দিছি।
ঈশা আর কিছু বলতে পারল না। কথা বললেই ইভান রেগে যাবে। তাই মাথা নামিয়ে জুতো জোড়া পায়ে ঢুকিয়ে এগিয়ে গিয়ে পানির ট্যাপ বন্ধ করে দিল। বড় জুতো পরায় হাটতে অসুবিধা হচ্ছে। আর পুরো ছাদ ভেজা তাই আরও বেশী অসুবিধা হচ্ছে। পা পিছলে যাচ্ছে। ঈশা সাবধানে পা টিপে টিপে হাঁটছে। কিন্তু একটা ছোট ইটের টুকরো জুতোর নিচে পড়তেই পা পিছলে গেলো। ঈশা চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে ফেলল। কিন্তু খেয়াল করল কেউ একজন পরম জত্নে তাকে নিজের সাথে জরিয়ে রেখেছে। তার বুকের ঢিপঢিপ আওয়াজ মাদকতা ছড়াচ্ছে চারিদিকে। মিষ্টি ঘ্রাণটা ঘোর লাগিয়ে দিচ্ছে মস্তিস্কে। কিছুক্ষন থাকার পরেই ঈশার অসস্তি হচ্ছে। সে একটু নড়েচড় উঠতেই ইভান তাকে ছেড়ে দিল। ঈশার দিকে তাকিয়ে বিচলিত কণ্ঠে বলল
–তুই ঠিক আছিস তো?
ঈশা কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকল। এর মধ্যেই ইরা গুটি গুটি পায়ে এসে দরজা থেকে বলল
–ইভান ভাইয়া।
ইভান তার দিকে ঘুরেই চিৎকার করে বলল
–ওখানেই থাক টুনটুনি। এদিকে আসিস না পায়ে কাচ ঢুকবে। দাড়া আমি আসছি।
বলেই পা বাড়াতেই ঈশা হাত ধরে ফেলল। ইভান থেমে গেলো। বিস্ময়ে ঘুরে তাকাল। প্রথমে হাতের দিকে তারপর ঈশার দিকে। ঈশা বিরক্তিকর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ইভান বিশ্বাস করতে পারছে না ঈশা তার হাত ধরেছে।
–মাথায় কি কিছু নেই নাকি? তুমি খালি পায়ে যাচ্ছ কেন?
বলেই স্যান্ডেল খুলে সামনে দিল। ইভান মুচকি হাসল। ইরিনা ঝাড়ু নিয়ে অবশেষে বের হল। তার চুলে মাকড়শার জাল আটকে আছে। চেহারা দেখার মতো। দেখে মনে হচ্ছে বহু জুদ্ধের পর ঝাড়ু খুজে পেয়েছে। ঈশা তাকে দেখেই হেসে দিল। ইভান স্যান্ডেল পায়ে ইরার দিকে এগিয়ে গিয়ে তাকে কোলে নিয়ে আসলো। পাশে শুকনো জায়গায় দাড়ায়ে রাখল। ঈশা আর ইরিনা ততক্ষনে কাচ পরিস্কার করতে শুরু করেছে। ঈশার পায়ের কাছে একটা কাচ পড়ে আছে। ইভানের চোখে সেটা লাগতেই সে এগিয়ে কাচটা ধরতেই তার হাতে ফুটে যায়। ‘আহ’ শব্দ উচ্চারন করতেই ঈশা ঘুরে তাকায়। ইভানের হাত কেটে গেছে। ঈশা সব কিছু ফেলে ইভানের হাত ধরে ফেলে। পাশে সিমেন্টের বসার জায়গাটায় বসিয়ে দিয়ে হাতটা চেপে ধরে ধরে বলে
–ইশ! কেটে গেছে।
ইভান স্থির হয়ে দেখছে ঈশাকে। ঈশা বেশ বিচলিত হয়ে বলল
–রক্ত বের হচ্ছে।
ইভান হাতের দিকে একবার তাকাল। ভ্রু কুচকে ফেলল। ঈশা যেরকম আচরন করছে সেরকম কিছুই হয়নি। সামান্য কেটেছে। একটু চেপে ধরলেই রক্ত বন্ধ হয়ে যাবে। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল
–রিলাক্স! তেমন কিছুই হয়নি। একটু কেটেছে।
বলেই আঙ্গুলটা মুখে ঢুকিয়ে দিল। ঈশা ঝাঝাল কণ্ঠে বলল
–একটু হোক। কেটেছে তো!
ইভান বাকা হাসল। সাবাভিকভাবেই বলল
–কেটেছে তো আমার। তোর কোথায় লেগেছে যে এভাবে কষ্ট পাচ্ছিস?
ইভানের কথা শুনে ঈশা নিজেকে সংযত করে নিলো। একটু বেশিই করে ফেলেছে সেটা বুঝতে পেরেই লজ্জা পেয়ে দৃষ্টি নত করে নিলো। ইভান মুচকি হেসে মাথাটা একটু ঝুকে বলল
–এতো কেয়ার পাওয়া যাবে জানলে আরও আগেই নিজে নিজে হাত পা কেটে ফেলতাম। ফ্রিতে কেয়ার কার না পেতে ইচ্ছা করে।
চলবে……
(আপনাদের কি মনে হয় আমি থিম কপি করছি? যদি তাই মনে হয় তাহলে গল্পটা লেখা বন্ধ করে দিব। পর্ব গুলো ডিলিট করে দিবো। একটু জানাবেন প্লিজ।)