#শেষ_থেকে_শুরু
কলমে: লাবণ্য ইয়াসমিন
পর্ব:১৩
আলো ঝলমলে গ্রীষ্মের দুপুর,আকাশে মেঘ নেই। মাথার উপরে উতপ্ত সূর্যটা খাঁড়াখাঁড়ি ভাবে কিরণ দিচ্ছে । রুমে এসি আছে তবুও কুল কুল করে ঘেমে চলেছে আরাফাত। হৈমন্তী চলে গেছে কিন্তু ওর জন্য রেখে গেছে একখানা দীর্ঘ পত্র। কিছুক্ষণ আগে রবিনকে পুলিশে দিয়ে বাড়িতে ফিরে জানতে পারলো হৈমন্তী নেই। রবিন বর সেজে এসেছিল বাপকে সঙ্গে নিয়ে বিয়ে করতে। উপস্থিত সকলের সামনে আবির ওর বউ বাচ্চাকে হাজির করেছে। আরাফাত পুলিশে আগে থেকেই খবর দিয়ে রেখেছিল। কাছে যা প্রমাণ ছিল পুলিশের কাছে দেওয়ার আগে কপি করে নিজের কাছে এককপি করে রেখেছে । দেশের আইনের উপরে ভরসা করা মুশকিল। ঘুষ দিয়ে দুর্নীতি করে আসামী বেরিয়ে এসে ভিক্টিমের উপরে আক্রমণ করাটা কঠিন কিছু না অহরহ হচ্ছে। প্রামাণ নিজের কাছে রেখেছে হৈমন্তীর বুদ্ধিতে। মেয়েটা আগেই বলেছিল সবকিছুর দুটো করে কপি করতে। তাছাড়া রবিনের স্বীকারোক্তিটা সোসাল সাইটে দিয়ে দেওয়া হয়েছে এতে সুবিধা আছে। লোকজনকে পাশে পাওয়া যাবে। আবুল চাচা এখনো মেয়ের শোকে রাস্তায় রাস্তায় কেঁদে বেড়াচ্ছে। এবার যদি একটু শান্তি পাই। রবিনের মতো মানুষের সমাজে অভাব নেই। এদের জন্মই হয়েছে সমাজকে পাপে ভরিয়ে তোলার জন্য। পাপি মানুষগুলোকে যদি মুখ দেখে চেনা যেতো তবে কতো ভালোই না হতো। কিন্তু তেমন কোনো সিস্টেম নেই। মানুষের মুখ দেখে ভালো খারাপ বোঝা যায় না। অনেক সময় এক সঙ্গে বসবাস করেও তাকে চেনা যায় না। সবার মধ্যেই ত্রুটি থাকে কেউ বলতে পারবে না আমি ফ্রেস। তবুও একটা সীমা আছে। আরাফাত কথাগুলো ভেবে হৈমন্তীর চিঠিটা সামনে মেলে ধরলো। গোটা গোটা অক্ষরে লেখা,
ভাইয়া,
তোমাকে না জানিয়ে চলে যাচ্ছি। বলতে পারো এক প্রকারে পালিয়ে যাচ্ছি। আর কিছুক্ষণ থাকলে হয়তো আমি নিজেকে সামলাতে পারতাম না। দম আটকে মরে যেতাম। ভাইয়া রনিকে দেখেছো কি সুন্দর হয়েছে ছেলেটা ঠিক আমার মতো। মা হবার অনুভূতি আমাকে যন্ত্রণা দিয়েছে তবুও ওর দিকে তাঁকালে আমার বুকটা কেঁপে উঠে। আমি তো ভূলেই গিয়েছিলাম আমার একটা সন্তান আছে। ওকে শুধু গর্ভে ধারণ করেছি আর কোনো দায়িত্ব তো পালন করতেই পারলাম না। কি করে আমি ওর কাছে গিয়ে নিজের পরিচয় দিবো বলো? ভাই ভাবি না থাকলে আমাদের কেউ বাঁচতেই পারতাম না। আল্লাহ্ সহায় ছিল তাই তোমাদের মতো এতো ভালো মানুষগুলোকে আমার পাশে পেয়েছি। ভাবি রনিকে নিজের সন্তান হিসেবে ভালোবাসে আমি চাইনি সেখানে ভাগ বসাতে। চাইবোও না কখনো। শুধু আম্মার উপরে আমার প্রচণ্ড অভিমান জমে আছে। আমি তো উনারি সন্তান তবুও কেনো আমার উপরে উনি এমন অবিচার করেন সত্যিই আমার অজানা। তবুও কিছু বলবো না। উনি হয়তো সত্যিই আমার ভালো চেয়েছেন কিন্তু আমার কপালে ছিল না। জানো ভাইয়া আমার স্মৃতিতে এরকম একটা দুঃখী মেয়ের কাহিনী গাঁথা ছিল কিন্তু জানতাম না সেটাই আমি। আবছা মনে ছিল। হাসপাতালে যখন আমার জ্ঞান ফিরলো তখনই সবটা বুঝে গিয়েছিলাম। আমার মনে হয়েছিল আমি সেই আগের মতোই আছি। পেটে হাত দিয়ে অনুভব করতে চেয়েছিলাম আমার বাচ্চাটাকে কিন্তু সেখানে তো কিছুই ছিল না। তোমাদের সবাইকে দেখলাম তারপর বুঝলাম কতগুলো বছর পার করে ফেলেছি। ছোট থেকেই সকলের বাধ্য থেকেছি কখনও প্রতিবাদ করা হয়নি। হয়তো এটাই ছিল আমার প্রধান ভুল। যাইহোক ভাইয়া অনেক কিছু বলে ফেলেছি এখন আসল কথায় আসি। অরিন খুব ভালো মেয়ে একটু আবেগী আর বুদ্ধি কম তবে মানুষকে আপন করে নেওয়ার মতো গুণ ওর আছে। একটা সুন্দর জীবন ওর প্রাপ্য। তুমি আর কতকাল এভাবে একা থাকবে? মেয়েটাকে বিয়ে করে সুখে থাকো। তোমার জন্য ওকে আমার প্রথম থেকেই পছন্দ ছিল কিন্তু মাঝখানে রবিন এসে সব এলোমেলো করে দিলো। কষ্ট না পেলে মানুষ সুখের মর্ম কিভাবে বুঝবে হয়তো কষ্টের পরে ওর জন্য ভালো কিছু অপেক্ষা করছে। তোমাকে আমি জোরজবরদস্তি করবো না। যদি আমার প্রস্তাবটা পছন্দ হয় বা মনে ধরে ওকে তুমি গ্রহণ করতে পারো। হঠবে না আমি তো তোমার বোন। বোন কি কখনও ভাইয়ের খারাপ চাইতে পারে বলো? একটু মানিয়ে গুছিয়ে নিলে দেখবে তোমরা খুব ভালো থাকবে। আর বড় ভাইয়াকে বলে দিও হৈমন্তীর বিয়ে নিয়ে আর না ভাবতে। আমাকে দিয়ে কি তোমরা সেঞ্চুরি করানোর ধান্দা করছো? লোকজন শুনলে হাসবে। বিধবা সঙ্গে ডিভোর্সীর সীলমোহর গায়ে জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। আমি যন্ত্রণায় মারা যাচ্ছি ভাইয়া। অনুরোধ এসব নিয়ে বাড়িতে আর আলোচনা করো না। তাহলে হয়তো আর বাড়িতে ফেরা হবে না। আমি ঠিকানা পরিবর্তন করবো। হয়তো তোমাদের কাছে ফোন করা হবে না তবে নিয়মিত চিঠি লিখবো। একটু নিজের মতো বাঁচতে চাই। তোমরা অনেক করেছো আর কতো করবে। হাজারো ত্রুটি আমার। এতগুলো ত্রুটি নিজেকেই ঠিক করতে হবে। শুধু দোয়া করো লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি। সমাজ থেকে অন্ধকার দূর করার শক্তি নিয়ে ফিরতে পারি। খুব মনে পড়বে তোমাকে। আমাকে ভুল বুঝো না। দেখা হবে যদি কখনও বেঁচে থাকি। ছোট বোনের ভুলত্রুটিগুলোকে ক্ষমা করে দিবা আশাকরি। ভাইয়া সময় কম আর লিখতে পারছি না। তবেফিরে গিয়ে কেমন আছি চিঠিতে সব জানাবো।
ইতি
তোমার আদরের হৈমি।
আরাফাত বেশ কয়েকবার চিঠিটা পড়ে ফেলল। চোখ ঝাপসা লাগছে। মেয়েটার বুদ্ধিজ্ঞান সত্যিই কম। বিদেশ বিভূঁয়ে একা একা থাকার কোনো মানে হয়। কোথায় থাকবে না থাকবে কথাটা চিন্তা করেই ভয় হচ্ছে আরাফাতের। বড় ভাইয়ের উপরেও রাগ হচ্ছে। হৈমন্তীকে টিকেট কেটে দিয়েছে অথচ ওকে কিছু জানানো হয়নি। এদের বুদ্ধি জ্ঞান কবে হবে ভেবে আফসোস হচ্ছে। আরাফাত রাগে ফুলতে ফুলতে নিচে নেমে আসলো। রাজীব বোনকে বিমানে তুলে দিয়ে ফিরে এসেছে। মাসুদ আসেনি একবারে ডিউটিতে চলে গেছে। আরাফাত রাজীবের সামনে গিয়ে ভ্রু কুচকে বলল,
> তুমি ওকে একা যেতে দিলে, একবার আমাকে বললে কি এমন ক্ষতি হতো? এসেছিলাম দুভাইবোনে এখানে থাকতে না। তাহলে আমাকে রেখে যাওয়া হলো কেনো? আগামী ফ্লাইটে আমি ফিরে যাচ্ছি। এখানে থাকার কোনো মানেই হয়না।
রাজীব ওর কথা ইগনোর করে সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে বলল,
> আবিরদের বাসা থেকে তোর বিয়ের প্রস্তাব এসেছে। মেয়েটার পাশে থাকা আমাদের কর্তব্য। তাছাড়া বোনের কথা তো মনে আছে?নিজের বোনের জন্য এতোকিছু করলাম আরেকটা বোনের জন্য এইটুকু করতে পারবো না? হৈমি যাবার আগে বারবার বলে গেছে।
আরাফাতের রাগ হচ্ছে। অরিনের উপরে ও বেশ বিরক্ত। মেয়েটার মাথা মোটা। আগে থেকেই অপছন্দ ছিল তারপর আবার হারপিক খেয়েছে। লোকজন জানলে মেয়েটার সঙ্গে ওর নিজেরও সম্মান যাবে। তাছাড়া ও কিভাবে মেয়েটাকে সুখে রাখবে এটাইতো বুঝতে পারছে না। হৈমি ওর নিজের বোন। বোনকে ভালোবাসে না এমন ভাই পৃথিবীতে আছে নাকি। বোনেকে ভালো রাখা আর পরের বোনকে ভালো রাখার মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ। তাছাড়া আরাফাত কি আগে বিয়ে করেছে নাকি যে জানবে কিভাবে বউকে ভালো রাখতে হয়। নিজের উপরেই নিজের বিশ্বাস নেই সেখানে অন্যরা কিভাবে ওর উপরে বিশ্বাস করছে আল্লাহ্ ভালো জানে। আরাফাতের নিরবতা দেখে রাজীব বলল,
> আগামীকাল রাতে বিয়েটা হচ্ছে। এতো লোকজন নিয়ে কি হবে। বন্ধু বান্ধবী দিয়ে কাজ নেই। আমাদের কিছু লোকজন আর ওদের কিছু লোকজন মিলে চার হাত এক করে দিবো। যত গোপনে বিয়ে হবে ততই বরকত পাওয়া যায়। কিপটে বলিস না ভাইকে। আমি তোর বউকে সাজিয়ে আনবো তবে লোকজন খাওয়ানোর টাকাগুলো একটা এতিমখানাই দান করে দিবো ভাবছি। হৈমি বলেছিল নয়তো অনুষ্ঠান করতাম। মেয়েটার বুদ্ধি হচ্ছে অন্যদিকে আমার কমছে। বয়স হচ্ছে কবে না জানি মরে যায়।
রাজীবের এলোমেলো কথাবার্তা শুনে আরাফাতের রাগ কমার বদলে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বয়স হচ্ছে বলেই কি মরতে হবে কি অদ্ভুত। বয়স চল্লিশের কাছাকাছি হয়নি এখনো অথচ মরার চিন্তা করছে। আরাফাত উত্তর দিতে পারলো না। যেখানে ভাই বোন মিলে ওর বিয়ে ঠিক করেছে সেখানে ওর কিছু বলার নেই। বড় ভাইকে ও যথেষ্ট সম্মান করে। যদি ভাই ভাইয়ের মধ্যে এই সম্মান আর ভালোবাসাটা না থাকতো তবে কবেই এই সংসার আলাদা হয়ে যেতো। আমেনা বেগম এদিক থেকে ছেলেমেয়েকে সঠিকভাবে মানুষ করতে পেরেছেন। তাছাড়া ওরা সব নিজের বাবার মতো হয়েছে। খলিল মির্জা মানুষ হিসেবে চমৎকার। পরকেও আপন করে নিতে জানেন।
_____________________
বাসর ঘরে বসে আছে অরিন। কিছুক্ষণ আগে ওকে এখানে রখে গিয়েছে চয়নিকা আর মাসুদের বউ রুনি। যাবার আগে কানে কানে কিছু অশালীন কথাবার্তা বলে গেছে যেগুলোর জন্য ওর কান্নাটা আরও বেশি পাচ্ছে। ফুপিয়ে ফুপিয়ে উঠছে। শরীর দুর্বল ছিল তারপর আবার অতিরিক্ত কান্নাকাটি সব মিলিয়ে মাথাটা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। চোখ অন্ধকার দিচ্ছে। আন্যদিকে আরাফাত বাগানে পাইচারি করছে। ঘরে যাবার কথা ভাবলেই ঘেমে ঘেটে একাকার অবস্থা। চয়নিকা ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। বাড়িতে বাইরের লোকজন নেই। খালাতো ভাইবোনেরা এসেছে। ওদের বাসা নিকটবর্তী তাই ওদেরকে বাদ দেওয়া যায়নি। আরাফাত কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই ওর ডাক পড়লো। দূর থেকে দেখলো চয়নিকা আর রুনি হেসে হেসে গড়িয়ে পড়ছে। আরাফাত বুঝতে পারলো এই রমনীরা ওকে এমনি ছাড়বে না। লজ্জা দেওয়ার চেষ্টা করবে। আরাফাত মুঠো শক্ত করে প্রস্তুতি নিলো। যায় বলুক লজ্জা ভয় বা রাগ কিছুই করবে না। আপাতত ও বয়রা কানে শুনে না। ওকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রুনি বলল,
> আহারে দেবরজী ঘরে বউ রেখে বাগানে কি করো? ফুল তুলতে এসেছো? আমাকেই বলতে।
চয়নিকা ওর কথায় ফোঁড়ন কেঁটে বলল?
> নিশী রাত বাঁকা চাঁদ আকাশে। আহা ভুল বললাম আকাশে নয়গো সেতো তোমার পালঙ্কে। দেবরজি ভয় নাকি লজ্জায় মুখ লুকিয়ে আছো? তোমার থেকে কিন্তু এসব আশাকরা করা যায় না। তুমি না বীর?
চয়নিকা গম্ভীর হয়ে কথাগুলো বলার চেষ্টা করলো কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। রুনির শব্দ করে হেসে উঠার জন্য নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে ওর সঙ্গে হেসে ফেলল। আরাফাত এদের উপরে প্রচণ্ড বিরক্ত। ঠোঁট কাটা টাইপের ভাবি থাকলে বিয়ের স্বাদ দেবরদে এমনিই পালাবে তাতে সন্দেহ নেই। আপাতত সেসব পরে ভাবা যাবে এখানে থাকা যাবে না ভেবে চলে আসতে গেলো কিন্তু পারলো না। রুনি ফট করে একটা গোলাপ ছিড়ে ওর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,
> এটা ওকে দিবে। মেয়েদের ফুল আনেক পছন্দের। দামি অলংকার বা উপহারের থেকেও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জিনিস দিয়েও বউকে খুশী করা যায়। খেয়াল রেখো আর সময় দিও সব ঠিক হয়ে যাবে। রাগারাগি করবে না। মেয়েটা সরল টাইপের আর ভয় পাচ্ছে। ওকে স্বাভাবিক করে তোলা তোমার দায়িত্ব।
আরাফাত রুনির কথাগুলো মন দিয়ে শুনলো। ভাবিগুলো সত্যিই খুব ভালো। এতো ভালো কেনো এরা। কথাটা ভেবে মুখ খুলল,
> লজ্জা উপদেশ ভয় সব কিছুই শেষ আরও কিছু দেবেন বা বলবেন মহামান্য রমনীগণ? বলুন বলুন সময় এসেছে বলার। ছোট ভাইয়ের উপরে এমন অত্যাচার আল্লাহ্ সইবে না।
চয়নিকা ঠোঁট উল্টে বলল,
> দেবরজি ওদিকে বউ অপেক্ষা করতে করতে বুড়িয়ে যাচ্ছে আর কতকাল বাগান বিলাশ করবেন শুনি? তাড়াতাড়ি যাও। রাত হয়েছে, তোমার ভাই ও জেনে গেছে তুমি রুমে নেই। রাগ করবেন কিন্তু।
আরাফাত যাচ্ছি বলে চলে গেলো। এখানে দাঁড়িয়ে থাকা মানেই লজ্জায় পড়া। ও দ্রুতগতিতে রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো। রুমে লাইট জ্বলছে কিন্তু বাসর ঘরের একি দশা? ঘরটা কোথায় ফুল দিয়ে সাজানো থাকবে চারদিকে। তানা ফুলের মালাগুলো খাটের মাঝখানে সব খুঁলে জড় করে রাখা। অরিনকে কোথাও পাওয়া গেলো না। আরাফাত বিড়বিড় করলো মাথা মোটা মেয়েটা কোথায় আছে কে জানে। ও বাথরুম চেক করে বাইরে উঁকি ঝুঁকি দিলো। বাসর ঘরে বউ নেই। আরাফাতের চিন্তা হচ্ছে। হারিয়ে গেলো নাতো? কথাগুলো ভেবে ও বিছানা থেকে ফুলগুলো তুলতে গিয়ে ভারি ভারি লাগলো। শেষমেশ উপর থেকে ফুল সরিয়ে দেখলো অরিন ভেতরে অচেতন হয়ে পড়ে আছে। আরাফাতের মাথায় হাত। এ কেমন বউ আর বাসর ঘররে বাবা। ও দ্রুতগতিতে ফুলগুলো সব পরিস্কার করে পানি এসে অরিনের মুখে ছিটিয়ে দিলো। কয়েকবার পানি ছিটানোর পরে বেচারির জ্ঞান ফিরলো। প্রথমে ও আরাফাতের দিকে ড্যাপ ড্যাপ করে তাঁকিয়ে থেকে ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে ফেলল। আরাফাত জানতো এমনিই হবে। এর দিয়ে এটাই আশা করা যায়। নিজেকে শান্ত রেখে দাঁতে ঠোঁট চেপে বলল,
> কান্নাকাটি পরেও করা যাবে। ফ্রেস হয়ে আসো ঘুম পাচ্ছে। আর হ্যাঁ বাথরুমে কিন্তু হারপিক আছে। একদম নতুন। ভুল করেও ওটার দিকে নজর দিবে না। সকাল হলে সরিয়ে রাখবো।
আরাফাতের কথা শুনে অরিনের কান্না থেমে গেলো। লোকটা ওকে অপমান করছে। একবার ভুল করে হারপিক খেয়েছে বলে কি বারবার খাবে? একজনকে ভালোবেসে আরেকজনের সঙ্গে সংসার শুরু করা কি সহজ নাকি। ভুলতে সময় লাগে। কান্না পেলে ওর কি দোষ। লোকটা ভীষণ খারাপ। ওকে সব সময় অপমান করার জন্য মুখিয়ে থাকে।
চলবে
ভুলত্রুটি মার্জনা করবেন।