#শেহজাদী
Part–27 (বোনাস)
Arishan_Nur (ছদ্মনাম)
মিরা হা করে দাঁড়িয়ে রইল। চোখ ছলছল করছে তার। ইমান তাকে কুটনি বুড়ি ডাইনীর সঙ্গে তুলনা করতে পারলো! বিবেকে বাঁধলো না। তার খুব করে ইমানের প্রিয়তমাকে দেখতে মন চাচ্ছে। মেয়েটা নিশ্চয়ই মারাত্মক আগুন সুন্দরী তা নাহলে কি ইমান তাকে শেহজাদী বলে ডাকে? হুহ! মিরার খুব হিংসা হিংসা অনুভব হচ্ছে। সে যে এতো হিংসুটে একেবারে পাশের বাসার আন্টির মতো এটা আজই উপলব্ধি করলো। মিরা নিজের মনে ফোঁড়ন কেটে বলে, ছিঃ মিরা! কারো ভালোবাসায় নজর দিতে হয়না!
ইমান ঠেস মারা কণ্ঠে বলে, মিস মিরা, এভাবে হা করে থাকবেন না। মুখে মাছি ঢুকে যাবে তো।
মিরা সঙ্গে সঙ্গে মুখ বন্ধ করে ফেলে। তার খুউব জানতে মন চাচ্ছে, কে সে-ই শেহজাদী? তাকে জানতেই হবে। এই জীবনে একবার হলেও সেই মেয়েটাকে দেখতে চায় সে। একবার হলেও।
সে প্রশ্ন ছুঁড়লো, আপনার আদুরে শেহজাদী নিশ্চয়ই খুব সুন্দর তাই না?
ইমান উঠানের দিকে তাকিয়ে ছিল। মূলত সে উঠানের সামনের ফাঁকা জায়গায় খেলতে থাকা চার-পাঁচটা মুরগীর ছানাকে দেখছিলো। আসলে মুরগির বাচ্চা এতো কিউট হয়, তাহলে তার নিজের বেবিগুলো কত্তো কিউট হবে কে জানে? নিজের বাচ্চা-কাচ্চার চিন্তা মাথায় আসতেই মিরার প্রশ্নে চিন্তা-ভাবনা গুলো তলিয়ে গেলো৷
ইমান খুকখুক করে কেঁশে বলে, সুন্দরী কিনা জানি না৷ কিন্তু ওকে দেখার পর আমার আর অন্যকোন মেয়ের দিকে চোখ পড়েনা। আমার চোখ,নাক, মুখ মন, হৃদয়, মস্তিষ্ক, হাত-পা সবকিছুর উপর আজ-কাল তার আধিপত্য অঘোষিতভাবে!আমার শরীরের প্রতিটা অঙ্গ তার দখলে চলে গেছে৷।
মিরা চোখ ছোট ছোট করে বলে, হাত-পা, নাক মুখ আবার কারো দখলে চলে যায় কেমনে?
ইমান হালকা হেসে বলে, তুমি বুঝবা না! এই যে আমি নাক দিয়ে নিশ্বাস নিচ্ছি! কার জন্য? আমার শেহজাদীর জন্য,,,,,,
— ওমাগো! টুরু লাভ!
ইমান বিরক্ত হলো। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ডায়লগ গুলো তার খুবই লেইম লাগে। তখনই রাব্বির মা ঘরের সামনে এসে মিরাকে দেখে বলে, আরে বৌমা! উঠে গেছো! তোমার কালকের পরনের শাড়িটা ভোরে ফযরের নামাজের পর ধুয়ে দিয়েছি। এতোক্ষণে বুঝি শুকিয়েও গেছে। গোসল সেড়ে ওই শাড়িটাই পড়িও মা। বৌ মানুষ সাদা পড়লে মানায় না। তুমি তো পুতুলের মতো সুন্দরী মা। তোমাকে রঙিন পোশাকে মানায়। তার উপর তুমি নতুন বৌ। তুমি লাল পড়বে না তো কে পড়বে শুনি?
বলে ভদ্রমহিলা এক গাল হাসলো। মিরা ও হালকা হেসে বিড়বিড় করে বলে, আমি পুতুল বৌ হতে চাই না চাচী। আমি আদুরে শেহজাদী হতে চাই!!
ভদ্রমহিলা মিরাকে তাগদা দিলে সে গোসলে যায়। গোসল সেড়ে লাল শাড়ি পড়ে বাইরে আসলো সে। এই লাল শাড়িটা পড়ার পর তার মন বিষিয়ে গেছে কোন কারণ ছাড়াই। হুটহাট করেই মন খারাপ হওয়া মিরার বাচ্চাকালের অভ্যাস৷
সে বের হতেই সকালের নাস্তা দেওয়া হলো। আয়োজন বেশি না৷ রুটি আর ডিমভাজী৷
রাব্বি লজ্জিত মুখে বলে, ভাবী ভালোভাবে আপ্যায়ন করতে পারলাম না। আমরা গরীব মানুষ!
মিরা স্মিত হেসে বলে, তুমি আমাদের যেই উপকারটা করেছো! এই উপকারটা কয়জনই বা করে? তোমাকে ধন্যবাদ দিলেও কম হবে৷
— আমরা গ্রামের মানুষ অতিথি আপ্যায়ন করতে খুব ভালোবাসি।
মিরা মুগ্ধ হয়ে আশেপাশে তাকালো৷ মুরগির ছানা দেখেই তার সেগুলোকে হাতে নিয়ে আদর করে দেওয়ার লোভ হলো৷ সে উঠানের সামনের জায়গাটায় যেতে চাইলেই ইমান তার বাহু চেপে ধরে থামিয়ে দেয়৷ দুজনের চোখাচোখি হলে তাকে চুপচাপ খেতে বসতে বলে সে। অগত্যা তাকে খাওয়ার পর্ব চুকিয়ে ফেলতে হয়। সত্যি বলতে মিরার একটুকুও খেতে মন চাচ্ছে না। গলায় খাবার আটকে আসছে৷ কিন্তু তবুও জোর করে খেল। কারন সে যদি না খায় তবে দুইজন ব্যক্তি খুব কষ্ট পাবে৷
খাওয়া শেষ হতেই একটা রিকশা এসে দাঁড়ালো। ইমান আর মিরা রাব্বি আর রাব্বির মায়ের কাছ বিদায় নিয়ে রিকশায় উঠে পড়ে। রিকশা আস্তে ধীরে গ্রামের কাঁচা রাস্তা দিয়ে মন্থন গতিতে আগাতে লাগে। কারো মধ্যে তাড়া নেই। অথচ শহর হলে ইমান কি ব্যস্ত হয়ে যেত এই বেলায়!
মিরা চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে গ্রামের পুকুর, মাটির ঘর, কলা গাছ, পল দেখছে মুগ্ধ হয়ে৷
ইমান বলে, আগে কোনদিন গ্রাম দেখো নাই?
মিরা আগ্রহ নিয়ে বলে, উহু!
— ওহ! তুমি তো খাঁটি পুরান ঢাকাইয়া। মাও পুরান ঢাকার, বাবা ও। গ্রামে আর যাবা কেমনে?
– আমাদের দেশের গ্রামগুলো অনেক সুন্দর! একেবারে ছবির দৃশ্যের মতো। তাল গাছ গুলো কি লম্বা তাই না! রবীন্দ্রনাথ কি এমনিতেই লিখে গেছে, তাল গাছ একপায়ে দাঁড়িয়ে, উঁকি মারে আকাশে৷
ইমান ভ্রু কুচকে চারপাশে তাকিয়ে বলে, তাল গাছ পাইলা কই?
মিরা তার দিকে ঝুঁকে এসে তার হাত উঁচিয়ে একটু সামনের দিকে ইশারা করে বলে, ওই যে তাল গাছ!
ইমান সেদিকে তাকালো এবং এক সেকেন্ড পর শব্দ করে হেসে বলে, বলদ! ওইটা সুপারি গাছ।
মিরা বড্ড লজ্জা পেল৷ তাকে লজ্জা পেতে দেখে ইমানের হাসির বেগ বৃদ্ধি পেল। তার হাসি যেন থামছেই না৷
মিরা ঠোঁট উল্টিয়ে বলে, এতো হাসার কি আছে? না-ই বা চিনতে পারি! আমি কি গাছ বিশেষজ্ঞ কিনা!
ইমান হাসি থামিয়ে দিলো। তারপরও তার হাসি থামতেই চাইছে না৷
মিরা মুখ ফুলিয়ে অন্যদিকে তাকালো৷ অসহ্য! এতো হাসাহাসির কি আছে? তবে এই ছেলেটাকে হাসলে অসহ্য রকম সুন্দর লাগে। মিরার ইচ্ছা করছে, ইমানের বাহু ধরে কাঁধে মাথা রেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে৷ খুব ইচ্ছা হচ্ছে তার!
কিন্তু কিছু ইচ্ছা থাকে যা আমরা কখনোই পূরণ করতে পারি না! থাক না এক-দুইটা ইচ্ছা অপূর্ণ! সব ইচ্ছা পূরণ হবার নয়।
কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে মিরা নিজ থেকে নিরবতা ভেঙে বলে, আপনার শেহজাদী কে নিয়ে কিছু বলুন? পুরো একদিন হয়ে গেল অথচ কথা বলেননি! তাকে মিস করছেন না?
— না। মিস কেন করবো?
— কেন মিস করবেন না?
— কারণ সে আমার সঙ্গেই আছে৷
মিরা চমকে উঠে ইমানের দিকে তাকালো। দুইজনের চোখের সাক্ষাৎকার ঘটলে ইমান বলে, আমার সাথে সে সবসময়ই থাকে। এই যে! আমার মনের ভেতরের সিংহাসনে সে বসে আছে৷ রাজত্ব সামলাচ্ছে।
মিরা মনে মনে বলে, ওবাবা গো! টুরু লাভ ম্যাক্স প্রো।
কিন্তু মুখে বলে, সে দেখতে কেমন? বলুন না! নাক বোঁচা না খাড়া? আইব্রুস ত্যাড়া নাকি সোজা?
ইমান বললো, এতোসব তো জানি না। শুধু জানি তার গালগুলো ভীষণ ফোলা ফোলা। এবং সে মিনিটে মিনিটে অভিমান করে৷ অভিমান করলে তার গালগুলো বেলুনের মতো হয়ে যায়৷ সে অভিমান করেই ক্ষ্যামা দেয় না! অভিমান করার সঙ্গে সঙ্গে তার ঠোঁট গুলো উলটে যায় এবং চোখ দিয়ে পানি ফেলবেই সে।তখন কি যে স্নিগ্ধ লাগে তাকে দেখতে! মন চায় বুকের মধ্যে ঢুকিয়ে রেখে মনটা তালাবদ্ধ করে চাবিটা দূরে ফেলে দিই। সে হাঁটবে হেলেদুলে। পা ঠিকঠাক ভাবে ফেলবে না। দেখেশুনে হাঁটবে না! যার ফলে হাঁটার সময় একবার না একবার হোঁচট খাবেই সে।
ইমান যে খুব সুন্দর করে কথা বলে এটা অস্বীকার করলে অন্যায় হবে। আজকেও যখন তার প্রিয়তমাকে নিয়ে বর্ণনা দিচ্ছিলো, মিরা তার কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে যায়। কল্পনায় একটা খুব চমৎকার মেয়ে এসে হানা দেয়। মেয়েটার পরনে রাজকীয় পোশাক। মাথায় মুকুট। গাল গুলো কি ভীষণ টসটসে। মিরার মন চাচ্ছে, কল্পনার ভেতর ঢুকে গিয়ে তার গালগুলো টিপে দিক সে। আবার মেয়েটা হুট করেই। অভিমান করলো ! সঙ্গে সঙ্গে তার দিকে ছলছল চোখে তাকালো৷ ইমানের কথা অনুযায়ী তার ঠোঁট উলটে এলো।
আহারে! মিরার যে কি মায়া লাগলো তখন৷।
কল্পনার মেয়েটাকে বলতে মন চাইলো, এই মেয়ে! তুমি অভিমান করেছো কেন? হু? তুমি কান্না করো না শেহজাদী! তুমি খুবই ভাগ্যবতী। রাজকপাল তোমার! অবশ্য তুমি তো রাজকন্যাই! তোমরা সুখে থাকো। আমি তোমাদের সুখের নিরব সাক্ষী হবো। আবারো বলছি তুমি কেঁদো না। তোমাকে কাঁদতে দেখলে আমারো কান্না পায়। অবশ্য আমার একটুতেই কান্না পায়৷ কিন্তু তোমার ব্যাপারটা আলাদা। তুমি আমার খুব প্রিয় একজনের প্রিয়তমা! কাজেই তোমার জন্য আমার অন্যরকম একটা টান জন্ম নিচ্ছে। তোমার জন্য আমি নিজ হাতে একটা জামা তৈরি করবো। জামায় আটটা ঘের থাকবে। আট ঘের কেন থাকবে জানো? কারণ আমি আট মিনিট চিন্তা করার পর বুঝতে পেরেছি, আমি তাকে ভালোবাসি!
কল্পনার রাজ্যে বেশিক্ষণ থাকা নিষিদ্ধ। এইজন্যই মিরাকে সেই মিস্টি মেয়েটার কাছ থেকে বিদাই নিতে হলো। তার ও চোখ টলমল করছে। সে তার চোখের জল কাউকে দেখাতে চায় না। এইজন্য মুখ ঘুরিয়ে রাখলো। এরপর হাজারো চেষ্টা করেও চোখের পানি আটকাতে সক্ষম হলো না সে। ঠোঁট উলটে নিরবে কেঁদে ফেললো সে।
★★★
— মিস ইরা! আপনি কি ব্যস্ত?
ইরা লবিতে বসে আপুর অপেক্ষা করছে৷ সকাল দশটা বাজে। নাস্তা করে রুমে না ফিরে গিয়ে লবিতেই বসে আছে সে। কখন ফিরবে মেয়েটা? মা ফোন দিলে কি জবাব দিবে? আপু সারারাত বাইরে ছিল শুনলে মা হার্ট এটাক করবে নিশ্চয়ই! তাকে বকাও দিতে পারে। আর আপু ইমানের সঙ্গেই বা কি করছিল? কি এমন কাজে আটকা পড়লো তারা যার জন্য রাতে থেকে যেতে হলো তাদের? আর তারা আছেই বা কোথায়? এতোসব ভাবনার মধ্যে সাদের কথা তাকে বিরক্ত করলো।
সে বিরস মুখে বলে, জি ব্যস্ত আছি৷
— কিন্তু আমি তো দেখছি আপনি চুপচাপ বসে আছেন।
— আজ্ঞে না। আমি বসে বসে মশা মারছি৷
— মশা মেরে কাজ কি?
— আমি মশা নিধন কমিটির সভাপতি।
সাদ শব্দ করে হাসলো। ইরা বলে উঠে, মদের নেশা কেটেছে?
সাদ মুখে কালো করে বলে, কালকে একটু বেশিই ড্রিক করেছিলাম। বাই দ্যা ওয়ে, থ্যাংকস। আমি নাকি অনেক পাগলামি করছিলাম ম্যানেজার বলব সঙ্গে সাড়ে তিন হাজার টাকা ফাইনের রিসিটও দিয়েছে৷ । কার গায়ে যেন পানি ঢেলেছিলাম। আপনি এসে আমাকে সামলেছেন৷
— মদ খাওয়া হারাম। জানেন কি? ( রাগী গলায়)
সাদ মাথা নিচু করলো। এ যেন মেয়ে নয় বরং ধানি লংকা! বাপ রে! কি রাগ!
সাদ নিচু গলায় বলে, জানি৷
— জানেন কিন্তু মানেন না! সেই জানায় লাভ আছে কোন?
— না। নেই।
ইরা নিউজপেপার হাতে নিয়ে বলে, কালকে আপনি আজেবাজে অনেককিছু করেছেন৷
সাদ তার পাশে বসে ইনোসেন্ট ফেস করে বলে, বিশ্বাস করুন মিস ইরা! আমার কিছু ই মনে নেই৷ কালকের জন্য সর্যি! আজকের পর মদ হতে একশ হাত দূরে থাকব আমি।
ইরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। তার মানে কালকে যে তাকে চুমু খেয়ে কিসব বলছিলো সেগুলোও মনে নেই ছেলেটার। বড় বাঁচা বাঁচলো সে!
সাদ বলে, বাই দ্যা ওয়ে, আমি সাদ খান। সাইকোলজির স্টুডেন্ট ছিলাম। ফাইনাল সেমিস্টার শেষ করে বেকার আছি। আপনি ?
— আমি এপ্লাইড ফিজিক্স এ অর্নাস করছি। লাস্ট ইয়ার৷
সাদ অবাক হয়ে বলে, ঢাকা ভার্সিটির স্টুডেন্ট আপনি?
— হ্যাঁ।
— ওয়াও! আমিও ঢাকা ভার্সিটির প্রাক্তন ছাত্র।
ইরা একবার তার দিকে তাকালো। এরপর চোখ ফিরিয়ে নিলো৷ আজকাল মদখোররাও সাইকোলজি নিয়ে পড়ে!
সাদ উৎসাহ নিয়ে বলে, তাহলে তো আমি তোমার সিনিয়র।
ইরা রাগী গলায় বলে, তো? র্যাগ দিবেন এখন? আর তুমি করে কেন বললেন?
— আরে! কি বলো এসব! তুমি মাশাল্লাহ অনেক ব্রিলিয়ান্ট। এমবিশন কি তোমার?
— পিএইচডি করার ইচ্ছা আছে৷ আপনার এইম কি?
সাদ বিড়বিড় করে বলে, পিএইচডি হোল্ডারের জামাই হওয়ার ইচ্ছা আছে আপাতত!
ঠিক সেই সময় মিরা আর ইমান ফিরে এলো। ইরা সঙ্গে সঙ্গে উঠে বোনের কাছে গেল এবং একসঙ্গে অনেক প্রশ্ন করতে লাগলো। তাকে এতোটা ব্যতিব্যস্ত হতে দেখে ইমান বললো, তোমার বোনকে কিডন্যাপ করা হয়নি। চিল ইরা। কুল ডাউন।
ইরা চুপ বনে গেলো। ইমানের কণ্ঠস্বর শোনার সঙ্গে সঙ্গে তার গা শিউরে উঠে। বুকে টান লাগে। এক ঝাঁক ক্লান্তি এসে শরীরে হানা দেয়।
সেদিন ও অনেক বৃষ্টি হলো। ওয়েদার রিপোর্ট জানান দিলো, সামনের দিনে ওয়েদার আরো খারাপ থাকবে৷ কাজেই সব কাজ ফেলে রেখে তারা সেরাতেই একটা মাইক্রোবাস ভাড়া করে ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হলো।
ভোরের দিকে ঢাকায় এসে পৌঁছে তারা৷সারা রাস্তা মিরা ঘুমিয়েক পাড় করে দেয়। মিরাদের বাসার সামিনে গাড়ি থামলে, সে নেমে যাওয়ার আগে, ইমানের কাছে ফিরে এসে ফিসফিস করে বলে, আল্লাহ হাফেজ ইমান৷ আমার সঙ্গে আপনার আর নাও দেখা হতে পারে। আপনার শেহজাদীকে আমার তরফ থেকে অনেক দোয়া দিবেন। এবং তার জন্য আমি একটা ছোট উপহার পাঠাবো। সে যেন সাগ্রহে উপহারটা নেয়! ভালো থাকবেন৷
ইমান তার দিকে তাকালো অবিশ্বাসের চাউনীতে। আর নাও দেখা হতে পারে মানে? মিরা তার দিকে তাকিয়ে নির্মল হাসি দিলো৷এই হাসিটা ইমানের জন্য কাটাস্বরুপ।
ভোরের মিস্টি আলোয় ইমান দেখলো, একটা অভিমানিনীকে! যার চোখে মুখে অভিমানে উপচে পড়ছে৷ চোখ তার ছলছল। স্বচ্ছ ও শুভ্র চোখের অশ্রুমালায় চোখের কাজল লেপ্টে যাচ্ছে। ঠোঁট উল্টিয়ে সে কান্না চেপে কথাগুলো অনর্গল বলে দিলো!
চলবে।
[ বোনাস পার্ট কেমন লাগলো সবার? ]