সিন্ধু ইগল – (২৮)
ইসরাত জাহান দ্যুতি
-‘স্কুল ছুটির পর তোমাকে আশেপাশে যখন চোখ বুলিয়ে খুঁজতাম, তুমি দূর থেকে আমাকে ডেকে উঠতে “আমার বোকারানি! এই যে এদিকে আমি।” তখন তো সত্যিই খুব বোকা ছিলাম। আমাকে বোকা কেন বলতে তাও বুঝতাম না৷ আমার বন্ধুরাও আমার কত শত কার্যকলাপে মাথায় গাট্টা দিয়ে বলত “গর্ধব তুই একটা!” আমাদের বাসা থেকে খালামণির বা চাচ্চুর বাসা রিকশায় যেতে ভালোই সময় লাগত। খালামণিদের বাসায় সেদিন বিকালে ঘুরতে গিয়েছিলাম আম্মুর সাথে। সেদিন তোহাদেরকেও খালামণি বাসায় ইনভাইট করেছিল। তোহা, ওর বড়ো ভাই আর ওর আম্মু এসেছিল। এই তোহা হচ্ছে আমাদের ক্লাসমেট ছিল। আমার আর আলিয়া দুজনের সঙ্গেই মিশত ও। চাচ্চু সেদিন বাসায় ছিল না। আর আমার আব্বু তো তখন বিদেশ।’
বিদেশ শব্দটা উল্লেখ করার পর হঠাৎ করে আয়মান হেসে উঠল, ‘এই নক্ষত্র, আমি বিদেশ বলতে কী জানতাম এটা তোমার মনে আছে?’
জায়িন প্রশ্নটা শুনে আয়মানের হাতের দিক থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে ওর দিকে তাকাল, আয়মান মিটিমিটি হাসছে ওর দিকে চেয়ে। কপট বিরক্ত দেখিয়ে ও বলে উঠল, ‘প্রথম কথা, তুমি আমাকে শুধু নক্ষত্র বা শুধু রাজ বলে ডাকবে না৷ নক্ষত্ররাজ একত্রে উচ্চারণ করবে।’
-‘ধুরঃ! আমার এখনো তোমার নাম পুরোটা ডাকতে কষ্ট লাগছে। সম্ভব না।’
-‘সম্ভব করিয়ে ছাড়ার ক্ষমতা তো আমার আছেই। যাই হোক, দ্বিতীয় বিষয়টা তুমি আমাকে স্মরণ করিয়ে দিলে মাত্র। তোমাকে যখন জিজ্ঞেস করেছিলাম, তোমার আব্বু কী করে? তুমি বলেছিলে আব্বু বিদেশ থাকে। জানতে চাইলাম কোন দেশে? তুমি বললে বিদেশে। আমি মাত্র দু’দিনেই বুঝে গিয়েছিলাম তোমাকে, কোন মাত্রার বোকা তুমি! তুমি যে বিদেশ বলতেও একটা আলাদা রাষ্ট্রকে বুঝতে সেটা ভেবে তো আমার এখনো সেদিনের মতোই দমফাটা হাসি পাচ্ছে।’
-‘হুঁ, সেদিন তুমি বিদেশ কী বুঝিয়ে দিয়েছিলে। তোমার সাথে কথা বলতে গিয়ে আজ অনেক কিছু মনে পড়ে যাচ্ছে।’
-‘আরও অনেক কিছুই মনে পড়বে। এখন মেইন কথাতে আসো।’
প্রলম্বিত শ্বাস ছেড়ে আয়মান বলতে শুরু করল, ‘আমার চাচ্চু আর আমার ছোটো খালামণির বিয়ে হয়েছিল। এ জন্যই তখন বলছিলাম চাচ্চু বা খালামণির বাসায় যেতে রিকশাতে ভালোই সময় লাগে। চাচ্চু নিজের ব্যবসা শুরু করার পর আলাদা বাসা নিয়ে থাকত। তো ওইদিন আমি, আলিয়া আর তোহা বাসার ছাদে এসেছিলাম খেলতে আর ছাদের ফুলগাছগুলো দেখতে। আলিয়ার সঙ্গে আগেরদিন স্কুলে হয়তো তোহার ঝগড়া হয়েছিল। তাই সেদিন তোহা ওর সাথে কথা বলছিল না। আমার সঙ্গে ঘুরছিল বেশি। আলিয়া এমনিতেই তো আমার পছন্দের জিনিসের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হতো। সেটা এখনো৷ আর সেই জিনিসটা যা-ই হোক, ও নিজের করতে চাইত। তোহা যে আমার সঙ্গে বেশি কথা বলছে, শুধু আমার সঙ্গে ঘুরছে তা ওর খু্ব খারাপ লাগছিল। বারবার তোহাকে ডাকলেও তোহা ওর সঙ্গে কথা বলছিল না। আমি আর তোহা ছাদের গাছগুলো দেখতে দেখতে অনেকটা কর্ণারে চলে এসেছিলাম। আলিয়া তখন রাগ করে ছাদের মাঝে দাঁড়িয়ে আমাদের দেখছিল আর কাঁদছিল। আমি ওকে কাঁদতে দেখে আমাদের কাছে ওকে ডাকি। ও কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে এসে দাঁড়ায় আমাদের সঙ্গে। তোহা ওকে দেখে আরও বেশি করে আমার সঙ্গে গল্প করতে থাকে। ও তোহাকে তখনো বারবার ডাকছিল, কথা বলার চেষ্টা করছিল। কিন্তু তোহা ওর সাথে একেবারেই কথা বলছিল না বলে ও খুব রেগে গিয়ে তখন ওকে ধাক্কা মারে৷ ছয় তলার ছাদ থেকে তোহা নিচে পড়ে যায়। আসলে ও ভাবেনি যে তোহা নিচে পড়ে যেতে পারে। আমার দৃষ্টি আগে থেকেই তখন নিচে ছিল। তোহার মাথা ফেটে রক্ত ছড়িয়ে সারা মুখ রক্তে মেখে যাওয়া দৃশ্যটুকু দেখে আমি চিৎকার করতেও ভুলে গিয়েছিলাম। আমার তখন কেমন লাগছিল আমি ঠিক এক্সপ্লেইন করতে পারব না। আলিয়ারই বা কীরকম লাগছিল সেটাও আমি জানি না। কারণ আমি ওর দিকে তাকাইনি৷ ও কখন আমার পাশ থেকে ছুটে নিচে চলে গিয়েছিল জানি না। নিচে গিয়ে কাকে কী বলেছিল সেটাও জানি না। কিছুক্ষণের মধ্যেই আম্মু দৌঁড়ে ছাদে আসে। আমাকে ছাদের কিণারাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আম্মুর যেন কী হলো। আম্মু কেঁদে উঠল শব্দ করে। তখন আমি পিছু ফিরে তাকাই। আর ছুটে আম্মুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলি, “আম্মু! তোহা পড়ে গেছে! ওর মাথা ফেটে গেছে!” আম্মু আমাকে প্রথমে জড়িয়ে ধরলেও পরে ছেড়ে দিয়ে কতগুলো থাপ্পড় মারে আর বলতে থাকে, “কী করলি তুই? কত বড়ো সর্বনাশ ডেকে আনলি? কী করব তোকে নিয়ে এখন? ইয়া আল্লাহ! কী হবে এখন?” আম্মু প্রথম সেদিন আমাকে মেরেছিল। আমি কাঁদতে কাঁদতে জিজ্ঞেস করি আম্মুকে, “তুমি আমাকে মারলে কেন?” আম্মু আর কিছু বলার আগেই খালামণি আসে। সেও আমাকে দু’টো থাপ্পড় মেরে কাঁদতে থাকে৷ আর বলে কী করে ফেললাম আমি। সেদিনের সারাটা রাত আম্মু আমাকে নিয়ে খালামণিদের বাসাতেই ছিল। জড়িয়ে ধরে খালি কেঁদেছে। কেউ সেই রাতে ঘুমায়নি। শুধু আমি ছাড়া। সবাই খুব টেনশনে ছিল তা আমি বুঝতে পারলেও ভয়ে কথা বলছিলাম না। যদি আবার মেরে বসে, তাই। আমি তখনো জানতে পারিনি আলিয়া পুরো দোষটা আমাকে চাপিয়ে দিয়েছে। কতটা বোকা ছিলাম!
ওইদিনই তোহাকে হয়তো কবর দিয়ে দেওয়া হয়। তার পরের দিন দুপুরের ঘটনা৷ আম্মু, চাচ্চু আব্বুকে ফোনে ট্রাই করছিল বারবার। কিন্তু আব্বুকে পাওয়া যাচ্ছিল না ফোনে। তারপর দেখি হঠাৎ করেই তোহার আব্বু সাথে আরও কে কে যেন বাসায় পুলিশ নিয়ে আসে। খুব চিৎকার, চেঁচামেচি হচ্ছিল৷ আমাকে মারতে তোহার আব্বু বারবার এগিয়ে আসছিল। আর বাকিরা ওনাকে আটকাচ্ছিল। কতক্ষণ ওই সব ঝামেলার পর মহিলা কনস্টেবল এসে আমাকে টানতে শুরু করে। আম্মু আর খালামণি খুব কাঁদছিল আর আটকাতে চাইছিল আমাকে। আমি যে তোহাকে ধাক্কা দিইনি, আলিয়া দিয়েছে তা কেউ কানেও তোলেনি বোধ হয়। সেদিন থেকে আমার চারপাশে নতুন জগত আবিষ্কার করলাম, নক্ষত্ররাজ। শিশু মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত এক অপরাধে দোষী প্রমাণিত হলাম। যেহেতু সুস্থ মস্তিষ্কে খুনের অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে, আর তা প্রমাণও হয়েছে, তাই দশ বছর মেয়াদে আটকাদেশে প্রদান করল আমাকে। কিন্তু বিচারপতির বোধ হয় আমাকে দেখে করুণা হয়েছিল। তাই কমিয়ে এনে তা মেয়াদ পাঁচ বছর করে পরবর্তীতে। তারপর থেকেই আম্মুর কোল ছাড়া ঘুমাতে না পারা আমি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঁচটা বছর কাটালাম। প্রথম কয়েক মাস আম্মু আসত, খালামণি আর চাচ্চু আসতো। কিন্তু হঠাৎ তাদের সবার আসা বন্ধ হয়ে গেল। আব্বুও আসেনি পাঁচটা বছরে। ওই পাঁচটা বছরে কী ঘটেছিল তা এখনো অজানা আমার। কেন তারা আসেনি আমার কাছে?’
জায়িন পাশ থেকে পানির বোতল উঠিয়ে আয়মানকে এগিয়ে দিতেই ও ভ্রু কুঁচকে ফেলে, ‘সিগারেট থাকলে দাও। আসার পর থেকে বিরক্ত হয়ে আছি কিন্তু।’
পানির বোতলটা পূর্বের স্থানে রাখতে রাখতে জায়িন বলল, ‘আরেকটা বিষয় অজানা আমার। শুরু থেকেই জানার আগ্রহ ছিল। কিন্তু তখন জানা হয়নি। আলিয়া আর তুমি দু’জন আসতে আলাদাভাবে। আর যেতেও দুজন দু’দিকে। তোমরা এক সঙ্গে কেন থাকতে না? ব্যাপারটা কি এমন আলিয়া তোমার খালামণির বাসায় থাকত?’
-‘এমনই। আমরা ছোটো ছিলাম তো। তাই আসল ব্যাপারটা জানতাম না। খালামণির মা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা ছিল না নাকি। আম্মু তার ছোটো বোনকে খুব ভালোবাসত। তাই আমি আর আলিয়া জমজ হতে আম্মু আলিয়াকে খালামণি আর চাচ্চুর হাতে তুলে দেয়। ছোটো থেকেই আমরা তখন জানতাম আমরা কাজিন। আপন বোন নই। অনেক কিছুই জানলাম তো জেল থেকে ফিরে এসে। কত কিছু আবিষ্কার করলাম তখন!’
-‘কত কিছু বলতে কী কী?’
-‘থাক ওসব। আমার যাবার ব্যবস্থাটা করো তো দ্রুত। এখানে ফাউ সময় কাটাচ্ছি। কাজ আছে অনেক।’
কাউচ ছেড়ে উঠে হাসতে হাসতে জায়িন জিজ্ঞেস করল, ‘জাইমাকে সমুদ্রে ফেলবে?’
স্বাভাবিকভাবেই তাকাল আয়মান জায়িনের দিকে, ‘মানুষটা তুমি বলে ওকে ছাড় দেওয়া উচিত নয়। তোমার জায়গায় অন্য কেউ থাকলেও ও বিশ্বাসঘাতকতা করত। তাই ওকে খতম করাই বেটার।’
-‘ও তোমাকে ভালোবাসে, তোমার প্রতি যথেষ্ট কৃতজ্ঞ। আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে তুমি কিছু করার আগেই ও নিজে খুন করত তাকে৷ আমি বলেই সাপোর্টটা আমাকে দিয়েছে।’
ঠোঁটটা কিঞ্চিৎ সময় কামড়ে রেখে তারপর ছেড়ে দিয়ে খানিকটা হাসতে হাসতে আয়মান জিজ্ঞেস করল জায়িনকে, ‘কী এমন দিলে ওকে? এত সুন্দরভাবে বশ মেনে গেল তোমার?’
আয়মনের ঠোঁটের কোণের হাসিটা প্রগল্ভা যুবতীদের মতো ছিল। জায়িনের যা অসহ্য লেগেও ভালো লাগল আবার। কেমন করে যেন ওর দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে থাকল সে। তারপর হঠাৎ ওর কাছে গিয়ে ঝুঁকে পড়ে বলল, ‘তোমাকে বিয়ে করব আর ওকে সুন্দর একটা ঝুট-ঝামেলা ছাড়া জীবন দেবো। এবং দিয়েছিও৷ তুমি সুস্থ থাকতে তো কোনোদিনও ওকে মুক্তি দিতে না। আমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। সেই প্রতিশ্রুতি রেখেছি। তাই বশ মেনে গেছে।’
-‘প্রথম কথাটা তুমি কী বললে? আবার রিপিট করো তো!’
হাসিটা ঠোঁটের কোণা থেকে মিলিয়ে গেলেও তবে গম্ভীরতাও দেখা গেল না আয়মানের চেহারায়। যেন জায়িনের কথাটাকে সে মজাই ধরে নিয়েছে। আর জায়িন তার সেই ভাবতত্ত্ব বুঝে তা ভুল প্রমাণিত করে দিতেই চট করে ওর ঠোঁটে চুমু খেয়ে বসল। ঘটনাটা অপ্রত্যাশিত হলেও আয়মান তখনো কেন যেন শান্ত এবং নীরব রইল। শুধু স্থির দৃষ্টিতে চেয়ে রইল জায়িনের দিকে। সেই দৃষ্টি দেখে জায়িন কিছু একটা বুঝে নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী গলায় বলল, ‘সময়টা ষোলো বছর পর৷ আমিও এখন আর সেই ভালো ছেলে নেই। আমার বোকারানিও এখন আর বোকা, অচঞ্চল নেই। আমরা দুজনেই এখন একই জগতের অত্যন্ত কঠোর মানুষ হলেও আমাদের লক্ষ্য ভিন্ন। আমার লক্ষ্য আমি আমার বোকারানিকে ধরে রাখব আমার কাছে। যার জন্য নিজের মায়ের দেশ ছেড়ে চলে আসা, আবার ফিরে আসা সেই আন্ডারওয়ার্ল্ডে। তার হাতে মরতে মরতে বেঁচে গেলাম। তাকেই ছেড়ে দিই কী করে? তুমিও যে সেই পুরোনো নক্ষত্ররাজের মতো আমাকে ট্রিট করবে না, তাও আমার জানা। এখান থেকে যাবার আশা ছেড়ে দাও। তুমি হারিয়ে যাবার পর আমার সাথে কী হয়েছে তার অনেক কিছুই তুমি জানো না। জানি জানার প্রয়োজনবোধও করো না। এতগুলো বছর পর কীসের টানে সব ছেড়ে ছুঁড়ে তোমাকে বেঁধে রাখতে চাইছি, তা জানতে হলে আমাকে তোমার বিয়েটা মাস্ট করতে হবে।’
কথাগুলো শেষ হতেই আয়মান ব্যালকনি থেকে বাইরে তাকাল। বাসার সামনের লন দেখে জিজ্ঞেস করল, ‘বাসাটা কি তোমার?’
-‘আমি তোমার পালানোর উপায় রাখিনি, জাদুরানি।’
এবার তির্যক দৃষ্টিতে তাকাল আয়মান জায়িনের দিকে। জায়িন মৃদু মৃদু হাসছে। এই হাসির অর্থ যে আয়মানের অভিসন্ধি সে ধরে ফেলেছে, তা আয়মান বুঝতেই রাগ হতে শুরু করল ওর। হঠাৎ হাসি থামিয়ে জায়িন কিছু স্মরণ হওয়ার ভঙ্গিতে বলে উঠল, ‘ওয়েট ওয়েট! আমি তোমাকে জাদুরানি বলেও ডাকতাম। কারণ, তুমি আমার কাছে থাকলেই সব কিছু ভালো লাগত। একদম জাদু করার মতো আমার মন ভালো হয়ে যেত। তাই জাদুরানিও ডাকতাম মাঝে মাঝে। তুমি কি আমার দেওয়া নাম স্মরণ রেখেই নিজের ছদ্মনাম রেখেছিলে? কিন্তু তোমার না আমাকে মনে ছিল না?’
গুরুত্বহীন সুরে জবাব দিলে আয়মান, ‘একটা ছদ্মনামের প্রয়োজনবোধ করতে হঠাৎ ভাবতে ভাবতে জাদু নামটাই মাথাতে এসেছিল। মনে হচ্ছিল এই নামটাতে আমাকেই ডাকা হতো। কে ডাকত? তা আমার মনে আসছিল না। আর মনে করার চেষ্টাও করিনি৷ গুরুত্ব দিইনি। এইটাই কারণ। তাছাড়া তোমার কথা তখনো মনে আসেনি। আর আমার নামের সাথে মিল রেখেই আলিয়ার নাম রাখা।’
তবুও জায়িনের মনটাতে ভালো লাগার আবেশ অনুভব হলো৷ আবারও আয়মানের কাছে এগিয়ে এসে ওর দিকে ঝুঁকে পড়ে মৃদুস্বরে বলল, ‘আমাকে তুমি ভুলে গেলেও তোমার মন আর মস্তিষ্কে আমি অদৃশ্য অবস্থাতে অধিষ্ঠিত ছিলাম। প্রেমের তির অন্তঃকরণে আমার তো গেঁথেছিলই টিন এজ সময়ে। তোমারও গেঁথেছিল। কিন্তু আমার বোঝার ক্ষমতা থাকলেও তোমার ছিল না।’
বলেই দাঁড়াল সে, রুমে ফেরার জন্য পা বাড়াল। আয়মান চুলের মাঝে হাত ডু্বিয়ে ব্রাশ করতে করতে তখন বলে উঠল, ‘ভালো সম্পর্কটাকে তুমি নষ্ট করতে চাইছ, নক্ষত্ররাজ। শক্তি দিয়ে আমাকে ধরে রাখার ক্ষমতা তোমার হলেও ব্রেইনিং দিয়ে হয়নি।’
-‘তুমি বিশ্বাস করো?’
পেছন ফিরে থাকা অবস্থাতেই শুধু ঘাড় ফিরিয়ে জিজ্ঞেস করল জায়িন। আয়মান উঠে এসে ওর পিছে দাঁড়াল তখন। জবাব দিলো, ‘কনফিডেন্সের সঙ্গেই বলছি।’
জায়িন জবাব শুনে প্রশস্ত হাসল শুধু।
______________________
***অনুরোধ, স্টিকার, Nice, Next কমেন্ট করবেন না প্লিজ। আমি প্রয়োজনে আপনাদের মন্তব্যও করতে বলব না আর। এবং কপি করা থেকেও বিরত থাকবেন। আমি আমার লেখা শুধু আমার গ্রুপ, পেজ ছাড়া অন্য কোথাও অ্যালাওড করি না।