সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ৬
,
,
,
,
আদ্রি অবাক নয়নে আশেপাশের ভিউ দেখচ্ছে। মুখের কোণায় লেগে আছে তার চমৎকার হাসি। আদ্রি নির এর সাথে মিটিং এ আসেছে। মিটিং টা হচ্ছে ব্লু রোজ রয়েল হোটেল এর ৮ম তলায়। এখান থেকে চারিদিক কারা ভিউ চমৎকার লাগচ্ছে।সবুজ গাছ মেঘ আর পাখির খেলা যেনো সৌন্দর্য কে বৃদ্ধি করে দিচ্ছে।
আদ্রিতার ঠোঁটের কোণায় লেগে থাকা হাসিটা জেনো নির এর বুকে ঝড় তুলচ্ছে। নির এক ধ্যানে তাকায় আছে আদ্রির দিকে চোখে সানগ্লাস থাকায় আদ্রি সেটা টের পাচ্ছেনা নাহলে নির্ঘাত এতোক্ষনে লজ্জায় লাল নিল হয়ে যেতো।
নির এক পা দুই পা করে সামনে এগুচ্ছে আদ্রির দিকে। আদ্রি নেশাতে জেনো মাতাল হয়ে উঠেছে সে। কি করছে না করছে সেদিকে কোন খেয়াল ই নাই তার। নির আদ্রির চুলে মুখ ডুবাতে যাবে এমন সময় দরজায় কেউ নক করে। আদ্রি দরজার নক করার শব্দে পিছনে ঘুরতেই নির এর মাথার সাথে বাড়ি খায়।
আদ্রিঃআহহ
আদ্রির মুখে আহহ শুনে নির হাইপার হয়ে যায়
নিরঃকি হয়েছে লাগেছে বেশি ধুর কেন আসতে গেলাম আমি এখানে দেখি চলো ডাক্তার কে দেখাতে হবে চলো
(আদ্রির হাত ধরে সামনের দিকে হাটা ধরে)
আদ্রি অবাক হয়ে ওইখানেই স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়ায় আছে। সামন্য এইটুকু ব্যাপারে এতোটা হাইপার হচ্ছে কেন সেটাই আদ্রির মাথায় ঢুকচ্ছে না।
নিরঃকি হলো দাঁড়ায় আছো কেন চলো। এক মিনিট মাথা ঘুরচ্ছে তোমার হাটতে পারবা না কোলে নিবো(আদ্রির কাছে এসে)
আদ্রিঃনাহ নাহ আমি একদম ঠিক আছি আপনি হাইপার হচ্ছেন কেন সামন্য একটু লেগেছে
নিরঃসামন্য এটা সামান্য কতো জোড়ে আওয়াজ হলো। আর ব্যাথা না পেলে আহ করে চিল্লায় উঠলা এমনি এমনি বাচ্চা পেয়েছো আমাকে
(রাগী কন্ঠে)
আদ্রিঃসত্যি স্যার আই এম ফাইন দেখেন বার বার কেবিনে কেউ নক করচ্ছে হইতো ক্লাইন্ট রা চলে এসেছে
নিরঃক্লাইন্ট মাই ফুট তোমার হেলথ আগে।
আদ্রিঃআমি ঠিক আছি এই দেখুন স্যার প্লিজ আপনি চিন্তা করবেন না
নিরঃযা খুশি করো। ধুর (রাগে রি রি করতে করতে যায়ে দরজা খুলে দিলো)
দরজা খুলতেই মিস্টার খান আর তার সাথে দুইজন এমপ্লয় ভিতরে ঢুকলো
মিস্টার খানঃএনিথিং রং ইয়াং বয় এতোক্ষন ধরে নক করছি কোন রেসপন্স নাই
নিরঃবিজি ছিলাম তাই খুলিনি কোন প্রবলেম(এটিটিউড নিয়ে)
নির এর এমন ত্যাড়া উত্তরের জন্যই নাহিদ খান নির কে সহ্য করতে পারেনা তার উপরে নির এর ক্যারেক্টার ওর কাছে ভালো লাগেনা। কিন্তু বিজন্যাস এ খুব শার্প ছেলে টা তাই তো এতোটা না পছন্দ করলেও তার সাথে ডিল করার জন্য এতোদিন ধরে তার সাথে মিটিং এর ডেট ফিক্স করার জন্য কতোটা না ঘুরপাক খেতে হয়েছে।
ব্যপারটিকে হেসে উড়ায় দিলেন মিস্টার খান। আদ্রি টেবিলে সব কিছু রেডি করছিলো নির এর এমন উওরে মাথা নিচু করেই হেসে ফেলে সে ঠোঁট চেপে
নাহিদ খান মেয়ে কে এখানে দেখে চমকে যান তিনি মোটেও এখানে উনার মেয়েকে আশা করেন নি কিছু দিন আগেই তো সব কম্পানিকে বারন করেছিলেন যাতে কেউ আদ্রিকে কাজ না দেয় এর জন্য কতোজন কে টাকা দিয়েছেন তো আবার কতজন কে হুমকি। কিন্তু নির এর কোম্পানির কথা মাথা থেকেই বের হয়ে গেছিলো উনার উনি মনে করেছিলেন নির হয়তো আদ্রিকে জব দিবেনা কিন্তু এখানে তো উল্টো কান্ড দেখচ্ছেন তিনি।
আদ্রিঃস্যার সব কিছু রেডি আপনি যদি চেক করে নিতেন (মাথা তুলে তাকাতেই আদ্রি অবাক হয়ে যায় মিস্টার খানকে দেখে যেহেতু সে নতুন তাই সে জানতোনা যে কার সাথে মিটিং টা তবুও নিজেকে সামলে নিয়ে সজা হয়ে দাঁড়ায়)
আদ্রিঃকান্ট্রোল ইউর সেল্ফ জানু। এনি তোর কেউ না জাস্ট ক্লায়েন্ট নাথিং এলস গট ইট বেবি কুল?(মনে মনে কথা গুলো বলে নিজেকে শান্ত করলো)
বেশ কিছুক্ষন মিটিং চললো। মিস্টার খান এর পিএ খুব সুন্দর করে সব প্রেজেন্ট করলো আর সব কিছু মনোযোগ সহকারে শুনলো নির।
নাহিদঃএটা ছিলো আমাদের প্ল্যান এখন আপনি বলুন ইয়াং ম্যান আপনি কি আমাদের প্রস্তাবে রাজি।
নিরঃহুম আপনাদের প্রডাক্ট অনেক ইমপ্রেসিভ আর এতে লাভ ও হবে আমি এই ডিল ডান করলাম।
আদ্রিঃস্যার আপনি যদি অনুমতি দেন আমি কিছু বলতাম
(মাথা নিচু করে)
নিরঃইয়েস মিস.আদর,
নির এর মুখে পুনরায় আদর শুনে শুকনো ঢোক গিলে একবার সামনে বসা তার বাবার দিকে চাইলো করুন চোখে। নাহিদ খান ও অবাক হয়ে গেছেন কিন্তু তবুও কিছু বললেন না কারন এখন যদি তিনি রিয়েক্ট করেন হিতে বিপরীত হতে পারে আর এতে উনার কোম্পানির লস।
আদ্রিঃস্যার এই প্রডাক্ট এ যেসব ক্যামিকেল ইউজ করা হবে সেটা প্রথম কিছু দিন ত্বক কে উজ্জ্বল আর ফ্রেশ রাখলেও পরবর্তী তে এটা কিন্তু চেহারার বেপক ক্ষতি করবে আর এতে কিন্তু কাস্টমার রা বেশ ক্ষিপ্ত হয়ে যাবে আর হতে পারে প্রডেক্ট টা বেন হয়ে যাবে আপনার আরেক বার ভাবে নেওয়া উচিৎ ডিল সাইন করার আগে।
নিরঃহুম কথা কিন্তু আপনি ঠিক বলেছে আই এম সরি মিস্টার খান আমি আমার কোম্পানির দুর্নাম করাতে পারবোনা। গুড লাক।
নাহিদঃদেখো নির এই দুই দিন কার মেয়ে কি এমন জানে বিজন্যাস এর ব্যাপারে হ্যা। যতোদিনে ক্রিম তার আসল রুপ দেখাবে ততোদিনে আমাদের প্রফিট উসুল হয়ে যাবে তুমি আজাইরা কারো কথা শুনে নিজের এতো বড় ক্ষতি করতে পারোনা।
নিজের বাবার মুখে এমন কথা মোটেও আশা করেনি আদ্রি। কিন্তু সত্যি তো এটাই সামনে বসে যে তার অপমান করচ্ছে সে তার জন্মদাতা পিতা। চোখ জোড়া ছলছল করে উঠলো আদ্রির।
নির এর মোটেও পছন্দ হলোনা নাহিদ খান এর কথা সজোড়ে টেবিলে বারি মেরে উঠে দাঁড়ায় পা দিয়ে লাথি দিয়ে ৪ হাত দূরে ফেলে দিলো চেয়ার টা সবাই ভয়ে জোড়সোড় হয়ে গেলো হঠাৎ নির এর এমন রুপ কারোই কাম্য ছিলোনা।
নিরঃহাউ ডেয়ার ইউ মিস্টার খান হাউ ডেয়ার ইউ ব্লাডি। আপনার সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি আপনি আমার সামনে দাড়ায়ে কাকে কি বলচ্ছেন আপনার হুস আছে আই সোয়ার আপনি যদি আমার বাবার বয়সী না হতেন এই মূহুর্তে জিন্দা কবর দিতাম গেট লস্ট ফর্ম হেয়ার।
(চিল্লায়ে)
নাহিদঃএটা তুমি ঠিক করছোনা তুমি জানোনা তুমি কার সাথে কথা বলচ্ছো। তাও আবার এই মেয়েটার জন্য কে হয় এই তোমার কে হয় হ্যা।আমি এই প্রডাক্ট লঞ্চ করবোই তোমার সাথে নাহলে অন্যকারো সাথে দেখি কে আটকায়।
(চিল্লায়ে)
নিরঃও রেয়লি মিস্টার খান ডিড ইউ রেয়লি থিংক দেট ওকে আই প্রমিজ ওনলি 4 ডেয়েজ আপনাকে রাস্তায় নামাবো।
নাহিদঃদেখা যাবে
নিরঃহুম(চেয়ারে পা তুলে বসে)
নাহিদ চলে যেতেই আদ্রি নির এর সামনে দাঁড়ায়
আদ্রিঃকেনো এমনটা করলেন স্যার। মিস্টার খান এর সাথে এমন বিহেভ করাটা আপনার মটেও উচিৎ হয়নি।
নিরঃতাইনা আমার উচিৎ হয়নি ওর সাথে এই ভাবে কথা বলার কিন্তু ওর উচিৎ হয়েছে তোমার ব্যপারে ওই ভাবে বলার হাউ ডেয়ার হি।ওর সাহস কি করে হলো তোমাকে আজাইরা বলার (আদ্রির কাছে যায়ে আদ্রি চুল পিছন দিকে টেনে ধরে)
আদ্রিঃস্যার লাগছে
নিরঃআমার ও লেগেছিলো যখন ওই তোমাকে ওই ভাবে বলেছিলো
আদ্রিঃমানে(অবাক হয়ে)
নিরঃকিছুনা সব কিছু গুছিয়ে বাইরে গিয়ে গাড়িতে ওয়েট করো আমি আসছি।
ছাড়া পেতেই আদ্রি দেয় দৌড় যেনো বাঘের খাছা থেকে পালাতে পেরেছে। কিন্তু বাড়িতে যে ওর জন্য তুফান ওয়েট করচ্ছে সেটাও ওর জানা।
নির রাগে দেওয়ালে পর পর ঘুষি মারে কয়টা সে চাইনা যে আদ্রি তার ভয়ংকর রুপ দেখুক কিন্তু তবুও সে চেয়েও নিজেকে ঠিক রাখতে পারছেনা।
কিছুক্ষন পরে নিজেকে শান্ত করে সেও বাহিরে রওনা দেয় কিন্তু সেখানে এসে অবাক হয়।।
চলবে!!!!