#স্নিগ্ধ_আবেশে_তুমি
#তানজিনা_তিহা
#পর্ব_(১০+১১)
উফফফফ, আদ্রিজা। দূরে সরো প্লিজ। এভাবে গায়ে পড়ো না।
তূর্য মেয়েটিকে তার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিলেন। আমি তার দিকে ছলছল নয়নে চেয়ে আছি। তিনি একবার আমার দিকে তাকালেন হয় তো আমাকে দেখে তার কষ্ট হচ্ছে। ভদ্রলোক তাকে বললেন, কেমন আছো?
তূর্য মাথা নিচু করে উত্তর দিলেন, জ্বি, ভালো।
মিফু কোথায়?
ঘুমোচ্ছে হয় তো।
কেমন আছে?
ভালো।
ভদ্রলোক তূর্যকে এক একটি প্রশ্ন করছেন আর তিনি ছোট ছোট করে উত্তর দিচ্ছেন। ভদ্রলোক বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছেন। আর মধ্যবয়সী মহিলাটির দৃষ্টি যেন আমার থেকে সরছেই না। বারবার আমাকে দেখছেন। তূর্যকে যে মেয়েটি জরিয়ে ধরেছিল এখন তার দৃষ্টিও আমাতে। হয় তো সবাই জানতে চাচ্ছেন আমি কে?
নিরবতা কাটিয়ে মহিলাটি জিজ্ঞেস করলেন, তূর্য মেয়েটি কে?
তূর্য শান্ত কন্ঠে উত্তর দিলেন, ও মেহু।
কে ও?
এবার সবার দৃষ্টি তূর্যের দিকে। সবাই তার উত্তরের অপেক্ষায়, আমিও তার ব্যাতিক্রম নই। কিন্তু এরা কারা তা এখনো আমার কাছে অস্পষ্ট।
ও মেহরীমা মেহরোজ, আমার স্ত্রী।
তূর্যের মুখে একথা শুনে মনে মনে অনেক খুশি লাগছে কিন্তু প্রকাশ করলাম না। কিন্তু আদ্রিজা মেয়েটি এটা শুনে এক চিৎকার দিয়ে উঠলো।
কি!!!!! না কখনোই না আমি এটা মানি না।
তূর্য বললেন, এটাই সত্যি।
মেয়েটি মহিলার উদ্দেশ্য বললো, খালা মণি তূর্য কি বলছে? এ নাকি তূর্যের,,
মহিলা বললেন, কাম ডাউন, মাম্মা। আমি দেখছি।
এরপর তিনি তূর্যের সন্নিকটে গিয়ে বললেন, তূর্য আর ইউ মেড? কি বলছো এগুলো? তুমি তো জানো আদ্রিজা তোমাকে ভালোবাসে।
হ্যাঁ, কিন্তু আমি ভালোবাসি না, এটাই সত্যি।
তূর্য, স্টপ।
ভদ্রলোকটির হঠাৎ ধমকে তূর্য চুপ হয়ে গেলেন। এরপর ভদ্রলোক বললেন, তুমি বিয়ে করেছো আমাদের একটু জানালেও না? কেন?
হঠাৎ করে বিয়ে করেছি তাই জানাতে পারি নি, আর জানালেও হয় তো আপনি আসতেন না আমাদের জন্য তো আপনার সময় নেই।
তূর্য বেশি বলছো। আদ্রিজার কথা একবার ভাবলে না? মেয়েটা ছোট থেকেই তোমাকে পছন্দ করতো। তুমি ওর ভালো লাগার কারণ,
ছোট থেকে পছন্দ? আমি ওর ভালো লাগার কারণ? আমারও তো ভালো লাগার কারণ ছিলো সেগুলো?
তূর্য ইউ ক্রস ইউর লিমিট।
নো, মিস্টার তাওহিদ মাহমুদ। আমি আমার মতো আছি আমাকে আমার মতো থাকতে দিন।
বলে তূর্য উপরে চলে যান। আমি ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলাম সেখানে। আমাকে পিছন থেকে বেশ শক্ত করে জড়িয়ে রেখেছে মিফতা। চিৎকার শুনে ও আমার কাছে চলে এসেছে। আদ্রিজা মেয়েটি নেকামি কান্না কাঁদছে।মেয়েটি আমার নিকট এসে জিজ্ঞেস করলো, এই মেয়ে তুই কি জাদু করেছিস ওর উপর?
আমি চুপ করে রইলাম। সে আমার বাহুতে চাপ দিয়ে ধরে আবার বললো, তূর্য শুধু আমার এবং আমারই।
আমি একেবারে স্তব্ধ। অল্পক্ষণের মাঝেই ড্রইং রুমে একটা হইচই এর সৃষ্টি হলো। মেয়েটি আমাকে যা তাই বলছে। আমি নিরবে দাঁড়িয়ে শুনছি আর নিরবে চোখের জল ফেলছি। খানিকক্ষণ পরে হঠাৎ তূর্য এসে আমার হাত টেনে উপরে নিয়ে গেলেন। হঠাৎ কাণ্ডে সবাই আশ্চর্য কিন্তু আমি নই, এটা হওয়ারর ছিল আমি জানতাম। আমায় কখনো অন্যের গালমন্দ উনি শুনতে দেবেন না এ কয়েকদিনে আমি এতটুকুর ব্যাপারে গ্যারান্টি দিতে পারবো। তূর্য আমাকে উপরে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিলেন। আমি চুপ করে বসে থাকলাম। এরপর তিনি আমার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পড়লেন। তার দৃষ্টি আমাতেই নিবন্ধ। তিনি আমার দু হাত আঁকড়ে ধরে চুমু খেলেন। এরপর আমার চোখ থেকে প্রবাহিত হওয়া অবাধ্য জলগুলো আপন হস্তে নিয়ে বললেন, মেহু কেঁদো না প্লিজ। তোমার কান্না আমি সহ্য করতে পারি না।
তার কথা শুনে আমি হু হু করে কেঁদে ফেললাম। আমাকে তিনি শান্ত হতে বললেন। আমি আস্তে আস্তে শান্ত হয়ে গেলাম। এরপর উনি বললেন, তোমার মনে অনেক প্রশ্ন তাই না। এরা কারা তাই তো,
হুম।
ইনি আমার বাবা তাওহিদ মাহমুদ।
কি! আপনার বাবা উনি?
হুম।
আমি কিছু বললাম না। আমায় নিরব দেখে তিনি বললেন, জানো আমার বাবা না অনেক ভালো কিন্তু হঠাৎই,,
হঠাৎ কি?
কিছু না তোমার না জানলেও চলবে।
বলুন না।
বড় হও আগে।
আমি চুপ করে রইলাম। আমার মাথায় বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে মহিলা আর মেয়েটি কে। এক পর্যায়ে তাকে জিজ্ঞেসই করে ফেললাম।
ঐ মহিলা আর মেয়েটি কে?
তূর্য নিরব। তিনি কোন উত্তর দিলেন না। আমি দ্বিতীয় বার ও একই প্রশ্ন করলাম। তূর্য এবার আমার দিকে তাকালেন। এরপর আস্তে আস্তে করলেন, উনি আমার বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী।
বুঝতে পারলাম এনি ওনার সৎ মা। কিন্তু মেয়েটি কে? তা এখনো বলেন নি উনি। আবার বললাম, মেয়েটি আপনার কি হয়?
ও আদ্রিজা, উনার বোনের মেয়ে।
আপনাকে এভাবে জরিয়ে ধরেছিলো কেন?
এবার তূর্য আমার দিকে এমন দৃষ্টি স্থাপন করলেন যেন আমার এই প্রশ্নে সে অসন্তুষ্ট। আমার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে সে সেখান থেকে চলে গেলো। আমি ঠায় বসে থাকলাম।
খানিকক্ষণ পরে মিফতা আমার রুমে এলো। মিফতা রুমে প্রবেশ করে এক কোণে চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল। মেয়েটা হঠাৎ তাদের আগমনে বেশ ভয় পেয়েছে, কিন্তু কেন? এদেরকে ভয় পাওয়ার কি আছে? দুই ভাইবোনই চাপা স্বভাবের কোন প্রশ্নের উত্তরে কেউ মুখ দিয়ে টু শব্দটিও করে না।
মিফতা খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বললো,
ভাবি মণি,
আমি চুপ করে থাকলাম। কেন উত্তর দিলাম না। আমার নিরবতায় ও বোধহয় কষ্ট পেল। দেখতে পেলাম ওর চোখ দুটো দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।
আরে আরে কান্না করছো কেন?
ওর কান্নার শব্দ যেন আরো বেড়ে গেল। কেঁদো কেঁদো কন্ঠে বলল, ভাবি মণি, তুমি কি আমাদের ছেড়ে চলে যাবে?
আমি আশ্চর্য হলাম। হঠাৎ মেয়েটা কি বলছে? আমি কেন যাবো?
আমি যাবো কেন?
আদ্রিজা আপু না খুব পচা। সারাক্ষণ আমাকে বকে আর ভাইয়ার পিছনে আঠার মতো লেগে থাকে। ছোটমাও আমাকে একটুও আদর করে না।
বলেই মিফতা কাঁদা শুরু করে দিলো। বুঝতে পারলাম হয় তো অনেক চাপা কষ্ট আছে এদের মাঝে।
আমি মিফতাকে জরিয়ে ধরে বললাম, আমি কখনো তোমাদের ছেড়ে যাবো না।
মিফতা আবার বললো, জানো ভাবি ছোট মা না সবসময় আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে আর বাবাইকে আমাদের সাথে থাকতে দেয় না। ভাইয়া কিছু বলতে গেলেই আমার উপর এর শোধ তুলে আমাকে সুযোগ বুঝে অনেক বকাঝকা করে মাঝে মাঝে তো আমাকে থাপ্পড়ও দিতো।
মিফতার কথায় বিস্মিত হলাম। এই ছোট্ট মেয়েটার সাথে এই আচরণ? আমি নিরব থাকলাম। কিছুক্ষণ পরে শুনতে পেলাম বিকট শব্দে কেউ জিনিসপত্র ছুঁড়ে মারছে। আমি আর মিফতা নিচে চলে এলাম। এসেই দেখতে পেলাম তূর্য ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করছে। কিন্তু কেন তা আমার বোধগম্য হলো না। পাশেই আদ্রিজা নামের মেয়েটি দাঁড়িয়ে। অপর প্রান্তে সিঁড়ির কাছে দাঁড়িয়ে আছে রেহানা চাচি। আমি আর মিফতা গিয়ে তার পাশে দাঁড়ালাম। আস্তে আস্তে চাচিকে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে?
তিনি বললেন, এই মাইয়াডা সব সময় তূর্যের সাথে এমন করে তূর্য বাবা ওরে সহ্য করতে পারে না। এইমাত্র তূর্য সোফায় বইসা ছিল এই মাইয়াডা আইসা ওর কোলে বইসা পড়ছে। এর লেইগাই তূর্য রাইগা গেছে।
সামনের দিকে দৃষ্টিপাত করে বুঝতে পারলাম আদ্রিজা ভয়ে পাথর। আমার মনে মনে বেশ আনন্দ লাগছে। চুপটি করে দাঁড়িয়ে থাকলাম। তূর্য ড্রইং রুমে যা যা ছিল প্রায় সব জিনিসেরই ১২ টা বাজিয়ে দিয়েছেন। আমি নিরবে তার কর্মকাণ্ড দেখছি, মিফতা আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। মিফতা মেয়েটাকে দেখলে অনেক সময় মনে হয় বেশ সাহসী আবার মনে হয় সে ভীতুর ডিম। ভাঙচুরের শব্দ শুনে এক পর্যায়ে ভদ্রলোক মানে আমার শ্বশুর আর মহিলা মানে আমার শাশুড়ি এগিয়ে এলেন। আমার শ্বশুর মশাই বললেন, কি হয়েছে তূর্য? এসব কি? এমন করছো কেন?
তূর্য বোধহয় তার কোনো কথাই কানে নিলো না সে তার কাজে ব্যস্ত। ভদ্রলোক আর মহিলাটিও তার কাজ পর্যবেক্ষণ করতে থাকলো। আদ্রিজা গিয়ে মহিলাটিকে জরিয়ে ধরলো। ভাঙচুর করতে করতে এক পর্যায়ে সে মাছের এ্যাকুরিয়ামটা উপরে তুলে আছাড় মারলো। বিকট শব্দে আমি আর মিফতা দুজনে চিৎকার দিয়ে উঠলাম। হয় তো সে তা খেয়াল করলো। সে আমাদের নিকটে এগিয়ে এলো। আমার শ্বশুর আবার বললেন, তূর্য কি করছো তুমি?
আপনি বেশ ভালো করেই জানেন তাসকিন মাহমুদ তূর্য যা পছন্দ করে না তা সে কখনোই গ্ৰহণ করে না।
কি হয়েছে সেটা তো বলবে?
সেটা ওই মেয়ের থেকেই জেনে নেন।
মহিলাটি এগিয়ে এসে বললো, তূর্য আদ্রিজা ছোট মানুষ। ও তোমাকে ভালোবাসে, তোমাকে পাওয়ার জন্যে ও এমন করেছে। তোমার উচিত ওকে মেনে নেওয়া।
তার কথা শুনে আমার ভিতরটা ভেঙে যাচ্ছে খুব করে কান্না করতে ইচ্ছে হচ্ছে। কি বলবেন তূর্য? তূর্য কি ওকে,
তূর্য বললেন, ওকে গ্ৰহণ করা আমার পক্ষে সম্ভব না কারণ আমি বিবাহিত। আমার ঘরে স্ত্রী হচ্ছে, আর লজ্জা করে না একটা বিবাহিত পুরুষকে এসব বলতে?
এবার আদ্রিজা মেয়েটি চিৎকার করে বললো, আমি মানি না এই বিয়ে। কখনোই না তুমি শুধু আমার।
তূর্য খানিকটা হেসে বললেন, তোমার মানা না মানায় আমার কিছু আসে যায় না। আমার বিয়ে হয়ে গেছে এখন আমার সংসার আছে আমাকে আমার মতো ছেড়ে দেও প্লিজ।
তূর্য উপরে চলে গেলেন।
এবার আদ্রিজা মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
তোর জন্য, শুধু তোর জন্য তূর্য আজ আমার সাথে এমন করলো।
আমি চুপ করে আছি। আমার শাশুড়ি বললেন, আদ্রিজা নিজেকে শান্ত করো তূর্য শুধু তোমারই।
আদ্রিজা মেয়েটি নাজের ঘরে চলে গেল।
রেহানা চাচি আমাকে বললেন, বউ মণি এর কথায় কষ্ট পেয়ো না। এই সংসার কিন্তু এখন তোমার। তূর্য বাবারে ছাইড়া দিও না।
আমি ঠায় দাঁড়িয়ে রইলাম।
.
.
.
.
.
.
আদ্রিজা আসার পর থেকেই কোন না কোন বাহানায় তূর্যের পিছে লেগে আছে সাথে আমারও। আমার সাথে তো তার শত্রুতা লেগেই আছে। ইদানিং একটা জিনিস লক্ষ্য করেছি আমি ও তূর্যের সামনে কেমন জানি বদলে যায়। আমার সাথে ভালো ব্যবহার! আমি তো অবাক। কি জানি কি মতলব তার। এমনকি তূর্যের সামনে আমাকে ভাবি বলেও সম্বোধন করে সে। কি মতলব তার আমি বুঝতে পারছি না। হঠাৎক করে সে বদলে গেল? কি হয়েছে? আমি তো ক্ষণে ক্ষণে তার কথায় আকাশ থেকে পড়ছি।
কিন্তু এতে তূর্যের কোন ভাবান্তর দেখলাম না।
আজকে আমার ছুটি। কয়েকদিন ধরে কলেজে ঠিকমতো গেলেও পড়াশোনায় আমার মন নেই। সারাক্ষণই মাথায় একটা চিন্তাই ঘুরপাক খায় আদ্রিজার ব্যবহার বদলে গেলো কেন? কি চাচ্ছে সে? কিছুই ভেবে পেলাম না। মাথাটায় খুব বেশি প্রেসার পড়ছে ইদানিং। আমার ছোট মস্তিষ্কে তাদের এই রহস্যজোড়া কথাবার্তার কিছুই ঢুকছে না।
মাত্র গোসল সেরে বের হয়েছি আমি। গোসল সেরে বের হয়ে দেখলাম তূর্য। বোধহয় মাত্রই বাসায় ফিরেছেন। আমাকে দেখে আমার দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছেন তিনি। কিছুক্ষণ এভাবে তাকিয়ে থাকার পর আস্তে আস্তে আমার দিকে এগিয়ে আসেন তিনি। তিনি ঠিক কি চাচ্ছেন তা আমার বোধগম্য হলো না। তিনি আমার দিকে এক নেশাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। তাকে এভাবে এগিয়ে আসছে দেখে আমি পিছিয়ে গেলাম। এক পর্যায়ে আমি দেয়ালের সাথে মিলে গেলাম। সে আমার একদম কাছে চলে এসেছে আমি কাঁপছি!
সে আমার তোয়ালে পেঁচানো চুলগুলো ছেড়ে দিলো।
আজ তোমায় খুব সুন্দর লাগছে, মেহু পরি!
আমি চুপ করে থাকলাম। আমি এখনো কাঁপছি। তূর্য হেসে দূরে সরে গেলেন।
এতো ভয় কেন তুমি?
আমি নিরব থাকলাম।
তূর্য বললেন, মেহু! নিজেকে শক্ত করো। আমি কিছুই বুঝলাম না।
সে হেসে আবার ওয়াসরুমে চলে গেলেন।
চলবে….
নিয়মিত গল্প পেতে আমাদের সাথে থাকুন🥰
page :https://www.facebook.com/story.link380
Group 1. গল্পের লিংক ( গল্পের রিভিউ)+আলোচনা :https://www.facebook.com/groups/999645603764557/
Group 2. 💛হলদে খামের ভালোবাসা💛 :https://www.facebook.com/groups/holde.khamer.valobasa
Happy reading to all😍