স্বপ্নের প্রেয়সী 💖 পর্ব- ৩১

0
1851

💖 স্বপ্নের প্রেয়সী 💖
Part – 31
_____________________________

ছাদে গিয়ে চমকে গেলাম।
আমি আর রিমি নিজেদের মুখ চাওয়া চাওয়ি করছি।
দুজন ই কিছুক্ষণ ভ্যাবলার মতো চেয়ে থেকে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেলাম।

আসলে এরা বারবিকিও করার জন্য ছাদে এসে ছিল।
কিন্তু আগুন জ্বালাতে পারে নাই আর তাই আমাদের ডেকে আনলো।
ঠিক হয়েছে আমাদের রেখে খাওয়ার ইচ্ছে ছিল না, এবার তো আমাদের ও দিতে হবে।
ফারহান ভাইয়া আমাদের দিকে বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে বললেন
– প্লিজ আপনারা দুজন হাসি থামিয়ে একটু আগুন টা জ্বালিয়ে দিন।

আমি আর রিমি মুখ চেপে হেসে আগুন জ্বালাতে গেলাম।
কিছুক্ষন চেষ্টা করে আগুন জ্বালাতে সক্ষম হলাম।
ফারহান ভাইয়া আর রিফাত ভাইয়া দুজন মিলে বারবিকিও করছে আর আমি আর রিমি দোলনায় বসে দোল খাচ্ছি।
বেশ কিছুক্ষণ পর বারবিকিও কমপ্লিট হয়ে গেলে , সবাই মিলে খেয়ে ঘুমাতে চলে গেলাম।
তখন বোধহয় চারটা বেজে গেছে।
তাই রিমি আর আমি হালকা ফ্রেস হয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
_________________________

সকাল বেলা রোমা আন্টি এসে জাগিয়ে দিলেন।
তারপর ফ্রেস হয়ে নাস্তা কমপ্লিট করে আমাদের বাসায় চলে আসলাম।
আজকে সন্ধ্যা তে মনিকা আপুর ফ্যামিলি আর মনি আন্টির ফ্যামিলির সাথে আলোচনা করা হবে।
তাই আজকে ডিনার টা সবাই আমাদের বাসাতেই করবে।

বিকেলের দিকে রিমি আর আমি আশে পাশে ঘুরতে যাবো প্লেন করলাম।

তাই ফোন করে রাত্রি , শিলা আর বৈশাখি কে ডেকে নিলাম।
দুপুরে সবাই আমরা একসাথে লান্স করে তারপর ছাদে গিয়ে বসলাম।

ছাদে আসা মাত্র রিফাত ভাইয়া আর ফারহান ভাইয়া উপস্থিত হলেন।
এদের দিকে একবার ব্রু কুঁচকে তাকিয়ে আবার আড্ডা তে ব্যস্ত হয়ে পরলাম।

কিছুক্ষন পর ফারহান ভাইয়া আর রিফাত ভাইয়া আমাদের ধমকে নিচে পাঠিয়ে দিলো।
রিফাত ভাইয়া বলল
– এই এখন এখান থেকে তোদের যেতে হবে।
আর সন্ধ্যার আগে আসবি না।

আমি ভাবলীলাস হীন ভাবে বললাম
– কেন কি হয়েছে। আমরা থাকলে সমস্যা টা কি ?

ফারহান ভাইয়া দাঁতে দাঁত চেপে বললেন
– সমস্যা কি ?
এখানে কেটারিং এর লোক আসবে আর তোমরা সবাই এখানে ধেই ধেই করে নাচতে থাকবে তাই না।
এখনি নিচে যাবি , অনুরোধ করছি না , অর্ডার করছি।

আমরা সবাই নিচে চলে আসলাম।
আসার সময় বেটা বজ্জাত হনুমান ফারহানের চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করলাম।

আমার এমন কান্ডে রিমির সাথে সাথে সবাই হাসতে শুরু করলো।
রিমি একটু ইনোসেন্ট ফেস নিয়ে বলল

– আরে আমার ভাই টারে আর বকিস না।
বেচারা তো তোর বকা শুনলে ফিট হয়ে যাবে।
এই বলে সবাই আবার হাসা শুরু করলো।
আর আমি ওদের দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে নিজে ও হেসে দিলাম।

বিকেলে সবাই আশে পাশে ঘুরতে লাগলাম।
আহা কতো দিন পর নিজের এলাকায় ।
বেশ মজা করলাম সবাই, সাথে হালকা খাওয়া দাওয়া ও করলাম।
__________________

সন্ধ্যা বেলা হালকা ডিজাইনের একটা গ্রাউন পড়লাম সাথে একটা জিন্স এর শর্ট কোর্ট ।
হালকা সাজে সজ্জিত হয়ে সবার সাথে ছবি তুলে নিলাম।
সন্ধ্যা বেলা সবাই চলে আসলো।
বড় রা সবাই আলোচনা করে সব কিছু ঠিক করলো।

ঠিক হলো মনি আন্টির মেহেন্দির দিন মনিকা আপুর আর রিফাত ভাইয়ার এনগেন্সমেন হবে।
আর 3 বছর পর এদের বিয়ে হবে।

মানে তিন দিন বাদেই মেহেন্দির অনুষ্ঠান ।
বাহহহ এক সাথে দুটো খুশি।
এই কয়েকটা দিন তো ব্যস্ত টার মধ্যে ই কেটে যাবে।

রাতে সবাই এক সাথে ডিনার করে আড্ডা দিতে চলে আসলাম বাগানে ।
কারন ছাদে এখন ও যাওয়া যাবে না।
শিলা , বৈশাখি, রাত্রি , আমি আর রিমি একসাথেই থাকবো।
বাগানে বেশ কিছুক্ষণ আড্ডা মজা করে , রুমে এসে সবাই একসাথে গুটিশুটি মেরে শুয়ে পরলাম।
এভাবেই কেটে গেল আরো একটি দিন।
_____________________

সকলের ব্যস্ততার মধ্যে ঠিক হলো একে একে যে যার সময় মতো শপিং করে নিবে।
যেহেতু আমি আর রিমি এক ড্রেস কালেকশন করবো তাই ফারহান ভাইয়া কে আমাদের সাথে পাঠানো হলো সাথে মনিকা আপু আর রিফাত ভাইয়া তো আছেই।
শপিংকমপ্লেক্স এ গিয়ে সবাই যে যার মতো কেনাকাটা করলো।
কিন্তু বিয়ের দিনের জন্য পোশাক ,আমার কিছুতেই পছন্দ হচ্ছে না।
রিমি আর আমি একটা পছন্দ করেছি কিন্তু সেটা আমার সাইজে স্টোক নেই।
তাই রিমি ও নিবে না বলে দিলো ।
আমি রিমি কে জোড় করে নেওয়ালাম।
কিন্তু আমার কিছু পছন্দ ই হচ্ছে না , পরে কিনব বলে ঠিক করলাম।
মোটামুটি সবাই সব কমপ্লিট করে বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় গিয়ে ফ্রেস হয়েই ঘুম।
____________________

যেহেতু রাত 9 টা তেই ঘুমিয়ে ছিলাম তাই বেশ সকাল বেলাতেই ঘুম ভেঙে গেল।
আরমোরা ভেঙে সাইট টেবিলের দিকে তাকাতেই দেখলাম একটা শপিং ব্যাগ, আর তার পাশে একটা কার্ড।
প্রথমে কার্ডটা হাতে নিতেই চোখ পড়ল বড় বড় করে লেখা
– ফারাবি এটা বিয়ের অনুষ্ঠানে পড়বি।
আর সেইদিনের আগে এটি ওপেন করবি না।

লেখার ধরন দেখে বুঝতে বিন্দু মাত্র অসুবিধা হলো না যে এটা কে দিয়েছেন।
আমি ও ভদ্র মেয়ের মতো প্যাক টা কাবাডে রেখে দিলাম।
কারন আমি জানি লুকিয়ে দেখলে ও এই বেটা বজ্জাত হনুমান বুঝে যাবেন।
রিস্কস নিয়ে লাভ নেই , আর তা ছাড়া সবুর এর ফল মিষ্টি হয়।
হাসি খুনসুটি আড্ডা মজার মাঝে কেটে গেল দুটো দিন।
তবে এই বলে পড়াশুনা তে বিন্দু মাত্র ফাঁকি দিতে দিন নি ।
টাইম টো টাইম অনলাইন ক্লাস পড়াশুনা সব ঘাড় ধরে করিয়েছেন বজ্জাত হনুমান ফারহান ভাইয়া।

অবশ্য আমি ও বেশ মনোযোগ দিয়ে পড়েছি।
মাঝে মাত্র দেড় মাস সময় পাবো।
তাই আর কোনো ফাঁকি বাজি করি নি।

অবশেষে আসলো রিফাত ভাইয়ার এনগেন্সমেন আর চাচ্চুর মেহেন্দির অনুষ্ঠান।
বেশ জাঁকজমক করেই অনুষ্ঠান দুটো সম্পূর্ণ হলো।
এই অনুষ্ঠানের 80% ই ইয়াং পিপল।
বিভিন্ন রকমের নাচ হলো।
এ বাড়ি ও বাড়ি আলাদা করে, বাজি রেখে সব ধরনের নাচ হলো।
কাপল ডান্স ও হলো, মনিকা আপু আর রিফাত ভাইয়া, চাচ্চু আর মনি আন্টি সাথে আরো অনেক কাপলরা ও যোগ দিলো।

মাঝে আমার বান্ধবীরা , আর ফারহান ভাইয়াদের বন্ধুরাই রয়ে গেল।
কারন আমরা সবাই সিঙেল।

কাঁপল ডান্স শেষ হলে ঠিক হলো সিঙেল দের ডান্স।
অথার্ৎ পজিশন চেন্স করে ঘুরে ঘুরে ডান্স।

আমি প্রথমে মানা করে দিয়েছি , তারপর ফারহান ভাইয়ার চোখ রাঙানি তে রাজি হলাম।
ব্যাপারটা বুঝলাম না, এমনি তে তো এই লোকটি আমার ভালো দেখতেই পারে না ।
আজ হঠাৎ এতো ভদ্রলোক হলেন কিভাবে।

যাই হোক সবার পজিশন সেট করে 15 জন ছেলে আর 15 জন মেয়ে যোগ হলো।

বিশাল বড় সার্কেল হয়ে গেল।
যেহেতু কমিউনিটি সেন্টার এ সব অনুষ্ঠান হচ্ছে তাই সব কিছু সেট করাই ছিল।

_______________________________

📌.

পার্ট ছোট দেওয়ার জন্য দুঃখিত। আসলে ছোট ভাই প্রচুর জালাচ্ছে, যদি ও আমার কাছে আর ও অনেকটাই লিখা আছে। কিন্তু সময় সল্পতার জন্য পোস্ট করতে পারছি না।
ইনশআল্লাহ কালকে সকাল এ বিশাল এক পার্ট দিবো।
সাথে একটা সারপ্রাইজ ও আছে আমার বিশেষ রিডার্স দের জন্য।
অথার্ৎ কালকে আমার টপ রিডার্স দের নাম জানাবো।

( আসসালামুআলাই রির্ডাস । আজকের পর্ব টা কেমন হলো জানাতে ভুলবেন না ।
আর হ্যা প্লিজ 23 তারিখের মধ্যে সবাই আমাকে 1000 ফলোয়ার দাও।
তোমাদের সবার জন্য অফুরন্ত ভালোবাসা ।

আমার লেখা গল্প পেতে পেজ এ ফলো আর বন্ধুদের ইনভাইট দিয়ে পাশে থাকুন )

বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাপ করবেন ।

💜 হ্যাপি রিডিং 💜

চলবে
ফাতেমা তুজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here