হিমি
লেখনী- সৈয়দা প্রীতি নাহার
১৫.
হলে বিয়ের যাবতীয় আয়োজন করা হয়েছে। অতিথিরা অনেকেই অথৈর বাড়িতে এসেছেন আগে। তারপর হলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। মতিউর রহমান সপরিবারে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। পরিচিত জনরা অবাক চোখে দেখছেন তাদের। একুশ বছরেরও বেশি সময় ধরে যাদের মন মানিল্য তারা একএ অপরের সাথে হাসি মুখে কথা বলছেন। তাদের খাতির দারির জন্য সয়ং অনাহিতা এগিয়ে এসেছেন। এসব যেনো কল্পনা। হিমি আড়াল থেকে ঢোক গিলল এসব দেখে। ডান হাতের উল্টো পিঠে বাম হামে চিমটি কাটলো সে। চোখের সামনের সব স্বপ্ন নয় বলেই বোধ হলো তার। মৃদু হেসে নিশ্চুপ হয়ে রইলো। অনাহিতা হেসে হেসে একজনকে ডেকে আলাপ করাতে লাগলেন হিমির দাদুর সাথে। তিনিও বিনীত ভঙ্গীতে হাসলেন। বিপরীত দিকের চেয়ারে বসতে অনুরোধ করে বললেন,
‘বসুন বসুন। বসেই বাকি কথা বলি।’
ভদ্র মহিলা মাথা দুলিয়ে সায় জানিয়ে বসলেন। হাসি মুখে বললেন
‘মেয়ে কোথায়?’
মতিউর রহমান এদিক ওদিক চোখ ঘুরালেন। অনাহিতার উদ্দেশ্যে বললেন,
‘হিমি কোথায় মা?’
অনাহিতা স্টাফদের একজনকে হাতের ইশারায় কাছে ডাকলেন। শরবতের গ্লাস ভর্তি ট্রে সবার সামনের টেবিলে রেখে হিমিকে ডেকে আনার নির্দেশ দিলেন। মতিউর রহমান দুঃখ প্রকাশ করে বললেন,
‘বিয়ের অনুষ্ঠানে এসব হয়তো ঠিক হচ্ছে না। তবুও আসতে হলো। আসলে সুযোগ যখন পাওয়াই গেছে তখন হাতছাড়া করতে মন মানছে না। যদি আল্লাহ্র রহমতে সব ঠিক ঠাক হয়ে যায় তবে আমি শান্তি পাই।’
ভদ্র মহিলা বত্রিশ কপাটি দাঁত খোলে হাসলেন। বললেন,
‘ঠিকই বলেছেন চাচা। আর তাছাড়া আমরা ঘরের মানুষ। এখানে ফরমালিটির কোনো দরকার নেই।’
মুহিব রহমান এবার মুখ খোললেন। কৌতুহলী হয়ে গম্ভীর গলায় প্রশ্ন করলেন,
‘কি নিয়ে কথা হচ্ছে আমরা কেউই বুঝতে পারছি না আব্বা। আপনি যদি ব্যাপারটা একটু খোলসা করে বলতেন!’
মতিউর রহমান হালকা কাশলেন। বললেন,
‘হিমি আসুক আগে। পরে সব জানতে পারবে।’
আমিনা বেগম ওনার জা রাদিবা দুজনই একে অপরের দিকে তাকাচ্ছেন। বর কনেকে রেখে এখানে এসে বসার কোনো কারন খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। আর এই মহিলার সাথেই বা কিসের এতো কথা সেটাই মাথায় ঢোকছে না। তাদের শ্বশুর আবার বেশ উৎফুল্ল গলায় কথা বলছেন। এমন সময় হিমি এসে দাঁড়ালো তাদের সামনে। হিমির দিকে তাকিয়েই আঁত্কে উঠলেন অনাহিতা। বরাবরের মতো সেই একই পোশাক। এক রঙা টি শার্ট, তার উপরে আরেক রঙা শার্ট। পরনে ডেনিম জিন্স, পায়ে কেড্স। চুলগুলো খোলা তার। এক হাতে মোটা ঘড়ি অন্য হাতে কালো রঙের বেল্ট জাতীয় কিছু মোড়ানো। অথচ আজ সকালেই হিমির জন্য কমলা রঙের থ্রি পিস পাঠিয়েছিলেন অনাহিতা। আমিনা বেগমও ভাইঝির জন্য কুর্তি কিনেছিলেন নতুন। কিন্তু মেয়ে সেসবের কিছুই পরে নি। মতিউর রহমান শুকনো মুখে বললেন,
‘মেয়ে আমাদের ছোটবেলা থেকে এসব পরেই অভ্যস্ত। তবে ঠিক হয়ে যাবে। কখনো তো ওকে আটকানো হয় নি কিছু থেকে, তাই বেপরোয়া হয়ে গেছে আরকি। আপনি নাহয় গড়ে নিবেন।’
ভদ্র মহিলা উত্তর না দিয়ে হিমিকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলেন। মুখ ছোট করে কিছু বলবেন তার আগেই ওনার পাশে এসে দাঁড়ালো লম্বা মতো এক ছেলে। ছেলেটা ভদ্র মহিলাকে মা বলে সম্বোধন করলো। ভদ্র মহিলা উঠে দাঁড়ালেন। হাসার চেষ্টা করে বললেন,
‘ও হলো হিমি। যাকে দেখতে এসেছি।’
কথাটা যেনো বিস্ফোরণ ঘটালো। মুহিব রহমান ভ্রু কুঁচকে বললেন,
‘ওকে দেখতে মানে?’
‘মেয়ের বিয়ের বয়স হয়েছে। এসময় পাত্র পক্ষ দেখতে আসবে স্বাভাবিক। ওনারাও তাই এসেছেন।’
মতিউর রহমানের কথায় আমিনা বেগম ভড়কে গেলেন। চটপট উঠে হিমির গা ঘেষে দাঁড়ালেন। হিমিও চমকে উঠা চোখে তাকিয়ে রইলো দাদুর দিকে। পাত্র হিমিকে দেখে মৃদু গলায় বললো,
‘মা? তুমি কি কথা বলে ফেলেছো?’
তিনি জবাব না দিয়ে হিমির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করলেন,
‘রান্না বান্না জানো?’
অনাহিতা অপেক্ষাকৃত বেশি হেসে বললেন,
‘মেয়ে খুব আদরের তো। কখনো রান্নাঘরে ঢুকতে দেই নি আমরা। ধীরে ধীরে শিখে যাবে। তাই না হিমি?’
হিমি জবাব দিলো না। শক্ত চোখে তাকিয়ে রইলো শুধু। ভদ্র মহিলা আবারও বললেন,
‘আদুরে মেয়েরা তো কোনো কাজই পারে না। তুমিও নিশ্চয় পারো না!’
হিমি চোখ নামিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। ভদ্র মহিলা মুখ অন্ধকার করে বললেন,
‘পড়াশোনা করো?’
‘না। ইন্টার পরীক্ষায় ফেইল করেছিলাম। তাই আর পড়াশোনা হয় নি। বাদ দিয়ে দিয়েছি।’
হিমির স্পষ্ট জবাবে চোখ বোজে নিলেন অনাহিতা। মতিউর রহমানের চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। এভাবে কথা বলছে কেনো মেয়েটা? কতবড় সাহস! বড়দের সাথে বেয়াদবি! পাত্র হাসি হাসি মুখে বললো,
‘আবার নতুন করে শুরু করা যেতেই পারে!’
পাত্রের মা কড়া গলায় বললেন,
‘তার দরকার নেই। মেয়ে যখন পড়তেই চায় না শুধু শুধু টাকা নষ্ট করে লাভ আছে? আচ্ছা শোনো, যাও ঘরে গিয়ে এই পোশাক পাল্টে এসো। শাড়ি বা ড্রেস যা ইচ্ছা একটা পরিয়ে আনুন ওকে।’
অনাহিতা উজ্জল চোখে মাথা দুলিয়ে হিমিকে ধরতে এলেই সে বলে উঠলো,
‘আমি পারবো না।’
পাত্র আর তার মায়ের মুখ চুপসে গেলো। মতিউর রহমান রাগি গলায় বললেন,
‘তোমায় জিজ্ঞেস করা হয় নি বলা হয়েছে। যাও পরে এসো!’
হিমি তাচ্ছিল্য হেসে বললো,
‘আমাকে কখনোই কিছু জিজ্ঞেস করা হয় না দাদু বলা হয়। যা বলা হয় তাই করতে হয়। আমার নিজের ইচ্ছার কোনো দাম নেই। থাকতে পারে না, না?’
‘আহ! এতো কথা শুনতে চাইছি না। ওনারা অপেক্ষা করছেন। বড় বউমা? তুমিও যাও সাথে।’
হিমি ঠাঁই দাঁড়িয়ে থেকে বললো,
‘আমি শাড়ি পরতে পারি না। ড্রেস কখনোই পরি নি। যে জিনিসে আমি পরিই নি তা আজ কেনো পরবো? আর আপনারা এসেছেন আমাকে দেখতে। এভাবে দেখতে অসুবিধা হচ্ছে? না মানে, এটাও তো একটা পোশাক! এই মুহুর্তে যদি শাড়ি বা ড্রেস পরে আসি তবে কি অন্য কোনো সৌন্দর্য দেখা যাবে না কি?’
মতিউর রহমান গর্জে উঠে দাঁড়ান। কঠোর দৃষ্টিতে নাতনিকে দেখে বলেন,
‘চুপ করো বেয়াদব! কোথায় কি বলতে হয় কিচ্ছু শেখো নি তুমি। ছিহ! আশেপাশে অতিথিরা গিজগিজ করছে। তারমধ্যে তুমি তোমার সার্কাস শুরু করেছো? মেয়ে হয়ে এ ধরনের ব্যবহার করো কি করে?’
হিমি এবারও শক্ত গলায় বললো,
‘আমি মেয়ে বলে করতে পারবো না? আমার জায়গায় নিহান থাকলে আপনি আনডাউটেডলি ওকে সাবাশি দিতেন!’
মতিউর রহমান তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকে দেখলেন। পাত্রের মা নাক ফুলিয়ে বললেন,
‘আসছি আমরা। এমন লাজ লজ্জাহীন, বেয়াদব মেয়ে আমার ঘরের বউ হবে না। চল আসিফ।’
ছেলে কিছু বলতে চেয়েও পারলো না। বড়দের সালাম জানিয়ে বেরিয়ে গেলো। আশপাশের অনেক জোড়া উৎসুক চোখ হিমিদের দিকে তাকিয়ে। তাতে সামান্য তম ভ্রুক্ষেপ না করেই হিমির গালে কষে থাপ্পড় লাগালেন মতিউর রহমান। হিমি নড়লো না একটুও। যেমন ছিলো তেমনই দাঁড়িয়ে। রাগে মাথা ভনভন করছে তার। চোখে আগুনের লাভা! মুহিব রহমান বাবার হাত ধরতেই খেঁকিয়ে উঠলেন তিনি,
‘সরো তুমি! নিজের মেয়ের প্রতি কোনো দায় দায়িত্ব নেই। সব আমায় দেখতে হয়! হিমির থেকে ছোট অথৈর বিয়ে হচ্ছে। দুদিন পর ওর ছোট মামার মেয়ের বিয়ের বয়স হবে। এর কিছুদিন পর নিহানের বিয়ের বয়স হবে। তোমার মেয়ে ওদের থেকে বড়। বড় মেয়েকে রেখে কি করে ছোটদের বিয়ে দেবে? ওর এমন চাল চলনে কে করবে ওকে বিয়ে? অসভ্য মেয়ে।’
হিমি শ্বাস টেনে বেরিয়ে যেতে নিলেই পেছন থেকে চেঁচিয়ে উঠেন মতিউর রহমান। বলেন,
‘রাতের বেলা এতো ঘুরঘুর কিসের তোমার? বাড়ি চলো এখন। থাকতে হবে না এখানে। এই সবাই চলো, যে কারনে এসেছিলাম তা তো হলোই না উল্টো মান সম্মান গেলো।’
হিমি পেছন ফিরে তাকালো। ধীরে গতিতে অনাহিতার মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়ে বললো,
‘তাই তো বলি, অথৈকে পাত্রপক্ষ দেখতে আসছে বলে যাকে ঘটা করে ওবাড়িতে পাঠানো হলো, অথৈর এঙ্গেইজমেন্টে যাকে বাইরে আসতে মানা করা হলো, যাকে অথৈর গায়ে হলুদের রাতে বাইরে থেকে দরজা আটকে রাখা হলো তাকেই বিয়ের দিন নতুন পোশাক দিয়ে আসতে অনুরোধ করা হয়েছে! আমার মায়ের শ্বশুর বাড়ির সাথে যাদের সাপে নেউলে সম্পর্ক তারা মায়ের শ্বশুর মশাইকে ফোন করে ডাকছে! বাহ! দারুণ তো। আমি খুব আদরের বুঝি মামানি? এতোটাই আদরের যে জন্মের পর প্রথম পাঁচটা বছর আমাকে এ বাড়িতে এলাও করো নি তুমি! এখনো আমায় দেখলে চোখ মুখ কুঁচকে যায় তোমার। এক বেলা খাওয়ার জন্যও বলো না। আমি সত্যি অনেক আদরের। অনেক। আমাকে তো আমার বাবাও আজ পর্যন্ত আদর করে ডাকে নি অথচ তুমি! রোজ কাজের লোক হিসেবে আমাকে ডেকে পাঠাও। আমি ছাড়া কোনো কাজই হয় না তারপরও আমার তোমাদের অনুষ্ঠানে থাকা নিষেধ! ঠিকই তো। আমার মতো অপয়া, বাজে, বেয়াদব, আশ্রিতা মেয়ে তোমাদের খুশিতে কি করে সামিল হবে? ভুলে গেছিলাম। এখন থেকে সব মনে থাকবে। আমি আর এখানে ফিরবো না এ কথা বলতে পারছি না। কারন আমি ফিরবো। দুটো জায়গা ছাড়া আর যাওয়ার কোনো জায়গা নেই কিনা! এখান থেকে চলে গেলে ওবাড়িতে রোজ থাকতে হবে। এতো বড় বাড়িতে একজন বাড়তি মানুষের প্রতিদিনকার খাবার, থাকা সব ম্যানেজ করতে কষ্ট হয় তো। আমি বুঝি।’
আমিনা বেগম হাত আকড়ে ধরেন হিমির। হিমি মৃদু হেসে হাতটা ছাড়িয়ে বেরিয়ে যায় হল থেকে। স্টেইজে বসে থাকা অথৈর চোখ জোড়া ভিজে একাকার। ইয়াসিরও থমকে গেছে। থমকে গেছেন অতিথিরাও। হিমি বেরুতেই অনাহিতা বিরক্তি নিয়ে খাবার সার্ভ করতে বললেন। বর কনের কাবিনের আয়োজন করতেও বলা হলো। হিমি নিজ বাইকে বসতেই সামনে দাঁড়ান হানিফ শরীফ। এক মাত্র ভাগ্নীকে উৎসব মুখর দিনে বিধ্বস্ত দেখে তিনি চমকে উঠেন। হন্তদন্ত হয়ে বলেন,
‘কি হয়েছে হিমি মা? কোথায় যাচ্ছিস এই সময়? এমনই বা দেখাচ্ছে কেনো তোকে?’
‘কিছু হয় নি মামু। এখানে থাকতে ভালো লাগছে না। আমি যাচ্ছি।’
কথা শেষ করেই বেরিয়ে গেলো সে। হানিফ শরীফ হিমির যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলেন। কাবিনের বিষয়াদি ঠিক করতেই বেয়াই আর এলাকার কিছু গন্যমান্য ব্যক্তি নিয়ে আলাপ চারিতা করছিলেন হলের নিচতলার একটা রুমে। সব কথা শেষে বেরুতেই হিমিকে দেখেন তিনি। উপর তলার কোনো ঘটনাই শোনেন নি এনারা। জানেন না উপরে সংঘটিত ঝড়ের কথা।
___________________
রাত দুটো বেজে পঁয়ত্রিশ মিনিট। ব্যস্ত শহর ক্লান্ত প্রায়। রাস্তায় গাড়ি চলাচল কম। সবকিছুইতে নিস্তব্ধতা। এই এতো রাতেও ডাক্তারদের ডিউটি শেষ হয় নি। বারোটায় বিছানায় শুতে গেলেও ঘুম আসার আগে ফোন চলে আসে তাহিরের। হাসপাতালে এমার্জেন্সি পরেছে। রোগীর অবস্থা খুব ক্রিটিক্যাল। ঘুম ছেড়ে ডাক্তার মশাই দৌড় লাগালেন হাসপাতালের উদ্দেশ্যে। রোগীর কিছু টেস্ট করিয়ে, প্রয়োজনীয় ইনজেকশন পুশ করে আপাতত তাকে স্টেবল করে রাখা হয়েছে। সার্জান প্রিতমকে কল করে রোগীর বর্তমান অবস্থাও জানানো হয়েছে। কাল সকালের রোগীর অপারেশন করতে হবে। সব কাজ শেষ করে হাসপাতাল থেকে বেরুতে বেরুতে রাত দুটোর উপরে বেজেছে। ক্লান্তি আর ঘুমে চোখ দুটো জ্বলছে তার। বাসায় তাড়াতাড়ি পৌঁছানোর তাগিদে ব্রীজের উপর দিয়ে যেতে গেলে চোখে পরে ফুটপাতের কাছ ঘেষে দাঁড় করানো একটা বাইক। ব্রীজের রেলিংএ পা ঝুলিয়ে অপর দিকে মুখ করে বসে আছে কেউ একজন। মধ্যরাতের পর এখানে কোনো এক মেয়েকে দেখে থমকে গেলো তাহির। ব্রেক কষে গাড়ি কিছুটা পিছিয়ে আনলো সে। গাড়ির কাঁচ নামিয়ে মাথা বের করে বুঝার চেষ্টা করলো মেয়েটি কি করছে এখানে। প্রায় অনেকক্ষন পর পর এক দুটো বড় গাড়ি ব্রীজের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটছে। তাহির গাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তা পার হয়ে ওপর পাশে গেলো। মেয়েটির পিঠে ছড়িয়ে আছে লম্বা কোঁকড়ানো চুল। মেয়েটির মাথা সামান্য উচু করা। তাহির মেয়েটিকে অনুসরণ করে তাকালো উপরের দিকে। চোখে পরলো রুপালি চাঁদ। তাহির প্যান্টের পকেটে দুহাত গুজে এগুলো। মেয়েটির কাছাকাছি দাঁড়িয়ে তার দিকে সম্পূর্ণ দৃষ্টি দিয়ে তাকালো। হিমি আনমনা হয়েই চাঁদের দিকে পলকহীন তাকিয়ে। তাহির সামনে তাকিয়ে শান্ত গলায় বললো,
‘এখানে কি করছেন?’
হিমি কেঁপে উঠলো। বেসামাল হয়ে পরতেই তাহির এক হাত ধরে ফেললো হিমির। তাহিরের দিকে তাকিয়ে নিজের ভয় ঝেড়ে ফেললো হিমি। বুকের উপর থু থু দিয়ে ভ্রু কুঁচকে বললো,
‘আপনি এখানে কি করছেন?’
তাহির সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বললো,
‘হাসপাতালে এমার্জেন্সি ছিলো।’
হিমি অস্ফুট স্বরে ঠোঁটের আকৃতি গোল করে বললো
‘ও!’
তাহির শান্ত গলায় বললো,
‘সরি।’
হিমি ঘাড় ঘুরিয়ে তাহিরের দিকে তাকালো। কপালে চিন্তার ভাজ ফেলে বললো,
‘কেনো?’
‘সেদিন আপনি ফোন দিয়েছিলেন আর আমার মা না জেনে বুঝেই আপনাকে অনেক কথা বলে ফেলেছিলেন। আপনাকে কল করতে চাইছিলাম তবে নাম্বারটা ডিলিট হয়ে গেছিলো সামহাও। চেষ্টা করেও পারি নি। মায়ের কথায় কিছু মনে করবেন না।’
হিমি স্বাভাবিক গলায় বললো,
‘আচ্ছা।’
‘আপনি ক্ষমা করেন নি আমাকে?’
‘দোষটা আপনার ছিলো?’
চলবে,,,,,
[নোটে আর জায়গা হচ্ছে না😒 আরেকটু বড় করতে চাইছিলাম হলো না। তবে অনেক বড় করে দিয়েছি🙂। ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন।]