হিমি পর্ব-২৫

0
869

হিমি
লেখনী- সৈয়দা প্রীতি নাহার

২৫.

রাত সাড়ে দশটা বাজে। মিশ্মির কান্না থেমেছে দু এক ঘন্টা আগে। ঘুমিয়েও পরেছে সে। গভীর ঘুমের মধ্যে থেকে থেকেই কেঁপে উঠছে। রোশন আরার হাত থেকে মিশ্মিকে বাঁচিয়ে নিজের ঘরে এসে ঢুকেছিলো হিমি। দরজাটাও আটকে দিয়েছিলো ভেতর থেকে। বাইরে তখন‌ও মিশ্মির মা হল্লা করছেন। মিশ্মি হাউমাউ করে কাঁদছিলো। মিশ্মিকে শান্ত করতে অনেক সময় ব্যয় হয়েছে হিমির। ডিনারের সময় বাইরে গিয়ে মিশ্মির জন্য খাবার এনেছিলো। খায় নি মিশ্মি। মুখ ভার করে নিরবে চোখের জ্বল ঝরাচ্ছিলো। শেষমেষ হিমি জানতে পেরেছে এই মারধরের কারন। দুপুরে কাজের মেয়েটি মিশ্মির ঘরের ব্যালকনি থেকে একটা ঝুড়ি পায়। ঝুড়ির ভেতরে অর্ধেক পুরা কিছু রঙিন কাগজ। কাগজ ছাড়াও আরো কিছু জিনিস পুরানো হয়েছে। কাজের মেয়েটি সেসব ফেলে দিতে নিলে চোখে পরে অনাহিতার। কৌতুহল বসত পুরে যাওয়া কাগজ গুলো হাতে উঠান। এ ধরনের রঙিন কাগজ মিশ্মি আর অথৈ কিনতো। অবসরে কাগজ কেটে ফুল পাতা, ফ্রেইম, আরো কতো কিছু তৈরি করেছে দুই বোন। কিন্তু এসব তারা বাদ দিয়েছে কলেজে উঠতেই। মাঝখানে কখনোই রঙিন কাগজ ঘরে দেখা যায় নি। তারাও কিছু কাটাকাটি করে নি। তবে এতোদিন পর আবার এ ধরনের কাগজ কে আনলো? পুরালোই বা কে? আর কেনো পুরালো? অনেক চিন্তা ভাবনা শেষে ছোট জা কে কিছু না জানিয়েই মিশ্মির ঘর তল্লাশি করতে উদ্যত হন তিনি। এ বয়সের মেয়েরা আবেগী হয়ে থাকে। মিশ্মি বরাবর‌ই চাপা স্বভাবের। এমন নয় তো সে কোনো সম্পর্কে জড়িয়েছে। সেই সম্পর্কের সাথে এই কাগজ গুলো কোনো ভাবে জড়িত হয়তো। তাই পুরিয়ে দিয়েছে! কথাগুলো ভেবে মিশ্মির আলমারি, বুক শেল্ফ, ড্রয়ার সব খুঁজলেন অনাহিতা। এমন কিছু পাওয়া যায় নি যা দেখে বুঝা যায় ওনার ভাবনা সত্যি। ঘর অগোছালো হয়ে যাওয়ায় নিজ দায়িত্বেই সব গোছাচ্ছিলেন তিনি। কি মনে করে হঠাৎ খাটের মোটা নরম তোশক উচু করে তুলে ধরেন। ওনার চিন্তাকে সত্যি করে দিয়ে দেখা মিললো এক গাদা রঙিন কাগজ। তবে তাতে কিছু লিখা নেই। কাগজ গুলো কেটে রাখা। কোনোটার হার্ট শেইপ অংশ কেটে রাখা, কোনোটার মাঝখান, কোনোটার এক কোনা, তো কোনো টা ডিজাইন করে কাটা। খটকা লাগে অনাহিতার। পুরো তোষক তুলে দেন অনাহিতা। চোখে পরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা এক পুরুষের ছবি। অনাহিতা সব ছবি একত্র করে এক এক করে দেখেন। পরিপাটি পোশাকের পুরুষটির চেহারা দেখা যাচ্ছে না। সব ছবিতেই খুব দূরে দাঁড়ানো লোকটি। লোকটির পেছন থেকে খুব সাবধানে তোলা হয়েছে ছবিগুলো। একটাতেও যুবক ছবির জন্য তৈরি নয়। কোনোটায় হাঁটছে, কোনোটায় মোবাইল হাতে, কোনোটায় ফোনে কথা বলছে আর কোনোটায় কারো সাথে কুশলাদি বিনিময় করছে। অনাহিতা অবাক হন। ছবিগুলো উল্টে পাল্টে দেখেন। গভীর দৃষ্টিতে ছবির পুরুষকে দেখে তিনি থতমত খেয়ে যান। ভয়ে বুক কেঁপে উঠে। এ যে ওনার‌ই জামাই। ছোট মেয়েটার বর ইয়াসির। এ কি করে হলো? উনি সত্যিই দেখলেন? মিশ্মি অথৈর স্বামীর লুকিয়ে ছবি তুলতো? ফলো করতো? কেনো? আর এই কাগজ! ‌কি করতে চেয়েছিলো এই মেয়ে? সদ্য বিবাহিত মেয়ের সংসার ভেঙে যাবে না তো? অথৈ যে খুব ছোট থেকেই বিয়ে করার শখ নিয়ে বড় হয়েছে। যখন‌ই কেউ জানতে চাইতো বড় হয়ে কি হবে সে, জোর গলায় বললো সে ব‌উ হবে। বয়সের সাথে ম্যাচিউরিটি এলেও বিয়ের শখ যায় নি তার। কখনোই না। এতো তাড়াতাড়ি সব ভেস্তে যাবে? আচ্ছা ইয়াসির‌ও কি এসবে মিলিত? ইয়াসির অথৈকে ধোকা দিচ্ছে? পরকিয়া? না কি এসব কিছুই জানে না সে? হাজারটা প্রশ্নে মাথা ঘুরায় অনাহিতার। চোখ বোজে লম্বা শ্বাস টেনে ঘর অগোছালো রেখেই বেরিয়ে পরেন। নিজ ঘরে ঢোকে দরজা এঁটে কল লাগান মেয়েকে। দু এক কথা বলে মিশ্মির কথা তোলেন। বলেন ওর ব্যাপারে কিছু জানে কি না। অথৈ মহা উৎসাহে জানায় মিশ্মির সাথে ইয়াসিরকে কথা বলতে বলেছিলো সে। কথা হয়েছে। মিশ্মি পড়া নিয়ে টেনশনে আছে। মেয়ের কথায় স্বস্তি পান না অনাহিতা। ভাবেন সন্ধ্যায় কথা তুলবেন। করলেন‌ও তাই। হানিফ শরীফ বাড়ি ফিরতেই জা আর তার মেয়েকে ডেকে ছবি আর কাগজগুলো দেখান অনাহিতা। মাথায় আকাশ ভেঙে পরে রোশন আরার। মিশ্মিও ঘাবড়ে যায়। কথায় কথায় অনাহিতা বলে ফেলেন ‘এগুলো ইয়াসিরের ছবি’! ব্যস লেগে গেলো দঙ্গল। অপমানে মিশ্মিকে মারতে লাগেন রোশন আরা।

হিমির বুক কাঁপে। কি করবে ভেবে পায় না সে। বাড়িতে সবার মন খারাপ। মেয়েকে প্রহার করার পর সারা সন্ধ্যা কেঁদে ভাসিয়েছেন রোশন আরা। মিশ্মির বাবা হাশিম শরীফ‌ও রেগে আছেন স্ত্রীর উপর। সেই সাথে হতবাক মেয়ের কাজে। হিমির মনে প্রশ্ন জাগে সকাল হলে কি আবার‌ও এসব শুরু হবে? সবাই বকবে মিশ্মিকে? আবার‌ও কি ছোট মামী মারবে তাকে? উত্তর মেলে না। গাঢ় শ্বাস টেনে খাটে এসে বসে হিমি। মিশ্মির পাশের বালিশটায় মাথা রাখে। কয়েক মিনিট পর কাত হয়ে শোয় হিমি। হাত বুলিয়ে দেয় মিশ্মির মাথায়। চোখ দুটো অসম্ভব রকম ফুলে আছে। গাল দুটোও ফুলো ফুলো তার। কান্নায় ভেজা মুখটা অতীব স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে। ঠোঁট হালকা ফাঁক করে শ্বাস টানছে মিশ্মি। আলুথালু চুলে হাত বুলিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে হিমি। অজান্তেই তার চোখের কোনায় জ্বল জমা হয়। আপন মনেই মিশ্মির ওকালতি করে।

‘ভালোবাসা কি দোষের? নয় তো! তবে ওকে কেনো মার খেতে হলো? একজনকে ভালোবেসেছে শুধু। সেই একজন যদি তার বোনের ভবিষ্যত স্বামী হয় তাতে তার কি দোষ থাকতে পারে? মিশু তো আগে জানতো না এই লোকটা কিছু দিনের ব্যবধানে তার বোনের প্রেমে পরবে। মিশু শুধু ভালোবেসেছিলো। ভেবেছিলো তার ভালোবাসা পূর্ণতা পাবে। পায় নি। এখানেও তার প্রতি অবিচার হলো। তার পর‌ও মিশুর দোষ কেনো হবে? কেনো সবাই তাকে বকবে? অকথ্য কথায় গালি গালাজ করবে? ছবিই নাহয় তুলেছে কয়েকটা। লোকটাকে দেখবে বলেই তুলেছিলো। তখন‌ও সে জানতো না তার ভালোবাসা তার নয় অন্য কারো। জানলে হয়তো এতোটা এগুতো না। অথচ কি স্বাভাবিক ভাবেই না ছোট মামী তাকে মরে যাওয়ার বদ দোয়া দিলেন! মায়ের দোয়া যেমন ফলে যায় বদ দোয়াও তো ফলে যায়। ছোট মামী কি এসব জানেন না? ওনার ওই কথাটা যদি সত্যি হয় তবে কি করে থাকবেন মেয়েকে ছাড়া? রাগের মাথায় যা তা বলা গেলেও কথা ফেরানো যায় না। মিশু নির্দোষ, নিষ্পাপ। অপরাধী তো ছোটমামী। সাজা হিসেবে মিশুর উচিত মায়ের সাথে কথা না বলা। মেয়েকে বিশ্বাস করতে না পারলে মায়ের সাথে কেনো কথা বলবে সে? কি করে মা ভাবলো তার মেয়ে অন্যের সংসার ভাঙছে? মিশু চাইলেই বিয়ের আগের দিন ইয়াসিরকে বলতে পারতো তার সবটা। বলে নি। এই ভেবেই যে অথৈর কি হবে! ওর স্বপ্ন ভেঙে যাবে নয়তো ইয়াসিরের সাথে বিয়ে হলে ভবিষ্যতে মিশুর কথা ভেবে গিল্টি ফিল করবে। বোনের কথা ভেবে যে ভালোবাসা বিসর্জন দিলো তাকে এভাবে মারধর করবে কেনো ওরা?’

এটুকুতেই থেমে যায় হিমি। ফোনের ঘন্টা বেজে উঠে তার। বিরক্তি নিয়ে ফোন কানে ঠেকাতেই অপর প্রান্তের ব্যক্তিটি বলে উঠে,

-আমি পৌঁছে গেছি। আপনি কোথায়?

হিমি কান থেকে ফোন নামিয়ে স্ক্রিনে তাকায়। আহত দৃষ্টিতে ঘড়ি দেখে চুপসে যাওয়া গলায় বলে,

-সরি বাচ্চা ডাক্তার। আজ আসতে পারছি না।

তাহির চমকায়। উদ্বীগ্ন গলায় বলে,

-কেনো?

-পারিবারিক একটা কাজে ফেঁসে গেছি। কাল দেখা করি?

তাহির গাল ফুলিয়ে শ্বাস ছাড়ে। বেশ কিছুক্ষন নিরবতায় কাটিয়ে বলে,

-রাখছি।

সাথে সাথে হিমি বলে উঠে,

-রাগ করলেন?

তাহিরের স্পষ্ট জবাব,

-হু।

হিমি কুঁচকানো ভ্রুকে আরো খানিক কুঁচকায়। বলে,

-সেটা আবার বলছেন ও?

-জিজ্ঞেস করলেন তো বলবো না?

-না বলবেন না। তবে বলেই যখন ফেলেছেন তখন রাগ ভুলে যান।

তাহির থমথমে গলায় বললো,

-আমি রাগ ভুলতে পারি না হিমি। আর না ভুলতে চাই।

হিমি অবাক হ‌ওয়া গলায় বললো,

-আপনি যে রেগে আছেন তা আমি বুঝতে পারছি না কেনো?

-আমি বুঝতে দিচ্ছি না তাই।

-কেনো দিচ্ছেন না?

-কারন আমি চাই যেনো আমার রাগ শুধু আমাতেই আবদ্ধ থাকে। যেহেতু আসছেন না সুতরাং ঘুমিয়ে পরুন।

হিমি তাড়াহুড়া করে বললো,

-আপনি রেগে থাকলে যার উপর রেগেছেন তার সাথে কথাও বলেন? তাও এতো স্বাভাবিক ভাবে?

তাহির শান্ত গলায় বলে,

-হ্যা। আমার অভ্যাস আছে।

হিমির কৌতুহলী গলায় প্রশ্ন,

-কিসের অভ্যাস?

-বলবোনা।

-কেনো?

-আমি আপনার উপর রেগে আছি হিমি। আমার আপনার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছে না। অসহ্য লাগছে।

-আপনার গলা শুনে কিন্তু সেটা মনে হচ্ছে না।

-মনে না হলেও এটাই সত্যি।

-আচ্ছা, এখন যদি আমি আপনার সামনে থাকতাম তবে রেগে গিয়ে কি করতেন আপনি?

তাহির বাঁকা হেসে বলে,

-আপনি আমার সামনে থাকলে আমার রেগে যাওয়াটা হতো না।

-কেনো?

-আপনি আসেন নি বলেই রেগে আছি। এখানে থাকলে রাগ হতো না।

হিমি মাথা দুলিয়ে মৃদু গলায় বলে,

-আচ্ছা ছাড়ুন। এখন বলুন কেনো দেখা করতে চেয়েছিলেন?

-দেখা হলে বলবো।

-আপনি এখনো আমার সাথে দেখা করতে চান?

-দরকারটা যেহেতু আমার তাই অবশ্য‌ই দেখা করতে চাই। নেক্সট যেদিন দেখা করবো বলে ঠিক করবো ওইদিন আমাকে রাগাবেন না যেনো?

-যদি রাগাই তবে কি করবেন?

-এখন‌ই বলতে পারছি না। পরিস্থিতিতে না পরলে আমি সব বুঝতে পারি না। কি করবো না করবো সেটা সময়, পরিস্থিতি, মনোভাব থেকেই আসে।

কিছুক্ষন থেমে ছোট্ট নিঃশ্বাস টেনে নিয়ে বলে,

-আমি করবো সেটা জানার জন্য আবার রাগিয়ে দেবেন না যেনো। দেখা গেলো সে রাগ আর কখনো পরলোই না।

হিমি ঠেস মারা গলায় বললো,

-আপনার রাগ না পরলে আমার কি? দরকার তো আপনার।

-এখন দরকার আমার। পরে আপনার দরকার পরবে। হন্নে হয়ে খুঁজলেও এই ডক্টর তাহিরকে খোঁজে পাবেন না।

হিমি আত্মবিশ্বাসী গলায় বললো,

-তাতে কি? আমি বাচ্চা ডাক্তারকে খোঁজে নেবো।

-দুজন‌ই কিন্তু আমি।

-উহু। ব্যতিক্রম আছে বাচ্চা ডাক্তার। আপনি বুঝবেন না।

তাহির নিঃশব্দে হাসে। সে বুঝতে পারে তার রাগ লাগছে না। হিমির কথা শুনতে ভালো লাগছে তার। মন হালকা লাগছে। ক্লান্তিও অনুভব হচ্ছে না। আর কোনো কথা হয় না তাদের মধ্যে। নিজ থেকে দুজনে ফোন কাটে। কেউ কাউকে বাই বলে না। বলে না আবার কবে কথা হবে। বলে না কবে দেখা হবে, কোথায় দেখা করবে। তবে সব‌ই যেনো জানে দুজনে। অদ্ভুত।

_________________

ভোর হতে না হতেই আবার‌ও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয় মিশ্মিকে। বসার ঘরে সোফায় মুখোমুখি বসে আছেন পরিবারের বড়রা। মিশ্মি কাঠগড়ার আসামীর মতো এক কোনায় মাথা নত করে দাঁড়িয়ে আছে। চোখ থেকে টপাটপ জ্বল পরছে তার। হিমি সোফার পেছন দাঁড়িয়ে ছিলো এতক্ষন। অনাহিতার মিশ্মির উপর ছুড়ে দেয়া কাঁদা মেনে নিতে না পেরে এগিয়ে আসে সে। গমগমে গলায় বলে,

-যার ছবি দেখছেন সে ইয়াসির নয়। নিহান। আমার চাচাতো ভাই। নেহাল চাচ্চুর ছেলে।

বসার ঘরে যেনো বিস্ফোরণ ঘটে। ব্যাপারটা কি হলো কিছুই বুঝলো না মিশ্মি। চোখ তুলে বিস্ময় নিয়ে দেখছে হিমিকে। হিমি কোনো কিছুতে পাত্তা না দিয়েই বললো,

-এই ছেলেটা নিহান। নিহান মিশুকে ভালোবাসে। তবে মিশু এসব ছবি টবি তোলে নি।

-যদি তাই হবে তবে এতো ছবি এলো কোত্থেকে? আর পুরালোই বা কেনো কাগজগুলো?

অনাহিতার কথার জবাবে ঢোক গিলে হিমি। শান্ত গলায় বলে,

-ছবিগুলো নিহান পাঠিয়েছে। কাগজ গুলোও ওর দেয়া। সেই কবে থেকে মিশুকে ভালোবাসে। মিশুকে নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করতে ভয় পায় বলেই সামনে আসে নি। রঙিন কাগজে চিঠি ফিঠি লিখে মিশুর ব‌ইয়ে ভাজে রেখে দিতো। সাথে একটা করে ছবি। চেহারা দেখাতে চাইতো না বলেই পেছন দিক থেকে বা আড়াল থেকে ছবি তুলতে বলতো বন্ধুদের। এক‌ই ভার্সিটিতে পরে দুজনে। ছবি আর চিঠি ব‌ইয়ের মাঝখানে রাখতে ঝামেলা হয় নি। মিশু ভয় পেয়ে গেছিলো। তাই সব পুরিয়ে দিচ্ছিলো আরকি।

অনাহিতার হিমির কথা বিশ্বাস হলো না। ভ্রু নাচিয়ে বললেন,

-তোশকের নিচ থেকে যে কাগজ পেয়েছি তাতে তো কিছু লিখা নেই। ছেলেটা কি খালি ছেড়া কাগজ পাঠিয়েছিলো?

হিমি বিজ্ঞদের মতো করেই জবাব দেয়,

-মামানি তুমি বুঝো নি। নিহান পুরো কাগজে লিখে নি। কিছু অংশে লিখেছে প্রেম নিয়ে। মিশু পুরো কাগজ পুরানোর কথা না ভেবে লিখা জায়গাটাই কেটে পুরিয়ে দিয়েছে। বুঝলে?

অনাহিতা সন্দিহান গলায় বললেন,

-তুই কি করে এসব জানলি? মিশু বললো আর অমনি বিশ্বাস করে নিলি। কথা লুকাতে এসব বলছে ও।

-মিশু কিছু বলে নিতো! নিহান বলেছে। কাল তোমাদের হাতে ছবি দেখেই বুঝে গেছি ওগুলো নিহানের। তাই ফোন করে ইনিয়ে বিনিয়ে জিজ্ঞেস করলাম। পরে দেখি সবটাই বলে দিলো। সত্যি বলছি মিশুর কোনো দোষ নেই। এটা অথৈর বর ইয়াসির নয়? আমার ভাই। সেই ছোটবেলা থেকে চিনি একে। নিহানের হাটা চলা, দাঁড়ানো সব চোখের ভেতর ক্যাপচার করা। ছবিতে নিহান‌ই!

চলবে,,,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here