হিমি পর্ব-৪৪

0
762

হিমি
লেখনী- সৈয়দা প্রীতি নাহার

৪৪.

জাঁকজমকপূর্ণ আসর। কনের বাড়িতেই বিয়ের অনুষ্ঠান। ঘর ভর্তি কনেদের মেহমান। বরযাত্রী এখনো এসে উপস্থিত হন নি। তবে বরের দাওয়াতে হিমি আর মোজাম্মেল সাহেব কিছু আগেই এসে পৌঁছেছেন। একটু আগে অব্দি হিমি মোজাম্মেল সাহেবের পাশে ছিলো না। কোনো এক অতি জরুরি কাজে বেরিয়েছিলো। মোজাম্মেল সাহেব একা সারা বাড়ি হেঁটেছেন। সময় কাটানোর জন্য গল্প করার তীব্র প্রয়োজন বোধ করছিলেন তিনি। তবে গল্প করতে ইচ্ছুক কাউকে পাওয়া যায় নি। দু একজন রাজি হয়েছিলো তবে তাদের সাথে কথা বলে জমছে না বলেই সরে পরেছেন তিনি। এই মুহুর্তে একটা প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে ভাবনায় মগ্ন হয়েছেন মোজাম্মেল সাহেব। ভাবনার বিষয়বস্তু, বর কেনো এসে পৌঁছলো না? বিয়ে হবে কি না? হিমি কি করবে? এখন কোথায় আছে? মনের ডাক্তারের সাথে হিমির কোনো কথা হবে কি না? এর মধ্যেই পাশে এসে দাঁড়ালো হিমি। মুখে লেগে আছে এক চিলতে হাসি। চোখে উচ্ছ্বাস। মোজাম্মেল সাহেব চেয়ারে বসে থেকে ইশারায় হিমিকে কাছে ডাকলেন। হিমি কিছুটা ঝুঁকলো। তিনি বললেন,

‘কোথায় ছিলি এতক্ষন?’

‘সিক্রেট মিশনে।’

‘সিক্রেট মিশন? কি সিক্রেট মিশন? দেখ হিমি, আমার থেকে খবরদার কিছু লুকাবি না!’

হিমি মৃদু হাসলো। পাশ থেকে মোজাম্মেল সাহেবকে জড়িয়ে ধরে ফিসফিস করে বললো,

‘লুকাবো না। বলবো। সময় হলে বলবো। এখন বসে বিয়ে দেখো। বাচ্চা ডাক্তার পল্টন নিয়ে এসে গেছে। কনের ভাই বোনেরা গেইট ধরেছে। এক্ষুনি ভেতরে আসবেন ওনারা।’

মোজাম্মেল সাহেব চাপা অস্বস্তি নিয়ে মাথা দুলালেন। হিমি সোজা হয়ে দাঁড়ালো। কালো টিশার্টের উপরে পরা লাল কালোর চেক শার্টের কলার ঠিক করলো। খোলা কুঁকড়ানো চুল হাত দিয়ে গুছিয়ে শার্টের হাতা গুটালো। মনে মনে হাসছেও প্রচুর। মোজাম্মেল সাহেব আড়চোখে ভাইঝিকে দেখছেন। না জানি কি কান্ড ঘটিয়ে এসেছে। ওনার পরিকল্পনার দফারফা না করে দেয়!

__________________

নির্জন রাস্তা ধরে ইমন আর মেঘ চলছে। হাতে তাদের সফট ড্রিঙ্কের ক্যান। থেকে থেকেই ক্যানে চুমুক বসাচ্ছে দুজনে। কথাও বলছে টুকটাক। এক পর্যায়ে ইমন সিরিয়াস ভঙ্গীতে বললো,

‘তোকে কিছু জানানোর ছিলো মেঘ।’

‘জানা।’

‘সোহিনীর ব্যাপারে।’

‘সোহিনী? কি ব‌্যাপার বলতো!’

ইমন ঘন শ্বাস টেনে ফুটপাতে বসে পরলো। হাতের ইশারায় মেঘকে বসতে বলে বললো,

‘সোহু তোদের সব কথা জানায় নি। কিছু কথা লুকিয়েছে আর কিছু এড়িয়েছে। বন্ধু হিসেবে আমার তোদের সব জানানো উচিত। সোহিনীর সামনে সবাইকে বলতে পারবো না তাই তোকেই বলছি। আফ্টার অল সোহুর হবু বর!’

শেষ কথাটা দুষ্টুমি করে বলেছে ইমন। মেঘ হাসলো তাতে। ভ্রু নাচিয়ে জানতে চাইলো সব কথা। ইমন ঠোঁট গোল করে ছোট্ট নিশ্বাস ফেলে বললো,

‘আরাফাত সোহিনীকে শুধু বিরক্ত‌ই করে নি বরং তাকে রেইপ করার চেষ্টা করেছিলো।’

‘হুয়াট!’

আঁতকে উঠে মেঘ। ইমন ব্যতিব্যস্ত গলায় বলে,

‘সোহিনী কোনোরকম নিজেকে বাঁচিয়ে নেয়। পুলিশ কম্প্লেইন করে ওই রাতেই বাড়ি যায়। ওখানে সব জানা জানির পর সোহিনীর বড় বোনের শ্বশুরবাড়ির কেউ একজন জানায় সুইসাইড এট্যাম্প্টের ঘটনা। পরদিন জোর করে সোহুকে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে গ্রামের সবাই। বিয়ে থেকে বাঁচতে সন্ধ্যার দিকে পালিয়ে আসে। এখানে এসেও আরো বড় বিপদে ফেঁসে যায়। বাড়িওয়ালা তাকে ফ্ল্যাট থেকে বিতাড়িত করেছে। বাড়ি থেকে পালাতে গিয়ে সাথে একটা ছোট ব্যাগ ছাড়া কিছুই আনতে পারে নি। মাঝরাতে আমার সাথে দেখা। তখন সোহু ফুটপাতে ব্যাগ হাতে দাঁড়িয়ে। জিজ্ঞেস করায় অর্ধেক কথা বললো। বাকিটা এড়িয়ে গেছিলো। সাহায্য চাইছিলো আবার বলছিলো যেনো কাউকে না জানাই। তোদেরকেও না। শেষমেষ আমার পরিচিত এক আঙ্কেলের সাথে কথা বলে থাকার ব্যবস্থা করে দিলাম। ওখানেই আছে এখন।’

‘এতোকিছু হয়ে গেছে ও কিছু জানায় নি কেনো আমাদের? বন্ধুদের থেকে এসব লুকানোর মানে কি?’

‘নিজেকে শক্ত প্রমান করতে। জানিস‌ই তো আরাফাতের সাথে সম্পর্ক শেষ হ‌ওয়ার পর থেকেই কেমন হয়ে গেছে ও! নিজেকে শক্ত রাখতে হবে, ডোন্ট কেয়ার ভাব থাকতে হবে। তবুও নিজের অনুভুতি কষ্ট সব সামলে চলছিলো। এর মধ্যেই ওই **** ***** ফিরে এলো। সোহুর জীবনটা আবার‌ও তছনছ করার চেষ্টা চালালো। সোহু ভেবেছিলো তার পরিবার তাকে সাহায‌্য করবে, বুঝবে। বুঝে নি। উল্টো ধরে বেঁধে বিয়ে দিয়ে আপদ বিদায় করতে চায়। এখানে ফিরেও সবার চোখে নিজেকে দোষী দেখে নিজেকে শক্ত করে তুলেছে। এতোটাই শক্ত যে কাছ থেকে দেখলেও বুঝা যায় না কি চলছে ওর মনে। কি হয়েছে তার। এমন ভান ধরে চলাচল করছে যেনো কিছুতেই কিছু যায় আসে না। তোকে যে প্রপোজ করলো না? ওটাও নিজেকে শক্ত প্রমান করে। ও তোকে ভালোবাসে মেঘ। সেটা আর কেউ না জানলেও আমি জানি। সোহু ভয় পায়। ভাবে যদি তুই তাকে রিজেক্ট করে দিস! তাই এমন ভাবে বিয়ে করার কথা বললো যেনো বিষয়টা খুব স্বাভাবিক। বিয়ে না হলেও ব্যাপার না। ও খুব সাধারন ভাবে নিচ্ছে এসব। আসলে এমনটা নয়। শুধুমাত্র সেল্ফ ইন্ডিপেন্ডেন্ট, সেল্ফ রেসপেক্ট, স্ট্রং হতেই এমন করে বলেছে। ওর ধারনা‌ও ঠিক। আমরা সবাই ভেবে নিয়েছি সোহু হয়তো সিরিয়াস নয় অথবা সে এক্সাইটেড নয়। সোহু বেহায়া হতে চায় না, আবার‌ও কারো দয়ার পাত্রী হতে চায় না মেঘ।’

এটুকুতে থামলো ইমন। মেঘ স্বাভাবিক ভাবে জানতে চাইলো,

‘তুই এতো কথা কি করে জানলি? সোহিনী বলেছে?’

‘না। বললাম না, অর্ধেক বলেছে। বাকিটা আমি জেনেছি।’

কয়েক মুহুর্ত পর মেঘের দিকে তাকিয়ে আকুলতা ভরা গলায় বলে উঠলো ইমন,

‘বিষয়টা যদিও তোর আর সোহুর তবুও না বলে পারছি না। আমি তোদের দুজনের‌ই বন্ধু। দুজনকেই চিনি। আবদার করতেই পারি! তুই সোহুকে বিয়ে করে ফেল। মেয়েটা খুব ভালোবাসতে জানে। তোর পুরো পরিবারের সাথে মানিয়ে চলতে পারবে। ভীষন ভালোবাসে তোকে। ফিরিয়ে দিস না ওকে। মানছি সোহুর পরিবার তোর পরিবারের মতো অভিজাত নয়, সোহু কালো, তবুও,,,,,,’

ইমনের কথার মাঝেই ঝট করে বলে বসে মেঘ,

‘আমি সোহুকে ভালোবাসি ইমন।’

ইমন চোখ গোল গোল করে তাকালো। অবিশ্বাসী গলায় বললো,

‘সত্যি বলছিস? তুই সোহুকে ভালোবাসিস! কবে থেকে?’

‘সেটা আজকাল থেকে নয় অনেক আগে থেকেই। প্রথমে বলতে পারি নি সংকোচে, তারপর আরাফাতের সাথে ওর সম্পর্কের জন্য, এরপর হুট করেই ওর সুইসাইড এট্যাম্প্টের খবরে ভড়কে গেছিলাম। দুনিয়া অন্ধকার লাগছিলো। এতকিছুর পর সোহু দ্বিতীয় বারের মতো কারো সাথে জড়াবে কি না বুঝে উঠতে পারি নি। আড্ডার মাঝখানে তোদের বিশেষ করে সূর্যের খোঁচাগুলো বিরক্ত লাগে নি কখনো। আসলে সূর্য হয়তো সোহুকে নিয়ে থাকা আমার মনের সুপ্ত অনুভুতির আঁচ করতে পেরেছিলো তাই বার বার মজার ছলে আমাদের বিয়ে করার কথা বলতো। ভেবেছিলাম সময়, সুযোগ বুঝে একদিন সোহুকে বলে দেবো। তার আগেই আমায় অবাক করে দিয়ে ও বললো। আমি তখন‌ও বিশ্বাস করতে পারি নি। সোহু ঠিক করে কিছু বলে নি বলেই মানতে কষ্ট হচ্ছিলো। মন বলছিলো, এখানে অন্য ব্যাপার আছে। সোহু নিশ্চয় বিশেষ কোনো কারনে আমায় বিয়ে করতে বলছে। ভালোবাসা দূরে থাক ওর পছন্দের তালিকাতেও হয়তো আমি নেই। ভেবেই বসেছিলাম আমি বিয়েতে মানা করলে তার কিছু যায় আসবে না। দিব্যি অন্য কাউকে বিয়ে করে নেবে। তুই ভুলটা ভাঙিয়ে দিলি। থেঙ্ক ইউ সো মাচ দোস্ত! ‌এতদিনে তবে সত্যিটা জানলাম। সোহুও আমায় ভালোবাসে।’

ইমন হাস্যোজ্জ্বল গলায় বললো,

‘সোহুকে কবে জানাচ্ছিস তুই বিয়েতে রাজি?’

‘এখন বিয়ে টিয়ে করছি না দোস্ত। এখন প্রেম করবো। প্রেম প্রেম পাচ্ছে আমার।’

‘সোহু প্রেম করবে?’

‘করতে বাধ্য।’

ইমন হাসলো। মেঘ সন্দিহান গলায় বললো,

‘দোস্ত? তুই তো বলেছিলি ওর বিয়ে ঠিক হচ্ছে। কিন্তু ও তো বিয়ে থেকে পালিয়ে এসেছে। আবার কিসের বিয়ে?’

ইমন মাথা চুলকে বললো,

‘ওর বাবা মা‌ই জানে কেনো বিয়ে, কিসের বিয়ে। আমি তো খবর নিচ্ছিলাম। তখন‌ই জানলাম আবার বিয়ের তারিখ ঠিক হচ্ছে। এবার বোধ হয় সোহুকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার প্ল্যান করছে ওরা।’

__________________

বরযাত্রী চরম বিরক্ত, ক্ষুদ্ধ। সেই সাথে অপমানিত। কনের বাবা মায়ের মাথায় হাত। সামিয়া পালিয়েছে। ঘন্টা দুয়েক আগে অব্দি মেয়ে ঘরেই ছিলো। পার্লারের মেয়েরা সাজিয়ে গুজিয়ে বসিয়ে রেখেছিলো তাকে। সেও বিয়ে নিয়ে খুশি ছিলো। কিন্তু বরপক্ষের আগমনের কিছুক্ষন পর থেকেই জানা গেছে মেয়ে উধাও। সারা বাড়ি খোঁজা হয়েছে। বাড়ির কাছের পুরো এলাকা খোঁজা শেষ। মেয়েকে পাওয়া যায় নি। পাওয়া গেছে তার লিখে রাখা একটা চিঠি। তাতে গোটা গোটা অক্ষরে লিখা,
“আমায় মাফ করে দিও। এই বিয়ে করতে পারবো না। শাহির ভিসা হয়ে গেছে। এই দুই মাসে চাকরিও যোগার করে ফেলেছে শাহি। আমি তার সাথে চলে যাচ্ছি। আমার পাসপোর্ট, ভিসা সব রেডি। ডক্টর তাহিরের বাড়ি থেকে দেয়া লাগেজটাই নিয়ে যাচ্ছি। খোঁজে লাভ নেই। রাত দুটোর ফ্লাইটে দেশের বাইরে চলে যাবো। কোথায় যাচ্ছি বলতে পারলাম না, শাহি মানা করেছে। আল্লাহ্ হাফেজ!”

চিঠি পড়ে মাথা চাপড়ালেন সামিয়ার বাবা। সামিয়ার মা কেঁদে কেঁদেই বললেন,

‘ওই ছেলের তো চাকরি বাকরি কিছুই হয় নি। মিথ্যে বলেছে আমার মেয়েকে। আমার সাদাসিধে মেয়েটাকে ভুলভাল বুঝিয়ে নিয়ে চলে গেলো! ওকে কিছু করে না দেয় ওই গুন্ডা ছেলে। ওগো? আমার মেয়েকে ফিরিয়ে আনো!’

তাহিরের মামা আক্রোশ নিয়ে বললেন,

‘রাখুন তো! সাদাসিধে মেয়ে! আপনাদের মেয়ে কি বাচ্চা যে একটা ছেলে বললো আর ও বিশ্বাস করে চলে গেলো? নিশ্চয় আগে থেকে পরিকল্পনা করেছিলো এসবের। ছি ছি! এখন কোন মুখ নিয়ে বাড়ি যাবো আমরা? আপনাদের মেয়ে তো আমাদের সবার সম্মান মাটিতে মিশিয়ে দিলো একেবারে। আবার চিঠি লিখেছে! বিদেশ যাওয়ার লোভে আমার সোনার টুকরো ভাগ্নেকে এভাবে অপমান! তা তো মানা যায় না। আমি আপনার বিরুদ্ধে কেইস করবো। মান হানির মামলা করবো। আপনার মেয়ে যার সাথে পালিয়েছে তাকে শুদ্ধ জেলে পুরবো। কতো বড় বুকের পাটা! বিয়ের আসর থেকে মেয়ে পালায়।’

তাহির ধীর গলায় বললো,

‘সামিয়া যার সাথে পালিয়েছেন তার সাথে সম্পর্কের ব্যাপারে আপনারা জানতেন না?’

সামিয়ার বাবা মাথা দুলালেন। বললেন,

‘এক নাম্বারের ধান্দাবাজ ছেলে। আমার মেয়েটা ফাঁসিয়েছে। দু মাস আগে হ‌ওয়া বিয়েটা ওই ছেলের কথায় পিছিয়ে এনেছে আমার মেয়ে। ছেলেটাকে শর্ত দিয়েছিলো দুই মাসে যেনো চাকরি যোগার করে। আমার সামনে এসে দাঁড়ায়। পারে নি। ওই গর্দভ, অশিক্ষিত ছেলে কিছুই করতে পারে নি। সামিয়া বিয়েতে রাজি হয়। শাহির সাথে সব সম্পর্ক নষ্ট করে ফেলে। আমরা ভেবেও পাই নি এমন কিছু ঘটতে পারে। ওই ছেলে আমার মেয়েকে কিডন্যাপ করেছে।’

তাহিরের মামা গর্জে উঠলেন,

‘থামুন মশাই। সব শুনে তো মনে হচ্ছে আপনারাই লাই দিয়েছেন আপনাদের মেয়েকে। অন্য ছেলের সাথে সম্পর্ক থাকাকালীন কি করে এই বিয়েতে মত দিলেন আপনারা? মেয়ে পালাবে না তো কি করবে? তাও তো ভালো বিয়ের আগে পালিয়েছে। যদি বিয়ের পর পালাতো? তবে? কোনো কিডন্যাপিং ফিডন্যাপিং হয় নি আপনার মেয়ে। চিঠিতে স্পষ্ট করে লিখে দিয়েছে ও পালাচ্ছে। ইশ, কি একটা অবস্থা! কি করে যে ছেলের মাকে মুখ দেখাবো! আপা হার্ট অ্যাটাক না করেন আবার!’

মোজাম্মেল সাহেব নিরব দর্শকের কাতারে রয়েছেন। হিমিকে মুচকি মুচকি হাসতে দেখে ঘাড় নিচু করে বললেন,

‘হাসছিস কেনো? সার্কাস হচ্ছে এখানে?’

হিমি জবাব দিলো না। ঠোঁট টিপে হাসছে। মোজাম্মেল সাহেবের সন্দেহ হলো। তিনি গলার স্বর খাদে নামিয়ে বললেন,

‘এসবে কোনো ভাবে তুই জড়িত না তো?’

হিমির হাসি চ‌ওড়া হলো। মোজাম্মেল সাহেবের চোখ দুটো রসগোল্লার ন্যায় বড় বড় হয়ে গেলো। তিনি চোখ ঝাঁপটালেন। ঢোক গিলে বললেন,

‘কি করেছিস মা?’

‘বেশি কিছু করি নি। সামিয়াকে পালাতে সাহায্য করেছি। আর পালানোর আগে ওকে বুঝিয়েছি।’

‘কি বুঝিয়েছিস?’

‘বুঝিয়েছি ওর এই বিয়েটা করা উচিত নয়। শাহির সাথে অন্যায় হচ্ছে। ওর উচিত একটা চিঠি লিখে শাহির হাত ধরে পালানো। শাহিকে বিয়ে করে ফেলা।’

‘তারমানে কনেকে ভুজুম ভাজুম তুই দিয়েছিস!’

‘হ্যা।’

‘কি সাংঘাতিক! ‌ওরা কোন দেশে যাচ্ছে?’

‘কোনো দেশে যাচ্ছে না তো। ইন ফ্যাক্ট ওরা এই শহরেই আছে।’

‘বলিস কি! তবে যে চিঠিতে লিখা দুটোয় ফ্লাইট! ছেলের চাকরি, ভিসা হয়েছে!’

‘ওগুলো তো আমি লিখিয়েছি।’

‘তুই?’

‘হ্যা।’

‘চিঠির সব কিছু সব মিথ্যা?’

‘সব মিথ্যা।’

‘এই যা! ছেলের চাকরি বাকরি নেই?’

‘উহু, বেকার। বেকার বলেই সামিয়া মেনে নিচ্ছিলো না। আমি দুজনকে এক করে দিয়েছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ওরা বেরিয়ে আসবে। তারপর শাহিকে কোনো একটা কাজে লাগিয়ে দিতে হবে। প্রবলেম সল্ভ!’

চলবে,,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here