উপন্যাস:হিয়ার মাঝে-লুকিয়ে ছিলে।
কলমে: চন্দ্রা।
পর্ব:০৮
প্রভাতের মোলায়েম আলো মুখে কপালে পরতেই চোখ মেলে তাকালো রিতি।বেডের এক পাশে উদ্বিগ্ন চিত্তে হয়ে বসে আছেন অন্নপূর্ণা দেবী।অবাক হয় রিতি।মাথাটা ক্যামন হালকা লাগছে তার। অতিরিক্ত কফ কাঁশি নির্মূলের ঔষধ সেবন করলে যেমন একটা ঝিম ধরা অনূভুতি হয় এ ঠিক তেমনই এক গা এলানো অনুভূতি। অন্নপূর্ণা দেবী সশব্যস্ত হয়ে ঝুঁকে বলেন,,এই তো চোখ মেলেছিস।কি ভয়টাই না পেয়েছিলাম,খোকা যখন শেষ রাতে দরজায় ধাক্কা দিয়ে ডেকে উঠালো।এসে দেখি অজ্ঞান হয়ে পরে আছিস তুই,কপালে জলপট্টি।সুখদেব ডাক্তারকে এনে তারপর ক্ষান্ত হলো সবাই।
মনে মনে খানিকটা লজ্জিত রিতি।কি বিব্রতই না করলো মানুষ গুলোকে। দরজার দিকে ফিরতেই হালকা আলোয় একটা মনুষ্য মূর্তি সরে যেতে দেখলো জানালার পাশ থেকে।
একগ্লাস গরম দুধ হাতে নিয়ে শয়নগৃহে প্রবেশ করলো জয়া।বেডসাইড টেবিলে গ্লাসটা রেখে বললো,মামিমা তুমি গিয়ে হাত মুখ ধুয়ে নাও।আমি দেখছি ওকে।
এই সাত সকালে তোমরা এখানে? খুব বাড়াবাড়ি করেছি কি? লজ্জিত হয়ে প্রশ্ন করে রিতি।
টেবিলে রাখা জল ভর্তি বাটিটা নিয়ে বেড়িয়ে যেতে যেতে অন্নপূর্ণা দেবী বললেন,জয়া মা,ওকে গরম দুধটুকু খাইয়ে ঔষধ খাইয়ে দে।আমি আসছি এখনি।
জয়া রিতির দিকে এগিয়ে গিয়ে ওকে ধরে বসিয়ে দিয়ে বললো,এমন জ্বর গায়ে নিয়ে চুপচাপ রইলি রিতি?আমারই ভূল হয়েছে রাতে তোর খবর না নিয়ে ঘুমিয়ে পরা।ভাগ্যিস ভাই দেখেছিলো তোকে বেহুঁশ হয়ে পরে থাকতে।না হলে কি যে হতো?
দাঁড়াও বৌদিদি।কি বললে তুমি? তোমার ভাই দেখেছে মানে কি?(নিশ্চিত হয় রিতি রাতের দেখাটা তবে অন্য রাতের মতো স্বপ্ন ছিলো না)
শুধু কি দেখেছে? রান্নাঘর থেকে বাটিতে জল এনে কপালে জলপট্টি দিয়ে যেই দেখলো কাজ হয়না তখন বাড়ির সবাই কে ডেকে উঠালো।তবে যাই বলিস লক্ষণ কিন্তু ভালোই।সে কি অস্থিরতা ছেলের ?মুচকি হাসছে জয়া। বিস্ময়ে হতবাক রিতির গা জ্বলে ওঠে বৌদিদির এমন হাসি দেখে।
ট্রে ভর্তি খাবার নিয়ে দরজায় দেখা দিলো রঘুনাথ,
কিরে বুড়ি।তোর নাকি অসুখ বিসুখ হয়না? সেদিন তো খুব বড়াই করে বললি, দাদাভাই তোমাদের মতো এঁদো শরীর আমার নয় ওসব জ্বর জারি আমার ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবেনা।নে নে এবার এগুলো খা তো।
এ মা দাদাভাই তুমি এসব আনতে গেলে ক্যানো?ধীরে সুস্থে বললো রিতি।গলাটা ক্যামন এটে আছে।
এত আকাশ থেকে পরছিস ক্যানো?ছোট বেলায় যখন কোলে বসে খেতি আর গায়ের জামায় এঁটো লাগিয়ে শেষ করতি তখন কিছু হয়নি আর আজ একটু খাবার আনলাম বলে জিভ কাটছিস? আগেও ছোট বোন ছিলি এখনো আমার ছোট বোনটিই আছিস।বয়স বেড়েছে বলে কি সেই ভাই বোনের মধুর সম্পর্ক থাকবে না?
দাদাভাই আমি কি বললাম আর তুমি কি কি বলছো?
এই তোদের দুই ভাইবোনের নাটকবাজি বন্ধ হলে এবার দুধটুকু খেয়ে ঔষধ খেয়ে নে ।ধমকে ওঠে জয়া।
দেখলি বুড়ি? এইজন্যই তো বলে,পরের মেয়ে ঘড়ে আনতে নেই।আপন জনের সাথে সম্পর্ক নষ্ট হয়।জয়াকে রাগাতে কথাগুলো বলে রঘুনাথ।মুখটিপে হাসছে রিতি।জয়া ফোঁস করে ওঠে,তোমাকে মামিমা কি বলেছেন মনে নেই?বিধু মাঝিকে খবর দাও।যাও।
ওহ্ তাইতো । একেবারে ভুলে গিয়েছি। সচকিত হয়ে ওঠে রঘুনাথ।রিতির কাছে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পরে।
বিধু মাঝিকে আবার কি দরকার পরলো বড়মার? শুধোয় রিতি।
বহুদিন বাদে চৌধুরী বাড়ির পুকুরে জাল ফেলা হবে।বড় চিতল,রুই মাছ ডাঙায় উঠবে। পরশু মহালয়া তার পরতো আর দশমীর আগ পর্যন্ত নিরামিষ।তোরা দুটিতে এক জায়গায় হয়েছিস ,এ সুযোগ হাতছাড়া করা যায়? খুশিতে ঝলমল করে ওঠে জয়ার মুখমন্ডল।
বৌদিদি তুমি বসো।আমি ওয়াশরুম থেকে আসছি। ফুল তোলা হয়নি না?
এখন ফুল দিয়ে কি হবে?তোর গোপালকে খাওয়ানোর দায়িত্ব আজ আমার। তুই খেয়ে নে।
না গো বৌদিদি ও দায়িত্ব আমি কাউকে দিতে পারবোনা।
তাই বলে তুই এই জ্বর গায়ে এখন চান করবি?আঁৎকে ওঠে জয়া।
কোথায় জ্বর? দেখো বরফের মতো ঠান্ডা আমার হাত, পা, কপাল। নিজের শরীরের বিভিন্ন অংশে হাত দিয়ে বললো রিতি।
যতই বরফ কুচি হোক আর আগুনের ফুলকি উঠুক তোমার চান করতে হবে না।নিজে বাঁচলে ঠাকুর দেবতার নাম সব হবে।এই মামিমাকে ডাকছি আমি।জয়া ভয় দেখায়।
রিতি উৎকন্ঠায় নিজের তপ্ত হাতে প্রাণপনে জয়ার মুখটা বন্ধ করে ধরে,
দোহাই বৌদিদি ,বড়মাকে ডেকোনা।আমি স্নান করছি না।শুধু বাসি কাপড় ছেড়ে হাত মুখ ধুয়ে ফেলবো।সকালে পূজা না করতে পারলে দিনভর শান্তি পাবোনা।রিতির কন্ঠে মিনতি ঝরে পরে।
জয়া নিজের মুখটা ওর হাত থেকে মুক্ত করে হাঁফাতে হাঁফাতে বলে,কি দস্যি মেয়েরে বাবা,, ভাইয়ের আবার বিয়ে দেয়ার শখ হয়েছে তোর?
নিজের ভুল বুঝতে পেরে সংকুচিত হয়ে বলে রিতি,সরি বৌদিদি,, নিজের দুই কানে হাত দেয় ।
জয়া শব্দ করে হেসে ওঠে,,,
এই দৃশ্যটা যদি তোর ছাত্র ছাত্রীদের দেখাতে পারতাম।কি অবস্থা হতো বল?ভাবা যায়, তাদের ডাকসাইটের রিতি দিদিমনি কান ধরে ক্ষমা চাইছে?হি হি হি।
রিতি কর্ণদুটিকে অঙ্গুলি মুক্ত করে কপট অভিমান দেখিয়ে বলে,,,
বৌদিদি,,একটা সত্যি কথা বলোতো,তুমি কি আমার শত্রু পক্ষের কিছু হও?
হ্যা তো।তুই জানিস না ।আমি রূপের বড়দার অন্নে প্রতিপালিত।সে তো তোর এহকাল, পরকাল, আজন্মকালের শত্রু।
রিতির মুখাবয়ব থেকে অভিমানের পর্দা সরে এক বিষন্নতার অমানিশা স্পষ্ট হয়।সে মুখ দেখে জয়ার ভেতরটা মুচড়ে ওঠে এক স্নেহ বাৎসল্যতায়।রিতিকে বুকে টেনে নিয়ে বলে আদ্র কন্ঠে, দুঃখ করিস না দিদি। একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। ভগবানে যার অবিচল বিশ্বাস। মানুষের প্রতি যার এমন দরদ।তাকে কোনো দিন ঈশ্বর চিরদুঃখী করে রাখেন না।
ভালো মানুষের পরীক্ষা যে অনেক বেশী নেন উপরওয়ালা। পরীক্ষা তোর চলছে সাফল্য একদিন আসবেই।
প্রায় ঘন্টা খানেক পর বাসভবনের মূল দরজা দিয়ে বের হচ্ছিল রিতি। হাঁটুর ব্যাথাটা কমেছে একটু। শাড়ির আঁচল টা কাঁধের উপর ঠিক করতে করতে ডেকে বললো বড়োমা আমি মন্দিরে যাচ্ছি তুমি এসো।যখনি দরজার বাইরে একপা রাখলো ধাক্কা খেতে গিয়েও খেলোনা একটুর জন্য। পেছনের দেয়ালে ঠেস দিয়ে সামলে নিলো নিজের দূর্বল শরীরটাকে। সামনের মানুষটার সাথে চোখাচোখি হলো নিমেষেই। জগিং করে ফিরছে সে। নির্ঘুম রাত্রি যাপনের ফলে অক্ষিযুগল রক্ত জবার সৌন্দর্য ধারন করেছে তার। কিন্তু ও চোখের মায়াময় চাহুনি খর্ব হয়নি তাতে। রিতি অস্বস্তিতে কাঁচুমাচু হয়ে মেঝেতে দৃষ্টি নিবদ্ধ করতেই বিরূপাক্ষ তার দিকে একঝলক অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে পাশকাটিয়ে অন্দরে প্রবেশ করলো।পেছন ফিরে শুধু একবার দেখলো,খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটা রিতির সদ্যভেজা চুল থেকে জল গড়িয়ে পরনের শাড়িটা ভিজছে।ড্রইং রুমে এসেই চিল চিৎকার শুরু করল সে,মা,,,মা,,,, বৌদিদি,,,বলছি এ বাড়ির সব নিয়মকানুন গুলো ধুয়ে মুছে গিয়েছে নাকি? যার যা খুশি করছে আর বাইরের মানুষের জন্য বাড়ির মানুষগুলোর হেপা পোহাতে হচ্ছে ক্যানো?
রিতি ভেতরে রূপের উচ্চস্বরে বলা কটুকথা গুলো স্পষ্টই শুনতে পারলো।রাতের বেলা জ্বরের ঘোরে পরে থাকার সময় দু একবার চোখ খুলে সে উদ্বিগ্ন একটা মুখই নিজের মুখের উপরে দেখেছিলো আর তাতে যে ভালোলাগা টুকুর জন্ম হয়েছে সেটুকুও আর অবশিষ্ট রইলো না।
অন্নপূর্ণা দেবী গরম জলে স্নান শেষে সবে কাপড় পাল্টাচ্ছিলেন। ছেলের চিৎকার শুনে কোনরকমে শাড়িটা জরিয়ে বেরিয়ে এলেন নিজের কক্ষ থেকে। বিরূপাক্ষ ততক্ষনে উপরে উঠে গিয়েছে,,
কি হলো কি খোকা সকাল সকাল বাড়ি মাথায় তুলেছিস ক্যানো?
কি হয়নি সেটা বলো মা?
এত না পেঁচিয়ে সোজা কথাটা বলতো?কি হয়েছে?
একটু চোখ কান খোলা রাখো বুঝতে পারবে।আদর দিয়ে দিয়ে মাথায় উঠিয়েছো দোষ গুলো দেখবে কি ভাবে?
নিজের ঘড়ে ঢুকে রাগ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে বিরূপাক্ষ। ছেলের উপর বিরক্ত হয়ে নিজের কক্ষে প্রবেশ করেন অন্নপূর্ণা দেবী।ছোট বেলাকার চিৎকার চেঁচামেচি করার অভ্যাসটা ছাড়তে পারলো না ছেলেটা।
শিউলি তলায় ফুল কুড়াচ্ছে রিতি কিন্তু দেহের সাথে মনটাও বড়ো অশান্ত তার।এমন অশান্ত মনে গোবিন্দ পূজা করবে কি প্রকারে।
রূপ ঘড়ে ঢুকেই ছুটে গিয়েছে ব্যালকনিতে। কিসের টানে জানে না। চোখদুটো আপনা আপনিই চলে গেলো শিউলি তলায় উপুড় হয়ে ফুল কুড়ানো রমনীর দিকে। মেজাজ টা এখনো খিচে আছে তার ।যে ব্যক্তি রাতে প্রবল জ্বরের ঘোরে ভুল বকেছে সে ভোরেই চুলে শ্যাম্পু দিয়ে স্নান করার ঔদ্ধত্ত্ব দেখায় কিভাবে?
ঘাড়ে কারো স্পর্শ পেয়েই পেছন ফেরে বিরূপাক্ষ,,
ও তিতলি । ঘুম ক্যমন হলো তোর?
তুই যা শুরু করলি আর ঘুম,,,
ওহ্ সরি রে,,আই এম এক্সট্রিমলি সরি ফর মাই বিহেবিয়ার।
ইটস্ ওকে রূপ।দরকারী কথাটা বলি শোন।
হ্যা বল?তোকে একটুও সময় দিতে পারিনি বলে দুঃখিত আমি।আর তুইই তো সবার সাথে মিশে গিয়েছিস তাই আর,,,,
এই থামতো তুই,,,বাবা কল করেছিলেন।প্যারিস থেকে সোজা তোর সাথে চলে এসেছি তাঁরা খুব কষ্ট পেয়েছেন। আমার ও মন টানছে খুব।আমাকে যেতে হবেরে!পারলে আজই,,
প্লিজ দোস্ত রাগ করিস না। আজকের দিনটা থেকে যা,,তিতলির গালে নিজের ডান হাতটা রেখে খুবই অনুরোধের সুরে বললো বিরূপাক্ষ।
রূপের এমন অন্তরঙ্গ ব্যবহারে তিতলির তপ্ত হৃদয়টা শীতল হয়ে আসে।অন্য দিকে দূর থেকে কেউ একজন তাদের এমন দৃশ্য দেখে নিজের অজান্তেই তপ্ত অশ্রু হাতের তালুতে মুছে নিলো সেটা কারোরই দৃষ্টিগোচর হয়েছে কি?
কথায় আছে নারীদের এমন একটি বিশেষ ক্ষমতা আছে যার মাধ্যমে সে অন্য মানুষের দৃষ্টি দেখে বলে দিতে পারে তার মনের ভাবগতি। অন্নপূর্ণা দেবী তিতলির চোখে তাঁর খোকাকে পাওয়ার অদম্য ইচ্ছা দেখেছে। দেখেছে বিরূপাক্ষের প্রতি ভালোবাসা।তাইতো তিনি বিলম্ব না করে গতকাল রাতে তিতলিকে নিজের শয়নকক্ষে একান্তে ডেকে খোলাসা করেছেন রিতির সাথে রূপের সম্পর্কটা।কথাটা শুনে তিতলির সমগ্র জুড়ে যেনো অন্ধকার নেমে এসেছিল কিন্তু সেই অন্ধকারাচ্ছন্ন সত্বায় ক্ষীণ আশার আলো দেখতে পেলো তখনি যখন শুনলো রূপ রিতিকে কোনোদিন ই মেনে নেয়ইনি। তারপরেও একটা খটকা থেকেই যায়,রূপ তাকে এতকিছু বললো আর এতবড় একটা ঘটনা চেপে গেলো কিন্তু ক্যানো?গত দু’দিন ধরে রিতিকে যেমন দেখেছে তাতে যে কোনো পুরুষের আরাধ্য রমনী হিসেবে সে পারফেক্ট।রুপ গুন কোনোটারই কমতি নেই মেয়েটার।যদি রূপের মনটা ঘুরে যায়?কাল রাতে যেভাবে জ্বরাক্রান্ত রিতির সেবা করতে দেখেছে রূপকে তাতে এমন পরিবর্তন ঘটে যাওয়া কঠিন কিছু নয়।ভাবতেই নিজের মনটা অব্যক্ত ব্যথায় টনটন করে উঠলো তিতলির।
গতকাল রাতে যখন ক্রোধের বশে রিতির হাতটা চেপে ধরল বিরূপাক্ষ তখনি টের পেয়েছিলো ওর শরীরে টেম্পারেচার অনেক বেশি।নিজে ঘুমানোর বহু চেষ্টা করেও যখন ঘুমের ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারেনি তখন মৃদু পায়ে রিতির ঘড়ের দিকে এগিয়ে যায়।দরজাটা একটু খোলা ছিলো। উঁকি দিয়ে যা দেখলো তাতে হঠাৎ করেই বিরূপাক্ষের ললাটে চিন্তাযুক্ত কুঞ্চন রেখা দেখা যায়। বিছানায় আড়াআড়ি ভাবে শুয়ে আছে রিতি। পরনের শাড়ি ঠিক নেই, হাঁটু পর্যন্ত তোলা।ক্ষত স্থানে লাল হয়ে ফুলে আছে,হয়তো ঘুমের মধ্যে যন্ত্রণায় নিজেই শাড়ি গুটিয়ে নিয়েছে। চুলগুলো এলোমেলো হয়ে নাকে মুখে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরেছে। বিরূপাক্ষ কাছ থেকে কয়েক বার নাম ধরে ডাকে।কোনো সাড়া শব্দ নেই। কাঁপা কাঁপা হাতে চট করে রিতির একটা হাত ছুঁইয়েই চমকে ওঠে সে।এত জ্বর। পুনরায় কয়েক বার ডাকে কিন্তু কোন সাড়া না পেয়ে কোলে তুলে ঠিক করে শুইয়ে দিয়ে গায়ে পাতলা কাঁথাটা টেনে দিয়ে ছুটে যায় রান্নাঘরে। অতঃপর জলপট্টি দিতে থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা। অবশেষে কোনো কূল কিনারা করতে না পেরে ডেকে তুলেছিলো বাড়ির সবাইকে।আর নিজে সরে গিয়েছিলো।সেই থেকে এখন পর্যন্ত জ্ঞানহীন রিতির ঐ নিষ্পাপ অপূর্ব মুখশ্রীখানি মাথার মগজ থেকে সরাতে পারেনি বিরূপাক্ষ।এমন একটি অপ্রত্যাশিত ব্যাপার সে দেখেছে যেটা কখনোই কল্পনাও করেনি।
চলবে,,,
ভুল ত্রুটি মার্জনীয়।
ভালো থাকবেন সবাই।