হৃদয়ের_রং_জানে_না < তৃতীয় পর্ব> #ঈপ্সিতা_মিত্র

0
156

#হৃদয়ের_রং_জানে_না < তৃতীয় পর্ব>
#ঈপ্সিতা_মিত্র
<৫>
এরপরের বেশ কয়েকটা দিন কেটেছিল রূপকথার ঘোরের মধ্যে | অনন্তকে ভুলে থাকার একটা অদ্ভুত চেষ্টায় | ওকে দূর থেকে অন্য কারোর হয়ে যাওয়ার দৃশ্যগুলো দেখতে দেখতে | আসলে সেইদিনের সেই কবিতা পরে মিথিলা আর অনন্তকে ‘হ্যাঁ’ না বলে থাকতে পারেনি | বরং ভালোবেসে জড়িয়ে ধরেছিলো ওকে | রূপকথা এই সবকিছুই জানতে পেরেছিলো অনন্তর মুখে | সেই রাতে একটা ডেয়ারি মিল্ক হাতে অনন্ত নিজে এসেছিলো রূপকথার ঘরে , ওকে থ্যাংকস জানাতে | ভাগ্যিস সেই রাতে লোডশেডিং হয়েছিল ! রূপকথার ভেজা চোখ দুটো তাই ঢেকে গিয়েছিলো অন্ধকারে | কিন্তু অনন্তর উজ্জ্বল মুখটা ও স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলো মোমের আবছা আলোয় | এতো খুশি ওকে আগে কখনো দেখেনি রূপকথা ! আজও একটু সময়ের ফাঁকে , তো কখনো আনমনে মনে পরে যায় ওর সেই হারিয়ে যাওয়া লোডশেডিংটার অন্ধকার , আর তার মাঝে অনন্তর গলার আওয়াজ , ওর সব কটা কথা যেন স্পষ্ট শুনতে পায় রূপকথা |
——– ” তুই মানে একটা জিনিয়াস | সত্যি | রূপকথা তুই যদি না থাকতিস আমার লাভস্টোরিটার যে কি হতো ! আমি তো পুরো কেসটা ঝুলিয়েই দিতাম সিওর | আমি তো ভাবতেই পারিনি , তোর লেখা লাইনগুলোর এতো বড়ো একটা ইমপ্যাক্ট পরবে মিথিলার ওপর | ও আজ চিঠিটা পরে ফার্স্ট টাইম আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলো জানিস | কি করে লিখিস তুই এইসব? আমি তো শুনেছি ভালোবাসার লেখা না কি কাউকে ভালোবাসলেই সব থেকে বেশি মন থেকে লেখা যায় | কিন্তু তোর লাইফে তো ঐসব কিছুই নেই ! তা ও এতো ভালো লিখিস কি করে ?”
না , সেইদিনের অনন্তর সেই প্রশ্নের কোনো উত্তর দেয়নি রূপকথা | ভালোবাসা যদি কেউ নিজে থেকে না বোঝে , তাকে জোর করে বোঝানোর কোনো মানে হয় না | তার থেকে নিরুত্তর থাকা ভালো |
কিন্তু এরপর এরকম অনেক পরিস্থিতিতে , অনেক মুহূর্তে রূপকথাকে নিরুত্তর থাকতে হয়েছে অনন্তর সামনে | আর সেইসব প্রত্যেকটা ঘটনা রূপকথাকে অনন্তর কাছ থেকে , কলকাতার কাছ থেকে মাইলের পর মাইল দূরে সরিয়ে দিয়েছে নিঃশব্দে |
এই যেমন সেই এক রবিবার | নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ বলে ঠান্ডাটা হালকা পড়েছিল কলকাতায় | সেই হালকা কুয়াশা জড়ানোর সকালেই হঠাৎ রূপকথার ঘরের দরজায় ধাক্কা | এখন এই সময়ে তো কেউ আসার নয় ওর কাছে ! এই ভেবেই রূপকথা দরজার ছিটকিনিটা খুলেছিলো আনমনে | কিন্তু সামনে হঠাৎ অনন্তকে দেখে একটু থমকে গিয়েছিলো যেন | এদিকে সেই কোজাগরী পূর্ণিমার পর থেকে ও অনন্তদের বাড়ি যাওয়া একেবারেই বন্ধ করে দিয়েছে | অনন্তকে দূর থেকে দেখলেও নিজের রাস্তা বদলে নেয় ও | অদ্ভুত একটা লুকোচুরি খেলার মধ্যে কাটে দিনগুলো | আসলে মনে হয় সামনে আসলে যদি ওর লুকোনো ভালোবাসা , কষ্ট , অভিমানগুলো ধরা পরে যায় ! তার থেকে এই দূরত্বই ভালো | কিন্তু ভালো যে খুব বেশিদিন থাকে না জীবনে | তাই আজ না চাইতেও এই লুকোচুরি খেলার ফাঁকে ওকে ধরা দিতেই হলো | এইসবই ভাবছিলো এক মনে | তখনই অনন্তর কথায় ঘোরটা কাটলো | বেশ রাগি রাগি মুখ করেই ও কথাগুলো বললো রূপকথাকে , ———— ” কি রে ? তোর কি হয়েছে একটু জানতে পারি ? বাড়ি আসিস না আমাদের | ফোন করিস না একবারও | নিজে থেকে যদি ফোন করিও তাহলেও ধরিস না | হ্যাঁ, আমি মানছি আজকাল আমি একটু বেশিই বিজি | একে কাজের এতো চাপ , তারপর নতুন নতুন প্রেম করছি তো , সেটাতেও অনেকটা টাইম দিতে হয় | কিন্তু তুই ? তোর লাইফে তো এরকম কোনো ঝামেলা নেই | তাহলে এরকম করছিস কেন ? রেগে গেছিস না কি আমার ওপর কোনো কারণে ? তাহলে বল সেটা ?”
রূপকথা এতগুলো প্রশ্ন শুনে দু সেকেন্ড চুপ ছিল সেদিন একটু | নিজের মনে মনে মিথ্যেগুলোকে গুছিয়ে নিয়ে বললো তারপর ,
” না তো , রেগে কেন থাকবো ! আসলে কয়েকটা প্রাইভেট স্কুলে এপ্লাই করেছি | ইন্টারভিউ আছে সেগুলোর সামনে | ওই জন্যই এখন মন দিয়ে পড়ছি |”
কথাটা শুনে অনন্ত এবার একটু বিজ্ঞের মতন মুখ করে বললো , — — ” বুঝলাম | তার মানে তুই রেগে নেই | ঠিক আছে | তাহলে তো তোর আজ আমার সাথে বেড়োতেও কোনো প্রব্লেম নেই নিশ্চয়ই | আজ আমরা তাহলে দুপুরে লাঞ্চ করতে যাবো | আসলে মিথিলাকে আমি তোর কথা এতো বলেছি | ও তাই পার্সোনালি তোর সাথে আলাপ করতে চায় |”
অনন্তর প্ল্যানটা শুনে এক মুহূর্তের জন্য এখন রূপকথার ভেতর থেকে লাগলো | তার মানে এতদিন বাদে অনন্ত ওর সঙ্গে দেখা করতে এসেছে মিথিলার জন্য ! রূপকথার কথা ভেবে নয় | যাই হোক, খারাপ লাগাটাকে মনে রেখেই আলতো হেসে উত্তর দিলো রূপকথা , ——– ” না অনন্ত | সরি | আমার হবে না আজ | এখন আসলে পড়তে হবে | সামনেই বেশ কয়েকটা ইন্টারভিউ তো | বুঝতেই পারছো |”
অনন্ত এবার বেশ গম্ভীর মুখেই বললো , ——- ” না , বুঝতে পারলাম না | একটা দিন দুপুরে লাঞ্চে গেলে এমন কিছুই পড়াশুনার ক্ষতি হবে না তোর | আর আমি তোকে এখানে জিজ্ঞেস করতে আসিনি | বলতে এসেছিলাম | ব্যাস | রেডি থাকিস | ”
কথাটা অনন্ত এমন অর্ডারের সুরে বললো যে রূপকথা কিছুতেই না বলতে পারলো না সেদিন | আসলে কিছু কিছু মানুষ থাকে জীবনে , যাদেরকে কখনো ‘না’ বলা যায় না | মুখ ফিরিয়ে থাকা যায় না | কারণ তারা মনে থাকে | খুব বড়ো একটা জায়গা জুড়ে | তাই রূপকথা সেই দুপুরে মুখে একটা মিথ্যে হাসি সাজিয়ে , চোখে কাজল , লাল শাড়িতে সেজে হাজির হয়েছিল শ্যামবাজারের রেস্টুরেন্টটায় | মিথিলা অনন্ত সেখানে বেশ কিছুক্ষন আগেই পৌঁছে গেছিলো | ওকে আস্তে দেখেই অনন্তর মুখে হাসি , সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠেছিল , ———-
” তাহলে অবশেষে এলেন মহারানী | কতক্ষন ধরে তোর জন্য অপেক্ষা করছিলাম জানিস |”
রূপকথার কথাটা শুনে একটু অবাক লাগলো হঠাৎ ! তাহলে অনন্তও অপেক্ষা করে রূপকথার জন্য ! তবে মুখে এসবের কোনো উত্তর না দিয়ে একটু হাসলো শুধু | এরপর মিথিলার সাথে , ” কেমন আছো ?” “কি করো ?” এইসব টুকটাক কথা হওয়ার মধ্যেই ওয়েটার এসে হাজির | রূপকথা খেয়াল করলো অনন্ত মিথিলাকে জিজ্ঞেস না করেই ওর পছন্দের সব কটা খাবার অর্ডার দিয়ে দিলো | তার মানে এতো কম সময়ে ওরা দুজনে দুজনকে এতটা ভালো ভাবে চিনে গেছে ! রূপকথার এসব ভেবে এখন আর জোর করেও যেন কোনো কথা আসছে না ঠিক |বার বার অনন্তর মিথিলার হাত ধরা , চোখে চোখে হাসি , একে অপরের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া দেখে গলাটা মাঝে মাঝেই বুজে আসছে ওর | মনে হচ্ছে রূপকথা একজন তৃতীয় ব্যক্তি | এখানে ও বাড়তি কেউ | যার কোনো দরকার নেই , প্রয়োজন নেই , এমন কেউ |
না , এই অদরকারটা বুঝে বেশিক্ষন আর রূপকথা থাকেনি ওই রেস্টুরেন্টে | তাড়াতাড়ি অল্প একটু খেয়ে বলে উঠেছিল হঠাৎ ,
” আজ আসি আমি | আসলে এরপর একটা বন্ধুর বাড়ি যেতে হবে | দরকার আছে একটু | তোমরা গল্প করো বরং |”
কথাটা আচমকা শুনে অনন্ত এবার একটু অবাক হয়েছিল !
—— ” বন্ধুর বাড়ি যাবি মানে ? কি দরকার ? তাহলে চল আমরাও উঠি | ট্যাক্সি করে নামিয়ে দিয়ে যাবো তোকে |”
রূপকথা অনন্তর কথাগুলো শুনে এবার মিথিলার মুখটা খেয়াল করেছিল আনমনে | অনন্তর কথাগুলো যে ওর মোটেও পছন্দ হয়নি সেটা ওর হালকা গম্ভীর মুখটা দেখেই বোঝা যাচ্ছিলো | তাই রূপকথা এবার জোর দিয়ে বললো ,
—— ” আমাকে ছেড়ে দেয়ার দরকার হবে না | আমি নিজেই চলে যাবো | মানে আমার বন্ধুর বাড়ি খুব কাছেই | হাঁটা পথ | তোমরা প্লিজ এনজয় করো |” …
না , কথাটা শেষ করেই রূপকথা এবার অনন্তর ‘হ্যাঁ’, ‘না’ এর অপেক্ষা না করেই উঠে দাঁড়ালো | তারপর আর দু মিনিটের মধ্যেই রেস্টুরেন্টের দরজা দিয়ে বাইরে বেড়িয়ে এলো | নকল হাসি , নকল মুখোশের বাইরে , ভিড়ে ঠাসা কলকাতার রাস্তায় | যেখানে ওর জলে ভেজা আবছা চোখ আর কারোর কাছ থেকে লুকোতে হবে না |
এরপর সেই দুপুরে অনেক্ষন কলকাতার ভিড় রাস্তা ধরে নিরুদ্দেশের উদ্যেশ্যে হেঁটেছিলো রূপকথা একা একা | মনে হচ্ছিলো এতো লোকের মধ্যে , এই এদিক ওদিক চলে যাওয়া রাস্তাগুলোর মধ্যে পুরোপুরি হারিয়ে যাওয়া যায় না ! যেখানে গেলে কেউ আর কখনো ওকে খুঁজে পাবে না ! সেইদিন এইভাবে হাঁটতে হাঁটতেই হঠাৎ ওর ফোনটা আনমনে বেজে উঠেছিল | এখন আবার কে ওকে মনে করলো ! এই ভেবেই ফোনের স্ক্রিনে চোখ রেখেছিলো | অনুরাধা ! সেই ওর কলেজের পুরোনো বন্ধু ! এই সময়ে হঠাৎ ফোন করলো কেন ! ভেবেই ফোনটা ধরেছিলো ও| আর ওপার থেকে ভেসে এসেছিলো কিছু কথা , যা রূপকথার ঠিকানাকে সত্যি পুরোপুরি বদলে ফেলেছিলো |
———- ” হ্যালো রূপকথা , আমি বলছি | তোকে একটা খবর জানাতে আসলে ফোন করলাম | আমাদের কলেজের হেড শ্রুতি ম্যাম , উনি বোলপুরে একটা প্রাইভেট ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল কিনে নিয়েছেন | সেখানে বাংলার জন্য টিচার চাই | প্রথমে আমাকে বলেছিলো | কিন্তু আমার পক্ষে অতদূর গিয়ে চাকরি করা সম্ভব না | তখন আমি তোর নামটা সাজেস্ট করলাম | আর তোর রেজাল্ট তো প্রথম থেকেই ম্যামের জানা | তাই ওনার কোনো আপত্তি নেই | এবার তুই যদি রাজি থাকিস তাহলে চাকরিটা করতে পারিস | ওখানে হোস্টেলে থাকবি | আর স্টার্টিংয়ে দশ হাজার টাকা দেবে |”
কথাগুলো শুনে রূপকথা কয়েক মুহূর্তের জন্য যেন একটু থমকে গিয়েছিলো | তাহলে কি যেই নিরুদ্দেশের খোঁজ ও মনে মনে করছিলো , তার ঠিকানা এখন হঠাৎ পেয়ে গেলো ! প্রশ্নটা মনে আসতেই সেই চঞ্চল মুখটা আবার চোখের সামনে ভেসে উঠেছিল এখন | অনন্তকে ছেড়ে কি ও সত্যি থাকতে পারবে ! ওকে একবারও না দেখে কি ও দিনগুলো কাটাতে পারবে ! না , এর উত্তর এতো তাড়াতাড়ি দেয়া সম্ভব না | ওর পারা না পারার হিসেবটা করার জন্য বেশ কিছুটা সময় লাগবে | তাই অনুরাধাকে কিছু কথা সাজিয়ে বলেছিলো সেইদিন ,
” আমি দু দিন বাদে জানাচ্ছি কি করবো | ম্যামের নাম্বার আছে আমার কাছে | ওনাকে ফোন করেই আমার ডিসিশনটা জানিয়ে দেব | আর থ্যাঙ্ক ইউ রে , তুই আমার নামটা রেকমেন্ড করলি তাই | অনেক কিছু অনেক সহজ হয়ে গেলো এবার আমার জন্য | ”
না , এরপর আর সেইদিন বেশিক্ষন রাস্তায় থাকেনি রূপকথা | নিজের ওই ছোট্ট ঘরটায় ফিরে এসে ভাবতে শুরু করেছিল প্রথম থেকে | কলকাতা সত্যি ওকে কি দিলো ! মা বাবা চলে যাওয়ার পর একটা নিজের লোক , নিজের বাড়ি , নিজের জায়গা , কিছুই তো পেলো না কখনো | মামা মামী তো কোনোদিনই ওকে সহ্য করতে পারেনি | আজ যদি ও চলে যায় তাহলে বরং শান্তিই পাবে দুজন | একটা বোঝা ঘাড় থেকে নামার শান্তি | আর রইলো বাকি অনন্ত ! ওর জীবনেও কি রূপকথার দরকার আছে আর ! সেখানেও মিথিলা এসে ফাঁকা জায়গাটা পূরণ করে দিয়েছে | ওর বন্ধুত্ব , ওর কথা এসব দিয়ে | তাই অনন্তর জীবনেও রূপকথা বাড়তি | হিসাবের বাইরে একজন | যার থাকলেও চলে , না থাকলেও চলে | কিন্তু রূপকথা নিজে কি পারবে ! এতদিনের চেনা শহর , চেনা জায়গা , চেনা মুখগুলোকে ছেড়ে দূরে কোনো এক লাল মাটির দেশে দিনের পর দিন কাটাতে ! কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই সেইদিন সন্ধ্যে গড়িয়ে রাত নেমে এসেছিলো শহরে | রূপকথা খেয়ালই করেনি | ওর মোবাইলটা হঠাৎ বেজে ওঠায় আবার সম্ভিত ফিরলো | স্ক্রিনে একটা আননোন নাম্বার | এটা আবার কে ! কথাটা ভেবেই ফোনটা ধরেছিলো , আর ওপার থেকে ভেসে এসেছিলো একটা অল্প চেনা মেয়ের স্বর ,
” হ্যালো রূপকথা , আমি মিথিলা বলছি | আমি অনন্তর কাছ থেকে তোমার নাম্বারটা পেয়েছি | তুমি নিশ্চই ভাবছো হঠাৎ আমার তোমার সাথে কি দরকার যে কল করলাম | ঠিকই ! ভাবাটাই স্বাভাবিক | আসলে কিছু কথা আমার বলা দরকার তোমাকে | তাই ফোন করলাম | আমি জানি তুমি অনন্তকে ভালোবাসো | সেদিন লক্ষী পুজোয় , আজকে রেস্টুরেন্টে , তোমার চোখ দেখেই সবটা স্পষ্ট বুঝেছি | আসলে অনন্ত এসব ব্যাপারে খুব বোকা বলে কিছু নোটিশ করে না | যাই হোক , তোমাকে আমার এটাই বলার যে প্লিজ তুমি অনন্তর লাইফ থেকে চলে যাও | এতদিনে এই টুকু নিশ্চই বুঝেছো যে অনন্তর মনে তোমার জন্য কোনো স্পেশাল জায়গা নেই | তোমার সত্যি আর কোনো চান্স নেই রূপকথা | উল্টে যদি অন্তত কখনো তোমার ফিলিংসের ব্যাপারে ভুল করেও জানতে পারে , তাহলে নিজে খুব গিল্টি ফিল করবে | তোমাকে কষ্ট দেয়ার জন্য | হয়তো বোকার মতন আমাদের রিলেশনটাও ভেঙে দেবে | তারপর আবার নিজেই কষ্ট পাবে | তাই বলছি , অনন্তর জন্যই তুমি অনন্তর থেকে দূরে থাকো | তোমাদের বন্ধুত্বটাকে শেষ করে দাও | আর আসলে কিছু সম্পর্ক এরকমই হয় | একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্তই সেই সম্পর্কগুলোর ভ্যালিডিটি থাকে | তারপর নতুন লোক এলে পুরোনো জায়গাটা ছেড়ে দিতেই হয় | আর আমি সত্যিই তোমার জন্য আমাদের দুজনের রিলেশনে কোনো কমপ্লিকেশন চাই না | তাই তুমি প্লিজ সরে যাও এসবের থেকে | এনিওয়েজ , অনেক কথা বললাম | রাখছি এবার | ভালো থেকো |”
কথাগুলো শেষ করেই মিথিলা রূপকথার মুখের ওপর ফোনটা কেটে দিলো সেদিন | ফাঁকা ঘরে ও যেন বাকশূন্য হয়ে বসে রইলো কিছুক্ষন | নিঃশব্দ ঘরটায় মিথিলার কথাগুলো শুধু কানে বাজছিলো রূপকথার | একদিনে এতোই পুরোনো হয়ে গেলো ও যে ছেড়ে চলে আসতে হবে অনন্তর জীবন ! প্রশ্নটা নিজের মনেই করে উঠলো হঠাৎ | তবে মিথিলার কথাগুলো তো মিথ্যে না | এই ভালোবাসাটাকে আর কতদিন লুকিয়ে রাখবে ও ! তার থেকে ঠিকই | পুরোপুরি দূরে সরে যাওয়াই ভালো | মিথিলা আর অনন্তর মাঝে যাতে ভুল করেও কোনোদিন রূপকথা না আসতে পারে , তার ব্যবস্থা করাই ভালো | এই ভেবেই আর এক সেকেন্ডও সময় নষ্ট না করে কলেজের হেডকে ফোন করেছিল রূপকথা | তারপর দশ মিনিটের কথার মধ্যে বোলপুরের চাকরি , থাকার ব্যবস্থা সব কিছু কনফার্ম করে ঠিকানা বদলের শুরু করেছিল নিজের জীবনে |
না , এরপর সাতদিন আর একবারও অন্তর সঙ্গে দেখা হয়নি রূপকথার | অনন্তও আর কাজের চাপে রূপকথাকে ফোন করার সুযোগ পায়নি যদিও | তবে একদিকে এই কথা না হয়ে ভালোই হয়েছিল | যাবে যখন , একবারে নিঃশব্দে , কোনো খবর না রেখে যাওয়াটাই ভালো | যাতে কেউ কখনো কোনোভাবে রূপকথার আর খোঁজ না পেতে পারে | জানে , অনন্তর হয়তো প্রথমটা জেনে খুব খারাপ লাগবে | তবে এই খারাপ লাগা বেশি দিনের নয় | নতুন দিনের ভিড়ে রূপকথার মতন পুরোনো মানুষকে ও খুব সহজেই ভুলে যেতে পারবে | এইসব ভেবেই ফোনের সিমটাও চেঞ্জ করে নিয়েছিল নিজের | নতুন নাম্বারটা শুধুমাত্র অনুরাধারই জানতো | কলকাতার আর কেউ না | এমন কি মামা মামীও না | আর মামা মামী তো এমনিতেও যোগাযোগ না রাখতে পারলেই বাঁচে | তাই রূপকথার ব্যাগ গোছানো দেখেও কখনো বিশেষ কোনো প্রশ্ন করেনি | রূপকথা তা ও নিজে থেকে বলেছিলো একবার বোলপুরে চাকরি পাওয়ার কথাটা ! কিন্তু ওরা গরজ করে আর স্কুলের নামটাও জিজ্ঞেস করেনি |
যাইহোক, এরপর একদিন খুব ভোরে , সূর্যের আঁধো আলো ফোটার মাঝে রূপকথা নিজের লাগেজ , নিজের নিরুদ্দেশে পাড়ির জীবন নিয়ে পুরোনো কলকাতা থেকে বেড়িয়ে এসেছিলো , একেবারে নিঃশব্দে , সবার অন্তরালে | একা একটা জীবন কাটানোর জন্য | যেখানে শুধু পুরোনো স্মৃতির ভিড় | আর নতুন এক রূপকথা , যে শুধুই নিজের |

<৬>
ট্রেনটা এবার একটা হালকা ধাক্কা দিয়ে শেষ স্টেশনে এসে দাঁড়িয়ে পড়লো । আর রূপকথা এক মুহূর্তে দু বছর আগের অতীত থেকে বর্তমানে ফিরে এলো । হাওড়া স্টেশনের সেই পুরনো ভিড়, প্ল্যাটফর্ম গুলোতে লোকেদের ট্রেন ধরার তাড়া , কে আগে পৌঁছে সিট দখল করবে তার হুড়োহুড়ি ,এইসবের মধ্যে রূপকথা কয়েক সেকেন্ডের জন্য যেন একটু হারিয়ে গিয়েছিল। মনে হচ্ছিল দু বছরে এই স্টেশনের ছবিটা তো একদম বদলায়নি । সবকিছু সেই আগের মতন। শুধু এই সময়ের ভিড়ে ওর ভেতরের ‘ আমি ‘ টা ই যা বদলে গেছে । যাই হোক , এই নতুন ‘ আমি ‘ কে সঙ্গী করেই রূপকথা এবার স্টেশনের বাইরে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের দিকে এগোলো । কিন্তু এখন মনটা একটু ভয় ভয় করছে । এতদিন বাদে অনন্তর মুখোমুখি হওয়ার ভয় । আর ও নিজে ঠিক থাকতে পারবে তো! ওই চঞ্চল ছেলেটাকে একটা হুইল চেয়ারে স্থির হয়ে বসে থাকতে দেখে । কি বলবে ওর সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে ! কোন কথা, কোন স্বান্তনা , কিছু কি বেড়োবে মুখ দিয়ে ! না কি শুধু অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে অনন্তর সামনে । চোখ ভোরে দেখবে শুধু ওকে । যাকে শুধুমাত্র স্বপ্নে দেখারই কথা ছিল এতোদিন , তাকে আবার সামনাসামনি খুব কাছ থেকে দেখবে।এইসব আকাশ পাতাল ভাবনার ভিড়েই কলকাতার ট্র্যাফিক জ্যাম , গাড়ি ঠাসা রাস্তাগুলো পেরিয়ে রূপকথার ট্যাক্সিটা সেই ওই পুরোনো পাড়ায় এসে হাজির হলো ওর | সেই চেনা চেনা বাড়ি , বসু কাকার মুদির দোকান , ছোট্ট প্রাইমারি স্কুলটাকে পেছনে ফেলে ওই হালকা গোলাপি রঙের বাগান ঘেরা দোতলা বাড়িটার সামনে এসে দাঁড়ালো রূপকথার ট্যাক্সি , আর হঠাৎ ওর মনে হলো দু বছর আগের সময়টা যেন থেমেই ছিল এতক্ষন | মাঝের এই দিন , মাস , বছরের হিসেব ! সব মিথ্যে |
যাই হোক , ট্যাক্সির ভাড়া মিটিয়ে এবার রূপকথা নিজের ছোট্ট ব্যাগটাকে সঙ্গী করে অনন্তদের দরজার বেল টিপলো | কয়েক মিনিটের অপেক্ষার পরই দরজাটা খুলে গেলো | সামনে অনন্তর মা দাঁড়িয়ে | অবাক চোখে রূপকথাকে দেখছে এখন ! আজকে সকালের একটা ফোনেই যে ও এতো দিনের দূরত্ব শেষ করে কলকাতা চলে আসবে সেটা সত্যি অনন্তর মা স্বপ্নেও ভাবেনি | তাই ঘোরটা কাটতে কয়েক সেকেন্ড সময় লেগেছিলো | তারপর মন ভোরে জড়িয়ে ধরেছিলো রূপকথাকে | সত্যি ,এই দু বছরে এই মেয়েটার মুখখানা যে কতবার কারণে অকারণে অনন্তর মার্ চোখের সামনে ভেসে উঠেছে তা মনে হয় গুণেও বলা যাবে না |আর রূপকথা নিজেও এতদিন বাদে একজন নিজের মানুষকে পেয়ে কিছুক্ষন যেন হারিয়ে গিয়েছিলো | সেই পুরোনো স্পর্শ , পুরোনো আদর ! মনে হচ্ছিলো দু বছর আগের হারানো সময়টা আবার ফিরে এসেছে ওর কাছে |
তবে রূপকথা জানতো , কাকিমা যত সহজে ওকে কাছে টেনে নিয়েছে অনন্ত সেটা না ও করতে পারে | দু বছরের জমা বরফ এতো তাড়াতাড়ি গলবে না | ওর কিছু না বলে , না জানিয়ে চলে যাওয়া অনন্ত ওকে দেখেই ভুলে যাবে না কখনো | এইসব সাত পাঁচ ভাবনার ভিড়েই সেইদিন ধীর পায়ে রূপকথা অনন্তর ঘরে গিয়ে হাজির হয়েছিল | অনন্ত খুব মন দিয়ে একটা বই পড়ছিলো | তাই রূপকথার আসাটা খেয়াল করেনি প্রথমে | মায়ের গলার আওয়াজে সম্ভিত ফিরেলো ওর ,
——— ” বাবু এই দেখ , তোর সঙ্গে দেখা করতে কে এসেছে !”
কথাটা শুনে ও আনমনে হুইল চেয়ারটা ঘুরিয়ে পেছনে ফিরে তাকিয়েছিলো , আর বেশ কিছুক্ষনের জন্য একটু থমকে গেছিলো হঠাৎ | সেই বড়ো বড়ো দুটো চোখ , কপালের মাঝে ছোট্ট একটা কালো টিপ্ , ফর্সা মিষ্টি মুখ , আর অনেকদিন আগের শোনা গলার স্বর ,
” অনন্ত , কেমন আছো তুমি ?”
না , প্রশ্নটা শুনে সঙ্গে সঙ্গেই কোনো উত্তর দেয়নি অনন্ত | রূপকথা খেয়াল করেছিল কয়েক সেকেন্ডের ভিড়ে অনন্তর মুখটা কেমন যেন কঠিন হয়ে গেছে | ওকে দেখে প্রথমে যেই বিস্ময়টা ছিল মুখে , সেটা এখন রাগে পরিণত হয়েছে | আর সেই রাগটাকে গলায় নিয়েই অনন্ত উত্তর দিলো ,
” আমি কেমন আছি সেটা জানার তো তোর কোনো দরকার নেই | এখানে কেন এসেছিস ? চ্যারিটি কেস ভেবে সিম্প্যাথি দেখাতে ?”
রূপকথার চোখটা এবার হঠাৎ ভিজে গেলো এইসব শুনে | এই প্রথম অনন্ত ওর সঙ্গে এতটা রুডলি কথা বললো | তা ও কিছু কথা সাজিয়ে রূপকথা উত্তর দেয়ার চেষ্টা করলো ,
——— ” অনন্ত প্লিজ , এইভাবে বোলো না | আমি আসলে আজ সকালেই কাকিমার ফোনটা পেয়ে সব জানলাম | আমি এতদিন কিছুই !”
না , ওর কথাটাকে শেষ করতে না দিয়েই অনন্ত এবার চেঁচিয়ে উঠলো | ওর রাগটা রূপকথার থেকে ঘুরে গিয়ে ওর মায়ের ওপর পড়লো ,
” তুমি খবর দিয়েছো ! আমাকে না জিজ্ঞেস করে একজন বাইরের লোককে আমার ব্যাপারে বলতে গেছো ? তুমি ভাবলে কি করে যে এতদিন কোনো যোগাযোগ রাখলো না তাকে হঠাৎ দেখে আমি আনন্দে নাচতে শুরু করবো ! এইসব তুমি করতে গেলে কেন ?”
অনন্তর মা ও এইসব শুনে হঠাৎ ঘাবড়ে গেছে এই মুহূর্তে | কি বলবে , কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না ঠিক | এই প্রথম জীবনে ছেলেকে এতো রাগতে দেখে কেমন যেন স্ট্যাচুর মতন মনে হচ্ছে নিজেকে | জোর করেও কোনো কথা আসছে না | তবে অনন্তও আর কথা শোনার কোনো অপেক্ষা করেনি তখন | হাতে করে হুইল চেয়ারের চাকাটা জোরে জোরে ঘুরিয়ে কয়েক সেকেন্ডে রূপকথার সামনে এসে ওর হাতটা শক্ত করে ধরে ওকে নিজের ঘরের দরজার বাইরে বার করে দিয়েছিলো | তারপর বেশ জোর গলায় মা কে ও ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বলেছিলো | এরপর দুজনের মুখের ওপর আওয়াজ করে নিজের ঘরের দরজাটা বন্ধ করে দিয়েছিলো |
রূপকথা এইসব দেখে যেন পাথরের মতন দাঁড়িয়ে ছিল কিছুক্ষন | এতো রাগ ওর ওপর অনন্তর ! যে একেবারে ঘর থেকে বের করে দিলো | একটা কথাও শুনলো না ! পুরোনো অনন্তর সাথে এই অনন্তকে যেন কিছুতেই মেলাতে পারছিলো না রূপকথা | সেই হাসি খুশি মন খোলা অনন্ত আজ যেন হারিয়ে গেছে অনেক দূরে | তাহলে কি আর কথা হবে না ওদের ! পুরোনো সময়টা কি একবারও ফিরে আসবে না রূপকথার কাছে ! কথাটা ভেবেই দুটো পা এর শক্তি যেন নড়বড়ে হয়ে গেলো হঠাৎ | শরীরটা ছেড়ে দিলো ওর | টাল হারিয়ে পরেই যাচ্ছিলো সেই মুহূর্তে | অনন্তর মা এসে ওকে ধরে ফেললো শক্ত করে | তারপর সামনের সোফাটায় নিয়ে গিয়ে বসালো | আসলে বুঝতে পারছিলো রূপকথার এরকম একটা ব্যবহার অনন্তর কাছ থেকে পেয়ে খুব বড়ো একটা ধাক্কা লেগেছে | তা ও কিছু কথা সাজিয়ে অনন্তর মা আস্তে গলায় বলে উঠলো ,
” আমি জানি তোর খুব কষ্ট হচ্ছে এখন | অনন্ত তোকে এতগুলো কথা মুখের ওপর বলে দেবে এটা আমি সত্যি ভাবিনি | আসলে তুই চলে যাওয়ার দু চারদিন বাদে অনন্ত খবরটা পেয়েছিলো | পাগলের মতন খোঁজার চেষ্টা করেছিল তোকে তারপর | তোর ফোন নাম্বারে কয়েক হাজার বার ফোন করেছে মনে হয় | তোর চেনা সব বন্ধুদের বাড়ি গিয়ে গিয়ে খোঁজ নিয়েছে | কিন্তু , তা ও কিছু জানতে পারেনি | এই ঘটনাটা তবে ওকে খুব কষ্ট দিয়েছিলো | ভেতরে ভেতরে গুমরে থাকতো তারপর থেকেই | আমি তো
মা , বুঝতাম সবই | ওই হাসিখুশি চঞ্চল ছেলেটা কেমন শান্ত চুপচাপ হয়ে যাচ্ছিলো চোখের সামনে | সবটা খেয়াল করেছিলাম | আর তারপর তো এই এক্সিডেন্টটা হয়ে একেবারেই চুপ হয়ে গেলো অনন্ত | ছ মাস কেটে গেছে ঘটনাটার | ডাক্তার বলেছে রেগুলার ফিজিওথেরাপি করলে , ট্রিটমেন্ট করলে ওর পা এর সার ফিরেও আসতে পারে | তবে আমি বুঝি | অনন্ত মনে মনে নিজের কাছে হেরে গেছে | এখন নিজের সব কিছু ফিরে পাওয়ার চেষ্টাটা করার ইচ্ছেটাই আর ওর মধ্যে বাকি নেই | যাই হোক, এই সময়েই সেদিন রাস্তায় হঠাৎ অনুরাধার সঙ্গে দেখা হলো আমার | অন্তর এক্সিডেন্টের কথা শুনে ও নিজে থেকেই তোর নাম্বারটা দিলো আমাকে | যদিও অনন্ত দু বছর আগেও তোর খোঁজ করতে অনুরাধার কাছে গিয়েছিলো একবার | মনে হয় তুই ওকে বারণ করে দিয়েছিলিস তখন তোর ফোন নাম্বার কাউকে দিতে | তাই অনন্তকে অনুরাধার কাছে ‘না’ শুনেই ফিরে আসতে হয়েছিল |”
এতগুলো কথা একসঙ্গে বলে অনন্তর মা এবার একটু থামলো | শ্বাস নেয়ার জন্য | তারপর আবার একটু ভেবে রূপকথার দিকে তাকিয়ে বললো ,
—— ” অনন্তর এতদিনের জমা রাগ একদিনে শেষ হয়তো হওয়ার না | তুই এরকম ব্যবহার পেয়ে থাকতেও পারিস , আবার ইচ্ছে হলে অপেক্ষা না করে চলেও যেতে পারিস | আমি তোকে জোর করে আটকাবো না |”
না , কথাগুলো শুনে রূপকথা সেইদিন বেশ কিছুক্ষন নিশ্চুপ হয়ে বসেছিল | কি বলবে , কি উত্তর দেবে ভেবে পাচ্ছিলো না | তাপর বেশ কিছুটা সময় পার করে বলেছিলো ,
” ফিরে যাওয়ার জন্য তো দু বছর বাদে আসিনি কাকিমা | আমি অপেক্ষা করবো | এখানেই বসে থাকবো | অনন্ত নিজের বন্ধ দরজাটা একটা সময় ঠিক খুলবে আমার সামনে | জানি |”
পরবর্তী পর্ব প্রকাশিত হবে কাল। এইরকম নানান স্বাদের ভালোবাসার গল্প পড়তে চাইলে সংগ্রহ করতে পারেন আমার সম্পূর্ন নতুন দুটি উপন্যাস ‘ শহরের উষ্ণতম দিনে ‘ এবং অগোছালো মন। দুটো বই এর পিডিএফ সংগ্রহ করলে মূল্য ১০০ টাকা। আর যে কোনো একটি বই এর পিডিএফ সংগ্রহ করলে মূল্য ৫০ টাকা মাত্র। পেমেন্ট ডিটেলস জানার জন্য এবং বইয়ের পিডিএফ সংগ্রহ করার জন্য মেসেজ করতে পারেন আমার হোয়াটস অ্যাপ নাম্বার 089103 33272 তে। পেমেন্ট করে একটা স্ক্রিন শট পাঠিয়ে দিলে বইয়ের পিডিএফ পাঠিয়ে দেয়া হবে হোয়াটস অ্যাপে।
প্রথম পর্বের লিঙ্ক
https://www.facebook.com/share/p/wvmwpTFdBoC6FGhd/?mibextid=oFDknk
দ্বিতীয় পর্বের লিঙ্ক
https://www.facebook.com/share/p/SjT8MMXEbZ24aQJR/?mibextid=oFDknk

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here