হৃদয়ের ওপারে তুমি ❤ পর্ব-২১

0
1200

#হৃদয়ের_ওপারে_তুমি
#গল্প_ভাবনায়_ফারজানা_ইয়াসমিন_রিমি (আপু)
#লেখিকা_রিয়া_খান
#পর্ব_২১
একটা সময় পর ফুলের চোখ দুটোও বেঁধে দেয়া হলো।ফুল চিৎকার করে কিছু বলতেও পারছে না, কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে? চোখ কেনো বেঁধে দিলো?

ফুল চোখ বাঁধা থাকা অবস্থায় বুঝতে পারলো অটোটা থামানো হয়েছে, ওকে ধরে নিয়ে কোথাও একটা যাওয়া হচ্ছে।

একটা অন্ধকার স্থানে ফুলকে নেয়া হলো এতোটা অন্ধকার বুঝা যাচ্ছে না এটা কোনো ঘরের ভেতর নাকি বাইরেই।

একটা চেয়ার টানার আওয়াজ পাওয়া গেলো ফুলকে সেখানে বসানো হলো।

ফুল চুপচাপ বসে নিরবে কান্না করেই যাচ্ছে।বাড়ির সবার কথা এতো বেশি মনে পড়ছে বিশেষ করে ভাইদের কথা।কলিজা ফেটে আসছে।

কিছুক্ষণ পর ফুল খেয়াল করলো,ছেলেগুলো এতো ধস্তাধস্তি করলো,বাজে বাজে কথা শুনালো।কিন্তু শরীরে কোথাও বাজে ভাবে টাচও করে নি।শুধু হাত দুটো ধরে বাঁধার পর হাতের ডানা ধরে টানাটানি করেছে।এখন কারো শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না।

বুঝা যাচ্ছে না এরা কি করতে চাচ্ছে।এভাবে কাউকে ধরে আনার দুটো উদ্দ্যেশ্য থাকে।
এক দল শরীরের চাহিদা মিটিয়ে মেরে ফেলে দেয়।
আরেক দল মানুষ আটকে মুক্তিপণ চায়,এরপর ছেড়ে দেয়।কিন্তু যদি মুক্তিপণ না দেয়া হয় তাহলে মেরে ফেলে দেয়।

এরা যদি মুক্তিপণ পার্টি হয় তাহলে যদি কোটি টাকাও বায়না করে বসে ফুলের ফ্যামিলি দিয়ে দেবে।তবুও তাঁরা ফুলকেই চাইবে।

কিছুক্ষণ পর একটা আওয়াজ এলো,কেউ একজন ফুলের সামনে এসে বসলো বা দাঁড়ালো। অন্ধকারে বোঝা যাচ্ছে না কিছুই।সে আলতো হাতে ফুলের গাল ছুঁয়ে দিলো,ফুল অনেকটা ছিটকে গেলো, এটা যে একটা পুরুষের হাত বুঝায় যাচ্ছে।এই বুঝি সর্বনাশের শুরু।কিন্তু লোকটার হাত দিয়ে আলতো হাতেই চোখের বাঁধন খুলে দিলো,এরপর মুখের বাঁধন ফুল তাকিয়ে থেকেও কিছু বুঝতে পারছে না এতো অন্ধকার এখানে। ভয়ে প্রচন্ড কাঁপছে,কিছু বলবে সেই শক্তিও নেই, গলার স্বর চেপে আসছে। এসময় ওর হাতের বাঁধনটাও খুলে দেয়া হলো।

এরপর যা হতে লাগলো তাতে ফুলের মাথার মগজ পুরো পেঁচিয়ে যায় ।কিছুটা দূরে একটা সাইডে বড় W অক্ষরের লাল রঙের লাইট জ্বলে উঠে,ফুল অই অক্ষর টার দিকে তাকাতেই তার পাশে আরেকটা অক্ষর জ্বলে উঠে, I অক্ষর, পর পর কয়েকটা অক্ষরে আলো জ্বলে উঠলো,ফুল সেগুলোর দিকে তাকিয়ে আছে বাকরুদ্ধ হয়ে।

সব অক্ষর মিলিয়ে একটা বাক্য গঠন হলো,
WILL YOU MARRY ME?

ফুল চোখ লাড্ডুর ন্যায় বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।নিমেষেই পুরো এরিয়াতে নানান রঙের ছোটো ছোটো আলো জ্বলে উঠলো,দেখতে অনেকটা মনে হচ্ছে হরেক রঙের জোনাকিপোকা ।চার পাশটা স্পষ্ট দেখা না গেলেও বুঝা যাচ্ছে এটা একটা পার্টি সেন্টার।

ঘাড় ঘুরিয়ে চারপাশ দেখতে দেখতে ফুলের খেয়াল ই নেই চোখের সামনে কে আছে।বিন্দু বিন্দু আলো দেখতে দেখতে চোখ যখন সামনের দিকে যায় তখন ফুল আরেক দফা ছিটকে গেলো,

ফুলের বরাবর ওর সামনে একটা চেয়ারে জোড়াশীন পেতে হাতে একটা বড় বেলুন নিয়ে বসে আছে অভ্র ,বেলুনে লিখা SORRY, ফুল অভ্রর চোখের দিকে তাকাতেই অভ্র নিষ্পাপ ভঙ্গীতে বললো,
-সরি!
ফুল দাঁত কিড়িমিড়ি করে বিষদৃষ্টিতে তাকিয়ে অভ্রর হাতের বেলুন টা এক ঘুষি দিয়ে ফাটিয়ে দিলো বেলুন ফাটতে না ফাটতেই আরেক দফা চমক! সাথে সাথে উপর থেকে বেলুন ফাটার মতো আওয়াজ হয়ে জরি ফুলের পাপড়ি পড়তে লাগলো আর বিদ্যুৎ গতীতে আরেক পাশে লাইট জ্বলে উঠলো,ঠিক যেরকম একটু আগে WILL YOU MARRY ME লিখা উঠছিলো,এখন আরেক পাশে কিছু আলোকিত বেলুন ফুটে উঠছে ফুল সাথে সাথে ওদিকটাই তাকায়, আর দেখতে পেলো বিশেষ কোনো আলোর দেয়ালে HAPPY BIRTHDAY HUR PORI
ফুলের সাত ভাই,আর কাব্যরা পুরোফ্রেন্ড সার্কেল প্লাস অনু।
সবাই এক সাথে অন্ধকার থেকে স্পষ্টতর হতে লাগলো আর তাদের কন্ঠস্বর থেকে ভেসে আসছে একটা ধ্বনি,
-Happy Birthday to you,Happy Birthday to Dear Putul!

এতো কিছুর ভীড়ে ফুলের মনেই নেই ঘড়িতে হয়তো বারোটা বাজে, আজ ১৭ই আগস্ট, ওর বার্থডে!
ফুলে উঠে দাঁড়ালো, আর সবাইকে দেখতে লাগলো।ফুল এখনো ঘোরের মধ্যে আছে,মনে হচ্ছে এটা মৃত্যুর আগে শেষ সুন্দর স্বপ্ন , ও হয়তো এখনো অই অটোটাতে বেঘোরে ঘুমোচ্ছে আর এই স্বপ্নটা দেখছে।

সবাই কাছে আসতেই ফুল চোখ ঢলাঢলি করতে লাগলো।চোখের সামনে ঘটা ঘটনাটা অবিশ্বাস্য লাগছে।কি ভেবেছিলো আর কি হচ্ছে! অভ্র ফুলের সামনে একটা পানির বোতল ধরলো, ফুল বোতল হাতে নিয়ে বসে পড়লো,আর ঢকঢক করে সবটুকু পানি খেয়ে নিলো।

ভাইদের দিকে তাকিয়ে এক ছুটে ওদের জড়িয়ে ধরলো,এক এক করে সবাই বার্থডে উইশ করতে লাগলো,

ফুল অভ্রর দিকে ফিরে তাকাতেই,
অভ্র ফুলের সামনে দাঁড়িয়ে একটা গোলাপ ওর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো,
-হ্যাপি বার্থডে হুর!
ফুল কি করবে, রাগ করবে নাকি হেসে দেবে কনফিউজড। এতো কিছু যে ওকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য করা হয়েছে সেটা তো স্পষ্ট। কিন্তু এরকম ভয়াবহ সারপ্রাইজ কেউ কাউকে দিতে পারে জানা ছিলো না।
গোলাপটা হাতে নিলো ফুল।আর থমথমে গলায় রিপ্লে দিলো,
-থ্যাংকস!

ফুলের ভাইদের উপস্থিত অবস্থায়ই অভ্র ফুলের সামনে হাঁটু গেড়ে বসলো, কাব্য একটা সূর্যমূখী ফুলের তোড়া অভ্রর হাতে দিলো,অভ্র তোড়াটা ফুলের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো,

-তুমি তো নিজেই একটা ফুল,তোমার চারপাশের এই ফুল গুলো অতি তুচ্ছ তোমার রং, রূপ, সৌরভের কাছে।তবুও স্বল্প প্রচেষ্টা তোমায় মুগ্ধ করার। ফুল! ,যে কিনা হুরের রূপ হয়ে ফুল নাম নিয়ে আমার জীবন নামক বাগানে ফুটেছে।
আর আমি তাকে,এই বাগানটাতেই আমৃত্যু অব্ধি আঁকড়ে ধরে রাখতে চাই।
আই লাভ ইউ হুর !

ফুল মুখ ছাপিয়ে হেসে দিলো।এভাবে এরকম কিছু হবে এটা ও আশা করে নি।এতো গুলো মানুষের সামনে খুব লজ্জা পাচ্ছে বেচারী।

আবার অপ্রত্যাশিত আনন্দের কারণে চোখের কোণে খুশির জল জমে গেলো।
অভ্র চোখ দিয়ে ইশারা করতেই ফুল অভ্রর হাত থেকে তোড়াটা নিলো।
এবার অভ্র একটা ডায়মন্ডের রিং নিয়ে ফুলের দিকে বাড়িয়ে বললো,
-উইল ইউ ম্যারি মি হুর?

ফুল লজ্জাইতো শেষ হয়ে যাওয়ার উপক্রম। ভাইদের দিকে তাকাতেই, ওরা একসাথে বলে উঠলো,
-তোর রাজপুত্র তোকে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছে, এখনো কি নারাজ হয়ে থাকবি তোর রাজপুত্রের উপর?নাহয় একটু মজা করে সন্ধ্যা বেলা রাগিয়েছি সবাই মিলে।কিন্তু সবটা তোকে সারপ্রাইজ দেয়ার প্ল্যান ছিলো, এতো এরেঞ্জমেন্ট সবটা করেছে তোর জন্য তোর রাজপুত্র । নে হাতটা বাড়িয়ে দে এবার!

ফুল অভ্রর দিকে তাকিয়ে বললো,
-আর কখনো ওরকম পঁচাদের মতো বিহেভ করবেন না তো?
-কক্ষনো না, তুমি যেরকমটা চাইবে সেরকমটাই হয়ে থাকবো আমি।তুমি নিজে থেকে যেদিন আমার সাথে যেতে চাইবে সেদিন ই তোমাকে আমি সঙ্গে করে নিয়ে যাবো।যতোদিন ইচ্ছে তুমি তোমার ফ্যামিলি নিয়ে থাকো।শুধু আমাকে তোমার জীবন সঙ্গী বানিয়ে নাও আমি তোমার কৃতদাস হয়ে থাকবো।

ফুল মিষ্টি হেসে হাতটা বাড়িয়ে দিলো, অভ্র ফুলের হাতে রিং পড়িয়ে দিলো।আবার সেই খুশির জল চোখে বিরাজ করলো।জমে থাকা একটুকরো অভিমান সেই কখন ই হাওয়া হয়ে গেছে,নতুন করে আবার অভ্রর প্রেমে পড়তে লাগলো।সবটা ভুল করেও চিন্তার বাইরে ছিলো,এমনটা হবে আজ রাতে।

আংটি পড়িয়ে দিয়ে অভ্র ফুলের চোখে চোখ রেখে বললো,
-আরেকটা কথা,বিয়ের পর এভাবেই মাঝে মাঝে রাগ উঠাবো তোমার,তুমি রাগ করে বাড়ি ছেড়ে চলেও যেও। কিন্তু যাওয়ার সময় বাড়ির গাড়িটা নিয়ে ভালো রাস্তা দিয়ে যেও। এভাবে অলি গলি দিয়ে হেঁটে যেও না।তোমার পেছনে পেছনে আমরা হাঁটতে হাঁটতে পা ব্যাথা হয়ে গেছে, বাড়ি ফিরে পায়ে মলম দিয়ে মালিশ করতে হবে।

ফিক করে হেসে দিয়ে ফুল উত্তর দিলো,
-ঠিক আছে। কিন্তু এরকম ডেঞ্জারাস সারপ্রাইজ আর কখনো দিবেন না বলে দিলাম!ভয়ে আমার প্রাণ চলে যাচ্ছিলো।

অভ্র হেসে দিয়ে উঠে দাঁড়ালো, যে ছেলে গুলো ফুলকে তুলে এনেছিলো তাদেরও দেখতে পেলো আকাশের পাশে, এরা যে আকাশের ই বন্ধুবান্ধব বুঝায় যাচ্ছে,ফুল তাদের দিকে তাকিয়ে বললো,
-আর আপনাদেরও বলছি, একদিন আপনারা অনেক বড় প্রফেশনাল কিডন্যাপার হতে পারবেন, সিনেমাতেও এতো নিখুঁত অভিনয় কেউ করতে পারে না। দুদিন পর সাউথ ইন্ডিয়ান মুভিতে আপনাদের কোরিওগ্রাফার হিসেবে ডাকবে।

ফুলের কথা শুনে ওরা হেসে দিলো,
-সরি বোন,একটু বেশিই ভয় দেখিয়ে ফেলেছি তোমাকে!
-ইট’স ওকে।এরকম অভিনয় আর করবেন না,যারা দুর্বল হৃদপিন্ডের মানুষ তাঁরা সাথে সাথে মরে যাবে ভয়ে।
-ওকে বোন।

অভ্র ফুলের কাছে ঘেঁষে বললো,
-ম্যাডাম যদি আমাদের শাসন করা হয়ে যায়,তাহলে চলেন কেকটা কাটেন,না হলে জিনিসটা বাসী হয়ে যাবে

কেকটা সামনে আনতেই ফুল কেটে ফেললো, আয়মান কেক তুলে সবার আগে ফুলকে খাইয়ে দিলো এরপর ফুল

অনেক বড় আতংক যাওয়ার পর এতো ভালো কিছু হওয়াই ফুল স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে।কিন্তু কালকের দিনে ফুলের জন্য আরেক দফা অপ্রত্যাশিত সারপ্রাইজ আছে,যা সম্পর্কে আগা মাথা কোনো ধারণাই নেই ফুলের।

বাড়ি ফিরতে বেশ রাত হলো সবার।
-আজকের রাতটা মৃত্যুর আগে পর্যন্ত আমার কাছে স্মরণীয় থাকবে।বাবারে বাবা এমনও হয়?
অভ্র ফুলের দিকে মাথা ঝুঁকে বললো,
-হুম ভবিষ্যতে আমাদের নাতি নাতনিদের
গল্প বলার সময় এই স্টোরি টা খুব জমিয়ে বলতে পারবে।জানিস তোর দাদা আমাকে এরকম করে ভয় দেখিয়ে প্রপোজ করেছিলো, বিয়ের প্রপোজাল দিয়েছিলো,
-ওরে বাবা বিয়েই হলো না,আপনি নাতি নাতনি ডাওনলোড করে ফেললেন!
-বিয়ে হতে আর কতক্ষণ, বিয়ে হলেই সব হবে।
-যদি বিয়ে না হয়?
-হবে না কেনো?
-আল্লাহ যদি কপালে না লিখে রাখে।
-যদি বাঁচিয়ে রাখে তাহলে অবশ্যই অবশ্যই তুমি আমার হবে।আর যদি মরে যাই তাহলে তো আর কিছু করার নেই।
-এত্ত কনফিডেন্স?
-অবশ্যই।আচ্ছা আমাকে একটা কথা বলো তো,
-কি?
-তোমাকে আমি আই লাভ ইউ বললাম তুমি তো কোনো উত্তর দিলে না, বিয়ের জন্য প্রপোজ করলাম শুধু হাতটা বাড়িয়ে দিলে হ্যাঁ না কিছু বললে না।

ফুল মাথা নিচু করে আছে,কোনো উত্তর না দিয়ে।উত্তর না পেয়ে অভ্র দুষ্টুমি করে ফোনের ফ্ল্যাশলাইট অন করে নিচের দিকে মাথা নিচু করে ফুলের দিকে লাইট ধরতেই ফুল চোখ বন্ধ করে নেয়,
-কি করছেন কি,পাগল!
-লজ্জা নারীর ভূষণ! এতো লজ্জা পেও না।
-কেনো?
-তোমার লজ্জা পাওয়া মুখ,
দেখতে লাগে বড্ড সুখ।
আর সুখে থাকতে ভূতে কিলায়।
এই মুহুর্তে আমি ভূতের কিল একদম ই খেতে চাচ্ছি না।
-এটা কার কবিতা?
-কবি আবরার খান অভ্র।
ফুল হেসে হেসে বললো,
-বাহ!মেডিকেলে পড়ে রাজপুত্র আমার কবি হচ্ছে।
অভ্র চমকিত স্বরে বললো,
-কি বললে?তোমার রাজপুত্র!

মস্তিষ্কের অজান্তেই কথাটা ফুলের মুখ ফসকে বেরিয়ে গিয়েছিলো,অভ্র বলার পর ফুল কথাটা খেয়াল করলো। লজ্জায় জিহ্বা কাটা অবস্থা।
-সমস্যা নেই তুমি মুখে না বললেও আমি সব এন্সার পজিটিভ ধরে নিয়েছি।তবে যদি নিজে থেকে কিছু বলার থাকে তবে বলে দিও,হয়তো আর দু তিন আছি তোমাদের শহরে।

-দু তিন মানে, এতো তাড়াতাড়ি চলে যাবেন?
-কতোদিন হয়েছে খেয়াল করেছো একটা বার?১২ দিন ধরে আছি তোমাদের এখানে, আর কদিন থাকলে তো আমি ঢাকা নামটাই ভুলে যাবো।
-ওহ।

অভ্রর চলে যাওয়ার কথা শুনে ফুলের মনটা খুব বেশি খারাপ লাগছে,মুখ ফুটে বলতেও পারছে না, “আর কটা দিন থেকে যান”।

বাড়িতে এসে গেল সবাই। গাড়ি থেকে নেমে ফুল সোজা বাড়ির ভেতরে ঢুকে গেলো, অভ্রর দিকে ফিরেও তাকালো না।

সব আনন্দ ভুলে ফুল বিষণ্ণ হয়ে পড়লো,অভ্র চলে গেলে তো খুব খারাপ লাগবে।ভেতরটা খালি খালি লাগছে এখনি।

আর কয়েক ঘন্টা পর ভোর হয়ে যাবে ফুলের চোখে ঘুম নেই।ফজরের পর চোখে ঘুম এলো।

সকালে ঘুম ভাঙতেই ফুল আবার ছিটকে গেলো,সেদিনের মতো আজও অভ্র গালে হাত দিয়ে বসে ওর দিকে তাকিয়ে আছে শুধু একটু ভিন্ন আছে সেটা হলো আরেক হাতে কফিমগ ।

আজকে আর কাঁথা দিয়ে মুখ ঢাকলো না,অভ্রর চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে ভ্রু নাচালো।
-আজকেও কি চলে যেতে বলবে?

ফুল হেসে দিলো,
-নাহ দড়ি এনে রেখে দিয়েছি আপনাকে বেঁধে রাখবো বলে।
-যদি তোমার সাথে বেঁধে রাখো তাহলে কোনো আপত্তি নেই।
-আপনি আগে কখনো প্রেম করেন নি কেনো?
-তুমি আসবে বলে তাই।
-ফাঁপর বাদ দিয়ে সোজা কথা বলুন।জীবনে কয়টা প্রপোজ পেয়েছেন?
-বলবো?
-বলুন,
-বিশ্বাস করো একটাও না।
-একটাও না!এটা সম্ভব কিভাবে?
-কারণ,আমার চেহারাতে নাকি একটা মিংগেল মিংগেল ছাপ আছে।মেয়েরা ভাবে আমি প্রেম করি,তাই কখনো কেউ আর সাহস করে সামনে দাঁড়ায় নি।
-কি আশ্চর্য!
-তুমি কয়টা পেয়েছো?
-সত্যি বলতে আমিও কখনো পাই, এক বান্ধুবী আমাকে একবার বলেছিলো এক ছেলে নাকি আমাকে পছন্দ করে,তাঁর সাথে প্রেমও করিয়ে দিতে চেয়েছিলো।
কিন্তু সেই ছেলে কখনো আমার সামনে আসে নি,শুধু ওর মুখে মুখেই শুনেছি।
-ভালোই হয়েছে,আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে।আচ্ছা তুমি কি আবার ঘুমাবে?
-না কেনো?
-তাহলে উঠে বসো।
ফুল উঠে বসলো,
-তোমার শরীর ঠিক হয়েছে?
-হুম।
-শুনলাম তোমার নাকি পেট ব্যাথার সমস্যাটা নাকি খুব জটিল,কোনো ডক্টর দেখিয়েই কাজ হচ্ছে না?
-হুম।
– আমার মা যখন আসবে, তুমি আমার মায়ের সাথে তোমার প্রবলেম টা শেয়ার করো,আমার মা কিন্তু অনেক ভালো গাইনোকলোজিস্ট।আমি মাকে আগে থেকেই বলে রাখবো তোমার সাথে আলাদা টাইম স্পেন্ড করতে।
-না না তার দরকার নেই।
-দরকার আছে, সাবধান হওয়া ভালো।অবহেলা করলে এগুলো থেকে ক্যান্সার হয়ে যায়।
-আপনি আমায় নিয়ে এতো ভাবেন কেনো?
-অভ্যেস করছি তোমায় নিয়ে ভাবার।যেনো বিয়ের পর কখনো ঝগড়া লাগলে তুমি বলতে না পারো,”আমার জন্য ভাবার কোনো সময়ই নেই” “আমাকে সময় দাও না।”আরো অনেক কথা।আরেকটা কথা তুমি আমার সাথে এখন থেকে ফ্রি হওয়ার চেষ্টা করো,বর নয় বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে থাকবো তোমার।তোমার সব কথা,ভালো হোক মন্দ হোক সব শেয়ার করবে আমার সাথে।

-ওকে।থ্যাংকস!
-এখন বলো তো বার্থডে তে কি গিফট চাও।
-একটু ভেবে বলি?
-এজ ইউর উইশ।
ফুল গালে হাত দিয়ে বসে ভাবতে লাগলো,

চলবে…………
(আসসালামু আলাইকুম ভাই প্রিয় পাঠক পাঠিকা ভাই বোনেরা,আমি দুঃখিত আমি চেষ্টা করেও গল্প রেগুলার দিতে পারতেছি না। আমার কপাল টাই খারাপ।দেশে করোনা থাকলেও আমাদের বাসার আত্মীয় স্বজন আসা অফ নাই 😑

আগামী দুই -তিন গল্প দিতে পারবো না।বাসায় অনেক মেহমান আসছে নিজের বসার জায়গাও নাই,কাজ করে মোবাইল হাতে নেয়ার টাইম নেই।পরবর্তীতে আমি যথা সাধ্য চেষ্টা করবো রেগুলার গল্প দেয়ার।অনিয়মিত হওয়ার জন্য দুঃখিত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here