#হৃদয়ের_কোণে (পর্ব ০১)
#নাহার
·
·
·
ভার্সিটির কোচিং থেকে ফিরে এসে দেখি তুহিন আমাদের ড্রয়িং রুমে বসে আছে। চোখ মুখ শক্ত করে। বাবাও খুব রেগে আছে। আমি ভেতরে যেতেই বাবা তেড়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন,
— কোথায় গিয়েছিলি তুই?
— কোচিং এ
— থাপড়িয়ে দাত সব ফেলে দেবো। তোর কোচিং এ আমি ফোন করেছি তুই তো সেখানে যাস নি। কোথায় গিয়েছিলি? ( হুঙ্কার দিয়ে)
নিরা অনেকটা কেপে উঠেছে তার বাবার এমন মেজাজ দেখে। ভয়ে ভয়ে কাপা কাপা কণ্ঠে বললো,
— বাবা আমি কোচিং-এই গিয়েছি তুমি তুহিনকে জিজ্ঞেস করো।
— তুহিনই বলেছে তুই কোচিং – এ যাসনি। ও তোকে ক্লাস রুমে দেখেনি।
নিরা তুহিনের কাছে এগিয়ে গিয়ে তুহিনকে বললো,
— তুহিন আমি তোমার ক্লাসে তো ছিলাম। মিথ্যে বলছো কেনো?
তুহিন রেগে গিয়ে রাগে কটমট করে বললো,
— আমি কেনো মিথ্যে বললো হে? আমার কি খেয়েদেয়ে কাজ নেই যে তোর বাবাকে মিথ্যে বলবো।
তুহিন একবার নিরার দিকে তাকালো আর একবার মোহাম্মদ আফজাল সাহেব মানে নিরার বাবার দিকে তাকালো। তারপর হনহনিয়ে চলে গেলো।
এতোক্ষণে সবাই ড্রয়িং রুমে চলে এসেছে। নিরাদের যৌথ ফ্যামিলি। চার চাচা চাচি এবং নিরার পরিবার। চাচাতো ভাই বোন আছে পাঁচজন। আর নিরা এবং নিরার ছোট ভাই। আবার নিরার দাদিও থাকে তাদের সাথে। মোট চৌদ্দজন সদস্য তাদের পরিবারে। নিরা পরিবারে বোনদের মধ্যে ছোট। আবার বড় হচ্ছে কৌশিক ভাইয়া। নিরার বড় চাচার ছেলে।
বাড়ির সবার সামনেই নিরার বাবা নিরাকে থাপ্পড় মারে চার/ পাঁচটা। ছোট চাচা এসে ধরেছে নিরার বাবাকে। নিরাকে ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছে। মেঝো ভাইকে শান্তনা দিচ্ছে মোহাম্মদ আহমাদ সাহেব।
নিরাদের বাড়িটা তিনতলা। তাদের বাড়িটা অনেক পুরানো। বাড়িটা ব্রিটিশ টিউডার স্টাইলের। ভেতরে সব দামি দামি জিনিসপত্র। ভেতরে ঢুকেই যা কারো প্রাণ জুড়িয়ে যাবে।
————————————————————————————
রাত সাড়ে দশটা। সবার খাওয়া শেষ। শুধু নিরা যায়নি খেতে৷ কৌশিক প্লেটে করে নিরার জন্য খাবার নিয়ে এসেছে৷ দরজায় একবার নক করতেই নিরা এসে দরজা খুলে দিলো। কৌশিককে দেখে দরজার সামনে থেকে সরে গিয়ে বেডে বসল নিরা। কৌশিক খাবারের প্লেট সোফার সামনের টেবিলে রাখতে রাখতে নিরাকে বললো,
— এমন একজনকে ভালোবেসে কি লাভ যার কাছে তোর ফিলিংসের কোনো দাম নেই।
–নিশ্চুপ
— আমি জানি তুহিন যা বলেছে সব মিথ্যে। আজকের সব ওর নাটক ছিলো। তারপরেও কেনো ওর আশায় বসে থাকিস?
নিরার সামনে এসে বসলো।নিরা আর নিজেকে সামলাতে পারলো না। ডুকরে কেদে উঠলো।
— আমি কি করবো ভাইয়া তুমি বলো। তুহিনকে যে আমি সেই ছোট বেলা থেকেই ভালোবাসি। কেনো সে আমার ভালোবাসার অপমান করে সবসময়। আমিকি এতোই খারাপ তুমি বলো।
— নাহ। আমার বোনটা অনেক ভালো।
— ভাইয়া আমি জানি তোমরা শুধু আমাকে শান্তনা দেয়ার জন্যেই এইসব বলো। আচ্ছা আমিকি একটুও সুন্দর না? সুন্দর না বলেই হয়ত তুহিন আমাকে ভালোবাসে না।
— নিরা তুই হচ্ছি কিউটের ডিব্বা। তুই কি জানিস তোকে কাজল চোখে আর খোলা চুলে কতটা মায়াবী লাগে। শুধু শুধুই নিজেকে কেনো অপবাদ দিচ্ছিস। এইসব আর ভাবিস না। খেয়ে এবার ঘুমা।
কৌশিক চলে গেলো। নিরা ওয়াশরুমে গিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে এলো। ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখলো মিসেস শায়েলা মানে নিরার মা সোফায় বসে আছে।
— মা তুমি এখানে? কিছু বলবে?
— হ্যাঁ৷ এদিকে আয়।
নিরা ধীর পায়ে মায়ের কাছে গিয়ে বসলো। মিসেস শায়েলা নিরার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে নিজের হাতে খাইয়ে দিলেন মেয়েকে।
— অনেক কেদেছিস এবার ঘুমা যা। আর একটা কথাও যেনো বলতে না হয়।
— ঠিকাছে মা।
মিসেস শায়েলা চলে গেলে নিরার দরজা লাগিয়ে দেয়। নিরার বেড রুমের মাঝখানে। বেডের দুইপাশে দুইটা ডাই লাইট মেঝে লেম্প রয়েছে। একপাশে কাবার্ড এবং ড্রেসিং টেবিল। অন্যপাশে পড়ার টেবিল এবং বুক সেলফ। পড়ার টেবিলে একটা এলইডি টেবিল ল্যাম্প আছে। বেডের সামনে বরাবর রয়েছে লম্বা সিটার সোফা এবং সোফার সামনে একটা ছোট কাচের টেবিল।
রুহি পুরো রুমের লাইট অফ করে পড়ার টেবিলের এলইডি ল্যাম্পটা জালিয়ে বারান্দায় এসে দাড়িয়েছে। নিরার বারান্দাটা অনেক বড়। কিছু ফুলের গাছ এবং একটা পোর্টেবল এয়ার সোফা রয়েছে। নিরা বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশ দেখছে। হঠাৎ কি মনে করে গায়ে ওড়না পেচিয়ে ছাদে দৌড় দিলো।
ছাদে এসে দেখলো তুহিন তাদের ছাদে। ফোনে কথা বলছে। নিরাকে সে খেয়াল করেনি। এতোরাতে তুহিনকে ফোনে কথা বলতে দেখে নিরার চোখ ছলছল করে উঠলো। নিরাদের ছাদের সাথে তুহিনদের ছাদটাও লাগানো। তাই নিরা তুহিনের ছাদে চলে গেছে। নিরার উপস্থিতি টের পেয়ে তুহিন নিরার দিকে ঘুরলো এবং রেগে গিয়ে বললো,
— তুই এখানে কি করছিস? কেনো আসলি এখানে?
— আজকে তুমি এমন কেনো করলে আমার সাথে? বাবাকে মিথ্যে কেনো বললে? তুমিতো জানো আমি তোমার ক্লাশ মিস দি না তাহলে কেনো বাবাকে মিথ্যে বললে?
— ইচ্ছে হয়েছে তাই বলেছি। তোর কোনো সমস্যা। আর এখানে কেন এসেছিস? তুই জানিস না তোকে আমি দুইচোখে সহ্য করতে পারি না। যা এখান থেকে। তোর জন্য আমি কথা বলেও শান্তি পাই না।
নিরা এবার কাদো কাদো হয়ে গেলো। অনেক কষ্টে কান্নাটাকে আটকে তুহিনকে বললো,
— তুহিন তুমি জানো আমি তোমাকে ভালোবাসি। তাও কেনো এতো অবহেলা করো আমাকে? সেই ছোট বেলা থেকেই…
নিরা আর কিছু বলার আগেই তুহিন নিরার হাত চেপে ধরলো খুব শক্ত করে এবং দাতে দাত চেপে বললো,
— তোর এই ভালোবাসা তোর কাছেই রাখ। আমাকে দেখাতে আসবি না। এই তোকে কয়বার বলতে হবে যে আমি তোকে ভালোবাসি না। ভালোবাসি না মানে বাসি না। কানে যায় না তোর? তোকে সহ্য হয়না আমার এই একটা কথা কয়বার বলতে হবে হা? তোর এই চেহারা দেখলে আমার ঘৃণা হয় বুঝলি প্রচন্ড ঘৃণা হয়।
— তুহিন প্লিজ বুঝার চেষ্টা করো আমায়
তুহিন আর কিছু না বলে রাগের চোটে নিরাকে জোরে ধাক্কা দিয়ে হনহন করে নিচে নেমে চলে যায়। আর এদিকে নিরা ধাক্কা সামলাতে না পেরে রেলিং এর সাথে বারি খেয়ে ছাদের মেঝেতে পড়ে যায়। হাতের কনুই ছিড়ে যায় আর কোমড়ে ব্যাথা পায়।
নিরা সেখানে বসেই অনেকক্ষণ কান্না করে। তারপর রুমে চলে আসে। বেডে শুয়ে পড়ে সেই ছোটবেলায় ফিরে যেতে চায়।
——————————————————————————————–
নিরা সবে মাত্র স্কুলে পড়ে। ক্লাস ফাইভে পড়ে। আজ বৃষ্টি পড়ায় নিরা স্কুলে যায়নি। বরাবরই নিরার বৃষ্টি খুব পছন্দ। তাই ছোট্ট নিরা তার মনকে বেধে রাখতে পারেনি। দৌড়ে ছাদে চলে যায়। ছাদে এসে দেখে পানি জমে অনেকটা উঁচু হয়ে গেছে পানি। ছাদটা যেনো পুকুর হয়ে গেছে। নিরা ইচ্ছেমত লাফালাফি করতে থাকে আর দুহাতে বৃষ্টিকে জড়িয়ে ধরে।
এরমধ্যেই নিরার চোখ যায় পাশের ছাদে। একটা ছেলে সাদা শার্টে বৃষ্টিতে ভিজছে। নিরা অপলক চোখে তাকিয়ে থাকে তার দিকে। এমনটা প্রায় ছেলেদের ক্ষেত্রে হয় কিন্তু নিরার হয়েছে উলটা। বৃষ্টিতে ভিজা ছেলেটাকে দেখে এই প্রথম নিরার মনে প্রেম প্রেম জাগলো।
ছেলেটার সাদা শার্টের পকেটে কিছু লাগানো। ভালো করে খেয়াল করে দেখলো এটা স্কুলের ব্যাচ। মানে স্কুল থেকে এসেই সে বৃষ্টিতে ভিজা শুরু করেছে। নিরা ব্যাপারটা খেয়াল করে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।
সাদা শার্ট ভিজে গায়ের সাথে লেপ্টে আছে। চুলগুলো কপাল ঢেকে দিয়েছে। চোখের পাপড়ি থেকে ফোটায় ফোটায় বৃষ্টির পানি পড়ছে। নিরা এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে ছেলেটার দিকে। এরমধ্যেই ছেলেটার চোখ গেলো নিরার দিকে। নিরাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে হনহন করে নেমে গেলো ছাদ থেকে। নিরাও কিছু না বলে ছাদ থেকে নেমে এলো।
খাওয়া দাওয়া শেষে ঘুমাতে যায় নিরা। নিরার আজ ঘুম আসছে না। বারবার ছাদের ঘটনা মনে পড়ছে। নিরার ছোট্ট মনে তখন থেকেই প্রেমের গান শুরু হয়।
রাতে নিরার খুব জ্বর আসে। নিরার ছোট চাচি কি মনে করে নিরার রুমে আসে এবং এসে নিরার কপালে হাত দেন। তখনই বুঝতে পারেন নিরার খুব জ্বর। বাটিতে পানি নিয়ে জলপট্টি দেন নিরার মাথায়। এরমধ্যেই নিরার চোখ খুলে যায়।
— চাচি তুমি এখানে কেন?
— বৃষ্টিতে ভিজে যে জ্বর বাধিয়েছিস তাই আমি এখানে। তোর মা জানলে কি হবে বুঝতে পারছিস?
— এইরে, চাচি প্লিজ মাকে কিছু বলো না। আচ্ছা তোমার না গোপি বাহু নাকি বোহু নাটকটা খুব পছন্দ তোকে এটার সিডি এনে দিবো তাও মাকে বলো না।
— না না হবে না। আমি এখনই গিয়ে ভাবিকে বলবো।
— এই চাচি তুমি অনেকদিন ধরে ফেসিয়াল করো না। আচ্ছা তোমাকে পার্লারে নিয়ে গিয়ে ফেসিয়াল করিয়ে আনবো হ্যাঁ। দেখো এরপর চাচু তোমার থেকে নজরই ফেরাতে পারবে না। ( চোখ মেরে)
— অনেক পেকে গেছিস তুই তাই না। তবে তুই আমার মনের কথা জেনে গেলি। ঠিক আছে তোর মাকে বলবো না। কালই কিন্তু আমাকে পার্লারে নিয়ে যাবি।
— হ্যা ঠিক আছে নিয়ে যাবো।
নিরার চাচি মিসেস রোহানা নিচে গিয়ে কিছু খাবার এবং একটা নাপা এনে নিরাকে খাইয়ে দিলেন।
— চাচি তুমি একদম মায়ের মতো। দেখো তোমার একটা কিউট বাবু হবে।
মিসেস রোহানা নিরাকে জড়িয়ে ধরে কেদে দিলেন আর বললেন,
— নিরা তোর কথায় যেনো ঠিক হয়। তুই আমার মেয়ে বুঝলি তারপর তোকে একটা বোন উপহার দিবো কেমন যাতে তুই দুষ্টুমি করলে তোর ছোট বোন তোর কান ডলা দিতে পারে।
— চাচি আমি তোমার জন্য দোয়া করলাম আর তুমি আমাকে কান ডলা খাওয়াবে ভাবছো। তুমি এমন। ( কাদো কাদো হয়ে)
— হয়েছে আর ঢং করতে হবে না। ঘুমা এবার কাল সকালে স্কুলে যেতে হবে।
— আচ্ছা।
নিরা শুয়ে গেলে নিরার চাচি নিরার গায়ে কাথাটা টেনে দেন এবং নিরার কপালে ছোট্ট একটা চুমু দিয়ে রুমের বাতি নিভিয়ে বেরিয়ে আসেন।
নিরাকে পেয়ে তিনি কখনো অনুভব করেননি যে তার কোনো ছেলে মেয়ে নেই।
এভাবে অনেকদিন চলে গেলো। নিরা প্রায় লুকিয়ে লুকিয়ে ছাদে গিয়ে ছেলেটাকে দেখতো। পরে একবার নাম জানতে পারলো যে ছেলেটার নাম তুহিন। ছেলেটা নাম জোগার করে দিয়েছে তার কৌশিক ভাই।
নিরা যখন ফাইভে পড়ে কৌশিক তখন এস এস সি পরিক্ষা দিয়ে দিয়েছি। আর তুহিন তখন ক্লাশ নাইনে পড়ে। কৌশিকের একটা ছোট বোন আছে কাশফি। সে পড়ে ক্লাস সেভেনে।
কৌশিক, কাশফি এবং নিরা মিলে প্ল্যানিং করে তুহিনকে প্রোপজ করবে। তাই কৌশিক এবং কাশফি নিরাকে রিহার্সেল করাচ্ছে কিভাবে সে প্রপোজ করবে,
— নিরা শুন তুই প্রথমে তুহিনের সামনে যাবি তারপর শর্টকাট ভাবে বলে দিবি যে তুই ওকে ভালোবাসিস।
— এভাবে এক কোণাও পটবে না। ভাইয়া তুমি জানোই না কিভাবে প্রপোজ করতে হয়।
— ওয়ে আমি তোর আগে দুনিয়ায় এসেছি তুই আমার আগে না বুঝলি। তাই আমার আইডিয়া বেশি এইসব ব্যাপারে।
— আহ! সেইজন্যেই তো আফিয়া আপু থেকে পাত্তা পাচ্ছো না।
— কাশফি তুই আমার পারসোনাল কিছু এদিকে টানবি না।
— হ্যাঁ হ্যাঁ আসছে একদম প্রপোজ শিখাইতে। পারো তো না আবার তুমি নিরাকে শিখাবা। নিরা তুই আমার থেকে শিখে নে।
— শুন আফিয়া আজকে নয় কালকে পটেই যাবে। দেখে নিস।
— আফিয়া আজকে নয় কালকে অন্য কারো হয়ে যাবে তুমি দেখো নিয়ো।
নিরা এদের দুজিনেই ঝগড়া দেখে রেগে গেলো। চিল্লিয়ে দুইজনকে বললো,
— তোমাদের কারো হেল্প লাগবে না আমার। আমি নিজেই কোনো না কোনো উপায় খুজে নিবো।
নিরা চলে গেলো। কৌশিক আর কাশফি দুইটা এবার একজন আরেকজনের চুল টানাটানি করছে। কৌশিক বলছে,
— তোর জন্য এইসব হয়েছে।
— আহা! এখন তো আমার দোষ। সব দোষ তোমার। তুমিই কিছু জানো না। যত্তসব ঢং।
নিরা রুমে এসে ভাবতে লাগলো কিভাবে তুহিনকে প্রপোজ করবে।
— আচ্ছা চিঠি দিলে কেমন হয়?
যেই ভাবা সেই কাজ। একটা কাগজ নিয়ে সেখানে বড় করে লিখলো “আমি তোমাকে ভালোবাসি তুহিন”। তারপর চিঠিটা নিয়ে চলে গেলো তুহিনের স্কুলের সামনে। তুহিনের স্কুল ছুটি হয়ে গেছে। সবাই চলে গেলো কিন্তু তুহিনকে দেখলো না।
প্রায় এক ঘন্টা অপেক্ষার পর তুহিন বেরিয়ে এলো স্কুল থেকে৷ ওর সাথে আরো ছয় সাতজন বন্ধু ছিলো। নিরা কিছু না ভেবেই দৌড়ে গেলো তুহিনের সামনে এবং ডাক দিলো,
— তুহিন
— আমাকে ডাকছো?
— হ্যাঁ
— হ্যাঁ বলো কি বলবে
নিরা কিছু না বলে তুহিনকে সেই চিঠিটা দিলো। তখনও নিরা জানতো না তার জন্য কি অপেক্ষা করছিলো। তুহিন চিঠিটা খুলে পড়লো। তারপর তুহিনের হাত থেকে চিঠিটা ওর সব বন্ধুরা নিয়ে পড়তে শুরু করলো। সবাই একসাথে হেসে দিলো।তুহিন এগিয়ে এসে নিরাকে বললো,
— তুমি আমাকে ভালোবাসো?
— হ্যাঁ। ( মাথা নিচু করে)
— তুমি সেই মেয়েটা না যে আমাদের পাশের বিল্ডিং এ থাকো?
— হু
তুহিন কিছুক্ষণ চুপ থাকলো৷ পিছন থেকে তিন/ চারটা মেয়ে আসলো।
·
·
·
চলবে…………………..