হৃদয়ের কোণে পর্ব ৩৬

0
652

#হৃদয়ের_কোণে (পর্ব ৩৬)
#নাহার
·
·
·
দেখতে দেখতে কাশফির এঙ্গেজমেন্ট এর দিন চলে এলো। সারা বাড়ি লাল, নীল, সবুজ বাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে। কাশফিকে পার্লার থেকে সাজিয়ে আনা হলো। মেরুন কালারের একটা শাড়ি পড়ানো হয়েছে কাশফিকে। সবাই নিজ নিজ পছন্দ মতো সেজে নিয়েছে। মেহরাবরাও চলে এসেছে অনুষ্ঠানে। মেহরাব কাশফিকে বারবার উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেখে নিচ্ছে। অদূরে নিরা দাঁড়িয়ে এসব দেখেছে। রাগে মেহরাবের মাথা ফাটিয়ে দিতে মন চাইছে নিরার। কিন্তু আপাতত চুপ করে আছে।

আগে রিং পড়িয়ে দিলো দুজন দুজনকে। এখন খাওয়া দাওয়া আর গল্প গুজবের পালা শুরু হলো। বেশি মানুষ নেই। শুধু ঘরের মানুষদের ইনভাইট করা হয়েছে। কাশফি উপরে নিজের রুমে চলে এসেছে। নিরা খেয়ে উপরে উঠতে শুরু করে। মেহরাব একবার আশেপাশে চোখ বুলিয়ে নিয়ে আস্তে আস্তে নিরার পেছন পেছন নিরার রুম পর্যন্ত চলে আসে।

নিরা রুমে ঢুকার সাথে সাথে মেহরাবও রুমে ঢুকে নিরাকে আলমারির সাথে চেপে ধরে বললো,
— মাই গড। আজকে তোমাদের দুইজনকে খুব সুন্দর লাগছে। আমার বউটাকেও আর তোমাকেও। উপস! সরি ফাতেমাকেও খুব সুন্দর লাগছে।

নিরা অবাক হয়ে যায় মেহরাবের কথা শুনে। এতোদিন ভেবেছে তার কাশফি আপু এবং তার দিকে নজর কিন্তু এই বদমাইস তার ছোট বোন ফাতেমার দিকেও নজর দিয়েছে। নিরা রাগে দাপাদাপি শুরু করে। মেহরাব নিরার হাত আরেকটু চেপে ধরে বললো,
— আজকে আমি খালি হাতে যাবো না। হি হি।

——————————
কাশফির বিয়ে শেষ হওয়া পর্যন্ত তূর্য এখানে থাকবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলো। তাই এখন ব্যাগপত্র গুছিয়ে নিয়ে একেবারে দশ পনেরো দিনের জন্য চট্টগ্রাম চলে যাচ্ছে। এখানে থাকলে নিজেকে সামলে রাখতে পারবে না তাই এই সিদ্ধান্ত।

তূর্যের রুমের বাহিরে তুহিন রাগে ফুসছে। এতো বেশি রাগ হচ্ছে যে ইচ্ছা করছে তূর্যকে মেরে হাত, পা ভেঙে বসিয়ে রাখতে। তুহিন মনে মনে বললো,
— কই নিজের করে নিবে সেটা না করে ময়দান ছেড়ে পালাচ্ছে। নিজে তো কিছু করছে না আমি যা সব ঠিক করতে যাচ্ছি এখন উনিই চলে যাচ্ছেন। মনটা চাচ্ছে….উউউউউউউউউম! হুম!

তুহিন পায়চারি করছে আর নিজের হাত মোচারাতে শুরু করে। এরমধ্যে মোবাইল বেজে উঠে। তুহিন কল রিসিভ করতেই অপরপাশ থেকে বললো,
— ভাই প্লেন মোতাবেক সব চলতেছে।

তুহিন রাগে ফোসফাস করে বললো,
— যার জন্য এতোকিছু করতেছি সেই পালাচ্ছে।

ফোন কেটে দিয়ে আবার পায়চারি শুরু করে। এরমধ্যে তূর্য রুম থেকে বেরিয়ে আসে। কাধে ব্যাগ। তুহিনের দিকে একবার তাকিয়ে নিচে নেমে যায়। তুহিন হাবলার মতো দাঁড়িয়ে আছে। ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে বললো,
— আমি আটকাতেই পারলাম না। কিন্তু আমি আটকাবো। দেখ এবার আমি কি করি।

পকেট থেলে মোবাইল বের করে একজনকে কল দিয়ে বললো রুমাল নিয়ে আসতে। তারপর শয়তানি হাসি দিয়ে নিচে নেমে আসে। নিচে এসে দেখলো নাঈম হাতে রুমাল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তুহিন বললো,
— সব ঠিক আছে?

— হ্যাঁ।

— চলো তাহলে।

তুহিন এবং নাঈম দৌড়ে গিয়ে তূর্যের সামনে দাঁড়ায়। নাঈম তূর্যের পেছনেই দাঁড়িয়ে ছিলো। তুহিন তূর্যের সামনে দাঁড়ায়। তূর্য কিছু বলতে যাবে তার আগেই তুহিন রুমাল চেপে ধরে তূর্যের নাকে। ব্যাস এবার এদিকের সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে। দুইজন মিলে ধরাধরি করে তূর্যকে নিরাদের ছাদের চেয়ারে বসিয়ে রাখে। তারপর তুহিনও ধপ করে বসে পরে। নাঈমকে বললো,
— ওইদিকে কতটুকু হয়েছে দেখো গিয়ে।

—————————————-
দরজা খুলেই দেখলো নিরার ওড়না টেনে ধরে রেখেছে মেহরাব। এদিকে নিরা নিজেকে ছুটাতে আকুতি মিনতি করছে। দরজা খোলার আওয়াজে মেহরাব দরজার দিকে তাকিয়ে কেঁপে উঠে ভয়ে। ওড়না ছেড়ে দেয়। নিরা দৌড়ে এসে মিসেস তানজুমকে জড়িয়ে ধরে। কান্না করে বললো,
— বড়মা ও আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করছিলো। প্লিজ ওকে বাড়ি থেকে বের করে দাও। কাশফি আপুকে ওর সাথে বিয়ে দিও না।

মেহরাব আমতা আমতা করে বললো,
— আমি আসতে চাইনি। নিরাই আমাকে জোর করে এখানে এনেছে। বিশ্বাস করু….

বাকি কথা বলার আগেই মোহাম্মদ আনোয়ার সাহেব মেহরাবের গালে জোরে থাপ্পড় মারলেন। মেহরাবের মা রেগে বললেন,
— আমার ছেলেকে দোষ দিচ্ছেন কেনো? ও তো বলেছে আপনার মেয়েই ডেকে এনেছে ওকে এখানে। তাহলে ওর দোষ দিচ্ছেন কেনো?

নিরার ছোট চাচা বললো,
— দরজা খুলে আমরা দেখেছি ওদের অবস্থা। আপনার ছেলে আমাদের মেয়ের ওড়না টেনে ধরে রেখেছিলো। কেউ ইচ্ছা করে কাছে আসলে জোর করতে হয় না। আপনার ছেলে তো জোর করছিলো আমাদের মেয়েকে। নিজের ছেলেকে না সুধরে আপনি আমাদের মেয়েকে নিয়ে কথা বলছেন।

মিসেস তানজুম বললেন,
— আমি আমার মেয়েকে বিয়ে দিবো না এখানে। বিয়ের আগেই ছেলের তার বোনদের দিকে নজর। সেই ছেলে বিয়ের পর আমার মেয়েকে সুখে রাখবে তার কোনো গ্যারান্টি নেই। আর বিয়ের পর সে অন্য মেয়েদের কাছে যাবে না এর কি গ্যারান্টি আছে? আমি আমার মেয়েকে বিয়ে দেবো না। আপনারা আসতে পারেন।

মেহরাবের মা বললেন,
— ঠিকাছে দিয়েন না। আপনাদের মেয়েদেরই চরিত্র ঠিক নেই। আবার আমার ছেলেকে নিয়ে কথা বলছেন।

রাফিন রেগে বললো,
— আপনাদের মতো মায়েদের কারণেই ছেলেরা এমন হয়। তাদের চরিত্র এতোটা নিচে নেমে যায়। নিজের ছেলের দোষ লুকিয়ে আপনি আরেকজনের উপর দোষ চাপাচ্ছেন। লজ্জা লাগে না? ছেলেকে ঠিক করার আগে আমার মনে হয় আগে আপনার নিজের ঠিক হওয়া উচিত। আপনারা আসতে পারেন।

মেহরাব এবং তার মা যাওয়ার আগে নিরার বাবাকে বললো,
— বিয়েতো ভেঙে গেছে এবার বিয়ে কি করে দাও তোমাদের মেয়েদের দেখে নিবো ভাই।

রাফিনের মা কাশফিকে শান্তনা দিচ্ছেন। সারাবাড়ি পিনপতন নীরবতায় বিরাজ করছে। মিসেস তানজুম মনমরা হয়ে বসে আছেন। সবাই মনমরা হয়ে বসে আছে। এমন সময় তুহিন এবং তুহিনের বাবা তাদের বাড়িতে প্রবেশ করলো। তাদের দেখে আরেক দফা অবাক হলেন বাড়ির বড়রা। তুহিনের বাবা কাশফির বাবা মায়ের সামনে গিয়ে বললো,
— ঝগড়া বা খোটা দিতে আসিনি। অন্য কারণে এসেছি। আমার ছেলে তূর্যের জন্য তোমার মেয়ে কাশফিকে বউ করে নিতে চাই। রাজি আছো নাকি বলো।

কাশফি একথা শুনে অনেকটা অবাক হলো। এমন তো হওয়ার কথা নয়। হঠাৎ তুহিনের বাবার কি হলো যে উনি নিজে এসেই বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছে। চরম অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে কাশফি। নিরার বাবা বললেন,
— এটা কি নতুন কোনো তামাশা করার জন্য বলছো? দেখো এমনিতেই অনেক হয়েছে আর না। তোমরা যাও।

তুহিন বললো,
— আঙ্কেল আমরা তামাশা করতে আসিনি। সত্যিই বলছি কাশফি আপুকে ভাবি বানাতে এসেছি। প্লিজ রাজি হয়ে যান।

মিসেস তানজুম বললেন,
— একবার ভরসা করে দেখলাম পুরো এলাকায় বদনাম হতে হয়েছে। এবার আর নয়।

কিছুতেই কাশফির পরিবার রাজি নয় এখানে। অনেক কথাই শুনিয়েছে তুহিনের পরিবারকে। কাশফি দীর্ঘশ্বাস ফেলে উপরে উঠে যাবে তখনই তুহিন দৌড়ে গিয়ে নিরার বাবার পা ধরে বললো,
— আঙ্কেল প্লিজ আমার অপরাধের জন্য ওদেরকে আলাদা করবেন না। প্লিজ আঙ্কেল। আমার ভাই অনেক ভালো। আমার থেকেও ভালো। আর তাছাড়া কাশফি এবং তূর্য ভাইয়া দুইজনই দুজনকে চায়। আপনারা রাজি হবেন না বলে তারা একে অপর থেকে দূরে সরে গেছে।

নিরার বাবা বললো,
— এতো চাইলে পালিয়ে গেলো না কেনো?

— ভাইয়া পালাতে চায়নি। এর আগে আপনাদের অনেক বদনাম হয়েছে আমার কারণে তাই ভাইয়া আবার আপনাদেরকে এলাকায় বদনাম হতে দিতে চায়নি। চায়নি কেউ আপনাদের পরিবার নিয়ে কথা বলুক। তাইতো ঘর ছেড়েও পালিয়ে যেতে চেয়েছে যাতে কাশফির বিয়েতে আবেগের কারণে ঝামেলা না করে বসে। প্লিজ আঙ্কেল আমার ভাইয়ার জন্য কাশফি আপুকে দিয়ে দেন।

অনেক ভাবনা চিন্তার পর নিরার পরিবার রাজি হয়েছে। অনেকটা সন্দেহ নিয়েই রাজি হয়েছে। কারণ তাদের এখনো নিরার বিয়ে ভাঙার সেই বাজে সিনক্রিয়েট মনে রয়ে গেছে। সবাই আবার হাসিমুখে আয়োজন শুরু করলো। কাশফি অনেক খুশি আজকে। মনে মনে সে তূর্যকে খুজচ্ছে কিন্তু এই হাদারাম কই আছে সেটাই বুঝতে পারছে না। নিরা এবং ফাতেমা এসে দুইদিক থেকে দুজনে কাশফিকে হালকা ধাক্কা দেয়। কাশফি ওদের দিকে তাকালে দুইজনই বলে,
— তো একটু পর হওয়া মিসেস কাশফি কেমন লাগছে?

তিনজনই একসাথে হেসে দেয়। নিরা বললো,
— একটু পর তূর্য ভাইয়ার বউ হয়ে যাবে। তো ফিলিং সামথিং সামথিং?

কথাটা বলেই চোখ মারে নিরা। কাশফি লজ্জা পায়। মুচকি হাসে। কাশফির বাবা বললো,
— আমাদের হবু জামাই কই?

তুহিন বললো,
— আনছি।

তুহিন এবং নাঈম দৌড়ে ছাদে যায়। কৌশিক এসে কাশফির সামনে দাঁড়ায়। আফিয়া আর ছোট চাচি মিলে হাসাহাসি করে নাস্তা রেডি করছে। কৌশিক বললো,
— তোর বিয়ার চক্করে আমার অনেক এনার্জি লস হয়ে গেছে। তোর শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে গেলে আমাকে চিকেন বিরিয়ানি, পাস্তা, সিঙারা, আলুর চপ, কেক, বিফ বিরিয়ানি, চিকেন ফ্রাই, কাবাব এসব খাওয়াবি। প্রতি ঈদে আমাকে দশ হাজার টাকা দিবি। কোরবানির ঈদে আমাকে একটা গরু গিফট করবি। বুঝলি।

কাশফি হাসলো। বললো,
— সত্যিই এতোকিছু নিবি?

— হ্যাঁ। কোনো সন্দেহ? শুন অনেক সেবা করবি আমাকে তোর শ্বশুর বাড়ি গেলে।

দুইজন একসাথে হেসে দেয়। কিছুক্ষণ চুপ থেকে তারপর বললো,
— তুই খুশি?

— হ্যাঁ অনেক। তোরা হেল্প না করলে হয়ত আমি মেহরাবের কাছে ভোগের পাত্রী হয়ে যেতাম।

— থাক আর বলিস না। এসব প্লেন তোর একমাত্র দেবর তুহিন করেছে। ও এই প্ল্যান না দিলে আমরা মেহরাবের আসল রুপ সবার সামনে আনতে পারতাম না।

কাশফি অবাক হয়। তবে খুশিও হলো। তুহিন তূর্যকে ছাদ থেকে নামিয়ে এনে সোফায় শুয়ে দেয়। সবাই অবাক হয়ে বললো,
— ওর এ অবস্থা কেন?

— পালিয়ে যাচ্ছিলো তাই এভাবে আটকে রেখেছি। ওর মুখে পানি মারবো কেউ কিছু বলবেন না। একটু চমকে দি এবং ভয় লাগিয়ে দি।

কাশফি দূরে দাঁড়িয়ে থাকায় শুনেনি। নিরাকে জিজ্ঞেস করলো এ অবস্থা কেন? নাঈম দৌড়ে এসে পাশে দাঁড়িয়ে বললো,
— তোমার হবু বর কাবির সিং এর মতো দেবদাস হয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলো। আমরা ধরে এনে বেহুস করে রেখেছি।

সবাই হেসে দিলো। কাশফি আবারো একবার লজ্জা পেলো। তুহিন একগ্লাস পানি ছুড়ে মারলো তূর্যের মুখে। তূর্য লাফিয়ে উঠে বসলো। আশেপাশে তাকিয়ে আবার সামনে তুহিনের দিকে তাকিয়ে দেখলো তুহিন খুব রেগে আছে। কি হলো কিছুই বুঝতে পারছে না। মনে করার চেষ্টা করছে সে কোথায় ছিলো আর এখানে কিভাবে এলো। তূর্য আস্তে করে বললো,
— আমি এখানে কিভাবে এলাম?

— তুমি মাতাল হয়ে এখানে এসে হাঙামা করেছো তাই দেখো কাশফির বিয়ে ভেঙে গেছে। কি করেছো এটা তুমি? হ্যাঁ?

তূর্য ভয় পেলো। আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো তার বাবাও আছে। তূর্যের বাবা সামনে এগিয়ে এসে বললো,
— এটা কি করলি তুই? মেয়েটার বিয়ে ভেঙে দিলি। কেনো?

তূর্য আমতা আমতা করে বললো,
— সত্যি আমি এমন করেছি?

— হ্যাঁ।

তূর্য ফেইসটা কাদো কাদো করে ফেললো। সবার দিকে ভিতু চোখে বারবার তাকাচ্ছে। তূর্যের এমন হাল দেখে সবাই একসাথে হেসে দিলো। তূর্য আরো ভয় পেয়ে গেলো। মনে মনে ভাবছে- হয়ত সে পাগল হয়ে গেছে আর নাহয় সবাই পাগল হয়ে গেছে। দুইহাতে মুখ মুছে আবার তাকালো। সবাই এখনো হাসছে। আসলেই কি আমি নেশার ঘোরে এসব দেখছি নাকি সবাই সত্যিই হাসছে। তুহিন পাশে বসে বললো,
— স্বপ্নও দেখছিস না, নেশার ঘোরেও এসব দেখছিস না। সত্যিই তুই এখানে বসে আছিস। আর তোর ব্যবস্থা আমি করে দিয়েছি ব্রো। সবাই রাজি এবার দুলা সেজে এসে কবুল বলে ফেলো।

তুহিনের বাবাও বললো,
— হ্যাঁ বাবা। সব ব্যবস্থা করে ফেলেছি এবার যা রেডি হয়ে আয়। ওইযে কাজি সাহেব বসে আছে।

তুহিন তূর্যকে উপরে রাফিনের রুমে নিয়ে এসে একটা সেরোয়ানি হাতে দিয়ে বললো,
— তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আসো। ভাবি নিয়ে যাবো বাসায়।

তুহিন বেরিয়ে যাওয়ার আগে তূর্য শক্ত করে তুহিনকে জড়িয়ে ধরলো। তারপর তুহিন নিচে নেমে আসলো সাথে তূর্যও। দুইজনকে সোফায় বসানো হলো। তুহিনের বাবা ঘর থেকে একটা আংন্টি সাথে করেই নিয়ে এসেছেন। মেহরাবদের আংটটা খুলে তূর্য তার বাবার আনা আংটিটা পড়িয়ে দিলো। কাশফিও তূর্যকে আংটি পরিয়ে দিলো। দুই পরিবার একজন আরেকজনকে মিষ্টি খাইয়ে দিচ্ছে। তূর্যের চেয়ে তুহিন আজ বেশি খুশি। দুইজনের বিয়ে পড়ানো শুরু করেছে কাজি।

সবকিছু দূর থেকে রাফিন এবং নিরা দাঁড়িয়ে দেখছে। রাফিন আস্তে নিরার হাত ধরে বললো,
— চলোনা আমরাও বিয়ে করে ফেলি তারপর আজকেই বাসর রাত হবে আমাদের। ইশ্ ভাবতেই ভাল্লাগছে।

নিরা হাতটা ঝাড়ি দিয়ে ছেড়ে দিলো। আস্তে করে বললো,
— অসভ্যদের মতো করছেন কেনো?

— তোমার সাথে না করে কার সাথে করবো? অন্যকারো সাথে করলে তো তোমার সহ্য হবে না। আমাকে শাসাবে। তাই বলছি চলো বিয়ে করে ফেলি। চলোনা বাবু। অনেক চুমু দেবো।

— অসভ্য কোথাকার।
·
·
·
চলবে…………………………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here