হৃদয় নিবাসে তুই পর্ব-২৩

0
1967

#হৃদয়_নিবাসে_তুই
#পর্ব_২৩
লেখনীতেঃ ভূমি

‘ তুই মা হয়ে যাচ্ছিস আর আমায় জানালি না দ্রিজা?মানছি তোর প্রাক্তনরে আমি ভালোবাসি তাই বলে তুই আমার থেকে ফুফি হওয়ার খবরটাও চেপে যাবি?এই অধিকার কিন্তু তোর নেই দ্রিজা।একদমই নেই!’

অদ্রিজা রুমের ভেতর থেকেই মাথা তুলে দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটাকে পর্যবেক্ষণ করল।মুখে চকচকে হাসি স্পষ্ট।আজ অনেকদিন পর এই চাঞ্চল্যমাখা হাসিটা তার চোখে পড়েছে বটে। কিন্তু হাসিটা এটুকুও পরিবর্তিত হয়নি।আগের মতোই প্রাণবন্ত সতেজ। মেয়েটার উজ্জ্বল ফর্সা গায়ে রং।পরনে লাল রংয়ের ফতুয়া আর জিন্স।ছোট্ট পিচ্চি এই মেয়েটার সাথে আগে অল্প কয়েক সেকেন্ড মিশলেও মুহুর্তেই মুখে হাসি ফুটত।আর সেই মেয়েটির সাথেই আজ দেড় মাস হলো তার দেখা সাক্ষাৎ কিছু ঘটেনি।মাঝে মাঝে নিজেকে ভীষণ একা, একাকীত্বে ভোগা হতাশ মানবী মনে হয়েছিল তার।দেড় মাস কি কম সময়?এই দেড় মাস সম্পূর্ণভাবে সে বাসায় থেকেছে।বের হয় নি।কারো সাথে কথা বলে নি, হাসে নি।নিশ্চুপ, হাসিহীন মুখ নিয়ে পড়ে ছিল একটা রুমে।অথচ তার একটা বন্ধুও নেই যে তার মুখে হাসি ফুটানোর চেষ্টা করবে।একবার ও তো এই দেড় মাসে কেউ খোঁজ নিল না।তাই তো নিজেকে ভীষণ বন্ধুহীন মনে হয়েছে।অবশেষে বুঝি বন্ধুহীন শব্দটা উঠতে চলেছে তার পাশ থেকে।এই যে তার সামনে যে ছোটখাটো মেয়েটা মুখে একরাশ হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে?সে তার বন্ধু।বেশ কাছের বন্ধু।অদ্রিজা ভ্রু কুঁচকাল।কাছের বন্ধুকে এতদিন পর দেখে যেমন অনন্দানুভূতি কাজ করছে ভেতরটায় ঠিক তেমনই অজানা আতঙ্ক কাজ করছে।তার প্র্যাগনেন্সির খবরটা ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়।তার পরিবারের লোক ছাড়া আর কেউ জানে ও না কথাটা।নেহা কিভাবে জানল তবে?বিষয়টা রক্তিম যাতে না জানে তার জন্যই তো কাউকে জানায়নি সে।তবুও নেহা কিভাবে জানল?অনেক ভেবেও বুঝল না অদ্রিজা।নেহা কয়েক পা এগিয়ে এসেই খিলখিলিয়ে হাসল।অদ্রিজার গাল হাত জোড়া দিয়ে টেনে দিয়েই ঠোঁট উল্টে বলল,

‘ ভালোভাবে খাচ্ছিস না তুই?কেমন শুকিয়ে গেছিস।চোখের নিচে বেশ কালি পড়েছে।আমি কিন্তু এসব মানছি না।আমার ভাইয়ের ভবিষ্যৎ ছেলে বা মেয়ের এহেন ক্ষতি আমি হতে দিতে পারি না।তোর জন্য তো নয়ই!দরকার হলে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে চব্বিশ ঘন্টাই তোকে জোর করে খাওয়ানো হবে।আমার ভাইয়ের ভবিষ্যৎ ছেলে মেয়ের সুস্থতার দিকটাও তো আমায় দেখতে হবে।’

অদ্রিজা কিছুটা বিরক্ত হলো নেহার কথা শুনে।কপাল কুঁচকে সেভাবেই বসে রইল খাটের মাঝখানে।মাথার উপর ঘুরে চলেছে ইলেক্ট্রিক পাখা।তাপমাত্রার খেলায় পেরে না উঠে সেই ইলেক্ট্রিক পাখাটিও বেশ একটা বাতাস দিচ্ছে বলে মনে হলো না অদ্রিজার।দুপুরের তরতাজা রোদের উত্তাপে জানালা দিয়েও ঢুকে এল একঝাঁক উত্তপ্ততা।পরনের কামিজটা শরীরের ভাজে ভাজে ঘামে ভিজে উঠতেই সে বিরক্তিটা দ্বিগুণ হলো।মুখ চোখ কুঁচকে নেহার দিকে সেই বিরক্তমিশ্রিত চাহনি ফেলতেই নেহা বুঝে উঠল।চোখ মিনমিনে করে অদ্রিজার দিকে অসহায় মুখ করে তাকাল।তারপর কোমলে স্বরে ফিসফিসিয়ে বলল,

‘ দ্রিজা?আমি আসাতে খুশি হস নি তুই?অনেক বেশি বিরক্ত?তোর প্রাক্তন আসলে নিশ্চয় অনেক বেশি খুশি হতিস?তাই না?’

অদ্রিজার নজর ক্ষ্রিপ্ত হলো।নেহাকে দেখামাত্রই মনের ভেতর যে কোমল আনন্দটা নড়েচড়ে হৈ চৈ করছিল সেটাই এখন প্রবল বিরক্তিতে পরিণত হলো।দাঁতে দাঁত চেপেই স্পষ্ট ভাবে উত্তর দিয়ে বসল সে,

‘ প্রথমত দিহান আমার প্রাক্তন নয় নেহা।তোকে দেখামাত্রই ভীষণ আনন্দিত হয়েছিলাম কিন্তু এই মুহুর্তে আসলেই বিরক্ত লাগছে।আর হ্যাঁ, তোকে কে বলেছে আমি মা হচ্ছি?কিসব আজাইরা কথা বলছিস?’

‘ আ’ম স্যরি।আমি জানতাম ও তোর প্রাক্তন!’

অদ্রিজা আবারও তীব্র বিরক্তি নিয়ে কপাল কুচকাল।ছোট্ট, চঞ্চল এই মেয়েটার প্রতি এই প্রথম এত বেশি বিরক্ত হচ্ছে সে।এই প্রথম এত বেশি রাগ হচ্ছে।দাঁতে দাঁত চেপে আবারও দৃঢ় গলায় বলে বসল,

‘ কি সমস্যা কি তোদের নেহা?দিহান আমার কেউই নয়।তুই চাইলে দিহানকে জিজ্ঞেস করতে পারিস। দিহানের সাথে আমার লাস্ট কথা অনেকদিন আগে হয়েছে। যেইদিন রক্তিমের বাসা থেকে একেবারের মতোই তার থেকে হার মেনে চলে এসেছিলাম সেদিনই।তাও দিহানের কাছে জানতে পেরেছিলাম তোর রক্তিম ভাইয়া আমার আর দিহানের সম্পর্ক তৈরির সম্পর্কে কথা বলেছিল দিহানের সাথে।কতটা নিচ হলে মানুষ তার স্ত্রীকে অন্য একটা পুরুষের হাতে তুলে দিতে চায় ভাবতে পারিস তুই?আমার আর দিহানের মাঝে কোনদিনই কোন সম্পর্ক ছিল না নেহা।প্লিজ এরপর থেকে প্রাক্তন বলবি না।ভাই বলে প্রেমিক, বোন বলছে প্রাক্তন!হাও সুইট!তোরা ভাই বোনগুলো আসলেই ডেঞ্জারাস নেহা।তোর ঐ রক্তিম ভাইয়া আমার সাথে প্রতারণা করেছে,খুব খারাপ করেছে।খুব!আর তুই?তুই তো দিহানকে ভালোবাসতি নেহা।আমি তোর উপর বেশ বিশ্বাস রেখে দিহানকে বলেছিলাম, “নেহাকে আঁকড়ে ধরো।ওকে পাশে রাখো সবটা সময়।ও তোমায় আগলে রাখবে। কখনো কোন দুঃখ দিবে না।ভালোবাসবে ভীষণ করে।”অথচ তুই ফিরিয়ে দিলি ওকে?ভালোবাসতি তো ওকে।তাহলে?’

নেহা ছোট্ট শ্বাস ফেলল।অদ্রিজার মানসিক অবস্থা সম্পর্কে বাসায় ঢুকতেই অত্রিয়া বলে দিয়েছিল।কথায় কথায় ইদানিং রাগ করে, মাথা গরম হয়।তাই অদ্রিজার বলা এতগুলো কথায়ও মিষ্টি হাসল সে।হালকা শ্বাস নিয়েই মৃদু গলায় বলল,

‘ ও আমায় তোকে ভুলার মেডিসিন হিসেবে পাশে চেয়েছিল দ্রিজা।ভালোবাসা হিসেবে নয়।এনিওয়েজ, তুই কি চাস? আমি দিহানকে আগলে রাখি, ভালোবাসি, আঁকড়ে ধরি?ওকে।ফুপ্পি হওয়ার গিফ্ট হিসেবে তোর এই ইচ্ছেটা পূরণ করা হবে । এমনিতেও অবশ্য দিহানের সাথে সেদিনের পর আমি কথা বলিনি।পুরোপুরি এড়িয়ে চলেছি।অনেক কষ্ট পেতে হয়েছে ওকে এড়িয়ে চলতে।সেই কষ্টটা না হয় তোর ইচ্ছেপূরণের উদ্দেশ্যে দূর হয়ে যাক।’

অদ্রিজা এবার মুচকি হাসল।এদের ভাই বোনের আত্নসম্মান বেশ প্রখর।ভালোবাসলেও কত অবলীলায় ফিরিয়ে দিতে পারে এরা। অদ্ভুত!আচ্ছা রক্তিম ও কি তাকে ভালোবাসে?নেহার মতোই অত্নসম্মানকে জেতাতে তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে?আনমনে প্রশ্নটা করেই তাচ্ছিল্য নিয়ে হাসল অদ্রিজা। নেহার দিকে তাকিয়েই ঠোঁট চেপে বলে উঠল,

‘ তোকে কে বলল আমি মা হতে যাচ্ছি?অত্রি?’

নেহা ছোট্ট শ্বাস ফেলেই ঠোঁট উল্টে বলল,

‘ তুই কেমন বদলে গেলি দ্রিজা।কেমন জেরা করছিস। এমনভাবে কথা বলছিস যেন আমি জানলে সব ক্ষয়ে যাবে।আমি তো কেবল একটা চিঠি পোঁছে দিতেই এতদিন পর এসেছি তোর বাসায়।ভেবেছিলাম আমায় দেখে খুশি হবি।কিন্তু তুই খুশি হলি না।আর তোর প্র্যাগনেন্সির খবরটাও এই বাসায় ঢুকেই জেনেছি।অত্রিয়াকে যখন জিজ্ঞেস করলাম তুই কেমন আছিস তখন ওই বলল সব।’

অদ্রিজা সুপ্তশ্বাস ফেলল।চোখ বন্ধ করে অনুভব করল এত তিক্ত অনুভূতি।রক্তিমকে জড়িত কোনকিছুই তার সহ্য হচ্ছে না স্পষ্ট বুঝতে পারছে সে।বিরক্ত লাগছে।এই যে নেহা রক্তিমের মামাত বোন, এই সম্পর্কটার কারণেই নেহাকে পুরোপুরি এড়িয়ে যেতে মন চাইছে তার।কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছে না।কথা বললেও কথাগুলো না চাইতেও বেশ তিক্ত হয়ে যাচ্ছে।এমন কেন হচ্ছে?যতই রক্তিমকে ভুলতে চাইছে ততই যেন রাগ, ঘৃণা, কষ্ট, কান্না সবকিছুতেই সেই মানুষটা মিশে যাচ্ছে।কি অদ্ভুত?অদ্রিজা হতাশ হয়ে ছোটছোট চোখে এদিক ওদিক তাকাতেই কানে এল মোবাইলের আওয়াজ।চোখ ফিরিয়ে চাইতেই নেহার মোবাইলটা বেঁজে উঠতে দেখল সে।কেউ ভিডিও কল দিয়েছে চোখে পড়তেই মৃদুশ্বাস ফেলে নেহার দিকে তাকাল।নেহা এক সেকেন্ডও অপেক্ষা না করে কলটা রিসিভড করল। উচ্ছ্বাসিত কন্ঠে বলে বসল,

‘ রক্তিম ভাইয়া?কেমন আছো?দাদীমা কেমন আছে?পৌঁছে গিয়েছো সেখানে?’

অদ্রিজা ভ্রু কুঁচকে এক নজর নেহার মোবাইলের স্ক্রিনে তাকাল।মোবাইলের মসৃন তলে রক্তিমের ক্লান্ত মুখখানা স্পষ্ট ভেসে উঠেছে।তার থেকে বেশ কিছুটা দূরেই সুইটহার্ট দাঁড়ানো।অদ্রিজা আড়চোখে এক নজর দেখে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে নজর সরাল।নেহার থেকে বেশ কিছুটা সামনে থাকায় তাকে দেখা গেল না। রক্তিমও বুঝে উঠল মোবাইলের এপাশে তার কাঙ্খিত প্রিয় রমণীটা বসা। সে মোবাইলের ওপাশ থেকে রাশভারী গম্ভীর গলায় শুধাল দ্রুত,

‘ হ্যাঁ এয়ারপোর্ট থেকে আরো প্রায় ছয়ঘন্টা আগে এসে পৌঁছেছি।এতক্ষন হালকা ঘুমিয়েছিলাম তাই তোমাদের জানাতে দেরি হয়ে গেল লিটল ওয়াইফ।’

অদ্রিজা বুঝল না। এয়ারপোর্ট থেকে ফিরেছে মানে?বুঝে না উঠেই নেহার দিকে ভ্রু জোড়া কুঁচকে তাকাল।নেহা মুচকি হাসল।চঞ্চলতাময় কন্ঠটা আরো কিছুটা চঞ্চল আর সুচালো করেই বলে উঠল,

‘ একটা নিউজ শুনবে ভাইয়া?আই নো তুমি এই নিউজটা শুনে বেশ খুশি হবে।শুনবে?’

নেহার কথাটা শুনে রক্তিমের প্রতিক্রিয়াটা কি হলো তা না দেখলেও ভ্রু জোড়া কুঁচকে তাকাল অদ্রিজা।সুচালো চাহনিতে নেহার দিকে তাকিয়ে থাকার মাঝেই নেহা খিলখিলিয়ে হেসে বলে উঠল,

‘ দ্রিজার শরীরের ভেতর একটা….. ‘

নেহাকে বাকি কথাটা বলতে দিল না অদ্রিজা।হাত দিয়ে ছোঁ মেরে কেড়ে নিল নেহার হাতের মোবাইলটা।বেশ বিরক্ত নিয়েই নেহার দিকে তাকিয়ে কর্কশ গলায় বলে উঠল,

‘ কি শুরু করেছিস নেহা?কিছু না জেনে শুনেই আন্দাজে কথা বলছিস কেন?অত্রি ছোট মানুষ।সবে ষোল পেরিয়ে সতেরোয় পা দিবে কদিন পর।ওর বাচ্চামো মাখা আবোল তাবোল কথাগুলোকে তুই বিশ্বাসই বা করছিস কেন?আজব!ওর কথা সিরিয়াসলি নিচ্ছিস কেন তুই?’

অদ্রিজার রাগ, বিরক্তি সবটা বুঝেই নেহা চুপ হয়ে গেল মুহুর্তেই।মুখেচোখে থমথমে ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে গেল সে। অদ্রিজা বুঝতে পারল বেশ খারাপ ভাবে কথা বলে ফেলেছে সে।জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে হাত দিয়ে ধরে রাখা মোবাইলটার দিকে তাকাতেই চোখে পড়ল সেই মানুষটার নেশাক্ত ঘোর লাগানো চাহনি। সেই চাহনি অন্যবার আক্রমন করলে হয়তো সে লজ্জ্বায় নুঁইয়ে যেত, মাথা নিচু করে লালাভ গাল নিয়ে হয়তো দাঁড়িয়ে থাকত। কিন্তু এখন সে লজ্জ্বা আর স্থান পেল না তার অনুভূতিতে।তীব্র রাগে জ্বলজ্বল করেই একপ্রকার ঝংকার তুলে মোবাইলটা বিছানায় রেখে দিল।তবুও সেই চাহনিকে থামাতে পারল না।আটকাল না তার প্রতি সেই নিরন্তর চেয়ে থাকা।ওপাশের মানুষটা ঠিক সেভাবেই তাকে দেখতে লাগল, পরখ করতে লাগল।অদ্রিজা রাগে হাঁসফাঁস করতেই রক্তিম মৃদু স্বরে বলে উঠল,

‘ লিটল ওয়াইফ?তুমি উনার সাথে কি করছো?চিঠিটা দিয়েছো?’

নেহা খুব দ্রুত মোবাইলটা হাতে নিয়ে উত্তর দিল,

‘ না,দিতেই এসেছিলাম।দেওয়ার আগেই তুমি কল করলে।’

ওপাশ থেকে বোধ হয় রক্তিম হাসল।নেহা অদ্রিজার রাগটা বুঝতে পেরেই দ্রুত কল রাখল।ব্যাগ থেকে দ্রুত বের করল একটা লাল রাঙ্গা ভাজ করা কাগজ।অদ্রিজার দিকে এক হাত দিয়ে এগিয়ে দিয়েই মিষ্টি হেসে বলল,

‘ রক্তিম ভাইয়ার চিঠি দ্রিজা।ভাইয়া যাওয়ার আগে দিয়েছিল।আমাকে পড়তে নিষেধ করেছিল।পড়িনি।ভাজটা যেভাবে দিয়েছিল সেভাবেই আছে।আমার দায়িত্ব ছিল চিঠিটা পৌঁছে দেওয়া।’

অদ্রিজা সরু চাহনিতে তাকাল।যাওয়ার আগে বলতে কি বুঝাল বুঝে না উঠলেও প্রশ্ন করল না।নিষ্পলক চিঠিটার দিকে তাকিয়ে থেকেই কাঁপা হাতে এগিয়ে নিল চিঠিটা। খাটের এককোণে রেখে দিয়েই লম্বা শ্বাস ফেলে বলল,

‘ নেহা?একটা কথা বলব?’

‘ বল না।’

‘ আমি জানি রক্তিম আমায় ইচ্ছে করেই দূরে সরিয়ে দিয়েছে।ইচ্ছে করেই আমায় বারংবার কষ্ট দিয়েছে।ইচ্ছে করেই আমার সামনে বারবার খারাপ সাঁজার চেষ্টা চালিয়েছে।আমি জানি, তুই এইসব কিছুর পেছনে থাকা কারণটা জানিস। কিন্তু তাও বলবি না তাই তো?কারণ রক্তিমের কাছে তুই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তাই না?প্রমিজ করেছিস উনাকে?ঠিক আছে। বলতে হবে না।তবে আজ আমায়ও একটা প্রমিজ করতে হবে নেহা।করবি?যেভাবে সততার সাথে রক্তিমকে দেওয়া প্রমিজটা রক্ষা করছিস সেভাবে আমাকে দেওয়া প্রমিজটাও রক্ষা করবি তো?’

নেহা হালকা হাসল।বলল,

‘ বল কি প্রমিজ?’

অদ্রিজা মৃদু হেসেই বলল,

‘ আমি মা হচ্ছি।বিষয়টা কাউকে বলতে পারবি না। রক্তিম কে তো কোনদিনই জানাতে পারবি না।প্রমিজ কর।কোনদিন কাউকে জানাবি না এই কথাটা।রক্তিমকে তো নয়ই।প্রমিজ কর।’

নেহা অনেকক্ষন চুপ থাকল।প্রমিজটা করা উচিত কি অনুচিত তা বুঝে না উঠেই মনের সাথে অনেকক্ষন যুক্তি করল।অবশেষে মুখে হাসি ফুটিয়েই বলল,

‘ হ্যাঁ।প্রমিজ।’

#চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here