💕ভালোবাসি💕 (দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসার গল্প) Samira Afrin Samia #নিপা ১৩ – শেষ পর্ব

💕ভালোবাসি💕
(দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসার গল্প)
Samira Afrin Samia
#নিপা
১৩ – শেষ পর্ব

মিষ্টি – রাগ হবে না তো কি হবে? তুমি আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে নিজের গফকে নিয়ে লুতুপুতু প্রেম করো।তাহলে তো রাগ হবেই।
তুষার – এখন চল সবাইকে গিয়ে না করতে হবে। এই এনগেজমেন্ট হবে না।
মিষ্টি – তুমি আমাকে ভালোবাস তা আগে বললে আর এত কিছু হতো না।
তুষার – তুই যে আমাকে ভালোবাসিস তা আগে বললে জান্নাত ও আমার লাইফে আসতো না।
মিষ্টি – আমি কি জানতাম নাকি। আমি যে তোমাকে ভালোবাসি?
তুষার – তা আমি জানতাম নাকি?
মিষ্টি – আমি তো পিচ্চি মেয়ে তাই বুঝতে পারিনি।তুমি তো বুড়া ছেলে তোমার তো বুঝা উচিত ছিল।
তুষার – ওরে আমার পিচ্চি রে।পিচ্চি দেখেই তো কাল এনগেজমেন্ট হতে যাচ্ছে।
মিষ্টি – যাই হোক এখন তো জানো তুমি আমাকে ভালোবাসো।তাহলে এখন I love you বলো।
তুষার – I love you বললেই কি ভালোবাসা হয়ে যায়?
মিষ্টি – হয় না???
তুষার – না হয় না। এই কথা দিয়ে যদি ভালোবাসা প্রকাশ পেত তাহলে তো ভালোই হতো। এমন অনেক সম্পর্ক আছে যেখানে I love you বলা ছাড়া ও ভালোবাসা যায়।যারা কথায় কথায় I love you,jaan, babu,sona এগুলো বলে ওরা ভালোবাসার আসল মানে টা ই জানে না। পৃথিবীর সকল শব্দ দিয়ে ও ভালোবাসা প্রকাশ করা যায় না। আর এখানে এই তিনটা শব্দ তো খুবই কম।
মিষ্টি – ওরে বাবা! এতো লেকচার দিতে কে বলছে। আমি তো শুধু love you বলতে বলছি।
তুষার – আচ্ছা
মিষ্টি – কি আচ্ছা?
তুষার – ভালোবাসি।
মিষ্টি – কাকে?
তুষার – পাশের বাসার ওই আন্টির মেয়েকে।
মিষ্টি – কি? আমি জানতাম তুমি আমাকে ভালোবাসো না। ফাস্ট এ শুধু জানু ছিল এখন তো দেখছি পাশের বাসার আন্টির মেয়েকে ও।আর কত জন কে তুমি ভালোবাসো?
তুষার – আরে পাগলী পাশের বাসার আন্টির মেয়েটা তো তুই ই।
মিষ্টি – সত্যি?
তুষার – হুম।
মিষ্টি – কসম?
তুষার – হুম,,, তোর কসম।
মিষ্টি – কি????
তুষার – আবার কি?
মিষ্টি – আমার কসম কাটো কেন।তুমি মিথ্যে বললে আমি মারা যাবো।
তুষার – ওরে আমার মিষ্টি গাধী রে।তোর মনে হয় আমি তোর কসম করে মিথ্যা বলবো?
আমি প্রতি তোর একটু ও বিশ্বাস নাই?
মিষ্টি – আছে তো অনেক।
তুষার – তাহলে?
মিষ্টি – তাহলে কিছু না।
— এই বলে মিষ্টি খুব শক্ত করে তুষার কে জড়িয়ে ধরলো।
তুষার – আরে আরে করছিস কি।লজ্জা সরমের মাথা খাইছিস নাকি?
মিষ্টি – ওরে আমার লজ্জবতা লতা।
তুষার – কি,,,লজ্জাবতা আবার কি?
মিষ্টি – মেয়ে হলে লজ্জাবতী আর ছেলে হলে লজ্জাবতা এটা ও জানো না।
তুষার – এসব কথা তোকে কে শেখায় রে? পৃথিবীর যত আলতু ফালতু কথা আছে সব তোর মুখেই শুনি।
মিষ্টি – তুমি বলতে চাইছো আমি সব সময় আলতু ফালতু কথা বলি?
তুষার – না রে তুই যা বলিস সব কথা ঠিক। এখন চল তা না হলে কাল তুই অন্য কারো হয়ে যাবি।
— মিষ্টি আর তুষার বাহিরে এসে দেখে মিষ্টির আম্মু আব্বু তুষারের আম্মু আব্বু সবাই এক সাথে দাড়িয়ে আছে। মিষ্টি আর তুষার কিছু বলার আগেই মিষ্টির আব্বু বলে উঠল।
মিষ্টির আব্বু – তুষার এতো রাতে তুমি এখানে কি করছো?
তুষার – আঙ্কেল আন্টি তোমাদের সবার সাথে আমার কিছু কথা আছে। আমি তোমার মেয়েকে ভালোবাসি। আমি ওকে বিয়ে করবো। তুমি কাল ছেলেপহ্ম কে আসতে না করে দেও। ওর এনগেজমেন্ট হবে না।
মিষ্টির আম্মু – তুই আমার মেয়েকে ভালোবাসলে কি হবে। আমার মেয়ে তো তোকে ভালোবাসে না।
মিষ্টির আব্বু – মিষ্টি তুমি কি তুষার কে ভালোবাসো?
আর তুমি যদি এখন বলো তুমি তুষার কে ভালোবাসো তাহলেও আমাদের কিছু করায় নেই। আমরা ছেলেপক্ষ কে কথা দিয়ে দিছি।
মিষ্টি – তুমি কথা দিলা কেন?
আমার বিয়ে তুমি কেন ঠিক করবে। আমার যাকে ইচ্ছে আমি তাকেই বিয়ে করবো। আমি তুষার কে ই বিয়ে করবো। অন্য কারো সাথে আমাকে বিয়ে দিলে আমি তার চায়ের মধ্যে ইঁদুর মারার ঔষধ দিয়ে মেরে ফেলবো। ইঁদুর মারার ঔষধেও যদি না মরে তাহলে আমি তার খাবারে মানুষ মারার বিষ মিশিয়ে দিব।তখন তোমাদের মেয়ে ই বিধবা হবে। আর তার পর আমি তুষারের কাছে চলে আসবো।
তুষার – আন্টি আঙ্কেল আমি মিষ্টির বিয়ে অন্য কারো সাথে হতে দিব না। যেই ছেলেটা মিষ্টি কে বিষয় করতে আসবে মেরে তার হাত পা ভেঙ্গে দিব।ওই ছেলের চোখ তুলে নিবো। তাই বলে দিচ্ছি তুমি ওদের কে কাল আসতে না করে দেও।
মিষ্টি –
— মিষ্টির আম্মু আব্বু তুষারের আম্মু আব্বু সবাই হাসতে লাগলো। তুষার সবাইকে এভাবে হাসতে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখছে আর মনে মনে ভাবছে।
তুষার – (কি এমন বললাম যাতে সবার এভাবে হাসতে হবে।)
কি হলো টা কি এভাবে পাগলের মত হাসছো কেন সবাই?
মিষ্টির আম্মু – ছেলে থাকলে তো কাল এনগেজমেন্ট হবে। যে ছেলেই নেই তাকে মারার জন্য তোরা কত প্লেন করে ফেললি।
মিষ্টি – মানে?
মিষ্টির আব্বু – মানে এনগেজমেন্টের পুরো কথাটাই আমাদের সাজানো ছিল।
মিষ্টি আর তুষার একসাথে – প্লেন???
মিষ্টির আব্বু আম্মু এক সাথে – হুম প্লেন।
তুষারের আম্মু – আমরা তোদের বাবা মা। বাবা মা যদি সন্তানের মনের কথা বুঝতে না পারে তাহলে পৃথিবীর কেউ পারবে না।সন্তানের না বলাতে ও বাবা মা তাদের ইচ্ছা অনিচ্ছার কথা জেনে যায়। সন্তানের কি প্রয়োজন তা বাবা মায়ের থেকে ভালো আর কেউ জানবে না।
তুষারের আব্বু – তোদের দুজন কে এক করার জন্য ই এতো প্লেন। আমরা আগে থেকেই বুঝতে পারছিলাম তোরা দুজন দুজনকে ভালোবাসিস।
মিষ্টি – তাহলে এতদিন তোমরা সবাই এক্টিং করছো?
মিষ্টির আম্মু – ওই একটু আর কি। আর তোদের জন্যই তো আমাদের এক্টিং করতে হলো
তুষার মিষ্টি দিকে তাকিয়ে আছে মিষ্টি ও তুষারের দিকে তাকিয়ে আছে। তুষার মিষ্টির কানে কানে বললো
তুষার – কি চালাক বাবা মা।
মিষ্টি – হুম সত্যি ই অনেক চালাক।

দুই সপ্তাহ পর,,,,,,,,
তুষার – সরি মিষ্টি
মিষ্টি – কিসের সরি? আমি তোমাকে বিয়ে করবো না এটাই ফাইনাল।
তুষার – বিয়ে করবি না?
মিষ্টি – না
তুষার – তুই তো বিয়ে করবি সাথে তোর বাপ ও করবে।
মিষ্টি – আমার বাপ করলে ও আমি করবো না।
তুষার – আরে বাবা রাগ করছিস কেন?
মিষ্টি – তোমার ফোনে একটা মেয়ে ফোন দিয়ে তোমাকে বাবু বলে কেন ডাকবে?
তুষার – সত্যি ওই মেয়েকে আমি চিনি না। ওই নাম্বার জীবনে কখনও দেখি নাই। হতে পারে রং নাম্বার।
মিষ্টি – তোমার কাছেই কেন মেয়েরা রঙ নাম্বারে ফোন দিয়ে বাবু সোনা এগুলো বলবে। আমাকে তো কেউ ফোন দিয়ে বাবু বলে না।
তুষার – আমার কি জানি।
মিষ্টি – তুমি তো কিছুই জানো না।
তুষার –
— মিষ্টির কাছে তুষারের ফোন ছিল। মিষ্টি ফোনে গেম খেলছিল।তখন রঙ নাম্বার থেকে একটা মেয়ে ফোন দিয়ে বাবু বাবু করে কথা বলা শুধু করে দেয়। আর এ থেকেই মিষ্টি তুষারের উপর রেগে আছে। মিষ্টি তুষার কে আরো কিছু বলতে যাবে তখনই ওই নাম্বার থেকে আবার কল আসে। মিষ্টি ফোন রিসিভ করে সাথে সাথে বলতে শুরু করে দেয়
মিষ্টি – ওই কোন শাঁকচুন্নি রে তুই আমার জামাই কে ফোন দিয়ে বাবু বলে ডাকিস।তোকে সামনে পেলে তোর সব চুল ছিড়ে নিব। তোর জিহ্বা কেটে দেব।যাতে করে আমার তুষার কে আর বাবু বলতে না পারিস।
মেয়েটি – আপনি কে আমি ঠিক জানি না। তবে সরি একটু আগে আমার বয়ফ্রেন্ডের কাছে ফোন দিতে গিয়ে ভুল করে এই নাম্বার ফোন চলে যায়।প্লিজ কিছু মনে করবেন না।
— এটা বলে মেয়েটা ফোন কেটে দেয়। মিষ্টি অসহায় ভাবে তুষারের দিকে তাকায়।
তুষার – এবার দেখলি তো।
মিষ্টি – আমি বুঝতে পারিনি।
তুষার – তুই আমাকে একটু ও বিশ্বাস করিস না। থাক তুই আমি গেলাম। একদম আমার পিছু পিছু আসবি না বল দিলাম।
— তুষার হাঁটতে লাগলো। মিষ্টি ও তুষারের পিছনে দৌড়াতে লাগলো
মিষ্টি – জান শুনো না। প্লিজ জান রাগ করে না। আমি বললাম তো আমার ভুল হয়ে গেছে।
তুষার – চুপ একদম কোন কথা বলবি না।
মিষ্টি – তুষার
তুষার -…………….
মিষ্টি – তুষার চলো আজ বিয়ে করে নেই।
তুষার – কি????
মিষ্টি – না মানে আর কি। কিছু না তো।
— এভাবে মিষ্টি তুষার নিজেদের শত শত রাগ,মান অভিমান ভাঙ্গতেই তুষার আর মিষ্টির দিন কাটতে থাকে।ওদের সম্পর্কে যতটা ভালোবাসা তার থেকে বেশি ঝগড়া লেগেই থাকে। বলতে গেলে ওদের ভালোবাসা ঝগড়া দিয়েই প্রকাশ পায়।তুষার আর মিষ্টির আগামী দিন গুলো সুন্দর হোক। ভালোবাসায় পরিপূর্ণ হোক ওদের জীবন। ঝগড়ার মাঝেই বেঁচে থাকুক ওদের ভালোবাসা।

সমাপ্ত 💕