#চেরি_ব্লসমের_সাথে_এক_সন্ধ্যা
#লেখা: ইফরাত মিলি
#পর্ব: ৩১
___________
সারারাত চোখে ঘুম ধরা দিলো না মিতুলের। মাথায় কেবল জোহানের চিন্তা ঘুরেছে। আঁখি ক্যানভাসে আলতো করে ভেসেছে একটা জঙ্গলের চিত্র।
সরু রাস্তা ধরে জোহানের এগিয়ে আসার দৃশ্য। জোহান এগিয়ে এসেছিল ওর কাছে। ওর দু গালে দুই হাতের আলতো পরশ রেখেছিল। বলেছিল…
কী বলেছিল ও জানে না। ও শুনতে পায়নি জোহানের সম্পূর্ণ কথা। ওর হৃদয় এত বেশি শব্দ করছিল যে, সেই শব্দের সাথে সাথে ওর মস্তিষ্কও তখন অন্য কিছুতে বিভোর হয়ে পড়েছিল। জোহানের সম্পূর্ণ কথা তখন না তো ওর কর্ণ ধারণ করতে সক্ষম হয়েছিল, আর না তো ওর মস্তিষ্ক ধারণ করতে চেয়েছিল।
ও যেটুকু শুনেছিল তা ছিল,
‘ফেমাস হওয়ার পর আমার প্রথম অটোগ্রাফ আমি তোমাকেই দেবো।’
জোহানের এই কথায় কী ছিল কে জানে! এইটুকু শোনার পরই হৃদয়ের অশান্ত ছটফটানি শুরু হয়েছিল। ওর ধ্যান-জ্ঞান কিছুই জোহানের কথার দিকে ছিল না তখন। যার জন্য জোহানের বাকি কথাগুলো শুনতেই পায়নি ও। কিন্তু শোনা উচিত ছিল। মিতুল দুই হাত দিয়ে নিজের চিবুক স্পর্শ করে উইন্ডো দিয়ে বাইরে তাকালো। উইন্ডোর পাশে ফ্লোরে বসে আছে ও। কী সুন্দর সকাল।
সূর্যটা গাছপালার উপর দিয়ে উঁকি দিয়েছে। অথচ ওর চোখে ঘুমের উপস্থিতি নেই এখনও। ধীরে ধীরে সকাল আরও গাঢ় হলো।
বাড়ির সবাই জেগে গেছে। আর ও তো জাগ্রতই ছিল। নীরব পরিবেশের মাঝে হঠাৎ মোবাইলের রিংটোনের আওয়াজ মিতুলকে কাঁপিয়ে তুললো প্রায়। ওর পাশেই ফ্লোরের উপর মোবাইল। মোবাইল হাতে নিয়ে যার নাম স্কিনে দেখলো, তাতে ওর মনের ভিতরের একটা চাপা কষ্ট হঠাৎ আবার মুক্ত হয়ে উঠলো। মনের সাদা আকাশ গ্রাসিত হলো কালো রঙের মেঘে। কার্ল! কার্ল ফোন করেছে। কার্লের ফোন রিসিভ করতে ভীষণ কষ্ট হবে ওর। গলা থেকে কথা বের হবে না। মিতুল চাইলো ও কার্লের কল রিসিভ করবে না। কিন্তু চাইলেও পারলো না। মায়া ওকে ছাড়লো না। মিতুল কল রিসিভ করলো।
কার্ল যে খবরটা দিলো তাতে মিতুলের হৃদয় আর হৃদয় থাকলো না। আগে থেকেই জানতো এমন হবে। তবুও মন মেনে নিতে চাইছে না।
আর দুই দিন পর কার্লের বিয়ে! কার্ল ওকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বিয়েতে।
মিতুলের চোখ থেকে অজান্তেই এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো নীরবে।
___________
জোহান ডাইনিং টেবিলে এসে দেখলো মিতুল পাথুরে মুখ নিয়ে বসে আছে। ও মিতুলের সামনের চেয়ারে বসলো। গ্লাসে জুস ঢালতে ঢালতে আস্তে করে বললো,
“জানো তুলতুল, আজ সারারাত ঘুম হয়নি আমার।”
জোহানের কথা কানে আসতেই চোখ তুলে তাকালো মিতুল। বললো,
“তোমারও ঘুম হয়নি আজকে?”
“…’তোমারও’ মানে?”
অবাক হয়ে জানতে চাইলো জোহান।
মিতুল জোহানকে বলতে পারলো না যে, জোহানের জন্য রাতে ঘুম হয়নি ওর। মিতুল বললো,
“না, কিছু না। কীসের জন্য সারারাত ঘুম হয়নি তোমার?”
জোহান দুই পাশে মাথা নাড়িয়ে বললো,
“উহুম, সেটা তো তোমায় বলবো না। সেটা গোপনীয়।”
মিতুল এ নিয়ে বেশি আগ্রহ দেখালো না। কার্লের বিয়ের ইনভাইট পাওয়ার পর মন মরে গেছে ওর। কোনো কিছুতে আগ্রহ খুঁজে পাচ্ছে না এখন।
জোহান ব্রেকফাস্ট নিয়ে খাওয়া শুরু করেছে।
কিন্তু মিতুল বসে আছে চুপচাপ। ব্রেকফাস্ট খাওয়ার জন্য এসেও খেতে ইচ্ছা করছে না। মিতুল একসময় দুটো আঙ্গুল নাড়াচাড়া করতে করতে উদাসী কণ্ঠে বললো,
“জানো জোহান, কার্লের না দুই দিন পর বিয়ে। ওর গার্লফ্রেন্ডের সাথে।”
জোহান উৎফুল্ল হয়ে বললো,
“তাই না কি?”
মিতুল হ্যাঁ-বোধক মাথা নাড়লো।
জোহান বললো,
“যাক, এতদিন পর কার্ল কাজের মতো একটা কাজ করবে।”
এমনি সময় হলে এ নিয়েও জোহানের সাথে তর্ক করতো মিতুল। কিন্তু ও এখন তর্কের ধার দিয়েও গেল না। জোহানের কথা কান দিয়েই ঢোকেনি ওর। ও আগের মতোই উদাসী কণ্ঠে বললো,
“ওর বিয়েতে আমাকে ইনভাইট করেছে। আমার সাথে সাথে তোমাকেও ইনভাইট করেছে।”
জোহান ভারী অবাক হলো,
“আমাকে? আমাকে ইনভাইট করেছে?”
মিতুল মাথা নাড়লো।
“ওয়াও! কার্লের প্রতি হঠাৎ কেন যেন আমার ভালোবাসা বেড়ে গেল। সত্যিই কার্ল খুব ভালো ছেলে। ইনোসেন্ট ছেলে।”
জোহানের কথা কেন যেন কটাক্ষ পূর্ণ মনে হলো মিতুলের কাছে। রাগ হলো একটু জোহানের উপর। এই রাগকে আরও গভীর করতে চায় না ও। এখানে থাকলে জোহানের সাথে যেকোনো সময় ঝগড়া শুরু হয়ে যেতে পারে। কিন্তু ও তো এখন একদমই ঝগড়া করার মুডে নেই। মিতুল ব্রেকফাস্ট না করেই চুপচাপ ডাইনিং রুম থেকে বেরিয়ে সোজা নিজের রুমে চলে এলো।
_____________
জায়িন ভেবেছিল জোহানকে কিছুই বলবে না। কিন্তু জোহানকে কিছু না বলে শান্তিও পাচ্ছে না। ভিতরের রাগ মরছে না ওর। জোহান মনের ভিতর অশান্তির রাজ্য সৃষ্টি করে দিয়েছে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে হলরুমে বসে আছে জোহানের অপেক্ষায়। ক্যামিলার কাছ থেকে জেনেছে জোহান বাইরে গেছে। বাইরে থেকে আসলেই জোহানের সাথে কথা হবে ওর।
জোহান বাড়ি ফিরলো আরও সাত মিনিটের মাথায়। ঘড়িতে এখন রাত দশটা।
জোহান আঙ্গুলে কারের চাবি ঘোরাতে ঘোরাতে জায়িনের সামনে থেকে যাওয়া দিলেই ডাকলো জায়িন।
“দাঁড়া জোহান!”
জোহান দাঁড়ায়। ভাবলেশহীন চোখে তাকিয়ে বললো,
“কী?”
জায়িন সোফা ছেড়ে উঠে এলো জোহানের কাছে।
“ফ্রেডির সাথে খারাপ আচরণ করেছিস তুই?”
“ফ্রেডি এটাই বলেছে তোমায়?”
“তোর সাহস দিনকে দিন আকাশ ছুঁয়ে যাচ্ছে। আমার ফ্রেন্ডের সাথে বেয়াদবি করা ঘোরতর অন্যায় হয়েছে তোর। কোন সাহসে বেয়াদবি করেছিস ওর সাথে?”
“ও যা করেছে তাতে তো এবার শুধু বেয়াদবি করেছি। আবার কোনোদিন যদি ও এই কাজটা করে না, তবে শুধু বেয়াদবি নয়। ওর মুখের জায়গায় জায়গায় ক্ষত সৃষ্টি করে দেবো আমি।”
জায়িনের রক্ত গরম হয়ে গেল।
“কী বললি?”
“যেটা শুনেছো সেটাই।”
বলে জোহান যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো।
জায়িন বলে উঠলো,
“বাড়ির অতিথির সাথে উগ্র আচরণ করা কোন ধরণের ভদ্রতা তোর? এটা ঠিক যে তুই একটা অভদ্র। কিন্তু একজন বাইরের দেশের অতিথির সাথে এমন আচরণ করা নৈতিকতাহীন।”
জোহান বিরক্তিতে ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেললো। পিছন ফিরে বললো,
“বাড়ির অতিথির সাথে কেমন আচরণ করি, সেটা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না ব্রাদার। ওটা আমার ভাবনা। আর, আমি যে অভদ্র, সেটা নিয়ে আমি গর্ব করি। অনেক আগেই অভদ্রের খাতায় নাম লিখিয়েছি আমি। এখন আর ভদ্র হওয়ার কোনো ইচ্ছার উপস্থিতি নেই আমার ভিতর। আমি সারাজীবন অভদ্রই থাকতে চাই।”
জোহান আর দাঁড়ালো না। আঙ্গুলের চরকায় চাবি ঘোরাতে ঘোরাতে উপরে চলে গেল।
“ব্লাডি হেল!” জায়িনের কণ্ঠে ক্রোধ ঝরে পড়লো।
_____________
চেরি গাছগুলো আগের থেকে আরও বেশি ফাঁকা দেখাচ্ছে। বাতাস হতে একটা দুটো পাঁপড়ি ঝরে পড়ে নিজ মুগ্ধতা নিয়ে। গাছগুলোর এমন শূন্য শূন্য ভাব দেখে কষ্ট লাগছে মিতুলের। আগে কত ফুল ছিল গাছগুলোয়। এ কদিনেই এরকম ঝরে পড়ে গেল! এখনও যে বসন্তের অনেক সময় বাকি।
জোহানকে লন থেকে হেঁটে গেটের দিকে যেতে দেখলো মিতুল। গেট পেরিয়ে বাইরে চলে গেল জোহান। একটু আগেই তো ও বাইরে থেকে এলো। এখন আবারও বাইরে যাচ্ছে? সমস্যা কী জোহানের?
পিছনে কারো পায়ের শব্দ কানে আসাতে, মিতুল পিছন ফিরে চাইলো। দেখতে পেল, জায়িন এগিয়ে আসছে ওর দিকে। হাতে দুটো কফির মগ।
জায়িন মিতুলের কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়ে একটু হাসার চেষ্টা করলো। হাতে থাকা কফির মগ থেকে একটা মগ এগিয়ে দিলো মিতুলের দিকে।
“টেইক ইট।”
মিতুল কফির মগ থেকে চোখ সরিয়ে জায়িনের দিকে তাকালো বিস্ময়াভিভূত চোখে। জায়িন ওকে নিজ হাতে কফি দিচ্ছে, এটা বিশ্বাস করা ওর জন্য কষ্টকর। কিন্তু কষ্ট করে হলেও বিশ্বাস করতে হবে ওকে। কারণ এটাই যে সত্যি। মিতুল জায়িনের হাত থেকে কফির মগ নিয়ে বললো,
“থ্যাঙ্ক ইউ!”
“ওয়েলকাম।”
জায়িন আর্ম চেয়ারে বসে বললো,
“আই অ্যাম এক্সট্রেমলি স্যরি!”
হঠাৎ করে জায়িনের স্যরি বলার রহস্য মিতুল বুঝতে পারলো না। তাই বললো,
“স্যরি কীসের জন্য?”
জায়িন একটু সময় চুপ থেকে বললো,
“আসলে…সেদিন…টরন্টো যাওয়ার দিন দুপুরে তোমার সাথে ওই রকম বিহেভ করা উচিত হয়নি আমার। আই মিন, তোমার মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলছি আমি।”
কথাগুলো বলার সময় অনেক জড়তা ঘিরে ধরলো জায়িনকে।
মিতুল ভাবতে পারেনি অহংকারী জায়িনের মুখে এমন কিছু শুনতে পাবে। বাহ, জায়িনকে এই অহংকারহীন রূপে দারুণ লাগে। জায়িন অহংকার বাদ দিয়ে এমন সহজ ভাবে থাকতে পারে না?
আচ্ছা, জায়িনের কথার উত্তরে ওর কী বলা উচিত এখন?
মিতুল কিছু বলার আগে জায়িনই ফের বলে উঠলো,
“আসলে সেদিন আমার মুড প্রচণ্ড খারাপ ছিল। ফ্রেডি, জোহান, অফিসে ছুটি ম্যানেজ, এসব নিয়ে।”
জায়িনের মুখে ফ্রেডির কথা শুনতেই মিতুলের সেদিনের ঘটনা মনে পড়ে গেল! অসভ্য ফ্রেডিটা সেদিন কীভাবে জড়িয়ে ধরেছিল ওকে! কথাটা মনে হতে এখনও ওর গা ঘিনঘিন করে। কিন্তু এমন একটা গা ঘিন ঘিনে ব্যাপার জায়িনের কানে লাগালো কে? জোহান? না কি ফ্রেডি নিজেই? ছি! আসলেই ফ্রেডির কোনো লজ্জা শরম নেই। নির্লজ্জ অসভ্য!
মিতুল মনে মনে এসব ভাবাকালীন শুনতে পেল জায়িন বলছে,
“আর জোহানের তোমার সাথে অমন উগ্র আচরণ করার জন্য আমি স্যরি! আসলে জোহান এমন উগ্র টাইপেরই! তুমি কিছু মনে করো না। নিজের চোখেই তো দেখলে ফ্রেডির সাথে কী খারাপ আচরণটাই না করলো! ও কীভাবে ফ্রেডির সাথে খারাপ বিহেভ করতে পারে? ওর উগ্র আচরণ দিনদিন সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে!”
উগ্র? জোহান? মিতুল বুঝতেই পারছে না জোহান কবে ওর সাথে উগ্র আচরণ করলো? আর কখন-ই বা ফ্রেডির সাথে খারাপ আচরণ করলো? মিতুল নিজের মাঝে রাগের উপস্থিতি টের পাচ্ছে। আর এ রাগ জায়িনকে ঘিরে হচ্ছে। জায়িন কীভাবে নিজের ভাইয়ের সম্পর্কে এমন কথা বলতে পারে? সব মিথ্যা কথা। আর ও কি কোনো দিন জোহানের কথা জায়িনের কাছে বিচার দিয়েছিল? দেয়নি। তাহলে জায়িন ওর সাথে এসব কেন বলছে?
আর সেদিন ফ্রেডি ওর সাথে যা করলো, তারপরেও জায়িন সেই ফ্রেডির পক্ষ বাদীত্ব করছে ওর সামনে? আর জোহানের দোষ গাইছে? ও মানছে না এসব।
সেদিন ফ্রেডির সাথে ওই ঘটনার পর রাগের মাথায় মুখে যতই জোহানের সাথে তর্ক করুক না কেন, ওই ঘটনার জন্য তখন জোহানকে যতই দোষারোপ করুক না কেন, পরে মনে মনে হাজার বার ধন্যবাদ দিয়েছিল জোহানকে। জোহান এসে ওর থেকে ফ্রেডিকে আলাদা করায়, ও কৃতজ্ঞ জোহানের কাছে।
মিতুল জায়িনকে বললো,
“তোমার ভুল হচ্ছে। জোহান মোটেই আমার সাথে উগ্র আচরণ করেনি। আর জোহান উগ্র নয়। ফ্রেডির সাথেও খারাপ আচরণ করেনি ও। ফ্রেডি যা করেছে তাতে ওটা ফ্রেডির পাওনা ছিল।”
“মানে? ফ্রেডি কী এমন করেছিল, ও তো জাস্ট তোমার সাথে কথাবার্তা বলছিল। তাতে জোহানের এমন রিয়াক্ট করার মানেই হয় না। আর তুমি ওকে সাপোর্ট করে যাচ্ছ?”
“ফ্রেডি জাস্ট কথাবার্তা বলছিল না আমার সাথে। ও তো…”
মিতুল থেমে গেল। জায়িনের সাথে ফ্রেডির ঘটনাটা বলতেও ওর রুচিতে বাধছে। এগুলোও কি জনে জনে বলে বেড়ানোর মতো কথা? মিতুল তারপরও বললো,
“হ্যাঁ, এদিকে এটা স্বাভাবিক ব্যাপার হতেই পারে। কিন্তু আমার কাছে এটা মোটেই স্বাভাবিক নয়। ও কীভাবে অন্য দেশের একটা মেয়েকে জড়িয়ে ধরতে পারে? সব দেশের কালচার তো আর এক না। জোহান ফ্রেডির সাথে যা করেছে, ঠিক করেছে।”
বলেই মিতুল বারান্দা থেকে চলে গেল।
জায়িন বুঝতে পারছে না সামান্য জড়িয়ে ধরা নিয়ে জোহানের কেন এমন করতে হবে? মিতুল ফ্রেডির পরিচিত ছিল, জড়িয়ে তো ধরতেই পারে। এটা খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। ঠিক আছে, ধরে নিলো মিতুল এই কালচারের সাথে অভ্যস্ত নয়। ওর কাছে না হয় এটা অস্বাভাবিক ছিল। কিন্তু জোহান? যার জন্ম, বেড়ে ওঠা সবকিছু এখানে, তার কাছেও কি এটা অস্বাভাবিক ছিল? না মোটেই না। জোহান নিজেই তো এসবের সাথে অভ্যস্ত। তাহলে? আসলে জড়িয়ে ধরাটা অস্বাভাবিক ছিল না। অস্বাভাবিক ছিল জোহান আর মিতুল! দুজনের এত ঘোরাঘুরি, জোহানের উইনিপেগ থেকে ভ্যাঙ্কুভার যাওয়া, আর মিতুল এইমাত্র জোহানকে নিয়ে যে কথাগুলো বলে গেল, তাতে তো সব কিছু স্পষ্ট। জোহান আর মিতুল…
জায়িন হেসে ফেললো।
(চলবে)