ভালোবাসি আমি যে তোমায় পর্ব:৪৯

0
1858

#ভালোবাসি_আমি_যে_তোমায়
#Sohani_Simu
পর্ব:৪৯

বিকেলে ছাদের রেলিং ঘেসে দাঁড়িয়ে আছি।আমার সামনে ইচ্ছে রেলিং এ হেলান দিয়ে চোখের জল ফেলছে,মুখে কোন কথা নেই।এত করে কান্নার কারন জিজ্ঞেস করছি ও কিছুতেই বলছে না।
আমি:শেষ বারের মতো বলছি বল আমাকে কেন কাঁদছিস?(ভ্রু কুচকে রেগে ওর দিকে তাকিয়ে)

আমার কথা শুনে ইচ্ছে দুই হাত দিয়ে চোখ মুছে নাক টেনে বলল,
ইচ্ছে:আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে,সাতদিন পর বিয়ে। পরশু ঢাকা চলে যাচ্ছি।কাল বাবা তোদের বলবেনি।(ধরা গলায়)

আমি:কি বলছিস?বিয়ে মানে?কার সাথে বিয়ে?(অবাক হয়ে)
ইচ্ছে:ভাইয়ার ফ্রেন্ড,ঢাকা মেডিকেলের নিউরোলজি বিভাগের ডক্টর।অন্ত,আমি বিয়ে করবো না।তুই প্লিজ ভাইয়াকে একবার বল।আমি জানি তুই বললে ভাইয়া সব শুনবে,প্লিজ অন্ত।(কাঁদতে কাঁদতে আমার হাত ধরে)

আমি:প্রান্ত ভাইয়ার জন্য এই বিয়ে করবিনা?(ইচ্ছের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
ইচ্ছে:হুম।(মাথা নিচু করে)
আমি:প্রান্ত ভাইয়া জানে তোর বিয়ের কথা?
ইচ্ছে:না উনার সাথে পনেরো দিন কথা হয়নি।(চোখ মুছে)

আমি:প্রান্ত ভাইয়া তোকে ভালোবাসে?(ভ্রু কুচকে)
ইচ্ছে:না,কখনও সেরকম কিছু বলেননি।এমনি মাঝে মাঝে কথা বলেন লাইক ফ্রেন্ড।উনি আমাকে শুধু বন্ধু ভাবেন,আমার সাথে একটু ফ্রি এই যা,এর বেশি কিছু না।(মন খারাপ করে)

আমি:তাহলে কি করে হবে?প্রান্ত ভাইয়া তোকে ভাল না বাসলে তুই কি করে উনাকে বিয়ে করবি?আমি কি প্রান্ত ভাইয়ার সাথে কথা বলবো?তুই পরশুই ঢাকা যাবি?আমাদের কাছে তো বেশি সময় নেই।নির্ভীক ভাইয়া আর প্রান্ত ভাইয়া উনাদের ফ্রেন্ডের বিয়েতে গিয়েছেন।সন্ধ্যার পর ফিরবেন।

ইচ্ছে:তুই প্লিজ আমাকে একটু বুঝার চেষ্টা কর।(কান্না করে দিয়ে)

আমি:আচ্ছা আমি আজই প্রান্ত ভাইয়াকে বলবো।তুই আর কাঁদিস না।

ইচ্ছের ফোন বেজে উঠলো।ইচ্ছে ফোনের দিকে তাকিয়ে অসহায় মুখ করে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
ইচ্ছে:ভাইয়া ফোন করেছে।নিচে ওয়েট করছে,যেতে হবে আমাকে।তুই প্লিজ ভাইয়ার সাথে একটু কথা বল।

আমি:আগে প্রান্ত ভাইয়ার সাথে কথা বলি তারপর নিশ্চয় আরাফ ভাইয়ার সাথে কথা বলবো।(ইচ্ছের হাত ধরে)

ইচ্ছে:আমি জানিনা কিছু।তুই যা ভাল বুঝিস তাই কর।আমি কিন্তু প্রান্ত ভাইয়াকে ভালোবাসি,তুই জেনে রাখ।আমি এখন যাই,ভাইয়া আবার ফোন দিয়েছে।(ফোনের দিকে তাকিয়ে)

আমি:আচ্ছা চল তোকে এগিয়ে দিয়ে আসি।(ইচ্ছের হাত ধরে হাঁটা দিয়ে)

বাহিরে এসে দেখি আরাফ ভাইয়া ফুল কালো ড্রেস পরে কালো গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে এক হাতে ফোন দেখছে অন্য হাত দিয়ে স্মোক করছে।আমাকে দেখেই সিগারেট ফেলে দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ালো তারপর বলল,
আরাফ:কেমন আছো তুমি?
আমি:ভাল,তুমি?(ইচ্ছের হাত ধরে রেখে)
আরাফ:আ’ম সরি,আমি আসলে… কাল তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি।(মলিন মুখ করে আমার দিকে এগিয়ে এসে)

আমি:ইটস ওকে,আর এরকম কর না।(ইচ্ছের পেছনে যেয়ে)
ইচ্ছে:ভাইয়া চলো যাই আমরা।(আরাফ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে)

আরাফ:উম?হুম গাড়িতে বস।(অন্যমনস্ক হয়ে)

ইচ্ছে গাড়িতে উঠলো কিন্তু আরাফ ভাইয়া ওখানেই দাঁড়িয়ে আছে।আমি হাসার চেষ্টা করে বললাম,
আমি:ঠিক আছে সাবধানে যাও তোমরা।(আরাফ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে ভয়ে ভয়ে)

আরাফ ভাইয়া হালকা হাসলো।আমার কাছে এগিয়ে এসে আমার গালে হাত দিয়ে বলল,
আরাফ:আ’ম সরি,জানপাখি।কাল আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনি আর এমন হবেনা।তুমি রাগ করো না।

আমি:ইটস্ ওকে আরাফ ভাইয়া।(হাত সরিয়ে দিয়ে)

আরাফ:বাসায় যাও,ভাল থেকো।(আমার দিকে তাকিয়ে)
আমি:আচ্ছা।ওই মহিলা?বাই।(ইচ্ছের দিকে তাকিয়ে)

ইচ্ছে:বাই।(মন খারাপ করে)
আমি:ভাইয়া…

আমি কিছু বলার আগেই আরাফ ভাইয়া গাড়ির দিকে চলে গেল।গাড়িতে উঠে ওরা চলে গেল।আমিও একটা ছোট শ্বাস ফেলে বাসায় এলাম।

সন্ধ্যায় রুমের মধ্যে পায়চারি করছি আর ভাবছি ইচ্ছেকে তো বললাম, প্রান্ত ভাইয়ার সাথে কথা বলবো কিন্তু কিভাবে শুরু করবো!কিভাবে বলতে হয় আমি তো জানিই না।আগে নির্ভীক ভাইয়াকে বলতে হবে।উনাকেই বা কিভাবে বলবো?আমি যে উনাকে ভালোবাসি সেটায় এখন পর্যন্ত বলতে পারিনি আর ইচ্ছে প্রান্ত ভাইয়াকে ভালোবাসে এটা কি করে বলবো?কিন্তু আমাকে বলতেই হবে।

হাঁটতে হাঁটতে এসবই ভাবছিলাম তখনই নির্ভীক ভাইয়া রুমে আসলেন।উনি মনে হয় ক্লান্ত কারন শার্ট টা রুমের বাহিরে থাকতেই খুলে ফেলেছেন।আমাকে দেখেই উনি শার্ট টা সোফায় ফেলে দিয়ে আমার কাছে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন,

নির্ভীক:নাউ আ’ম ফিলিং বেটার।

আমি উনার বুকে মাথা রেখেই মুচকি হাসলাম যেটা উনি দেখতে পেলেন না।উনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে প্যান্টের পকেট থেকে ফোন ওয়ালেট বের করে বেডের উপর রাখলেন। হাতের ঘড়ি খুলে ফ্রেশ হতে চলে গেলেন।আমি আবার পায়চারি করা শুরু করলাম।কিছুক্ষণ পরই উনি মাথার চুল মুছতে মুছতে ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে আসলেন।উনি কালো ট্রাউজার আর কালো টিশার্ট পরেছেন,কালো রঙে উনাকে দারুন মানায়।আমি তো হাবলার মতো একধ্যানে উনার দিকে তাকিয়ে ছিলাম উনার কথায় ধ্যান ভাঙলো,

নির্ভীক:বাহ!আমার বউ তো দেখছি আমার থেকে চোখই সরাতে পারছে না।(টাওয়েল বেডের উপর রেখে)

আমি উল্টো দিকে ঘুরে দাঁড়ালাম।ঘাড়ের কাছে ঠান্ডা লাগতেই চমকে উঠলাম।নির্ভীক ভাইয়া আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে আমার ঘাড়ে নাক ঘষছে ব্যাপারটা বুঝতে পারা মাত্রই আমার হাত পা মৃদু কাঁপতে লাগলো,
ভয়ে নয় ভাল লাগায়।আমার পেট আর গলায় রাখা উনার হাতের উপর আমার হাত রেখে কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম,
আমি:ইচ্ছের বিয়ে,সাতদিন পর।

নির্ভীক:এত খুব ভাল কথা।(ঘাড়ে কিস করে)
আমি:ভাল কথা মানে?এটা মোটেও ভাল কথা নয়, ও বিয়ে করবে না।(উনার থেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে)

নির্ভীক:কেন করবে না?তোমার বিয়ে হয়ে গেছে ও আর একা থেকে কি করবে।ওকেও বিয়ে করে নিতে বল।(আমাকে নিজের দিকে ঘুড়িয়ে)

আমি:ওতো অন্য কাউকে বিয়ে করবেনা।(উনার দিকে তাকিয়ে ক্ষীণ গলায়)

নির্ভীক:মানে?কাকে বিয়ে করবে ও?ওর কি কারও সাথে অ্যাফেয়ার্স আছে নাকি?(ভ্রু কুচকে আমার দিকে তাকিয়ে)

আমি:না মানে,হুম,না,কিছু না।(থতমত করে)
নির্ভীক:টেল মি।(আমার দুই কাঁধে হাত রেখে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে)

আমি:আরাফ ভাইয়ার সাথে কথা বলতে হবে।(উনার দিকে তাকিয়ে)

নির্ভীক:আমাকে আগে বলো কি হয়েছে?আসো বসো এখানে।(বেডে বসিয়ে দিয়ে)

আমি বেডে বসে বেড সাইড টেবিলে থাকা পানির গ্লাস নিয়ে একটু পানি খেলাম।গ্লাসটা যথা স্থানে ঢেকে রেখে নির্ভীক ভাইয়ার দিকে তাকালাম।উনি আমার হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে বললেন,
নির্ভীক:তোমাকে এত চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন?কি হয়েছে?(ভ্রু কুচকে)

আমি:প্রান্ত ভাইয়া কোথায়?
নির্ভীক:বাসায় কেন?(ভ্রু কুচকে)
আমি:উনার গার্লফ্রেন্ড নেই?(ঢোক গিয়ে)

নির্ভীক ভাইয়া আমার দিকে সন্দেহি চোখে তাকিয়ে থাকলেন।তারপর কিছু একটা ভেবে বললেন,
নির্ভীক:ইচ্ছেমতি কি প্রান্তর জন্য বিয়ে করবেনা বলছে?

আমি উনার দিকে তাকিয়ে শুধু মাথা উপর নিচ করলাম,যার অর্থ হ্যা।উনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
নির্ভীক:প্রান্ত জানে?

আমি মাথা ডানে বামে নাড়ালাম,যার অর্থ না জানে না।উনি আমাকে বললেন,
নির্ভীক:দেখো এসব এভাবে হয় না।আমি অনেক আগেই প্রান্ত সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেছি।প্রান্তর তেমন কোন ফিলিংস নেই।প্রান্ত তো ওকে কিছু বলেনি আর যা একটু কথা বলেছে,এমনি ইয়ারকি করে বলেছে।তুমি তো জানো প্রান্ত কতটা মিশুক ছেলে,সবার সাথে ইয়ারকি টাট্টা করতে পারে।(আমার হাত ধরে রেখে আমার দিকে তাকিয়ে)

আমি:এখন তাহলে কি হবে?(মুখ মলিন করে)
নির্ভীক:ইচ্ছেমতির বিয়েটা করে নেওয়ায় ভাল হবে,প্রান্ত তো এখন বিয়ে করবে না।

আমার একটুও ভাল লাগছে না।এখন এসব আমি কি করে ইচ্ছেকে বলবো।ও অনেক কষ্ট পাবে তো,আমি কিছুতেই ওর কষ্ট দেখতে পারবো না।আমারই অনেক কষ্ট হচ্ছে তাহলে ওর তো আরও বেশি কষ্ট হবে।ওদের দুই ভাই বোনের সাথেই কেন এমন হলো।আল্লাহ্‌ কেন ওদের সাথে এমন করছে।এসব ভেবেই আমি কান্না করে দিলাম।

নির্ভীক:অন্ত??আরে,কাঁদছো কেন?আমরা ইচ্ছেমতিকে বুঝিয়ে বলবো।(আমার গাল ধরে)

আমি:আপনি প্লিজ প্রান্ত ভাইয়াকে বলুন না।ইচ্ছেকে বুঝিয়ে লাভ হবে না, ও সেই প্রথম দিন থেকে প্রান্ত ভাইয়াকে ভালোবাসে।(হেচকি তুলতে তুলতে)

নির্ভীক:আচ্ছা আচ্ছা আমি বলবো প্রান্তকে।তুমি আগে কান্না থামাও।(আমার চোখ মুছে দিয়ে)

আমি:এমনিতেই আরাফ ভাইয়াকে নিয়ে সবাই আপসেট এখন ইচ্ছেও এরকম করলে ফুপ্পা-ফুপ্পি অনেক কষ্ট পাবে।(কাঁদতে কাঁদতে)

নির্ভীক:ডোন্ট ওরি,কিছু হবে না।আমি দেখছি ব্যাপারটা,তুমি কান্না থামাও।(জড়িয়ে ধরে)

আমি নিজেকে স্বাভাবিক করে নির্ভীক ভাইয়ার সাথে আরও কিছু কথা বলে নিচে আসলাম।নিচে এসে দেখি টোয়া আপু এসেছে,অ্যান্টির সাথে কথা বলছে।আমাকে দেখেই আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেয়ে আমাকে পাশে বসিয়ে অ্যান্টিকে বলল,
টোয়া:অন্ত খুব কিউট না বড় আম্মু?আমার তো ওকে খুব ভাল লাগে।(হাসি মুখ করে)

টোয়া আপুর কথা শুনে আমি অবাক।যেই মেয়ে আমাকে সহ্য করতে পারেনা সে বলছে আমাকে নাকি তার ভাল লাগে।

অ্যান্টি:ও তো এমনই মিষ্টি মেয়ে।টোয়া তোর মনে আছে?তুই একবার ওকে আর চাঁদকে সাইকেল থেকে ফেলে দিয়েছিলি।ও তোকে কি বলেছিল?(হাসতে হাসতে)

টোয়া:আমাল চাঁদ বাইয়াকে ফেলে দিছো তুমি,তোমাকে লকিল সাতে বিয়ে দিব।(মুখ ফুলিয়ে)

আমি তো কিছুই বুঝলাম না।অ্যান্টি হেসেই যাচ্ছে।আমি ভ্রু কুচকে বললাম,
আমি:হাসছো কেন?লকিল কে?আমি এরকম কিছু বলিনি(অ্যান্টির দিকে তাকিয়ে)

অ্যান্টি:লকিল নয় রকির।রকি রাযীনের কুকুর ছিল।তুই তো রকিকে ভয় পেতি তাই ভাবতি টোয়াও ভয় পায়।চাঁদ টোয়াকে রকির সাথে বিয়ে দিতে চাইতো তাই ওর দেখাদেখি তুই ও।তুই সবাইকে রকির নাম করে ভয় দেখাতি।(হাসতে হাসতে)

টোয়া:নিজেই ভীতুর ডিম উল্টো আমাকে ভয় দেখাতে চায়।(হাসতে হাসতে)

অ্যান্টি:আচ্ছা তোরা গল্প কর আমি আসছি।

অ্যান্টি চলে গেল।টোয়া আপু আমার দিকে কেমন করে যেন তাকাল তারপর হালকা হেসে বলল,
টোয়া:এতদিন যা হওয়ার হয়েছে এখন থেকে আমরা ভাল বোন,ওকে?আমি কিন্তু তোকে তুই বলেই ডাকবো,তুই আমাকে তুই বা তুমি বলবি।

আমি:ঠিক আছে তুমি।(মুচকি হেসে)
টোয়া:নির্ভীক কোথায়?
আমি:রুমে।
টোয়া:অহ।আমি কয়েকদিন এখানে থাকবো বুঝেছিস?নির্ভীক তো আমাকে থাকতে দিবেনা,তুই ওকে রাজী করাবি।আমাদের বাসায় তিন তলায় কাজ চলছে তো খুব সাউন্ড হয় আমি পড়তে পারিনা,সামনে আমার এক্সাম তাই কয়দিন এখানেই থাকবো।

আমি:আচ্ছা থেকো,কি সমস্যা?
টোয়া:নির্ভীক কে রাজী করাবি কিন্তু।
আমি:আচ্ছা আমি বলবো।

নির্ভীক ভাইয়াকে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে দেখেই টোয়া আপু দাঁড়িয়ে গেল।আমিও উঠে দাঁড়ালাম।নির্ভীক ভাইয়া আমাদের দিকে তাকিয়েই রেগে বললেন,
নির্ভীক:তুই এখানে?(আমাদের দিকে এগিয়ে আসতে আসতে)

টোয়া:হ্যা আসলে আমি কয়দিন এখানে থাকবো।(মুচকি হেসে)

নির্ভীক ভাইয়া আমাকে টোয়া আপুর কাছে থেকে টেনে উনার পাশে দাঁড় করিয়ে দিয়ে বললেন,
নির্ভীক:কেন থাকবি?(ভ্রু কুচকে টোয়া আপুর দিকে তাকিয়ে)

টোয়া:আমাদের বাসার উপরে কাজ চলছে, সাউন্ড হয় খুব।আমার পড়তে সমস্যা হয়, সামনে এক্সাম।সেজন্য বাবা আমাকে এখানে পাঠিয়ে দিল।(ভয়ে ভয়ে)

অ্যান্টি:আচ্ছা থাকিস তোর যতদিন ইচ্ছে।(আমাদের দিকে এগিয়ে এসে)

নির্ভীক:দিনে সারাদিন বাসায় থাকিস না আর রাতে বাসার কাজ বন্ধ থাকে,তোর তো কোন সমস্যা দেখছিনা।(হালকা রেগে)

অ্যান্টি:আহ্ চাঁদ থাকনা কয়েকদিন এখানে।(নির্ভীক ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে)

টোয়া:আমার এখন দিনেও পড়তে হবে,সামনে এক্সাম তো।(শুকনো মুখ করে)

নির্ভীক:কত সামনে?কবে এক্সাম তোর?(ভ্রু কুচকে)

টোয়া:কালকেই ক্লাস টেস্ট আছে।তিনমাস পর ফাইনাল।(শুকনো মুখ করে)

নির্ভীক:কাল সকালে বাসায় চলে যাবি।অন্ত,চলো।(আমার হাত ধরে)

অ্যান্টি:আরে তুই থাকিস তো।ও এমনি রাগ করে বলছে।(টোয়া আপুর কাছে যেয়ে)

নির্ভীক ভাইয়া আমাকে নিয়ে উপরে আসছিলেন অ্যান্টির কথা শুনে দাঁড়িয়ে গেলেন, পেছনে না ঘুরেই বললেন,
নির্ভীক:আমার কথা যেন মাথায় থাকে।

বলেই আমাকে নিয়ে উপরে চলে আসলেন।উপরে এসে টোয়া আপুর কথা মতো উনাকে রাজী করানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু উনি কিছুতেই মানলেন না।না মেনে আমি খুশিই হয়েছি,টোয়া আপুকে আমার একটুও ভাল লাগেনা।ছোট বেলায় কুকুরের সাথে বিয়ে দিতে চেয়ে ঠিক করেছিলাম,বজ্জাত মহিলাটা আমাকে আর নির্ভীক ভাইয়াকে সাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিল।টোয়া আপু মনে হয় ছোট বেলা থেকেই এমন খচ্চরনি।

চলবে……………!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here