#মন_গহীনের_গল্প
পর্ব-৩
#রূবাইবা_মেহউইশ
_________________
ঝলমলে এবং কালো মেঘ মিশ্রিত এক দিনের শেষে গৌধূলি এখন পশ্চিমে লজ্জারুন লাল আভায় রঞ্জিত। সারাটা দিন এক অনুভূতিহীন ঘোরে কেটেছে মেহউইশের। রিশাদ নামের মানুষটাকে বোঝার মত এক বিন্দু পরিমাণ সুযোগ সে পায় নি। সারাটাদিনে অভিমান আর মনোকষ্টে মায়ের সাথে কথা বলা হয় নি। ইভান কি তাকে একটিবার কল করেছে? কাল তো রাত দিনে একবারও কথা হয়নি এমনকি আজ সাথে মোবাইল ফোনটিও নেই। এ বাড়িতে আসার পর দোতলার দক্ষিণের ওই ঘর যেটা দানবের মানে তার কথিত বরের সেই ঘর আর নিচ তলায় বসার ঘরটিই সে দেখেছে। বাড়িতে এদিক ওদিক চোখ ঘুরালেই মানুষ দেখা যায়। সবাই হয়তো কাজের লোক শুধু ওই মা,মেয়ে দুটো ছাড়া! আর একটা জিনিস সারাদিন মেহউইশের চোখে লেগেছে খুব তা হলো এই বাচ্চা ছেলেটি। ভাবতে ভাতেই মাথা নিচু করে নির্জনের দিকে তাকালো মেহউইশ। আবারও সে দুপুরের মতোই বাচ্চাটিকে নিয়ে বারান্দায় এসেছে। তবে এবার আর দাঁড়িয়ে নয় কোলে নিয়ে ফ্লোরে বসে আছে৷ তীক্ষ্ণ নজরে তাকাচ্ছে বাচ্চাটির দিকে৷ এই দুধের বাচ্চাটি মাতৃদুগ্ধ পান করার সৌভাগ্য নিয়ে জন্মায়নি। কি দূরভাগ্য এইটুকু বয়সেই মা হারালো। অনেক বাচ্চাই মা হারায় কিন্তু এর মতো রেডিমেড আরেকটা মা কি সবাই পায়! বলা নেই কওয়া নেই আদিম কালে যেমন গোলাম কেনা হতো মেহউইশকেও তেমন কিনে নিয়ে এলো রিশাদ। বয়সটাই আর কত তার তবুও এক বাচ্চার মা হয়ে গেছে বিয়ের সূত্র ধরে। বিয়ে নিয়ে কত সাধ-আহ্লাদ ইভানকে পাওয়ার কত আকাঙ্ক্ষা সব এক নিমেষেই পাহাড় ধ্বসের মত ধ্বসে গেল। বাবার মৃত্যুর পর তার জীবনে কষ্ট বলতে একটাই ছিলো, মায়ের অন্যের বাড়ি গিয়ে গিয়ে কাপড় বিক্রি করা। সৌভাগ্যক্রমেই হয়তো সে এইচএসসি টা ভালোভাবে শেষ করতে পেরেছিলো এবং তার পরই মায়ের রোগের কথাটা জেনেছে। আর আল্লাহ তা’আলা সদয় ছিলেন তার প্রতি তাই নাইমা ম্যামের কারণে হাসপাতালের চাকরিটা হয়েছিলো। দীর্ঘ এক নিঃশ্বাস বেরিয়ে এলো বুক চিঁড়ে৷ এ নিঃশ্বাসে হাজারো অভিযোগ, অভিমান অথচ তা জানানোর মত একটি মানুষও তার নেই। আয়া এসে পেছনে দাঁড়িয়েছে মেহউইশের। হাতে ছোট একটা বাটি আর তাতে দুধ। বাচ্চাটাকে খাওয়ানোর সময় হয়েছে তাই আয়া নিয়ে এসেছে। মেহউইশ নির্জনকে আয়ার দিকে এগিয়ে দিতেই সে হায় হায় করে উঠলো। চমকে গেছে মেহউইশ; এ কেমন আচরণ!
‘স্যার বলেছে বাচ্চার সব কাজ আপনাকে শিখে নিতে। ওর খাওয়া,গোসল,ঘুম পাড়ানো এমনকি তার পটি করার পর ডায়াপার চেঞ্জ করাটাও।’
বিরক্তি আর ক্লেশ মিশ্রিত চাহনিতে মেহউইশ আয়ার দিকে তাকালো৷ সত্যি সত্যিই তাকে মা হতে বলা হচ্ছে । সৎ মা হওয়ারও সুযোগ নেই এখানে। আয়ার মুখের কথা শুনে রাগ হলেও সে রাগ নিজের ভেতরই দমিয়ে রাখলো সে। বাটিটা ঘরে রেখে যেতে বলল। আয়া চলে গেলে মেহউইশও ঘরে গেল নির্জনকে নিয়ে। বিছানায় শুইয়ে দুধের বাটি থেকে ছোট্ট চামচটিতে দুধ নিয়ে বাচ্চার মুখে দিতে গেলেই ধমকে উঠলেন জেবুন্নেসা। তিনি মাত্রই রিশাদের ঘরের দরজায় পা রেখেছিলেন। উদ্দেশ্য তার একটিবার নির্জনকে দেখা। দুপুরের পর আর কাছে আসেননি।কিন্তু এ বাচ্চাটি তার বড় আদরের হতে পারে মৃত বোনের নাতি হিসেবে অথবা সে বাচ্চা ভালোবাসে বলে। নিজেও জানে না কেন এই বাচ্চাটিকে তার আপন মনে হয়। নিজের দুটো সন্তানকেই তার কালসাপ মনে হয়। যে কালসাপ সময়ে অসময়ে তাকে ছোবল দিয়ে বসে। ‘রক্ত কথা বলে’ এই কথার যথার্থতা জেবুন্নেসার কাছে অনেক বেশি সত্য মনে হয়। রাশেদ খান একজন স্বার্থনেস্বী এবং তার ঔরসজাত সন্তানরাও তাই। কিন্তু রিশাদের বাচ্চাটাকে সে তেমন হতে দিবে না মনে মনে এই প্রতিজ্ঞা করে বসে আছে৷ বাচ্চা রিশাদকেও অমন হতে দিতো না যদি না রাশেদ খান তাকে জোর করে বিয়ে করতো। তার ভালোবাসার মানুষটাকে তার থেকে আলাদা না করতো! জেবুন্নেসা দ্রুত পায়ে ঘরে ঢুকে নির্জনকে কোলে নিলেন। দুধের বাটিও ছোঁ মেরে নিয়ে নিলেন নিজের কাছে। তারপর বিছানায় পা তুলে বসে নির্জনে দুধ খাওয়াতে লাগলেন এবং বারবার মেহউইশকে সতর্ক করার মত করে বললেন, ‘আর কখনও ওভাবে শুইয়ে দুধ ঢালবে না মুখে।’ মেহউইশ জবাবে শুধু একটু করে মাথা নাড়লো। বাচ্চার দুধ খাওয়ানো হতেই জেবুন্নেসা বাচ্চাকে কাঁধের উপর ধরে আলতো করে দুটো থাপ্পড় মারলেন। এতে করে বাচ্চার খাবার গলায় আটকাবে না বললেন মেহউইশকে।
কাঁচঘেরা মাঝারি আকারের অফিস রুমে বসে ল্যাপটপে মনযোগী রিশাদ। অফিসের কোন কাজ নয় বসে বসে সে নিজের ঘরের ভিডিও ফুটেজ দেখছে। বাড়িতে সে তিনটি জায়গায় ক্যামেরা লাগিয়েছে বহুদিন আগেই যা বাড়ির একটি সদস্যেরও জানা নেই। কোন অনুষ্ঠানে জেবুন্নেসা বাবার বাড়ি গিয়েছিলেন ছেলে মেয়েকে নিয়ে আর তখনি এ কাজটি লোক এনে করিয়েছিলো৷ জায়গা তিনটির মধ্যে একটি রান্নাঘর দ্বিতীয়টি কড়িডোরে যেন দোতলার প্রতিটি ঘরের দরজা স্পষ্ট চোখে পড়ে কে কখন আসছে যাচ্ছে। এবং তৃতীয়টি নিজের ঘরে৷ আর এখন সেই ঘরের ক্যামেরাটিই তার চোখে ভালো কোন ব্যাপার ধরা দিলো। আজকের আগে সে কখনো খেয়াল করেনি জেবুন্নেসাকে এমন করে নির্জনের যত্ন নিতে। তার এখন মনে হচ্ছে খালা মানুষটা কটুবাক্য প্রয়োগ করে সবসময় তার পেছনে নির্দিষ্ট কোন কারণ আছে। কিন্তু কি সেই কারণ? আর মেবিশ! উফ, এই হলো বিচ্ছিরি এক ব্যপার। এই মেয়ের নাম কোন বিজ্ঞানী রেখেছিলো কে জানে! উচ্চারণই মুখে আসে না। চেয়ারে হেলান দিয়ে ল্যাপটপ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো রিশাদ। পুরো কেবিনের তিন পাশেই অফিস আর পেছন দিক মানে বিল্ডিংয়ের শেষ প্রান্তে গ্রিলসহ বারান্দা। সেই বারান্দায় রিশাদের যাতায়ত শুধু মাত্র অতিরিক্ত টেনশন আর এই সন্ধ্যামনির শেষ ক্ষণে। এখন এক মগ কফি তার কফি মেকারে তৈরি করে বারান্দায় বসলো সে। ল্যাপটপে আপাতত চোখ রাখার আবশ্যকতা নেই। ওই মেয়ে যেমন ভীতু তাতে ভুলক্রমেও কোন ভুল করবে না নির্জনের প্রতি খেয়াল রাখতে। ছেলের ব্যপারে অনেকটা নিশ্চিন্ত বোধ হচ্ছে তার। কিন্তু নিজের কিছু প্রয়োজন যে বাকি রয়ে গেলো! বিয়ে করলো অথচ বউকে বউ বলে মনে হয় না। নীলিমা যা করেছে তা সে নির্জনের জন্মের আগে করতো তবুও মেনে নিতাম কিন্তু এখন! হাতে থাকা মগের কফি কখন ঠান্ডা হয়ে গেছে তা রিশাদ নিজেও টের পায় নি। বিষাদ,তিতকুটে স্বাদের কফি এখন বিষাক্ত করে দিবে জিভের স্বাদ তবুও সে পান করবে এটা। মনটাও বড্ড বিষাক্ত হয়ে আছে তার৷ এক চুমুকে সবটা কফি গিলে বারান্দার স্লাইডিং কাঁচের দরজাটা সরাতেই কানে এলো ফোনের রং। ফোনটা বেজেছে কয়েকবারই। কাঁচঘেরা ঘরের ভেতর থাকা সেটার আওয়াজ বারান্দা পর্যন্ত পৌছুতে পারেনি৷ মগটা রেখে ফোন ধরতেই ওপাশের ব্যক্তিটি জানালো ইভান এখন মেহউইশের মায়ের কাছে গেছে৷ তিতকুটে স্বাদটা এবার মেজাজ খারাপের ওপর রাগের আস্তরণ ফেলল। সে কালই মেহউইশের নামে দেওয়া বাড়িটিতে উঠতে বলেছিলেন মেহউইশের মাকে৷ মহিলা খুবই ঘাড়বাঁকা টাইপের মুখের ওপর বলে দিয়েছেন মেয়ের বিয়ের দেনমোহর হিসেবে দেওয়া সে বাড়ি মেয়ের থাকবে৷ তিনি কখনোই ওখানে থাকবেন না । রিশাদ তাই ফ্ল্যাট অফার করেছে সেটাও নাকোচ করলেন এখন বেশ মেয়ের প্রেমিককে বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। ওই ছেলেটাকে দূর করতে হবে সারাজীবন এর জন্য। মেহউইশ এখন রিশাদ রায়হানের বউ সে কি চাইলেই তার প্রেমিকের কাছে ফিরতে পারবে? আর তার মা’ই কি ভাবে আমার থেকে টাকা কড়ি নিয়ে এখন মেয়ের নামের বাড়িতে থাকবে না বলে সততা দেখাবে? রিশাদ গরম মেজাজের মানুষ সহজ কথাগুলোও তার কাছে প্যাঁচানো মনে হয়। ওপাশের ব্যক্তিটিকে কিছু না বলেই ফোন কাটলো৷ অফিস আওয়ার শেষ হয়েছে পাঁচটায়। সে অফিস থেকে যায় নি। মাথা গরম আছে তাকে রিল্যাক্স হতে ফিজিক্যাল শান্তি দরকার। যে মেয়েকে বিয়ে করে এনেছে তাকে দিয়ে আর যাই হোক ওসব চলবে না; অন্য কাউকে দরকার। অফিস ছেড়ে বেরিয়ে গেলো উত্তরার দিকে। আজ ড্রাইভার চলে যেতে বলে নিজেই গাড়ি ড্রাইভ করছে। উত্তরায় বন্ধু সায়মনের কাছে গেলে দারুণ কোন ব্যবস্থা হতে পারে। ল্যাপটপটা আসার সময় গাড়িতে করেই নিয়ে এসেছে। রাতে একবার ছেলের মুখ না দেখলে স্বস্তি পাবে না সে।
আজ সারাদিন শাড়ী পরে কাটলে সন্ধ্যার পর অস্থির হয়ে শাড়ী আর গায়ে রাখতে পারেনি মেহউইশ। বাধ্য হয়েই রাইমার কাছে একটা জামা চেয়ে নিয়েছে। রাইমা স্বাস্থ্য এবং উচ্চতায় মেহউইশের চেয়ে একটু বেশিই কিন্তু আপাতত তার কাজ এতেই চালাতে হবে ভেবে এনেছে। রাতের খাবারের সময় হওয়ার পরও রিশাদ বাড়ি ফেরেনি বলে জেবুন্নেসা রিশাদের ড্রাইভারকে ফোন দিলো খুব সন্তর্পণে৷ আগেও সে এমন করেছে বহুবার তাই ড্রাইভার জেবুন্নেসার ফোন দেখে আগেই বলল, স্যার আমাকে নেয় নি সাথে।’ জেবুন্নেসা হতাশ হলেন একটু। এই ছেলে বউ পালিয়ে যাওয়ার পর একদিনও দেরি করে বাড়ি ফেরেনি। সন্ধ্যায় বাড়ি এসে ছেলেকে খাইয়েছে,ঘুম পাড়িয়েছে এবং রাতভর নিজের কাছেই রেখেছে। রাতে উঠে উঠে আবার খাইয়েছে,ঘুম পাড়িয়েছে। আজ হঠাৎ এত লেট! রাইমাকে একবার বলতে চাইলেন রিশাদকে কল করতে পরেই ভাবলেন সন্দেহ করবে মেয়ে তাকে। খাবার টেবিলে মেহউইশকেও ডাকা হয়েছিলো খেতে। জেবুন্নেসা তাকে বললেন খাওয়া শেষ করে যেন দেখা করে। মেহউইশও তাই করলো। দোতলা উঠে নিজের ঘরে না গিয়ে প্রথমেই জেবুন্নেসার ঘরের দরজায় গিয়ে দাঁড়ালো।
‘আমায় ডেকেছেন?’
আয়নার সামনে বসে হাতে পায়ের যত্নে লোশন মাখছিলেন জেবুন্নেসা। পরনে একটা অফ হোয়াইট ড্রেস, সম্ভবত ওটা নাইট ড্রেস। মেহউইশের আওয়াজে পেছন ফিরে বললেন, ‘ দরজায় দাঁড়িয়ে আছো কেন ভেতরে আসো।’
মেহউইশ ভদ্র মেয়ের মতো তাই করলো। জেবুন্নেসা আবার বললেন, ‘আমি কি তোমার সমবয়সী?’
মাথা নাড়লো মেহউইশ, ‘না’।
বাড়িতে কি আদব কায়দা কিছু শেখোনি?
মেহউইশ এবারও জবাব দিলো না। জেবুন্নেসা তাই আবারও বললেন, ‘বয়সে বড়দের সম্মান দিয়ে কথা বলতে জানো না? আমি কম করে হলেও তোমার মায়ের বয়সীই হবো আমাকে কি আন্টি, খালামনি বলে সম্মোধন করা যায় না? নাকি ওই অভদ্র এংরি বার্ড এর বউ হয়েছো বলে তাকেই ফলো করবে?’ জেবুন্নেসার এত গুলো কথার একটা কথাও ঠিকঠাক বুঝে আসছে না মেহউইশের। তার বরাবরই চুপ থাকা দেখে বিরক্ত হলেন জেবুন্নেসা । আবার বললেন, ‘নিজের ঘরে গিয়ে এই মূহুর্তে রিশাদকে ফোন করে জিজ্ঞেস করবে এত রাত হলো বাড়ি ফেরেনি কেন? এজ আ ওয়াইফ এই প্রশ্ন করার অধিকার তোমার আছে। সারাক্ষণ ভীতু খরগোশের মত ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে থাকলে চলবে না।’
মেহউইশ এবার মুখ খুলল এবং খুবই ধীরে বলল, ‘ আমার কোন মোবাইল ফোন নেই। আমি ওনার ফোন নাম্বারও জানি না৷’
এ্যাই মেয়ে এ্যাই কি বলছো এসব? এ বাড়ির বউ হয়ে এসেছে অথচ একটা ফোন নেই সাথে? এত জীবন কি ফোন ছাড়াই ছিলে?’
‘আমার ফোন কালকে রাতেই হারিয়ে গেছে রাস্তায়।’
ওহ, তুমি তো আবার পালিয়ে গিয়েছিলে,,,,,
জেবুন্নেসার এই কথাতে মনে দুঃখ পেল মেহউইশ৷ সে পালাতে চায় নি তবুও পালাতে হয়েছিলো ওই দৈত্যের কারণে। মেহউইশ আর জেবুন্নেসার কথার মাঝেই কন্ঠ শোনা গেল রিশাদের৷ সে মেহউইশকে মেবিশ বলে ডাকছে৷ তার চিল্লানো ডাকে মেহউইশ ভয়ে দ্রুত জেবুন্নেসার ঘর ছাড়লো আর কোন কথা না বলেই। কিছুটা দৌড়েই রিশাদের কন্ঠস্বর অনুসরণ করে এগিয়ে গেল তার ঘরের দিকে এবং ঠিক তখনি রিশাদ দরজা থেকে বাইরে বের হতে পা বাড়ায়। দুজনের অপ্রস্তুতির কারণে খুব জোর ধাক্কা খেয়ে মেহউইশ ছিটকে পড়ে কড়িডোরের ফ্লোরে।
চলবে