#রৌদ্রদেশে_মেঘের_বেশে
#পুষ্পিতা_প্রিমা
[১৯]
নাজমুল সাহেব সাহিলকে ডেকে এনে সোফায় বসতে বললেন। বললেন,
‘ তোমার কাকি উপরে আছে। এক্ষুণি আসবে। এবার বলো তোমার কি খবর? বউ কেমন আছে?
সাহিল মাথা নাড়ল।
‘ আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছে। আপনারা কেমন আছেন সবাই?
নাজমুল সোফায় বসলেন পায়ের উপর পা তুলে। বললেন,
‘ মেয়েটা আর বোনকে নিয়ে আছি আর কোনোমতে৷ বউ তো সেই মারা গিয়েছে কবে।
সাহিল জিজ্ঞেস করল,
‘ নাহিল কোথায়?
নাজমুল সাহেব বললেন,
‘ নোরার সাথে মনে হয় ।
নিজের মেয়েকে ডাক দিল নাজমুল সাহেব,
‘ নোরা মামুনি নাহিল ভাইকে ডেকে দাওতো। নোরা?
নোরা নেমে আসল দ্রুত। সাহিলকে দেখে চট করে সালাম দিল,
‘ আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া। কেমন আছেন?
সাহিল মিষ্টি মেয়েটার সাথে মিষ্টি করে হেসে বলল,
‘ ওয়ালাইকুমুস সালাম৷ খুব ভালো নোরা, তুমি কেমন আছ?
নোরা মাথা নেড়ে বলল,
‘ খুব ভালো। কিন্তু নাহিল ভাই ভালো থাকতে দিচ্ছে কই? নড়া নেই, চড়া নেই। এক অবস্থা।
যেন ছ্যাঁকা খেয়ে ব্যাকা হয়ে পড়ে আছে।
সাহিল হাসল। নোরা নাহিলকে ডাকতে ডাকতে চলে গেল। নাতাশা এল। সাহিলকে দেখে একগাল হাসল। মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,
‘ কেমন আছ আব্বা? তোমার বউ কেমন আছে? এখানে আনতে বলেছিলাম কিন্তু।
সাহিল মেঝেতে দৃষ্টি রাখা অবস্থায় বলল,
‘ বাড়ির বউকে বাড়ি গিয়ে দেখে আসতে হয় কাকি। যাহোক তোমার শরীর কেমন এখন?
নাতাশা সোফায় বসে বলল,
‘ ভালো আছি এখন, কিন্তু নাহিলটা কেমন কেমন হয়ে থাকে আজকাল। তাকে দেখে আমার কিছুই ভালো লাগছেনা। কাল তো অনেক জ্বর ছিল।
সাহিল বলল,
‘ ওকে তোমরাই ভালো থাকতে দিচ্ছ না। সোরার সাথে ওর বিয়ে দিলে কি হয়? সোরা ভালো মেয়ে কাকি৷ যদি আদর্শ মায়ের পরিচয় দিতে চাও তাহলে নিজের ছেলের ভালো থাকার কথা ভাবো একবার। ও তোমাকে ভালোবাসে কাকি, সেই প্রমাণ ও দিয়েছে, দিচ্ছে। তুমি ও দাও কাকি। প্লিজ। সোরার সাথেই ভালো থাকবে নাহিল। নাহিল সোরাকে ভালোবাসে কাকি। আমি ও তো সোরার মতই শ্যামবর্ণের । তুমি তো আমাকে ভালোবাস, আমার সাথে অন্যায় কি তুমি করবে? তাহলে কেন এমন করছ কাকি? সোরা গ্রামের মেয়ে বলে?
নাতাশা একদম চুপ হয়ে গেল।
‘ কিন্তু নোরা?
নোরার কথা কারো সামনে বলল না নাতাশা। সে জানে নোরার নাহিলকে,
কিন্তু সোরা? সোরার সাথে বিয়ে হলে তো?
আর কিছু ভাবতে পারছেনা নাতাশা। নোরা দৌড়ে এল শরবতের ট্রে হাতে নিয়ে। শরবত খানিকতা ট্রেতে পড়ে গেল। সাহিলের দিকে শরবত বাড়িয়ে দিয়ে সে বলল,
‘ হুররে বিয়ে খাব। ফুপী তাড়াতাড়ি বিয়ে নামাও। নোরা সোরা। নাহিল ভাইয়ের বউয়ের সাথে তো আমার নাম মিলে যাচ্ছে। নাহিল ভাই সোরা ডাকতে নোরা ডাকবে, নোরা ডাকতে সোরা ডাকবে। হা হা হা।
নাতাশার চোখে চোখ পড়তেই হাসি বন্ধ হয়ে গেল নোরার। চলে গেল নোরা।
নাতাশা বেগম উঠে চলে গেলেন। সাহিলকে বললেন, আচ্ছা আমি দেখছি কি করা যায়।
হাতের রিমোট দূরে ছুঁড়ে মারল নাহিল। হুটহাট রাগ উঠছে। কোনোকিছুতে স্থির করে মন বসছেনা। ভাইয়ের সামনে ও যেতে ইচ্ছে করছেনা। কি করবে আর ভাই? সান্ত্বনা দেবে। এটুকুই। সান্ত্বনা চায়না নাহিলের। চায়না। দরজা ঠেলে নাতাশাকে আসতে দেখে রিমোটটি চট করে কুড়িয়ে নিল নাহিল। নাতাশাকে পিছু করে বসে রিমোটটি ঠিক করতে করতে বলল,
‘ ওই রিমোটটা ধরছেনা মা। কেন জানিনা।
বলতে বলতেই কপাল মুছল নাহিল। নাতাশা ছেলেকে এই অবস্থায় দেখে আবার চলে গেল। সাহিলকে গিয়ে বলল,
‘ ঠিক আছে।
সাহিল খুশি হলো। দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরল নাতাশাকে। বলল,
‘ থ্যাংকস কাকি।
সাহিল চলে যেতেই নাতাশা ডাকল,
‘ আব্বা তোমার মায়ের খোঁজ এখনো পাওনি?
সাহিলের মুখ কালো হয়ে গেল। নাতাশা বলল,
‘ আচ্ছা ঠিকআছে যাও। আবার এসো। আর হ্যা আমি বউ দেখতে যাব কিছুদিনের মধ্যে। খালি হাতে তো যেতে পারব না, তাই একটু ধীরেসুস্থে যাব।
সাহিল হাসল। আচ্ছা আগে ছেলের বউ দেখে এসো তাড়াতাড়ি।
_______________________
সবার সামনে ‘ সীমান্ত’ কে? প্রশ্নটি করায় সবাই চোখ চোখ বড়বড় করে তাকাল আনহার দিকে। আনহা অবাক। একটা সামান্য প্রশ্ন শুনে এমন করতে হয়?
শফিক সাহেব খেতে খেতে বললেন,
‘ তোর ওসব জানার দরকার নেই। শুধু এটুকু মনে রাখিস সীমান্ত নামের ছেলেটা মানুষরূপী জানোয়ার। সাবধানে থাকিস।
জাহেদা বলল,
‘ জায়িদকে করিস প্রশ্নটা। ভালো করে বুঝিয়ে দেবে।
আনহা বলল,
‘ মারেমা, তোমার ছেলে এক চড় দিয়ে সব দাঁত ফেলে দেবে।
খাওয়া শেষে টেবিল গুছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল আনহা। প্লেটগুলো ধুয়েমুছে শেলপে রাখতে রাখতে বলল,
‘ আজ তো ডাল রান্না করোনি, অফিসার এসে কি খাবে মা? ওনি তো ডাল ছাড়া ভাত খেতেই চাননা। কি হলো চুপ করে আছ কেন? ও মা?
বলতে না বলতেই চট করে জাহেদার দিকে ফিরল আনহা। জিভে কামড় বসিয়ে মাথা নামিয়ে রাখল। মিনমিন করে বলল,
‘ আসলে আন্টি মাকে ডাকতে ডাকতে অভ্যাস হয়ে গিয়েছে তো তাই। কাল জিনিয়ার এখানে দাদুকে মা ডেকে ফেলেছি।
জাহেদা হেসে ফেলেন সাথেসাথে। কাছে গিয়ে আনহার মুখ ছুঁয়ে বলে,
‘ যখন চলে গিয়েছিলি আমার কি যে খারাপ লাগছিল। তোর আন্কেল তো ঘুরেঘুরে এসে শুধু বলছিল জাহেদা কি যেন নেই নেই লাগছে না? জুননুর কথা আজ বেশি বেশি মনে পড়ছে। শেষমেশ কি করেছে জানিস? জুননুর কাছে চলে গিয়েছিল। তোরা আসার কিছুক্ষণ আগে বাসায় এসেছিল। মেয়ের হাতের পাকোড়া খেয়ে এসেছে, আবার আমার জন্য নিয়ে ও এসেছে। আমার মেয়ের হাতের পাকোড়া এত মজা হয়েছে দুজনে মিলে খেয়ে নিয়েছি। জায়িদের জন্য ও রাখিনি। সেজন্য কাল যখন গিয়েছি জিনিকে বলেছি তার ভাইকে পাকোড়া করে খাওয়াতে। বোনের হাতে রান্না খাওয়ার জন্য পাগল আমার জায়িদ।
আনহা বলল,
‘ চলে যাওয়ার সময় আমার ও খুব খারাপ লেগেছে মা।
আবার জিভে কামড় বসালো আনহা। আজ কেন জানি শুধু মায়ের কথা বেশি মনে পড়ছে, মা মা ডাক চলে আসছে।
জাহেদা হাসল।
‘ কেন আমাকে মা ডাকলে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে?
ঘনঘন মাথা নাড়ল আনহা।
‘ না না আন্টি। অফিসার যদি শুনে তার মাকে আমি মা ডাকছি তাহলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেবে।
জাহেদা হাসল।
‘ সাহস থাকলে ডেকে দেখাস তো। তার রিয়াকশন কেমন হয় দেখব।
আনহা হাসতে হাসতে বলল, আচ্ছা।
___________
জুমাবার। তাড়াহুড়ো করে গায়ে সাদা পাঞ্জাবী চড়াল সাহিল। হাতের কাজ করেছে জিনিয়া সেই পান্জাবির উপর। নিজেকে আয়নায় দেখতেই গর্ব হলো সাহিলের। বউ তার জন্য পান্জাবিতে হাতের কাজ করেছে। রুমে ডুকতেই জিনিয়া মাথায় হাত দিল৷
‘ এসব কি করছেন গুড্ডুসাহেব? মাথা কি গেছে আপনার?
চুল মুছেননি কেন? পান্জাবিতে দাগ পড়ে যাবে। তোয়ালে নিয়ে গিয়ে চুল মুছে দিতে লাগল জিনিয়া। সাহিল পান্জাবির বোতাম লাগানোই ব্যস্ত৷ চিরুনি নিয়ে আসল জিনিয়া। চুলগুলো আঁচড়ে দিয়ে। বাকি বোতামগুলো লাগিয়ে দিল। সাহিল চেয়ে রইল প্রিয়তমাকে। বোতাম লাগানো শেষে জিনিয়া চোখ তুলল। হাসল সাহিলের সাথে। পায়ের আঙুলে ভর দিয়ে সাহিলের কপালে পবিত্র ভালোবাসার চিহ্ন এঁকে দিল। বলল,
‘ এইবার কম্পিলিট। যান নামাজ পড়ে আসুন।
সাহিল হেসে কূল পেলনা। কিছুদূর গিয়ে আবার ফিরে আসল। বলল,
‘ জিনি আমাকে সুন্দর লাগছে?
জিনিয়া নাক সিটকালো।
‘ উহুম। একেবারে জঘন্য লাগছে।
সাহিল মুখ সাথে সাথে কালো হয়ে গেল।
জিনিয়া তেড়ে গেল।
‘ আমাকে যে বলেন তারবেলা?
সাহিল আবার হেসে দিল। জিনিয়া মাথায় হাত দিল।
‘ আল্লাহ কি পাগল লোকের পাল্লায় পড়লামরে বাবা? মুখের এত ভঙ্গিমা করে।
সাহিল হাসতে বের হয়ে গেল। যেতে যেতে বলল,
‘ জিনি আসার সময় কিছু আনব?
জিনিয়া গলার আওয়াজ বড় করে বলল,
‘ দরকার নেই। সোজা বাসায় আসবেন।
_________
পুলিশের ড্রেস পড়া অবস্থায় ব্রেকফাস্টে বসল জায়িদ৷ তাড়াহুড়ো করে খেতে খেতে বলল,
‘ মা পাউরুটিতে ডিম এত বেশি দিয়েছ কেন? আমার বমি পাচ্ছে।
আনহা টেবিল গুছিয়ে দিতে দিতে বলল,
‘ ডিম বেশি হলে নাকি আবার বমি পায়। নতুন কথা শুনলাম।
জায়িদ কথা বলল না আনহার সাথে।
আনহা ডাকল,
‘ আমি যে পাকোড়া করেছি ওটা কই? পাচ্ছি না কেন। মা? ওমা? তাড়াতাড়ি আসো না। অফিসার আপনি এখন যাবেন না।
জাহেদা আসলেন হাতে বক্স নিয়ে । পাকোড়া গুলো জায়িদের উদ্দেশ্যে বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
‘ মেয়েটা অনেক কষ্টে বানিয়েছে আব্বা। একটু খেয়ে দেখ।
আনহা আঙুলে ওড়না প্যাঁচাতে প্যাঁচাতে জায়িদকে দেখল। সারাক্ষণ কপালে ভাঁজ ফেলে রাখে এই লোক। ধরে কয়েকটা দিতে ইচ্ছে করে।
জায়িদ পাকোড়া গালে দিয়ে গাল নাড়াতে নাড়াতে চুপ করে থাকল। কিছু বলল না। আনহা মিনমিন করল,
‘ মজা হলেও এই লোক বলবে, খারাপ হয়েছে।
আনহা পাকোড়ার বক্স কেড়ে নিল। বলল,
‘ খেতে হবেনা অফিসারকে। শুধু আমি খাই মা।
জায়িদ আবার ও চমকালো। মা?
আনহার দিকে একদফা তাকিয়ে আবারও চোখ নামিয়ে ফেলল জায়িদ। জাহেদা আর আনহা একে অপরকে চাওয়াচাওয়ি করল। জায়িদের ভাবনার জগতে ডুব দিতে দিতে উঠে দাঁড়াল। জাহেদাকে সালাম করে বেরিয়ে যেতে যেতে বলল,
‘ আব্বার খাবার নিয়ে যাওয়ার জন্য মদন মিয়াকে বলে রেখেছি আম্মা। আজানের পর পর আসবে। মনে রেখো।
জাহেদা বলল,
‘ আচ্ছা আব্বা। সাবধানে যাস। ফি আমানিল্লাহ।
জায়িদ বেরোতেই হাসিতে ফেটে পড়ল জাহেদা আর আনহা। আনহা বলল,
‘ তোমার ছেলে তো কোনোকিছু বলেনি মা সরি আন্টি।
জাহেদা এসে দাঁড়ালেন আনহার সামনে। আনহার গালের একপাশ ছুঁয়ে বলল,
‘ তোর মায়ের কাছে আমাকে নিয়ে যাবিনা? মা ডাকতে পারিস মতো মালিকানা নিতে চাইছি।
আনহা ভড়কে গেল। না এ হয়না।
আনহা দু পা পিছু হেঁটে গিয়ে বলল, মা না মানে আন্টি আমি আসলে,
জাহেদা জায়িদের মাথার ক্যাপ দেখতে ফেলেন টেবিলের উপর। ও আল্লাহ! ছেলেটা এটা ফেলে চলে গেল?
জাহেদা আনহার হাতে ধরিয়ে দেন ক্যাপটা৷ তাড়া দেখিয়ে বলেন,
‘ যাহ তাড়াতাড়ি দিয়ে আয়। এখন এসে চেঁচাবে। বলবে, মা আমাকে মনে করিয়ে দাওনি কেন। এটা ওটা। আমাকে বকা খাওয়াস না। যাহ দিয়ে আয়। আনহা?
আনহা গেল৷ আবার পিছু ফিরে বলল,
‘ আমি?
জাহেদা হেসে বলল,
‘ হ্যা তুই। যাহ।
আনহা দৌড়ে গেল। চেঁচিয়ে গলা টেনে ডাকল,
‘ অফিসারররররর????
জায়িদ থেমে গেল। হোঁচট খেয়ে পড়ল আনহা। জায়িদের দিকে তাকিয়ে উঠে পড়ল। ওড়না দিয়ে তাড়াহুড়ো করে ক্যাপটা মুছতে লাগল। ওড়নার এক কোণা দিয়ে বালি ঝেড়ে আরেক কোণা দিয়ে মুছতে লাগল। জায়িদ চুপ করে চেয়ে দেখল আনহার কান্ড। ভালো করে মুছে ফু দিতে দিতে ক্যাপটা নিয়ে সামনে চলে এল আনহা। অফিসার বলে ডেকে পায়ের আঙুলে ভর দিয়ে জায়িদের মাথায় পড়িয়ে দিতেই থমকে গেল সে। জায়িদের সাথে সাথে সে ও অন্যদিকে চোখ সরিয়ে নিল। ভালো করে ক্যাপটা পড়িয়ে দিয়ে দূরত্বে সরে এল আনহা। মিনমিন করে বলল,
‘ সরি অফিসার। আসলে,
জায়িদ গম্ভীর চাপা কন্ঠস্বর ভেসে আসল। তোমাকে কিছু বলেছি আমি?
আনহা একবার চোখ তুলে তাকিয়ে আবার চোখ নামায়। ঘনঘন মাথা নাড়ে।
‘ তো? ওভাবে কথা বলছ কেন? আমার ওসব একদম পছন্দ না।
আনহা আবার চোখ তুলল। এবার আর নামাল না।
‘ আমি আপনার পছন্দের কাজ করতে যাব কেন?
জায়িদ থতমত খেল। এমনি বলেছি। বেশি কিছু না। জায়িদ গাড়িতে উঠার আগেই আনহা আবার দৌড়ে গেল তার সামনে।
‘ অফিসার আমার জন্য কিছু আনবেন।
‘ কি?
‘ ওই কিছু। চকলেট, বিস্কিট, চিপস।
‘ তুমি কি বাচ্চা?
‘ বাচ্চা না। এমনি আর কি।
‘ আমি ওসব জুননুর জন্য আনতাম। তোমার জন্য কেন আনব?
আনহা হেসে দিল৷ বলল,
‘ অন্যকিছু আনবেন। যেমন ধরুন, চুড়ি, বেলুন,ফুল কিংবা নূপুর।
জায়িদ কেশে উঠল। মাথার ক্যাপটা ভালোভাবে মাথায় লাগাতে লাগাতে গাড়িতে উঠে বসল। নিজে নিজে হাসল।
আনহা ঘুরে হাঁটা ধরল। এমনি এমনি হাসল। জাহেদা দেখল আনহা নিজে নিজে হেসে ঘরের দিকে যাচ্ছে। মেয়েটা কি পাগল হলো?
_________
নাহিলকে বিছানায় উসকোখুসকো চুলে দেখে খারাপ লাগল নাতাশার। হাতে থাকা ব্যাগটা বিছানায় রেখে ডাকল নাহিলকে।
‘ নাহিল? আব্বা?
নাহিল উঠল। অন্যদিকে মুখ করে বলল,
‘ মা আমি বাড়ি যাব।
নাতাশা হাসল। বলল,
‘ আগে গ্রাম থেকে আসি তারপর না হয় একসাথে যাব।
নাহিল মায়ের দিকে তাকাল। নাতাশা লাল শাড়ি বের করল ব্যাগ থেকে। একজোড়া জুতো। নূপুর, গয়না।
নাহিলের কপালে ভাঁজ পড়ল।
‘ এসব কেন মা?
‘ সোরার জন্য।
বলেই নাতাশা উঠে দাঁড়াল। নাহিলের চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে আসার অবস্থা।
‘ রেডি হয়ে নাও। তোমার বড়আব্বা, বাবা আর সাহিল স্টেশনে অপেক্ষা করছে। তোমার মামা রেডি হয়ে বসে আছেন। আমাদের শীঘ্রই পৌছাতে হবে।
নাহিল বিস্ময়ে কিছু বলতে পারল না। আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়াল সে। সোরা? সোরার কাছে যাবে সে? নিজের কি হাল হয়েছে এ কয়দিনে? সোরা এতটা জড়িয়ে গেছে তার সাথে? মাত্র কয়দিনে। কেমন হবে? যখন সোরা নাহিলের হাতে লাল শাড়ি দেখবে। লাল শাড়ি মাথার উপর দিলেই লজ্জায় মাথা নামিয়ে ফেলবে সোরা? হাসবে? নাকি খুশিতে কাঁদবে?
কিছু ভাবতে পারল না নাহিল। চুল বড় হয়েছে, চুল কাটার সময় নেই। দাঁড়ি না রাখা ছেলেটার মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি।
সাহিল তো স্টেশনে ভাইকে দেখে বলল,
‘ তোকে এভাবে ভালো লাগছে মুন্টু। এবার থেকে দাড়ি রেখে দে। সেই সেই লাগছে। নাহিল লজ্জা পেল। ধুরর ভাই আর বলার জায়গা পায়না। মা বাবার সামনে।
সাজেদ সাহেব খুশি হলেন নাতাশার প্রতি। নাতাশাকে ছোট্ট করে বললেন,
‘ এতদিনে ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছ একটা। আমি বদলাতে পারলাম না তোমায়। ছেলে না হয় পাল্টাক।
নাতাশা কন্ঠে রাগ। বললেন,
‘ তোমার সাথে আমার যায় হোক। ছেলেটা কিন্তু আমার। আমার বাচ্চা। মনে রাখবে সেটা।
সাজেদ সাহেব হাসলেন। বললেন,
‘ শুনে ভালো লাগল। আমার সন্তানকে তুমি তোমার সন্তান বলো। ভীষণ ভালো লাগল।
নাতাশা অবাক।
‘ তোমার সন্তান আমার সন্তান মানে কি?
সাজেদ সাহেব কেটে পড়লেন তাড়াতাড়ি। এই মহিলা মোটেও সুবিধার না।
দেয়ালে টানানো নাহিলের ছবিগুলো একটা একটা করে ছিড়ল নোরা। এই ছবির মানুষটা তার কখনো হবেনা। কখনো না। বোন ডেকে ডেকে সারা হয় ছেলেটা। কোনে সোরার জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছে। নোরার দিকে তাকালে ও গুনাহ হয়। নোরা কাঁদল। আওড়াল
‘ তীব্রভাবে ভালোবাসার পরে ও যে মানুষটা অন্যের কাছে নিজের ভালোথাকা খুঁজে সেই মানুষটা আমার না হোক। না হোক।
____________
রিকশায় করে গ্রামে পৌঁছাল নাহিল আর নাতাশা। বাকিরা ভ্যানগাড়িতে করে। নাতাশার অসুবিধা হলেও দেখাল না নাহিলকে। একবুক আশা স্বপ্ন নিয়ে সূদুর ঢাকা থেকে রূপসা গ্রামে এসে সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়ল যেন। । নাহিল আর নাতাশা তখনও রিকশা থেকে নেমেছে।
সবাই উঠোনে দাঁড়িয়ে থাকল আহমেদ মঞ্জিলে এসে। সোরাকে ডাকতেই কেউ ছুটে এলনা। শুকনো মুখে এক কাক ডেকে উঠল কা কা করে। সাদিদ ঘরের ভেতর ডুকে চেয়ার বের করল। সবাইকে বসতে বলল। চিল্লিয়ে ডাকল,
‘ আব্বা, আম্মা দাদি দেখো কারা কারা এসেছে?
সবাই দৌড়ে এল। বাড়ির উঠোনের একপাশে পড়ে রয়েছে গাঁদাফুল। ডেকোরেশনের দোকানের কয়েকটা লাল রঙের চেয়ার। নাহিল সবার পেছনে দাঁড়িয়ে থাকল। সাজেদ সাহেব ডুকতেই জাহানারা বেগম বের হয়ে এলেন। বললেন,
‘ হঠাৎ না জানিয়ে আসলা তোমরা। আসো আসো বাবা। বসো। সামাদ সবার জন্য ঠান্ডা শরবতের ব্যবস্থা কর তাড়াতাড়ি।
সাগর সাহেব গিয়ে বললেন,
‘ চাচি জরুরি কথা বলার জন্য এসেছি আমরা। ওই দেখো সাজেদের বউ এসেছে।
নাতাশা লম্বা সালাম দিল। জাহানারা গলার স্বর টেনে সালাম নিলেন। এই তাহলে সেই দাপটে মহিলা? দেখতে কি ছিরি? এজন্যই তার অহং?
সাগর সাহেব হাসল। সবাই চেয়ারে বসল। সাগর সাহেব কথার ফাঁকে ডাকল
‘ সোরা? সোরা মা কোথায় তুই?
নাহিল এদিক-ওদিক তাকালো। হাতের ব্যাগটা শক্ত করে ধরল। বিড়বিড় করল,
‘ সোরা? আমার ভয় লাগছে সোরা। প্লিজ তাড়াতাড়ি এসো। আমার ভীষণ ভয় লাগছে।
সোরা এল না। সোরার বাবা এল।
সামাদ মিয়া সবাইকে শরবত বিলি করতে করতে বলল,
‘ আমার বাড়িঘর ফাঁকা হয়ে গেছে বাবু। মেয়েটারে বিয়ে দিয়ে খা খা করছে সব। খাওয়া দাওয়া ও করিনি কয়বেলা।
সাগর সাহেব শরবত মুখে দিতে যাচ্ছিল আর দেইনি। সাহিল দাঁড়িয়ে পড়ল। নাহিলের দিকে তাকিয়ে বলল,
‘ ভাই আমরা নদীর পাড়ে যায়? চল তো। ওনারা মুরব্বিরা কথা বলুক। চল।
নাহিল সরল না জায়গা থেকে। চোখের পলক ও পড়ল না তার।
‘ কি নিয়ে কথা বলবে ভাই? কাকে নিয়ে কথা বলবে? সোরা নেই? সোরা নেই ভাই।
সাহিল মাথার একপাশে হাত দিল।
‘ থাপ্পড় দিয়ে গাল লাল করে দেব নাহিল। চল এখান থেকে।
নাহিল সরে গেল কয়েক পা। হাতের ব্যাগটা নিচে ফেলে দিল। সাহিল গিয়ে ব্যাগটা হাতে নিল। নাহিলকে ছোঁয়ার আগেই চলে গেল নাহিল।
সাহিল রেগে গেল আচমকা। সামাদ মিয়াকে গিয়ে বলল,
‘ কোথায় বিয়ে দিয়েছ সোরার? আমাদেরকে জানাওনি কেন? বলো চাচা?
সামাদ মিয়া জাহানারার পেছনে গিয়ে দাঁড়াল। নাতাশা বেগমের দুগাল ভিজে উঠল আপনাআপনি। রাগ,আক্রোশ গিয়ে জমা হলো সামাদ মিয়ার উপর। সোরার উপর।
জাহানারা আসল। শান্তকন্ঠে বলল,
‘ রজব মাস্টারের ছেলে একমাত্র রাতুলের সাথে বিয়ে হয়েছে। রজব মাস্টার তো গতবছর মারা গেছে। তার বউ আর ও আগে মারা গেছে। রাতুল গ্রামের কলেজের মাস্টার। যেমন গুণী তেমন চাঁদের মতো পোলা। আমার সোরা রাণীর মতো থাকবে তারকাছে। রঙ নিয়ে খোঁচা খাবেনা কোনোদিন। তারা অনেক শিক্ষিত মানুষ, রঙ দেখে মানুষকে বিচার করেনা। আমার সোরাকে প্রথম দেখে রাতুলের দাদী বলছিল, মাশাল্লাহ কি মায়াবী!
তোমরা বলো এত ভালো পাত্র হাতছাড়া করা যায়? তোমরা কেন আসলা সেটাতো বুঝলাম না।
নাতাশা হঠাৎ রেগে উঠল। তেজী গলায় বলল,
‘ ভালোই হয়েছে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। ওই মেয়ে যোগ্য না আমার ছেলের। সেই মেয়ে নাকি আমার ছেলেকে পছন্দ করত? ভালো পাত্র পেয়ে তো বিয়ে করে নিয়েছে টইটই করে। বেয়াদব অসভ্য মেয়ে। আমার ছেলে যে কষ্ট পেয়েছে তার চাইতে ও দ্বিগুণ কষ্ট পাবে ওই মেয়ে। ভালো হবেনা কারো। আমার ছেলের চোখের জলের মূল্য দিতে হবে সবাইকে। ওই কালো মেয়েটার জন্য চোখের জল পড়ল আমার ছেলের। ভালো হবেনা ওই মেয়ের ভালো হবেনা।
সালমা আর সামাদ মিয়া ভুল ধারণা ভাঙল। মা তাহলে ঠিকই বলেছিল,
‘ এই মহিলা কখনোই সোরাকে মন থেকে মানত না। কালো রঙ দিয়ে খোঁচাত শুধু। ভালো হয়েছে রাতুলের সাথে বিয়ে হয়েছে। মাথা তুলে বাঁচতে পারবে মেয়েটা। সঠিক মানুষ পেলে পুরোনো মানুষটাকে কেন পুরো অতীতকেই ভুলে থাকা যায়।
সোরা ও পারবে। অন্তত রং নিয়ে খোঁটা শুনতে হবেনা।
সাদিদ নাহিলের পিছু পিছু গেল। দৌড়ে গিয়ে নাহিলের হাত ধরে আটকে বলল,
‘ ছোটদাভাই আপার শ্বশুড়বাড়ি খুব কাছে। আমি দিনে কয়বার যে যাই। বাড়ির দাঁড়োয়ানটাকে গিয়ে বিরক্ত করি শুধু। কত্তবড় বাড়ি জানো? আমাদের মতো মাটির ঘর না? পাকা রঙিন দালানের ঘর। ছাদ আছে। কত্তসুন্দর বারান্দা আছে! আপা প্রায়সময় বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকে। আমি আপা বলে ডাকলেই ছুটে আসে। জামাইবাবু আমাকে ছোটভাইয়া বলে ডাকে। আপাকে হাসায়। জানো আপাকে বিয়ের দিন কত্তসুন্দর লেগেছে। আমার আপা অনেক সুন্দর। যারা সুন্দর চেনেনা তারাই কালো বলত। আমার আপাকে লাল শাড়িতে অনেক সুন্দর দেখায়। জামাইবাবু ও এই কথা বলেছে আপাকে। আপাকে লজ্জা দেয় জামাই বাবু। তুমি যাবে ছোটদাভাই? তোমাদের দাওয়াত দিতে বারণ করছে আপা। তাই দেইনায় আব্বা। দাদি ও দিতে চাইনায়। দাওয়াত দেইনায় বলে রাগ করছ? ও ছোটদাভাই? তোমার গাল ভেজা কেন? তুমি তো অনেক সুন্দর। তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন? শহুরে ছেলেদের মতো মনে হচ্ছেনা।
নাহিল শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকল। অন্যদিকে ফিরে মুখ মুছে বলল,
‘ তোমার আপার শ্বশু,,শ্বশুরবাড়ি আমাকে নিয়ে যাবে? ভেতরে যাব না। দূর থেকে একটিবার দেখে চলে আসব। আর কখনো যাবনা।
সাদিদ শক্ত করে নাহিলের হাত ধরল। বলল,
‘ চলো।
তিনতলা ঘরের পাশেই রাস্তা। দুই একটা গাড়ির যাতায়াত সেই রাস্তায়। বাইক রিকশা। রোদের মাঝে ও বাতাস বইছে শা শা। রাস্তার এইপাশে দাঁড়িয়ে রাস্তার ওপাশের বাড়ির বারান্দাকে উদ্দেশ্য করে সাদিদ ডাক দিল,
‘ আপা? ও আপা? আমি সাদি। এসেছি। বের হও। আপা?
খয়েরি রঙের শাড়ি পড়া মেয়েটা শাড়ির আঁচল গায়ে টেনে দৌড়ে এল। মাথার লম্বা বেণুনীটা এসে সামনে পড়ল। বারান্দার রেলিঙে হাত দিয়ে হাঁপিয়ে ঘনঘন দম নিল সোরা। চোখ মেলতেই হেসে দিল সাদিদের সাথে। হাসিহাসি মুখটা সেখানেই স্থির হয়ে গেল। চোখের পলক ও সেখানেই স্থির। চোখে পড়া মোটা কাজলের রেখা ভেদ করে টুপ করে পড়ল একফোঁটা নোনাজল। সুখের নোনাজল। হাসিটা ধরে রাখতে রাখতে সোরার একসময় মনে হলো দূরে দাঁড়ানো রাস্তার ওপাশের ছেলেটাকে বড্ড অগোছালো দেখাচ্ছে। মাথার চুলগুলো বাঁকা হয়ে পড়ে রয়েছে। উজ্জ্বল চেহারাটাতে মলিনতা ভর করেছে। চোখে বিষাদের রেখা। এতদূর থেকে ও সোরা টের পেল নাহিলের ভিজে উঠা গাল। ছেলেদের কাঁদতে নেই তা হয়ত ছোটদাভাই ভুলে গিয়েছে। অন্তত একটা কালো মেয়ের জন্য।
একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকল নাহিল। ওই দূরে দাঁড়ানো মেয়েটার হাতে তার দেওয়া লাল চুড়িগুলো কেন নেই? তার আনা লাল শাড়িটা কেন নেই ? কেন সে অন্যের ঘরে দাঁড়িয়ে আছে? কেন মেয়েটা নাহিলের নয়। কেন নয়? সাদিদ দুজনের দিকে দুইবার তাকিয়ে অবাক হয়ে থাকল। দুজনই কেন কাঁদছে? দুজনের চোখে কি পোকা পড়েছে?
সোরার দিকে চেয়ে যেতে যেতে নাহিল বিড়বিড় করল,
‘ তুমি আমায় চাওনি সোরা। আমার হতে চাওনি। আমার মতো যদি চাইতে তাহলে মায়ের মতো তোমার দাদির ধারণা ও পাল্টাত একসময় না একসময়। তুমি প্রতারক সোরা। প্রতারক। তারপরেও তুমি ভালো থেকো। কখনো, কোনোদিন আমার সামনে পড়োনা। ভুল করে হলেও পড়োনা আমার সামনে। আবার তোমাকে চেয়ে বসব আমি। তোমাকে পাওয়ার লোভ আমার কোনোদিন যাবেনা। কোনোদিন না। তারপর ও বলছি সোরা তুমি সুখে থেকো। স্বামী, সংসার নিয়ে ভালো থেকো। আমি ও ভালো থাকব। তুমি থেকে যেও ওই দূরের নিঝুম পাহাড় হয়ে, আমি দূর থেকে না হয় একবার দেখে যাব। ছোঁয়ার চেষ্টা করবনা। আমি ও নাহয় থেকে যাব তোমার স্মৃতিতে ধোঁয়াশা হয়ে। হয়ত একদিন চিরতরে মুছে যাব। হয়ত একদিন নাহিল নামের ছেলেটিকে দেখলে ও তোমার চিনতে কষ্ট হবে। কিন্তু আমার না হোক।
সোরা ভেতরে চলে গেল তাড়াতাড়ি। নাহিল ও চলে এল। একা একা ফিরল শহরে। ব্যস্ত শহরে নিজেকে ব্যস্ত রাখার হাজারটা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় যখন শহরে রাত নামে। যখন শহর একা হয়। যখন শহরে থেমে যায় গাড়ির হর্ন, মাইক, হাজারও কৃত্রিম শব্দ, যখন নিভে যায় রাস্তার পাশে ল্যাম্পপোস্ট। তখন ব্যর্থ হয়, এই ব্যর্থ হওয়া প্রেমিক। আটকাতে কষ্ট হয় চোখের বেহায়া নির্লজ্জ জলকে। যে ঝড়ে পরের অর্ধাঙ্গিনীর জন্য।
সেই বেহায়া চোখের দৃশ্যপটে ভাসে কারো রাগী,অভিমানি চোখ। হাসিমাখা মুখ। নিজেকে হারিয়ে ফেলতে ফেলতে একসময় আবার নিজেকে শক্ত করে নেয় নাহিল। নিজের কাছে মিথ্যে ঠেকে এই ভালোলাগা, ভালোবাসা নামক শব্দগুলো । নাহিলের মনে প্রশ্ন জাগে,
‘ যে হওয়ার নয়, তার জন্য কেন অনুভূতি জাগে?
সে হবেনা তা কেন জানা হয়না আগে?
নতুন করে নিজেকে চিনতে, নিজেকে বুঝতে, নিজেকে গড়তে বিদেশে পাড়ি জমায় নাহিল।
সবাইকে বলে যায়, সে ফিরবেনা কখনো।
চলবে,