স্বপ্নচূড়ার আহবান ‘ পর্ব-৬৩

0
1164

“স্বপ্নচূড়ার আহ্বান”
পর্ব-৬৩

বাংলাদেশে এসে বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছাতেই একটা কান্ড ঘটে গেলো। নীলাংশ আর রুশানী একসাথেই বসে ছিলো গাড়িতে। তানজিমার পর দুইজন নামলো ধীরে সুস্থে। নীলাংশ ব্যাগ বের করছিলো। হঠাৎ ঠোঁট ভেঙে কেঁদে উঠলো রুশানী। তানজিমা, নীলাংশ দুজনই সচকিত হয়ে তাকালো। রুশানী সামনের ফুটপাতের দিকে তাকিয়ে আছে। দৃষ্টি একজন লোক ও সাথে থাকা বাচ্চা মেয়েটার ওপর। মেয়েকে বেলুন কিনে দিয়ে কাঁধে চড়িয়ে হেঁটে যাচ্ছে। রুশানীর পৃথিবী বলতে শুধু এক বাবাই ছিলো। বাবার মৃত্যুর পর পৃথিবী নড়েবড়ে গেছে। শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি সে। নীলাংশের মায়া হয়। বয়স তো খুব বেশি নয়। মানবিক দিক থেকেও মর্মাহত হয় সে। রুশানী কাঁদতে কাঁদতেই লিফট বেয়ে দুজনের সাথে উপর তলায় পৌঁছায়। দরজার সামনে আসার ঠিক আগমুহূর্তে দুর্বল শরীর নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। মাথা ঘুড়িয়ে পড়তে নিলে এক হাত চেপে ধরে তানজিমা। নীলাংশকে ইশারা করে,রুশানীকে ধরার জন্য। নীলাংশ বিনাবাক্য ব্যয়ে রুশানীর হাত ধরতেই রুশানী কান্নারত দূর্বল টালমাটাল শরীর এলিয়ে দেয় নীলাংশের ওপর। নীলাংশ কোনোমতে সামলিয়ে কলিং বেল বাজালো। দরজা খুলে বেরিয়ে আসলো পায়রার নির্মল মুখশ্রী। নীলাংশ অনিচ্ছা সত্ত্বেও পায়রার থেকে চোখ সরিয়ে ভেতরে আসলো। রুশানীকে পাশে বসাতে চাইলো। কিন্তু রুশানী হুঁশ হারিয়ে কান্না করছে। কে পাশে আছে, সে খেয়াল পর্যন্ত নেই। নীলাংশকে আঁকড়ে ধরে বুকে মাথা রেখেই ফুপিয়ে যাচ্ছে। নীলাংশ নিরুপায় হয়ে ওভাবেই বসে রইলো।
প্ল্যানিং মতোই পায়রার থেকে দূরে থাকলো। নীলাংশ বুঝতে পারছে, রুশানীর সঙ্গে দেখে পায়রা খুব কষ্ট পাচ্ছে। একদিকে প্রেয়সীকে দেয়া দুঃখ বুকে ব্যাথার উপদ্রব ঘটালেও, তাঁকে সারাজীবনের জন্য নিজের করে পাওয়ার আনন্দের তুলনায় তা ম্লান। কিন্তু একদিন কাটতেই নীলাংশ পায়রার কান্নায় ভেঙে যাওয়া মুখ দেখে সহ্য করতে পারলো না। তাই ঠিক করলো, পুরো ঘটনা বিশ্লেষণ না করলেও রুশানীর সঙ্গে যে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই সেটুকু খুলে বলবে।
খাওয়া দাওয়া শেষে পায়রার রুমে যেয়েই লক্ষ্য করে পায়রার নাজেহাল অবস্থা। অনুতপ্ত হয় মনে মনে।
সে ভেবেছিলো, পায়রাকে সহজেই সবটা বুঝিয়ে বলবে কিন্তু পায়রার সন্দেহপূর্ণ দৃষ্টি আর কথার তিক্ত বিষাক্ত বাণ নীলাংশের রাগ উঠিয়ে দিলো। রাগ ওঠার প্রধান কারণ হচ্ছে, সে তো পায়রাকে কথা দিয়েই গিয়েছিলো তারপরও কেনো পায়রা তাঁকে বিশ্বাস করতে পারলো না! উপরন্ত পায়রার দেয়া হাতের আকস্মিক ধাক্কায় পায়ের পাতায় ব্যাথা পাওয়ায় সব মিলিয়ে সে ভুলেই গেছে, এখানে আসার উদ্দেশ্য রেগে যাওয়া নয় বরংচ প্রেয়সীর রাগ ভাঙানো। অতঃপর, যা হওয়ার তা-ই হলো, দু পক্ষের অবুঝ রাগে এক অলিখিত ভাঙ্গন ধরলো। কেউ কাউকে না কিছু বোঝালো, আর না বোঝার চেষ্টা করলো। নীলাংশ ঠিক করলো পায়রার সঙ্গে বিয়ের আগমুহূর্ত পর্যন্ত সে কথাই বলবে না। নীলাংশ কল্পনাও করতে পারেনি, দুরত্বটা কয়েক মিনিট, দিন কিংবা সপ্তাহের নয়। দূরত্ব গুটিকয়েক বছরের। একটা গল্পেরই, দুজন মানুষের কাছে দুটো ভিন্ন ভিন্ন গল্প হয়ে উঠলো।

হলুদের দিন নীলাংশ আর রুশানী পাশাপাশি বসে আছে। আশেপাশের মানুষেরা হাসিঠাট্টা করে হাসাচ্ছে। তাদের মধ্যের আসল কথাটা কেউ জানেনা বলে দুজনর ব্যবহার স্বাভাবিক। রুশানী আজ অন্য দিনের তুলনায় খুশি। তাঁর কারণ সাহির আজ তাঁকে গভীর রাতে হলুদ লাগাতে আসবে। কতদিন পর, চেনা পরিচিত মুখটা দেখবে সে! মন পুলকিত হয়ে গেছে। নীলাংশের মনটাও কিছুটা আবেগে আপ্লূত। সে এটাও ঠিক করেছে, রাতের নিস্তব্ধতায় একবার লোকচক্ষুর আড়ালে গিয়ে লুকিয়ে পায়রাকে একটু হলুদ ছুঁইয়ে দিবে। মেয়েটা নিশ্চয়ই খুব অবাক হবে! যে কেউ দুজনকে হাসতে দেখে অন্য রকম কিছু ভাবতে বাধ্য । কিন্তু, কাছে এসে তাদের কথোপকথন শুনলে হতভম্ব হবে। নীলাংশ রুশানীকে সাহিরের ব্যাপারটা লুকিয়ে রাখার জন্য খোঁচা দিয়ে চেতাচ্ছে। রুশানী দুই একবার প্রতিবাদ করে লজ্জা পাচ্ছে। এমনই দৃশ্যের পায়রা দূর থেকে সাক্ষী হলো। অবুঝমন এতোটুকুই বুঝলো, ভালোবাসার মানুষটা তাঁকে ধোঁকা দিয়েছে, বেইমানি করেছে, কথা রাখেনি, নতুন কাউকে খুঁজে নিয়েছে।

আর এর পুরো ঘটনাটা তানজিমা লক্ষ্য করলেন। তিনি এটাও দেখলেন পায়রা পুরনো জামা কাপড় পড়ে বাড়ি থেকে বের হচ্ছে। প্রথমে একবার থামাতে চাইলেও মনে মনে ভাবলেন,’কী দরকার ডেকে আনার! যাক আপদ বিদায় হয়েছে।’ কিন্তু একবারও বিবেক জাগলো না, অন্ধকার শহরে কী করে নবযৌবনা মেয়েটা চলাচল করবে! হিংস্র পশুগুলো মেয়েটাকে কী আদৌও বাঁচতে দিবে! তিনি পুরো ঘটনাটা দেখেও না দেখার ভান করে কাজের বাহানা দিয়ে চলে গেলেন।

হঠাৎ-ই এক খবরে নীলাংশের আত্মা কেঁপে উঠলো। রায়ানা হন্তদন্ত হয়ে এসে সবাইকে বলল-

‘পায়রাকে পাওয়া যাচ্ছে না। ‘

তানজিমা অবাক হলেন না। পাশে নীলাংশ চমকে উঠলো। শুকনো ঢোক গিলে অস্থির কন্ঠে বলল-

‘পাওয়া যাচ্ছে না! ‘

রায়ানা হাঁপাতে হাঁপাতে বলল-

‘হুম, কোথাও নেই। আমি পুরো ছাঁদ, ফ্ল্যাটসহ সব খুঁজেছি। ‘

নীলাংশ বিচলিত হলো। ভাবুক গলায় বলল-

‘এতো রাতে কোথায় যাবে! ‘

নীলাংশ আরেকবার খুঁজল। হতেও তো পারে এখানেই কোথাও আছে। দুটো ছাঁদ, সুবিশাল ফ্ল্যাটের আনাচে-কানাচে খোঁজার পরও যখন পায়রার টিকিটাও পাওয়া গেলো না তখন নীলাংশের মাথা চক্কর দিলো ৷ কোথায় যেতে পারে! এত রাতে নিশ্চয়ই একা চলাচল করাটা ভীষণ বিপদজনক। রাত তখন একটা বেজে পনেরো মিনিট। একঝাঁক অস্থিরতার বোঝা মাথায় করে বেরিয়ে গেলো বাসা থেকে। এলাকার এ মাথা থেকে ও মাথা পুরোটা খুঁজেও যখন পেলো না তখন পাগলের বেশে বাসায় ফিরলো। চোখ মুখ কিছুক্ষণের মধ্যেই শুকিয়ে যা তা অবস্থা। কী মনে করে যেনো পায়রার জন্য বরাদ্দকৃত ঘরটাতেই পদার্পণ করলো পুনরায়। সবাই নীলাংশকে ভেতরে যেতে দেখে রুমের বাহিরে দাঁড়ালো ৷ নীলাংশ আলমারি খুলতেই যা বোঝার বুঝে নিলো। নতুন জামা কাপড় গুলো একভাবে থাকলেও পায়রার নিজস্ব ব্যাগটা নেই। নীলাংশ কয়েক দিন আগেই পায়রাকে একটা নতুন ফোন দিয়েছিলো, সাথে কয়েক হাজার ক্যাশ। যা নিজের জমানো টাকা দিয়ে কিনেছিলো পায়রার জন্য। অথচ, কে জানতো এত যত্ন করে কেনা জিনিস গুলোর স্থান হবে এই আলমারির এক কোণায়! সবশেষে টেবিলে থাকা চিরকুটটা হাতে তুলে নিলো সে। পায়রার লেখা গুটিগুটি অক্ষর চোখে পড়লো।

‘প্রিয়রা তো আমাদের হৃদয়ের সবচেয়ে উঁচু স্থানে থাকে তাই না? কিন্তু আমি বোধ হয় কখনো আপনার প্রিয়জন হতে পারিনি সুন্দর সাহেব।

আমি নাহয় আপনার জীবনে এক অপ্রিয়া হয়েই থেকে যাবো!’

সাদা চিরকুটের কালচে অক্ষর গুলোতে নীলাংশের চোখের কোণ থেকে গড়ানো রঙহীন অশ্রুতে রঞ্জিত হলো। কাঁপা হাত থেকে চিরকুট নিচে পড়ে গেলো। ক্ষণ দুই পরেই নীলাংশের দেহ ধপ করে ফ্লোরে পড়ে রইলো। অর্ধঅচৈতন্য শরীরেই নীলাংশ মলিন মুখে উচ্চারণ করলো-

‘প্রিয়দের চাইলেও কখনো অপ্রিয়র তালিকায় রাখা যায় না, তুমি বুঝি এটা জানোনা! ‘
.
.

টানা একমাস প্রচন্ড রকমের জ্বর ভর করলো নীলাংশের শরীরে। কখনো চৈতন্য তো কখনোবা অচৈতন্য হয়ে। জ্বরের ঘোরে নীলাংশ দিন দুনিয়ার খেই হারিয়ে ফেললো। হাসপাতালের ফিনাইলের গন্ধে ক্লান্ত হয়ে গেলো নাসিকারন্ধ্র। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও মন মস্তিষ্কে বিরাট এক পরিবর্তন হলো। অসুস্থ মনের ঔষধি আর পাওয়া গেলো না। খাওয়া নাওয়া থেকে চোখ বোজাতেও এক অবহেলার ছাপ। ততদিনে রুশানী সবাইকেই তাদের প্ল্যানের কথা জানিয়ে দেয়।
সবাই অবাক হলেও তানজিমা ভীষণ ভয় পেয়ে যান। নিজের ছেলের করুণ অবস্থা তাঁকে উপলব্ধি করায়, বড় ভুল হয়ে গেছে। মনে মনে খুব করে চান, হারিয়ে যাওয়া মেয়েটা ফিরে আসুক। ছেলেটাকে সুস্থ করে দেক ৷ কিন্তু হায়! কেটে গেছে ছয় মাস। মনে মনে চাইলেও নিজের দোষ সবার কাছে স্বীকার করতে রাজি নন।

মাঝে ঘটলো আরেকটি দুর্ঘটনা। সেদিন সকালে সবেমাত্র সবাই খেতে বসেছে। এমন সময় প্রতিবেশী শ্রাবণী আফরোজ গ্রাম থেকে ফিরে এসেছেন। তাদের ফ্ল্যাটের উপরেরটাই তাঁর। গ্রামের থেকে বানানো পিঠা বাটিতে করে দিতে এলেন। ভেতরে এসে সবার বিধ্বস্ত অবস্থা দেখে বুঝতে পারলেন কিছু একটা ঘটেছে। রূপসার সঙ্গে তাঁর আলাপ আলোচনায় সখ্যতা গড়ে উঠেছিলো। মধ্যবয়স্ক শ্রাবণী মানুষ হিসেবে ভালোই। রূপসা ধীরে ধীরে সবটা খুলে বলেন। পায়রাকে একদিন দেখেছিলেন এই বাসায়। কলেজ ইউনিফর্ম ছিলো পড়নে। নীলাংশকে খাওয়ার টেবিলে রায়ানা জোড় করে টেনে আনছে এমন সময়, শ্রাবণীর একটি কথায় সবাই বিস্ফোরিত নয়নে তাকালো। তিনি তানজিমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বললেন –

‘তানজিমা ভাবি, নীলাংশের হলুদের দিন যে মেয়েটাকে আমরা বাড়ি থেকে বের হতে দেখলাম ঐ মেয়েটাই কী পায়রা ছিলো?’

তানজিমা হকচকিয়ে গেলেন। ইশ! তিনি ভুলেই গেছিলেন সেদিন পায়রার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকার সময় হুট করেই শ্রাবণী এসে তাঁকে বলছিলো-

‘চেনা চেনা লাগছে মেয়েটাকে, ঘোমটায় চেহারা বুঝতে পারছি না। মেয়েটা কে ভাবি?’

তানজিমা কিছু না বলেই চলে গেছিলেন। কিন্তু শ্রাবণীর এখনো ব্যাপারটা মনে আছে। কারণ, পায়রার মতো পেছন থেকে লাগছিলো বলেই তিনি জিজ্ঞেস করছিলেন।

নীলাংশ টলমল চোখে তাকিয়ে রইলো। কাঁপা পায়ে এগিয়ে মায়ের কাছে এসে বলল-

‘মম, তুমি পিচ্চিকে যেতে দেখেছিলে?’

তানজিমা কী বলবেন বুঝতে পারলেন না। আমতা আমতা করে বললেন –

‘ইয়ে মানে… হ্যা। ‘

নীলাংশ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো। নিরুত্তর হয়ে গেলো। আয়মান সাহেব এগিয়ে আসলেন। পারিবারিক ব্যাপারে শ্রাবণী আর থাকতে চাইলেন না। তিনি বেরিয়ে যেতেই আয়মান সাহেব চিৎকার করে রেগে বললেন –

‘তুমি দেখেছিলে, তাহলে মেয়েটাকে আঁটকাওনি কেনো?’

তানজিমা তবুও নির্নিমেষ চোখে বললেন –

‘কারণ, আমি চাইনি মেয়েটা আমার বাড়িতে থাকুক। ‘

‘তানজিমা! ‘

‘চিল্লাবে না, নীলের বাবা! আমি কখনোই মেয়েটাকে পছন্দ করতাম না। রুশানীর সঙ্গে বিয়েটা দিয়ে আমি নীলের মাথা থেকেও ভূত নামাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু, এবারও ঐ অসভ্য, অনাথ মেয়েটার জন্য আমার ছেলের জীবনটা বিপর্যস্ত হলো। মেয়েটা মরলেও শান্তি দেবে না.. ‘

এত বছরের সংসারে প্রথম বার স্ত্রীর গায়ে হাত তুললেন তিনি। তানজিমা বিস্মিত মুখে তাকিয়ে আছেন। বিশ্বাসই হচ্ছে না, আয়মান সাহেব তাঁকে এই মাত্র সর্বশক্তি প্রয়োগ করে চড় বসিয়ে দিয়েছেন গালে। আয়মান সাহেব, পায়রার বাড়ি ছাড়ার দিন উপস্থিত ছিলেন না। ডাক্তারি পেশায় প্রায়ই রাতে অপারেশন থাকে। তিনি হাসপাতালেই ছিলেন। পরদিন খুব মর্মাহত হয়েছিলেন৷ নিজের বন্ধুকে দেয়া কথা রাখতে না পারায় অপরাধবোধ কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছিলো। অসুস্থ শরীরে চিল্লাচিল্লির এক পর্যায়ে বুকে তীব্র ব্যাথার আক্রমণ হলো। তানজিমা চড় খেয়ে রাগে একের পর তিক্ত বাণ ছুঁড়ে দিচ্ছিলেন। রাগের মাথায় তিনি আয়মান সাহেবকে বাহুতে অল্প খানিকটা ধাক্কা দিতেই তিনি ছিটকে নিচে পড়ে যান। ভার হওয়া শরীরটা তাল হারিয়ে মাথায় ও কোমরে জোরে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। তানজিমা বুঝতেই পারেননি মৃদু ধাক্কায় পড়ে যাবে সে। তিনি ধরতে এলে নীলাংশ সরিয়ে দেয় তাঁকে। দ্রুত উঠিয়ে নেয়। আয়মান সাহেব বেহুশ হয়ে গেছেন। অবস্থা ভালো না দেখে এম্বুলেন্স কল করা হয়। কিন্তু, অক্সিজেন সাপ্লাই দেরিতে হওয়ায় হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ডাক্তার পর্যবেক্ষণ করে বলেন, কয়েক মাস আগে থেকেই হার্টের অসুখ হয়েছে। আজ একসাথে এতোটা স্ট্রেস নিতে না পারার ফল হার্ট অ্যাটাক।

শোক ছেয়ে যায় সবখানেই। নীলাংশ কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলো না। একের পর এক ধাক্কা তাঁর জীবনটা দুর্বিষহ হয়ে গেছিলো। তানজিমা অপরাধবোধে বিদ্ধ হয়ে নিজের ঘরেই পড়ে থাকেন। রূপসা একাই যতটুকু পারেন করার চেষ্টা করেন। অপূর্ব পায়রার যাওয়ার পর অনেকটাই চুপচাপ হয়ে গেছিলো। বাড়ির এই অবস্থা থেকে দূরে রাখতে রূপসা হোস্টেলে পাঠিয়ে দেন। রায়ানা ও আশরীন দুজনেরই বিয়ে হয়। ঝলমলে পরিবারটা ভেঙে কয়েকশ টুকরোতে পরিণত হলো। নীলাংশ সাত বছরে পারেনি মায়ের ভুলগুলো ক্ষমা করতে। সম্পর্কের সুরগুলো হারিয়ে গেছে যেনো। তা আদৌও মিলবে কিনা তা নিয়ে সকলেই সন্দিহান!

চলবে-
কাল দিতে পারিনি তাই আজ বড় করে দেয়ার চেষ্টা করলাম। পড়াশোনার চাপে লেখা হয়ে ওঠেনি কাল।
যেহেতু, পর্ব গুলো বড় । তাই লিখতে সময়ের প্রয়োজন। রাত এগারোটা পেরিয়ে গেলে কেউ আর অপেক্ষায় থাকবেন না। সাধারণত ঐ সময়েই পোস্ট হয়। গতকালের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here