“স্বপ্নচূড়ার আহ্বান”
(দ্বিতীয় অংশ ও শেষ)
‘চাচা, ফর্সা করে লম্বা দেখতে একটা মেয়ে যে এই বাড়িতে থাকতো! মেয়েটা কী এসেছে? ‘
‘নাম কী? ‘
‘ইসরাত সেহরি পায়রা। ‘
বাড়ির দারোয়ান মতিউল পান খেয়ে লাল হয়ে যাওয়া দাঁত গুলো বের করে একগাল হাসলো। সামনে দাঁড়ানো সুদর্শন লোকটার দিকে তাকিয়ে বলল,
‘পায়রা ম্যাডামের কথা কইতাসেন! হ, হে তো দেড় বছর যাবৎ এই বাড়িতেই আছে। ‘
স্তব্ধ হয়ে গেলো স্বপ্নীল৷ মুখে প্রাপ্তির এক চিলতে হাসি ছড়িয়ে পড়লো। বুকে হাত রেখেও বুঝতে পারলো, হার্ট বিটটা আগের তুলনায় একটু বেশি জোরেই দৌঁড়াচ্ছে।
আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেছে সে। কত কত বার খালি হাতে ফিরে গেছে ! সাত বছর আগে বিদেশ বিভূঁইয়ে পাড়ি জমালেও মনটা তো এখানেই রেখে গেছিলো।
দুই বছর পর যখন পায়রাকে বিয়ে করার জন্য বাংলাদেশে ফিরলো তখন শুনলো, পায়রা নিখোঁজ।
কেউ জানে না সে কোথায়। দিশেহারা বোধ হচ্ছিল তার। নিদারুণ যন্ত্রণায় মরিয়া হয়ে উঠেছিল। দুই বছর আগেও এসেছিলো সে। কিন্তু তখন পুরনো দারোয়ান ছিলো। গত বছর মামা মারা যাওয়ার পর অনেকটাই ব্যস্ত হয়ে গেছে। তাই আর তখন আসতে পারেনি। একা একা জীবনটা কতটা কঠিন তা ভাবতেও বুক ফুঁড়ে হতাশার শ্বাস বের হয়ে আসে। এখন আর সেসব হবে না, পায়রাকে একেবারে নিজের করে নিবে সে। মুখে হাসি ফুটিয়ে ভাবল, পায়রা এখন কতটা পরিবর্তন হয়েছে! অনেক বড় হয়েছে নিশ্চয়ই!
দারোয়ানের দিকে তাকিয়ে বলল-
‘চাচা আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। পায়রা আগের ফ্ল্যাটেই থাকে? ‘
মতিউল ভ্রু কুচকে ভাবুক গলায় বললেন,
‘আগে কই থাকতো, তা তো জানিনা। আমি দেড় বছর ধইরা এই জায়গায়ই দেখসি। নীলাংশ বাবা আর পায়রা মা দুইজনের বিয়ার পর পরিবারের লগে এহানেই আছে। আল্লাহর রহমতে বাচ্চাও হইবো কয়দিন পরে। ‘
বাজ ভেঙেছে যেনো স্বপ্নীলের মাথায়। কপালের রগ গুলো এমন টনটন করছে মনে হয় না! হুম,পা দুটো থরথর করে কাঁপছে। পৃথিবীটা অন্ধকার হয়ে আসছে কেনো?নাকি স্বপ্নীলই শুধু চারপাশে আঁধার দেখছে!
পায়রার বিয়ে হয়েছে! কিন্তু নীলাংশের সঙ্গে কী করে!
স্বপ্নীল তো ভেবেছিলো, নীলাংশের ছোট বোন। তাহলে! কোথাও নিশ্চয়ই কোনো ভুল হচ্ছে। সে হাসার চেষ্টা করে বলল,
‘আপনার কোনো ভুল হচ্ছে চাচা। নীলাংশের বোন পায়রা, তাহলে ওদের বিয়ে হবে কীভাবে! ‘
মতিউল ভড়কে গিয়ে বললেন,
‘কীসব কও বাবা! বোন হইলে এতো ধুমধামে বিয়ে হইতো না। তুমি উপরে যাইয়া দেখো। ‘
স্বপ্নীল তা-ই করলো৷ চাচার অবশ্যই কোনো ভুল হচ্ছে। নাহলে, কী করে হয়! স্বপ্নীলের মন মানতে চায়না। ঘর্মাক্ত দেহে দুশ্চিন্তায় কলিং বেল বাজায় সে।
________________
নীলাংশ বিছানায় বসে আছে পায়রার পাশে। মেয়েটা এখনও ফুপিয়ে কেঁদে যাচ্ছে। নীলাংশ জানতোনা কী হয়েছিলো সেসময়। ডায়েরিটা পড়ার পরই পায়রা ফুপিয়ে বলে,
‘সুন্দর সাহেব, চলুন আমরা এক্ষুনি গ্রামে যাবো। ‘
নীলাংশ এতক্ষণ রাগার ভান করে থাকলেও এবার বিচলিত হয়ে এগিয়ে এসে পায়রাকে ধরে বলল,
‘কী হয়েছে, হঠাৎ গ্রামে যেতে চাও কেনো?’
‘তাঁরা বুবু, তাঁরা বুবু! ‘
নীলাংশ এতদিনে অসংখ্য বার তাঁরা নামটা শুনেছে।
হয়তো কবরটা দেখার জন্য এমন করছে ভেবে নীলাংশ বলল,
‘আচ্ছা ঠিকাছে যাবো, এখন তোমার শরীরটা ভালো না। জার্নি করতে নিষেধ করেছে ডক্টর। বেবি হওয়ার পর আমরা দু’জনেই যাবো। ‘
পায়রা কান্নায় কথা বলতে পারলো না৷ শুয়ে রইলো চুপচাপ। নীলাংশ মন ভোলানোর জন্য নানান রকম কথা বলতে শুরু করলো। মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেই প্রায় ঘুম এসে পড়েছিলো। এমন সময় কলিং বেলের আওয়াজে সজাগ হয়ে গেলো। নীলাংশ কিছুটা বিরক্ত হলো৷ এমন সময়ই কলিং বেল দেয়া লাগলো! পায়রাকে শুইয়ে রেখে বের হলো। কলি দরজা খুলে দিয়েছে। স্বপ্নীলকে দেখে চিনতে পারলো না। এর দরুন বাহিরেই দাঁড় করিয়ে রাখলো। নীলাংশ এসে দরজায় একজন লোককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে চমকে গেলেও পরমুহূর্তেই বুঝতে পারলো এটা স্বপ্নীল।
এই বাড়িতে যখন স্বপ্নীল এসেছিলো তখনই মোটামুটি পরিচয় ছিলো তার সাথে। টুকটাক কথাও হতো মাঝে মধ্যে। নীলাংশ মৃদু হেসে বলল,
‘আরে স্বপ্নীল ভাইয়া যে! এই মিনু ভাইকে বাহিরে দাঁড় করিয়েছিস কেনো! আসুন ভাইয়া। ‘
স্বপ্নীল খুব করে চাইল সৌজন্যেতামূলক হাসিটুকু হাসতে , কিন্তু দুশ্চিন্তায় ঠোঁট দুটো কোনো ভাবেই প্রশস্ত হলো না। সে চোখ এপাশ ওপাশ করে ভেতরে আসলো। চোখদুটো হাহাকার করছে মেয়েটাকে দেখতে। নীলাংশের সঙ্গে সোফায় বসে আছে স্বপ্নীল। নীলাংশ নানান কথা জিজ্ঞেস করছে, এতদিন সে কোথায় ছিলো, কী করেছে, কিন্তু স্বপ্নীল হা হু করে জবাব দিচ্ছে। তার ধ্যান এখানে নেই। একপর্যায়ে জিজ্ঞেস করল,
‘পায়রা কোথায়? ‘
নীলাংশ খানিকটা অবাক হলেও সামলে বলল,
‘ওর শরীরটা ভালো না, তাই রুমে ঘুমাচ্ছে। ‘
বলতে বলতে রুম থেকে বের হয়ে আসলো পায়রা। কান্না ও আধোঘুমে চোখদুটো ফোলা ফোলা। নীলাংশ বের হয়ে যাওয়ার পর এপাশ ওপাশ গড়াগড়ি করেও ঘুম আসেনি। তাই, কে এসেছে, দেখার জন্যই বের হয়ে আসলো। স্বপ্নীল পায়রাকে দেখে একমুহূর্তে খুশি হলেও পরেই পায়রার পড়নে ঢোলা জামা আর উর্ধ্বগামী উদর দেখে থমকে দাঁড়ালো। তাহলে সত্যি পায়রার বিয়ে হয়েছে এবং মা-ও হবে! নীলাংশের বোন নয় পায়রা।
পায়রা হতবাক হয়ে গেলো। সে ভাবতেই পারেনি কখনো এই মানবের সঙ্গে তার দেখা হবে। আলতো হেসে সোফার সামনে এসে বলল,
‘স্বপ্নীল ভাইয়া! কেমন আছেন?’
স্বপ্নীল চমকানো মুখটা নত করে বলল,
‘ভালো আছি। ‘
‘এতদিন কোথায় ছিলেন আপনি?’
‘ছিলাম বাহিরের দেশেই, মামা মারা যাওয়ার পর ব্যস্ত ছিলাম খুব। আজ এদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম, তাই ভাবলাম দেখা করেই যাই। ‘
‘ইন্নালিল্লাহ! যাই হোক, ভালো করেছেন। আজ খেয়ে তারপর যাবেন৷ ‘
স্বপ্নীল অতি সন্তর্পণে কার্নিশে জমা জলটুকু মুছে ঘড়ি দেখে ব্যস্ত ভঙ্গিতে বলল,
‘না না, আমার অনেক কাজ। আজ উঠি, অন্য কোনো সময় পেট ভরে খেয়ে যাবো। ‘
দরজার সামনে এসে পড়লো স্বপ্নীল। পায়রা তার কিছুটা পেছনেই দাঁড়িয়ে ছিলো। স্বপ্নীল খুব ধীর পায়ে এসে অদ্ভুত দৃষ্টি দিয়ে বলল,
‘পায়রা! ‘
পায়রা চমকে উঠে বলল,
‘জ্বী? ‘
‘তুমি অপেক্ষা করোনি কেনো? ‘
পায়রা কী বলবে বুঝতে না পেরে নলল,
‘মানে? ‘
‘কিছু না। আসি। ‘
দ্রুত পা চালিয়ে বের হয়ে গেছে স্বপ্নীল। নীলাংশ পায়রার কাঁধে হাত রেখে বলল,
‘ বুঝতে পারলে পিচ্চি? আমি বলেছিলাম মনে আছে?সে বোধ হয় তোমাকে পছন্দ করতো। ‘
পায়রা স্বপ্নীলের যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে আনমনে বলল,
‘কিছু জিনিস না বোঝাই উত্তম।’
________________
স্বপ্নীলের রাস্তা দিয়ে নিথর পায়ে যাওয়াটা আরও একজন মানুষ নিভৃতে দেখে নিলো। আশরীন বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। সে জানে কী হয়েছে, খালার বাসায় বেরাতে এসেছিলো বহুদিন পর। স্বপ্নীল যে এসে কাউকে খোঁজ করে তা জানে। দারোয়ানের কাছে জেনেছিলো। জীবনের প্রথম প্রেম নাকি কখনো ভোলা যায়না। তা-ই হয়ত রাস্তার দিকে তাকিয়ে কার্নিশ গড়িয়ে দুই ফোঁটা জল পড়লো। বিরবির করে বলল,
‘মরিচীকার পেছনে ছুটতে ছুটতে আমরা আমাদের জীবনের সুখকে অজান্তেই হারিয়ে ফেলি। তার জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ আপনি স্বপ্নীল। ভালোবাসায় বাড়িয়ে দেয়া হাতটা আঁকড়ে ধরতে হয় সঙ্গে সঙ্গেই, তা বোধ হয় আপনি জানতেন না। একটা কথা আছে,
-‘তুমি তাঁকে ভালোবাসো যে তোমাকে ভালোবাসে। যে তোমাকে ভালোবাসে না, তার কাছে শূন্যতা ছাড়া কিছুই পাবেনা তুমি। ‘
এমন সময় আশরীনের ছেলে ফায়জান চিৎকার করে কাঁদছে। ব্যাথা পেয়েছে ভেবেই ব্যাকুল হয়ে ছুটে যায় সেদিকে। হয়ত এভাবেই সংসারে বাঁধনে হারিয়ে যাবে,
কিশোরীর এক তরফা প্রেমের গল্প!
_______________
তিন মাস পর-
অপারেশন থিয়েটার থেকে ভেসে আসছে বাচ্চার কান্নার শব্দ। সবাই উচ্চ স্বরে আলহামদুলিল্লাহ বললো। নার্স বের হতেই নীলাংশ জিজ্ঞেস করলো,
‘আমার ওয়াইফ ঠিক আছে তো? ‘
নার্স হেঁসে বললেন,
‘জ্বী, নরমাল ডেলিভারিতে সমস্যা হয়নি। আপনার মেয়েকে ধরুন। ‘
নীলাংশ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে ছোট মেয়েটাকে কোলে তুলে নেয়। আনন্দে আত্মহারা সে। ছোট মেয়েটা বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে দেখছে। তানজিমা, রূপসা খুশিতে কান্না করছেন৷ নীলাংশ সব মনমালিন্যের অবসান ঘটিয়ে মেয়েকে তানজিমার হাতে তুলে দিয়ে বলল,
‘মম,ধরো তো। তোমার নাতনিকে রাখো, আমি তোমার বউমাকে দেখে আসি। ‘
তিনি আনন্দে দিশেহারা হয়ে গেলেন। নীলাংশের কথার মানে বুঝতে পেরেছেন। নীলাংশ কতদিন পর মম ডাকলো! ক্ষমা করে দিয়েছে নীলাংশ।
__________________
মার্চ মাসের শুরু। গ্রামের আঁকাবাকা সরু পথের সমাপ্তি হয় যখন সাদা গাড়িটি পুরনো একটি বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়। উঠোনের সামনে দামী গাড়ি থামতেই আশেপাশের মানুষেরা অবাক হয়ে জড়ো হয়ে যায়। গাড়ি থেকে নেমে আসে পায়রা। পাশ থেকে নীলাংশ, তার হাতে আগলে আছে ছয় মাসের ফুটফুটে
পিয়ানা। পায়রা দুই চোখ ভরে দেখছে গ্রামটা। এখানেই যে জন্মেছিলো সে। কেটেছে স্মরনীয় এক শৈশব। অদ্ভুত এক অনুভূতিতে শিহরিত হচ্ছে সারা অঙ্গ। নীলাংশ হাস্যজ্জ্বল মুখে পায়রার হাত ধরে বলে,
‘সামনে চলো। ‘
মাথা নাড়িয়ে সামনে এগিয়ে যায় পায়রা। ছোট্ট টিনের বাড়িটার দরজায় ঠকঠক করে। কিন্তু তেমন কোনো সাড়াশব্দ নেই। খেয়াল হয়, পুরনো একটি তালা ঝুলে আছে সেখানে। পায়রা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
নীলাংশ পাশের একজন লোককে বাড়ির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতেই তিনি বলেন,
‘এই বাড়িতে যারা থাকতো তারা বছর কয়েক আগেই মারা গেছে। বিভা আপা আর ভাই তো যক্ষ্মায়ই শেষ। অনেক ভুগছে দুজনেই। বিভা আপা অনেক কান্না করতো, পোলা মাইয়া নাই। শেষ সময়ে কেউ পাশেও আসে নাই। ‘
পায়রার চোখ অজান্তেই ভিজে উঠেছে। মা বাবাকে দেখতেই তো এসেছিলো সে। চোখের দেখাটুকু দেখতে। হয়ত, দু’জনের শাস্তি ছিলো মৃত্যুর সময়টা কাউকে পাশে না পাওয়া । আল্লাহ ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না। গ্রামে এসে আরও একটা খবর শুনলো পায়রা৷ তুহিন, যে পায়রাকে চেহারার জন্য অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছিলো। সেই তুহিন একটা এক্সিডেন্টে পঙ্গু হয়ে গেছে। প্রকৃতি তাঁকেও তার প্রাপ্য বুঝিয়ে দিয়েছে।
নীলাংশ ও পায়রা দাঁড়িয়ে আছে তাঁরার কবরটার সামনে। পায়রার মনটা খারাপ হয়ে। যদি তাঁরা বুবু সে সময়টা আত্মহত্যা না করতো তাহলে হয়ত তার জীবনটাও আজ সুন্দর হতো। দেরিতে হলেও ভালোবাসার একজন মানুষ আসতো। বিষাক্ত জীবনটাকে অমৃতে সাজাতো। হায়!
আমরা মানুষ বড়ই অধৈর্য। দুঃখটুকুকে আঁকড়ে ধরে সুখকে হারিয়ে ফেলি। আমরা বুঝতেই পারিনা, দুঃখের পরই আসে সুখ। কবরটার সামনে আরও একজন মানুষ বসে আছে, সে আভাস বোস। হ্যা, পায়রা আভাসের গ্রামে আসার খবর পেয়েছিলো। আজ তাঁরার মৃত্যু বার্ষিকী। এক সপ্তাহ আগেই আভাস এসেছে। কোনো কথা বলেনি কারও সঙ্গে। ভারাক্রান্ত মনে বসে আছে। পায়রা কবরটার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে, তাঁরা বুবু তুমি তো জানতেই না, তোমার একটা পাগল প্রেমিক তোমার জন্য কতটা পাগলামি করে। কতটা ভালোবাসে তোমাকে!
গোধুলি লগ্ন। আকাশের তীর্যক সূর্যটা ডুবে যাবে কিছু সময় পরেই। লালাভ রক্তিম পরিবেশের রঙ। কী অপূর্ব সুন্দর! আভাস একমনে তাকিয়ে থাকে। এমনই এক শেষ বিকেলে দেখেছিলো এক শ্যামবতীকে। খিলখিল হাসিতে মুখরিত ছিলো আশপাশ। গাছটায় হেলান দিয়ে দাঁড়ায় চোখ বন্ধ করে। মুখে হালকা হাসি ফোটে।
দমকা এক হাওয়া শরীর ছুঁয়ে যাচ্ছে। আভাস কল্পনায় অনুভব করে,কোনো অদৃশ্য নারী অবয়ব আভাসের কাঁধ জড়িয়ে বলছে,
‘তোমার পাশে আছি আমি, তোমার তাঁরাক্ষী! ‘
___________________
পুকুরের পাড়ে বসে আছে একজোড়া কপোত- কপোতী। অর্ধ ডুবন্ত সূর্যটার দিকে তাকিয়ে আছে নীলাংশ পায়রা। নীলাংশের হাতের মুঠোয় পায়রার নরম হাতটা৷ চোখজোড়া উন্মুক্ত আকাশের পানে।
কোলে ছোট পিয়ানা ঘুমিয়ে আছে। শান্ত হয়ে ঘুমাচ্ছে। নড়াচড়া কম। পায়রা নীলাংশের দিকে তাকিয়ে বলে,
‘সুন্দর সাহেব!’
নীলাংশ চমৎকার হাসলো। ঝুঁকে বলল,
‘বলো পিচ্চি! ‘
পায়রা নীলাংশের কাঁধে মাথা রেখে সুখের হাসি ফুটিয়ে বলল,
‘আপনি পাশে থাকলে, স্বপ্নরা ভীষণ সুন্দর! ‘
(সমাপ্ত)
[দীর্ঘ উপন্যাস “স্বপ্নচূড়ার আহ্বান” আজ শেষ হলো। এই দীর্ঘদিনে অসংখ্য বাঁধা বিপত্তির পরও যেসব পাঠক পাঠিকারা আমার সঙ্গে ছিলেন। তাদেরকে আন্তরিক ভাবে ভালোবাসা জানাই। আশা করি , সবাইকে আগামীতেও পাশে পাবো। সম্পূর্ণ উপন্যাসটি কেমন লাগলো, তা জানাতে রিভিউ দিতে পারেন। আমার গ্রুপ অথবা গল্পের যেকোনো গ্রুপেই রিভিউ দিতে পারবেন,বেস্ট রিভিউদাতাকে উপহার দেয়া হবে। অসংখ্য ধন্যবাদ ও ভালোবাসা]