স্বপ্নের প্রেয়সী 💖 পর্ব- ১০

0
2849

💖 স্বপ্নের প্রেয়সী 💖
Part – 10
______________________

রেডি হয়ে বসে আছি ।
আমি ই মনে হয় সবার আগে রেডি হয়ে আছি ।
উফফফ বুঝি না আমাকে সবাই কী পাগল ভাবে ।
আমাকে রেডি হতে বলে সবাই পরে রেডি হচ্ছে।
অবশেষে 30 মিনিট অপেক্ষা করার পর সবাই রেডি হয়ে বের হলেন।
সবাই বেশ ফরমাল লুকে বাহ সবাই কে বেশ লাগছে তো দেখতে ।
কিন্তু এখনো জানি না আমি ,আমরা কোথায় যাচ্ছি ।
কাউকে জিজ্ঞাসা করব ?
না থাক কারো সাথে কথা বলবো না , সবাই ফারহান ভাইয়া কেই ভালোবাসে ।
চুপচাপ বসে রইলাম , রিফাত ভাইয়া এসে আমাকে বলল কিরে এভাবে বসে আছিস কেন ?
যাওয়ার ইচ্ছে নেই নাকি ?
আমি কিছু বললাম না ।
এখন কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছে না ।
দুপুরে এত গুলো স্টুডেন্ট এর সামনে ফারহান ভাইয়া আমাকে ঠাপ্পর দিলো।
আমি কি এমন করেছি হ্যা যার জন্য ঠাপ্পর দেওয়া লাগলো ।
________________
অবশেষে আমরা বের হলাম ।
কিন্তু এখনো আমরা কোথায় যাচ্ছি আমি জানি না ।
ভালো লাগছে না আমার।
আমাদের গাড়ি থামলো বিশাল বড় এক কমপ্লেক্স এর সাণনে , আমি হা হয়ে আছি ।
অসাধারণ এই কমপ্লেক্স টা , লাইটিং আরটিফিশিয়াল ফ্লাওয়ার সব কিছু চোখ ধাঁধানো সুন্দর।
আমি একটা জায়গা আসার পর ও জানি না আমরা এখানে কেন এসেছি । কিন্তু এখন আমার মনে আর কোনো অস্বস্তি নেই।
এতো সুন্দর সব কিছু অস্বস্তির কোনো প্রশ্নই নেই ।
আমরা ধীরে ধীরে হেঁটে চলছি , আমি চারিদিকে চোখ বুলালাম।
অসম্ভব ভালো লাগছে।
ভেতরে প্রবেশ করা মাত্রই দেখলাম অনেক মানুষের
ভির ।
আমরা নিজ তলা থেকে লিফ্টে করে আঠারো তলাতে উঠলাম।
এই কমপ্লেক্স টা সম্পূর্ণ নতুন।
মনে হচ্ছে কোনো গ্রান্ড সেলিব্রেশন চলছে ।

আঠারো তলা তে উঠা মাত্র এখানে আমাদের অনেক পরিচিত দের দেখতে পেলাম।
আমার মনে প্রশ্ন জাগালো যে

– আজকের এই পার্টি টা কার অনারে হচ্ছে।
দুর যার অনারে হোক আমার কি তাতে আমি আমার মতো আনন্দ করবো।
সবাইকে ওয়েলকাম ড্রিক দেওয়া হলো ।
সবাই যে যার মতো পার্টি টা উপভোগ করছে।
আমি ও আমার মতো আনন্দ করতে লাগলাম।
একপাশে আমি কিছু ডল দেখতে পেলাম।
ওয়াও কি সুন্দর ডল গুলো বিশাল আকারের ডল গুলো।
আমি ডল গুলোর কাছে গেলাম।
ডল গুলো কে হাত দিয়ে ছুঁয়ে দিলাম।
ডল গুলো বেশ তুলতুলে , আমি বাচ্চা দের মতো খেলতে লাগলাম।
আহা কি মজা ।
হঠাৎ কেউ পেছন থেকে বলল পিচ্ছি ই রয়ে গেলি,
বড় আর হলি না ।
চির চেনা সেই ভয়েস চিনতে আমার একটু ও অসুবিধা হলো না।
হুম ফারহান ভাইয়াই , আমার তো ইচ্ছে করছে এই লোক টাকে ধরে কাঁচা চিবিয়ে খাই ।
অসহ্য লাগছে
কিন্তু ওনার সামনে আমি যে ভিজে বেড়াল।
কোনো রখম পেছন ফেরলাম কিন্তু ওনার দিকে তাকানোর সাহস আমার নেই।
মাথা নিচু করে আছি হঠাৎ ফারহান ভাইয়া টান মেরে সাইডে নিয়ে আসলো।
আমি ভয়ে কাঁপছি এই লোকটা কি আমাকে আবার ঠাপ্পর মারবে ।
ফারহান ভাইয়া আমার কাঁধে হাত রেখে বললেন খুব শখ না তোর নন্দন এ যাওয়ার।
আজকে তোকে নন্দন এর বাপ ঘুরিয়ে আনবো।
আমি কাঁচুমাচু হয়ে বললাম
– মানেনন ।
ফারহান ভাইয়া বলল
– মানে টা বুঝাবো একটু পর ই । জাস্ট ওয়েট এন সি।
আমাকে হাত ধরে বাইরে নিয়ে আসলেন ।
তারপর ই ফারহান ভাইয়া রিফাত ভাইয়া কে ডাকলেন।
রিফাত ভাইয়া এসে বলল
– হুম ফারহান বল ।
– রিফাত ফারাবির তো খুব শখ ছিলো নন্দন এ যাওয়ার ওর শখ টা মিটিয়ে দিলে কেমন হয়।
– একদম ঠিক বলেছিস ।
আজকে ফারাবির নন্দন এ যাওয়ার সাধ মিটিয়ে দিবো।
আমি বললাম
– মানে টা কি ।
রিফাত ভাইয়া ফারহান ভাইয়া কে চোখ মেরে বলল
– গেলেই বুঝবি ।
ফারহান ভাইয়া বলল
– ওকে যা সবাইকে বলে আয় ।
রিফাত ভাইয়া বলল
– ওকে ব্রো । যাবো আর আসবো।
রিফাত ভাইয়া চলল আর আমি রিফাত ভাইয়ার যাওয়ার পানে চেয়ে আছি।
কি হচ্ছে এসব আমার তো কিছু ই মাথায় ঢুকছে না ।
এরা কি আমায় হাত পা ভাঙার প্লেন করছে নাকি ।
ভেবেই ঢোক গিললাম।
আল্লাহ্ আমাকে বাঁচিয়ে দিয়ো।
________________

বেশ কিছুক্ষন পর রিফাত ভাইয়া আসলো।
বলল ফারহান ডান ।
তারপর ফারহান ভাইয়া আর রিফাত ভাইয়া হাই ফাইপ দিল।
মাঝখানে আমি ই হলাম নীরব দর্শক।
চুপচাপ দেখেই যাচ্ছি , কি হচ্ছে তা বোঝার উপক্রম নেই।
ফারহান ভাইয়া রিফাত ভাইয়া কে বলল, সবাই এসে পড়লে আমাকে কল করে জানাস এই বলে পকেটে হাত দিয়ে কোথায় একটা চলে গেল।
বেটা বজ্জাত হনুমান কি প্লেন কষতে গেল কে জানে।
আর এরা তো কেউ আমাকে কিছু বলছে না ।
আর আমাদের সাথে আর কে কে যাবে ।
আমার মাথা হ্যাং হয়ে গেল।
দুর আর কিছু বলবই না।
________________

পাঁচ মিনিট পর দেখলাম মনিকা আপু , রিমা আপু আর সুমি আপু আসছে।
এই দিকে আমার ভাই টা তো মনিকা আপুর দিকে এক ধ্যানে তাকিয়েই আছি।
আমি না চাইতে ও হেসে দিলাম।
আমার হাসির শব্দে রিফাত ভাইয়ার ধ্যান কাটলো ।
মনিকা আপু , রিমা আপু , আর সুমি আপু হলো তিন বান্ধবী প্লাস কাজিন।
ওরা এবার ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে পড়ে।
অর্থাৎ রিফাত ভাইয়া আর ফারহান ভাইয়ার দুই ব্যাচ জুনিয়র।
রিমা আপু আর সুমি আপু ও যথাক্রমে রানা ভাইয়া আর জামান ভাইয়ার প্রেমে হাবু ডুবু খাচ্ছে ।

( এদের সবার প্রেম হয়েছিল ঝগড়া করতে করতে ।
পুরো সিনেমা , প্রথমে ঝগড়া পড়ে প্রেম , হাহা ।
তখন রিফাত ভাইয়ারা দশম শ্রেণীর পরীক্ষার্থী আর মনিকা আপুরা নবম শ্রেণীতে এডমিশন নিয়েছে মাত্র।
মনিকা আপুরা স্কুলে নতুন ছিলো, তাই কিছুই জানতে না , ভাইয়া রা তখন আড্ডা দিচ্ছিলো কিছু দিন পর ই তো পরীক্ষা। তাই তিন জন স্কুল ক্যাম্পাসে আড্ডা দিচ্ছিলো আর ফারহান ভাইয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলো ।
তখনই মনিকা আপুদের স্কুলে এন্ট্রি হলো ।
আর যেহেতু মনিকা আপুরা অনলাইনে এডমিশন নিয়েছে তাই ওরা ওদের ক্লাস রুম কোনটা জানতো না ।
আর রিফাত ভাইয়াদের দেখে জিজ্ঞাসা করেছে যে

– আমরা নতুন এডমিশন নিয়েছি ,একটু নবম শ্রেণীর ক্লাস রুম কোনটা বলে দিবেন ।
ওনারা ও ভদ্রলোকের মতো বলে দিলেন।
মনিকা আপুরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে চলে গেলেন।
তার কিছুক্ষণ পর ই মনিকা আপুরা এসে ওদের বালি ছুড়ে মারল।
কারন ওরা মিথ্যে বলেছে যার কারনে সিনিয়র দের ক্লাসে ঢুকে পড়ে ওদের কাছে ওরা লজ্জা পেয়েছে।
রিফাত ভাইয়ারা ও কম না, এদের ঝগড়া দেখে কে।
ফারহান ভাইয়া হঠাৎ এসে পুরো হুমড়ি খেয়ে পড়ে ।
তারপর আগে ওদের ঝগড়া থামিয়ে জিজ্ঞাসা করে কি হয়েছে ।
তখন মনিকা আপু রা সব বলে ফারহান ভাইয়া ওদের তিন জনকে মনিকা আপুদের কাছে ক্ষমা চাইতে বলে।
তারপর আর কি ওরা ক্ষমা চায় আর ফারহান ভাইয়া ওদের ক্লাস দেখিয়ে দেয় ।
এর পরপর ই একে বারে তিন জনের সাথে তিন জনের ভাব জমে যায় ।
শুরু হয় এদের প্রেম কাহিনী ।)

__________________________

মনিকা আপু এসেই রিফাত ভাইয়ার পেটে গুঁতো মেরে বলে ।
লজ্জা নেই নাকি এভাবে তাকিয়ে আছো কেন।
রিফাত ভাইয়া বলল
– তো তাকাবো না নাকি ।
মনিকা আপু আবার রিফাত ভাইয়া কে হাত দিয়ে গুঁতো মারে ।
আমার সাথে সবার কুশল বিনিময় হয় ।
তারপরই রিফাত ভাইয়া ফারহান ভাইয়া কে ফোন দিয়ে আসতে বলে।
ফারহান ভাইয়া রানা ভাইয়া আর জামান ভাইয়া কে নিয়ে আসেন ।
ওমা এরা তো দেখি সব কাপল হয়ে গেল।
তাহলে আমি ই কাবাব মে হাড্ডিয়া ।
পরক্ষণেই ভাবলাম দুর আমি একা কেন হতে যাবো
এই হনুমান ও তো কাবাব মে হাড্ডিয়া।
ফারহান ভাইয়ারা এসে মনিকা আপুদের সাথে কুশল বিনিময় করলো ।
সবাই কিছুক্ষণ গল্প করলো তারপর ই ফারহান ভাইয়া ঘড়ি দেখে বলল ইটস 7 ও ক্লক তো যাওয়া যাক ।
আমি বিরক্তি নিয়ে ওনার দিকে তাকালাম ।
ওমা আমি এতক্ষণ খেয়াল ই করি নি ফারহান ভাইয়া কে তো পুরো জোস লাগছে।
আশে পাশে তাকিয়ে দেখলাম কিছু মেয়েরা চোখ দিয়ে ওনাকে গিলে খাচ্ছে।
আমি মনে মনে বললাম
আরে চোখ দিয়ে না গিলে এটাকে নিয়ে যা না ।
তাহলে আমার প্রান টা জুরোয় ।
এক মুহূর্ত শান্তি নেই ।
কিন্তু সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে ফারহান ভাইয়া জাম কালারের সুট পড়েছে।
এমা আমার সাথে মেচ হয়ে গেল যে ।
আমি কি এখন আমার জামা কাপড়ের বিষয়ে ও শান্তি পাবো না ।
উফফফ এই লোকটাকে তো পানিতে ডুবিয়ে দেওয়া উচিত।
ফারহান ভাইয়া আমাকে বলল
– কিরে যাওয়ার ইচ্ছে নেই নাকি ।
কি আপাদমস্তক চিন্তা করছিস ।
এখন কি তুলে নিয়ে যাবো তোকে।
আমি বললাম
– নাঅঅ আমি একাই যেতে পারবো।
কিন্তু
আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই ফারহান ভাইয়া বলল
– এতো ভেবে তোর কাজ নেই ।
তোকে নন্দনের সাধ মিটিয়ে দিবো আজকে।
রিফাত ভাইয়া বলল
– তো ফারহান যাওয়া যাক।
– হুম চল ।
রিফাত ভাইয়া আবার বলল
– ফারহান আজকে তুই ই ফারাবি কে নন্দনের সাধ মিটিয়ে দিস।
আমি গেলে কেঁদেই দিবে ।
ফারহান ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে চোখ পাকিয়ে বলল
– অবশ্যই ।
আমার জন্য নাকি নন্দন যাওয়া হলো না বন্ধুদের কাছে বলে বেড়াচ্ছে।
তো আমার ও তো একটা দায়িত্ব বোধ আছে তাই না।

আমি শুকনো ঢোক গিললাম ।
তার মানে
– আমি যখন পলি দের বলছিলাম ।
তখন ফারহান ভাইয়া সব শুনে নিয়েছেন।
হায় হায় আমি যে ওনাকে বজ্জাত হনুমান ও বলেছি ।
এখন তো আমার কান্না পাচ্ছে কি হবে এখন ফারহান ভাইয়া কি আমাকে ছাদ থেকে ফেলে দিবে নাকি ।
আমার হাত পা ভেঙে যাবে তো ।
আমার হাত ধরে ফারহান ভাইয়া নিচে নামিয়ে নিয়ে আসলো।
ফারহান ভাইয়া কি সত্যি আমাকে ফেলে দিবে ।
আল্লাহ্ গো আমাকে বাঁচিয়ে দিয়ো।
আমরা সবাই নিচে নেমে আসলাম ।
তারপর সবাই কোথাও একটা যাওয়ার জন্য রওনা হলাম।
আমি আল্লাহ্ কে ডেকে চলছি, কি যে হয় কে জানে ।

( আসসালামুআলাই রির্ডাস । জানি না আজকের পার্ট কেমন হয়েছে ।
আমি নিজে ও একজন গল্প প্রেমি । কালকে আমি গল্প পড়তে পড়তে এতো ই বিভোর ছিলাম যে গল্প লেখার কথা মনেই ছিল না । কিন্তু আমার রির্ডাস রা তো আমার গল্পের জন্য অপেক্ষায় থাকবে । তাই সকাল বেলা গল্প লিখতে হলো ।
কেমন হলো পার্ট টা জানাবেন আর আমার লেখা গল্প পেতে পেজ এ লাইক আর বন্ধুদের ইনভাইট দিয়ে পাশে থাকবেন ।
অবশ্যই একটি কমেন্ট করবেন । আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে গল্প লিখতে আরো বেশি অনুপ্রেরণা জোগায় , তো ভালো থাকবেন আর আমার গল্প আপনারা বিভিন্ন গ্রুপে রিভিউ দিতে পারেন )

বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাপ করবেন ।

💜 হ্যাপি রিডিং 💜

চলবে
ফাতেমা তুজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here