বান্ধবীর ভাই যখন বর 💗পর্ব-৪

0
5103

💗 বান্ধবীর ভাই যখন বর 💗
Part – 4
_________________________
4,,,,,
নীলের কথাতে মিসেস সুলতানা বেশ ভয় পেয়ে যান।
তার খেলার কিছুটা হলে ও যে নীল ধরে ফেলেছে, তা নীলের কথার মাঝে ই বুঝতে পারছেন ওনি।
নীল মিসেস সুলতানার হাতে একটা চেইক ধরিয়ে দিয়ে বলল
– ফুপি আম্মা , এর জন্য ই তো এতো রঙ ঢং তামাশা।
দিয়ে দিলাম, আপসোস আমি যথাসম্ভব গুরুজন দের সম্মান করি। না হলে আজকের এই মুহূর্তে আপনি মুখ দেখানোর সুযোগ পেতেন না।

মিসেস সুলতানা চুপসে গেলেন । কারন এই মুহূর্তে কিছু বলা মানেই নিজের পায়ে নিজে কুড়োল মারা।
সুলতানা বেগম চুপচাপ সমস্তটা দেখতে লাগলেন।
আশে পাশের সবাই নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
কারন তারা কিছু বললেই না তাদের উপর গুলি চড়ে।
বিয়ে বাড়িতে এমন পরিস্থিতির স্বীকার কেউ ই হয় নি বোধহয় ।

______________________

পরি কে আনা হলো, পরি সমস্ত টা এখনো নিরব দর্শকের মতো দেখে যাচ্ছে বললে ভুল হবে ওও যে নিজের মধ্যে ই নেই।
শুধু মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে নীল এসেছে,,,,,,,
বিয়ের কার্যক্রম শুরু হলো , কিছুক্ষণ পর
পরির মা বাবা কে ও আনা হলো।
পরির বাবা মা চেঁচামেচি শুরু করে দিয়েছেন।
পরির বাবা রেগে নীল কে বললেন
– এই ছেলে আমার মেয়ে কে ছাড়ো , কি হচ্ছে এসব।
আর তুমি ই বা কে ?
তোমাকে আমি পুলিশে দিবো, এখনি পুলিশ কে ইনফর্ম করছি।
নীল বাঁকা হেসে বলল
– শশুর মশাই ক্ল্যাম ডাউন।
পুলিশ কে ইনফর্ম করে কোনো লাভ ই হবে না।

পরির বাবা,,,,, আফজাল হোসেন চেঁচিয়ে বললেন
– মানে টা কি।
আমি এখনি পুলিশ কে ইনফর্ম করবো।
আমার মেয়ে কে জোড় করে বিয়ে করা হচ্ছে।
এখনি সব ছলছাতুড়ি যাবে চলে।

নীল স্টেজ থেকে লাফিয়ে নেমে পরির বাবার সামনে আসলো।
তারপর পকেট থেকে ফোন বের করে কাউকে একটা কল দিলো।
আফজাল হোসেন রাগ মিশ্রিত কন্ঠে বললেন
– কাকে ফোন করছো?
আমার সাথে ফাজলামি করছো ?

নীল শান্ত স্বরে বলল
– আপনি ই তো পুলিশ কে ইনফর্ম করবেন বললেন।
জামাই থাকতে শশুর কেন কষ্ট করবে , তাই তো হেল্প করছি।

আফজাল হোসেন কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই নীল আফজাল হোসেনের কানে ফোন ধরে বলল
– কথা বলুন শশুর মশাই।

আফজাল হোসেন কিছু বলবে তার আগেই কমিশনার এর আওয়াজ পেলেন,,,, তাই কিছু বললেন না।
আফজাল হোসেন জোড়ে বললেন
– স্যার এই ডাফার টা আমার মেয়ে কে জোড় করে বিয়ে করছে।
আপনি তাড়াতাড়ি আপনার ফোর্স পাঠান।
এই রাসকেল টা কে এখনি জেলে পুরে দিন।

নীল বুকে হাত গুঁজে দাড়িয়ে খুব মনোযোগ দিয়ে কথা গুলো শুনছে ।
মনে হচ্ছে ও কোনো সিনেমার শুটিং দেখছে।
আফজাল হোসেন নীলের দিকে তাকাতেই নীল ইনোসেন্ট ফেস নিয়ে বলল
– শশুর মশাই আপনি আপনার এক মাত্র জামাই কে পুলিশে দিতে চাচ্ছেন।
এটা কি ঠিক?

আফজাল হোসেন জোড়ে বললেন
– ডাফারর,,,, রাসকেল।

পুলিশ কমিশনার আফজাল হোসেন কে শান্ত হতে বললেন।
আফজাল হোসেন বললেন
– এমন অবস্থায় কি করে শান্ত থাকবো।
আপনি তাড়াতাড়ি আপনার ফোর্স পাঠান।

কমিশনার দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন
– উই আর সরি মিস্টার হোসেন।
আমাদের কাছে ইনফরমেশন আছে আপনি আপনার মেয়ে কে জোড় করে বিয়ে দিচ্ছেন।
আর তাছাড়া নীল স্যার এর সামনে আমাদের ক্ষমতা নেই কিছু করার।

আফজাল হোসেন চেঁচিয়ে বললেন
– হোয়াট।
আপনি কি সব বলছেন।
আমাকে কি পাগল মনে হচ্ছে?
দেশের কি কোনো আইন কানুন নেই নাকি?

কমিশনার হালকা হেসে বললেন
– আইন কানুন থেকেই বলছি।
আপনাদের নামে যে প্রুফ আমাদের কাছে দেওয়া হয়েছে তাতে আপনাদের ওপর ই চার্জ নিতে হবে।
আর তার উপর নীল স্যার যেখানে আছেন সেখানে তো কোনো প্রশ্ন ই আসে না।
উই আর সরি মিস্টার হোসেন।

আফজাল হোসেন রাগে কটমট করছেন।
ফোন টা ছুঁড়ে ফেলে দিলেন।
যার কারনে ফোন টা কয়েকটা টুকরো হয়ে গেল।

নীল জোড়ে শব্দ করে হেসে বলল
– বিয়ে হয়ে যাক শশুর মশাই।
তারপর আপনাকে 100 টা ফোন এনে দিবো, সেগুলো না হয় ধীরে ধীরে ভাঙবেন।

আফজাল হোসেন তেড়ে এসে নীলের কলার ধরলেন। তারপর বললেন
– আমার মেয়ে কে ছার , না হলে খুন করে ফেলবো তোকে।

নীল কলারের দিকে একবার তাকিয়ে বলল
– জীবন থাকতে নয়, নিশ্বাস যতক্ষণ আছে পরি কে আমি ছাড়ব না।
তা ও ঐ ডাফার ,,,,, ইউসলেস প্রান্তর জন্য কখনোই নয়।
পরি রাজি থাকলে ও ছাড়তাম না, আর এখানে তো পরি রাজি ই নয়।

আফজাল হোসেন নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে ঠাটিয়ে চর বসিয়ে দিলেন নীলের গালে।
নীলের লোকে রা তেড়ে আসতে লাগলেই নীল হাত দিয়ে বারন করে।
তারপর ওদের দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে বলে
– আমি বলেছি তোদের?
বলেছি ?
ওনার দিকে তেড়ে আসার সাহস কি করে হয় ?
ফারদার যেন এমন না হয়,,,,, মেরে ফেলে রেখে দিবো।

নীলের রাগি কন্ঠে চারপাশ স্তব্ধ হয়ে যায়।
আফজাল হোসেন ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন।

আর পরি এখনো সে ভাবে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
আশে পাশের কোনো কিছুতেই ধ্যান নেই ওর।
ওকে দেখে মনে হচ্ছে ট্রোমা তে চলে গেছে।
নীল আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলো ধর্ম মতে বিয়ে করবে না, শুধু মাত্র রেজিস্ট্রি করবে।
বিয়ে না করে পরি কে তার সাথে নিয়ে যেতে পারবে না এমন নয় , কিন্তু একটা অবিবাহিত মেয়ে কে নিয়ে গেলে লোকে পরির নামে কলঙ্ক ছড়িয়ে দিবে।
আর নীল তা কখনোই হতে দিবে না , তাই সকলের সামনে রেজিস্ট্রি করবে আর পড়ে সবার মতামত নিয়ে ধর্ম মতে বিয়ে।
কারন নীল জানে পরি এখন ট্রোমা তে আছে।

নীল পরির দিকে একপলক তাকিয়ে নিলো।
কি মায়াবি মেয়েটা , কিন্তু সে কতোটা কষ্ট দিয়েছে ওকে।
পরির ভালোর জন্যই তো দিয়েছে , যদি একটু ও জানতো এতো বড় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
তাহলে সেই প্রথম দিন ই পরি কে বুকের ভেতর আগলে রাখতো। কখনো ই দূরে সরিয়ে রাখতে না।

নীল মলিন হেসে ভাবলো, আর কষ্ট দিবো নারে তোকে।
এবার খুববব ভালো রাখবো , তুই শুধু আমার।
_________________

নীল রেজিস্ট্রি পেপার
এ সাইন করে দিলো।
পরির দিকে পেপার এগিয়ে দিলে ও পরির কোনো রেসপন্স নেই।
নীল পরির গালে দু হাত রেখে বলল
– পরি আমার সাথে যাবে তো তুমি ?
পরি সাইন করে দেও পেপার এ।
আমি তো তোমার নীল , আমার কথা শুনবে না তুমি ?

পরি নীলের দিকে তাকিয়ে হালকা মলিন হেসে সাইন করে দিলো।
মনে হচ্ছে ওও পুতুল ,,,, যাকে নীল কোনো ইন্ট্রাকশন দিলে তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে যাচ্ছে ।
অবশেষে নীল আর পরির আইন মতে বিয়ে সম্পূর্ণ হলো।

( আসসালামুআলাই রির্ডাস ।
গল্প টি কেমন হচ্ছে জানাবেন প্লিজ। জানি একটু পেঁচানো কিন্তু এই প্যাঁচ বুঝতে হলে শেষ অব্দি পড়তে হবে।
আশা করি শেষ অব্দি পাশে থাকবেন। আমি আমার বেস্ট দিয়ে চেষ্টা করবো।
আমার লেখা গল্প পেতে পেজ এ লাইক ফলো আর বন্ধুদের ইনভাইট দিয়ে পাশে থাকুন )

বি: দ্র: ভুল ত্রুটি মাপ করবেন ।

💙 হ্যাপি রিডিং 💙

চলবে
ফাতেমা তুজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here