প্রিয় অসুখ
পর্ব ১৭
মিশু মনি
.
শীতুল বালিশের নিচ থেকে ডায়েরিটা বের করতে যাবে এমন সময় শ্রবণা বাঁধা দিয়ে বললো, ‘থাক। আমি শুনতে চাই না।’
শীতুল শ্রবণার কথা শুনলেও মা ওর কথায় জোর দিলেন না। বরং শীতুলকে জোর দিতে লাগলেন চিঠিটা বের করে পড়ার জন্য। এরকম একটা চিঠি পড়লে যে কেউ কল্পনার রাজ্যে অনায়াসে প্রবেশ করতে পারবে। শুনলে নিশ্চয়ই শ্রবণার ভালো লাগবে। শীতুল ডায়েরিটা বের করে সামনে আনলো। শ্রবণা সেদিকে না তাকিয়ে হনহন করে দরজা দিয়ে বেরিয়ে যেতে যেতে বললো, ‘মা তোমাকে একটা কথা বলি, শীতুল আপনাকেও বলে রাখি। আমার এসবে ভীষণ রকম এলার্জি আছে। এসব পুতুপুতু প্রেম ভালোবাসা দেখলে রাগে গা জ্বলে যায়। দয়া করে আমার সামনে এসব আর কখনো বলবেন না। আমাকে আমার মত থাকতে দিন।’
কথাটা বলেই শ্রবণা দ্রুত বেরিয়ে গেলো। মা ও শীতুল দুজনেই স্তব্ধ। সামান্য চিঠি পড়তে বলায় এত বেশি রিয়েক্ট করে ফেলবে মা এটা আশা করেননি। শ্রবণার কথায় ভড়কে গেছেন মা। অবাক হয়ে উনি ছেলের মুখের দিকে তাকালেন।
শীতুল জানে শ্রবণা কেন চিঠিটা শুনতে চায়নি। ও যে মনেপ্রাণে শীতুলকে চেয়েছিলো, সেই মানুষটা অন্য কারো চিঠি পড়লে শুনতে ভালো না লাগারই কথা। শীতুলের অস্বস্তি লাগছে। শ্রবণা নিশ্চয়ই নিজের রুমে গিয়ে কান্নাকাটি করছে। উফফ কি বাজে একটা ব্যাপার।
শীতুল উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বললো, ‘মা, তুমি কিছু মনে কোরো না। ডিপ্রেশনের সময় মেয়েদের মাথা ঠিক থাকে না। আর একুশ বছর বয়সের পর কোনো মেয়ে যদি ডিপ্রেশনে পড়ে, বুঝতে হবে সত্যিই সে অনেক দুঃখী। আমি দেখছি।’
শীতুল শ্রবণার ঘরের দরজায় এসে শব্দ করলো। শ্রবণা বললো, ‘দরজা খোলা আছে।’
শীতুল ঘরে ঢুকে দেখলো শ্রবণা জানালার পাশে বসে উদাস দৃষ্টিতে বাইরে তাকিয়ে আছে। শীতুল এসেছে সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। শীতুল এসে শ্রবণার পাশে বসলো। অনেক্ষণ পর শীতুলের দিকে তাকালো শ্রবণা।
শীতুল বললো, ‘মন খারাপ এটা অন্যকে বুঝতে দিতে নেই। অন্যের সামনে সর্বদা হাসিখুশি থাকতে হয়।’
– ‘সুন্দর জ্ঞান দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। পাশে বসে থাকতে চাইলে চুপ করে বসে থাকুন নয়তো চলে যান।’
– ‘এত রেগে গেছো কেন? এত অল্পতেই রাগলে চলে? মানসিক ভাবে স্ট্রং হও মেয়ে। সবকিছু সহ্য করতে শেখো।’
– ‘মোটিভেশন দিতে এসেছেন?’
– ‘তা কিছুটা সত্য। আসলে মানুষের স্বভাব টাই এমন। সবাই নিজে যেমনই হোক না কেন, অন্যকে জ্ঞান দিতে ওস্তাদ। হা হা হা..’
শ্রবণা রেগে বললো, ‘এটা কি জোকস ছিলো? জোকস হলেও হাসার মত কোনো জোক না। হা হা করে হাসছেন কেন?’
– ‘তুমি কি খুব বিরক্ত হচ্ছো?’
শ্রবণা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো, ‘না। আমার মনে হচ্ছে আমি আপনাদের বিরক্তির কারণ হচ্ছি। প্লিজ আপনারা অনুমতি দিন, আমি চলে যাই। সম্পর্কগুলো দূর থেকেই সুন্দর। একসাথে থাকতে গেলে কেমন অসহ্য হয়ে যায়।’
শীতুল কিছু বললো না। এই মেয়ের চোখেমুখে জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা দীপ্যমান। ওকে কিভাবে বোঝাবে সেটাই বুঝতে পারছে না শীতুল। খানিকটা ভেবে বললো, ‘দেখো শ্রবণা, তুমি ডিপ্রেশনে আছো। তোমার কোনোকিছু ভালো লাগে না, কাউকে সহ্য হয় না। এমনকি তুমি নিজের সাথেও সুখী নও। এভাবে তো একটা জীবন চলতে পারে না। সম্পর্ক দূর থেকে সুন্দর মানলাম। কিন্তু আমি যে জন্মের পর থেকে আমার মায়ের সাথে আছি, কই কখনো তো আম্মুকে আমার বিরক্ত লাগে নি। কখনো মাকে অসহ্যকর মনে হয়নি। বরং মা একটু চোখের আড়াল হলেই আমার খারাপ লাগে। তুমিও মাকে মা ভাবতে চেষ্টা করো, দেখবে অনেক ভালো আছো।’
শ্রবণা শান্ত হলো। শীতুলের কথাটা যৌক্তিক। কিন্তু শ্রবণা রাগ করতে না চাইলেও আচরণে রাগ প্রকাশ পেয়ে যায়। এটা আপনা আপনি হচ্ছে। এটাও সত্যি যে শ্রবণা নিজের সাথেই নিজে শান্তিতে নেই। সারাক্ষণ মনে একটা অশান্তি বিরাজ করে। তবে এটা মানতেই হবে, গতকাল দিনটা অনেক সুন্দর ছিলো। এরকম যদি প্রতিটা দিন হতো!
শীতুল প্রসঙ্গে পাল্টানোর জন্য বললো, ‘তোকে শাড়িতে সুন্দর লাগছে রে।’
– ‘আপনার মুখে আমাকে তুমি শুনতে সুন্দর লাগে।’
শীতুল হেসে বললো, ‘হুমম, ঠিকাছে। তাহলে এখন মন খারাপ করে না থেকে বাইরে থেকে ঘুরে আসি চলো।’
শ্রবণা মুখ গম্ভীর করে বললো, ‘আমার কোথাও যেতে ইচ্ছে করছে না। আপনি চাইলে চুপচাপ আমার পাশে বসে থাকতে পারেন।’
– ‘বসে থাকতে পারবো তবে চুপচাপ থাকতে পারবো না। একটা কথা জিজ্ঞেস করি?’
শ্রবণা মাথা ঝাঁকিয়ে বললো, ‘হুম।’
শীতুল বললো, ‘তুমি কি সত্যিই প্রেম জিনিসটা অপছন্দ করো নাকি আমার মুখ থেকে অন্য কারো কথা শুনতে চাও না?’
শ্রবণা নির্বিকার ভঙ্গীতে শীতুলের দিকে তাকালো। এমনভাবে তাকিয়ে রইলো যে শীতুলের শ্রবণাকে অনেক অসহায় মনে হতে লাগলো। যেন প্রশ্নের উত্তর সে মুখে দিতে চায় না। উত্তরটা শীতুল বুঝে নিক এমন একটা ভাব।
শীতুল উঠে দাঁড়ালো। কোনো কথা না বলে নিঃশব্দে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। শ্রবণা তাকিয়ে রইলো বাইরে। শাড়ির আঁচল জানালার উপর রেখে আলো ছায়ার খেলা দেখতে আরম্ভ করলো।
শীতুলের পায়ের শব্দ শুনেও মুখ ফেরালো না শ্রবণা। শীতুল আবারও এসে পাশে বসলো। শ্রবণার কোলে কিছু একটা এগিয়ে দিয়ে বললো, ‘দেখো।’
শ্রবণা অনিচ্ছাসত্ত্বেও নিজের কোলের দিকে তাকালো। মুহুর্তেই রিখটার মাত্রার ভূমিকম্পন হলো শ্রবণার বুকে। এমনভাবে চমকে উঠলো যে হৃদপিন্ড পর্যন্ত লাফিয়ে উঠলো।
হারিয়ে ফেলা প্রিয় ডায়েরিটা দেখে শ্রবণা নিজেকে সামলাতে পারলো না। চিৎকার করে আনন্দ উচ্ছ্বাস করতে যাবে এমন সময় শীতুল বললো, ‘দেখো না ডায়েরিটা? এটা আমার অপরিচিতার ডায়েরি।’
শ্রবণা যেভাবে লাফিয়ে উঠতে চেয়েছিলো ঠিক সেভাবেই থমকে গেলো। এই ডায়েরি শীতুলের কাছে কেন? আর এ কথার মানে কি!
শ্রবণা কৌতুহলী চোখে বললো, ‘মানে!’
শীতুল দেয়ালে হেলান দিয়ে বসলো। তারপর মুচকি হেসে বললো, ‘রাগ করলেও আজকে তোমাকে পুরোটা শুনতে হবে। কারণ আমি চাই না আজকের মত ওভার রিয়েক্ট তুমি আর কখনো করো।’
শ্রবণা ক্রমশ উত্তেজিত হয়ে উঠছে। নিশ্চয় ডায়েরির সাথে শীতুলের কোনো সম্পর্ক আছে। ও উৎসাহের সাথে বললো, ‘আজকে আমিও শুনবো। আমাকেও শুনতে হবে। আপনি না বললেও জোর করে শুনতে হবে। বলুন এটা কোথায় পেয়েছেন?’
শীতুল অনেক্ষণ জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে রইলো। কত কথা যে মনে ভেসে উঠছে তার ইয়ত্তা নেই। শ্রবণা আগ্রহ নিয়ে শীতুলের চোখের দিকেই চেয়ে আছে। ওর চোখেমুখে রাজ্যের কৌতুহল। একদিকে হারানো ডায়েরি ফিরে পেয়ে আনন্দ, অন্যদিকে শীতুলের কাছে ডায়েরিটা দেখে হাজারো প্রশ্ন। রহস্যের জট খুলবে কখন?
শীতুল একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। শ্রবণা শীতুলের হাত ধরে বললো, ‘বলবেন না? বলুন না প্লিজ?’
শীতুল বললো, ‘হুম। ডায়েরিটা আমি কুড়িয়ে পেয়েছিলাম। কিন্তু কখনো মনে হয়নি আমি ডায়েরি পেয়েছি। বরং সবসময় মনে হয়েছে এটা একটা মেয়ের স্বচ্ছ মন। যে মনের দিকে তাকালে আয়নার মত আমি নিজেকেই দেখতে পাই। জানো, এই স্বচ্ছ মনে হাজারো অনুভূতি আছে, শত শত কাব্য আছে, গল্প আছে। আমি সমস্ত গল্প পড়েছি, সমস্ত অনুভূতিকে আমার মাঝে অনুভব করেছি। সেই অপরিচিতাকে ধারণ করেছি আমার নিজের সত্তায়। কারণ কি জানো? ওই স্বচ্ছ মনের মাঝে আমি আমাকেই খুঁজে পেয়েছি। এরকম মানুষ যদি থেকে থাকে, তবে সেটা আমিই। আমি যদি ওর স্বপ্নের মত নাও হতে পারি, তবুও ওর স্বচ্ছ মনের কাছে আমি হার মেনে গেছি। পরাজিত হয়েছি নিজের কাছে। মেয়েটাকে কখনো দেখিনি, কখনো কণ্ঠ শুনিনি, এমনকি কোথায় থাকে তাও জানিনা। কিন্তু তার মনকে জানি, মনকে চিনি, মনের রাজ্যে সারাক্ষণ ঘুরে বেড়াই। আমি এই মনটার ই প্রেমে পড়েছি। সবাই বলে আমি নাকি পাগল, কিন্তু বিলিভ মি শ্রবণা। এই ডায়েরিটা কোনো সাধারণ ডায়েরি নয়। এটা আমার নিজের অব্যক্ত সব অনুভূতি। আমি আমাকে যেভাবে কল্পনা করি, আমার স্বপ্নের রাজ্যের সমস্ত ভাবনার সাথে ওর ভাবনা মিলে গেছে। আমি ওকে ভালো না বেসে থাকতে পারি তুমি বলো?’
দীর্ঘ সংলাপ শেষ করে শীতুল থামলো। কিন্তু “শেষ হইয়াও হইলো না শেষ” এর মত এর মধুর রেশ শ্রবণার কানে বারবার ধ্বনিত হতে লাগলো। নিজের প্রিয়জনের মুখে নিজেকেই ভালোবাসার কথা শুনে শ্রবণার এমন অনুভূতি হলো যে চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে ওর। আনন্দে নাকি কষ্টে সেটা বুঝতে পারছে না। কিন্তু বুকের ভেতর একটা অন্যরকম আর্তনাদ হচ্ছে, কিছু মেঘ সরে যাচ্ছে, কিছু শুভ্র ভালোলাগায় ছেয়ে যাচ্ছে। শ্রবণা স্থির হয়ে বসে থাকতেও পারছে না। আরো শুনতে ইচ্ছে করছে।
বললো, ‘মেয়েটাকে আপনি ডায়েরি পড়েই এত ভালোবেসে ফেলেছেন?’
শীতুল উত্তরে বললো, ‘বললাম তো এটা শুধু ডায়েরি নয়। আমার সমস্ত অনুভূতির গল্প গাঁথা এখানে। আমি যা, আমাকে ঠিক সেভাবেই এখানে আবিষ্কার করেছি। বিশ্বাস করো, আমি সেভাবে সকাল দেখি ওই মেয়েটাও সেভাবেই আমাকে নিয়ে সকাল দেখতে চায়। প্রত্যেকটা ভাবনায় আমার সাথে অদ্ভুত মিল। কি করবো বলো না তুমি?’
– ‘কি করেছেন? ডায়েরিটার মালিককে খোঁজেন নি আপনি?’
শীতুল হেসে ফেললো। হাসতে হাসতেই বললো, ‘প্রত্যেকটা মুহুর্ত খুঁজেছি রে। কোথায় খুঁজিনি বলতে পারবে? রাঙামাটিতে মনেহয় যত মেয়েকে দেখেছি সবাইকে জিজ্ঞেস করেছি, ডায়েরিটা কি আপনার? হাজারটা মেয়েকে জিজ্ঞেস করেছি আপনার নাম কি শ্যামলতা? কত জায়গায় পাগলের মত খুঁজেছি। ফেসবুকে ওর চিঠির উত্তর লিখে ওর চিঠিসহ পোস্ট করেছি। ফেসবুকে কম খুঁজিনি আমি ওকে। লাস্ট পর্যন্ত পোস্টার ছাপিয়ে শহরের দেয়ালে দেয়ালে লাগিয়ে দিয়েছি শ্রবণা।’
শ্রবণা অবাক হয়ে বললো, ‘ওই পোস্টার গুলো তাহলে এই মেয়েকে খোঁজার জন্যই ছিলো? ও মাই গড!’
– ‘হ্যাঁ রে। পোস্টারগুলো কিভাবে পাগলের মত দেয়ালে লাগিয়ে দিচ্ছিলাম তুমি তো দেখেছো।’
– ‘হ্যাঁ। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় আমি কখনো পোস্টারটার ভেতরের লেখাটা দেখিনি। কতবার আপনার আইডিতে গিয়েছি কিন্তু আপনার দেয়া পোস্ট আমার চোখে পড়েনি।’
– ‘তোমার আইডি ডিজেবল হয়ে যাওয়ার পর আমি পোস্ট দিয়েছিলাম মেয়বি।’
– ‘হুম। বিধাতার অদ্ভুত খেলা তাইনা? আপনি শত শত মেয়েক জিজ্ঞেস করেছেন আপনার নাম কি শ্যামলতা? কিন্তু আমাকেই কখনো বলেননি।’
শ্রবণা নিশ্চুপ হয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো। চোখের কোণে জল জমতে শুরু করেছে। শীতুল ওকেই এভাবে পাগলের মত খুঁজে বেরিয়েছে সেটা ভাবতেই পারছে না। এত আনন্দ হচ্ছে যে খুশিতে হয়তো পাগল হয়ে যাবে।
শীতুল বললো, ‘তুমি শ্যামলতা নামে কাউকে চেনো নাকি?’
– ‘আরে শ্যামলতা তো…’
এতদূর বলার পর আর বলতে ইচ্ছে করলো না শ্রবণার। আজকে সত্যিটা জানার পর আনন্দ হচ্ছে ঠিকই কিন্তু শীতুলকে ধরা দিতে ইচ্ছে করছে না। শ্রবণা যেভাবে কষ্ট পেয়েছে, সেই একই কষ্ট শীতুলকে দিতে না চাইলেও অন্তত শীতুলের মনে ভালোবাসাটা আরেকটু গাঢ় করে দিতে ইচ্ছে করছে। শীতুল যেন নিজে থেকেই বুঝতে পারে শ্রবণাই ওর শ্যামলতা। এইটুকু খেলা তো খেলতেই হবে। এতদিন যে এত কষ্ট শ্রবণাকে পেতে হয়েছে, তার কিছুটা কষ্ট তো শীতুলের বোঝা উচিৎ।
শ্রবণা বললো, ‘না চিনি না। কিন্তু খুঁজে দিতে হেল্প করতে পারতাম।’
– ‘সত্যি! আমি না পাগল হয়ে গেছি রে। শ্রবণা প্লিজ, ওকে এনে দিতে পারবি? আচ্ছা সরি এসব বলার জন্য। প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড।’
শ্রবণার চোখে পানি এসে গেছে। ও আচমকা শীতুলের বুকে মাথা রেখে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো। শীতুল কিছু বুঝে উঠতে পারলো না। শ্রবণার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলো, ‘পাগলী, কি হলো আবার?’
শ্রবণা শীতুলকে ছেড়ে দিয়ে একটা ভোঁ দৌড় শুরু করলো। ছুটতে ছুটতে বাসার পিছন দিকের বাগানের ঠিক মাঝামাঝি এসে একটা গাছে হেলান দিয়ে অনবরত কাঁদতেই লাগলো। শব্দ করে কেঁদে আজ থেকে সমস্ত কষ্টকে বিদায় জানাতে চায় শ্রবণা। বুকে জমে থাকা সব যন্ত্রণা ধীরেধীরে মুছে যেতে শুরু করেছে। কাঁদতে কাঁদতে হাফিয়ে যাচ্ছে তবুও শ্রবণার আজ কান্না থামাতে ইচ্ছে করছে না। এ জীবনে অনেক কষ্ট পেয়েছে ও। এই কান্নাই জীবনের শেষ কান্না হোক।
চলবে..