Torture with love 2😍Part-51

#Torture_with_love_season_2😍😍
#লেখিকা ( অনু )
#Part_51

বর্তমান সময়_____________________________

নীলা: আমার এখনও মনে হচ্ছে গল্প। গাইজ সিরিয়াসলি,,,?

নাদিয়া: এভাবে ওরা চলে গেলো,,,

লিসা: আজ ৪ বছর পর ওরা ফিরে এলো,,,

নদী: রাহুল জানতো নাকি ? অনু এই কলেজে পড়ে ??

মিহু: একদম না,,,জানলে হয়তো কখনও আসতোই না,,,কারন রাহুল এখনও অনুকে ভালোবাসে,,,আর তাই সে অনুর কথা রাখার জন্য হলেও কখনও আসতো না। আর দ্বিতীয় বার কষ্ট পাওয়ার জন্য কখনও রাহুল আসতো না।

নীল: রাহুল যদি জানতে পারে,,,যে মানিক এর সাথে অনুর রিলেশন ছিলো ?

মিহু: ছিলো,,,এখন আর নেই। ( মানিকের দিকে তাকিয়ে )

মেঘ: আর তোমার সানিম ?

মিহু: মেঘ ভালোভাবে কথা বলো,,,আমার সানিম মানে ? সানিম কে মন থেকে এখনও আমি বেস্টফ্রেন্ডই ভাবি,,,কিন্তু ওর উপর আমার অনেক রাগ,,,আমাকে না বলে চলে যাওয়ার জন্য,,,

মেঘ: হ্যাঁ রাগ তো হবেই না,,,ভালোবাসা যদি ছেড়ে চলে যায় ?

মিহু: তোমার যদি সেটাই মনে হয়,,,তো তুমি সেটাই ভাবতে পারো।

আবির: আহ্ গাইজ,,,তোরা এখন আবার ঝগড়া কেনো শুরু করলি ?

মিহু: আমি কিছু করিনি,,,তোর ফ্রেন্ড কে বল।

নিলয়: মেঘ তুই কেনো মিহুকে ভুল বুঝছিস ?

মানিক: বাহ্ বাহ্ বাহ্,,,হোয়াট এ লাভ স্টোরি ইয়ার,,,কিন্তু একটাই কষ্ট মিহু আমার,,,সেড ইন্ডিং,,,কি সুন্দর কথাগুলো,,,এতো ভালোবাসা ছিলো ২ জন এর মধ্যে,,,আমি তো অনু আর রাহুল এর মধ্যে কাবাব মে হাড্ডি হয়ে ছিলাম এতদিন,,,ভালোই করেছি ব্রেকআপ করে,,,এখন অনু আবার সেই আগের ভালোবাসা কে নতুন করে শুরু করুক,,,কি ঠিক বললাম তো গাইজ আমি ? ( করুন ভাবে,,,চোখ মুখ লাল করে )

মানিক কিছু না ভেবেই…….গিটার নিয়ে আছাড় দেয়……সবাই অবাক হয়ে…..ভয় পেয়ে যায়…….তারপর মানিক হলরুম থেকে বের হয়ে যায়……..হলরুম এর গেটটা অনেক জোরে বারি দিয়ে লাগিয়ে যায়………………..

মিহু: সরি গাইজ,,,আজকে আমি মানিক কেনো,,,তোদের কারো সাথে একমত হতে পারবো না,,,তোরা কি করে ভাবতে পারলি,,,এমন একটা কাজ অনু করবে,,,

সাগর: তোরা অনুর সাইন দেখলি তো,,,ধরে নিলি অনু এই কাজ করেছে।

নীলা: সত্যি কথা বলতে আমারও‌ বিশ্বাস হয়নি।

নাদিয়: কিন্তু কি করবো বুঝতে পারছিলাম না,,,সেই সময়।

নীল: আমি তো এখনও বিশ্বাস করিনা। অনু কাজটা করেছে।

মেঘ: গাইজ একটা কথা বলি ?

লিসা: বল ???

মেঘ: রাহুল আর অনুর ভালোবাসার গল্পটা কিন্তু খুব সুন্দর ছিলো,,,

নদী: ঠিক বলেছিস,,,মিহু আর সানিমের কাহিনী টাও সুন্দর ছিলো,,,ঐ সুমাইয়া টার জন্য ওদের ফ্রেন্ডশিপ টা নষ্ট হলো।

আবির: ইসসসস কেনো যে রাহুল রা চলে গেলো।

মিহু: রাহুল রা চলে না গেলে,,,আজ আমার আর অনুর সাথে তোদের কখনও দেখাও হতো না,,,হয়তো অনু রাহুল কে মেনে নিতো,,,এখানে এলেও তোদের সাথে কথা হতো না।

নিলয়: ভাগ্য কি করে ঘুরে যায় দেখ,,,

মিহু: সেটাই,,,অনুর রাহুল কে দেখে,,,কতটা কষ্ট হয়েছে সেটা আমি বুঝতে পেরেছি।

নীলা: ঐ,,,অনু যদি রাহুল কে মেনে নেয় এখন ( এক ঢোক গিলে )

নীল: মেনে নিতেই পারে,,,মানিক যদি অনুর সাথে ব্রেকআপ করতে পারে,,,অনুও রাহুল কে মেনে নিতেই পারে।

মিহু: নাহ্ আমি অনুকে চিনি,,,সেটা সম্ভব হতো,,,যদি মানিকের সাথে অনুর রিলেশন না থাকতো,,, অনু এখন কখনও ই রাহুলকে মেনে নিবে না,,,অনু এখন আরও বেশি রেগে আছে রাহুল এর উপর।

মেঘ: কেনো,,,অনু তো রাহুল কে ক্ষমা করে দিয়েছে,,,তাহলে ?

সাগর: অনুর রাগের চেয়ে,,,বেশি অভিমান রাহুল এর উপর।

নাদিয়া: মানিক যেভাবে রেগে আছে।

আবির: একদম ঠিক আছে,,,অনুকে কি করে পারলো ও ভুল বুঝতে,,,এখন রাহুলের কাহিনী শুনে রাগে জ্বলে যাচ্ছে।

লিসা: যেভাবে রেগে বের হয়ে গেলো,,,কোথায় গেলো মানিক ?

নিলয়: বাসায় গেছে হয়তো,,,

নদী: এখন মানিক ভয়ে আছে,,,কি হবে। অনু যদি রাহুল কে মেনে নেয়।

নীলা: নিতেই পারে,,,কারন মানিকের সাথে এখন অনুর কোনো রিলেশন নেই।

নীল: যাক সব বাদ দেই এখন আমরা,,,কিন্তু সানিম এর সাথেও তোর দেখা হয়ে যাবে। ( মিহুর দিকে তাকিয়ে )

মিহু: আমি সানিম এর সাথে কথাই বলবো না,,,

সাগর: দেখা যাবে,,,

মিহু: গাইজ আমি যাচ্ছি,,,অনুর বাসায় যাবো।

মেঘ: কখন ফিরবে তুমি ?

মিহু:( পিছে ফিরে ) আমি ফিরবো না,,,

নাদিয়া: শুরু হয়ে গেলো ঝগড়া,,,

মিহু: আজকে মেঘও মানিকের জায়গায় থাকলে আমার সাথে ব্রেকআপ টাই করতো,,,জাস্ট গল্পটা শুনে এই বিহেভ। তহলে তোরাই ভাব,,,আমি আর বলবো না কিছু। ( বলেই আমি বের হয়ে চলে এলাম )

মেঘ: সিট ইয়ার,,,( রেগে )

আবির: কি যে হচ্ছে এগুলো,,,

লিসা: ভালো লাগছে না,,,এগুলো আর।

নদী: গাইজ তোদের কি মনে হয়,,,মানিক আবার অনুকে কাছে টেনে নিবে বলে ?

নিলয়: মানিক অনুকে অনেক ভালোবাসে এখনও,,,তার প্রমান একটু আগে ওর রিয়েক্ট।

নীল: মানিক একটু শান্ত হলেই,,,ঠিক আগের মতই হয়ে যাবে।

নীলা: তাছাড়া অনুকে ছাড়া থাকতেও পারবে না।

সাগর: রাহুল ছেলেটা বেশ ভালো।

নাদিয়া: মানিক এর চোখে এখন শক্রু,,,

আবির: গাইজ ভয় করছে,,,মানিক যদি রেগে রাহুল এর সাথে মারামারি বাধিয়ে দেয়।

লিসা: না না,,,খেয়াল রাখতে হবে।

নিলয়: রাহুল আমাদের মত একই বয়স এর,,,কিন্ত তাও উনি এখন Varsity র গানের টিচার।

নদী: কি যে হবে। মেঘ তুই চুপ কেনো।

মেঘ: কিছু বলার মত ভাষা খুজে পাচ্ছিনা তাই।

সবাই এসব ভাবতে ভাবতেই……আর এসব নিয়ে কথা বলে…..তারপর সবাই বাসায় চলে যায়……দেখতে দেখতে বিকাল গড়িয়ে সন্ধা হয়ে এলো…….মিহু অনেক আগেই এসেছে অনুর বাসায়………………

মিহু: অনু ? রাহুল কিন্তু সন্ধায় বাসায় আসবে।

অনু: আমি আর কোনোভাবে রাহুলকে কষ্ট দিতে চাইনা রে,,,রাহুল কেনো আবার আমার লাইফে ফিরে এলো বলতো,,,তার উপর সবাই এখন আমাকে ভুল বুঝছে,,,

মিহু: কেউ তোকে ভুল বুঝছে না,,,সবাই ঠিক বুঝছে। আমি সবাইকে সবটা বলেছি।

অনু: মানে ???

মিহু: আমি সবাইকে ৪ বছর আগের কাহিনীটা বলেছি।

অনু: মা‌‌নি…মানিক শুনেছে ?

মিহু: হুমম ( বলেই জোরে জোরে হাসতে লাগলাম )

অনু: তুই হাসছিস কেনো এভাবে ( রেগে )

মিহু: জানিস মানিক তো একদম জ্বলে পুরে সারখার হয়ে গেছে,,,গিটার আছাড় দিয়ে চলে গেছে,,,আমার তখন যা হাসি পাচ্ছিলো না যে কি বলবো।

অনু: মজা নিস না,,,আমি জানি মানিক ভেতরে ভেতরে অনেক কষ্ট পাচ্ছে,,,আর এখন মানিক এটাও‌ ভাবছে যে,,,আমি কি এবার রাহুল কে মেনে নিবো।

মিহু: যা ভাবার,,,ভাবতে দে ওকে। তোকে কি কম কষ্ট দিয়েছে ও।

অনু: তুই কেনো বুঝতে পারছিস না,,,মানিক তো ইচ্ছে করে করেনি।

মিহু: অনু তুই এখনও মানিক কে সবার কাছে ভালো বানিয়ে যাবি। তোকে এতো কষ্ট দেওয়ার পরও ?

ওদিকে রাহুল অনুর বাসায় ঢুকে…..উপরে উঠে যেই অনুর রুমে যাবে…..অমনি এসব কথা শুনে থেমে যায়…..কিছুক্ষন এর জন্য রাহুলের চোখের পানি পড়ে যায়…..রাহুলের ভেতরে সব উলট পালট হয়ে যায়……কিন্তু পরক্ষন এ রাহুল ভাবে….দোষটা নিজের….প্রথম ভুল অনুকে ভুল বোঝা,,,দ্বিতীয় ভুল অনুকে মানানোর চেষ্টা না করেই……রেগে আমরিকায় চলে যাওয়া…..রাহুল স্বাভাবিক হয়ে বলে উঠলো……………..

রাহুল: ভালোবাসা এমনি হয়,,,হাজারো কষ্টের পরেও,,,তাকে ভুল না বোঝা,,,

মিহু: ( ওদের একটু একা থাকতে দি ) আব,,,রাহুল তুমি বসো,,,আমি কফি নিয়ে আসি। ( আমি চলে এলাম )

________________________________________

অনু বেড থেকে উঠে দাড়িয়ে…..চলে গেলো জানালার সামনে……রাহুল বলে উঠলো……………..

রাহুল: এখনও আমার উপর রাগ করে থাকবে তুমি ( ঠান্ডা গলায় )

অনু: কেনো সেদিন কিছু না বলে,,,ওভাবে চলে গেলে তুমি ?

রাহুল: রাগটা সামলাতে পারিনি আমি। আবার তোমার কাছে মাফ চাচ্ছি।

অনু: আমি মাফ করার কেউ না তোমাকে।

রাহুল: তুমি আমাকে আজও যদি মাফ না করো,,,,আমি সারা জীবন নিজেকে মাফ করতে পারবো না।

অনু: কি করে তোমাকে মাফ করবো,,,তোমার কোনো ধারনা আছে,,,ঠিক কতটা কষ্ট পেয়েছিলাম সেদিন। আমি মুখে যত যাই বলিনা কেনো,,,আজও মন থেকে তোমাকে আমি বন্ধুই ভাবি। ( কান্না করে )

রাহুল: এখন কেমন লাগছে ?

অনু: কিছুটা ভালো লাগছে।

রাহুল: তুমি যেমন আজও আমাকে বন্ধু ভাবো,,,আমি আজও তোমাকেই ভালোবাসি।

অনু: ( আমি অবাক হয়ে রাহুলের দিকে তাকালাম ) রাহুল,,,

রাহুল: উহু,,,দোষটা আমার,,,নাহলে আজ মানিক এর জায়গায় আমিই থাকতাম হয়তো।

অনু: তুমি মানিকের কথা জানলে কি করে ?

রাহুল: একটু আগেই তো,,,বলছিলে তুমি। মানিকের সাথে তোমার কিছু হয়েছে তাইতো,,,আর মানিক তোমাকে আমার মতই ভুল বুঝেছে।

অনু: আমি আর এগুলো নিতে পারছি না রাহুল,,,তোমরা কেনো আমাকে এতটা কষ্ট দাও বলতো,,,একটা বার ভাবো না আমি কতটা কষ্ট পাই।

রাহুল: ( অনুর কাছে গিয়ে,,,ওর দু গালে হাত রাখলাম ) মানিক ঠিক তোমাকে বুঝবে। আচ্ছা এসব কথা বাদ,,,তুমি এখনও অসুস্ত,,,সো বসো তুমি।

মিহু: কফি এসে গেছে।

তারপর রাহুল,,,অনু আর মিহু……কফি খেতে খেতে জমিয়ে আড্ডা দিলো…….রাহুলের ভেতরে এখনও তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে…..অনু বুঝতে পেরেও নিশ্চুপ…..কি করবে অনু……তারপরও সবাই আড্ডা দিতে লাগলো…..

চলবে………………

বি.দ্র: কেমন লাগলো জানাবেন কিন্তু😊