Torture with love 2😍Part-55

#Torture_with_love_season_2😍😍
#লেখিকা ( অনু )
#Part_55

মিহু ঘুম থেকে উঠতেই সানিম কল করলো……মিহু ফোন রিসিভ করলো……….

সানিম: ঐ শাকচুন্নি উঠ জলদি,,,

মিহু: এভাবে কেউ ডাক দেয়,,,( ঘুম ঘুম চোখে )

সানিম: তাড়াতাড়ি আয়,,,তোর সাথে কথা আছে।

মিহু: আচ্ছা আসছি আমি।

মিহু ফোন কেটে……উঠে ফ্রেস হয়ে নিলো…..তারপর দেখলো মেঘ এখনও ঘুম…..তাই গেট লক করে চলে গেলো…..এদিকে মেঘ উঠে এসে দেখে মিহু রুমে নেই…..পুরো বাড়ি তন্নতন্ন করে খুজলো মিহুকে……কোথাও পেলো না……মেঘ ভাবলো এতো সকালে মিহু কোথায় গেলো………..

সানিম: তুই তো আগে,,,এতো লেট করে উঠতি না ?

মিহু: কোথায় লেট,,,তাছাড়া তুই তো আগে বললি না বের হবি।

সানিম: সুমাইয়া ফোন করেছিলো,,,ও খবর পেয়েছে যে আমি দেশে ফিরেছি।

মিহু: ওয়াউ,,,

সানিম: বিকালে তুই আর আমি,,,সুমাইয়ার সাথে দেখা করতে যাচ্ছি।

মিহু: আমি কেনো যাবো,,,তাছাড়া কতদিন পর তোদের দেখা হচ্ছে।

সানিম: সুমাইয়া তোর কাছে ক্ষমা চাইবে তাই। সুমাইয়া বুঝতে পেরেছে যে ওর ভুল ছিলো।

মিহু: বাদ দে,,,চল কোনো রেস্টুরেন্ট এ বসি। আমার চরম ক্ষুদা পেয়েছে রে।

সানিম: চল,,,

তারপর দু’জন মিলে গাড়িতে করে গেলো……দুর থেকে জান্নাত সব দেখলো…..জান্নাত ছবিও তুলে রাখলো…..হ্যাঁ মিহু যখন বাসা থেকে বের হলো একা…..তখনই জান্নাত মেঘের বাসায় যাচ্ছিলো….মিহুকে একা বাসা থেকে বের হতে দেখে….জান্নাতের সন্ধেহ্ হয়…..তাই জান্নাত মিহুর পিছু নেয়……আর এখন জান্নাত এর খুশি কে দেখে……মেঘ না চাইতেই জল…………

জান্নাত: ( মেঘকে কল করলাম )

মেঘ: ( আমি বাসা থেকে বের হবো । কেউ কল দিলো । দেখি জান্নাত । রিসিভ করলাম ) ফোন করেছো কেনো আমাকে ?

জান্নাত: কেনো আমি কি ফোন করতে পারিনা ??

মেঘ: কিছু বলবে তুমি ???

জান্নাত: আচ্ছা মিহু কোথায় ? ( শয়তানি হাসি দিয়ে )

মেঘ: মিহু কোথায়,,,সেটা তুমি জেনে কি করবে ( রেগে )

জান্নাত: আহ্,,,মেঘ তুমি রেগে যাচ্ছ কেনো ?

মেঘ: আর কিছু বলার আছে ?

জান্নাত: বলো তো আগে মিহু কোথায় ?

মেঘ: মিহু আমার আগেই বাসা থেকে বের হয়ে গেছে,,,জানিনা কোথায় গেছে। হয়তো অনুর বাসায় গেছে। কেনো তোমার কি তাতে ?

জান্নাত: না,,,মিহু তো অনুর বাসায় যায়নি মেঘ।

মেঘ: তুমি কি সকাল সকাল এসব ফালতু কথা বলার জন্য কল করেছো ( চিল্লিয়ে )

জান্নাত: তোমার মিহুকে দেখলাম একটা ছেলের সাথে ড্যাং ড্যাং করে গাড়িতে করে চলে গেলো।

মেঘ: ( জান্নাতের মুখে এই কথা শুনে,,,আমার ভেতরে ভয় করে উঠলো। নাহ জান্নাত এর জালে আগেই পা দেওয়া টা ঠিক হবে না ) আমি তোমার কাছে,,,কিছু শুনতে চেয়েছি নাকি ?

জান্নাত: আমি জানি মেঘ,,,তোমার হয়তো বিশ্বাস হচ্ছে না তাইতো ?

মেঘ: তোমার মত মেয়েকে,,,বিশ্বাস তো দুরে থাক,,,কথা কানে নেওয়া ও ঠিক না তোমার মত মেয়ের।

জান্নাত: আমি জানতাম,,,তুমি আমাকে ঠিক এভাবেই অপমান করবে। তাই আমি প্রমান ও রেখেছি সাথে।

মেঘ: ( জোরে জোরে হাসতে লাগলাম ) তোমার প্রমান,,,তোমার পকেট এর ভেতরে রেখে দাও। আমার চাইনা। আমি আমার মিহুকে বিশ্বাস করি।

জান্নাত: মেঘ ? ( চিল্লিয়ে )

মেঘ: জাস্ট সাট আপ,,,আর একটা কথাও না। এমনিও আমার অনেক সময় তুমি নষ্ট করেছো। ( বলেই ফোন কেটে দিলাম )

জান্নাত: মে…মেঘ,,,হ্যাঁ…হ্যাঁলো। সিট,,,মেঘ তোমাকে তো আমাকে বিশ্বাস করতেই হবে।

ইন ভার্সিটি_______________________________

অনু: ( মানিক আমার সাথে কেনো করছে এরেকুম। উফফফ মাথাটা এখনও ব্যাথা করছে। তিন দিন ধরে ওর সাথে একটুও কথা হয়নি। হলরুম থেকে তো আসছে মানিকের গিটারের আওয়াজ। গিয়ে দেখি মানিক বসে গিটারের টিউন বাজাচ্ছে। মানিকের সামনে যেতেই গিটার থামিয়ে আমার দিকে তাকালো )

মানিক: ( আমি গিটার বাজাচ্ছিলাম। মনে হলো সামনে কেউ। তাকিয়ে দেখি অনু। অনুর কঁপালের দিকে চোখ গেলো )

অনু: মানিক,,,

মানিক: ( আমি কিছু না বলেই চলে যাচ্ছিলাম। অনু হাত ধরলো ) গতকালের কাহিনী টা ভুলে গেছো নাকি ? ( রেগে )

অনু: আমি জানি,,,গতকাল তুমি ইচ্ছে করে,,,আমাকে ফেলে দাওনি।

মানিক কি বলবে ভেবেই পাচ্ছিলো না……মানিক অনুর সামনে এসে….অনুর দু হাতের বাহু শক্ত করে চেপে ধরলো…..অনু সবকিছু বলার শক্তি হারিয়ে ফেললো মানিকের চোখ দেখে……চোখ লাল রক্তের মত হয়ে আছে……………….

মানিক: প্রবলেম কি তোমার ? ( রেগে )

অনু: মানিক তুমি প্লিজ একটু শুনো আগে,,,

মানিক: তোমার রাহুল আছে না ? রাহুলের কাছে যাও। আরে আমি তো তোমাদের মধ্যে কাবাব মে হাড্ডি হয়ে গেছিলাম। এখন তো ফ্রি না তুমি ? কারন আমাদের ব্রেকআপ। যাও রাহুলের কাছে,,,গো টু হেল।

অনু: মানিক তুমি আবার আমাকে ভুল বুঝছো ? ( কান্না করে )

মানিক: জাস্ট সাট আপ,,,আই হেইট ইউ। আমি ঘৃণা করি তোমাকে। তোমাকে বলিনি আমার সামনেও না আসতে। ( রেগে + চিল্লিয়ে )

মানিক_অনু ঝগড়া করছিলো…..এমন সময় হলরুম এর গেট লক হওয়ার আওয়াজ হলো…..মানিক দোড়ে গেট এর সামনে গেলো…..উপরের কাঁচ দিয়ে দেখলো দাড়োয়ান চলে যাচ্ছে…..মানিকের বুঝতে বাকি রইলো না…..ভুলে আটকে দিয়ে গেলো……অনুও গেলো গেট এর সামনে……মানিক গেট এর কাঁচে বারি দিতে লাগলো…..কিন্তু কেও গেট খুললো না……গেট এর উপরের অংশটা কাঁচের ছিলো । আর লক এর নিচের অংশ থেকে কাঠের ছিলো…….মানিক অনেক বার বারি দিলো…..কিন্তু গেট কেউ খুললো না…..মানিকের রাগ উঠে গেলো…..মানিক কিছুতেই অনুর সাথে এক রুমে থাকবে না……এই ভেবেই মানিক রেগে…..উপরের কাঁচের অংশে একটা জোরে ঘুসি দিলো……সাথে সাথে কাঁচগুলো ভেঙ্গে পড়লো……আর মানিকের হাত পুরো রক্তাক্ত হয়ে গেলো……হাতে কাঁচ ও ঢুকেছে অনেক…..অনুর চোখের পানি গড়িয়ে পড়লো……………..

অনু: মানিকককক,,,আর ইউ ক্সেজি ? কি করলে এটা। তোমার মাথা ঠিক আছে।

মানিক: নিশ্চুপ……….

অনু: ( আমি মানিকের হাতটা ধরলাম । তারপর কাঁচের টুকরা টা চোখ বন্ধ করে একটা টান দিলাম । হাত থেকে রক্ত পরেই যাচ্ছে ) মানিক কেনো করলে এটা তুমি ?

অনু এমনিও রক্ত দেখতে পারে না…..অনুর মাথা ঘুরে উঠে…..তাও অনু মানিকের হাতের কাঁচগুলো উঠিয়ে দিলো…..মানিক অনুর দিকে তাকিয়ে চোখ অন্যদিক এ নিলো…..অনু কেদেই যাচ্ছে…..মেঘ নীল এসে দেখে এই অবস্তা….সাথে সাথে…..গেটের লক খুললো……এর মধ্যেই অনু আর রক্ত সহ্য করতে না পেরে…..মাথা ঘুরে মানিকের বুকের উপর পড়লো…..মানিক কিছুটা ভয় পেয়ে গেলো……অনুকে জরিয়ে ধরেই ডাকতে লাগলো……………..

মানিক: অনু,এই অনু অনু,,,

নীল: সিট,,, ( অনুকে নিয়ে চেয়ারে বসালাম। তারপর একটু পানি ছিটা দিতেই অনু চোখ খুললো ) ঠিক আছিস তুই ?

অনু: হুমম,,,মানিক ?

নীল: মেঘ ওকে নিয়ে গেছে অফিস রুমে,,,বেনডেজ করানোর জন্য।

অনু: নীল আমি আর পারছি না।

নীল: কি হলো হঠাৎ,,,মানিক এতো রেগে গেলো কেনো ?

অনু : জানিনা আমি,,,

নীল: আচ্ছা তুই শান্ত হো,,,

তারপর নীল অনুকে বাসায় দিয়ে গেলো…..মানিকও বাসায় চলে গেলো……মেঘও বাসায় চলে এলো মিহুর সাথে…..কিন্তু মিহু বিকেলে আবার বের হয়ে গেলো…….মেঘকে না বলেই চলে গেছে……তাই মেঘ এবার ‌প্রচন্ড রেগে গেলো…….তার মধ্যেই বাসায় বেল বেজে উঠলো…..মেঘ গেট খুলেই দেখে জান্নাত…..

মেঘ: তুমি এই সময় বাসায় ?

জান্নাত: তোমার তো বিশ্বাস হচ্ছিলো না তাইনা ( মেঘের সামনে আমার ফোনের ছবিটা ধরলাম ) এই পিকটা দেখো ?

মেঘ: ( তাকিয়েই দেখি মিহু আর সানিম ) তো কি হলো,,,ওরা ঘুরছে তোমার কি ?

জান্নাত: মিহু না তোমার গ্রালফ্রেন্ড হয় ?

মেঘ: তোমাকে কে বললো আমাদের মধ্যে ঢুকতে ?

জান্নাত: চলো আমার সাথে।

মেঘ: আমি কোথাও যাবো না।

জান্নাত মেঘের হাত ধরে টেনেই এক প্রকার নিয়ে গেলো……ওদিকে সুমাইয়া মিহুর কাছে মাফ চাইলো…..মিহু সানিম আর সুমাইয়া জমিয়ে আড্ডা দিলো……………..সানিম_সুমাইয়ার মধ্যে সব ঠিক এখন……সুমাইয়া চলে যাবে তখন…………..

সানিম: পৌছে দিবো ?

সুমাইয়া: না,,,সামনে আপু আসবে,,,একটু কাজ আছে। আমি একাই যেতে পারবো।

মিহু: ওকে,,,সাবধানে যেও কেমন।

সুমাইয়া: ওকে।

সানিম: চলেন এখন আপনিও।

মিহু : তোকে তো আমি আগে মারবো।

বলেই মিহু সানিমকে মারতে লাগলো……সানিমও কম কিসে…..দু’জন মিলে মারামারি শুরু করে দিলো……জান্নাত সকালেই শুনেছিলো ওরা কোন রেস্টুরেন্ট এ আড্ডা দিবে বিকালে…..মেঘকে নিয়ে গেলো……..মিহু মারছে বলে…..সানিম মিহুর দু হাত আটকে ধরে রেখেছে নিজের হাত দিয়ে…..আর মিহু ছুটাছুটি করছে…..সেই সময় মেঘ এসেই দেখে….সানিম মিহুর দু হাত ধরে দাড়িয়ে আছে….আর মিহু হাসছে….কথা বলছে……মেঘের দেখেই মাথায় রক্ত উঠে গেলো…….মেঘ সাথে সাথে বাসায় চলে এলো গাড়ি স্টাট দিয়ে…….জান্নাত তো মহা খুশি….এবার তো মিহুর কঁপালে ঝড় আছে….ভেবেই জান্নাত শান্তি পাচ্ছে………….

চলবে………………

বি.দ্র: কেমন লাগলো জানাবেন কিন্তু😊