Torture with love 2😍Part-65

#Torture_with_love_season_2😍😍
#লেখিকা ( অনু )
#Part_65

রাতে আবিরের বাসায়______________________

লিসা: আন্টি,,,

আবিরের মা : আয় মা,,,

লিসা : আন্টি মন খারাপ তোমার ?

আবিরের মা : আমার মাঝে মাঝে ঘৃণা হয়,,,এমন একটা মেয়ে আমি কি করে জন্ম দিলাম।

লিসা: আন্টি এসব কি বলছো তুমি ? তোমার কোনো দোষ নেই। এটা যার যার মনের বেপার।

আবিরের মা : বাদ দে,,,

লিসা : জানি আন্টি,,,তোমার অনেক খারাপ লাগছে। তুমি একজন মা। কিন্তু নিজের মন কে শান্ত করো।

আবিরের মা: হুমম মা,,,

লিসা: আবির কোথায় আন্টি।

আবিরের মা : জানিনা,,,উপরে গিয়ে দেখ।

লিসা: যাচ্ছি,,, ( আবিরের মন খারাপ আমি জানি,,,হাজার হোক বোন তো )

________________________________________
লিসা এসব ভাবতে ভাবতেই আবিরের রুমে গেলো…..গিয়ে দেখলো আবির নেই……লিসা ছাদের দিকে গেলো……গিয়ে দেখে আবির দাড়িয়ে আছে…..

লিসা : আবির,,,?

আবির: ( মনে হলো লিসা ডাকলো,,,পিছে তাকিয়ে দেখি লিসা ) তুমি ?

লিসা: তুমি একা ছাদে কি করছো ?

আবির: আমার বাসা,,,আমার ছাদ। আমার কি আশা বারন ?

লিসা: আমি তো তোমাকে এমনটা বলিনি ?

আবির: আমি স্বপ্ন দেখছি না তো ? তুমি আমার সাথে এতদিন পর,,,এত শান্ত ভাবে কথা বলছো,,,আর আমার বাসায় এসেছো ?

আবির তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে কথাগুলো বলছিলো……লিসা কিছু না বলে…..আবিরের সামনে গিয়ে……আবির কে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো……আবির লিসাকে ধরলো‌ না…..আবির চোখ বন্ধ করে শুধু দাড়িয়ে ছিলো……………….

লিসা: আমি জানি তোমার কষ্ট হচ্ছে।

আবির: আমার আবার কিসের কষ্ট ?

লিসা: আবির,,,সায়েমা তোমার বোন ? তোমার একটু হলেও কষ্ট হয়েছে,,,আমার সেটা বুঝতে বাকি নেই।

আবির: আমি জানতাম সায়েমার জীবনে এমন একটা দিন আসবে। তাই কষ্টটা কে মাটি চাপা দিয়েছিলাম ওদিন ই। যেদিন মানিক আর মেঘ বলেছিলো,,,সায়েমা ওদের মেরেছে। আমি বাসায় এসে সেদিন সায়েমা কে অনেক মেরেছিলাম,,,হয়তো বাবা এসে না ধরলে সায়েমা কে ওদিন আমি মেরে ফেলতাম।

লিসা: আবির প্লিজ,,, কষ্ট পেও না।

আবির: লিসা,,,আমার কিছুই হয়নি। সায়েমার মত বোন থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো। আমার কোনো কষ্টই হচ্ছে না,,,সায়েমার জন্য।

লিসা: আবির এটা তোমার মনের কথা না।

আবির: কে জেনো ঠিক ১ মাস আগে,,,আমার সাথে ব্রেকআপ করে চলে গিয়েছিলো। তো কি মনে করে ১ মাস পর ফিরে এলো,,,আবার আমার বুকে মাথাও রাখলো।

লিসা: তুমি কি আমাকে অপমান করছো ? তুমি খুব ভালো করেই জানো,,,আমি এই এক মাস ভালো ছিলাম না আবির ? আর আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি তাও জানো তুমি ?

আবির: লিসা তুমি আমাকে বিশ্বাস করো না,,,এটাই তোমার সমস্যা।

লিসা: আবির আমি তোমাকে বিশ্বাস করি,,,কিন্তু নিশিতা ?

আবির: আজ নিশিতার জন্য,,,আমি তোমাকে পেয়েছি। আজ ঐ নিশিতার জন্য ভালোবাসার মানে বুঝেছি। আর তুমি ?

আবির একটা ঘন নিশ্বাস ছাড়লো…….লিসা আবিরের থেকে দুরে সরে দাড়ালো……লিসার চোখে হাজারও প্রশ্ন……

লিসা: আমাকে খুলে বলবে সবটা একটু ?

আবির: আচ্ছা,,,( তারপর নিশিতার সাথে আমার সেদিন রাতের সব কথা বললাম লিসাকে )

লিসা: আমি যখন তোমার সাথে নিশিতাকে নিয়ে ঝগড়া করতাম,,,তখন এই কথাগুলো আমাকে বললেই তো পারতে ? আগে সবটা যদি বলতে তাহলে কি ঝগড়া টা হতো তোমার সাথে আমার ?

আবির: তুমি আমাকে বলার মত সময় কি দিয়েছিলে ? ডাইনি দের মত লাফিয়ে লাফিয়ে ঝগড়া করা শুরু করে দাও।

লিসা: কিইইইই,,, আমি ডাইনি দের মত ঝগড়া করি ? ( চিল্লিয়ে )

আবির: তা নয়তো কি ?

লিসা আবিরকে উরা দুরা কিল ঘুশি মারতে লাগলো……আবির তো থামানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে……শেষে থামাতে না পেরে……লিসাকে কাছে টেনে……লিসার ঠোঁটে চুমু দিলো…..লিসা রেগে সাথে সাথে ফুলে গেলো………………

আবির: খুব মারা হচ্ছিলো আমাকে ?

লিসা: তোমার সাথে দেখা করতে আসাই ঠিক না,,,আমি বাসায় যাবো।

আবির: ( লিসাকে কাছে টেনে ) এতদিন পর কাছে পেলাম,,,এত তাড়াতাড়ি যেতে দেই কি করে ?

লিসা: আবিরররর না,,,

এভাবে আবির আর লিসা ফাজলামো করতে লাগলো……লিসা আজ কোনো কিছুতেই আবির কে তেমন বাধা দিচ্ছে না…..কারন লিসা জানে আবির যতই হাসি খুশি থাকুক…..মনের মধ্যে একটু হলেও কষ্ট হচ্ছে…
________________________________________

ওদিকে মেঘের বার বার মিহুর কথা মনে পরছে…….মিহুর থাপ্পর এর কথা ভাবতেই মেঘের রাগ উঠে যাচ্ছে……মেঘ সিগারেট একটার পর একটা ধরিয়েই যাচ্ছে……এক রাতে যে কতগুলো প্যাকেট সিগারেট খেয়েছে নিজেও জানেনা…….শুধু মাএ মিহুর উপর জিদ করে……………….

ওদিকে মিহু একা একাই বারান্দায় দাড়িয়ে আছে…….বার বার নিজের হাত দেখছে……যে হাত দিয়ে মেঘকে মেরেছে……সেই হাতটা দেখছে…..আর ভাবছে….কি করলো এটা……এভাবে মেঘের গায়ে হাত তুললো….এখন নিজেই কষ্ট পাচ্ছে…………..

________________________________________
নীল: কি ভাবছো তুমি ?

নীলা: আবিরের কথা,,,হাজার হোক নিজের বোন তো।

নীল: আমি বুঝি আবিরের কষ্টটা। কিন্তু এমন বোন হলে আমি অনেক আগেই মেরে ফেলতাম।

নীলা: জানিনা আবিরের কি অবস্তা।

নীল: আমার লিসার সাথে কথা হয়েছিলো,,,লিসা সবটা সামলে নিয়েছে। কালকে নাকি কেস টা কোর্টে এ উঠবে।

নীলা: তারপর ?

নীল: তারপর আর কি,,,জেল হবে।

নীলা: নিজেদের জীবন নিজেরাই নষ্ট করলো।

নীল: আর তোমার লিপিস্টিক এখন আমি নষ্ট করবো।

নীলা কিছু বোঝার আগেই…..নীল নীলার ঠোঁটের সাথে ঠোঁট মিশিয়ে দিলো…….নীলা তো রেগে বম……কিছুক্ষন পর ছেড়ে দিলো নীল নীলাকে……………..

নীলা : তুমি আসলেই একটা খারাপ,,,ব্রেকআপ তোমার সাথে।

নীল: এখন আর ব্রেকআপ করলেও কিছু হবে না,,,নীল চৌধুরীর বাসায় বউ হয়ে তো যেতেই হবে।

নীলা: করবো না বিয়ে তোমাকে,,,আমার বিয়ে হয়ে গেছে মহসিন খান এর সাথে।

নীল: ( নীলার কানের কাছে গিয়ে ) আমিই তো তোমার মহসিন খান।

নীলা: কিইইইই ? তোমার মত,,,হাদা রাম,,,মুখ পোরা হনুমান এর সাথে আমার মহসিন খানের কোনো মিল নেই হুহ,,,

নীল: আমার পিছে চুটকি বাজালে,,,হাজার হাজার মেয়ে লাইন দেয়। তোমার তো নীলাকে যে আমি বিয়ে করছি,,,তোমার ভাগ্য। ( অনেকটা ভাব নিয়ে )

নীলা: কি বললা তুমি ? আমার মত মেয়ে মানে ?? নিজেকে কি ভাবো তুমি ??? আমি না তোমার কাছে যাইনি,,,তুমি নিজে আমার কাছে এসেছো। করবো না বিয়ে তোমাকে। আমি বিয়েই ভেঙ্গে দিবো।

নীল: বিয়ে যদি তুমি ভাঙ্গো,,,আমি তোমার পায়ের নলি ভেঙ্গে রেখে দিবো।

নীলা: যাও না,,,তুমি তো চুটকি দিলেই এতগুলো মেয়ে লাইন দিবে।

নীল: ( নীলাকে জরিয়ে ধরে ) আমার ঝগরুটে নীলা থাকলেই হবে। আমার অন্য মেয়ে দরকার হবে না।

নীলা: ( আমিও নীলকে জরিয়ে ধরলাম ) নীল মীম জেলে যাওয়ার পর থেকে মনে হচ্ছে,,,তোমাকে আর কখনো হারাবো না আমি। এতদিন মনে ভয় কাজ করতো।

নীল: আমি শুধু আমার নীলার। মীম কখনও ই আমাকে পাবে না। এমনিও মীম জেল থেকে বের হতে হতে আমাদের বিয়ে হয়ে,,,অনেক গুলো বাচ্চাও হয়ে যাবে।

নীলা: ( কি বলে নীল এগুলো ) নীল তোমার মাথা ঠিক আছে,,,আর তোমার কথার মানে বুঝলাম না আমি।

নীল: কালকে কোর্টে গেলেই বুঝতে পারবে সবটা।

নীলা: আই লাভ ইউ নীল।

নীল: আই লাভ ইউ টু,,,অনেক দিন পর আমার বউটা এভবে বললো।

নীলা বউ ডাক শুনে কিছুটা লজ্জা পেলো……তারপর নীল নীলাকে বাসায় পৌছে দিয়ে বাসায় চলে এলো……..
________________________________________

পরদিন সকালে কলেজে____________________

রাহুল : গুড মনিং গাইজ,,,

মেঘ: গুড মনিং,,,

মানিক: আজ বিকেলে কিন্তু কোর্টে যেতে হবে।

নীল: মনে আছে সবারই।

সাগর: আবির ঠিক আছিস তুই ?

আবির: হুমম গাইজ,,,আ’ম ফাইন।

নিলয়: আবির সবটাই জানে,,, আর আবির আমাদের ফ্রেন্ড।

মানিক: আবির আমি জানি তোর কষ্ট হচ্ছে,,,কিন্তু আর সহ্য হচ্ছিলো না আমার।

আবির: সবাইকে সবার উপযুক্ত শাস্তি পাওয়া উচিত। তাও তোরা আমার বোন হিসেবে সায়েমাকে অনেক বার মাফ করেছিস। এমন কি আমাকে কিছু বলতে দেস নি। কিন্তু এটা সায়েমার উপযুক্ত শাস্তি।

নীল: সেটাই,,,

অনু: আবির আমার সাথে তুই আজ যাওয়ার আগে দেখা করবি।

আবির: আচ্ছা,,,

নীলা: গাইজ,,,আজ অনেক বছর পর একজন আসছে,,,বাংলাদেশে ফিরেছে। ফোন করেছিলো এখনি চলে আসবে।

মিহু: কে আসবে ?

নীলা : আমার খালাতো বোন,,,বলতে পারিস আপন বোনের চেও বেশি।

নাদিয়া: আমি বুঝেছি কিন্তু,,,

লিসা: কে যেনো এসেছে দেখ,,,

সবাই হলরুমের গেটের দিকে তাকালো……মুখটা ওড়না দিয়ে বেধে রেখেছে……শুধু চোখ গুলোই দেখা যাচ্ছে…..গাড়ো করে কাঁজল টানা দু চোখ……

সাগর: চেনা চেনা লাগছে তো,,,

রাহুল: ( কে মেয়েটা,,,?)

মানিক : আরে তুই,,,,

মেয়েটি : আমি কি ভেতরে আসতে পারি গাইজ,,,?

চলবে………………

বি.দ্র: কেমন লাগলো জানাবেন কিন্তু😊