Torture with love 2😍Part-67

#Torture_with_love_season_2😍😍
#লেখিকা ( অনু )
#Part_67

নীলার বাসায়_____________________________

আনিকা আয়নার সামনে বসে….নিজের মুখ দু হাত দিয়ে ঢেকে রেখেছে……হাত সরিয়ে আয়নায় নিজের চেহারা দেখছে……আবার দু হাত দিয়ে মুখ লুকাচ্ছে…..আর নীলা আনিকার রুমের বাইরে থেকে এগুলো দেখছে…..নীলা এসেছিলো আনিকা কে ডাকতে যে….রেডি হয়েছে কিনা……এসে এসব দেখে নীলা কিছুই বুঝছে না…….রুমে ঢুকে আনিকার ঘাড়ে দিলো এক লাফ……আনিকা ভয়ে চিৎকার দিবে……নীলা আনিকার মুখ চেপে ধরলো……..

নীলা : ( আনিকার মুখ চেপে ধরলাম ) আরে চিল্লাচ্ছিস কেনো ফাটা বাঁশের মত।

আনিকা : উমমম….উমমম

নীলা : ( আনিকার মুখ চেপে ধরে ) বেপার কি তোর বলতো,,,তখন থেকে বাইরে দাড়িয়ে দেখছি,,,আয়নার সামনে বসে মুখ ঢাকছিস,,,আবার মুখ খুলে হাসছিস,,,নিজেই লজ্জা পাচ্ছিস ?

আনিকা : ( ইশারা করলাম চোখ দিয়ে মুখ থেকে হাত সরাতে )

নীলা : হুম,,,সরালাম এখন বল ?

আনিকা : কিছু না এমনি,,,

নীলা : একদম মিথ্যে বলবি না খবরদার ( রেগে )

আনিকা : ( দু হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ) ভালোবেসে ফেলেছি একজন কে।

নীলা : ( আমি সাথে সাথে আকাশ থেকে পরলাম ) কি বললি তুই ? যেই মেয়ে কোনোদিন রিলেশন কে বিশ্বাস করে না,,,সব ছেলেকে এড়িয়ে চলে,,,কোনো ছেলে প্রপোজ করলেও না বলে দেয়। সেই মেয়ে কিনা একজন কে ভালোবেসে ফেলেছে। কে সেই ভাগ্যবান শুনি ?

আনিকা : আহা,,,এভাবে কেনো বলছিস। আমার কি কাউকে ভালো লাগতে পারেনা ? সবার জীবনে একবার না একবার ভালোবাসা আসে। আমার জীবনেও মনে কর এই প্রথম ভালোবাসা এলো ?

নীলা : সবকিছু বুঝলাম,,,কিন্তু কে সেই মানুষটা ?

আনিকা : তুই তাকে খুব ভালো করেই চিনিস ?

নীলা : আমি তাকে চিনি ? ( ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে )

আনিকা : হুমম,,, তোদের কলেজের নিউ গানের টিচার।

নীলা : মানে,,,

আনিকা : মানে,,,রাহুল ( লজ্জা পেয়ে )

নীলা আনিকার কথা শুনে….এক পা,,,দু পা করে পিছাতে লাগলো……আনিকা অবাক হয়ে গেলো…….

আনিকা : কিরে কি হলো তোর ?

নীলা : কি বললি তুই এটা ? ( ভয়ে ভয়ে )

আনিকা : কেনো কি বললাম আমি ?

নীলা : যাকে কোনোদিন পাবি না,,,তাকে মনে রাখিস না,,,ভুলে যা রাহুল কে।

আনিকা : মানে,,,কেনো ? কি হয়েছে ??

নীলা : তোর এত কারন জানতে হবে না। তোকে ভালোর জন্য বলছি,,,রাহুল কে ভুলে যা। আমি চাইনা আমার চোখের সামনে তুই কষ্ট পাস।

আনিকা : আমাকে খুলে না বললে কি করে বুঝবো। আমাকে বল না সবটা।

নীলা : কারন রাহুল তোকে কখনও ভালোবাসবে না। রাহুল অন্য কাউকে অনেক ভালোবাসে।

আনিকা : যাকে ভালোবাসে,,,সেই মেয়েটা ?

নীলা : আরে রাহুল অনুকে ভালোবাসে,,,রাহুল তোকে কখনও ভালোবাসতে পারবে না।

আনিকা : কিহ্ ? কিন্তু অনু আর মানিক তো একে অপরকে ভালোবাসে তাহলে ? ( অবাক হয়ে )

নীলা : তাহলে সব শুন,,, ( তারপর আমি আনিকা কে সবটা বললাম,,,রাহুল আর অনু কাহিনীও বললাম,,,সায়েমার সব কাহিনী বললাম,,,অনু আর মানিকের ব্রেকআপ এর কাহিনীও বললাম,,,সায়েমার ১৪ বছর জেলের কথাও বললাম,,,এখন কার সব কথা বললাম ) এখন বুঝলি ?

আনিকা : ( আমার মাথায় পুরো বাঁশ ভেঙ্গে পড়লো ) আমি চাইনা রাহুলের ভালোবাসা,,,আমি শুধু রাহুল কে ভালোবাসতে চাই। বাদ দে এগুলো,,,রেডি হয়ে নে। আমিও রেডি হচ্ছি।

নীলা : আনিকা,,,শুন…

আনিকা : ( কথা থামিয়ে ) আমি কষ্ট পাইনি,,,আমি একদম ঠিক আছি দেখ। যা রেডি হয়ে নে।

নীলা : হুমমম,,, ( আমি জানি আনিকা তোর ভেতরে ঠিক কতটা কষ্ট হচ্ছে,,,ভালোবাসার মানুষকে না পেলে বা তার বেপারে এমন কিছু শুনলে ঠিক কতটা কষ্ট হয় )

আনিকা : ( হায় আল্লাহ্ কখনও নিজের মন থেকে কাউকে ভালোবাসিনি। যাও একজন কে ভালোবাসলাম সে অন্য কাউকে ভালোবাসে। কি করবো আমি। ভুলে যাবো রাহুল কে ? না ভুলতে পারবো না,,,প্রথম ভালোবাসা কি করে ভুলবো আমি। তাহলে কি করবো আমি ? আমি আমার মত রাহুকে ভালোবেসে যাবো,,,রাহুল ভালো না বাসলে ,,, আমার কিছু যায় আসে না )

নীলা আর আনিকা রেডি হয়ে বের হয়ে গেলো……সবাই এলো মানিকের বাসায়……মানিক আগেই ফোন করে মিহুকে ঘুস হিসেবে অনেক চকলেট দিবে…..তাই বলে রাজি করিয়েছে অনুকে আনার জন্য……অনু তো এক কথা যাবে না……মিহু অনুকে টানতে টানতে নিয়ে গেলো মানিকের বাসায়…….সবাই জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলো…….আনিকা বার বার রাহুলের দিকে তাকাচ্ছে……রাহুল বুঝতে পারছে…..কিন্তু কেনো তাকাচ্ছে সেটা বুঝতে পারছে না……………

মানিক : গাইজ আজকে একটা গেম খেলবো।

নীল : কি গেম ?

মেঘ : তোর চেহারা টা ভালো দেখাচ্ছে না‌ মানিক ?

সাগর : মনে মনে কি শয়তানি করেছিস তুই ?

আবির : দেখ কেমন শয়তানি হাসি দিচ্ছে ?

নিলয় : আচ্ছা কি গেম বলনা ?

রাহুল : আমি কিছুটা বুঝতে পারছি ?

মানিক : উমমম গান চলবে,,,বালিস ঘুরবে,,,গান থেমে যাবে,,,যার কাছে বালিশ যাওয়ার পর গান থামবে,,,তাকে যা করতে দেওয়া হবে,,,তাই করবে।

অনু : নীলা বুঝলি তো ? তোকে যদি মরতে বলে,,,তাহলে তোকে মরতে হবে। ( মানিক কে ভেংচি দিয়ে )

নীলা : আমি এখনও বিয়ে করিনি,,,আমার বাবুও হলোনা,,,এখনি মরবো আমি। আমি মরতে পারবো না।

মানিক : এই মেয়ে তোমার কি আজাইরা কথা ছাড়া ভালো কথা নেই মুখে ? ( রেগে )

অনু : এই রাম ছাগলের ডিম,,,আমি তোমাকে কিছু বলছি ? তুমি কেন কথা বললা ?? ( রেগে )

মানিক : নিজে কি,,,শেওরা গাছের পেত্নি কোথাকার ( রেগে )

অনু : তুমি কি ? জঙ্গলের জঙ্গলি ভুত,,,বট গাছের বুরা জীন ( রেগে )

মানিক : চুপ করবা তুমি ? সারাদিন পেক পেক করে হাঁসের মত ( রেগে )

অনু : নিজে কি,,, সারাদিন গোলাপি মহিষ এর মত ডাকে,,, ( রেগে )

মেঘ : স্টপপপপপ গাইজ,,, ( রেগে )

মিহু : চুপপপপপপ কর তোরা ( রেগে )

মেঘ মিহুর চিল্লানিতে….. অনু_মানিক থেমে গেলো………………

সাগর : এটা কি ছিলো ?

নাদিয়া : আমার মাথা ঘুরাইতেছে তোদের ঝগড়া দেখে।

আবির : মানিক আমি এতদিন জানতাম অনু,নীলা,মিহু এরা ঝগড়া করে শুধু,,,তুই যে এত ভালো ঝগড়া করতে পারিস আগে জানা ছিলো না আমার ?

লিসা : মানিক এই প্রথম তোকে এভাবে ঝগড়া করতে দেখলাম ?

নদী : চুপ সবাই,,,

নিলয় : এইটা একটা জোস মুভি ছিলো।

অনু : আবির কি বাচ্চি ( রেগে )

নীলা : ঐ রাক্ষস,,,সাদা বাদর,,,লাল ইদুর কি বললি তুই ( রেগে )

মিহু : আমরা ঝগড়া করি ( রেগে )

আবির : না,,,আমি নিস্পাপ।

অনু উঠে দাড়ালো…..নীলা উঠে আবিরের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকালো…..মিহু হাতের জামার কাপড় টা উঠাতে লাগলো……এই দেখে আবির উধাউ…….হয়ে গেলো……লিসা আর নদী গিয়ে টেনে ধরে আনলো…….মিহু অনু আর নীলা এমন মাইর দিলো……আবির একদম করোল্লার তরকারি হয়ে গেলো………………

আনিকা : আবির ওদের কিছু বলার আগে ভেবে নিস ? লেডি গুন্ডি সবগুলা।

রাহুল : সেটা অনেক আগেই আমার জানা আছে।

তারপর সবাই খেলতে বসলো……. মানিক গান চালিয়ে দিলো…..মানিক বালিশ নিয়ে নীলাকে দিলো….নীলা বালিশ নিয়ে…..মেঘকে দিলো…..মেঘ বালিশ নিয়ে অনুকে দিলো…..অনু বালিশ নিয়ে নীলকে দিলো…..নীল বালিশ নিয়ে মিহুকে দিলো……মিহু বালিশ নিয়ে আবিরের হাতে দিলো……আবির নদীকে দিতে যাবে অমনি গান বন্ধ হয়ে গেলো……সবাই চিল্লিয়ে উঠলো……….

আবির : কি করতে হবে আমাকে ? ( ভয়ে ভয়ে )

মানিক : এখনি লিসার সাথে ব্রেকআপ কর রেগে ? ( ফাজলামো করে )

লিসা : মানিক কি বাচ্চি ( রেগে )

মানিক : কিছু করার নেই,,,যা বলবো তাই করতে হবে। তাড়াতাড়ি কর আবির,,,

নীল : এবার হবে খেলা,,,

মেঘ : আবির রেডি হও। আজ রাতে লিসা ফোনে তোর সাথে এত প্রেম করবে যে,,,তোর পাবনায় যাওয়া লাগবে।

আবির : লিসা শুনো,,,

লিসা : কি ?

আবির : এতদিন যা ছিলো আমাদের মাঝে,,,সব অভিনয় ছিলো।

লিসা : তুমি আবার শুরু করলা ?

আবির : আমি তোমার সাথে সব শেষ করতে চাই,,,আজকে থেকে আমাদের ব্রেকআপ।

লিসা : আবির তোমাকে তো ( রেগে )

আবির : আমি কিন্তু মজা করছি না। ব্রেকআপ আমাদের।

লিসা : আচ্ছা ব্রেকআপ,,,আজকে থেকে আমাকে ফোন দিলে তোর উপর টাটকা ঠাডা ফালাবো আমি।

আবির : জানু ডেয়ার ছিলো।

লিসা : রাখ তোর ডেয়ার তোর পকেটে,,,

সবাই জোরে জোরে হেসে উঠলো……আবির_লিসার ঝগড়া শুনে………..

নীল আবার গান ছেড়ে দিলো…..আবির বালিশ নিয়ে নদীকে দিলো….নদী বালিশ নিয়ে রাহুলকে দিলো……রাহুল বালিশ নিয়ে লিসাকে দিলো…..লিসা বালিশ নিয়ে নিলয়কে দিলো…..নিলয় বালিশ নিয়ে আনিকাকে দিলো…….আনিকা বালিশ নিয়ে সাগরকে দিলো……এভাবে বালিশ ঘুরতে ঘুরতে নাদিয়ার কাছে এলো…..নাদিয়া রাহুলকে বালিশ দিলো…..রাহুল আবার নীলাকে বালিশ দিতে যাবে…..তার আগেই গান বন্ধ হয়ে গেলো……নীলা বলে উঠলো……………..

নীলা : আমি বলবো ?

মানিক : বল,,,

নীলা : রাহুল তোমার জন্য একটা ছোট্ট প্রশ্ন আছে ?

রাহুল : হুমম বলো কি প্রশ্ন ?

নীলা : সত্যি বলতে হবে কিন্তু ?

রাহুল : আমি কখনও মিথ্যে বলি না।

নীলা : ( আমি ইচ্ছে করেই বললাম ) আমাদের গ্রুপে যে আজ নতুন মেয়ে,,,মানে আমার বোন এসেছে। আমার বোনের কোন জিনিসটা তোমার ভালো লেগেছে ?

নীলার এমন প্রশ্ন শুনে রাহুল ” থ ” মেরে গেলো……সবাই অবাক হয়ে নীলার দিকে তাকালো……অনুর বুঝতে অসুবিধে হয়নি….কারন অনু আনিকা কে আগেই লক্ষ করেছে…..বুঝেছিলো অনু…..হয়তো কিছু আছে……রাহুল বললো……………..

রাহুল : হুমমম,,,একটা জিনিস‌ আমার খুব ভালো লেগেছে। আনিকার হাসিটা খুব সুন্দর,,, ( আনিকার দিকে তাকিয়েই বললাম )

আনিকা : ( আমি তো অবাক হয়ে গেলাম,,,আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো,,,লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললাম )

চলবে………………

বি.দ্র : কেমন লাগলো জানাবেন কিন্তু😊