Torture with love 2😍Part-69

#Torture_with_love_season_2😍😍
#লেখিকা ( অনু )
#Part_69

মানিক গান ছেড়ে দিলো….নীল বালিশ দিলো মেঘকে….মেঘ বালিশ দিলো নীলাকে….নীলা বালিশ দিলো মিহুকে‌‌..মিহু বালিশ দিলো সাগরকে….সাগর বালিশ দিলো আবিরকে….আবির বালিশ দিলো নাদিয়াকে‌….নাদিয়া বালিশ দিলো লিসাকে….লিসা বালিশ দিলো নিলয়কে‌‌‌….নিলয় বালিশ দিলো রাহুলকে…..রাহুল বালিশ দিলো নদীকে…..নদী বালিশ দিলো আনিকাকে…..আনিকা বালিশ দিলো নীলকে ( সাথে নীল কে দিলো চোখ টিপ আনিকা )………( আবির ইশারা করলো নীল কে )………..নীল ইচ্ছে করে একটু দেরি করে…..অনুকে বালিশ টা দিলো……বেচারা অনু বুঝতেও পারলো না…..নীল,,,আনিকা,,,আবির…..এর শয়তানি……..অনু অন্য কাউকে বালিশ দেওয়ার আগেই গান থেমে গেলো……সবাই তো চেচিয়ে নাচা শুরু করে দিলো…….আর অনু তো দু হাত দিয়ে দু কান চেপে ধরে রেখেছে…………

মানিক : অনু‌‌ কে ডেয়ার টা আমি দিবো ( অনুর দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দিয়ে )

অনু : যতসব,,,আমি খেলবো না।

নীল : ডেয়ার তো ডেয়ার ই।

নীলা : সবাই কে কথা শুনতে হয়েছে।

মেঘ : আমরা না চাওয়া সতেও,,,ডেয়ার তাই শুনতে হয়েছে।

মিহু : আমার বেলায় জোর করেছিস,,,এখন তোকে আমরা ছাড়ছি না।

সাগর : আমার সময় খুব মজা নেওয়া হচ্ছিলো হুমমম।

নাদিয়া : বলেছিলাম না,,,সময় আমারও আসবে।

অনু : আমি খেলবো না,,,আর ঐ রাম ছাগলের ডিম ডেয়ার দিলে তো আমি খেলবো ই না। ( রেগে )

মানিক : ও হ্যাঁলো মিস.পেত্নি কা ভুতনি,,,আমি ই ডেয়ার দিবো। আর আমার ডেয়ার ই তোমার শুনতে হবে।

আবির : লে পঁচা,,,কোমড় নাচা।

লিসা : কোনো কথা শুনবো না,,,ডেয়ার নিতেই হবে।

নিলয় : আমাদের সময় কি করেছিলেন মেম,,,মনে আছে ?

নদী : তাড়াতাড়ি ডেয়ার নে বলতেছি।

আনিকা : অনু বাবুই,,,নিয়ে নে ডেয়ার আমি আছি তো ( মিষ্টি হেসে )

রাহুল : অনু তুমি যে এত ভিতু,,,আমার জানা ছিলো না ( ফাজলামো করে )

অনু : ঐ পেত্নি মাইয়া,,,কি বললি তুই ? ডেয়ার নিবো,,, এই শোন আনিকা তোর ঐ মিষ্টি হাসির মধ্যে না দুষ্টুমি দিয়ে ভরা,,,চেনা হয়ে গেছে তোকে আমার,,,আর রাহুল তুমি কি বললে ? আমি ভিতু,,,তুমি একটা রাম ছাগল, ঘোড়ার ডিম, পেত্না তুমি হুহ্ ( রেগে )

মানিক : তোমার আজব আজব গালি শেষ হলে,,,আমি কি ডেয়ার দিতে পারি ? ( দুষ্টু হাসি দিয়ে )

অনু : নীলা,,,ওকে এতো না পেঁচিয়ে,,ডেয়ার দিতে বল তো।( মানিক কে দেখিয়ে )

মানিক : ওকে ফাইন বেবি,,, আমাকে সবার সামনে #আই_লাভ_ইউ বলতে হবে,,,বলো যে তুমি আমাকে ভালোবাসো।

মানিকের কথা শুনে…..অনু মানিকের দিকে তাকালো রাগি চোখে……মানিক একটা শয়তানি দুষ্টু হাসি দিয়ে……ঠোঁট উঁচু করে অনুকে ফ্লাইং কিস দিলো…….আর নিজের ঠোঁটে কামোড় দিয়ে ধরে…..চুল নারাতে লাগলো…….সবাই তো হাসতে হাসতে শেষ……

অনু : আমি এই ডেয়ার মানি না ( দাঁতে দাঁত চেপে + রেগে )

নাদিয়া : আমার বেলায় তো,,,আমার কথা কেউ শুনেনি ? তোর কথাও শোনা নিষেধ। এটা নাদিয়ার অডার।

অনু : দেখ মানিকের সাথে আমার ব্রেকআপ,,,তো আমি আই‌ লাভ ইউ বলতে পারবো না ( রেগে + চিল্লিয়ে )

নীল : ডেয়ার তো মানতেই হবে।

অনু : আমি পারবো না এই ডেয়ার মানতে।

আনিকা : তো শাস্তি পেতে হবে ?

অনু : আমি শাস্তি পেতে রাজি।

মানিক : ( অনু তোমার এত সমস্যা,,,রাহুলের সামনে আমাকে আই লাভ ইউ বলতে,,আমি এতটাই খারাপ তো, এখন দেখো তোমাকে আমি কত বড় শাস্তি দেই )

মিহু : মানিক ?

মানিক : বল ??

নাদিয়া : শাস্তি দে,,,অনুকে।

মানিক : ( অনুর সামনে তিন গ্লাস ড্রিংক্স’স দিয়ে ) অনু এই তিন গ্লাস ড্রিংক্স’স শেষ করতে হবে পুরোটা। এটাই তোমার শাস্তি।

লিসা : মানিক তোর মাথা ঠিক আছে ?

নদী : অনু ড্রিংক্স’স দেখতে পারে না,,,আর তুই অনুকে ড্রিংক্স’স করতে বলছিস ?

নীল : মানিক আমরা নিজেদের সামলাতে পারি ড্রিংক্স’স করলে,,,কিন্তু অনু তো কখনও ড্রিংক্স’স করেনি,,,তো অনু সামলাতে পারবে না। আর ওয়াইন অনেক পাওয়ারফুল।

মানিক : আমি যেটা বললাম সেটাই,,,এটাই অনুর ডেয়ার। ( অন্যদিকে ফিরে )

অনু : ( মানিক তুমি জানো যে,,,আমি ড্রিংক্স’স দেখতে পারিনা,,আর তুমি আমাকে খেতে বলছো। আমি এই তিন গ্লাস ড্রিংক্স’স খাবো,,,আমি তোমার কাছে হারবো না মানিক )

অনু এক এক করে…..তিন গ্লাস ড্রিংক্স’স চোখ বন্ধ করে…..নাক ধরে খেয়ে ফেললো……সবাই হা হয়ে অনুর দিকে তাকিয়ে আছে……মানিক তো অবাক হয়ে দেখছে…..যে এটা অনু তো………তিন গ্লাস ড্রিংক্স’স খাওয়া শেষে অনু বললো……………..

অনু : আরো খেতে হবে নাকি ড্রিংক্স’স ? মিস্টার মানিক ?? আরো ড্রিংক্স’স থাকলে দাও,,,আমি খেয়ে নিচ্ছি। ( হঠাৎ কেমন আমার মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো,,,আর বমি বমি লাগলো। আমি মুখ চেপে ধরে বাথরুমে চলে গেলাম )

মানিক : ( আমিও অনুর পিছে গেলাম )

নীল : কি চাইলাম কি হলো ?

নীলা : খেলা থেকে ঝগড়া শুরু হয়ে গেলো।

________________________________________
অনু বাথরুমে গিয়ে….বেসিনের সামনে কল ছেড়ে বমি করলো……তারপর চোখে মুখে পানি দিয়ে বের হতে যাবে…..মাথায় চক্কর দিয়ে উঠলো…….মানিক বাথরুমে ঢুকে……বুঝতে পারলো….অনুর নেশা উঠে গেছে……অনু চোখের সামনে সব ঘোলা দেখছে……অনু অনুভব করছে তার গলাটা কেমন তিতা তিতা লাগছে……মানিক অনুকে টেনে শাওয়ার এর সামনে দাড়া করালো……অনু ছুটাছুটি করতে লাগলো‌……মানিক ঝড়না ছেড়ে দিলো……বেশ কিছুক্ষন অনুকে ভিজালো…..অনুকে ধরে রাখতে গিয়ে মানিক নিজেও ভিজে গেছে……অনেক্ষন পানিতে ভিজার কারনে অনুর নেশা কিছুটা কেটে গেছে……অনু চোখে এখন ঠিক দেখছে…….

অনু : তোমার সাহস তো কম না,,,আমাকে ধরে রেখেছো তুমি ( রেগে )

মানিক : জাস্ট সাট আপ,,,একটা কথাও বলবে না তুমি ( রেগে )

অনু : তোমার সাহস কি করে হয় আমাকে ছোঁয়ার ( রেগে )

মানিক : তোমাকে কে বললো তিন গ্লাস ড্রিংক্স’স খেতে ? ( রেগে )

অনু : আমি আরো ড্রিংক্স’স খাবো,,,খুব মজা লাগছিলো আমাকে ড্রিংক্স’স খেতে দেখে তোমার ? ( রেগে )

মানিক : অনু আমার রাগ উঠে যাচ্ছে,,,আমি কিন্তু নিজেকে সামলে রাখতে পারবো না। ( রেগে )

অনু : তোমার রাগ উঠলে আমার কিছু যায় আসে না। ছাড়ো আমাকে তুমি ( রেগে )

মানিক : একদম চুপ,,,এখনি মাতাল হয়ে কি কি করতে কোনো ধারনা ছিলো না তোমার। ( রেগে )

অনু ছুটাছুটি করেই যাচ্ছে…..মানিকের থেকে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য……আর মানিক শাওয়ার বন্ধ করে…..টাওয়াল নিয়ে অনুর মুখ মুছে দিলো……হাত দিয়ে আলতো করে অনুর সামনের চুলগুলো সরিয়ে….কানের পিছে গুজে দিলো…..অনু চোখ বন্ধ করে ফেললো…..মানিক অনুর মুখের সামনে ফু দিলো….অনু শিওরে উঠলো……..অনুর চুলগুলো আলতো করে মুছে দিলো……তারপর অনুকে ছেড়ে দিলো…..অনু দোড়ে চলে গেলো……অনু কাউকে দেখতে না পেয়ে…..নিজের স্কুটি নিয়ে চলে গেলো বাসায়……মানিক ফ্রেস হয়ে কাপড় বদলে নিচে নামলো……………..
________________________________________
রাহুল একা একা মানিকদের বাসার ছাদে দাড়িয়ে ছিলো……আনিকা তো রাহুলকে খুজতে খুজতেই হয়রান হয়ে গেলো…..শেষে ভাবলো পুরো বাড়িটাই তো খুজে দেখলাম….একবার ছাদে গিয়ে দেখি……ছাদে গিয়ে দেখলো রাহুল একা একা আকাশের দিকে মুখ করে দু পকেটে দু হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে……আনিকার বুকের মধ্যে কেমন ধুকধুক শুরু হয়ে গেলো…..আনিকা ভেবেই পায়না….যে দুরে থাকলে ভাবে রাহুলের সাথে জমিয়ে আড্ডা দিবে….রাহুলকে এটা বলবে ওটা বলবে…..কিন্তু রাহুলের সামনে আসলেই সব কথা বন্ধ হয়ে যায়…….তখন আর কথা বলার মত শক্তি খুজে পায় না আনিকা……যাই হোক বুকে থুতু দিয়ে…..কিছুটা সাহস নিয়ে গেলো রাহুলের সামনে………

আনিকা : এহেম এহেম,,,

রাহুল : ( মনে হলো পিছে কেউ দাড়িয়ে আছে,,,তাকিয়ে দেখি আনিকা ) ওহ্ তুমি ?

আনিকা : হুমম,,,কেনো সমস্যা আছে কি ?

রাহুল : না,,,আমার আবার কিসের সমস্যা হবে।

আনিকা : তো কি ভাবা হচ্ছিলো শুনতে পারি কি আমি ? ( মিষ্টি হেসে )

রাহুল : ( আনিকার কথা শুনে,,,আনিকার দিকে তাকালাম। কি আছে মেয়েটার ঐ হাসি আর ঐ দুটো কাঁজল টানা চোখে। দেখলেই কেমন একটা নেশা লেগে যায় )

আনিকা : ( রাহুলের সামনে চুটকি বাজিয়ে ) হ্যাঁলো মিস্টার ?

রাহুল : হু…হুমম বলো ?

আনিকা : বললাম কি ভাবা হচ্ছিলো জানতে পারি কি আমি ?

রাহুল : তুমি জেনে কি করবে ( টেডি ইসমাইল দিয়ে )

আনিকা : দেখুন,,,আমি কিন্তু অনেক ফ্রি মাইন্ড এ সবার সাথে কথা বলি,,,প্রচুর দুষ্টু আমি,,,অনেক কথা বলি আমি,,,অনেক জালাই সবাইকে,,,আর আপনার কিন্তু আমাকে গান শিখাতে হবে,,,নাহলে আপনার বিয়ে তো হবেই না,,,আর বাচ্চাও হবে না,,,আর আর হলো…………..

রাহুল আনিকার কথা শুনে….চুপি চুপি মুখ টিপে হেসে যাচ্ছে…..কি বলবে রাহুল বুঝতে পারছে না…..রাহুল হেসেই যাচ্ছে….আর আনিকা নিজের মনের মত বকবক করে যাচ্ছে……

রাহুল : একটু দম নাও আগে,,,তারপর আবার কথা বলো কেমন ? ( টেডি ইসমাইল দিয়ে )

আনিকা : আপনি কি আমাকে + আমার কথা বলাকে অপমান করছেন নাকি ?

রাহুল : নাহ,,,একদম ই না। তোমরা এত বকবক কর কিভাবে বলতো ?

আনিকা : কিইইইই আমি বকবক করি ?

রাহুল : তোমরা সবগুলো বকবক করো ( হেসে দিয়ে )

আনিকা : এই বকবক করতেও না দম লাগে,,,সবার সেটা নেই,,,যেমন আপনার।

রাহুল : হুমম বুঝলাম,,,অনু তোমার মতই বকবক করে।

আনিকা : আপনি অনুর কথা এখন ভাবছিলেন তাইনা ?

রাহুল : তুমি কি করে জানলে ?

আনিকা : আমি সব কিছুর খবর রাখি বুঝলেন ? ( কিছুটা ভাব নিয়ে )

রাহুল : ভালো তো,,,

আনিকা : উমমমম ধরেন,,,একটা মেয়ে আপনাকে খুব ভালোবাসে,,,মেয়েটা জানে আপনি অনুকে ভালোবাসেন,,,তারপরও ঐ মেয়েটা আপনাকে পাগলের মত ভালোবাসে,,,কি করবেন আপনি ?

রাহুল : হাসালে তুমি,,,এমনটা কখনও হবে না। তাই এসব বলে লাভ নেই।

আনিকা : হতেও তো পারে ?

রাহুল : আমি কখনও কাউকে ভালোবাসতে পারবো না ( হালকা হেসে )

রাহুলের মুখে ” কখনো কাউকে ভালোবাসতে পারবো না ” এটা শুনে আনিকার খারাপ লেগে উঠে……..আনিকা কিছু না বলেই চলে যেতে নেয়…..আর ভুলে রাহুলের পায়ের সাথে পা বেজে পড়ে যেতে নেয়…..চোখ বন্ধ করে ফেলে…….রাহুল সাথে সাথে আনিকাকে কোমড় জরিয়ে ধরে ফেলে….আর আনিকা রাহুলের কলার দু হাত দিয়ে জোরে চেপে ধরে……তারপর আস্তে করে চোখ খুলে……রাহুল হেসে দিয়ে…..আনিকা কে সোজা করে দাড়া করায়…..আনিকা বুঝতে পেরে রাহুলের কলার ছেড়ে দেয়…………..

আনিকা : আ’ম সরি,,,

রাহুল : ইট’স ওকে। কিন্তু একটু দেখে শুনে চলাফেরা করো কেমন ?

আনিকা : হুমমম,,,

আলতো করে চোখের কোঁনের পানি মুছে…..দোড়ে চলে যায় আনিকা……রাহুল একটু অবাক হয়….আনিকার এভাবে চলে যাওয়া দেখে…..
________________________________________

চলবে………………

বি.দ্র : কেমন লাগলো জানাবেন কিন্তু😊