Torture with love 2😍Part-78

#Torture_with_love_season_2😍😍
#লেখিকা ( অনু )
#Part_78

মানিক গিয়ে দেখে……অনু দাড়িয়ে কান্না করছে……মানিক গিয়ে অনুর পাশে দাড়াতেই….অনু সরে দাড়ালো……যেই মানিক অনুকে ধরতে যাবে…..অনু সরে দাড়ালো…..আর অনু বললো……………..

অনু : প্লিজ,,,আমার থেকে দুরে থাকো।

মানিক : অনু আমার কথা শুনো,,, ( ঠান্ডা গালায় )

অনু : আরো কিছু বলার আছে তোমার ? কি বলবো আমি আমার ফ্যামিলি কে ?? ” যে আমি তোমাদের ধোকা দিয়ে একটা ছেলেকে বিয়ে করে ফেলেছি ” কি বলবো আমি সবাইকে ??? ” যে আমি বিয়ে করছি ” মিহু নীলা দের কি বলবো আমি ???? ” যে আমার বিয়ে হয়ে গেছে ” সবার কাছে আমাকে তুমি খারাপ বানিয়ে দিলে মানিক। আমার বাবা কে আমি এই কথা কি করে বলবো,,,বাবা আমাকে কক্ষনো ক্ষমা করবে না,,,আর কখনো আমাকে মেয়ে বলে পরিচয় ও দিবে না। তুমি আমার বাবা কে চিনো না। মেরে ফেলবে বাবা যদি এই বিয়ের কথা শুনে।

বলেই অনু কান্না জুড়ে দিলো…….মানিক ভাবতে লাগলো….রাগের মাথায় অনুকে মনে হয়….একটু বেশিই কষ্ট দিয়ে ফেললো…….মানিক বললো……………..

মানিক : অনু এই বিয়ের বেপারে কেউ কিছুই জানবে না। শুধু নীল,মেঘ,সাগর ছিলো ওরা,,, তুমি আর আমি ছাড়া। ফ্যামিলির সবার সম্মতির সাথেই আমাদের বিয়ে হবে। তারপর সবাই জানলেও কিছু হবে না।

অনু : আমি এখনও ভাবতে পারছি না,,,তুমি এমনটা করতে পারো। এতটুকুও বিশ্বাস নেই আমার উপর তোমার। রাহুলের সাথে আমাকে দেখলে,,,তো রাগের মাথায় এমন একটা কাজ করে ফেললে।

মানিক কিছু বললো না……অনুর কাছে গিয়ে…..অনুর চোখের পানি গুলো দু হাত দিয়ে মুছে দিলো মানিক…….তারপর অনুর কঁপালের সাথে নিজের কঁপাল লাগিয়ে বললো……………..

মানিক : তুমি যেটা ভাবছো,,,তেমন কিছুই না। আমি রাহুলের জন্য তোমাকে জোর করে বিয়েটা করিনি। তোমার উপর রাগ করেই আমি কাজটা করেছি। তুমি আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছিলে,,,যেটা আমি মেনে নিতে পারছিলাম না। আর আমি তোমাকে আগেও বলেছি অনু,,,আমার নিজের থেকেও আমি তোমাকে বেশি বিশ্বাস করি।

অনু : নিশ্চুপ………….

মানিক : আর তুমি খুব ভালো করেই জানো,,,আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি।

অনু : ভালোবাসলে এতটা কষ্ট দিতে পারতে না কখনও।

মানিক : অনু প্লিজ আমাকে,,,শেষ বার ক্ষমা করে দাও। আমি আর কখনো তোমাকে কষ্ট দিবো না। অবিশ্বাস করবো না। তুমি আমাকে এড়িয়ে চলো,,,সেটা আমি মেনে নিতে পারবো না।

অনু : নিশ্চুপ………….

মানিক : অনু কিছু তো বলো ???

অনু : হুমমম। কি চাও তুমি। ( স্বাভাবিক ভাবে )

মানিক : আমার কিচ্ছু চাই না। আমি শুধু আমার আগের অনুকে চাই। প্লিজ অনু।

অনু কিছু বললো না…….অনেকক্ষন চুপ করে রইলো……মানিক অনেক কষ্টে….নিজেকে স্বাভাবিক করে বললো……………..

মানিক : ওকে ফাইন। তুমি চাওনা তো,,,তোমার লাইফে আমি থাকি। তুমি যদি খুশি থাকো,,,তাহলে আমি আর কখনো তোমাকে বিরক্ত করবো না। আর এই বিয়েটা কখনো ই কেউ জানতে পারবে না। এই বিয়েটা ভুলে যাও। এই বিয়েটা শুধু আমাদের মধ্যেই থাকবে। আর,,, আ’ম সরি। আজ তোমার সাথে অনেক বেশি খারাপ ব্যবহার করেছি তার জন্য। আজ রাতের সব কিছুই ভুলে যাও। এসো আমি তোমাকে পৌছে দিচ্ছি। এমনিও মামিকে কথা দিয়ে এসেছি,,,১ ঘন্টার মধ্যে তোমাকে বাসায় পৌছে দিবো আমি।

মানিক কথাগুলো বলেই…….গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলো…….অনু মানিকের হাত চেপে ধরলো…….মানিক থেমে পিছে ঘুরে তাকালো…….মানিকের এতটুকু বিশ্বাস ছিলো…..অনুর উপর…..অনু এভাবে ওকে ছেড়ে দিবে না……

অনু : কত সুন্দর করে কথাগুলো বলে দিলে তুমি ? সবটা ভুলে যাবো ?? ১ বছরের সম্পর্ক টা ভুলে যাবো ??? আর আজ রাতটা ভুলে যেতে বলছিলে তুমি ???? তুমি জানো একটা মেয়ের জীবনে বিয়ে জিনিসটা কি ????? একটা মেয়ের জীবনে বিয়ের রাতটা কি ?

অনুর চোখ থেকে টুপ করে……এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়তে নিলে……মানিক সেই পানির ফোঁটা টা নিজের আঙ্গুল দিয়ে ধরে ফেললো……..তারপর অনুকে জরিয়ে ধরলো শক্ত করে…..অনু চোখ বন্ধ করে জরিয়ে ধরলো মানিক কে…………..

অনু : আই হেইট ইউ পাগল।

মানিক : বাট,,,আই লাভ ইউ টু,,,আমার পাগলি টা।

হঠাৎ ধুম করে জোরে বিদ্যুৎ চমকে উঠলো……অনু আরো জোরে মানিক কে জরিয়ে ধরলো…..কারন অনু বিদ্যুৎ চমকালে প্রচন্ড ভয় পায়……ঝুম করে অঝড় ধারায় বৃষ্টি পড়তে শুরু করলো……..অনু মানিক কে ছেড়ে দিয়ে……মনের আনন্দে ভিজতে শুরু করলো…..কারন অনু বৃষ্টিতে ভিজতে অনেক পছন্দ করে……মানিক শুধু দাড়িয়ে দেখছিলো তার অনুকে…..আজ আর অনুকে কিছু বললো না মানিক……বাধা দিলো না বৃষ্টিতে ভিজতে…….

মানিক : অনু ঠান্ডা লেগে যাবে চলো।

অনু : মানিক ঠান্ডা লেগে যাবে চলো।

মানিক : আমাকে কপি করা হচ্ছে। ( মুচকি হেসে )

অনু : আমাকে কপি করা হচ্ছে। ( মিষ্টি হেসে )

মানিক গিয়ে অনুর হাত ধরে টেনে…..নিজের সাথে মিশিয়ে দিলো……অনু কিছু বললো না….মানিক অনুর দু গালে নিজের হাত রাখলো………এত পরিমানে বৃষ্টি হচ্ছে যে…..একজন অন্যজন এর দিকে ভালো করে তাকাতেও পারছে না……মানিক অনুর যে গালে চড় মেরেছিলো রেগে…….সেই গালে নিজের ঠোঁট ছুঁয়ে আলতো করে একটা চুমু দিলো……তারপর অনুর কঁপালে আলতো করে নিজের ঠোঁট ছুঁয়ে একটা চুমু দিলো…….তারপর অনুর যে হাতটা শক্ত করে চেপে ধরেছিলো…..অনুর সেই হাতেও আলতো করে একটা চুমু দিলো……….

মানিক যেই অনুর ঠোঁটের দিকে আগাবে…..অনু সাথে সাথে মানিকের থেকে দুরে যেতে চাইলে…..মানিক আরো জোরে অনুর কোমড় জরিয়ে ধরে…..অনু জানে এখন চাইলেও মানিক তাকে ছাড়বে না….মানিকের চোখে স্পষ্ট নেশা দেখতে পারছে অনু…..অনু চোখ বন্ধ করে ফেললো…..মানিক নিজের ঠোঁট অনুর ঠোঁটের সাথে মিশিয়ে দিলো…..মানিক গভীর নেশায় আটকে গেছে….কতদিন পর মনে হচ্ছে নিজের তৃষ্ণা মেটাচ্ছে…..এদিকে অনুর শ্বাস আটকে যাচ্ছে….কিন্তু মানিক অনুর ঠোঁটের স্বাদ নিতে ব্যাস্ত…..

আজ এই প্রকৃতির বৃষ্টির প্রতিটা ফোঁটা তাদের ভালোবাসার সাক্ষী হয়ে রইলো….চাঁদ,তারা,বাতাস….সবাই স্তব্দ আজ তাদের ভালোবাসার কাছে…..আসলে ভালোবাসার কাছে সবই তুচ্ছ…….

বেশ কিছুক্ষন পর…..অনু মানিকের পেটে একটা চিমটি দিয়ে দুরে সরে গেলো………….

মানিক : আহহহহ্,,, তুমি আবার।

অনু : বাসায় দিয়ে আসো আমাকে।

মানিক : তোমাকে আমি ছাড়ছি না।

অনু গিয়ে গাড়িতে বসলো……মানিক গাড়ি স্টাট দিলো…….অনুর বাসার সামনে গিয়ে মানিক গাড়ি থামালো………..অনু গাড়ি থেকে নামলো…..মানিক ও নামলো……..অনু চলে গেলো….মানিক তাকিয়ে রইলো……তারপর মানিক যেই গাড়ির দরজা খুলবে অনু মানিক কে ডাকলো…..মানিক পিছে ঘুরে তাকালো………..

মানিক : কিছু বলবে ?

অনু : হুমমম,,,

অনু এগিয়ে এসে……আচমকা মানিকের গালে এক সাইডে…..আলতো করে নিজের ঠোঁট ছুঁয়ে….একটা চুমু দিলো……মানিক এখনও শকড্ হয়ে আছে…….অনু কিছুটা দুরে গিয়ে বললো……..

অনু : গুড নাইট,,,

মানিক : গুড নাইট পাগলি। ( মুচকি হেসে )

অনু চলে গেলো……মানিক গালে হাত দিয়ে…..মুখ নিচু করে….ঠোঁট কামড়ে ধরে……একটা মুচকি হাসি দিয়ে…….গাড়ি স্টাট দিয়ে চলে গেলো………………
________________________________________

পরদিন সকালে ভার্সিটি_____________________

মানিক এসে দেখে মেঘ,নীল আর সাগর বসে আছে…….মানিক গতকাল রাতের সব কাহিনী বললো……নীল,সাগর,মেঘ সস্তি পেলো………

নীল : যাক এখন তো সব ঠিক ?

মানিক : হুমমম,,,

মেঘ : কংগ্রাচুলেশন । সরি তোকে এটা দেওয়া ঠিক না।

মানিক : তোকে তো ?

সাগর : অনুর কান্না দেখে তো গতকাল ভয় পেয়েছিলাম।

মানিক : আমি জানতাম,,,অনু আমার জন্য হলেও স্বাভাবিক হবে।

তারপর হলরুমে সবাই এলো…….সবাই জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলো……রাহুল বার বার আনিকার দিকে তাকাচ্ছে…….কেনো জানি ইধানিং আনিকার পাগলামি গুলো রাহুলের খুব ভালো লাগে……রাহুল আনিকার কাছে গেলে সব ভুলে যায়……আনিকার মধ্যে ডুবে যায় রাহুল……হঠাৎ ই মানিক আর অনু……একসাথে হাচ্চি দিয়ে উঠলো…..রাহুলের ঘোর কাটলো……আনিকার দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিলো রাহুল……………….

মানিক : হাচ্চুউউউউ,,,

অনু : হাচ্চুউউউউউউ,,,

লিসা : কিরে ঠান্ডা লাগলো কি করে ?

আবির : বৃষ্টিতে ভিজেছিস নাকি তুই ?

মানিক : আহ্,,, হাচ্চুউউউউ,,

নদী : অনুর তো অভ্যাস আছে বৃষ্টিতে ভিজার।

নিলয় : কিছু হয়েছে নাকি ? ( মানিক আর অনুর দিকে তাকিয়ে )

অনু : হাচ্চুউউউউউ,,,

মানিক : গাইজ তোদের বলা হয়নি। হাচ্চুউউউউ,,,

আনিকা : কি বলা হয়নি ? ( অবাক হয়ে )

অনু : হাচ্চুউউউউ,,,

রাহুল : এত ঠান্ডা লাগলো কি করে,,,তাও দুজনের এক সাথে ?

মানিক : গাইজ,,, হাচ্চুউউউউ। আমাদের মধ্যে সব ঠিক হয়ে গেছে। হাচ্চুউউউউ,,,মানে আমার আর অনুর মধ্যে সব ঠিক এখন। হাচ্চুউউউউ।

নীলা : কিইইইই,,,

অনু : হাচ্চুউউউউ,,, জিইইই। হাচ্চুউউউউ।

মিহু : এত বড় গুড নিউজ। আমরা এখন জানলাম।

নাদিয়া : গাইজ,,,যাক এতদিনে তোদের মিল হলো।

অনু : ভুলেই গিয়েছিলাম বলতে। হাচ্চুউউউউউ।

মানিক : হাচ্চুউউউউ। অনু তোমার জন্য,,,বৃষ্টিতে ভিজে ঠান্ডা লাগলো। হাচ্চুউউউউ।

অনু : তোমাকে ভিজতে বললো কে ? হাচ্চুউউউউ।

মানিক : হাচ্চুউউউ।

নীলা : ভাইরাসসসসসস্।

অনু : হাচ্চুউউউউউ।

নীলা : তোরা দু’জন ই আমার থেকে দুরে যা। ভাইরাসসসসস্।

সবাই খুব খুশি হলো……তারপর নীল_নীলা,,,মেঘ_মিহু,,,সাগর_নাদিয়া,,,আবির_লিসা,,,নিলয়_নদী,,,রাহুল_আনিকা……সবাই মিলে _অনু_মানিক এর সাথে গ্রুপ হাগ করলো……..অনু_মানিক হাচ্চি দিতেই…..নীলা বের হয়ে বললো………

নীলা : ভাইরাসসসসস্

নাদিয়া : চুপ কর।

চলবে………………

বি.দ্র : কেমন লাগলো জানাবেন কিন্তু😊