দ্বিতীয়_সূচনা পর্ব_৩৫

0
1634

#দ্বিতীয়_সূচনা
#পর্ব_৩৫
লেখা – আফরোজা আক্তার
(কোনোক্রমেই কপি করা যাবে না)

ফারহান অয়নন্দিতার সম্পর্ক সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও গভীর আকার ধারণ করছে। ইদানীং সময়ে তাদের দু’জনের প্রতি দু’জনের ভালোবাসা তীব্র হচ্ছে। ফারহান অয়নন্দিতার সঙ্গে ক্ষণে ক্ষণে যোগাযোগ করতে চায়। অয়নন্দিতা ফারহানের কন্ঠস্বর না শুনে থাকতে পারে না। তাদের দেখে মনে হয় তারা যেন সদ্য প্রেমে পড়া কোনো এক তরুণ তরুণী। যারা সবে মাত্র আঠারোতে পা দিয়েছে। বাসায় যতটা সময় থাকে দু’জন দু’জনের আশেপাশে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় অয়নন্দিতা রান্নাঘরে থাকলে ফারহান কোনো না কোনো কিছুর বাহানায় রান্নাঘরে এসে অয়নন্দিতাকে দেখে যায়। আবার অয়নন্দিতা চায়ের ছুতো ধরে ফারহানের কাছে যায়। ফারহান অফিস চলে গেলে কয়েক মিনিট পর পর সময় করে ফারহান অয়নন্দিতাকে ভিডিও কলে দেখে।
বিকেল বেলা অয়নন্দিতা চুপচাপ বসে আছে নিজের ঘরে। ফারাশ ঘরের দরজায় নক করে। অয়নন্দিতা ভেতর থেকে শব্দ করলে ফারাশ ঘরে ঢোকে। অয়নন্দিতাকে বিছানায় বসে থাকতে দেখে ফারাশ পাশে গিয়ে বসে। এই সময় সাধারণত ফারাশ বাসায় থাকে না। আজ ফারাশকে বাসায় দেখে খানিকটা অবাক হয় অয়নন্দিতা। ফারাশ প্রশ্ন করে,
‘কী খবর রাজরানী?’
‘কী খবর জানতে চাও?’
‘যে খবর শোনাবে। সেই খবরই জানব।’
‘আজ বের হওনি?’
‘নাহ। আজ আর বের হবো না।’
‘কেন? বান্ধবীর সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে নাকি?’
অয়নন্দিতার কথা শুনে ফারাশ চমকে যায়। মূলত সে এই বিষয়েই কথা বলতে এসেছিল। ফারাশের এতো বিন্দাস লাইফেও ট্র‍্যাজেডি চলছে। অয়নন্দিতার সঙ্গে শেয়ার করবে বলেই এই ঘরে আসা। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে, অয়নন্দিতা ধরে ফেলেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এটা তার অনুমান নাকি কোনো না কোনো ভাবে সে জানতে পেরেছে। ফারাশ জবাবে বলে,
‘নারীর মন এমন কেন?’
‘কেমন?’
‘এত চাহিদা কেন তাদের মনে?’
‘আমার মনে তো নেই। তাহলে কি আমি নারী নই?’
‘সেই কথা কখন বললাম। তুমিও নারী সেও নারী। শুধু তফাৎ আছে মনের দিকে।’
‘কী হয়েছে? মনটা,ভীষণ বিষন্ন লাগছে। খুলে বলা যায় আমায়?’
‘রাজরানী, তুমি কি জানো, আমি নায়াকে অনেক বেশি ভালোবাসি। নায়াও আমায় ভালোবাসে। তবে,,,’
‘যেখানে দু’জনার প্রতি দু’জনার এতো ভালোবাসা সেখানে তবে নামক ছোট্টো শব্দটা কেন আসে?’
‘তবে নামক ছোট্টো শব্দটা আসার কারণ আছে। নায়ার বাবা সেই ছোট্টো শব্দের সঙ্গে মিশ্রিত।’
অয়নন্দিতা এবার আরও কনফার্ম হয়েছে যে, নিশ্চয়ই গুরুতর কিছু হয়েছে। অন্যান্য সময় ফারাশ তাকে হাসায় কিন্তু আজ ফারাশের মুখে হাসি নেই। ফারাশ চুপচাপ বসে আছে।
‘নায়া’র বাবা কী চাচ্ছেন আর নায়া-ই বা কী চাচ্ছেন?’
‘নায়া’র বাবা যা চায়, নায়াও তার সাথে হ্যাঁ হ্যাঁ করছে।’
‘একটা কাজ করলেও তো পারো। তোমার ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলতে পারো।’
‘কী কথা বলব?’
‘নায়া এবং তার বাবার চাহিদা নিয়ে কথা বলবে।’
‘নায়া’র বাবা লোকটাকে আমার সুবিধার বলে মনে হয় না।’
‘ভবিষ্যতে তোমার শ্বশুর হবে।’
‘ধুর, শ্বশুর। শ্বশুর না, উনি অসুর।
ফারাশের কথা শুনে অয়নন্দিতা শব্দ করে হেসে দেয়। অয়নন্দিতার হাসির শব্দে ফারাশের মুখেও হালকা হাসি আসে।
হাসি বন্ধ করে অয়নন্দিতা বলে,
‘তোমার ভাইয়া আসুক। আমি কথা বলব। নায়া তোমার ঘরেই আসবে। আর নায়া’র বাবা, তোমার শ্বশুর হবেই হবে।’
‘ওই লোকটাকে আমি এমন শিক্ষা দিব। হাড়ে হাড়ে বুঝবে আমি ফারাশ কী জিনিস।

চলবে………………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here