গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া পর্ব_৩৫
#লেখায়_ফারহানা_ছবি
.
.
🦋
” আর্টিস্ট ডেকে মেয়েটার স্কেচ বানিয়ে নে ৷ যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ৷”
“ওকে বস ৷ আমি এখুনি আর্টিস্ট আনার ব্যবস্থা করছি৷”
একবার যাস্ট স্কেচটা হাতে পাই তারপর শুধু মেয়েটা কেন? পুরো টিমের অস্থিত্ব আমি মিটিয়ে দিবো ৷
_________
” মৌ মামুনি এখন কেমন লাগছে?”
” ড্যাড আমি কোথায়? ”
” মৌ তুমি বাড়িতে, এখন বলোতো এই তিনদিন কোথায় ছিলে?”
” কোথায় ছিলাম আমি? কোথায় ছিলাম”
বলতে বলতে দু’হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে৷
” কি হলো মৌ কি হয়েছে তোমার? উফফ এই সময় তোমার মম কোথায় চলে গেল? মেয়েটাকে এভাবে ফেলে কোথায় চলে গেল?”
মৌ মাথায় হাত দিয়ে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো ,” আমি কোথায় ছিলাম? কেন ছিলাম? আমার কেন কিছু মনে পড়ছে না? কেন কেন কেন?”
মেয়ের এমন অবস্থা দেখে অমিত ডক্টর কে জ্বিজ্ঞাসা করলো,” ডক্টর মৌ কিছু মনে করতে পারছে না কেন?”
” আই থিং সর্ট মেমোরি লস হয়েছে ৷ আপনারা মেয়ে কে একবার হসপিটালে নিয়ে আসবেন কিছু চেকয়াপ করাতে হবে৷ আর মৌ’কে আর প্রশ্ন করবেন না৷ ওর রেস্টের দরকার৷ ”
” ওকে ডক্টর”
ডক্টর চলে যাওয়ার পর পর মৌ বেড থেকে নেমে তার ক্যামেরা খুজতে থাকে৷
” মৌ তুমি এখন কি খুজছো? ডক্টর কি বলে গেলো শুনোনি? তোমাকে রেস্ট নিতে বলেছে৷”
“ড্যাড আমার ক্যামেরাটা কোথায়?”
” রুমে তো থাকার কথা!”
” রুমের কোথাও নেই ড্যাড৷ যে ভাবে পারো ক্যামেরাটা খুজে বের করো৷ ”
” কিন্তু এখন ক্যামেরাটা নিয়ে কি করবে?”
” ড্যাড তুমি ভুলে যাচ্ছো আমি একজন জার্নালিস্ট ৷ আর আজ অর্থমন্ত্রীর একটা ইন্টারভিউ আছে ৷ আর বস আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে৷”
” মৌ মামুনি তুমি চার মাস আগে অর্থমন্ত্রীর ইন্টারভিউ নিয়েছো ভুলে গেলে?”
” ওয়াট! আজ ক’ তারিখ ড্যাড?”
” ২০ শে আগস্ট ২০২১ ”
” ম,,মানে? তাহলে আমার কেন মনে নেই? মাঝের মাস গুলোয় কি হয়েছিলো ?”
” জানি না মৌ ৷ কাল সকালে তোমাকে নিয়ে হসপিটালে যাবো চিন্তা করো না৷”
” মম কোথায় ড্যাড?”
” জানি না” অন্যদিকে মুখ ঘুড়িয়ে কথা টা বললো অমিত….
” মৌ মামুনি তুমি রেস্ট করো আমি তোমার জন্য সুপ নিয়ে আসছি৷”
মৌ কিছু না বলে বেডের উপর শুয়ে পড়ে ভাবতে থাকে গত চার মাস কি করে তার স্মৃতি থেকে বাদ যেতে পারে? কি হয়েছিলো তার? কেন ভুলে গেল পেছনের দিন গুলো? ভাবতে ভাবতে মাথায় চিন চিন ব্যাথা অনুভব করে মৌ ……….
______
” মিস্টার ডেভিল হাসবেন্ট এখানে মুখ ভার করে দাড়িয়ে আছেন কেন?”
” আমাকে শেষ বারের মতো ক্ষমা করা যায় না প্রিয়ু?” শূন্য আকাশ থেকে প্রিয়ার দিকে স্থির দৃষ্টি নিক্ষেপ করে কথাটা বললো সাজিত৷
” ক্ষমা! ক্ষমা করার প্রশ্ন কেন আসছে? আপনি কি কোন অপরাধ করেছেন?”
” করেছি সব থেকে বড় অপরাধ করেছি তোমাকে ঠকিয়ে৷ জানো প্রিয়ু স্মরণ ভাইয়া কিন্তু আমার সৎভাই ৷ এটা শুধু আমরা ফ্যামিলির লোকেরাই জানি৷ বাইরের কেউ জানে না৷ বাবা কোন দিন আমাদের ভাই বোনদের ভেতর কোন পার্থক্য না করলেও মা করতো৷ ছোট বেলা থেকেই মা ভাইয়াকে বড্ড বেশি ভালোবাসতো ৷ মিহু আর আমি সেই ভালোবাসা এক অংশ পাই নি কখনো, হয় তো ভাইয়ার মা নেই সে জন্য তার উপর একটু বেশি মায়া মমতা ভালোবাসা একটু বেশি প্রকাশ পেত৷ কিন্তু আমরা দুজন ছোট বেলা থেকে বাবার ভালোবাসা পেয়ে এসেছি৷ এটা বলবো না মা কখনো আমাদের ভালোবাসেনি কিন্তু আমরা দুভাই কোন কখনো সেই এটেনশন মায়ের কাছে আশা করতাম সেটা কখনো পাই নি৷ তারপর আমরা যখন ধিরে ধিরে বড় হতে লাগলাম তখন থেকে হুট করে বাবা ভাইয়ের ভেতর কেমন যেন দূরত্ব বাড়তে লাগলো জানি না তার কারণ কি তবে আমরা বেশ খুশি ছিলাম প্রিয়ু ৷ তবে স্মরণ ভাইয়া ছোট বেলা থেকে খুব গম্ভির হয়ে থাকতো বিধায় আমরা ভাইয়ের সাথে কথা বলতেও ভয় পেতাম৷ কেন জানো একদিন স্কুলে ভাইয়ার ক্লাস মেট ভাইয়ার কলমটা না বলে হাত থেকে কেড়ে নিয়ে গিয়েছিলো সেদিন ভাইয়া ছেলে টাকে এমন ভাবে মেরে ছিলো যে তাকে হসপিটালে ভর্তি করতে হয়ে ছিলো৷ সে দিন বুঝতে পেরেছিলাম ভাইয়ার রাগ বেশি ৷ ধিরে ধিরে ভাইয়া পড়াশুনার পাশাপাশি পার্টটাইম জব করতো ৷ তারপর একদিন শুনি ভাইয়া নাকি নতুন বিজনেস শুরু করেছে৷ ড্যাড চেয়েছিলো তার বিজনেসে হাত দিক কিন্তু ভাইয়া মুখের উপর না বলে দেয়৷ ভাইয়া ধিরে ধিরে তার ব্যবসা বড় করতে লাগলো ৷ নিজের পরিচয় বানালো৷ জানো আমাদের রিলেটিভ বন্ধু বান্ধব ভাইয়ের সাথে আমাকে তুলনা করতো তখন প্রচন্ড রাগ হতো হিংসে হতো ভাই কে, একদিন হঠাৎ শুনি ভাইয়া কোন এক মেয়ে ভালোবাসে কিন্তু বলেনি৷ আমিও সুযোগ পেয়ে গেলাম প্রতিশোধ নেওয়ার ৷ খোজ নিতে শুরু করি কিন্তু কিছুতেই খুজে পাচ্ছিলাম না৷ একদিন ভাইয়ের ফোনে প্রাণো আর তোমার ছবি দেখতে পাই ভাইয়াকে লুকিয়ে ছবিটা আমি আমার ফোনে নিয়ে নি অবশ্য নিতে পারতাম না যদি না ভাইয়া ফোনের লক খুলে না রাখতো৷ তারপর বন্ধুদের লাগিয়ে দি প্রাণো কে খুজতে আর একদিন হঠাৎ তোমাকে খুজে পাই তারপর… ”
“তারপর আমার সাথে ভালোবাসার অভিনয় করলেন রাইট? যাই হোক এই বিষয়ে আমি কোন কথা বলবো না তবে একটা কথা বলবো৷ ভুল বলছেন আপনি মামুনি আপনাদের সমান ভাবে ভালোবাসে কিন্তু প্রকাশ করার ধরণটা হয়তো ভিন্ন আর একটা কথা মিহু বা আপনি ছোট বেলা থেকে একটা ধারনা মনে পোষণ করে রেখেছেন যে স্মরণ ভাইয়া আপনার সৎ ভাই ৷ আর আপনার মা আপনার সৎভাইকে বেশি ভালোবাসে৷ কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা পোষণ করেন আমি মনে করি৷ অবশ্য সবটাই করেছেন হিংসার বশবর্তী হয়ে৷ ”
” আমাকে কি শেষ বার ক্ষমা করা যায় না প্রিয়ু?”
” করে দিলাম ক্ষমা ৷ আর কিছু?”
” প্রিয়ু আমি তোমার সাথে আমাদের সংসারটা নতুন করে শুরু করতে চাই? ”
” আবার নতুন অভিনয় শুরু করলেন দেখছি!”
” আমি কোন অভিনয় করছি না প্রিয়ু মন থেকে বলছি৷ আমি ভাইয়া আর ভাবির মাঝে তৃতীয় ব্যাক্তি হয়ে ঢুকতে চাই না৷ আমি একটু শান্তিতে তোমার সাথে ভালোবাসাময় সংসার গড়তে চাই প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিও না৷” প্রিয়ার সামনে হাটু গেড়ে হাত জোর করে বলতে লাগলো প্রিয়াকে…. প্রিয়ার চোখের অশ্রুদ্বয় টলমল করতে করতে একসময় গড়িয়ে পড়লো৷ এই অশ্রুদ্বয় কোন দুঃখের নয় বরং সুখের, তার ভালোবাসা আজ নিজের ভুল বুঝতে পেরে তার কাছে ফিরে এসেছে৷ এর থেকে আনন্দের আর আছে? প্রিয়া সাজিতের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে কাঁদতে লাগলো৷ সাজিত পরম আদরে প্রিয়াকে তার বুকের সাথে জড়িয়ে নিলো৷ আজ থেকে অভিনয়ের খেলায় মাতবে না সাজিত ৷ বরং ভালোবাসাময় সংসার গড়বে৷
_________
” প্রাণো তুই কি করছিস? তুই এমন ডেন্জারাস কাজ করছিস ? আই কান্ট বিলিভ দিস ইয়ার৷”(সাফা)
” কেন বিলিভ করছিস না সাফা?”(প্রাণো)
প্রাণোর প্রশ্নের উওরে স্মিতা বলে উঠলো , ” কারণটা আমি বলছি প্রাণো৷ তোর যে রক্তে ফোবিয়া আছে সেটা আমরা সবাই জানি৷ যে মেয়ে রক্ত দেখলে ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যায় ৷ সে মেয়ে এমন দলের টিম লিডার এটা মানতে সত্যি ভিষণ কষ্ট হচ্ছে ৷”
স্মিতার কথা শুনে প্রাণো হেসে উঠলো৷ হাসতে হাসতে প্রাণো হঠাৎ গম্ভির হয়ে বলতে লাগলো, ” তোদের সামনে যে প্রাণোকে দাড়িয়ে থাকতে দেখছিস সে রক্ত দেখলে ভয় পায় ৷ আর যে প্রাণোর কথা তোদের বলেছি সে রক্ত দিয়ে হলি খেলে৷ ”
” প্রাণো! তুই সত্যি ওরকম ডেন্জারাস টিম লিড করিস? “”(ঐশী)
” ইয়েস, তবে একটা কথা তোরা কান খুলে শুনে রাখ ৷ এই কথাটা যদি তোদের তিনজন ব্যতিত চার জন হয় তাহলে আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না৷ এই প্রাণো তোদের ছেড়ে দিলেও টিম লিডার প্রাণো তোদের কিন্তু ছাড়বে না৷ সো বি কেয়ারফুল গাইজ৷ ”
প্রাণোর ঠান্ডার গলার থ্রেট শুনে সাফা ঐশী স্মিতা তিনজনই চুপ হয়ে যায়৷
” গাইজ ডিজাইনার কিছুক্ষণ পর এসে যাবে তোরাও ওখান থেকে নিজেদের জন্য ড্রেস চুজ করে নিস৷ ”
” ওকে”
তিনজন রুম থেকে বের হতেই স্মরণ রুমে ঢুকতেই তিন বান্ধবী ঘাবড়ে যায়৷ স্মিতা সাফা ঐশী কে ঘাবড়াতে দেখে স্মরণ ব্রুযুগল কুচকে জিজ্ঞাসা করে,” কি হলো শালী সাহেবাগন আমাকে দেখে তোমরা ঘাবড়ে গেলে কেন? এখানে কি নিয়ে বান্ধবীর সাথে আলোচনা হচ্ছে হুম?”
সাফা ফট করে বলে ওঠে,” এই তো আপনাদের আবার ফুলসজ্জার আয়োজন করা হবে সে নিয়ে কথা বলছিলাম৷”
” রিয়েলি?”
” তাহলে আর ওরা কি নিয়ে আলোচনা করবে স্মরণ?”(প্রাণো)
” হতে পারে কোন গোপন রহস্য যেটা আমাদের সবাইকে লুকিয়ে রাখতে চাইছো তোমরা?”
” হি হি হি ভেরি ফানি দুলাভাই ৷ আপনি তো অনেক মজার মানুষ ৷ আপনার বউয়ের কোন গোপন রহস্য থাকলে তো সেটা আপনার সবার আগে জানার কথা তাই না?”
” তা ঠিক তবে এখন কোন রহস্য জানি বলে পরে জানবো না এটা কিন্তু বলে নি৷” স্মরণের কথা শুনে সাফা ঐশী স্মিতা ঘাবড়ে গেল শুধু ঘাবড়ালো না প্রাণো সে শান্ত স্থির হয়ে বসে আছে৷
” ড্রামা কুইনরা এখন আপনারা আসতে পারেন৷” (প্রাণো)
” হুম আমরা যাচ্ছি ৷ ”
প্রাণোর বান্ধবীরা চলে যেতে স্মরণ দরজা লক করে প্রাণোকে কোলে তুলে নিয়ে বেডে শুইয়ে দিয়ে প্রাণোকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ে ৷ প্রাণো কিছু বলতে নিলে স্মরণ বলে ওঠে , ” ডোন্ট ডিসটার্ব মি প্রাণ ৷ ঘুমাতে দেও আমাকে,”
” আমাকে ছেড়ে ঘুমাও প্লিজ”
” উহু আমি যতোক্ষণ ঘুমাবো তোমাকেও ততোক্ষণ ঘুমাতে হবে৷ আর এখন একটা কথা বললে রাতের রোমান্টিক টর্চার কিন্তু এখন শুরু করবো আমি সুইটহার্ট ৷”
প্রাণো স্মরণের সাথে না পেরে চুপ হয়ে গেল৷
পরেরদিন বিকেলে বাড়িতে গেস্ট আসতে শুরু হয়ে গেলো অথচ প্রিয়া প্রাণো কেউ রেডি হয়নি৷ দুজনকে সাজাতে বিউটিশিয়ানরা এসেছে৷ প্রাণো মেরুন রঙের ল্যাহেঙ্গা পড়েছে সাথে ভারি গহনা সাজ৷ আর প্রিয়া গোলাপি রঙের লেহেঙ্গা পড়েছে৷ প্রিয়া দুধ সাদা না হলেও প্রচন্ড মায়া ভরা মুখ প্রিয়ার ৷ গোলাপি রঙের লেহেঙ্গা পড়নে ভিষণ সুন্দর লাগছে প্রিয়াকে, সাফা ঐশী স্মিতা তিন জনই প্রাণো আর প্রিয়ার দিকে হ্যাঁ করে তাকিয়ে আছে৷
” ওহ মাই গড দোস্ত তোদের দুবোন কে পরীর মতো সুন্দর লাগছে৷ কেউ কারোর থেকে কম লাগছে না৷”(ঐশী)
” ঠিক বলেছিস ঐশী৷ প্রাণোর দিক থেকে যেমন চোখ সরানো যাচ্ছে না ঠিক প্রিয়ার উপর থেকেও চোখ সরানো যাচ্ছে না৷ স্মিতা একটা কাজ কর এম্বুলেন্সে ফোন কর কারণ আজ স্মরণ দুলাভাই আর সাজিত দুজনে জ্ঞান হারিয়ে ফেলবে তাদের বউ কে দেখে…”
” সাফা আপু তুমি কিন্তু একটু বেশি বেশি বলছো৷”(প্রিয়া)
প্রিয়ার কথা শুনে প্রাণো প্রিয়াকে জড়িয়ে ধরে বলে, ” ওরা কেউ একবর্ণ মিথ্যা বলে নি আজ আমার প্রিয়ু কে সত্যি একটা ছোট্ট পরীর মতো লাগছে৷ দোয়া করি আমার বোনটার জীবনে আজ থেকে আনন্দের জোয়ার আসতে লাগুক৷ যতো দুঃখ যতো কষ্ট সব যেন আনন্দের জোয়ারে ভেষে যায়৷ চোখে দুঃখের কান্না নয় সুখের কান্না হোক৷ ”
” আপু” প্রিয়া প্রাণোকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়৷
” এই তোরা কান্না কাটির পর্ব এখন শুরু করিস না প্লিজ ৷ তাহলে মেকয়াপ যে নষ্ট হয়ে যাবে ৷ তখন কিন্তু পার্টির সবাই ভুত ভেবে পালিয়ে যাবে৷”(সাফা)
সাফা কথা শুনে প্রাণো প্রিয়া দুজনে হেসে ফেলে…….
সিঁড়ি দিয়ে প্রাণো আর প্রিয়া নামতে স্পট লাইটের আলো ওদের উপর ফোকাস করা হয়৷ সাজিত স্মরণ সাথে প্রত্যেকটা গেস্ট তাকিয়ে আছে দুবোনের দিকে, দুজনকে আজ অসম্ভব সুন্দর লাগছে৷ সাজিত আজ প্রথম বার প্রিয়ার উপর মুগ্ধনয়নে তাকিয়ে আছে৷ গোলাপি লেহেঙ্গায় পরীর চেয়ে কোন অংশে কম লাগছে না৷ হ্যাঁ করে তাকিয়ে প্রিয়াকে দেখে যাচ্ছে সাজিত৷ এদিকে স্মরণের যেন হার্টবিট মিস হয়ে গেল প্রাণোকে দেখে মেরুন রঙের লেহেঙ্গা পুরো অঙ্গে গহনা জড়ানো৷ তার চেয়ে বড় কথা আজ প্রাণোর নীল আখিদ্বয় থেকে চোখ সরছে না কারোর ,
প্রাণো স্মরণ প্রিয়া সাজিত কে স্টেজে বসানো হলে একে একে সবাই এসে আলাপ করছে ৷ প্রাণো আড়চোখে স্মরণের দিকে তাকিয়ে দেখছে ৷ পুরো ব্লাক হয়ে আছে স্মরণ ব্লাক কোট প্যান্ট শার্ট , প্রাণো স্মরণের মুখের দিকে তাকাতে খেয়াল করে স্মরণ আজ ক্লিন সেভ করেছে যেটা প্রাণো মটেও পছন্দ করে না৷ তবুও আজ স্মরণকে পুরো রাজপুত্রের মতো লাগছে৷
সাজিত অনেকক্ষণ ধরে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে৷ এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে প্রিয়া এক প্রকার বিরক্ত হয়ে সাজিতের হাতে চিমটি কেটে বলে, ” এভাবে চোখ দিয়ে আমাকে গিলছো কেন ?”
” তাহলে কি মুখ দিয়ে গিলবো? সমস্যা নেই সেটা না হয় রা..” বাকিটা বলার আগে প্রিয়া সাজিতের মুখ চেপে ধরে বলে, ” একটাও বাজে কথা উচ্চারণ করলে বাসর করার সাধ জীবনের মতো ঘুচিয়ে দিবো৷ ”
” এই না না আমি চুপ করে আছি সি” ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে দেখালো সাজিত৷
” উফফ , তুমি এখানে বাজে না বকে দেখো তো আম্মু আব্বু দাভাই এখনো আসেনি কেন?”
” ওকে জানেমন আমি এখুনি খবর নিয়ে আসছি৷”
রিসেপশনে সাদমান আর নিশিতা বেগমকে দেখে প্রাণোর মন খারাপ হয়ে যায় তা দেখে স্মরণ বলে ওঠে , ” সুইটহার্ট মন খারাপ করো না ৷ শশুর মশাই আর ড্যাড একটু আগে বাইরে গেল কোন আর্জেন্ট কাজে আমাকে মেসেজ করে জানিয়ে দিয়েছে৷”
” তাই বলে আব্বু আমার সাথে একবার দেখা করলো না৷ এতো রাগ এতো অভিমান?” কথা টা বলতে বলতে চোখে পানি জমলো প্রাণোর, স্মরণ প্রাণোর চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বলল,” প্রাণ ডোন্ট ক্রাই ইউ নো না আমি তোমার চোখের পানি সহ্য করতে পারি না৷ এই পানি অতি মূল্যবান কথায় কথায় ঝড়াতে নেই প্রাণ এন্ড ট্রাস্ট মি শশুর মশাই আসবে আর তোমার সাথে দেখাও করবে৷ ওয়েট আমি তোমার জন্য পানি নিয়ে আসছি৷”
স্মরণ স্টেজ থেকে নামতেই প্রাণোর ফোনটা ভাইব্রেট হতে লাগলো ৷ প্রাণো ফোনের স্কিনে RV নামটা দেখে একটু আড়ালে গিয়ে কল রিসিভ করে …
” হ্যালো প্রাণো ”
“হ্যাঁ, RV বলো তুমি এখন ফোন করলে এ্যাভরি থিং ইজ অল রাইট ?”
” না প্রাণো কিচ্ছু ঠিক নেই৷ কণা কে কিছুক্ষণ আগে একটা গাড়ি এসে তুলে নিয়ে গেছে৷ আমি কিছু করার আগেই গাড়িটা মিনিটে ভ্যানিস হয়ে গেছে ৷ আ,, আমি পারলাম না কণা প্রটেক্ট করতে..”
” RV , RV ডোন্ট বি প্যানিক৷ আমি আসছি ৷”
” মা,,মানে! আজ তোমার রিসেপশন প্রাণো?”
” গো টু হেল , সব কিছুর আগে আমার টিম মেম্বার RV তারপর অন্য কিছু , তুমি কণার ফোন নাম্বার ট্রেস করার চেষ্টা করো ফাস্ট৷”
“ও ওকে..”
প্রাণো কল ডিসকানেক্ট করে এদিক ওদিক তাকিয়ে সাফা ঐশী স্মিতা কে খোজার চেষ্টা করলো৷ তারা তাদের বয়ফ্রেন্ডের সাথে গল্প করতে মসগুল এখন উপায় শুধু প্রিয়া……..
________
” মেয়েটা কোথায়?” (JM)
” বস ওই রুমে আটকে রেখেছি৷ বস মেয়েটা তো মুখ খুলছে না৷”
” মুখ তো খুলতে হবেই ওকে নাহলে যে আমার হাতে মরবে ৷ রানা ”
” ইয়েস বস”
” সব কিছু রেডি তো?”
“ইয়েস বস সব কিছু রেডি আছে আপনি শুধু শুরু করুন৷”
” গুড ” JM দামী সিগারেট এর ধোয়া ছাড়তে ছাড়তে রুমে এসে প্রবেশ করতে কণার চোখ দরজার দিকে পড়তেই কণা শক্টড…….
.
.
.
#চলবে………..