প্রাণস্পন্দন•পর্বঃ৫০

0
2112

#প্রাণস্পন্দন
#পর্বঃ৫০
লেখনীতেঃতাজরিয়ান খান তানভি

পরিত্যক্ত সরোবরে ফোটা এক বৃষ্টিস্নাত ভোরের স্নিগ্ধ, অপার্থিব মোহাচ্ছন্ন সরোরুহ ছিল নয়নতারা। কিশোরী নননতারার কোমলাঙ্গ দেহের প্রতিটি ভাঁজে ছিল নয়নমোহন রূপ। ভাগ্যবিধাতার দেওয়া নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এক দৃশ্যমান আধার ছিল নয়নতারা। যার মুক্তোঝরা হাসি যেকোনো পুরুষ হৃদয়ে কাঁপন ধরাতে ক্ষণপলেই ব্যয় করে। যার চঞ্চল অন্তঃকরণে চলে প্রাণ প্রাচুর্যের অবিশ্রান্ত ধারা। দেদীপ্যমান তার অঙ্গে প্রাণসুধায় মত্ত হতে পুরুষের অভীপ্সাপূর্ণ নজর সবসময় ওঁৎ পেতে থাকে। কিন্তু তার দিকে বাড়ন্ত নজরের মধ্যখানে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন রাজন শিকদার।

চড়ুই পাখির মতো সারাক্ষণ টই টই করেই দিবসের অবসান ঘটে নয়নতারার। নিষ্প্রাণের বয়স তখন দশ। নামের মতোই প্রাণহীন এক শিশু সে। স্কুলে যাতায়াত ছাড়া বাড়ির অন্দরমহলের বাইরে তার বিচরণ অতি নগন্য। নিষ্প্রাণ তার জন্মের সময়ও কাঁদেনি। ডাক্তাররা তো তাকে প্রায় মৃত বলেই ঘোষণা করে ফেলেছিল। কিন্তু বেঁচে ওঠে সে।
নিষ্প্রাণের একমাত্র সঙ্গি ছিল নয়নতারা। একদম নিষ্প্রাণের বিপরীত চরিত্র। নিষ্প্রাণকে জ্বালাতনে মহাজাগতিক সুখ অনুভূত হয় নয়নতারার। তার মোক্ষম হাতিয়ার ছিল তিনটি শব্দ। যা শুনতেই কেঁদে বুক ভাসাত নিষ্প্রাণ। বিয়ে করবি আমায়? ব্যাস, নিষ্প্রাণকে আর কে পায়! দাদু, মা, বাড়ির সকলের কাছে চলে বিচারের প্রার্থনা। কিন্তু এত ভয়ংকর অপরাধের শাস্তি কখনো দেওয়া হয়নি নয়নতারাকে।

রাজন শিকদারের ছেলেদের মানুষের মতো মানুষ করার আপ্রাণ প্রয়াসে ব্যর্থ তিনি। এক বিধবা মেয়ের সাথে তিনি তার বড় ছেলের বিয়ে দেন। নিষ্প্রাণের সৎ মায়ের বিয়ের দিনই তার স্বামীর মৃত্যু ঘটে। সেই মেয়েকেই তিনি পুত্রবধূ করে ঘরে তোলেন। তাতে অবশ্য তার ছেলের আপত্তি ছিল না। বড় ছেলের ঘরে জন্ম নেয় পরপর দুই নাতিন। খুশি ছিল পুরো পরিবার। কিন্তু মেঝ ছেলের বিয়ের আট বছর পরও কোনো সন্তানের মুখ দেখা হলো না তাদের।

ঘটল অঘটন। তাদের বাড়ির কাজের মেয়ে ছিল নিষ্প্রাণের মা মেরুন। রাজন শিকদার হৈ-হুল্লোড় পছন্দ করতেন না। তাই বাড়ির যেকোনো অনুষ্ঠান হতো পাশের দালানে। সেদিনও ছিল জলসাঘর। একটা কেস জেতার খুশিতে দুই ভাই মদ্যপানে মশগুল ছিল। মেঝ ছেলে কমল সেখানেই চেতন হারায়। কিন্তু নেশার্ত নিষ্প্রাণের বাবা কায়সার ঝাঁপিয়ে পড়েন মেরুনের ওপর।
ঘটনার জানাজানিতে শরমে মাটিতে মিশে গেলেন রাজন শিকদার। মেরুনের বাবার জোড়াজোড়িতে কায়সার সাথে বিয়ে হয় মেরুনের। নীরবে সবটা সহ্য করলেন কায়সারের প্রথম স্ত্রী। বছর ঘুরতেই সন্তানসম্ভবা হলেন মেরুন। জন্ম দিলেন নিষ্প্রাণকে। কায়সারের প্রথম স্ত্রী সাথী এবার নিজের আক্রোশের প্রকাশ ঘটালেন। কেড়ে নিলেন দুধের শিশু নিষ্প্রাণকে তার মায়ের বুক থেকে। তাকে বন্ধি করলেন সেই দালানের কোণার ঘরটাতে। ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়ে এ সম্পত্তির ভাগ তো তিনি কোনো কাজের মেয়েকে নিয়ে যেতে দিতে পারেন না! মেরুনকে দেওয়া হতো অচেতন থাকার ঔষধ। কায়সার ঠিক সময় তার মতলব বুঝে নেন। সেসব নিয়ে তার মাথা ব্যথা নেই। বড়ো হতে থাকে নিষ্প্রাণ তার সৎ মায়ের কাছে।

এক দিন উত্তাপিত প্রভাতে আগমন ঘটে রাজন শিকদারের ছোটো ছেলে খসরুর। তার স্ত্রী তখন অন্তঃসত্ত্বা। নিষ্প্রাণের বড়ো বোনের বিয়ে হয়ে যায়।
আর ভয়াল সে রাতে ছিল নিষ্প্রাণের ছোটো বোনের জন্মদিন। ঘটনার পূণরাবৃত্তি ঘটে। তবে মানুষটা ছিল আলাদা। নয়নতারা।

দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে নিষ্প্রাণ। উদাস চোখভর্তি ক্ষোভ। কণ্ঠে মলিনতা। শান্ত চোখে চাইল আয়েন্দ্রির দিকে। বাম হাতে ভর দিয়ে বসে আছে আয়েন্দ্রি। তার ঠোঁট জড়ানো রক্তে। কপালের মাঝে প্রবহমান রক্তের স্রোত মন্থর। আয়েন্দ্রির ক্ষুদ্র দুই চোখের ঝাপসা চাহনি। তার ঘর্মাক্ত, রঞ্জিত মুখে ধুলোর লেপন। সরু, পাতলা কিছু একটা লেগে আছে জমাট রক্তে। ধুলোর আচ্ছাদনে খরা লেগেছে জীবন্ত কেশে। মেঝেতে লেগে থাকা রক্ত জমাট হয়ে আছে। তাতে মিশেছে বর্ষ পুরোনো ধুলো। নিষ্প্রাণ মৃদু হাসল। নিরুদ্বেগ গলায় বলল—

” এই বাড়িতে আমার আর তারার আসা নিষিদ্ধ ছিল। আমরা কখনও আসতাম না। তারা আসলেও সাথে হেকমত চাচা থাকতেন। তবে তা কোনো অনুষ্ঠান হলেই। একদিন বাবাকে আসতে দেখলাম আমি। তার পিছু নিলাম। পিছু পিছু এই পর্যন্ত এসে থমকে যেতে বাধ্য হলাম। বাবা এই বদ্ধ ঘরে ঢুকলেন। কিছু সময় পর বেরিয়েও গেলেন। আমি বাইরে থেকে কারো আওয়াজ শুনেছি। সেই প্রথম, আমি আমার মায়ের কণ্ঠ শুনেছি যা ছিল তার আর্তনাদ। দেখেছিও আমি। ওই যে দরজায় যে হোল দেখছিস ওটা দিয়ে।”

থামল নিষ্প্রাণ। বিশ্রি রকম হাসল সে। ওই বয়সে বুঝতে না পারলেও এখন তো সে জানে, সেদিন সে কী দেখেছিল! আয়েন্দ্রির রুহ কেঁপে ওঠে। কোনো সন্তানের জন্য এই দৃশ্য স্বাভাবিক নয়। নিষ্প্রাণ আবার বলল—

“আমি কাউকে কিছু বলিনি। তারাকে বলেছি। ওকে ছাড়া ওই দৃশ্য কাউকে বলার সাহস আমি পাইনি। একদিন আমি আর তারা এসেছিলাম বাবার পিছু পিছু। তারা বুঝতে পেরেছিল কী ঘটছে আমার মায়ের সাথে। বাবার স্ত্রীও সেদিন খুব ঝগড়া করেছিল বাবার সাথে। তারা সবটা শুনে কিছুটা আন্দাজ করতে পারে। কিন্তু আমি পারিনি। রোজ চুরি করে এসে ওই ছিদ্র দিয়ে তাকে আমি দেখতাম। এই যে কোণাটা দেখছিস, এখানেই বসে থাকত। কখনো শুয়েও থাকত। আমার কষ্ট হতো। কেন? জানি না। তবুও কষ্ট হতো। তারাকে বললে ও আমাকে বলে সবটা। মা ছিল সে আমার। তবুও একটু কষ্ট হয়নি আমার। কেন হয়নি বলতো? আমি নিষ্প্রাণ বলে? একদিন আমি আর তারা এসে দরজা খুলে দেই। চাবি আমি বাবার ঘর থেকে চুরি করে আনি। ভদ্রমহিলা আমাকে দেখে আঁতকে ওঠেন। জড়িয়ে ধরে কাঁদেনও। কিন্তু একটু পরেই সব শেষ। আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। কারণ, সে তো আমাকে চেনে না। দেখেনি তো আমাকে। তার সন্তান তো ছিল এইটুকু। আমি তো দশ বছরের! আমার মা পাগলের মতো ছুটে বেরিয়ে গেল। ড্রাগসের নেশা কমে এসেছিল তার। দৌড়াতে দৌড়াতে ও বাড়িতে চলে যায়। বাবা বাড়িতে ছিলেন না। দাদু আর হেকমত চাচা কাজে বেরিয়েছিলেন। বাবার স্ত্রীর বড়ো মেয়ে এসেছিল সেদিন। তারা ঘরে ছিলেন। আমার মা আমার চোখের সামনে করিডোর থেকে লাফিয়ে পড়ে। আমি কিচ্ছু করতে পারিনি। কিচ্ছু না।”

আয়েন্দ্রির বুক ভার হতে লাগল। টপটপ করে ঝরতে লাগল জল। নিষ্প্রাণ অনুভূতিহীন চোখে চেয়ে অধর কোণে হাসল। আয়েন্দ্রি বিস্মিত! এই ছেলে কী করে হাসে?

” আমার মায়ের কবর হলো বাড়ির পেছনে। কবর নয়। তাকে পুঁতে দেওয়া হলো সেখানে। আমি শুধু দেখেছি। ”

শ্বাস ফেলল নিষ্প্রাণ। সিটি বাজাতে শুরু করল। আয়েন্দ্রির কান ধরে আসল। খলখলিয়ে হেসে ওঠে নিষ্প্রাণ। হাসি থামিয়ে নরম চোখে চাইল তার ধ্রুবতারার দিকে। মেয়েটাকে ভীত মনে হচ্ছে।
নিষ্প্রাণ বুক ফুলিয়ে শ্বাস নিয়ে বলল—

“আমার ছোটো চাচী তখন প্রেগন্যান্ট। তার স্বামীর চতুর নজর তখন নয়নতারার ওপর। আমার মনে হলো। মানে এখন মনে হচ্ছে। হাজার হোক, পুরুষ মানুষ তো। ক্ষুধার্ত হায়েনার চেয়েও জঘন্য! বউ মা হতে চলেছে। দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার! তারা সেদিন খুব সেজেছিল। ঠিক বাবার স্ত্রীর মতো। এক পরী ছিল আমার নয়নতারা। শুধু উড়তে পারত না বলে। চাচীর স্বাধের অনুষ্ঠান চলছিল। দেশের বাইরে মানুষ হয়েছে তো। দেশীয় আবহাওয়া ঠিক হজম করতে পারছে না। অসুস্থ হয়ে পড়ল। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর তারাকে দায়িত্ব দেওয়া হলো সব গোছগাছ করতে। বাড়ির অন্য কাজের লোকরা বাইরে ব্যস্ত ছিল। আমার ছোটো চাচা সেদিন তার সুযোগ পেয়ে গেল। এই ঘরটাই ছিল। তারার চিৎকার প্রতিটি ইট সেদিন কেঁপেছে আর আমি কেঁদেছি। ”

নিজের ঠোঁট কামড়ে ধরে নিষ্প্রাণ। ঝরা হাসে। সিটি বাজায়। নিজেকে ধাতস্ত করে পূনরায় বলল—

“সেদিনও আমি সবটা দেখেছি। সবটা। নিজের এই দুই চোখে। চাচা চলে যায়। আমার তারা ঠিক তুই যেখানটায় বসে আছিস এখানটায় শুয়ে ছিল। ওর পুরো শরীর ছিল রক্তরাঙা। আমি ওর সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। দু’পা এগোতেই চিৎকার করে ওঠে তারা। বলে, ছুঁবি না আমাকে। আমি নষ্ট হয়ে গেছি। কাছে আসবি না আমার। তারা আবার কাঁদল। তবে, এবার নিঃশব্দে। আমি তাকিয়েই রইলাম। মানুষ আবার নষ্ট হয় কী করে? বলতে পারিস ধ্রুবতারা? পারিস না। পারবিও না। হয়, মানুষ সত্যিই নষ্ট হয়। যখন তাদের ভেতরটা কেউ ছিন্ন-ভিন্ন করে রক্তাক্ত করে, তখন মানুষ নষ্ট হয়। আমি দৌড়ে আসলাম দাদুর কাছে। দাদু আর হেকমত চাচাকে নিয়ে গেলাম সেখানে। বললাম, ছোটো চাচ্চু তারাকে কষ্ট দিয়েছে। আমার তারা কষ্ট পাচ্ছে দাদু। আমার তারা কষ্ট পাচ্ছে।”

নিষ্প্রাণের গলা ধরে আসলো। সে কিছুক্ষণ জানালার দিকে চেয়ে থাকল। ভোরের আকাশের প্রতিমা জাগ্রত হয়েছে। তার বিকীর্ণ আলোয় ধরায় নেমেছে আলোক জোয়ার।
নিষ্প্রাণ বুক ভর্তি শ্বাস নিল। বলল—

“তারাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। বাড়িতেই চিকিৎসা চলে ওর। এই ঘরেই। ছোটো চাচা চাচীর পায়ে পড়লেন, ক্ষমা চাইলেন। মেনে নিলেন। হাজার হোঈ স্বামী তো। দাদু আবারও আমাকে ঠকালেন। নিজের ছেলেকে বাঁচাতে আমার তারাকে হারিয়ে দিলো। তিনদিন ওর ব্লিডিং হতে থাকে। কী করেছিল ছোটো চাচা আমার তারার সাথে? জানি না আমি। দাদু আমাকে নিষেধ করেছিল তারার কাছে আসতে। তবুও আমি এসেছিলাম সেদিন। তারা কথা বলেছিল আমার সাথে। আর একটা জিনিস চেয়েছিল। মৃত্যু !”

আঁতকে ওঠে আয়েন্দ্রি। তার শীতল শ্বাস মুহূর্তেই গরগর করে বের হতে লাগল। কাঁপতে লাগল সারা শরীর। নিষ্প্রান সরব গলায় বলল—

“আমার এই হাত দিয়ে ওর প্রাণ নিয়েছি আমি। এই হাত দিয়ে। আমার এই ছোট্ট হাতও অনেক কিছু করতে পারে সেদিন বুঝতে পেরেছি আমি। দাদু এসে দাঁড়ালেন এখানে। তাকে বলেছি আমি। মেরে ফেলেছি আমি আমার তারাকে। মেরে ফেলেছি। তারার ঠিকানা হলো সেই গাছতলা। আমার মায়ের পাশে। তারপর! তারপর এই নিষ্প্রাণ সত্যিই নিষ্প্রাণ হয়ে গেল।”

নিষ্প্রাণ সরল চোখে তাকায় আয়েন্দ্রির দিকে। কোমল হাসে। নেমে এলো মৌনতা। আয়েন্দ্রির মাথায় ভীষণ যন্ত্রণা হচ্ছে। ঝিমঝিম করছে স্নায়ুতন্ত্রী। মনে হচ্ছে এখনই সব শেষ হয়ে যাবে। চট করেই বলে উঠে নিষ্প্রাণ—

“আমার এই হাত সেদিন সত্যিই কিছু করেছিল। আমার বোনের জন্মদিন ছিল। সবাই সেদিন খুব খুশি। খুশি ছিল না তিনজন মানুষ। আমি, দাদু, হেকমত চাচা। তারা তো নিজেদের কষ্ট সয়ে নিয়েছে। কিন্তু আমি পারিনি। দাদু ঘুমের ঔষধ খেতেন। একদিন তারাকে দেখিয়েছিলাম সেই ঔষধ। ঘুম! আসলেই সবার ঘুমের প্রয়োজন। আমার মাথায় একটা বুদ্ধি এলো। দাদুর কাছ থেকে জেনে নিয়ে তার সব ঘুমের ঔষধের পাতা আমি নিয়ে নিলাম। সেগুলো মিশিয়ে দিলাম অনুষ্ঠানের জন্য করা সেই স্পেশাল শরবতে। যা হেকমত চাচা নিজ হাতে বানিয়েছেন। বিকেলে শুরু হওয়া অনুষ্ঠান সন্ধ্যায় আরো জমজমাট হলো। কিন্তু মানুষগুলো শান্ত হয়ে গেল। ঘুমপুরীতে রুপান্তরিত হলো এই জলসা বাড়ি। বাড়ির বাইরেই তো রান্না হয়েছিল। কেরোসিন ছিল সেখানে। দেখেছি আমি, কী করে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালাতে হয়। সেই কেরোসিন তেল এনে ওদের ওই ঘরে ঢেলে দিয়েছি। তারপর ছোট্ট একটা আগুনের শিখা। ব্যস! আমার কাজ শেষ। ”

অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে নিষ্প্রাণ। আয়েন্দ্রির মনে হলো সেই আগুন এখনো জ্বলছে। চিৎকার করছে সেই মানুষগুলো। আর তাদের চিৎকারে প্রাণখুলে হাসছে নিষ্প্রাণ। বেপরোয়া, উদ্ভ্রান্ত, উন্মাদের মতো। নিষ্প্রাণ ওঠে দাঁড়ায়। ধীরে পা চালিয়ে আয়েন্দ্রির সামনে গিয়ে বসে। কোনো ব্যবধান রাখল না। আয়েন্দ্রি শ্বাসের ক্ষীণ শব্দ শুনছে নিষ্প্রাণ। তার নিরানন্দ, নিস্পৃহ মুখটার দিকে একমনে চেয়ে রইল নিষ্প্রাণ। টুপ করে গভীর চুমু খেলো আয়েন্দ্রির রক্তভেজা অধরে।

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here