বদ্ধ হৃদয়ের অনুভুতি পর্বঃ৩

0
5557

#বদ্ধ_হৃদয়ের_অনুভূতি
#পর্বঃ৩
লিখাঃতাজরিয়ান খান তানভি

অনেক সময় হয়েছে মাহাদ সেট এ এসেছে।তার শরীর এখানে হলেও তার মন আর মস্তিষ্ক এখনো সেই অজানা নারীর ময়ূরের পালকের মতো লম্বা অক্ষিপল্লব যুক্ত চোখ আর ঘন কালো কেশ এ আটকে আছে।আর ওই সুগন্ধ!
ওই সুগন্ধ সে এ জীবনে চাইলেও ভুলতে পারবে না।একটা চেয়ারে বসে আছে মাহাদ।ওর সামনেই কিছুদুরে মাহাদ এর দিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টি দিয়ে বসে আছে তৃণা।তৃণা মাহাদ এর কো-একট্রেস।গভীর ভাবে তৃণা পর্যবেক্ষন করছে মাহাদ কে।মাহাদ নির্লিপ্তভাবে বসে আছে।তৃণার ওই তীক্ষ্ম দৃষ্টি মাহাদ এর চোখ এড়াইনি।কিন্তু সে বিবশ।

পুরো স্পট জুড়ে মানুষ।ডিরেক্টর সাহেব তিনবার দারাজ গলায় ডাকলেন মাহাদ কে।মাহাদ এর ধ্যান ছুটে।অপ্রস্তুত হয় মাহাদ।
এর আগে এমন তো কখনো হয়নি!ডিরেক্টর সাহেব মাহাদ এর সামনে এসে দাড়াতেই তার সম্মানার্থে উঠে দাঁড়ায় মাহাদ।

ইকরাম খান।একজন ছোট খাটো এড কোম্পানির মালিক।মাহাদ এতো ছোট খাটো কাজ এখন আর করে না।কিন্তু ইকরাম খান এর সাথে তার প্রফেশনাল ছাড়াও আরো একটা সম্পর্ক আছে।তাই তার অনুরোধ সে ফেলতে পারে না।ওদের কথা বলতে দেখেই তৃণা তার মেকআপ বয় কে যেতে বলে নিজে উঠে এসে মাহাদ এর গায়ের সাথে লেপ্টে দাঁড়ায়।

মাহাদ ভ্রু কুঁচকে তাকায় তৃণার দিকে।তৃণার শরীর থেকে পারফিউম এর কড়া গন্ধ ভেসে আসছে।জাস্ট ইরেটেটিং ফ্রিগোয়েন্স।মাহাদ কিছুটা সরে দাঁড়ায়।নেহাত ইকরাম খান কে সম্মান করে বলে নাহলে এখনই যাচ্ছে তাই বলে অপমান করতো তৃণা কে।

হালকা হাওয়ায় তৃণার গায়ের সেই সো কলড ইরেটেটিং ফ্রিগোয়েন্স মাহাদ এর নাক জ্বালিয়ে দিচ্ছে।মাহাদ নাক ছিটকে এই প্রার্থনা করছে তাকে আর কতো সহ্য করতে হবে!

পাতলা শিফন জর্জেট শাড়ি পড়েছে তৃণা।মেয়েটা যথেষ্ট সুন্দরী।তার উপর মেক ওভার এর চাকচিক্য তো আছেই।স্লিম ফিগার এর টুয়েন্টি সিক্স এর কোমর হবে।অবশ্য এদের না খেয়েও নিজেকে ফিট রাখা জরুরি।আফটার অল এই শরীর ই তো তাদের উপার্জনের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।

এক পলকেই তৃণার আপাদমস্তক দেখা শেষ মাহাদ এর।মাহাদ এর একটা বেড হ্যাবিট বলা চলে।উপর থেকে দেখেই মেয়েদের ভেতর পর্যন্ত অবলোকন করার ক্ষমতা রাখে মাহাদ।অবশ্য তার এই গুনেই মেয়েরা তার উপর ক্রাশিত হয় বেশি তার উপর ফিল্মস্টার এর ট্যাগ তো আছেই।
তিনদিনের শুটিং মাহাদ একদিনে শেষ করে।একে তো তৃণা কে তার একদম পছন্দ নয়।তার উপর সেই মেয়েকে সে ভুলতে পারছে না।
,
,
,
সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে মাহাদ।একটা এডফিল্ম করতে কমছে কম তিন চার দিন লাগে।সে জায়গায় সে তা করেছে মাত্র এক দিনে।
ইকরাম বাধ্য হয়ে মাহাদ এর কথায় রাজী হয়।মাহাদ এও বলে সে এই এডফিল্ম এর জন্য কোনো পারিশ্রমিক নিবে না কিন্তু তার শর্ত তার কাজ আজই শেষ করতে হবে।
বিক্ষিপ্তচিত্তে খাবার টেবিলে বসে আছে মাহাদ।কিন্তু তার মাথায় ভোঁতা অনুভূতি।তিক্ততা তার মুখ জুড়ে।চামচ দিয়ে খাবার মুখে দিতেই ফুঁসলে উঠে মাহাদ।ক্ষীপ্ত কন্ঠে বললো—

“এইসব কী বানিয়েছেন!এগুলো কোনো খাবার!

আলতাফ সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলো তার পাশেই সেফ।মাহাদ এর গলার জোরালো আওয়াজ এ মাথা নিচু করে ফেলে সেফ।ভয়ে তার মুখ চুপসে যায়।দুই হাত দিয়ে ডাইনিং এ থাবা মেরে উঠে দাড়ায় মাহাদ।টেবিলে বিছানো ট্রান্সফারেন্স ধরে টান মারতেই ঝনঝন করে সব খাবারের জিনিষপত্র খাবার সমেত নিচে পড়ে পুরো ফ্লোর মাখামাখি হয়ে যায়।আলতাফ শান্তভাবে দাঁড়িয়ে আছে।নির্বিকার তার অক্ষিদ্বয়।
মাহাদ রাগে ফোঁস ফোঁস করতে থাকে।জ্বলে ওঠা উনুনে তেতে উঠা গলায় বললো–

“কাল ই ওকে বিদায় করবেন।আমি যেনো ওকে আর না দেখি আমার বাড়িতে।গট ইট?

আলতাফ শান্ত গলায় ধীরে বললেন—

“জ্বী মাহাদ বাবা।”

সেফ করুণ দৃষ্টিতে তাকালেন আলতাফ এর দিকে।আলতাফ তার চোখ দিয়ে তাকে আশ্বস্ত করলেন যে সময় এখন তার বিপরীত।আলতাফ ভাবলেন,মাহাদ এর মানসিক সমস্যা তার উদ্দেশ্য পেয়েগেছে।

মাহাদ তপ্ত পায়ে নিজের ঘরে গিয়ে ধড়াম করে ঘরের দরজা ভেজায়।
খালি পায়ে পায়চারী করছে মাহাদ।মাথায় ভোঁতা অনুভূতি টা ধীরে ধীরে সক্রিয় হচ্ছে। ঝিমুনি দিয়ে উঠছে ক্ষনে ক্ষনে।
শীতল টাইলস এর উপর নগ্ন পায়ে হেটেও কোনো কিছুর অনুভূতি হচ্ছে না মাহাদ এর।সে ভাবলো,তাহলে কী সে অনুভূতিহীন !

মাহাদ ত্রস্ত পায়ে পুরো ঘর চক্কর লাগায়।কিন্তু কিছুতেই তার মন,মস্তিষ্ক,শরীর কোনোটাই শান্ত হচ্ছে না।মাহাদ তার ঘরের সব জানালা খুলে দেয়।কার্টেন কাঁপিয়ে হুরহুর করে বাতাস ঢুকছে মাহাদ এর ঘরে।
পুরো ঘর মুহুর্তেই শীতল অববাহিকায় পরিণত হলো।কিন্তু মাহাদ এখনো প্রস্তরখণ্ডের মতো দাঁড়িয়ে আছে।ব্যালকনির থাই খুলে সেখানে গিয়ে স্থির হয়ে দাঁড়ায় মাহাদ।হাঁড় কাঁপানো শীতের বায়ু বইছে যেনো প্রান খুলে।কিন্তু মাহাদ এর কোনো কিছুই অনুভূত হচ্ছে না।পাতলা ফিনফিনে একটা গেঞ্জি পরা মাহাদ।এতোক্ষনে তো তার শরীরে কাঁপন উঠার কথা।
কিন্তু কিছুই হচ্ছে না।মাহাদ পকেটে দু হাত গুঁজে শক্ত হয়ে দাঁড়ায়।কিছুক্ষন শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।আকাশে বিশাল থালার মতো চাঁদ।মনে হচ্ছে একদম তার কাছে যেনো হাত বাড়ালেই সে ধরা হবে।কিন্ত তা নয়।এ হচ্ছে মায়া।অদেখা,অচেনা মায়া।

মাহাদ পকেট থেকে হাত বের করে দেয়ালের উপর রাখে।একটু নিচু হয়ে নিচের দিকে তাকায়।বাগানের আশেপাশে কিছু আলো দেখা যাচ্ছে।জোনাকি পোকাদের ঝিঁঝি আওয়াজ শোনা যাচ্ছে।মাহাদ মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে।কিছু একটা ভেবে দেয়াল থেকে হাত নামিয়ে একটা পাঞ্চ করে তাতে।অনেকটা ছুঁলে যায় হাত।রক্ত গড়িয়ে পড়তে থাকে।কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় মাহাদ তার হাতের ব্যথার কিছুই উপলব্ধি করতে পারছে না।তার শরীর সম্পূর্ন বিবশ,নিসাড়,অনুভুতিহীন।
,
,
পরম আদরে নিজের মেয়েকে খাইয়ে দিচ্ছে আহমেদ।উচ্ছ্বাসিত হয়ে মেয়েটি বললো–

“কেমন হয়েছে বাবা?

আহমেদ আদরমাখা গলায় বললেন–

“তোর হাতের রান্না কী কখনো খারাপ হতে পারে!

খলখলিয়ে হেসে উঠে মেয়েটি।তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে বাবার হাত থেকে আরেক লোকমা মুখে দিয়ে স্মিত হাসে।আহমেদ আবেগপূর্ণ চাহনি দিয়ে দেখছে তার মেয়েকে আর ভাবছে তার কিছু হলে তার মেয়েটির কী হবে!
ওর তো সে ছাড়া আর কেউ নেই।বাবা মেয়ের এই উষ্ণ ভালোবাসাপূর্ন দৃশ্য দাঁড়িয়ে দেখছিলো মাহাদ।বাম হাতের তর্জনী আর শাহাদাত আঙ্গুলের যুগলে করাঘাত করে দরজায়।আওয়াজ কানে আসতেই ফিরে তাকায় আহমেদ আর তার মেয়ে।মাহাদ কে দেখেই উল্টো ফিরে মেয়েটি।আহমেদ বিছানা থেকে নেমে উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে মাহাদ কে বললেন–

“আপনি?

মাহাদ ধীরভাবে ঘরে প্রবেশ করে।মাহাদ কখনো তার সার্ভেন্টদের থাকার জায়গায় আসে না।তার এইসব জায়গা একদম পছন্দ না।মাহাদ এর নির্ণিমেষ দৃষ্টি মেয়েটির চুলের দিকে।ঘন কালো চুল কোমর ছাড়িয়েও বিছানায় পড়ে রয়েছে।সম্পূর্ন ঘর অদ্ভুত সুগন্ধে পরিপূর্ণ।মাহাদ বিগলিত হেসে সরস গলায় বললো–

“কেমন আছেন?

আহমেদ বিস্মিত চোখ জোড়া বুজে আবার মেলে তাকায়।ফিকে গলায় জড়তা নিয়ে বললো–

“জ্বী ভালো।আপনি হঠাৎ এখানে!

মাহাদ চোখে হাসে।শান্ত গলায় বললো–

“উনি আপনার মেয়ে?

“জ্বী।”

“কী নাম তার?

আহমেদ মেয়ের দিকে তাকালেন।মেয়েটি এখনো উল্টো ফিরে আছে।আহমেদ স্বাভাবিক গলায় বললেন–

“আম্বের।”

ভুজভুজ করে হাসার শুরু করলো মাহাদ।বেশ কিছু সময় ধরে হাসলো সে।অনেক কষ্টে নিজেকে দমিয়ে স্বাভাবিক গলায় বললো—

“কী অদ্ভুত নাম!কে রেখেছে এই নাম?

আহমেদ মৃদু হেসে বললেন–

“ওর মা।”

মাহাদ অধর বাঁকিয়ে ফিচেল গলায় বললো—

“ওনার মা কী জোত্যিষী ছিলেন নাকী!এই অপার্থিব নাম!

মাহাদ আবারো অধর ছড়িয়ে হাসতে থাকে।আহমেদ কিছু মনে করলেন না।এইভাবে মাহাদ কে তিনি কখনো হাসতে দেখেন নি।
আম্বের জ্বলে উঠে।দাঁতে দাঁত চেপে নিজেকে সংবরন করে।কী অসভ্য লোক রে বাবা!নাম নিয়ে হাসার কী!
ইচ্ছে হচ্ছে মাথা টা ফাঁটিয়ে দেই।

মাহাদ শান্ত গলায় প্রশ্ন করলো—

“আপনার মেয়ে কী পর্দা করে নাকী!

আহমেদ নম্র গলায় বললেন–

“নাহ।আসলে ও বাইরের অপরিচিত লোকদের সাথে তেমন কথা বলে না।”

মাহাদ বিরক্তিকর গলায় বললো–

“ও আচ্ছা।এইজন্য বুঝি রাস্তার ছেলেরা তাকে তুলে নিয়ে যেতে চায়।”

আম্বের ফুঁসতে থাকে।প্রথমে তার নাম নিয়ে হাসা।এখন আবার টিজ করা হচ্ছে।লোকটাকে মুভিতে দেখে যতটা ভালো মনে হয়েছিলো তার চেয়ে হাজার গুন জঘন্য।একটা বিলুপ্তপ্রায় গয়াল!

মাহাদ দু হাত পকেটে গুঁজে সোজা হয়ে দাঁড়ায়।দৃঢ় গলায় বললো–

“যদি ওনার কোনো সমস্যা না থাকে ওনাকে এদিকে তাকাতে বলেন।আমার মনে হয় আমি দেখতে ততটাও খারাপ নই।”

আহমেদ নির্বিকারভাবে তাকিয়ে ম্লান গলায় বললেন–

“আম্বের মা,এদিকে আয়।”

আম্বের এর খুব রাগ হলো।কী দরকার ছিলো তার বাবার এই গয়ালটার কথা শুনে ওকে ডাকার।নাহলে এই নোংরা লোকটাকে আম্বের ফিরেও দেখতো না।আম্বের মুভি তেমন দেখেনা।তার ধারণা এইসব ফিল্ম,ড্রামা মানুষের মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটায়।এগুলো এক ধরনের বিলাসিতা।আম্বের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে।বাবার সামান্য টাকায় তার পড়ালেখা,থাকা খাওয়া চলতো।তাই সে কোনো সময় এইসবে তেমন আগ্রহ অনুভব করেনি।তবে মাহাদ কে এই বাড়িতে আসার আগে একবার সরাসরি দেখেছে।তা তার কলেজে।আর এছাড়া পোস্টারে।

আম্বের ধীরগতিতে ফিরে বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ায়।উজ্জ্বল শ্যামলা হলুদাভ গায়ের রঙ।ময়ূরের পালকের মতো অক্ষিপল্লব।ঘন কালো ভ্রযুগল।চোখে টানা কাজল যা চোখের সৌন্দর্য আরো দ্বিগুন বাড়িয়েছে।পাতলা গড়নের ছিমছাম দেহ আর হালকা গোলাপী অধরযুগল।মাহাদ এক পলকেই আম্বের কে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে।
নিজের অজান্তেই হাসে মাহাদ।মেয়েটা ফর্সা না হয়ে তার বেশ উপকার হয়েছে।মাহাদ নিজের মোবাইলটা বের করে হাতে নেয়।আহমেদ কে লক্ষ্য করে গাঢ় গলায় বললো–

“আপনি একটু বাহিরে যান।তার সাথে আমার কথা আছে।”

আহমেদ উদ্বেগপূর্ণ চাহনিতে একবার মাহাদ কে দেখলেন একবার আম্বের কে।আম্বের নিঃশব্দে তার মাথা হেলাচ্ছে যেনো কোনো মতেই তার বাবা এ গয়াল এর কথা না শুনে।
মাহাদ দৃঢ় গলায় আবার বললো–

“আপনার কী ভয় হচ্ছে মি.আহমেদ?

আহমেদ আনম্র গলায় বললেন–

“আমি বাইরে যাচ্ছি।”

আম্বের নিজের শ্বাস আটকে নেয়।মাহাদ ধীর পায়ে সামনে আগাতে থাকে।আম্বের এর সামনে গিয়ে স্মিত হেসে বললো–

“মিস সুগন্ধি !

আম্বের এক ভ্রু উঁচু করে মাহাদ এর দিকে তাকায়।ইচ্ছে হচ্ছে লোকটাকে গঙ্গা জলে স্নান করে শুদ্ধ করিয়ে আনি।নোংরা গয়াল!

মাহাদ স্মিত হেসে স্বাভাবিক গলায় বললো–

“আপনি কথা বলতে পারেন না মিস সুগন্ধি?

আম্বের ভ্রু কুঁচকে তাকায় মাহাদ এর দিকে।লোকটাকে একদম সহ্য হচ্ছে না।সকালে চলে যেতে বলে এখন আদিখ্যেতা দেখাতে এসেছে।আসলেই পাক্কা ফিল্মস্টার।

মাহাদ আম্বের এর গলার দিকে তাকায়।শান্ত গলায় বললো—

“ওড়না টা কী গলায় পড়ার জন্য না কী অন্য কোথাও!

আম্বের দাঁতে দাঁত নিষ্পেষণ করে।কী বেহায়া লোক রে বাবা!এতো কিছু রেখে ওড়না তে নজর গেলো!আসলে মানুষ ঠিক ই বলে মিডিয়ার মানুষ আসলেই নোংরা।
মাহাদ তার ডান হাত পকেট থেকে বের করে।আম্বের এর গলা থেকে আলগোছে ওড়না নামিয়ে তা ওর বুকে ছড়িয়ে দেয়।
ভয়ে আম্বের এর শরীর জমে হিমালয় পর্বত।চোখের পাল্লা দুটো প্রশ্বস্ত করে তাকিয়ে আছে মাহাদ এর দিকে।
সেই স্নিগ্ধ চাহনির বিপরীতে এক হৃদয় বিগলিত হাসি উপহার দেয় মাহাদ।কিন্তু তাতে আম্বের এর শরীর জ্বলে যাচ্ছে।মাহাদ একটু ঝুঁকে আম্বের এর ঘাড়ের কাছে মুখ গাঢ় গলায় বললো—-

“আম্বের মানে কী জানেন!
সুগন্ধি!
আপনার মা আপনার যথার্থ নাম রেখেছে।আপনি সত্যিই এক সুগন্ধি প্রজাপতি!”

মাহাদ এর শীতল নিঃশ্বাসের ছোঁয়ায় আলোড়ন তৈরি হয় আম্বের এর সদ্য যৌবনে পা রাখা নারী সত্ত্বায়।মাহাদ দুর্বোধ্য হাসে।সোজা হয়ে দাঁড়ায়।ছয় ফিট দুই ইঞ্চির মাহাদ এর কাছে পাঁচ ফুট তিন ইঞ্চির পাতলা শরীরের আম্বের নেহাত আইসক্রীম খাওয়া কিশোরী।আম্বের তার উদ্ভাসিত নয়নে আবৃত করে রেখেছে মাহাদ এর সুগঠিত দেহাবরণ।মাহাদ এর শরীরের চন্দনের অকৃত্রিম গন্ধ মোহিত করে ফেলেছে আম্বের কে।

হঠাৎ ই মাহাদ এক আশ্চর্যজনক কান্ড করে বসে।অনেকটা নিচু হয়ে নিজের অধরযুগল ছুঁইয়ে ধরে আম্বের এর পাতলা গোলাপী ঠোঁটে।
আম্বের দ্বিধান্বিত দৃষ্টিতে শ্বাসরুদ্ধ করে মাহাদ এর গভীর সম্মোহিনী চোখে তাকিয়ে থাকে।

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here