আলোয় অন্ধকার🍁পর্ব-৭

0
2202

#আলোয়_অন্ধকার
#Roja_islam
#part 7
— কিস মি!! মিস!!

টিয়া চোখ বড় বড় করে মৃদু চিৎকার করে বললো,
— কিইইইইই!!

ডেনিয়াল শয়তানী হেসে বললো,
— শুনতেই পেয়েছো চিৎকার করার কি আছে??

টিয়া ভয়ের সাথে একটু দূরে যেতে যেতে বললো,
— একদম কাছে আসবেন না! আমি কেনো আপনাকে কিস করবো?? চলে যায় এখান থেকে!!

ডেনিয়াল টিয়ার কথায় পাত্তা না দিয়ে। ওর আর এক্টু কাছে নিজের মুখ আনে কিস করার জন্য! তাতে টিয়া ভয়ে থাপ্পড় মেরে বসে ডেনিয়াল এর গালে! ডেনিয়াল চমকে যায় টিয়া এমন কিছু করবে ভাবতে পারেনি সে! টিয়া ভয়ে থরথর কাঁপছে ডেনিয়ালের গালে থাপ্পড় বসিয়ে! ডেনিয়াল বসে কিছুক্ষণ অগ্নিময় চোখে টিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে জেনো চোখ দিয়ে ভস্ম করে দিবে টিয়াকে। কিন্তু সে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছেনা শেষে ।ডেনিয়াল তার রাগ, ভাব, অভিনয় আর ধরে রাখতে পারলো না। টিয়াকে ধাক্কা দিয়ে বেডে ফেলে তার উপর উঠে বসে টিয়ার গলা চেপে ধরলো সজোরে। টিয়া এই আক্রমণ এর জন্য প্রস্তুত ছিলোনা। টিয়া চিৎকার করতে পারছেনা। হাত পা ছুটাছুটি করছে শুধু। আর ডেনিয়াল টিয়ার গলা চেপে ধরেউ চিৎকার করে বলছে!!

— হাউ ড্যায়ার ইউ! হাউ ! সাহস হয় কি করে আমায় গায়ে হাত তোলার! ডেনিয়াল গ্লোবার এর গায়ে হাত তোলার! আজ তোমার শেষ দিন! আজি!

টিয়ার চোখে মুখে শুধুই বাঁচার আকুতি! তবে শ্বাস টা আর নিতে পারছেনা ডেনিয়াল ছাড়ছেই না। টিয়ার চোখ বেয়ে মোটা মোটা অশ্রুজল গড়িয়ে পড়ছে।কিন্তু হাত পা ছুটাছুটি টাও এবার করতে পারছেনা টিয়া। ডেনিয়াল জেনো তার শেষ নিশ্বাস ত্যাগ দেখেই টিয়ার গলা ছাড়বে আজ! এখুনি! এই মুহূর্তে!
.
.
রাত প্রায় ১২ টা,
পিউ বসে আছে স্তব্ধের সামনে! স্তব্ধ এমন এক রোখা মানুষ কিন্তু আজ সেও অবাক চোখেই তাকিয়ে আছে আস্ফির দিকে। আস্ফি স্তব্ধের সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে! যদিও স্তব্ধ কম কথা বলে! কিন্তু আস্ফি পিউ এর সাথে এমন কিছু করেছে শুনে চুপ করে থাকতে পারলো না! রেগে স্তব্ধ লাল হয়ে বললো।

— এগুলা কি শুনছি আমি??

আস্ফি কি উত্তর দেবে খুঁজে পাচ্ছেনা!আমতাআমতা করে বললো,
— সরি ভাই আসলে………..

স্তব্ধ প্রচুর রেগে থাকলেও চিৎকার চেঁচামিচি করে না! সে শান্ত কিন্তু ক্রুদ্ধ স্বরে বললো,
— তোর সরি দিয়ে আমি কি করবো? তুই একটা মেয়ের সাথে এমন ব্যবহার কি করে করতে পারলি? সেম অন ইউ?

আস্ফি এবার জোরে একটা শ্বাস নিয়ে বললো,
— আই লাভ হার! ভাই?

স্তব্ধের আর কিছু বলার আগেই।কাঁদতে থাকা পিউ উঠে হন হন করে আস্ফির সামনে গিয়ে ঠাশ করে আস্ফির বাম গালে চর লাগালো। আস্ফি গালে হাত দিয়ে বোকার মতন তাকিয়ে রইলো পিউ এর দিকে আর পিউ। ভয় ডর ভুলে চিৎকার করে বললো।

— তুই আমায় কত বার বলেছিস ভালোবাসিস??? বল???

আস্ফি মাথা দুলালো শুধু তাতে! পিউ জেনো রাগে ফেটে পড়লো,
— এখন কথা বের হয় না কেনো?? একটু আগেই না বললি একদম মেরে ফেলবি?? বল কয়দিন বলেছিস আমায় আউ লাভ ইউ পিউ?

এবার আস্ফি দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
— একদিন!!

পিউ রাগী মার্কা হেসে বললো,
— একদিন তুই আমায় আই লাভ ইউ বলেছিস আর আমি? আমি তোকে কতদিন বলেছি আমি তোকে হেইট করি! কতদিন বলেছি বল??

আস্ফি রেগে বললো,
— বলবি কেনো হেইট ইউ সেটার বিচার টাইই আজ করলাম সধবধ!

আগুনে জেনো কেউ ঘী ঢেলে দিয়েছে পিউ সে ভাবেই তেতে উঠলো আস্ফির কথায়,
— এই তুই কে? কে তুই আমার বিচার করার বল বল বলছি??

আস্ফি এবার হেসে বললো,
— তোর লাভার আমি হয়েছে।

আস্ফির সাথে না পেরে পিউ এবার স্তব্ধের দিকে তাকালো বিচার চাইবে বলে সে কি? কিন্তু স্তব্ধ তো নেই। স্তব্ধ দুজনেই বক বক শুনে সেই কখনওই চলে গিয়েছে! পিউ এর এদিক ওদিক তাকানো দেখে। আস্ফি হেসে বললো।

— স্তব্ধ স্যার এর এত ফাও টাইম নেইই তোর আর আমার বক বক শুববে! চল বাড়ি দিয়ে আশি রাত হয়েছে! পরে তোর খাড়ুছ বাপ তোকে বাসায় ঢুকতে দেবে না! ততখব রাস্তাঘাট এ ঘুরে এই আমার কাছেইই আসতে হবে! সেটা নিশ্চয় তোর ভালো লাগবেনা??

এবার পিউ এর মাথার টনকনড়া দিলো আসলেই তো? তার বাবা নিশ্চয় ভাঙা হারিকেন নিয়ে খুঁজতে বেড়িয়ে গেছে এতক্ষণ এ কারণ রাত অনেক হয়েছে বুঝা যাচ্ছে! পিউ এর ৯ টার মধ্যে রাতে বাসায় যাওয়ার পারমিশন আছে আর এখন তো। রাগে দুঃখে পিউ আস্ফির দিকে তাকিয়ে বললো।

— সব তোর জন্য হয়েছে! তুই এটা আমার সাথে করতে পারলি?? আমি তোকে কখনওই ক্ষমা করবোনা!

বলেই হন হন করে বেরিয়ে গেলো পিউ স্তব্ধের বাড়ি থেকে পেছন পেছন আস্ফিও হাটছে। আস্ফি মিটমিট করে হাসছে সে জানে এই রাগ দুদিন থাকবেনা পিউ এর। কিন্তু আস্ফির খারাপি লাগছে এমন করে আসলেও এবার বেশী হয়ে গেলো!

ঐসময় যখন আস্ফি পিউ কে কিস করছিলো পাওয়ার চলে আসে আর আস্ফি ধরা পরে যায় আর তখন থেকে ধরা খাওয়া চোরের মতন ধরে রাখে পিউ আস্ফিকে তার উদ্দেশ্য বিচার দিবে স্তব্ধের কাছে আস্ফির নামে পিউ তাই সে বসে থাকে আস্ফিকে ধরে সোফায় দুই জন হাড্ডা হাড্ডি লড়াই করছিলো তখন স্তব্ধ আসে। পিউ সব ভয় ভুলে বিচার দেয় স্তব্ধকে কিন্তু স্তব্ধ বিচার করার আগেই দুজন আবার শুরু হয়ে যায় বাকিটা জানাই।

টিয়া, পিউ,আস্ফি সেইম ইয়ার একি ভার্সিটিতে পরে সেই ভার্সিটির শুরু থেকে আস্ফি পিউ এর পিছন পড়ে আছে এই কথা পুরো ভার্সিটি জানে! আর তাদের টম এন্ড জেরি বলে ডাকে! কারণ সেখানে সেখানে দুই জনের ঝগড়া লেগে থাকে! পুরো ভার্সিটি বলে আস্ফির প্রপোজাল এ রাজী হয়ে যেতে পিউ কে এমন কি টিয়াও! কিন্তু না পিউ এর একি কথা সে ক্লাসমেট এর সাথে রিলেশনশিপ এ যাবে না। আর এমনি তাদের যায় না আস্ফি নাকি ঝগড়াটে। ঐদিকে আস্ফি নাছোড় বান্দা সে পিউকে রাজি করিয়েই ছাড়বে এসব এর মাঝেই চলে গেছে তাদের ৪ বছর ভার্সিটি লাইফের। পিউ না চাইতেও পুরো ভার্সিটির ছেলে গুলো তাকে ভাবী বলে ডাকে তাতে চটে পিউ ইচ্ছা মতন ফাইট করে আস্ফির সাথে।আরনানা ধরনের ঝগড়া হয় তাদের মধ্যে ইভেন মারামারি ও তবে এতদিন আস্ফি আর যাই করুক পিউ এর সাথে আজকের মতন বিহেভিয়ার করেনি আজ কেনো এমন করলো পিউ বুঝতে পারছেনা।তবে তার খেয়ে ফেলতে ইচ্ছা করছে আস্ফিকে একদম চিবিয়ে ফেলতে ইচ্ছা করছে।

পাশাপাশি বসে আছে দুই জন রিকশায়। রিকশা চলছে একেবেকে রাস্তায়। পিউ মুখ পেচার মত করে বসে আছে! আস্ফি এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে পিউ এর পেচার মতন মুখটার দিকে। তা দেখে পিউ বললো — তুই আমার রেপ করলেও আমি তোর সাথে প্রেম করবো না!

আস্ফি ঠোট চেপে হেসে বললো,
— ওহ তাহলে তুই আমায় তোকে রেপ করা পারমিশন দিচ্ছিস নাকি??

পিউ রেগে অগ্নিমূর্তি হয়ে বললো,
— কত্তা তুই! তাই তো প্রেম করিনা তোর সাথে!!

আস্ফি ভাব নিয়ে বললো,
— পাগল নাকি প্রেম কে করতে চায়? এবার তো বিয়ে করবো!!

পিউ বিরক্তি নিয়ে চোখ রাঙিয়ে বললো,
— আমি তোকে বিয়ে করবোনা!!

আস্ফি এবার চোখমুখ শক্ত করে বললো,
— তুলে নিয়ে বিয়ে করে ফেলবো ব্যাস!! তোর সাথে ঝগড়া করার আর মুড নেই! তোর ঠোঁটেরর স্বাদ পেয়ে প্রেম না মনে বিয়ের ইচ্ছা জেগেছে!!

পিউ আস্ফির কথা নড়েচড়ে বসলো। এক কথায় আজকের কান্ডের পর পিউ ভয়ই পেলো আস্ফির কথায়। তা বুঝতে পেরে আস্ফি বাঁকা হাসলো। কিছুক্ষণ পর পিউ জিজ্ঞেস করলো।

— তুই স্তব্ধ ভাইয়ারকে হস তুই??

আস্ফি চোখ রাঙিয়ে তাকালো পিউ এর দিকে,
— পিউ কিছু জিনিস নিয়ে বেশী ঘাঁটাতে হয় না! আমি তোকে ভালোবাসি পিউ! তোর কাছে কিছু লুকাবোনা! সময় হোক সব বললো তোকে! তবে তার আগে একটা কথা মাথায় রাখ! আজকের আগে যেমেন তুই জানতিনা আমি স্তব্ধ ভাইকে চিনি। আজকে এটা জানার পরেও তুই তেমনি থাকবি। আমি চাইনা তোর কোন ক্ষতি হোক। বুঝেছিস??

পিউ ভয় ই পেলো আস্ফির কোথায় কারণ টিয়াও গায়েব কোন খোজ নেই তাও স্তব্ধের বাড়ী থেকে! যদি তার ও কিছু হয়ে যায়। তাই সে মাথা দুলিয়ে বললো।

— বুঝেছি! কাউকে বলবোনা চুপ থাকবো!!

— গুড!

রিকশা পিউ দের বাসায় থামতেই। আস্ফি মুখ বারিয়ে পিউ এর কপালে চুমু দিয়ে বললো।

— আজকের জন্য সরি আর এমন হবেনা!!

পিউ ছলছল চোখে বললো,
— আমি তোকে ভালোবাসি না তুই প্লিজ আমায় ভুলে যা!

আস্ফি দুষ্টু হেসে বললো,
— রেপ করার পর ভালোবাবি?

পিউ রেগে রিকশা থেকে নেমে বললো,
— তুই একটা ভদ্র খাটাশ বুঝেছিস??

আস্ফি হেসে বললো,
— হ্যাঁ ভদ্র খাটাশ আর জংলী বিলাই পার্ফেক্ট ম্যাচ!! মামা চলুন!! তুইযা বাবার কেলানিখা বায় জংলী!!

পিউ এর রাগে দুঃখে কান্না পেলো। মনে মনে টিয়াকে ১০০ গালি দিলো। বারবার বলেছিলো পিউ টিয়াকে বিয়েটা না করতে। টিয়া বিয়ে না করলে আজ পিউ এর এই অবস্থা কখনওই হত না। কাউর ভালো চাওয়া পাপ কেনো যে গিয়েছিলো পিউ স্তব্ধের বাসায়? আর আস্ফি সেই বা কি হয় স্তব্ধের জানতে হবে পিউ এর। ভেবেই ভয়ে ভয়ে বাসায় ঢুকলো সে না জানি কি আছে আজ কপালে?
.
.
.
টিয়া বেডে এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে প্রাণ হীন শূন্য লাগছে মুখ টা। মুখে স্পট কষ্টের ছাপ! চোখের কোণায় এখনো ভেজা মেয়েটার! কাল রাতে টিয়া চেঞ্জ করে একটা ব্ল্যাক টি শার্ট আর এস কালার ট্রাউজার পড়েছিলো! ডেনিয়ালের সাথে ধস্তাধস্তিতে পেটের উপর উঠে গেছে টি শার্টটা ফল স্বরূপ পেট নাভি দৃশ্যমান! ডেনিয়াল নেশাগ্রস্থ এর মতন সেদিকেই তাকিয়ে আছে। একবার চোখ তুলে টিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে টিয়ার পেটে ঠোঁট বসালো ডেনিয়াল……
.
.
চলবে!
[গাইছ একটা কথা,গল্পে আজেবাজে কিছুই লিখিনা এটা পাঁচ মিসালি গল্প এই গল্পে হাসি, মজা, কান্না,রোমান্স, রহশ্য সব থাকবে! আর হ্যাঁ আমি বড় গল্প লিখিনা বাট এই গল্প একটু বড়ই হবে। ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here