তুইতেই আমি🏵পর্বঃ২৬

0
2224

🏵তুইতেই আমি🏵
লেখিকাঃইসরাত আয়রা ইচ্ছে
পর্বঃ২৬

🍁🌼🍁

ঘুম থেকে উঠে ইচ্ছে আর আহানকে বিছানায় পায় নি।আড়মোরা ভেঙে উঠে বসে।জানালার পর্দা সরিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ফ্রেশ হবার উদ্দেশ্যে বাথরুমে পা বাড়ায়।ফ্রেশ হয়ে এসে কোমড় ছাপিয়ে এলোমেলো চুলগুলো ব্রাশ করে নেয়।কাটা দিয়ে ভালো ভাবে আটকে নেয় চুল গুলো। ব্লাক গোল্ডেন মিক্স কুর্তি, ব্লাক জিন্স ও গোল্ডেন ওড়নাটা গায়ে জড়ায়। প্রত্যেক সকালের থেকে আজ সকালটা নিজের কাছেই বেশ ভালো লাগছে ইচ্ছের কাছে।আয়নার সামনে মিষ্টি একটা হাসি দিলো।এর মধ্যেই প্রচুর হাসির শব্দে রুম থেকে বের হয়ে অসস্তিকর অবস্থায় পরে যায় ইচ্ছে।না চাইতেও ভ্রু কুচকে আসে।আহানকে ড্রেনিলা দৌড়ে ধরার চেষ্টা করছে।দুজনের হাসির শব্দ ইচ্ছের কেন জানি না সহ্য হলো না।তার আহানের পিছনে সে দৌড়াবে অন্য কেউ? কেন?

ইচ্ছে এসে সেই কখন দাঁড়িয়েছে তা নিয়ে কারো কোনো ভ্রুক্ষেপই নেই। ড্রেনিলা আহানকে নাগালে পেয়েই হাত জড়িয়ে ধরে দুজনের হাসির শব্দ এবার ইচ্ছের কানে আরও অসহ্য লাগছে।তার আহানের হাত জড়িয়ে ধরলো?

আহান আর ড্রেনিলার নেকু নেকু ভাব ইচ্ছের কাছে অসহ্যর সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।কিন্তু তবুও কিছু বলতে পারছে না।কোথাও একটা বেধে যাচ্ছে।একজন ভালোবাসার মানুষ অন্যজন এতোদিনের একাকিত্বের সাথী।

***

আহান ড্রেনিলা আঙুল দিয়ে কি যেনো খেলা খেলছে ইচ্ছের আর দেখতে ইচ্ছা হলো না। কিচেনে গিয়ে রাগের চোটে প্রত্যেকটা জিনিস খুব শব্দ করে ফেলছে।যেমন গ্যাসের চুলায় পাতিল শব্দ করে ফেলছে, কাপ প্রিচ টাইলসের উপর শব্দ করে ফেলছে।আহান ড্রেনিলা এসব শব্দ যেনো কানে নিয়েও নিচ্ছে না তারা। তাদের মতো তারা হাসি ঠাট্টায় ব্যস্ত।কিচেন থেকে সামনের রুমে বসা আহান ড্রেনিলাকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। ইচ্ছে মনে মনে বলছে আমি যে তার সামনে এসেছি, তার সামনে দিয়ে এলাম গেলাম একটা বারও দেখলো না?বিদেশি মানুষ দেখে ভুলেই গেছে??ইচ্ছের রাগ যেনো অধিক হয়ে গেছে।হাত থেকে একটার পর একটা চামচ ইচ্ছা করে ফেলছে আর তুলছে।প্রথমবার আহান ড্রেনিলা একবার তাকালেও আর তাকায় নি।তাই চামচ ফেলানোর প্লান এবার বাদ দিলো।

ইচ্ছে সকালের নাস্তা রেডি করে ফেললো। কিছুক্ষন ধরে আহান ড্রেনিলার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না।সামনের সবার জন্য খাবার তৈরি করে ডাক দিলো দুজন দুইরুম দিয়ে একেবারে রেডি হয়ে বেরিয়ে এলো। দুইজনকে দেখে বেশ অবাক হলো ইচ্ছে

— তোমরা কি কোথাও যাচ্ছো?

ড্রেনিলার উত্তর

–ইচ্ছে বেবি উই আর গোইং টু শপিংমল। ওহ ইয়েস ইউ ক্যান ইট।উই উইল ইট ফ্রম আউটসাইড।

এটা বলেই দুজন হাটা শুরু করে।

আর আহান ইচ্ছের দিকে ফিরেই তাকালো না।ইচ্ছের বেশ লাগলো ব্যাপারটা। হাত থেকে পানির গ্লাসটা ফেলে দিলো। শব্দ শুনে ড্রেনিলা দাঁড়িয়ে পরলেও আহান তার কাধে হাত দিয়ে টেনে নিয়ে চলে গেলো।

সকাল দশটায় বেরিয়েছে আর এলো রাত আট টায়। কলিং বেলের শব্দে পেয়ে দরজা খুলে দেয়ার পর খুব ক্লান্তি নিয়ে দুইজন ভিতরে ঢুকেছে।

দুইজনের হাতে বেশ কিছু ব্যাগ। পিছন পিছন আরও দুজন লোক ঢুকলো একটা সিঙ্গেল খাট আর একটা ছোট ওয়ারড্রফ আর একটা ছোট ড্রেসিংটেবিলে নিয়ে।সামনের রুমের এক প্রান্তে সেট করে দিয়ে চলে গেলো। । আহান ড্রেনিলা একগ্লাস পানি খেয়েই লেগে গেলো কাজে।ড্রেনিলা বিছানা বালিশ ঠিক করে দিচ্ছে আর আহান নিজের জামা কাপড় প্রয়োজনীয় আসবাপত্র সব ওয়ারড্রফ আর ড্রেসিং টেবিলে গুছিয়ে রাখছে। ইচ্ছে দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে সব টাই দেখলো।সামনের রুমটার সাথের ছোট্ট অ্যাটাস বাথরুমে শাওয়ার নিতে ঢুকে গেল।

ড্রেনিলা তখন ইচ্ছের সাথে টুকটাক দুএকটা কথা বলেছে।

— ইউ উইল সি আহান বট মি মেনি ড্রেস?

–ডিড নট বাই ফর মি আনিথিং?

— নো বেবি। ইচ্ছু কাম কাম প্লিজ সি

— নো ড্রেনিলা আম নট ইনট্রেসটেড।খাবে এসো

— খেয়েছি ফ্রম আউটসাইড রেসটুয়ারেন্ট।

ইচ্ছে বেশ কষ্ট পেল।সব রাগ ভুলে গিয়ে আহানের জন্য বেশ কিছু পছন্দের খাবার রান্না করেছিলো দুপুরে । নিজেও খায় নি আহানের সাথে খাবে বলে আর আহান কিনা খেয়ে এসেছে।বাথরুমের দরজা খুলে গেল। আহানের গায়ে তোয়ালে জরানো আর হাতা কাটা গেঞ্জি। ফরসা শরীর, পায়ের ঘন পশম দেখে ইচ্ছের চোখ আহানেই কিছুক্ষণের জন্য থেমে গেলো। ঘোর কাটে ড্রেনিলার কথায়

— হেই আহান বেবি ইউ আর লুকিং সো হট।

— রিয়ালি?

— ইয়াহ।হেই গুড নাইট। গুম পেয়েছে। আম সো টায়ার্ড নাও( ড্রেনিলা মিষ্টি হাসি দিল)

আহানও মজা করে ড্রেনিলার মতো করে বললো

— গুমাও বেবি

এরপরের কান্ডে ইচ্ছের গায়ের রক্ত টগবগ করে ফুটে ওঠে। শেষ পর্যন্ত কিনা আহান হাগ করলো?

চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here