🏵তুইতেই আমি🏵
লেখিকাঃইসরাত আয়রা ইচ্ছে
পর্বঃ২৮
🍁🌼🍁
ইচ্ছে অবাক হয়ে আহানের দিকে তাকায়। আস্তে করে বলে” বিয়ে?”
আহান চোখ টিপে বলে ” হ্যা বিয়ে”
ইচ্ছে বিস্মিত ভঙ্গিতে বলে”আমাদের?”
আহান হেসে ফেলে। আস্তে করে জবাব দেয় ” হ্যা”
” এভাবে? ”
” হ্যা”
” কাজী? লাগবে না?”
“” আছে তো ”
” কই?”
আহান ল্যাপটপের দিকে তাকাতে বললো।
আয়ান একজায়গায় ল্যাপটপ বসিয়ে দিল যেখান থেকে সবাইকে দেখা যাচ্ছে।এক পাশে হুজুর টাইপের একজন লোক দেখা গেলো ইচ্ছে বুঝতে পারলো ইনিই কাজী। লোকটা জামাই বউকে ল্যাপটপে দেখে বেশ আশ্চর্য ভংগীতে চোখ ট্যারা করে তাকিয়ে আছে।তার যে এভাবে বিয়ে পরাতে হবে সে হয়তো ভুলেও ভাবে নি।কিন্তু তাই ই হচ্ছে।ইচ্ছের এই লোক টাক দেখে মনে হচ্ছে এই লোক আমার থেকেও বেশি আশ্চর্য হয়েছে। লোকটা চরম বিরক্তও হচ্ছে বেশ বোঝা যাচ্ছে।ছেলেমেয়ে ল্যাপটপের ওপারে তা কিছুতেই কাজী সাহেব মেনে নিতে পারছেন না।
রাকিব খুশিতে গমগম করতে করতে বলে ফেললেন “ভাই আপনি বিয়ে পরান।বর কনেকে ল্যাপটপে দেখে আশ্চর্য হবেন না কেমন?”
কাজী সাহেব বিয়ে পরানো শুরু করলেন। ধর্মীয় মতে আমাদের বিয়ে টা হয়ে গেল।কাগজ কলমের সাক্ষর টা দেশে ফিরেই হয়ে যাবে।ধর্মীয় অনুমতি সব থেকে বেশি প্রয়োজন ছেলেমেয়ের একসাথে থাকার জন্য আর সেটাই আহান কমপ্লিট করে নিয়েছে।ল্যাপটপে দেখা গেলো দেনমোহর হিসেবে দশ লাখ টাকা রাকিব আব্দুর রাহমানের হাতে তুলে দিচ্ছে।
ইচ্ছে মুখ ফুটে বলে ওঠে ” আমার কোনো চাহিদা নেই ভালো আব্বু। টাকাগুলো রেখে দাও”
” এই মেয়ে বিয়ের সময় এগুলো নিতে হয়।এটা নিয়ম এটা নিয়ে একটাও কথা বলবি না”(শিরিন)
*******
রাত এগারোটা পর্যন্ত ছাদে নাচ গান খাওয়া দাওয়া হলো। রাত সাড়ে এগারোটা নাগাত সবাই চলে গেলো। ড্রেনিলা ইচ্ছেকে শাড়ি পরিয়ে দিয়ে বাহারী ফুলে মোরানো বাসর ঘরটাতে বসিয়ে দিয়ে চলে গেলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই আহান রুমে প্রবেশ করে।ইচ্ছে যেন লজ্জায় মরি মরি অবস্থা।এই ছেলের সাথে একসাথে কম ঘুমিয়েছে সে? আজ তবুও কেন যেনো মনে হচ্ছে যা হচ্ছে বা হবে সব নতুনভাবেই হবে।জীবনের নতুন শুরু ।আহানের আগমন ইচ্ছের অনুভূতিরা জানান দিচ্ছে অনবরত। ইচ্ছে লজ্জায় লাল নীল হচ্ছে।আহানের দিকে চোখ তুলে তাকানোর মতো অবস্থা নেই তার।এতো লজ্জার আসলো কই থেকে?
— এই মেয়ে এই আমি এসেছি খেয়াল আছে?সালাম কর।
আহানের ধমক শুনে মুখ তুলে তাকালো ইচ্ছে। বিছানা ছেড়ে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতে নিলেই দুই কাধ ধরে থামিয়ে দেয় আহান।
— উহুম এভাবে নয়
প্রশ্ন আঁকা চোখ নিয়ে ইচ্ছে জিজ্ঞেস করলো
— তাহলে?
— জোরে জোরে বলবি “পতি আসসালামু আলাইকুম। আপনার আগমনে আমি ধন্য,,,, না না বলবি যে আমার জীবনে আপনার আগমনে আমি সত্যিই ভাগ্যবতীর খাতায় নাম লিখে ফেলেছি বলে আমার মনে হচ্ছে।এবার আপনি ছাড়া আমার আর কোনো চাওয়া নেই।শয়নে সপোনে আমি শুধু আপনাকেই চাই, বেশি বেশি চাই। আরও বলবি যে সপোনের থেকে শয়নে বেশি চাই।আপনার সাথে এই শয়ন আমি দশ দিনে ত্যাগ করিতে চাই না।সারাদিন শয়ন হবে সারারাত শয়ন হবে কিন্তু ঘুম হবে না।
হাসি চাপিয়ে শক্ত কণ্ঠে কথাগুলো বলছে আহান।ইচ্ছে এমনিই লজ্জায় মরি মরি অবস্থা তার উপর এইসব কথায় লজ্জায় আরও লাল নীল হচ্ছে।
— কি সব কথা বলছেন আহান।এগুলো আমি কীভাবে বলবো?
— তুই বলবি তোর বাপ বলবে
— আব্বু?
— না থাক এই সময়ে তোর বাপকে না আনাই শ্রেয়।
ঝটপট করে বলে ফেল তো দেখি।
অগত্যা আমাকে বলতেই হলো। লজ্জায় আমি মরেই যাচ্ছিলাম শেষের কথাগুলো বলতে গিয়ে।কোনোমতে নাক চোখ বন্ধ করে তোতলাতে তোতলাতে বলেই ফেললাম।এই ঘাড়ত্যাড়া মানুষ যখন যা বলবে তখন তাই না হলে আজ পর্যন্ত রক্ষা পায় নি ইচ্ছে আর বাসরঘরের সুবাদে যে রক্ষা পাবে না তা ইচ্ছের ভালোই জানে।
— বৃষ্টি হলে ব্যাঙ ডাকে কেন জানিস?
মর্মার্থ বুঝতে পেরে ইচ্ছে লজ্জা মুখে বললো
— হু জানি
— আজ আমাদের বৃষ্টি হবে বুঝলি
আহানের দুষ্ট হাসিতে আর চোখ তুলে তাকালো না ইচ্ছে।খুব লজ্জা লাগছে।লজ্জায় কুকড়ে যাচ্ছি বার বার।চোখ বন্ধ করে আর খুলতে পারছে না ।আহানের ঐ হাসি দেখলে খুন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা!!!!!!
চলবে,