#ভালোবাসি_প্রিয়
(রিপোস্ট)
পর্ব_৩০
©জারিন তামান্না
ঘরে বাইরে প্রচুর হই হট্টগোল চলছে। সবাই যার যার মতো কাজে ব্যস্ত। কেউ কেউ বা হাসি তামাশা আর আড্ডায় মেতে উঠেছে। আজ রাত পোহালেই কাল সকালে পলক আর সিফাতের গায়ের হলুদ। বিয়েটা মূলত গাজীপুরে সিফাতদের ফার্ম হাউজে হচ্ছে। ফার্ম হাউজটা বিশাল বড়। তাই একটা পোর্শনে পলকদের আত্মীয়স্বজন আর অন্য পোর্শনে সিফাতরা থাকছে। বিয়েটা মূলত দুই পরিবারের আত্মীয় স্বজনদের আর খুব কাছের কয়েকজন বন্ধুবান্ধবদের নিয়েই বেশ ছিমছাম ভাবে হচ্ছে। আর বিয়ের রাতে একটা ছোটখাটো গেটটুগেদারের আয়োজন হয়েছে ওখানে। কিন্তু রিসিপশনের অনুষ্ঠানটা ঢাকার একটা হোটেলে বেশ বড় করে করা হবে।বিয়ের পরে পলককে নিয়ে ঢাকায় ফিরে যাবে ওরা। পলাশ প্রথমে এভাবে বিয়ের জন্য আপত্তি করলেও সিফাতের অনুরোধে আর না করতে পারেনি। তাই একই বাড়িতে থেকে দুই পরিবারে বিয়েটা হচ্ছে। বিথি,কবির,নোরা,তিয়ানও আজ বিকেলেই চলে এসেছে। বিয়ে হওয়া পর্যন্ত এখানেই থাকবে ওরা। আর বাকিরা সরাসরি বিয়েতে আসবে।
ফার্ম হাউজের বিশাল ছাদ জুড়ে চলছে ডেকোরেশনের কাজ। সেসবের তত্ত্বাবধায়নে আছে সিফাত, রিহান,,দিহান। আবিদ নীচে ক্যাটারিং এর কাজ দেখছে। কবিরও বসে নেই। পলাশের সাথে নানান কাজে ব্যস্ত। বোনের বিয়ে বলে কথা। আজ প্রায় অর্ধেকরাত পর্যন্ত কাজ চলবে । সবাই যখন কাজে ব্যস্ত,,ক্লান্ত তখন সবার জন্য কফি নিয়ে ছাদে এসে হাজির হলো নিশাত,নাজিয়া,মিলি,বিথি,রুকু, সারা। তাদের কথা সবাই মিলে কিছুক্ষণ আড্ডা দিবে,গল্প করবে। বিরতি নিয়ে সবাই গোল হয়ে একসাথে বসলো ছাদের একটা পাশে। একটু পরে তিয়ান,কবির, আবিদ পলাশও উঠে এলো ছাদে। পলককেও ডেকে আনা হলো।সাথে এসেছে তাদের কাজিন ভাই সাব্বির আর নিহালও। এতগুলো মানুষ একসাথে হওয়ায় বেশ জমজমাট একটা পরিবেশ তৈরী হয়ে গেল মূহুর্তেই।সবাই জোড়ায় জোড়ায় বসেছে একরকম। তিয়ানের পাশে নিশাত আর তাদের মুখোমুখি হয়ে বসেছে পলক আর সিফাত। সবাই কফি খেতে খেতে আড্ডা দিচ্ছিল। এরমাঝেই সিফাতের একটা কল আসায় সে তার কফির মগটা রেখে উঠে গেল ওখান থেকে। কথা বলা শেষ হতেই যখন সে কফির মগটা হাতে নিয়ে চুমুক দিতে যাচ্ছিল,নিশাত চেঁচিয়ে উঠলো। সবাই হকচকিয়ে গেল তার এহেন চেঁচানোতে। সবার দিকে তাকিয়ে একটা ফাঁকা ঢোক গিললো সে,বুঝতে পারলো ব্যাপারটা বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে। কিন্তু,সেই বা কি করতো সিফাত যে ভুল করছিল। সবার দিকে একনজর দেখে সিফাতকে উদ্দেশ্য করে বললো,
_আপনি ভুল মগ হাতে নিয়েছেন ভাইয়া।ওটা বুবুর মগ। বুবু খেয়েছে ওটা থেকে।
পলক সহ সবাই তাকিয়ে দেখলো সিফাতের মগটা তার সামনেই কিন্তু সে বেখেয়ালেই পলকের মগটা হাতে তুলে নিয়েছে। কিন্তু,সবাইকে আরও বেশি অবাক করে দিয়ে সিফাত বললো, অহ! তারপরে আরামসে চুমুক দিল কফির মগে। কয়েকসেকেন্ড লাগলো সবার ব্যাপারটা ধরতে। ব্যাপারটা বোঝা মাত্রই সবাই মিটমিটে হাসা শুরু করলো নিজেদের মধ্যে।কেবল সারা মুখ ভেংচি দিয়ে নিজের কফিতে মনোযোগ দিল।
পলক ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে সিফাতের দিকে।তার মনে পড়ে গেল,,সেদিনও ছাদে পলকের খাওয়া কফিই সিফাত অনায়াসে খেয়েছিল। সে ভেবে অবাক হয় সিফাতের কি বিন্দুমাত্র অস্বস্তি হয়না এভাবে তার খাওয়া কফিটা খেতে? পলককে ওভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে সিফাত চোখ দিয়ে ইশারা করে জিজ্ঞেস করলো, কি ব্যাপার? পলক থতমত খেয়ে গেল। লজ্জাও পেল খানিক।তারপর ওই লজ্জামাখা স্বরেই মিনমিনিয়ে বললো,
_আপনার কি একটুও খারাপ লাগে না এসবে?
_কিসবে? অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো সিফাত।
_না মানে…এই যে আপনি আমার খাওয়া কফিটাই নির্দ্বিধায় খান এভাবে।খারাপ লাগে না আপনার?
_এতে খারাপ লাগার কি আছে মৃন্ময়ী? হতবাক স্বরে জিজ্ঞেস করলো সিফাত।যেন এমন প্রশ্ন ত্রিভুবনে কেউ কখনো করেনি কাউকে। আর সিফাতের এহেন হেয়ালিতে বিরক্ত হয়ে পলক বললো,
_উউউফফফফ…আপনি কি কিছুই বুঝেন না? এভাবে একজনেরটা অন্যজন খায় নাকি কখনো?
সিফাত এবারে বুঝলো পলক আদতে কি বলতে চাইছে।আলতো হাসলো সে।তারপর, পলকের কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো,
_খায় তো। বিশেষ বিশেষ মানুষ খায়। আপনি বুঝবেন না।
সিফাতের এহেন কথা আর এটিটিউড দেখে হতাশ হলো পলক। এই মানুষটার সাথে কথায়, কাজে, বুদ্ধিতে সে কিছুতে পেরে উঠে না কখনো। পারবেই বা কি করে, গুণে গুণে ৮/৯ বছরের জ্ঞানবুদ্ধি বেশি এই মানুষটার তার থেকে।এই ভেবে মনে মনে একটা ভেংচি কেটে কফির মগে চুমুক দিলো সে। ঢুক গিলতে যাবে তার আগেই সিফাতের ফিসফিসিয়ে বলা কথায় সেটা গলাতেই আটকে গেল তার। তাকে কফিতে চুমুক দিতে দেখে সিফাত বললো,
_এবারে বলুন,,আপনার খারাপ লাগলো না? আমার খাওয়া কফিটা খেতে!
সিফাতের কথায় চোখ বড় বড় করে চাইলো সে তার দিকে। থতমত খাওয়া অবস্থাতেই গিলে নিলো কফিটা। তারপরেই আড়চোখে চাইলো সে কফির মগে।তার হাতে সিফাতের খাওয়া কফির মগ। ওদিকে তাকিয়েই কি যেন ভাবলো সে।তারপরেই মুচকি মুচকি হাসতে লাগলো।আর পরেরবার অনায়াসেই আর বেশ আরাম করেই চুমুক দিল কফির মগে। সিফাতের কাছাকাছি গিয়ে খাদে নামানো গলায় বললো,
_নাহ! লাগলো নাহ।কারণ,বিশেষ মানুষেরটার স্বাদটাও বিশেষ ভালো ছিল। বলেই মুচকি হাসলো সে সিফাতের দিকে তাকিয়ে। সিফাত মুগ্ধ নয়নে দেখলো সে হাসি। এভাবে ধীরে ধীরে একে অন্যের হওয়ার ব্যাপারটা বেশ উপভোগ করছে সে। আর মাত্র ১ দিন পরেই এই নারীটি একান্তই তার হয়ে যাবে। তার অস্তিত্বের অংশীদারী হয়ে আমৃত্যু তারই থাকবে! এই ভেবেই এক পরম পরিপূর্ণতার সুখে আবিষ্ট হলো সিফাত। আর পলক! সে তো অপেক্ষায় আছে…মৃন্ময়ীর অপেক্ষার অবসানের!
____________________________________
সবাই যখন সবার মত গল্প কথায় আড্ডায় মশগুল,,তখন মুখোমুখি বসে বিদ্ধস্ত মনে সিফাত আর পলককে দেখতে ব্যস্ত তিয়ান।সিফাত আর পলকের এমন মূহুর্ত দেখে বিথি বললো, তোর মনে আছে তিনু? তোদের সময় তুই যখন তোর সাথে একপ্লেটে সাজিরে খাইতে বলতি তখন তো ও কিছুতেই খাইতো না। আর এখন দেখ..ভাইয়ার কফির মগ থেইকাই কি সুন্দর কফি খাইতেছে ও..দেখ। এই জন্যই বলে প্রেমে পড়লে মানুষের ভোল পাল্টায় যায়! এ কথা শুনে অবাক পলক চুপসে গেল,,তিয়ান বাঁকা হাসলো।সিফাতও আলতো হাসলো। কিন্তু, বিথির কথা শেষ হতেই পাশে বসা কবির বিথির হাত চেপে ধরে তাকে সতর্কসংকেত দিতেই বিথি বুঝতে পারলো কতবড় ভুল কথা সে বলে ফেলেছে সে।যদিও সে বেখায়ালি হয়েই মজার ছলে এটা বলেছে,,তবুও এই জায়গায় এই কথা তার বলা উচিৎ হয়নি। এদিকে আবার বিথির কথা কাটাতে কবির বললো,
_আরেএএ…তুমি যে কি সব বলো না বিবিজান। বন্ধু আর বরেরটা এক হলো নাকি! তুমিও তো আমার প্লেটেই খাও কতসময়,তাই বলে কি অন্য কারোর সাথে খাবা নাকি!
_একপ্লেটে খাওয়া বা এক জনেরটা অন্য জন খাওয়াটা খাবার নয় বরং ভালোবাসার ভাগাভাগি হয় কবির ভাইয়া।পলকের সাথে বহুবার একইখাবার টিফিনে শেয়ার করেছি আমি।ওর খাওয়া খাবারটাই খেয়েছি।আমাদের ভালোবাসাটাও এমনি এমনি হয়নি। আমরা এক হয়েছিলাম বলেই হয়েছিল। -তিয়ান বললো কবিরের কথার পিঠে।
তিয়ানের এহেন কথায় ওখানে উপস্থিত সবাই হতভম্ব। সবাই তাকিয়ে আছে তিয়ানের দিকে। নিশাত সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তিয়ানের দিকে।পলাশ এবারে সরাসরি পলকের দিকে তাকালো।তাকে বোঝার চেষ্টা করছে সে। তিয়ানের সাথে পলকের সম্পর্ক বন্ধুত্বে। এটা সে জানে। কিন্তু, সত্যিই কি তাই? নাকি বন্ধুর থেকেও বেশি কিছু…!
আর কিছু ভাবতে পারলো না পলাশ তার আগেই নাজিয়া সবাইকে তাড়া দিয়ে বললো,
_এই,,চলো সবাই এখন।অনেক রাত হইছে, ঘুমাইতে হবে।কাল দুই দুইটা হলুদের আয়োজন করা লাগবে।অনেক কাজ বাকি এখনো। উঠো..
_হ্যাঁ,,,বেশ রাত হয়েছে। যার যার ঘরে চলো সবাই। রুকু বললো। পরিস্থিতি গম্ভীর বুঝে সবাই চুপচাপ উঠে গেল ওখান থেকে।
ডেকোরেশনের কাজ চলছে এখনো। রিহান সিফাতকে ডেকে নিয়ে গেল শেষবার সব চেক করার জন্য। সবাই উঠে যাওয়ার পর পলক আর নিশাত কফির মগগুলো একসাথে জড় করছিল। নিশাত কাপগুলো নিয়ে নীচে নেমে যেতেই পলকও উঠে দাঁড়ালো নীচে যাওয়ার জন্য।কিন্তু,পেছনে ফিরতেই দেখলো তিয়ান দাঁড়িয়ে আছে রেলিং ঘেঁষে। তার চারপাশে ধোঁয়া ছড়াচ্ছে। সম্ভবত সিগারেট খাচ্ছে সে। তাকে ওভাবে দেখে পলক বললো,
_এতরাতে স্মোক করছো কেন তিয়ান! ঘরে যাও।ঘুমাও।
_তুমি এখনো আমাকে নিয়ে ভাবো পলক?
_এটা কেমন কথা! তোমাকে নিয়ে ভাবার কি হলো এতে..আমি তো জাস্ট…
_এখনো ভালোবাসো আমাকে?
_ঘরে যাও তিয়ান। আসছি আমি।কঠিন গলায় বললো পলক। পা বাড়ালো চলে যাওয়ার জন্য। কিন্তু এক কদম যাওয়ার আগেই তিয়ান ওর হাত টেনে ধরলো পাশ থেকে।
থমকে গেল পলক।তারপর, পাশ ফিরে তিয়ান.. বলে কিছু বলতে যাচ্ছিল তার আগেই আচমকা খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো তিয়ান তাকে। কান্নায় ভারী হয়ে আসা গলায় বললো,
_কষ্ট হচ্ছে পলক। খুব কষ্ট হচ্ছে আমার।কেন এমন হলো সব…কেন তুমি আমার হলে না! আমি এখনো তোমাকেই ভালোবাসি। খুব ভালোবাসি।তাহলে তুমি কেন আমাকে ভালোবাসো না আর? কি করে সবটা ভুলে গিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করে নিচ্ছো তুমি! আমার যে ভালো লাগছে না এটা, কষ্ট হচ্ছে খুব। বলতে বলতেই কেঁদে দিল তিয়ান। তার চোখের পানিতে পলকের কাঁধ ভিজে একাকার। আচমকা এমন একটা পরিস্থিতি পড়ে অপ্রস্তুত গেছে সে।অজানা আশংকায় ভীতু হলো মন।আর সেই ভয় ভয় কন্ঠেই সে বললো,
_তিয়ান কি করছো তুমি! ছাড়ো। সরে দাঁড়াও। কিন্তু,তিয়ানের কোন হেলদোল নেই পলকের কথায়। সে নিজের মতই বলে যাচ্ছে।
_নাহ…তুমি আগে বলো…তুমি আমাকে এখনো ভালোবাসো কিনা? নাকি ভুলে গেছো সবটাই?
_আমি কিছুই ভুলিনি তিয়ান। যা হয়েছে সেটা ভুলে যাওয়ার মত নয়। এখন ছাড়ো আমাকে। অস্থির কন্ঠে বললো পলক। তারপর একরকম জোর করেই ধাক্কিয়ে ছাড়িয়ে নিল নিজের থেকে তিয়ানকে। তিয়ানকে ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই পলকের হাত ধরে এক ঝটকায় তাকে টেনে নিয়ে চেপে ধরলো ছাদের ট্যাংকির সাথে। পলকের খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে অবুঝ বাচ্চাদের মত জেদি স্বরে বললো,
_তাহলে এখনো ভালোবাসো আমাকে তাই না? তিয়ানের কন্ঠ ক্রমশ আরও ভারী হয়ে আসছে।পলকেরও চোখ টলমল করছে তিয়ানের অবস্থা দেখে। তিয়ানকে সে বরাবরই খুব শক্তপোক্ত মানসিকতার ছেলে হিসেবে জেনে এসেছে।যখন সে সোহেলের সাথে বিয়ের কথা বলেছিল, এক কথায় বলে দিয়েছিল,, ‘অপেক্ষা করতে না পারলে করে নাও বিয়ে। ‘ আর আজ সেই মানুষটাই কেমন বাচ্চাদের মত কেঁদে কেটে বলছে,তার কষ্ট হচ্ছে। ছেলে মানুষ নাকি খুব বেশি অসহনীয় কষ্ট না হলে কাঁদে না। কিন্তু,তিয়ান কাঁদছে আজ। বলছে, আজও ভালোবাসে তাকে। পলক জানে তিয়ান পরিস্থিতির চাপে পড়েই ছেড়েছিল তাকে ।আর পলকও নিরুপায় হয়েই তিয়ানের জন্য অপেক্ষা করতে পারবে না বলেছিল,কিন্তু সেও তো মন থেকে ছাড়তে পারেনি তিয়ানকে।৩ বছর পর যখন তিয়ানকে প্রথম দেখেছিল,,সেদিনও তার ভেতর যে ঝড় উঠেছিল সেটা কি তবে তিয়ানকে সে আজও ভালোবাসে বলে? কিন্তু,আজ বাদে কাল যে সে অন্য কারও হয়ে যাচ্ছে।সিফাত নামের মানুষটার সাথেও তো অনেকটাই জড়িয়ে গেছে সে।তাকেই বা ছাড়বে কি করে! পলক যখন নিজের মাঝেই এসব ভাবনা..প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত তখনই তিয়ান পলকের একদম কাছে গিয়ে খুব শক্ত করে তার বাহুগুলো চেপে ধরলো। তার কপালের সাথে নিজের কপাল ঠেকিয়ে দাঁড়ালো।যেন আরেকটু হলেই পুরোপুরি মিশয়ে নিবে সে পলককে নিজের মাঝে। তিয়ানের তপ্ত নিশ্বাস অনবরত পলকের সারা মুখে ছড়িয়ে পড়ছে।ভয়ে,অস্বস্তিতে দমবন্ধ হয়ে আসছে পলকের। এরমাঝেই তিয়ান খুব শক্ত গলায় জিজ্ঞেস করলো,
_সত্যি করে বলো পলক,,ভালোবাসো তুমি আমাকে?
_তিয়ান…
_কি হলো বলো? ধমকে উঠলো তিয়ান। কেঁপে উঠলো পলক। কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,
_হ্যাঁ,,বাসি। আর তারপরেই ঝরঝর করে কেঁদে দিল সে। তারপর বললো,কিন্তু…
_I love u Polok. খুব ভালোবাসি তোমাকে। প্লিজ আমাকে আরেকটা সুযোগ দাও। আমি প্রমিস করছি,,আর কখনো তোমাকে নিজের থেকে দূরে করবো না। প্লিজ তুমি আবার শুধু আমার শ্যামকন্যা হয়ে যাও। প্লিজ পলক।
_তিয়ান, আমি… আর কিছু বলতে পারলো না পলক। তার আগেই ওখানে রিহানের গলার আওয়াজ পেয়ে চুপ হয়ে গেল সে।সতর্ক হলো তিয়ানও। কারও সাথে কথা বলতে বলতে ছাদ থেকে বেরিয়ে গেল সে। রিহান বেরিয়ে যেতেই পলকও দেরি করলো না আর। তিয়ানের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে দৌঁড়ে ছাদ থেকে বেরিয়ে গেল সে। তিয়ানও আর বাঁধা দিল না তাকে। তার প্রশ্নের উত্তর সে পেয়ে গেছে। পলক আজও তাকেই ভালোবাসে।তাই পলককে পাওয়ার একমাত্র অধিকারও তারই।
চলবে..
.