#Ragging_To_Loving__2
#পর্বঃ- ৪১
#রিধিরা_নূর
নূর আফরানের চুল টেনে ক্লোজআপ মার্কা হাসি দিল। আফরান ভ্রু কুচকে তাকাল। আফরানের চোখে আঙুল দেওয়ার মতো করে ভয় দেখাল।
♪♪
দেখেছি প্রথমবার, দু চোখে প্রেমের জোয়ার
গিয়েছি হাটবাজার, দেখছি মুরগির খামার
লেগেছে ভীষণ ক্ষুধা, খেয়েছি মজার খাবার
একবারে ভরেনি পেট, খেয়েছি আরও দুইবার
♪♪
আফরান মুখ আপনা-আপনি হা হয়ে গেল। একে তো এমন নূরের বেসুরে গলায় জঘন্য গান, তার উপর নূরের এমন পাগলের মতো লাফালাফি নাচ। মাথাটা ঘুরে উঠল। বন্ধু মহলের আড্ডার সময় নূর মজা করে এই গান গেয়েছিল। সেই গানেই এখন নাচলো।
বাচ্চারা খুশিতে গদগদ হয়ে খিলখিল করে হাসছে এবং হাত তালি দিচ্ছে। আফরান আড়চোখে বাচ্চাদের দিকে এবং ভাবতে লাগলো “এই মেয়ে দেখি বাচ্চাদেরও পাগল করে দিয়েছে” পরক্ষণেই নূরের দিকে তাকাল।
নূর — হেই মি. উগান্ডার প্রেসিডেন্ট। নাও ওয়াচ দিজ।
চশমা টেবিলের উপর রেখে চুল খুলে এলোমেলো করে দিল। পিচ্চি বাচ্চাটা আফরানকে ধাক্কা দিয়ে নূরের কাছে ঠেলে দিল। নূর চোখ টিপি দিল।
♪♪
ওরে পাগল হয়ে যাব, আমি পাগল হয়ে যাব…(২)
ওয়ান্স এগেইন [[ চুল ঝাড়া দিয়ে আফরানের মুখে মারল]]
ওরে পাগল হয়ে যাব, পাগল হয়ে যাব
মাংদি সি ওহ রাইগ এ এ
দিল ভিচ হাইড এ এ
আফরান — স্টপ। (চেঁচিয়ে)
নূর চমকে দাঁড়িয়ে গেল। গুটিসুটি মেরে চিপায় দাঁড়িয়ে আছে। বাচ্চারা লাফিয়ে গাইতে লাগলো “ওরে পাগল হয়ে যাব, ওরে পাগল হয়ে যাব” আফরান রাগী দৃষ্টিতে নূরের দিকে তাকাল।
আফরান — এই গানটা লিরিক্স তোমার জন্য ভুল। ওরে পাগল হয়ে যাব নয় বরং বল ওরে পাগল করে দিব। তুমি আগে থেকেই পাগল। তাই আবার পাগল হওয়ার সুযোগ নেই। বরঞ্চ যে-ই তোমার সঙ্গে থাকে সে-ই পাগল হয়ে যায়।
নূর — হোওও। আপনি কি বলতে চান আমি পাগল? (রেগে)
আফরান — বলতে চাই না। বলছি। তুমি একটা পাগল।
নূর — আপনি পাগল, আপনার বউ পাগল, বউয়ের জামাই পাগল।
আফরান — তোমার সঙ্গে আর এক মিনিট থাকলে আমিই পাগল হয়ে যাব।
আফরান নূরকে উপেক্ষা করে বেরিয়ে এলো। নূর রাগে ফুঁসছে। বাইরে এসে আফরানের ফোন বেজে উঠল। ওয়াসিম ফোন দিয়েছে। আহিল ও আমরিনের ব্যাপারে সব জানালো।
.
.
আহিল ড্রাইভ করছে। তার বাবা-মা পেছনের সিটে চিন্তিত হয়ে বসে আছে।
আহিলের মা — আহিল কি হয়েছে বলবি? কোন কথা নেই বার্তা নেই হুট করে এসে আমাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লি। শাড়ীটাও পাল্টাতে দিলি না। পুরাতন শাড়ী পরে বাইরে এলাম।
আহিল — মা, এদিকে তোমার ছেলের জীবন তচনচ হতে চলেছে আর তুমি শাড়ীর কথা ভাবছ?
আহিলের বাবা — কিন্তু হয়েছেটা কি? আমাকেও কিছু বললি না। অফিসে ফোন করে বললি দ্রুত চলে আসছে নাহলে তোর জীবন শেষ হয়ে যাবে। এবার অন্তত বল।
আহিল — আমরিন। যাকে আমি ভালবাসি৷ হুট করেই তার বাবা-মা তার বিয়ের সম্বন্ধ পাকা করেছে। তাই আজই তোমরা তার বাসায় গিয়ে আমার আর আমরিনের বিয়ের কথা পাকা করে আসবে।
আহিলের বাবা-মা অবাক হয়ে একে অপরের দিকে তাকাল।
আহিলের বাবা — দেখেছ আহিলের মা। তোমার ছেলে ভার্সিটিতে পড়াশোনা করতে নয় প্রেম করতে যায়।
আহিল — বাবা ভুলে যেও না তোমার আর মায়ের বিয়েও প্রেম করে হয়েছে।
আহিলের বাবা বিষম খেয়ে গাঁ ঝাড়া দিয়ে বসল। আহিলের মা আড়চোখে তাকিয়ে বলল,
আহিলের মা — যেমন বাপ তেমন ছেলে।
আয়নায় আহিল অসহায় দৃষ্টিতে বাবা-মা’র দিকে তাকাল। আহিলের মা মুচকি হাসলেন। আহিলের বাবা তাকে আশ্বাস দিয়ে বলল,
আহিলের বাবা — যেমন বাপ তেমনই তো তার ছেলে হবে। ডোন্ট ওয়ারি। আমরা আমাদের ছেলের খুশি চাইবো।
.
.
রিহানকে ঘর থেকে উঠিয়ে সবাই চলল আমরিনের বাড়ির উদ্দেশ্যে। কারণ তুফান আসতে চলেছে। আরিফ রিহানের জীপ ড্রাইভ করছে। সিমা,ওয়াসিম সবাই দল বেঁধে গাড়িতে বসল। ওপস সরি রিহান বসল না। বেচারা কুত্তার কামড় খেয়ে বসার জোর নেই। দাঁড়িয়ে চলেছে গন্তব্যে। রিহান অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে আছে। সবাই তার দিকে তাকিয়ে মুখ টিপে টিপে হাসছে। সবার হাসি মানা যায় পুষ্পর হাসি রিহানের রাগ-দুঃখ বাড়িয়ে দিচ্ছে। রিহান রাগী দৃষ্টিতে তাকাতেই সবাই চোখ ফিরিয়ে নেয় কিন্তু কারো হাসি থামছে না।
ওয়াসিম — আহারে বেচারা। (দুঃখ প্রকাশ করে)
রিহান আবেগী হয়ে করুণ স্বরে বলল,
রিহান — একমাত্র তুই আমার বন্ধু। তুই আমার কষ্ট বুঝলি। এগুলো একেকটা হারামির দল। এরা আমার বোন নয় শত্রু। আর পুষ্প… তোমার কথা নাই-বা বললাম।
ওয়াসিম — আমি তোর কথা বলছি না। বেচারা ওই কুকুরের কথা বলছি। তোকে কামড়ানোর পর কুকুরটা পাগল হয়ে গিয়েছে। আজ ভার্সিটিতে যাওয়ার পথে দেখলাম ডগ স্কোয়াড এসে কুকুরটাকে নিয়ে গেল। জানিস কুকুরটা কত অসহায় সুরে কান্না করছিল। আমি তো পুরাই ইমোশনাল হয়ে গেলাম।
সবাই এতক্ষণ মুখ টিপে হাসলেও ওয়াসিমের কথায় হো হো করে হেসে উঠল। রিহান রেগে চেঁচিয়ে উঠল।
রিহান — ওয়াসিম্মেএএএএ।
ওয়াসিম — কিইইইই? (কাচুমাচু হয়ে)
রিহান — ওই ডগ স্কোয়াডের লোক তোকে দেখেনি? দেখলে তো ওই কুত্তাটাকে ছেড়ে তোকে নিয়ে যেতো। (রেগে)
আরিফ — আচ্ছা থাম তোরা। এবার বল কোন দিকে মোড় নিব।
সিমা — ডানে।
আরিফ — কেউ কি নূর এবং আফরানকে জানিয়েছিস?
পুষ্প — ভাইকে ওয়াসিম ভাইয়া জানিয়েছে। নূরকে ফোন দিয়েছি কিন্তু নট রিচেবেল।
.
.
নূর — মানে কি? এত কিছু হয়ে গেল আর কেউ আমাকে জানায়নি। ওপস ভেতরে নেটওয়ার্ক প্রবলেম তাই হয়তো নট রিচেবেল ছিল। সেই যাই হোক এখন তাড়াতাড়ি চলুন। আর পিচ্চির দল সবাই প্রাকটিস কর। আমি বিকেলে আসব।
আফরান — চলেন ম্যাডাম। আমাকে উদ্ধার করুন। (হাত জোড় করে)
.
.
আহিল পুষ্পকে ফোন দিল।
আহিল — হ্যাঁ আমি তোমার দেওয়া ঠিকানায় পৌঁছে গেলাম। কিন্তু এখানে আমরিনের ঘর কোনটা?
পুষ্প — রাস্তার ডান পাশের মোড়ে সাদা দালানটি আমরিনের বাড়ি। আর আমরা…. (আমরা সবাই আসছি বলার পূর্বেই ফোন কেটে দিল)
আহিল চারপাশে তাকিয়ে সাদা দালান দেখতে পেল। বুকের ভেতর ধুকপুক ধুকপুক করছে। হাত পা কাঁপছে। আহিলের বাবা আহিলের কাঁধে হাত রাখল। আহিল তাকাতেই পলক ফেলে আশ্বাস দিল। মুচকি হেসে কলিংবেল বাজালো। আমরিনের মা এসে দরজা খুলল। তাদের চিনতে না পারলেও বিনম্রতা সহিত তাদের স্বাগত করল।
আহিল ভয়ে ভয়ে ভেতর প্রবেশ করল। মূহুর্তেই যেন তার জীবন থমকে গেল। কয়েকজন লোক সোফায় বসে আছে। তাদের মাঝে বসে আছে আমরিন। দুঃখের ছোঁয়া তার মাঝে পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বরং সে যেন ভীষণ খুশি। আহিল এই খুশির কারণ উপলব্ধি করতে পারল না। কিন্তু পরক্ষণে যা শুনল পায়ের নিচ থেকে যেন মাটি সরে গেল।
আমরিনের বাবা — তাহলে এই সম্বন্ধ পাকা করে নিলাম বেয়াই সাহেব। আগামী মাসের ৫ তারিখ তাদের বাগদান।
আমরিনের মুখে প্রফুল্লতার হাসি আহিল কোনরূপে সহ্য করতে পারছে না। আহিল আমরিনকে সবার সামনে থেকে উঠিয়ে নিল। দুই কাঁধে ধরে ঝাঁকাতে লাগলো।
আহিল — এসব কি আমরিন? তুমি না আমাকে ভালবাস? কিছু সময় পূর্বেও এই বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে কান্না করছিলে। আমাকে বলেছিলে যাতে এই বিয়ে না হয়। তাহলে এখন এতো হাসিখুশি বিয়েতে রাজি হয়ে গেলে? একটিবার আমার কথা ভাবলে না? (চেঁচিয়ে)
উপস্থিত সবাই অবাক হয়ে আহিল এবং আমরিনের দিকে তাকিয়ে আছে। কি হচ্ছে কেউ বুঝতে পারছে না। আমরিন নিজেও অবাক। আহিল এখানে কি করছে? আহিলের চোখ টলমল করছে। আমরিন বুঝতে পারছে আহিল বুকে কষ্ট নিয়ে কথা গুলো বলল। আমরিন শান্ত গলায় বলল,
আমরিন — আহিল, আমার কথা শোন। তুমি…
আহিল — আমি কোন কথা শুনতে চাই না। যা শোনার শুনেছি। যা দেখার দেখেছি।
আমরিনকে ঠেলে দূরে সরিয়ে দিল। আমরিন তাল সামলাতে না পেরে পড়ে যেতেই একজন লোক ধরে ফেলে। ততক্ষণে পুষ্প,রিহান এসে হাজির হলো। পরিস্থিতি গম্ভীর দেখে সবাই চুপচাপ দরজার দ্বারে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আমরিনের বাবা — কি হচ্ছে এসব? কে তুমি? আর আপনারা কারা? (আহিলের বাবা মাকে উদ্দেশ্য করে)
আহিলের বাবা — আসসালামু আলাইকুম। এই হলো আমার ছেলে আহিল। আপনার মেয়ের সঙ্গে একই ভার্সিটিতে পড়ে। আহিলের কাছ থেকে যতটুকু জানতে পারলাম আপনার মেয়ে এবং আমার ছেলে একে অপরকে ভালবাসে। কিন্তু আপনি আপনার মেয়ের বিয়ের সম্বন্ধ অন্য কোথাও পাকা করছেন।
আমরিনের বাবা অবাক হয়ে আমরিনের দিকে তাকাল। ভয়ে আমরিন মাথা নিচু করে ফেলল। আহিল নিস্তব্ধ হয়ে আমরিনের দিকে তাকিয়ে আছে। ভাবছে আমরিন কেন এই বিয়েতে প্রতিবাদ করল না? আর কত হাসিখুশি বিয়েতে রাজি হয়ে গেল।
আহিলের বাবা — ভাইজান, আমার জন্য আমার ছেলের খুশি সবার উর্ধ্বে। আশা করি আপনার কাছেও আপনার মেয়ের খুশি সবার উর্ধ্বে হবে। তাদের দুজনের খুশি একে অপরের সাথে। জানেন আহিলকে আমরা বেশ আদর যত্নে বড় করেছি। কোন কিছু চাওয়ার পূর্বের তার অভাব পূরণ করেছি। কখন তার চেহারায় দুঃখ দেখিনি। কিন্তু আজ আমার ছেলেটাকে ছটফট করতে দেখেছি। ভয় পেতে দেখেছি। আপনার মেয়েকে হারানোর ভয়। ছেলেমেয়ের খুশির কথা ভেবে অন্তত একবার চিন্তা করুন।
আহিল — না বাবা৷ চিন্তা করতে হবে না। কারণ উনার মেয়ে খুশি আছে এই বিয়েতে। বরং আমাদের এখন যাওয়া উচিৎ। চল।
আহিল যেতে নিলে আমরিন তাকে আটকে দেয়।
আমরিন — আহিল তুমি যা ভাবছ তা নয়। আমার বিয়ে হচ্ছে না। এই বিয়ের সম্বন্ধ আমার জন্য নয় বরং আমার মামাতো বোন আইরিনের জন্য। আবির ভাইয়া এবং আইরিন আপুর সম্পর্ক চার বছরের। দু পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে হচ্ছে। আমার না।
আহিল — কিন্তু তুমি যে বললে?
আমরিন — আমি ভুল বুঝেছিলাম। বাবা-মা আমরিন নয় আইরিন বলেছিল। আমার ভুল বোঝাতে এতো ঝামেলা হলো।
আহিলের খুশি যেন বাঁধা মানছে না। হঠাৎ টের পেয়ে আমরিন আশেপাশে তাকাল। লজ্জায় এই মূহুর্তে তার মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে।
আহিলের বাবা — ভাইজান আপনার যদি আপত্তি না থাকে তাহলে ছেলেমেয়ের সম্বন্ধে কিছু আলোচনা করতে চাই।
সিমা — সকাল থেকে যে আমরা এতো টেনশনে ছিলাম সব মিথ্যা ছিল?
সিমার কথা সবার নজর সেদিকে গেল। তাদের দলবল দেখে উপস্থিত সবাই টাস্কি খেল। রিহানরা সবাই দাঁত কেলিয়ে হাসি দিল।
আহিল — তোমরা সবাই এখানে?
আমরিনের বাবা অবাক হয়ে বলল,
আমরিনের বাবা — আপনি কি বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে এসেছেন? নাকি বিয়ের জন্য একেবারে পুরো বরাত নিয়ে এসেছেন?
আমরিনের বাবার কথা সবাই চমকে উঠল। পরক্ষণে তিনি হেসে উঠলেন।
আমরিনের বাবা — আগে আমরা বিয়ের সম্বন্ধ পাকা করে নেয়। তারপর নাহয় ঝাকঝমকে বরাত নিয়ে আসবেন।
আহিলের বাবা — তার মানে আপনি এই সম্পর্কে রাজি?
আমরিনের বাবা — জি। আপনার জন্য যেমন আপনার ছেলের খুশি সবার উর্ধ্বে তেমন আমার জন্য আমার মেয়ের খুশি সবার উর্ধ্বে।
আহিলের বাবা হাত পেতে আমরিনের বাবাকে জড়িয়ে ধরলেন। আনন্দের জোয়ারের মাঝে কড়া আওয়াজ ভেসে উঠল।
নূর — নায়ায়ায়ায়া। এমন হবে না। মানি না মানব না। আমাদের দাবি মানতে হবে। (স্লোগান দিয়ে)
নূরের কণ্ঠস্বর শুনে সবাই তাকে খুঁজতে লাগলো। কিন্তু এই মেয়ে গেল কই? আফরান বিরক্তি ভঙ্গিতে সোফার দিকে ইশারা করল। সবার নজর সোফার দিকে। নূর এক হাতে কোল্ড ড্রিংকসের গ্লাস, অন্য হাতে পিৎজার টুকরো, কোলে পিৎজার প্লেট।
রিহান — নূর? তুই এখানে কবে এসেছিস?
আফরান — অনেক আগেই। যখন আংকেল (আহিলের বাবা) কথা বলছিল তখন এসেছি আমরা। আর নূর পুরো ড্রামা এনজয় করার জন্য সবার অগোচরে কোল্ড ড্রিংকস নিয়ে সোফায় বসে পড়ল।
নূর হাত থেকে সব টেবিলের উপর রেখে উঠে দাঁড়াল।
নূর — আংকেল(আমরিনের বাবা) এটা কি করলেন আপনি? এতো সহজে তাদের বিয়ে সম্পর্ক মেনে নিলেন? ধুরর সব মজাই মাটি হয়ে গেল। DDLJ মুভি দেখেননি। যেখানে অমরিশ পুরি রাজ-সিমরান এর বিয়ে মেনে নেয় না। পরে বলে “যা সিমরান যা, জীলে আপনি জিন্দেগী”। আপনারও এমন করার উচিৎ ছিল। প্রথমে বিয়ে মেনে নিবেন না। সবাই বোঝানোর পর বলবেন, “যা আমরিন যা, জীলে আপনি জিন্দেগী”। তাহলেই ড্রামা একটু ট্রাজেডিক হতো। হুহ্! (দুঃখ প্রকাশ করে)
উপস্থিত সবাই হো হো করে হেসে উঠল।
আমরিনের মামাতো বোনের বিয়ে কথা পাকা করে মেহমানরা বিদায় নিল। বড়রা ড্রয়িংরুমে বসে আলোচনা করছে। আমরিন সবাইকে নিয়ে তার রুমে গেল। ছেলেরা আহিলকে খোঁচাতে লাগলো, আর মেয়েরা আমরিনকে।
আলিফা — তোমাদের লাভ স্টোরি নিয়ে একটি সিনেমা বানানো যাবে। রোমেন্স, ট্রাজেডি, সাসপেন্স, কমেডি সব ভরপুর।
অবশেষে সব পাকাপোক্ত হলো। ছোট করে পারিবারিক ভাবে তাদের বাগদান হবে। আমরিনের পড়াশোনা শেষে, আহিল নিজের পায়ে দাঁড়ালে ধুমধামে তাদের বিয়ে হবে।
.
দুই দিন পর________________________
আফরান “রিদম মিউজিক কোম্পানি’তে উপস্থিত হলো। সংগীত পরিচালক জামান হামিদ আফরানকে দিয়ে দুটি গান রেকর্ড করল।
জামান হামিদ — অল দ্যা বেস্ট মি. আফরান। আশা করি আগের প্রথম গানটির মতো এই গান দুটোও সবার মন জয় করবে।
আফরান — আই হোপ সো। অসংখ্য ধন্যবাদ স্যার। আমাকে এই সুযোগ দেওয়ার জন্য।
জামান হামিদ — অবশ্যই। তোমার মধ্যে সেই প্রতিভা আছে বলেই তো সুযোগ দিয়েছি। আশা করি ভবিষ্যতেও আমরা এক সঙ্গে কাজ করে সফলতা অর্জন করব।
আফরান মুচকি হেসে সম্মতি জানালো। দুজনে হাত মেলালেন।
.
নূর ও বাকি মেয়েরা শান্তি নিকেতনে উপস্থিত হলো। সবাই মিলে অনুষ্ঠানের জন্য বাচ্চাদের তৈরি করে দিচ্ছে। নূর মেয়েদের নাচ প্রাকটিস করাচ্ছে।
নূর — হুম। সব ঠিক আছে। অল দ্যা বেস্ট বাচ্চারা। নাচতে নাচতে স্টেজ ভেঙে ফেলবে। ঠিক আছে?
মেহের — বাচ্চারা তো তৈরি হলো। এবার তোরাও রেডি হয়ে নে। আমি আর আলিফা তৈরি হয়ে এসেছি। আমরা বাচ্চাদের নিয়ে যাচ্ছি তোরা শীঘ্রই আয়।
.
.
.
চলবে