#Ragging_To_Loving__2
#পর্বঃ- ৪৫
#রিধিরা_নূর
আমরিন রান্নার কাজ শেষ করে সব কিছু দেখে নিল ঠিকঠাক আছে কিনা। গলাটা শুকিয়ে গিয়েছে। ফ্রিজ খুলে পানির বোতল নিয়ে উঠে দাঁড়াতেই ভয়ে আঁতকে উঠল। হেলান দিয়ে আহিল দাঁড়িয়ে আছে। মুখে চঞ্চলপূর্ণ হাসি। আমরিন চোখ দুটো সরু করে তাকাল। অফিস থেকে আসা মাত্রই আহিল আমরিনের কাছে এলো। হঠাৎ তাকে ভয় দেখিয়ে যেন ভীষণ মজা পেল৷
আমরিন — আজ এতো তাড়াতাড়ি চলে এলে যে।
আহিল — আমার বউটাকে মিস করছিলাম। তাই।
লজ্জায় রাঙা হাসি দিয়ে আমরিন মাথা নিচু করে ফেলল। আহিল সামনে এসে দু’হাতে তার গলা জড়িয়ে ধরল। হেসে আমরিনের গাল টেনে দিল। মূহুর্তে তার গাল দুটো লাল বর্ণ ধারণ করল।
আহিল — উফফ লজ্জাবতী। আমাদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে প্রায় এক বছরের কাছাকাছি। কিন্তু তোমার লজ্জা এখনো কাটলো। অবশ্য ভালোই হয়েছে। যখনই এভাবে লজ্জা পাও মন চাই আবারও তোমার প্রেমে পড়ি।
আমরিন — প্লিজ ছাড়। কেউ দেখলে কি বলবে?
আহিল — বলবে বউ আছে, বেডরুম আছে। সেখানে গিয়ে রোমেন্স কর৷ কিচেনে কি করছ?
আমরিন — তুমি না ভীষণ নির্লজ্জ হয়ে গিয়েছ।
(আহিলের পেটে চিমটি দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নিল।)
আহিল — কারণ লজ্জার টেকা তো তুমি নিয়ে রেখেছ। তাই কাউকে তো নির্লজ্জ হতে হবে।
আহিল আবারও আমরিনের কাছে যেতে নিলে আমরিন পালিয়ে যায়।
.
.
ওয়াসিম একের পর এক সিমাকে ফোন দিয়েই চলেছে। কিন্তু সিমা বারবার ফোন কেটে দিচ্ছে। কিন্তু ওয়াসিম থামছে না। বিরতিহীন ফোন দিচ্ছে। সিমা রেগে ফোন সুইচড অফ করে দিল।
.
.
দুই ঘন্টা ধরে নূর রুমে বন্দী। তন্বী, তার মা এসে অনেকবার ডেকে গিয়েছে। কিন্তু কোন রূপে বেরুচ্ছে না। আবারও কড়া নাড়লো।
নূর — ধুর বললাম তো আমি যাব না।
পুষ্প — নূর, আমি। দরজা খোল।
নূর উঠে তড়িঘড়ি দরজা খুলে উঁকি মেরে দেখল কেউ আছে কিনা। এক টানে পুষ্প ভেতরে নিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল। কোমরে দুই হাত দিয়ে রাগী দৃষ্টিতে পুষ্পর দিকে তাকাল। পুষ্প ভয়ে ভয়ে হাসার চেষ্টা করল। কিন্তু নূরের চেহারা দেখে হাসি আসছে না।
নূর — তোর বাবা-মা যে বিয়ের সম্বন্ধ পাকা করতে এসেছে আমাকে বলিস নি কেন?
পুষ্প — আমি নিজেও জানতাম না। বিকেলে বাসায় ফিরতেই বাবা হুট করে জানালো। আমি নিজেও অবাক বাবা হুট করে এমন সিদ্ধান্ত নিল।
নূর খুশিতে গদগদ করে পুষ্পকে জড়িয়ে ধরল। পুষ্প নিস্তব্ধ দাঁড়িয়ে আছে। নূর তাকে ধরে দুলছে।
নূর — তোকে বলে বুঝাতে পারব না আমি কতটা খুশি।
পুষ্প — সত্যি! আমি তো ভেবেছিলাম হঠাৎ করে এসব তোকে না জানানোর জন্য তুই তোলপাড় করবি।
নূর — আরে এই দিনের জন্য আমিও অপেক্ষিত ছিলাম। তুই আর আমি একসাথে একই ঘরে থাকব। এর চেয়ে বড় কথা আর কি হতে পারে। আমি আর তুই মিলে ওই চুন্নিদের জেলাস ফিল করাবো৷
পুষ্প — এ্যাহহহ! (হতভম্ব হয়ে)
তখনই নূরের মা এলো।
শাহারা হায়দার — নূর। আমি তোকে দুপুরে বলেছিলাম না ভালো জামা কাপড় পরে তৈরি থাকবি। তাহলে নিচে এসে কি কান্ড পাকিয়ে গেলি? (ঝাড়ি দিয়ে)
নূর — তুমি তখন এটা বলেছিলে? আমার কানে ইয়ারফোন ছিল বিধায় শুনতে পায়নি।
শাহারা হায়দার — তোকে নিয়ে আর পারা যায় না। আজ বাদে কাল তোর বিয়ে হবে। আর এখনই তোর এই অবস্থা।
নূর — আম্মু, প্যারা নাই চিল। তখনের বিষয় তখন দেখা যাবে।
শাহারা হায়দার — এক্ষুনি রেডি হয়ে নিচে আয়। সবাই তোর অপেক্ষা করছে। পুষ্প, তুমি এসো মা।
পুষ্প নূরের দিকে তাকিয়ে মুখ টিপে হেসে চলে গেল। নূর মুখটা পেঁচিয়ে বসে আছে। সবার সামনে এখন ইজ্জতের ফালুদার স্বাদ নিতে যাবে।
নূর — কত আহ্লাদ হবু বউমাকে নিয়ে। এদিকে নিজের মেয়েকে ঝাড়ি দিয়ে চলে গেল। ধুর।
সবাই খাবার টেবিলে বসে নূরের অপেক্ষা করছে। নূর গুটিসুটি পায়ে এসে আফরানের বাবা-মাকে সালাম দিল। প্রতিউত্তরে তারা সালামের জবাব দিল। নূর অস্বস্তি বোধ করায় কেউ তাকে নিয়ে তেমন কিছু বলেনি। লজ্জায় নূর কারো সাথে চোখ মেলাতে পারছে না। কেমন এক লজ্জাজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। কি ভাববে তারা? যে মেয়েটা কত অসভ্য। ভদ্রতা বলতে কিছু নেই। কেউ তাকে কিছু না বললেও সে ভীষণ লজ্জিত। নূরকে বসতে বলল। চেয়ার টানতে গিয়ে হঠাৎ চোখ পড়ল আফরানের উপর। মুখ খুলে হা হয়ে নিষ্পলক তাকিয়ে আছে নূরের দিকে। এতে যেন নূর আরও লজ্জিত হলো।
আফরান অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। নূর সাদা গোল জামা পরিহিত। তাদের প্রথম যেদিন দেখা হয়েছিল সেদিনও নূর সাদা কুরতি পরিধান করেছিল। শ্যামলা গায়ের বর্ণে সাদা রঙ যেন নিস্তব্ধ রাতে জোছনার শ্বেত চাদর জড়িয়ে দিয়েছে। সেই দৃশ্য বিলাসে মগ্ন আফরান।
আফরানে খোলা মুখে পুষ্প খাবার ঢুকিয়ে দিল। থতমত খেয়ে আফরানের ধ্যান ভাঙল। পাশে তাকিয়ে দেখে পুষ্প অযথা হাসি চেপে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করছে। আশেপাশে তাকিয়ে এক গ্লাস পানি এক নিঃশ্বাসে পান করল।
খাবার শেষে নূরের বাবা,রিহান, আফরানের বাবা-মা ড্রয়িংরুমে বসল। রান্নাঘরের পাশাপাশি হওয়ায় সব শোনা যায়। নূর, পুষ্প কাজে নূরের মাকে সাহায্য করছে। নূর ফিসফিসিয়ে পুষ্পকে বলল,
নূর — ওহো! বিয়ের আগে হবু শাশুড়িকে বশ করা হচ্ছে বুঝি। যাতে আম্মু বুঝে তার ঘরে একজন গুণবতী বউমা আসবে। তাই না?
পুষ্প কুনুই দিয়ে নূরকে খোঁচা দিল। নূরের মা পাশে থাকায় কিছু বলতেও পারছে না। তবে মনে মনে বেশ লজ্জা পেল। তা দেখে নূর হেসে দিল।
শরীফ আহমেদ — সবকিছু যখন ঠিকঠাক আছে তাহলে শুভ কাজে বিলম্ব করা উচিৎ নয়। যদি আপনাদের আপত্তি না থাকে তাহলে আগামী শুক্রবারের পরের শুক্রবার বাগদান হবে। এরপরের শুক্রবার বিয়ে। আয়োজনের চিন্তা করবেন না। সবকিছু হয়ে যাবে।
জুনায়েদ হায়দার খানিকটা চিন্তিত হলেন। তিনি কিছু বলার পূর্বেই রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে নূর বলে উঠল,
নূর — আরে আংকেল এক্ষুনি তো আপনি বললেন, শুভ কাজে বিলম্ব করা উচিৎ নয়। তাহলে আগামী শুক্রবারের পরের শুক্রবার কেন? আগামী শুক্রবারেই বাগদান হোক। আমি তো ভেবে রেখেছি কোন কোন গানে নাচবো। এখন আমার পা দুটো তর সইছে না। তাই আগামী শুক্রবারেই বাগদান হোক।
সবাই অবাক হয়ে নূরের দিকে তাকিয়ে আছে। যেন সে বাগদানের কথা নয় যুদ্ধের কথা বলেছে। আর সবাই তোপ নিয়ে নূরের দিকে তাক করে আছে। কাঁধে থাপড়ান অনুভব করে ধ্যান ভগ্ন হলো।
শাহারা হায়দার — নূর। বড়দের মাঝে তোর কেন কথা বলতে হচ্ছে। (মৃদুস্বরে)
নূর — আরে কি এমন বলেছি। এই বিয়েতে আমারও তো অবদান আছে। সে যায় হোক আমি বরের….
শাহারা হায়দার — চুপ কর। বড়রা তাদের সিদ্ধান্ত নিবে। সবখানে শুধু বকবক করতে হয়।
আফরান — বকবক নয় খিটখিট করতে হয়। কবে যে এই মেয়ে সোজা হবে। (বিড়বিড় করে)
রিহান — কিছু বললি?
আফরান মাথা নেড়ে না বলল। অবশেষে বড়রা সিদ্ধান্ত নিল আগামী শুক্রবার বাগদান। তার দুই সপ্তাহ পর বিয়ে। বাগদান পারিবারিক ভাবে আয়োজন হবে। ঘনিষ্ঠ আত্মীয় এবং বন্ধুরাই থাকবে। ওইদিকে নূর রান্নাঘরে পুষ্প আর তন্বীকে নিয়ে লুঙ্গি ডান্স দিচ্ছে।
আফরান বিষন্ন মনে নূরকে দেখছে৷ কতকিছু বলার ছিল। অব্যক্ত কত কথা ব্যক্ত করার ছিল। কিন্তু নূর কাছে এলে তো! সন্ধ্যা থেকে রাত হলো কিন্তু নূর একবারও আফরানের সঙ্গে কথা বলল না। পরক্ষণে নূরের দিকে তাকাল। চোখে আনন্দের ঝলকানি, মুখে এক রাশ হাসি, চঞ্চলতায় পূর্ণ ভঙ্গিমা। আপনা আপনি আফরানের ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠল।
নূর আড়চোখে আফরানকে দেখছে। ঠোঁটের কোণে মুচকি হাসি। খোঁচা খোঁচা দাড়িতে বেশ মানিয়েছে তাকে। অনেক পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। নাকের ডগায় রাগ এখন আর পরিলক্ষিত হয় না। বোধগম্যতা বুঝিয়ে দেয় সেই একজন দায়িত্ববান। ভাবতে ভাবতে মনে পড়ল সন্ধ্যার ঘটনা সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিল। আফরানের দিকে তাকাতেই বেশ লজ্জা লাগছে।
নূর — (কি ভাবছেন উনি আমার ব্যাপারে? এভাবে সবার সামনে পা তুলে…..। এখন তো উনার সঙ্গে চোখ মেলাতেও পারব না।)
অবশেষে পুষ্প তার পরিবারের সঙ্গে বিদায় নিল। যাওয়ার শেষ সময়টুকু আফরান চেষ্টা করেছিল নূরের সঙ্গে কথা বলতে কিন্তু নূর তার কাছ থেকে দশ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে ছিল। ড্রাইভিং সিটে বসে শেষ বারের মতো তাকাল একে অপরের দিকে। কেমন হতো যদি এই মূহুর্তটা থমকে যেত। চোখের ভাষায় মনের সব কথা ব্যক্ত করত। গাড়ি ছুটলো গন্তব্যে।
রিহান নূরের মাথায় থাপ্পড় দিল। নূর মাথায় হাত বুলিয়ে রাগী দৃষ্টিতে তাকাল।
রিহান — যা নাচ প্রাকটিস কর। আর মাত্র পাঁচদিন বাকি।
নূর — তোরে আমি…..
তেড়ে রিহানকে মারতে গেলে রিহান ভৌ-দৌড় দিল।
জুনায়েদ হায়দার — এর নাকি বিয়ে। দু’জনে এখনো বাচ্চাদের মতো ঝগড়া করে। এরা বুঝি বড় হবে না।
তন্বী — আর আমি?
জুনায়েদ হায়দার — তুই আমার পাকনি বুড়ি। আমার মা। মাঝে মাঝে মনে হয় এরা দুইজন না তুই আমার বড় সন্তান। (হেসে মমতায় জড়িয়ে ধরল)
.
.
রুমে এসে নূর গ্রুপে সবাইকে ভিডিও কল দিল।
নূর — এই গরিব মিসকিন ফকিন্নিরা শোন। আগামী শুক্রবারে…..
সিমা — তুই গরিব।
আলিফা — তুই মিসকিন।
মেহের — তুই ফকিন্নি।
আমরিন — যে সংবাদ দেওয়ার জন্য এতো তোড়জোড় করছিস সেই সংবাদ আমরা পেয়ে গিয়েছি। পুষ্প আমাদের একটু আগেই জানিয়েছে।
নূর — ওহো! সুপার ফাস্ট। সেই যাই হোক খুব শীঘ্রই আমি আর পুষ্প একসাথে একই ঘরে থাকব। দুজনে মিলে খুব আড্ডা দিব, মজা করব, একসাথে ঘুরব, একই রকম ড্রেস পরব, তারপর…..
সিমা — হয়ছে থাম। আর ঢং করতে হবে না। আমাদের শুনিয়ে শুনিয়ে এসব বলছিস যাতে আমরা জেলাস ফিল করি। কিন্তু আমরা জ্বলছি না। হুহ্!
পুষ্প — নূর, পোড়ার গন্ধ মনে মোবাইলের মাধ্যমে এখান অবধি আসছে।
নূর — (নাক টানছে) হ্যাঁ! খুব বাজে গন্ধ। মনে হয় জ্বলেপুড়ে একেবারে ছারখার হয়ে গিয়েছে।
নূর,পুষ্প সমস্বরে হাসছে আর বাকিরা রাগে ফুঁসছে।
নূর — এই রে পার্লিকে ফোন করা হয়নি। অনেক রাত হয়েছে, এখন বোধহয় লিরাকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। থাক। কাল ফোন দিব।
.
শুক্রবার________________________
আফরানের ফার্ম হাউসে বাগদানের অনুষ্ঠান আয়োজিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আত্মীয়স্বজনরা এসে হাজির। আহিল,ওয়াসিম,আলিফা,সিমা তারা সবাই মিলে সাজানোর দায়িত্ব নিয়েছে। অল্প সময়ে বেশ তোড়জোড় করে আয়োজন করা হয়েছে।
নূর ব্যস্ত কে কোন গানে নাচবে এই নিয়ে। সকলেই তার কাজেই বিরক্ত। কিন্তু বিরক্ত প্রকাশ করলেই বা কি। নূর ভাবলেশহীন সবাইকে ধরে এনে প্রাকটিস করায়৷ সবাইকে করালেও আফরানকে কোন রকম আপোষ করল না। বিষয়টি আফরানের কাছে অগ্রাহ্য।
আফরান — নূর?
নূর হঠাৎ আফরানকে দেখে চমকে উঠল। আশেপাশে তাকিয়ে দেখে কেউ নেই।
নূর — আম্মু ডাকছে আমাকে।
যেতে নিলে আফরান হাত আঁকড়ে ধরল। হেচকা টান দিয়ে মুখোমুখি দাঁড় করালো। আফরানের দিকে তাকাতেই বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠল। সেই পুরনো রাগী আফরান আবার ভর করেছে তার উপর। চোখ দুটো ধারালো, কপালের রগ ফুলে উঠল। খোঁচা দাড়ির মধ্যেও শক্ত চোয়াল নূরের চোখ এড়ালো না। নূর শুকনো ঢোক গিলল।
নূর — আ..আপনি….
আফরান — আমাকে ইগনোর করছ কেন?
নূর — কো..কোথায় ইগনোর করছি? আমি শুধু একটু ব্যস্ত….
আফরান — ব্যস্ত? এতো ব্যস্ত যে আমার দিকে তাকানোর সময় পর্যন্ত নেই?
নূর — স্যরি। সেদিন আপনারা বাসায় এসেছিলেন আর আমি আপনাকে রিহান ভেবে পা টিপ….
নূরের কথার মাঝে আফরান হোহো করে হেসে উঠল। নূর অবাক হলো।
আফরান — এই জন্য তুমি এভাবে আমার কাছ থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছ? মিস খিটখিট। আর কত পালাবে? পালিয়ে অবশেষে আমার কাছেই তো আসবে।
নূর — মানে?
আফরান — ওরে অবুঝ বালিকা। মনে হয় তোমাকে বুঝ দান করার ক্লাস আবারও শুরু করতে হবে।
নূরের কানে ফিসফিস করে বলল। মূহুর্তে নূর বরফের ন্যায় জমে গেল। ফিসফিস মৃদু ধ্বনি কানের মধ্য দিকে কম্পনের ন্যায় প্রবাহিত হচ্ছে। হিমেল হাওয়ার ছোঁয়ায় শিউরে উঠল। নূরকে স্থির দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আফরান নূরের কানে ফুহ্ দিল। সাথে সাথে নূর কেঁপে উঠল। তা দেখে আফরান খিলখিল করে হেসে উঠল। লজ্জায় নূর সেখান থেকে চলে গেল।
আফরান — হায়! (বুকের বাপাশে হাত রেখে)
ওয়াসিম ফোঁপাতে ফোপাঁতে আফরানের কাছে এলো। আফরান ভ্রু কুচকে তাকাল।
আফরান — কি সমস্যা?
ওয়াসিম — সিমা রেগে আছে। এক সপ্তাহ হয়ে গেল। না আমার সঙ্গে কথা বলছে, না ফোন রিসিভ করছে। এমনকি আমার সঙ্গে ঝগড়াও করছে না।
আফরান — কেন? কি হয়েছে?
ওয়াসিম — আমাদের লাভ স্টোরির ভিলেন। সিমার মা। তিনি কোন ভাবে আমাদের সম্পর্ক মেনে নিচ্ছে না।
আফরান — কেন মেনে নিচ্ছে না? কি সমস্যা? তোর ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড, ক্যারিয়ার সবই তো ভালো। তাহলে মেনে না নেওয়ার কারণ কি?
ওয়াসিম — সেটা তো আমিও জানি না। যখনই উনার সামনে যায় আমার সাহস, এনার্জি সব ডাউন হয়ে যায়। আর আমি চিৎপটাং অজ্ঞান।
.
.
.
চলবে