#চদ্ররঙা_প্রেম
#পর্ব-১৪
#আর্শিয়া_সেহের
রুমঝুম চুপচাপ বসে আছে ড্রয়িং রুমের সোফায়। শরীরে জড়ানো খয়েরী রঙের ভারী লেহেঙ্গা। শাফিয়া আক্তার মোটামুটি ভালোই মেকআপ করিয়েছে তাকে। একদম পুতুলের মতো সাজিয়েছে। শান্ত তো ঘুরে ফিরে রুমঝুমের পাশে এসে বসতেছে।
শানদের কিছু আত্মীয় স্বজন এসেছে যাদের বাড়ি কাছাকাছি। প্রতিবেশীরাও বেশ কয়েকজন এসেছে বউ দেখতে। এক একজন এসে এক একরকম প্রশ্ন জিজ্ঞেস করছে। তবে রুমঝুমের উত্তর দেওয়া লাগছে না। শাফিয়া আক্তারই সব উত্তর দিচ্ছেন। রুমঝুম মাথা নিচু করে বসে আছে।
খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে ওর কিন্তু শ্বাশুড়ির এতো কষ্টে কথানো মেকআপটা নষ্ট হয়ে যাবে বলে কাঁদতে পারছে না।
শানকে নিয়ে তিহান, প্রান্ত,সিন্থিয়া,মেঘা সবাই ছাদে চলে গেছে। ছাদেও হালকা পাতলা সাজিয়েছে। এখন রাত নয়টার মতো বাজে। রাত বারোটার আগে সবকিছু শান্ত হবে বলে আশা করছে না কেউ।
মেহেদী যদিও বয়সে এদের বড় তবুও ওকে তিহান টেনে টুনে নিয়ে এসেছে। সবাই ছাদের মাঝখানে বসে আড্ডা দিচ্ছে। তবে শানের মন পড়ে আছে তার চন্দ্রকন্যার কাছে। কখন যে এসব ফর্মালিটি শেষ হবে?
মেহেদী শানের অস্থিরতা খেয়াল করলো। খুব গোপনে একটা নিঃশ্বাস ফেললো সে। আল্লাহ চাইলে হয়তো এই অস্থিরতাটা আজ তার মধ্যে থাকতো। মেহেদী সেখানে আর বসলো না। উঠে ওদের থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে রেলিংয়ে ভর দিয়ে দাঁড়ালো। ওদের হইহুল্লোড় এর শব্দ কানে আসলেও ওরা এখন মেহেদীর চোখের আড়ালে।
মেহেদীকে চলে আসতে দেখে সিন্থিয়াও উঠে দাঁড়ালো।সাথে সাথেই প্রান্ত বললো,
-“ওয়ে ওয়ে,স্যার উঠে গেছে বলে এখন ম্যামও উঠে পড়লো নাকি?”
সিন্থিয়া কিঞ্চিত রাগ নিয়ে তাকিয়ে বললো,
-“একদম চুপ কর বেয়াদ্দপ। নিজের কাজ কর।”
সিন্থিয়া কিছুটা সরে আসলে সবাই হেঁসে উঠলো। মেঘাও এতদিনে সিন্থিয়াকে বেশ বুঝে গেছে। তাছাড়া প্রান্তও সেদিন সিন্থিয়ার ব্যাপারে অনেক কিছুই বলেছে। মেঘার খুব পছন্দ সিন্থিয়াকে। মেয়েটা তার ভাবি হলে বেশ জমে যাবে।
রুমঝুমের অন্ধকারে দেখা সেই গাছটি ছিলো একটা কৃষ্ণচূড়া গাছ। এখন অবশ্য ফুল নেই। মেহেদীর সম্মুখ বরাবর কিছুটা সামনে এসে থেমেছে একটা ডাল। গাছটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে,এটা অনেক পুরোনো। মেহেদী একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সেদিকে।
-“রুমঝুমকে অনেক ভালোবাসেন তাই না?”
মেহেদী আনমনেই বললো,
-“হু। ভীষণ।”
উত্তর দেওয়ার পর পরই সম্বিত ফিরলো তার। অনেকটা হকচকিয়ে পেছনে তাকালো। ভুল জায়গায় ভুল কথা বলে ফেলেছে সে। এটা রুমঝুমের শ্বশুরবাড়ি এটা সে কিভাবে ভুলে গেলো?
পেছনে তাকিয়ে সিন্থিয়াকে দেখে স্বস্তি পেলো মেহেদী। সিন্থিয়া শুকনো মুখে দাঁড়িয়ে আছে।
-“এতোই ভালোবাসেন তাহলে আগে জানান নি কেন ওকে?”
সিন্থিয়া এগিয়ে এসে মেহেদীর পাশে দাঁড়িয়ে বললো।
মেহেদী পুনরায় কৃষ্ণচূড়া গাছটির দিকে তাকালো। কাঁপা গলায় বললো,
-“আমি আসলে বুঝতে পারিনি মেয়েটা অন্য কারো সাথে জড়িয়ে পড়বে। ওর মনের অবস্থা বুঝেই ওকে সময় দিয়েছিলাম। নিজের অজান্তেই কখন যে প্রানপাখির খাঁচা খুলে দিয়েছি বুঝতেই পারিনি।”
সিন্থিয়া মুখ লুকিয়ে কান্না মুছলো। নিজের ভালোবাসার মানুষটির মুখে অন্য কারো নাম শোনা যে কতটা কষ্টের তা যে শোনে সেই বোঝে। সিন্থিয়া চোখ মুছে বললো,
-“ওর স্মৃতিতেই ডুবে থাকবেন নাকি? জীবনকে দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়া উচিত নয় কি?”
-“জানো সিন্থিয়া? কিছু কষ্ট আড়ালেই অপ্রকাশিত ভাবে থেকে যায়। কিছু কষ্ট একান্তই নিজের থাকে। এই কষ্ট গুলো ভেতরটা ঝাঁঝড়া করে দেয়।”
সিন্থিয়া ডুকরে কেঁদে উঠলো মেহেদীর কথা শুনে। মেহেদী আবারও বললো,
-“তুমি যত সহজে বললে জীবনকে দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়ার কথা ,তত সহজে আসলে দেওয়া যায় না।”
সিন্থিয়া কথা বললো না। মুখ চেপে উল্টো পথে হাঁটা ধরতেই মেহেদী তার হাত ধরলো। মেহেদী হাত ধরায় সিন্থিয়া যতটা না অবাক হলো তার চেয়ে বেশি লজ্জা পেলো। তার ভেতরকার কান্না এক মূহুর্তে কোথায় হারিয়ে গেলো।
নিজেকে স্বাভাবিক করে সিন্থিয়া মেহেদীর চোখে চোখ রাখলো। মেহেদী শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সিন্থিয়ার দিকে। সিন্থিয়া দৃষ্টি নামিয়ে ফেললো। মেহেদী সিন্থিয়ার হাত ছেড়ে দিলো। দম নিয়ে বললো,
-“তুমি তো আমাকে রুমঝুম এখানে আসার দুমাস আগে থেকেই পছন্দ করো। তখন বলোনি কেন, সিন্থিয়া?”
সিন্থিয়া মায়াভরা চোখে তাকালো মেহেদীর দিকে। মেহেদীর মতো একই সুরে উত্তর দিলো,
-“ওই যে,একি কারনে। বুঝতে পারিনি ছেলেটা জড়িয়ে পড়বে কারো সাথে। সময় দিচ্ছিলাম নিজেকে আর নিজের ভালোবাসা কে।”
মেহেদী হাঁসলো। সিন্থিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,
-“আমাকে আরেকটু সময় দিবে? কথা দিচ্ছি, নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে আমার আকাশপরীর কাছেই ফিরবো আমি।”
সিন্থিয়া কেঁপে উঠলো। এই নামটা কি ওর জন্যেই? ও মেহেদীর আকাশপরী?
সিন্থিয়া খুশিতে কেঁদে ফেললো। কান্না মেশানো গলায় বললো,
-“সত্যিই ফিরবেন?”
মেহেদী শব্দ করে হেঁসে ফেললো এবার। সিন্থিয়ার চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বললো,
-“ফিরবো না তো কি করবো? এতো ভালোবাসা উপেক্ষা করার সাধ্য আমার আছে নাকি? আর তাছাড়া আমি চিরকুমার থাকবো নাকি?”
মেহেদীর কথা শুনে সিন্থিয়াও হেঁসে ফেললো। দুজনই খিলখিল করে হাসছে রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে। রাতের আকাশটাও হাঁসছে তাদের হাঁসিতে।
…
-“আরমান,রুশানকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো? ওকে ছাড়ো । ওকে ছাড়ো প্লিজ।”
আরমান রুশানকে ড্রয়িং রুমে এনে সর্বশক্তি দিয়ে থাপ্পড় মারলো।
শক্তপোক্ত হাতের থাপ্পড় খেয়ে টাল সামলাতে পারলো না রুশান। ফ্লোরে পড়ে গেলো। ঠোঁট কেটে রক্ত বেরিয়ে এসেছে। আরমান রুশানকে টেনে তুলে আবারও থাপ্পড় মারলো।
হ্যাংলা পাতলা রুশান এই থাপ্পড়গুলো সহ্য করতে পারছে না। তবুও মুখ বুজে রয়েছে।
তাহমিনা বেগম আরমানের পা ধরে বসে পড়লেন। বিলাপ করে করে বললেন,
-“ওকে মেরো না। দয়া করো। ও ছোট মানুষ আরমান।দয়া করো আমাকে।”
আরমান পা ঝাড়া দিয়ে সরে এলো। চিৎকার করে বললো,
-” এই কু*র বাচ্চা আমার সব প্লান শেষ করছে। দুই দুই বার। ওরে জ্যান্ত দাফন করবো আমি।”
বলেই তেড়ে গেলো রুশানের দিকে।
তাহমিনা বেগম রুশানকে আগলে দাঁড়ালো। মিনতি করে বললো,
-“ওকে মেরো না আর। ও মরে যাবে বাবা। ওকে আর মেরো না।”
আরমান রুশানের দিকে একবার তাকিয়ে সোফায় বসে পড়লো। বাঁকা হেঁসে বললো,
-” বোনের বিয়ে হইছে বলে বোন বেঁচে গেছে এমনটা ভাবিস না।তোর বোন রে বউ বানানোর জন্য কিনি নি আমি বুঝছিস?
ক্লান্ত রুশান জ্বলন্ত চোখ মেলে তাকালো আরমানের দিকে। আরমান রুশানের দিকে তাকিয়ে বিদঘুটে এক হাঁসি দিয়ে বললো,
-” শালীর চেহারা দেখে কিনছি। ওর ছবি দেখে এক লোকে কত দাম দিয়ে কিনতে চাইছে ওরে জানিস? হাহ,তোরা ক্যামনে জানবি ? ওই মাইয়া রে তো আমার লাগবোই।”
আরমান সোফা থেকে উঠে দাঁড়ালো। ধপধপ পা ফেলে রুশানের সামনে এসে বসলো। ফিসফিস করে বললো,
-“ওই মেয়েরে আনা আমার বাঁ হাতের খেল। শুধু দেখে যা সামনে কি হয়।”
আরমান বেরিয়ে গেলো বাড়ি থেকে। রুশান সেদিকে তাকিয়ে একদলা থুথু ফেললো মাটিতে। আরমান এভাবে হুট করে এসে সরাসরি তার রুমে গিয়ে তার ফোন চেক করবে সেটা ও ভাবতেই পারে নি। আগে টের পেলে এসএমএসটা ডিলিট করতে পারতো।
তাহমিনা বেগম রুশানের কাছে এসে বসলো। রুশান তার দিকে তাকিয়ে হাসলো। তাহমিনা বেগমের বুক কেঁপে উঠলো সেই হাঁসি দেখে। ঘৃনা আর তাচ্ছিল্যে ভরা সেই হাঁসি।
রুশান নিজেই কোনো রকমে উঠে দাঁড়ালো। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কয়েক পা সামনে এগিয়ে আবার পেছনে তাকালো। সেই একই ভঙ্গিতে হেঁসে বললো,
-“নিজের সন্তানের জন্য খুব কষ্ট হয় তাই না, আম্মু? অন্য কারো সন্তানের বেলায় কেন এমন হলো না তোমার?”
রুশান ধীরে ধীরে সিঁড়ি বেয়ে উঠে নিজের ঘরে চলে গেলো। তাহমিনা বেগম সেখানেই বসে রইলেন। তার খুব ইচ্ছে করলো নয় বছর আগের সময়টাতে ফিরে যেতে।
…
এগারোটার দিকে সবাই ছাদ থেকে নিচে নেমে এলো। রুমঝুম তখনও সোফায় বসে আছে। ওদের নামার আওয়াজ পেয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে সেদিকে তাকালো। রুমঝুমের অসহায় দৃষ্টি দেখে মেঘা আর সিন্থিয়া মুখ টিপে হাসছে। রুমঝুম ঠোঁট ফুলিয়ে তাকিয়ে আছে ওদের হাঁসি দেখে। ওকে বাঁচাবে তা না করে হাসছে ওখানে দাঁড়িয়ে।
ওদিকে শানকেও চ্যাংদোলা করে নিয়ে ঘুরছে তিহান আর প্রান্ত।
শাফিয়া আক্তার ওদের সবাইকে খেতে বসালেন। রুমঝুম শানের দিকে তাকিয়ে ছিলো। হঠাৎ চোখ পড়লো প্রান্তের দিকে। প্রান্ত একধ্যানে কোথাও তাকিয়ে আছে। রুমঝুম সেই দৃষ্টি অনুসরন করে তাকিয়ে দেখলো শিরীন একটা বাচ্চার সাথে হেসে হেসে গল্প করছে। প্রান্ত সেটাই দেখছে মনোযোগ দিয়ে।
শিরীন বাচ্চাটাকে রেখছ রুমঝুমের কাছে এসে বসলো। রুমঝুমের সাথে গল্প করলেও ওর দৃষ্টি অন্য কোথাও। রুমঝুম এবার সেদিকে তাকিয়ে দেখলো প্রান্ত অন্যদিকে তাকিয়ে আছে।
রুমঝুম কিছু কিছু বুঝতে পেরে মুচকি হাসলো তবে এটা নিয়ে কিছু বললো না তখন।
..
রাত প্রায় সাড়ে বারোটা বাজে। শানদের বাড়ি প্রায় ফাঁকা হয়ে গেছে। রুমঝুমকে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে এসেছে শাফিয়া আক্তার। শিরীন আর মেঘা এসে রুমঝুমকে খাইয়ে দিয়ে গেছে একটু আগে।
শান্তর দেখা নেই অনেকক্ষণ আগে থেকেই। মেহেদী বাড়িতে চলে গেছে সাড়ে এগারোটার দিকেই। মেঘা আর মাহেরা খাতুন সকালে যাবে।
এই রাতে তিহান, প্রান্ত,সিন্থিয়া আর বিথী শানকে আবার ছাদে নিয়ে গেলো। তিহান কোন ফাঁকে যেন অ্যালকোহল নিয়ে এসেছে। এখন সেটাই খাওয়ানোর জন্য নিয়ে গেছে শান কে।
শান একদম মুখ বন্ধ করে পরে আছে। সে কিছুতেই খাবেনা এই অখাদ্য। সবাই চেষ্টা করেও যখন খাওয়াতে পারলো না শান কে।
ওদিকে তিহান ঢকঢক করে খেয়েই যাচ্ছে। বিথী তিহানের হাত থেকে বোতল কেড়ে নিয়ে বললো,
-” আর কত খাবি? রাখ এবার।”
তিহান বিথীর হাত থেকে বোতল ছিনিয়ে নিলো। গমগম করে বললো,
-“তোর কি হ্যাঁ? আমি যত ইচ্ছা খাবো। বন্ধুর বিয়ে হয়ে গেলো আর আমি সিঙ্গেলই মরতেছি। এই কষ্ট কমানোর জন্য হলেও খাবো। সর তো তুই।”
বিথী কপাল চাপড়ালো। এই ছেলে যে কি করবে আজ রাতে।
এরমধ্যেই মেঘা ছাদে এলো। শাফিয়া খাতুন সবাইকে ডেকে পাঠিয়েছে নিচে। অনেক আড্ডা হয়েছে। এখন ঘুমাতে হবে। সিন্থিয়ে উঠে এসে মেঘার হাত ধরে আগেভাগে নেমে এলো। শানের থেকে টাকা খসাতে হবে এখন।
শিরীন রুমঝুমের কাছে বসে ছিলো। রুমঝুম ছলেবলে জিজ্ঞেস করলো,
-“ডিয়ার ননদিনী। কাউকে ভালোবাসো?”
শিরীন লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেললো। মিনমিন করে বললো,
-“বাসি তো। কিন্তু সে আমাকে পাত্তাই দেয়না ভাবিজান ।”
-“সে কি প্রান্ত ভাইয়া?”
শিরীন লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া মুখে ক্ষীণ কন্ঠে জবাব দিলো,
-“হুম।”
রুমঝুম বেশ অবাক হলো। প্রান্ত শিরীনকে পাত্তা দেয় না এটা কেন বললো শিরীন? তবে কি প্রান্ত ভাইয়া নিজের অনুভূতিগুলো লুকিয়ে রাখে?
বাইরে থেকে চেঁচামেচির আওয়াজে শিরীন বেরিয়ে গেলো। রুমঝুম যখন বুঝতে পারলো দরজার ওপাশে সবার সাথে শান ও দাঁড়িয়ে আছে তখনই তার বুকের মধ্যে ধুকপুক শুরু হয়ে গেলো। হাত-পা ও মৃদুমন্দ কাঁপছে।
সবাই মিলে দশহাজার টাকা নিয়ে তারপর শানকে ছাড়লো। শান ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বললো,
-“সব কয়টাকে দেখে নিবো আমি।”
তিহান টলতে টলতে বললো,
-“আব্বে যা যা,দেখিস।”
শান প্রান্তর দিকে তাকিয়ে বললো,
-“ওই মাতালরে ঘরে নিয়ে যা এখনি। কোথায় কি করে ফেলবে আবার।”
প্রান্ত দাঁত কেলিয়ে তিহানকে নিয়ে চলে গেলো। দরজার সামনে থেকে সবাই চলৈ গেলে শান রুমঝুমের দিকে তাকালো। বিছানায় জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে তার চন্দ্রকন্যা। মুচকি হাসলো শান। দরজা আটকাতে যাবে তক্ষুনি হুড়মুড় করে বই-খাতা বগলডাবা করে নিয়ে ভেতরে ঢুকলো শান্ত।
শান শান্তর দিকে তাকিয়ে হা হয়ে গেলো। এই ছেলে এখন এখানে আসলো কেন? শান্ত ততক্ষণে বইখাতা নিয়ে বিছানায় বসে পড়েছে। রুমঝুম ঘোমটা তুলে তাকিয়ে আছে ক্ষুদে বাঁদরটার দিকে।
শান এগিয়ে এসে কোমরে দুই হাত রেখে বললো,
-“এই তুই এখন এই ঘরে এলি কেন?”
-“আজকে তোমার বাসর রাত না?”
শান গলা খাঁকারি দিয়ে বললো,
-“হ.. হ্যাঁ তো?”
শান্ত নিরীহ প্রাণীদের মতো বললো,
-“তুমিই তো সেদিন বলেছিলে,বাসর রাতে নাকি তুমি অনেক খুশি থাকবা। তাই তোমার বাসর রাতে যেন আমি তোমার কাছে ম্যাথ করতে আসি। এজন্যই তো এসেছি।”
রুমঝুম ফিক করে হেঁসে দিলো শান্তর কথা শুনে। আর শান অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো তার ম্যাথপাগলা ভাইয়ের দিকে।
চলবে….
(গল্প নিয়ে কারো কোনো অভিযোগ থাকলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন।
ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)