#চন্দ্ররঙা_প্রেম_২
#পর্বঃ২২
#আর্শিয়া_সেহের
আজকের আকাশটা একদমই অন্যরকম। মেঘলা আকাশের মধ্যে মাঝে মাঝে সূর্য উঁকি মেরে যাচ্ছে। রোদ্দুরের তেজ নেই বললেই চলে। রুশানকে রেডি করে নিচে নিয়ে আসলো তিহান ,রুমেল আর শান্ত। বাদবাকি বরযাত্রী যারা যাবে সবাই রেডি হয়ে বসে আছে। রুশানকে নিচে আনার পরপরই সবাই গাড়িতে উঠে বসলো। শান্ত রুশানের নাকে একটা রুমাল চেপে ধরে বসে আছে। রুশান বারবার সরাচ্ছে আর শান্ত বারবার চেপে ধরছে।
একসময় রুশান বিরক্ত হয়ে বললো,
-” এই তোর সমস্যা কি শান্ত? এভাবে আমার নাকে রুমাল চেপে বসে আছিস কেন?”
শান্ত ইনোসেন্ট ফেস বানিয়ে বললো,
-“গতকাল আমি বাঙালি বিয়ের কয়েকটা ভিডিও দেখেছি।”
-“দেখেছিস তো? ভিডিওর সাথে রুমাল চাপার কি সম্পর্ক?”
-“আরে বাঙালি বর রা নাকে রুমাল চেপেই বিয়ে করতে যায়। তুমি বিশ্বাস করতেছো না তো আমার কথা? দাঁড়াও দেখাই তোমারে। ”
বলেই শান্ত পকেটে হাত ঢুকালো। রুশান তড়িঘড়ি করে বললো,
-“এই এই থাক। দেখানো লাগবে না আমারে। আমি এর আগেও বাঙালিদের বিয়ের ভিডিও দেখেছি। কিন্তু আমি এভাবে রুমাল টুমাল ধরতে পারবো না।”
শান্ত হাঁসি হাঁসি মুখে এগিয়ে এসে আবার রুশানের মুখে রুমাল চেপে ধরে বললো,
-“তোমাকে ধরতে বলেছে কে? আমি আছি তো ধরার জন্য। তুমি চুপচাপ বসে থাকো।”
রুশান অতীষ্ঠ হয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললো। এই ছেলেরে বুঝাবে এমন মানুষের জন্মই হয়নি এখনো। এরে কিছু বলাই বৃথা।
পৌনে দুইটার সময় বরযাত্রী এসে পৌঁছালো পুনমদের বাড়িতে। পুনমদের পুরো বাড়ি আলোকসজ্জায় সজ্জিত। পুনমের মামা আর তনিম মিলেই এই আয়োজন করেছে। রুশান গেটে এসেই দাঁড়িয়ে গেলো। পুরো মহল্লার কিশোরীরা মিলে বোধহয় গেট ধরেছে। বিশ থেকে পঁচিশটা মেয়ে। তনিম মেয়েগুলোর মাঝখান থেকে কোনোমতে ফাঁকফোকর খুঁজে চলে এলো রুশানের কাছে। উপস্থিত জনতার দিকে তাকিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে বললো,
-“উনারা অনেক কষ্ট করে এসেছে। বেশি ঝামেলা না করে অল্প টাকা নিয়ে সরে যাও সবাই।”
মেয়েগুলো চেঁচিয়ে বললো,
-“ত্রিশ হাজারের কমে গেট ছাড়বো না।”
রুশান পেছন থেকে তনিমের কানে ফিসফিস করে বললো,
-“তোমার বিয়েতে একবার চোখ টিপেই টাকা কমিয়ে ফেলেছিলাম। এখন তুমি যেভাবে পারো টাকা কমাবা। পনেরোর বেশি দিবো না।”
তনিম অসহায় চোখে রুশান আর কিশোরী দলের দিকে তাকাচ্ছে বারবার। শান্ত রুশানের পেছন থেকে এগিয়ে এসে বললো,
-“তনিম ভাই সরো তো। আমি দেখছি।”
রুশান, তনিম,প্রান্ত,তিহান, শান সবাই শান্তর দিকে তাকিয়ে আছে। সে কিভাবে টাকার পরিমান কমাবে এটা দেখার জন্য। শান্ত ভীরের মধ্যেই একটা লাল জামা পড়া মেয়ের দিকে তাকিয়ে ইশারায় ফ্লাইং কিস ছুড়ে মারলো। মেয়েটা শান্তর দিকেই তাকিয়ে ছিলো এতোক্ষণ। শান্তর ছুড়ে মারা ফ্লাইং কিস যেন তার বুকে এসে বিধলো। মেয়েটা বুকের বাম পাশে হাত দিয়ে চেপে ধরলো। সাথে সাথেই শান্ত চেঁচিয়ে বললো,
-“আরে আপনাদের লাল দোপাট্টার বুকে ব্যাথা শুরু হইছে মনে হয়। উনাকে ধরেন। আরে বেচারি মরে যাবে তো।”
শান্তর কথা শুনে সবাই হুড়মুড় করে মেয়েটার দিকে ছুটলো। মেয়েটা কিছুক্ষণের জন্য হতভম্ব হয়ে গেলো। যতোই সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করলো তার কিছু হয়নি ততই যেন সবাই তাকে নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছে। তনিম এই সুযোগে তিন চার জন মেয়েকে ডেকে তাদের হাতে পনেরো হাজার টাকা গুজে দিয়ে বললো,
-“এটা ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়ো সবাই। এখন ওর দিকে খেয়াল রাখো।”
রুশানসহ সমস্ত বরযাত্রী তাদের পাশ কাটিয়ে ঢুকে পড়লো। মেয়েগুলো সবাই বোকা বনে গেলো। শান্ত এমন একটা ভাব নিচ্ছে যেন সেই সর্বেসর্বা।
বরযাত্রীদের খাওয়ার সময় বাধলো আরেক বিপত্তি। শান্ত কিছুতেই রুশানের মুখ থেকে রুমাল সরাচ্ছে না। বিয়ে বাড়ির সবাই বরের দিকে তাকিয়ে আছে। রুশানের ইচ্ছে করছে শান্তকে তুলে চ্যাঙদোলা করে ফেলে দিয়ে আসতে। রুশান দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
-“শান্ত, তুই যদি আরেকবার এই রুমাল আমার মুখে চেপে ধরিস তাহলে কিন্তু আমি তোরে অভিশাপ দিবো।”
শান্ত আড়চোখে চেয়ে বললো,
-“কি অভিশাপ দিবা?”
-“তোর সাথে যেন উর্বিন্তার বিয়ে না হয় সেই অভিশাপ দিবো।”
শান্ত আম্ফানের চেয়ে তীব্র বেগে রুমাল সরিয়ে নিলো। রুমালটা পকেটে পুরে বললো,
-“আর একবারও এমন কাজ করবো না। দয়া করে অভিশাপ দিয়ো না রুশান ভাই।”
শান্তর কথার ধরনে রুশানের পেট ফেটে হাসি এলো । অনেক কষ্টে সেই হাঁসি কন্ট্রোল করলো রুশান। কি পরিমান বিয়ে পাগল ছেলে এটা। ভাবা যায়? তবে রুশান এটুকু বুঝতে পারে যে উর্বিন্তাকে শান্ত ভীষণ ভালোবাসে।
রায়হানের চাচাতো ভাই বড় সানগ্লাস ,হ্যাট পড়ে বিয়ে বাড়িতে এসে হাজির। রুশানের সাথে চোখাচোখি হতেই চোখ ফিরিয়ে নিলো ছেলেটা। খোঁজখবর নিয়ে জানতে পেরেছে এই ছেলেটার নাম রাব্বি। অনার্সে পড়ে। কোনো ব্যাড রেকর্ড না থাকলেও তার চাচাতো ভাই রায়হানের ভক্ত সে। এমনই ভক্ত যে ভাইয়ের কথায় জীবনও দিয়ে দিতে পারে। আর জীবন দিতে যখন পারে তখন নিতে আর দ্বিধা কোথায়?
রাব্বিকে দেখা মাত্রই রুশান তনিমকে ডেকে সবটা খুলে বললো এবং তনিমকে বললো রাব্বির দিকে নজর রাখতে। তনিমও আশেপাশের সব কাজ ছেড়েছুড়ে পুরোটা সময় রাব্বিকে চোখে চোখে রেখেছে। রাব্বি বারবার ভেতরে পুনমের ঘরের দিকে তাকাচ্ছে। কিন্তু কোনোভাবেই সুযোগ করে ভেতরে যেতে পারছে না। তনিম তাকে ফলো করছে এটা বোঝার পর সে বিয়ে বাড়িতে আর থাকেনি। উল্কার বেগে বেরিয়ে গেছে বিয়ে বাড়ি ছেড়ে। ভাবটা এমন এ যাত্রায় বেঁচে গেলে পরে অনেক কিছু করা যাবে।
শরীয়ত সম্মত ভাবে কোনো বাধা বিপত্তি ছাড়াই রুশান আর পুনমের বিয়ে হয়ে গেলো। পিহু তনিমের পাশে দাঁড়িয়ে হাসছে। তনিম অনেকক্ষণ ধরে তাকিয়ে আছে পিহুর দিকে। বোনের ভালোবাসা পূর্ণতা পেয়েছে দেখে মেয়েটার মুখ থেকে হাঁসি সরছেই না।
ধীরে ধীরে বিদায়ের সময় এগিয়ে এলো। পুনম তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। রাফিয়া বেগম মেয়ের কাছে এগিয়ে গেলে তাকেও জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠলো পুনম। রাফিয়া বেগম চুমুতে ভরিয়ে দিলেন মেয়ের মুখমণ্ডল। তার বিশ্বাস মেয়েটা সুখী হবে। পিহু এসে পুনমকে মায়ের থেকে উঠিয়ে নিলো। পুনম পিহুকে জড়িয়ে ধরে আরেকদফা কান্না জুড়ে দিলো। পুনমকে জড়িয়ে ধরেই পিহু বাইরে এসে দাঁড়ালো। পুনমের মামা রুশান আর তনিমের সাথে কথা বলছিলেন। পুনমকে দেখে এগিয়ে এলো পুনমের কাছে। মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
-“আমার উপর কোনো রাগ নেই তো তোর?”
পুনম মাথা তুলে তাকালো তার মামার দিকে। মধ্যবয়স্ক মুখটাতে অনুতাপের ছাপ স্পষ্ট। কান্নায় জড়িয়ে আসা কন্ঠে আস্তে করে বললো,
-“আপনার উপর আমার কোনো রাগ বা অভিযোগ নেই মামা। আমার জন্য দোয়া করবেন।”
পুনমের মামা চোখের পানি মুছে বললেন,
-“অনেক সুখী হ, মা। প্রিয়া টা তো অমন হয়েই গেছে ,তোরা দু’জন সুখী হ।”
বলেই বাড়ির মধ্যে চলে গেলেন। প্রিয়া সকাল থেকেই দরজা আটকে বসে আছে। অনেক ডাকাডাকি করেও কেউ তাকে বের করতে পারেনি।
বরযাত্রী প্রায় সকলেই গাড়িতে উঠে গেছে। রাফিয়া বেগম আঁচলে মুখ ঢেকে কাঁদছেন। পিহু পুনমকে নিয়ে গুটি গুটি পায়ে রুশানের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। পুনমের মামীও এলেন পিছু পিছু। পিহু পুনমকে রুশানের পাশে দাঁড় করিয়ে দিয়ে বললো,
-“আমার বোনটাকে দেখে রাখবেন প্লিজ। ওকে আপনার হাতে বিশ্বাস করে তুলে দিলাম আমরা।”
রুশান এক হাতে পুনমকে আগলে ধরে মুচকি হেঁসে বললো,
-“আপনিও আমার ভাইটাকে দেখে রাখবেন। আমিও আপনাকে বিশ্বাস করে ওর দায়িত্বটা আপনার হাতে দিয়েছি।”
অবাক হলেন পেছনে দাঁড়ানো পুনমের মামি। কোনো সম্পর্ক নেই,না কোনো বন্ধুত্ব। শুধুমাত্র কাজের সূত্রে চেনা একটা ছেলেকে এতো সহজে ভাই বলে ফেলা যায়? যায় হয়তো।
পুনমকে নিয়ে রুশান গাড়িতে উঠে বসলো। বেলা গড়ানোর সাথে সাথে এগিয়ে চললো তাদের বিয়ের গাড়ি। নতুন সম্পর্কে বাঁধা পড়লো একটি মেয়ে, তার একজীবনের সাথী হলো একটি ছেলে। পুরোনো সব সম্পর্ক ছাপিয়ে শুরু হলো এক নতুন সম্পর্কের সূচনা।
পুনমের গাড়ি চোখের আড়াল হতেই পিহু পেছনে তাকালো। তার মামি এখনো তাকিয়ে আছে রাস্তার দিকে। পুনমকে প্রচন্ড ভালোবাসেন মামি তা পিহুর অজানা নয়। পুনম আস্তে করে ডাকলো তার মামিকে। ভদ্রমহিলা পিহুর দিকে তাকিয়ে বললো,
-“আচ্ছা পিহু, রক্তের সম্পর্ক, ভালোবাসার সম্পর্ক আর বন্ধুত্বের সম্পর্কের বাইরে গভীর কোনো সম্পর্ক হয়? যতটা হলে সেই সম্পর্কের জন্য মানুষ জীবন দিতে প্রস্তুত থাকে।”
পিহুর মুচকি হেঁসে বললো,
-“হয় তো। সেটা আত্মার সম্পর্ক। আত্মার সম্পর্কটা যদি দেখা যেতো তবেই মানুষ বুঝতো ,সব সম্পর্কের চেয়ে এই সম্পর্কটাই বেশি স্ট্রং।”
পিহু হাঁটা শুরু করলো বাড়ির দিকে। একটু এগিয়ে আবার থামলো। পেছনে না ফিরেই বললো,
-“রক্তের সম্পর্ক আছে কি না এটা জানার জন্য যেমন ডিএনএ টেস্ট করা হয় তেমনি আত্মার সম্পর্ক আছে কিনা এটা জানার জন্যও একটা টেস্ট থাকা উচিত ছিলো। বর্তমান দুনিয়ায় এমন একটা টেস্ট থাকা খুব প্রয়োজন। ঠিক বলেছি না মামি?”
…
গেস্টরুমে একদম তাজা ফুল দিয়ে বাসর ঘর সাজানো হয়েছে। বিছানায় গোলাপের পাপড়ির বদলে বকুল ফুল ছড়ানো রয়েছে। পুনমের বকুল ফুল ভীষণ পছন্দ। রুশান অনেক কষ্টে একবস্তা বকুল জোগাড় করেছে পুনমের জন্য। আজকে পুনমকে বকুল ফুল দিয়ে ঢেকে রাখবে এমনটাই ইচ্ছে তার।
রাত দশটা পর্যন্ত পুনমকে সোফায় পুতুলের মতো বসে থাকতে হলো। একে একে মানুষ আসছে ,দেখছে ,কয়েকটা মন্তব্য করছে আর চলে যাচ্ছে। সেদিকে পুনমের কান নেই । তার দু’চোখ জুড়ে এখন শুধু ঘুম। দশটার দিকে রুমঝুম পুনমকে নিয়ে বাসরঘরে বসিয়ে দিয়ে এলো। পুনম রুমে ঢুকেই অবাক। একদম তার স্বপ্নের মতো করে সাজিয়ে রেখেছে রুমটা। রুমঝুম নিচু কন্ঠে বললো,
-“দেখেছো আমার ভাইটা কত ভালোবাসে তোমাকে? তোমার পছন্দের সবকিছুর ব্যবস্থা করেছে ও। তুমিও আমার ভাইটার সবকিছুর খেয়াল রাখবে। ঠিক আছে?”
পুনম জবাব দিলো না। শুধু মিষ্টি একটা হাসি উপহার দিলো। রুমঝুম পুনমকে বসিয়ে বললো,
-“তুমি রেস্ট করো। আমি তোমার জন্য খাবার পাঠাচ্ছি।”
তনিম রাত আটটার দিকেই এ বাড়িতে চলে এসেছে। আবার রাত এগারোটার মধ্যেই ফিরে যাবে। প্রান্ত , রুশান ,তনিম, শান,তিহান ,শান্ত সবাই ড্রয়িং রুমে বসে আড্ডা দিচ্ছে। রুমঝুম ডাইনিং এ গিয়ে দেখলো বিথী বিন্দুকে খাওয়ানো শেষ করেছে মাত্র। রুমঝুমকে দেখে বিথী বললো,
-“কি ব্যাপার ঝুম? ওরা খেতে আসবে নাকি?”
-” না আপু। পুনমের জন্য খাবার নিতে এলাম। ওকে কিছু খেতে দিতে হবে তো।”
বিথী বিন্দুর মুখ মুছে দিয়ে কপালে একটা চুমু দিয়ে নিচে নামিয়ে দিলো। বিন্দু দৌড়ে বাকি বাচ্চাদের কাছে চলে গেলো। বিথী মেয়েকে একবার দেখে রুমঝুমকে বললো,
-“তুমি এদিকটা দেখো। পুনমের জন্য খাবার আমি নিয়ে যাচ্ছি।”
রুমঝুম ততক্ষণে খাবার গুছিয়ে ফেলেছে। বিথীর কথা শুনে বললো,
-“আচ্ছা তাহলে তুমি নিয়ে যাও। আমি ওদের জন্য খাবার রেডি করি।”
বিথী মুচকি হেঁসে বললো,
-“আচ্ছা।”
-“আপু শুনো।”
রুমঝুম পিছু ডাকলো বিথীকে। বিথী পেছন ফিরে বললো,
-“হ্যাঁ বলো।”
রুমঝুম আহ্লাদে গদগদ হয়ে বললো,
-“আমরা দু’জন কাল রিসিপশনে একদম একরকম সাজবো বুঝেছো? তুমি পুনমকে খাইয়ে আমার ঘরে যাবা। বিছানার উপর একটা প্যাকেট আছে ওটা নিয়ে যাবা। বুঝছো?”
বিথী হেঁসে ফেললো। ধীর কন্ঠে বললো,
-“পাগলী একটা।”
বিথী চলে গেলে রুমঝুম একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। এই মেয়েটাকে একটু খুশি করতে পারলে তার ভীষণ রকম ভালো লাগে।
বিথী সিঁড়ির কাছাকাছি আসতেই কোত্থেকে ছুটে এলো অ্যামিলিয়া। বিথীর দিকে চেয়ে বললো,
-“হেই,কোথায় যাচ্ছো?”
বিথী হাসিমুখেই বললো,
-“নতুন বউকে খাবার দিতে।”
-“আমিও যাবো তোমার সাথে।”
-“এসো।”
বিথী আর অ্যামিলিয়া কথা বলতে বলতে পুনমের ঘরে ঢুকে পড়লো। পুরো ঘর অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে আছে। বিথী ফিসফিস করে বললো,
-“মেয়েটাকে এভাবে অন্ধকারে রেখে গেছে কে?” দাঁড়াও লাইট জ্বালিয়ে দেই।”
বিথী লাইট জ্বালতেই চোখে পড়লো বেলকনিতে দাঁড়িয়ে থাকা একটা মানব মূর্তির দিকে। বিছানায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পুনম পড়ে আছে। হয়তো ওকে তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্যেই এভাবে বেঁধেছে।
হুট করে মানুষ চলে আসবে বুঝতে পারেনি রাব্বি। বেলকনিতে গিয়ে লুকিয়ে পড়তে চাইলেও সেটা সম্ভব হয়নি। তার আগেই তাকে দেখে ফেলেছে মেয়ে দুটো। প্রথমবার এমন কাজ করতে আসায় নিজেও প্রচন্ড ভয় পেয়ে আছে । কাঁপা হাতে কোমরে গুজে রাখা রিভলবারটা বের করে আনলো। কিন্তু অতিরিক্ত ভয়ে সাইলেন্সার লাগাতে ভুলে গেলো।
বিপদ বুঝতে পেরেই বিথী অ্যামিলিয়াকে ধাক্কা মেরে দরজার দিকে সরিয়ে দিয়ে নিজেও চিৎকার করে দৌড় লাগালো। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। পরপর দুইটা গুলির শব্দে কেঁপে উঠলো পুরো মাহমুদ বাড়ি।
চলবে……..
(ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। গল্পটা প্রায় শেষের দিকে। স্কুল কলেজ খোলার আগেই শেষ করার ইচ্ছা আছে। আরেকটু ধৈর্য্য ধরুন।)