যখন দুজনে একা পর্ব-২

0
4311

#যখন_দুজনে_একা

(২য় পর্ব)

মাহি তার ছোট মামা মিনহাজ সাহেব র সঙ্গে বসে টিভি দেখছে লিভিং রুমে।
বাকি সব আত্মীয় স্বজন যার যার বাসায় চলে গেছে।
আসলে এই মুহূর্তে মাহির কি করা উচিত, আর কি বলা উচিত কোনটাই সে বুঝে উঠতে পারছে না।
ছোট মামাও তেমন কোন কথা খুঁজে পাচ্ছে না, তাই দেশের রাজনীতি আর চলমান অবস্থা নিয়ে হাবিজাবি কথা বলছে।

তারানা এসে তাদের কথা মাঝে ঢুকলো। মিনহাজ সাহেব কে উদ্দেশ্য করে বলেন, আই বড়পা আমাদের এই বাসায় থেকে যেতে বলেছে। তুমি বাসায় ফোন দিয়ে মেয়েদের বলে দাও আমরা এখানে থাকছি। আর ড্রাইভার কে চলে যেতে বলো।
মিনহাজ সাহেব, ফোন বের করে কথা বলা শুরু করলেন।

মাহি!
জ্বি মামি?
যাও তুমি তোমার ঘরে, অনেক রাত হয়েছে!
জ্বি মামি!
মামি, ও কি আমার ঘরে?
এটাই তো হ‌ওয়ার কথা মাহি! বলে মাহির দিকে তাকালেন , তারানা!
মামি খুব কি দরকার ছিল আজ রাতেই ওকে আমার ঘরে পাঠানোর?

তোমার মায়ের আদেশ মাহি!
আর জানোই তো বড়পা র কথা কেউ অমান্য করতে পারে না ।
তুমি নিজেই কি পেরেছো?

মাহি চুপ করে গেল!

তারানা, আমি গেস্ট রুমে গেলাম খুব টায়ার্ড লাগছে, তুমি কাউকে দিয়ে এক বোতল পানি পাঠাও । বলে মিনহাজ সাহেব চলে গেলেন।

মাহি যাও বাবা রুবা তোমার ঘরে অপেক্ষা করছে । আমি গেস্ট রুমে আছি কিছু লাগলে ডাক দিও।
আপনি কাউকে দিয়ে ভাইয়ার রুম থেকে মেডিসিনের বক্স টা পাঠাবেন? ও হয়তো আজ তার মেডিসিন গুলো খায়নি।

আমি ফরিদা কে দিয়ে পাঠাচ্ছি, তুমি রুমে যাও।
আমি এখানেই আছি মামি!

তারানা ফরিদা কে ডাকতে রান্না ঘরের দিকে চলে গেল।

মাহি বারান্দায় এসে দাঁড়ালো। পাঞ্জাবির পকেট থেকে সিগারেট এর প্যাকেট বের করে সেখান থেকে সিগারেট নিয়ে ধরিয়ে টান দিল।
আকাশের তারা গুলো কে আজ এত কাছে মনে হচ্ছে কেন! একটা সময় এখানে বসে দুই ভাই কত গল্প করতো!
ভাইয়া রে তুই আমার সঙ্গে এই কাজ টা কেন করলি? আমি কি অপরাধ করেছিলাম বল?
মাহির চোখ দিয়ে পানি পড়ছে!
আমাদের সুখের সংসার টা তুই এভাবে স্বার্থপরের মত ছেড়ে চলে যেতে পারলি ভাইয়া?

ছোটবেলায় আমর স্কুল ব্যাগ টা ভারী হলে তুই বয়ে নিয়ে যেতি, আমার কষ্ট হবে ভেবে। আর আজ তিনটা মানুষের জীবনের ভার, দ্বায়িত্বে র ভার, কষ্টের ভার আমার উপর দিয়ে এভাবে চলে গেলি ! স্বার্থপর কোথাকার!

আজ অনেক দিন পর কাঁদছে মাহি!
হঠাৎ মোবাইল বেজে উঠল । ধরার আগেই লাইন কেটে গেল!
আননোন নাম্বার!
ছোট ভাইজান , মামি ভাবির ওষুধের বাক্স ডা আপনারে দিতে ক‌ইছে । এই যে বাক্স! ফরিদা বুয়া এসে পাশে দাড়ালো।

বুয়া মা কি ঘুমিয়ে গেছে?

না, আম্মায় আপনারে একবার যাইতে ক‌ইছে উনার ঘরে!

তুমি ওষুধের বক্স টা খাওয়ার টেবিলে র উপর রেখে যাও । আর শোন পানির বোতল দিও একটা!

জে ভাইজান!

মাহি সিগারেট টা ফেলে ঘরের দিকে ঢুকতে যাবে আবারও মোবাইল টা বেজে উঠল ।
তাকিয়ে দেখে এবারো আননোন নাম্বার!

এত রাতে ! হসপিটাল থেকেই হবে হয়তো!
রিসিভ করে , হ্যালো বলল কিন্তু ও পাশে কোন আওয়াজ নেই!
মাহি আবার, হ্যালো হ্যালো করছে।

মাহি!

এবার মাহির বুকে ধাক্কার মত লাগলো!

নিঝুম!

বাসর রাতে ডিস্টার্ব করলাম তাই না?

মাহি এপাশে চুপ করে আছে ! কি বলবে ও! চারদিকে কোথাও কোন শব্দ নেই কিন্তু মাহির বুকের ভেতর পাথর ভাঙার আওয়াজ হচ্ছে যেন।

তোর নতুন ব‌উ মাইন্ড করছে না তো?

নিঝুম তুই এই সময়ে!

হ্যাঁ রে খুব অসময়ে ফোন দিয়ে বসলাম। খুব চেষ্টা করছি রে নিজেকে ফিরাবার! তুই বিশ্বাস কর ! পারলাম না ।
তোর বউ খুব সুন্দর করে সেজে বসে আছে নিশ্চয়ই। সুন্দরী রুবা কে রানীর মত লাগছে তাই না ?
রঙিন ফুলের খাটে রাজা রাণীর বাসর হচ্ছে । রাজা তার রাণীকে রাতভর ভায়োলিন বাজিয়ে শুনাবে ।

নিঝুম প্লীজ চুপ কর! তুই এসব বলার জন্য ফোন করেছিস ?

হ্যাঁ! আমার প্রিয় মানুষ টার জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছে তাকে উইস করব না ।

নিঝুম তুই ভালো করেই জানিস কেন হচ্ছে এসব, তারপরও তুই এত কিছু বলছিস । আমার বুঝি কষ্ট হয় না এসব শুনতে?

মাহি আমি খুব চেষ্টা করে যাচ্ছি কিন্তু পারছি না রে! তোকে মন থেকে বের করতে পারছি না, এই রাত টা কে ভুলে যেতে পারছি না ! ও পাশে কেঁদে যাচ্ছে নিঝুম! খুব ভালোবাসি যে তোকে খুব! কিভাবে পারব বলে দে তো আমাকে?
পারবি নিঝুম পারবি!
আমাকে ভালোবাসিস বলেই পারবি।
তুই আমার সব কষ্টের কথা জানিস না? তাহলে এভাবে ফোন দিয়ে আমার কষ্ট আর বাড়িয়ে দিস না। আমার দম বন্ধ হয়ে আসে রে ! আমার কষ্ট গুলো বলার কোন জায়গা যে নেই!
ফোন টা রাখ নিঝুম! প্লিজ!

মাহিই লাইন টা কেটে দিল! চোখের পানি কোন ভাবেই থামিয়ে রাখতে পারছে না সে! গুমোট কষ্টে ওর বুকের ভেতর টা ছারখার হয়ে যাচ্ছে।

ভাইজান! দরজায় ফরিদা আবার এসে দাঁড়িয়েছে!

আম্মা ডাকতাছে আপনারে!

বললাম তো আসছি, যাও!

ফরিদা তাড়াতাড়ি চলে গেল! সে সব সময়ই মাহিকে ভয় পায় যদিও মাহি খুব হাসিখুশি ছেলে। কেন জানি বাসার এই পরিবেশে আরও বেশি ভয় লাগে মাহিকে দেখলে তার।

মাহি ডাইনিং এর পাশে বেসিনে গিয়ে চোখে মুখে পানি দিল! মুখ মুছে মায়ের ঘরের দিকে রওনা হল!

মা আসব ?

আয় মাহি!

ঘরে ঢুকতে মাহি বলল, বাবা ঘুমিয়ে গেছে?

তোমার বাবা কি কখনো এত রাতে জেগে থাকে!

আজ বাবা একটা কথাও বলেনি আমার সাথে মা।

শিহাব যাওয়ার পর থেকে তোমার বাবা তো এমনই! বাদ দাও! দীর্ঘশ্বাস ফেললেন সাফিয়া বেগম।

ঐ চেয়ারটায় বসো মাহি।

মাহির মায়ের বিছানার পাশে রাখা চেয়ারে বসলো!

মাহি আমি জানি আমার কোন কথাই তুমি কখনও অমান্য করো না । আজ তোমার জীবনের এত বড় ডিসিশন আমি তোমার উপর চাপিয়ে দিলাম। কেন , সেই কথা আমাদের মাঝে আগেই হয়ে গেছে। তুমি খুব অভিমান করে আছো আমার উপর!
মা , আমি তোমার উপর রাগ , অভিমান কোনটাই করে নেই।

আমি জানি মাহি!
আমার অসহায়ত্ব টা তুমি ভালো করেই জানো বাবা!
তাই তোমার কাছে আমার অনুরোধ , রুবা কে একটা স্বাভাবিক জীবন তুমি দিবে! রুবাকে তোমার স্ত্রী র পূর্ণ অধিকার তুমি দিবে!
আমি জানি খুব তাড়াতাড়ি সব সম্ভব না। কিন্তু তুমি চেষ্টা করবে মাহি !

মা আমি চেষ্টা করব! আমি তোমাকে আগেই কথা দিয়েছি।

সাফিয়া বেগম বেড সাইড ড্রয়ার খুলে ছোট একটা গয়নার বক্স বের করলেন।

এখানে দুটো সোনার রুলী আছে। তুমি নিজে হাতে রুবা কে আজ পড়িয়ে দিবে মাহি!

মাহি মুখ তুলে মায়ের দিকে তাকাল!

হাতটা বাড়াও মাহি! ছেলের দিকে তাকিয়ে সাফিয়া বেগম বললেন।

কোন কথা না বলে মাহি মায়ের দিকে হাতটা বাড়িয়ে দিল!

যাও ঘরে যাও।

তুমি ঘুমাও মা। বলে মাহি মায়ের ঘর থেকে বের হয়ে আসছে।

হঠাৎ পেছন থেকে সাফিয়া বেগম ছেলে কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললেন!

মাহি হঠাৎ তার লৌহ মানবী মায়ের এই নরম রূপে অবাক হয়ে গেল! ঘুরে মাকে জড়িয়ে ধরলো।
আমাকে ক্ষমা করে দিস বাবা, আমি তোর জীবনটা কঠিন পরীক্ষার মাঝে ফেলে দিলাম।

মা ,মা প্লিজ তুমি এভাবে বললে আমি সাহস কোথা থেকে পাবো বলো?

তুমি চিন্তা করো না , আমি তোমার রুবা কে সুখে রাখার চেষ্টা করব। তোমার শিহাবের মত আমিও তোমার বাধ্য ছেলে তাই না মা?

আমি জানি মাহি। আমার মাহি কখনো আমাকে কষ্ট দিতে পারে না।

মাহি মা কে বিছানায় বসিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে মায়ের কোলে মাথা টা রাখলো । সাফিয়া বেগম তার ছোট ছেলের মাথায় হাত রাখলেন । তোর অনেক কষ্ট হচ্ছে বাবা?

তুমি চিন্তা করো না মা, আমাদের সংসার টা আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে দেখো। আমাকে একটু সময় দাও।

রুবা খুব দুঃখি একটা মেয়ে । জীবনে সুখ পাওয়ার আগেই ভাগ্য ওর কাছ থেকে সব কেড়ে নেয়। তুমি চেষ্টা করো রুবার বাকি জীবনটা যেন খুব সুখের হয়।

সাফিয়া বেগম চোখের পানি মুছলেন!

যাও মাহি ঘরে যাও।

তুমি তোমার সব মেডিসিন নিয়েছো মা?

হ্যাঁ।

তাহলে ঘুমিয়ে যাও মা।

যাচ্ছি।

মাহি মা কে শু‌ইয়ে দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে এলো। সে জানে আজ এ বাসায় কারো চোখে ঘুম আসবে না। আবারও একটা কষ্টের রাতের শুরু।

হাতের গয়নার বক্স টার দিকে তাকালো মাহি। আজ রাতে এই গয়না তার অন্য কাউকে পড়িয়ে দেয়ার কথা ছিল । কিন্তু আজ পড়বে অন্য কেউ। ভাগ্য তার সাথে কত বড় পরিহাস টা ই না করলো!

মেডিসিন বক্স, পানির বোতল আর গয়না টা নিয়ে যখন মাহি তার ঘরের সামনে দাড়ালো তখন রাত দুটো প্রায়।

তার নিজের ঘর , কিন্তু আজ ঢুকতে কত দ্বিধা হচ্ছে। কত সংকোচ কাজ করছে। রুবা আর সে আজ থেকে এই ঘরে থাকবে। এরকম কখনোই হ‌ওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু সব হঠাৎ এলোমেলো হয়ে গেল। সম্পর্ক বদলে গেল। আজ রুবা তার বিয়ে করা বউ। মাহি চোখ বন্ধ করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
তারপর ধীর পায়ে ঘরের ভেতর ঢুকলো।
ঘরে ঢুকে দেখে রুবা খাটের কর্নারে ঠাঁয় বসে আছে ।
মাহি কে দেখেই রুবা ঝট করে উঠে দাঁড়ালো। রুবার হাতের চুড়ির শব্দ গুলো বন্ধ রুমের ভেতরে মনে হলো প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসছে।

তুমি দাঁড়াতে গেলে কেন? বসো, বসো ।
সারাদিনে এই প্রথম রুবাকে কিছু বলল মাহি । ইনফেক্ট বিয়ের কথা উঠার পর থেকে রুবার সাথে মাহি কোন কথাই বলে নাই। এক বাসায় থাকার পরও রুবা কদাচিৎ মাহির সামনে আসতো তখন।

এই প্রথম মাহি রুবার দিকে ভালো করে তাকালো। কমলা রঙের শাড়িতে কি অপূর্ব লাগছে রুবাকে! ও তো সব সময়ই অসহ্য রকম সুন্দর ! ঘরের হালকা আলোতে কি মায়াবী লাগছে যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা কোন দেবীর ছবি। রুবা তাকানোর আগেই সে চোখ সরিয়ে নিল।

তোমার শরীর ঠিক আছে?

রুবা মুখে কোন উত্তর দিল না, শুধু মাথাটা নাড়ল।

রাতের মেডিসিন তো নাও নি?আসো আমি বের করে দিচ্ছি।

মাহি মেডিসিন গুলো রুবার হাতে দিলো । রুবা বোতল থেকে পানি নিয়ে ওষুধ গুলো খেলো।

মাহির হঠাৎ মনে হলো, কি অদ্ভুত বাসর রাত তার! স্ত্রী কে ওষুধ খাইয়ে দিচ্ছে এক গাদা । কি কথা বলা উচিত তার সে ভেবেও পাচ্ছে না।
যে মানুষ টাকে গত দু বছর ভাবি বলে ডেকে এসেছে আজ তাকে তার নাম ধরে ই ডাকতে গলা ধরে আসছে! কিভাবে সে এখান থেকে স্বামী স্ত্রীর স্বাভাবিক সম্পর্কের পথ পাড়ি দিবে!!
কিভাবে সে রুবাকে স্বাভাবিক একটা জীবন দিবে ! এই বন্ধ দরজার ভেতরে ওরা দুজন কিভাবে একে অপরের কাছে সহজ হবে !
আদো কি সম্ভব!
তার নিজের ভেতরে কত শত যুদ্ধ চলছে না জানি কি কষ্ট ভেতরে পুষে আছে রুবা নিজেও।
ভাইয়ার সৃত্মি গুলো ওকে কত ভাবে তাড়া করছে আজ।
আমি কি পরব ভাইয়ার জায়গা নিতে? আমি তো চাই ও না!
রুবা একবার আড় চোখে মাহিকে দেখলো। সারাদিন বেশ কয়েকবার দূর থেকে দেখেছে মাহিকে। একটা সময় সম্পর্ক টা যা ছিল আজ সেই সম্পর্ক সম্পূর্ণ অন্য রূপে দুজনের সামনে।
মাহি সোফার কোণায় বসে ওষুধের প্রেসক্রিপশন টা দেখছে। সাদা পাঞ্জাবি আর সেলোয়ারে মাহিকে সব সময়ই খুব সুন্দর লাগে। আজ সেরকম একটা সাদার উপর সাদা সুতোয় কাজ করা একটা পাঞ্জাবি পড়েছে। এই পাঞ্জাবি আগেও পড়তে দেখেছে রুবা। হাতাটা গুটিয়ে কুন‌ই পর্যন্ত রাখা। ও প্রায় সময়ই এটা করে। শার্টের হাতা‌ও ফোল্ড করে রাখে। রুবা চিন্তা করলো আচ্ছা সব ডাক্তাররাই কি এভাবে থাকে। মনে হয় না। মাহির স্টাইলটা আবার অন্য রকম। রুবা চুপচাপ বসে চিন্তা করছে। মাহির সঙ্গে কি কথা বলবে? এভাবেই চুপ করে বসে থাকবে কতক্ষন ওর পিঠে ব্যথা লাগছে আজ সারাদিন বসে থাকতে থাকতে।

মাহি হঠাৎ তাকিয়ে দেখে রুবা কাত হয়ে বসতে চাইছে।
তোমার কষ্ট হচ্ছে এভাবে !
না না আমি ঠিক আছি !
তোমার কাপড় এ ঘরে আনা হয়েছে?
ছোট মামি দিয়ে গেছে মাহি একটু ব্যস্ত গলায় বলল।
আমি বারান্দায় আছি তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও।

উঠতে গিয়ে মাহি র চোখ পড়ল মায়ের দেয়া চুড়ির বক্স টাতে।
বক্স টা থেকে বের করলো রুলী দুটো ।
তারপর উঠে গিয়ে বিছানায় রুবার পাশ ঘেঁষে বসল।

রুবার বুকটা কেঁপে উঠলো মাহি গা ঘেঁষে বসার সঙ্গে সঙ্গে।তার গা হাত পা ঝিমঝিম করতে শুরু করলো।

মা এটা তোমাকে দিতে বলেছে । বলেই রুবার হাত দুটো স্পর্শ করলো মাহি , কাছে টেনে নিয়ে হাতে রুলি দুটো পড়িয়ে দিল।

মা নিজে হাতে পড়িয়ে দিতে বলল আমাকে।
রুবা অবাক হয়ে মাহি কে দেখছে তার শরীর কাঁপছে।
মাহিও তাকিয়ে আছে রুবার মুখের দিকে!
এই প্রথম সরাসরি দুজন এভাবে চোখে চোখ রেখে তাকালো।

ওরা দুজন ছাড়াও এ ঘরে আরেক জন আছে যে ওদের দেখতে না পেলেও অনুভব করছে সব ।
রুবার গর্ভে থাকা শিহাবের অনাগত সন্তান ।

তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও বলেই, মাহি ছুটে বারান্দায় চলে গেল।
রুবা চুড়ি দুটোর দিকে তাকিয়ে চোখের পানি আটকাচ্ছে।

মাহিও তার চোখের পানি রুবাকে দেখাতে চাচ্ছে না ।

( চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here