#আপনিময়_তুমি💓[ An unbearable Crazy love]
#Season: 02
#Written_By_Åriyâñà_Jâbiñ_Mêhèr[Mêhèr]
#Part: 09…
ইহান কিছুক্ষণ ভাবুক ভঙ্গিতে থেকে বলল, ‘ওকে ডান। তবে আমার একটা শর্ত আছে।’
‘বাসার জন্য শর্ত কেন নিতে হবে?’
‘আহা! তাইলে একা একটা মেয়েকে এই রাতের বেলা কে বাসাটা দিবে?’
আনহা আর কথা বলল না। কথাটা সত্যি। তাই মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানাল।
‘তারমানে শর্তে রাজি?’
‘আর কোন উপায় আছে?’
ইহান কিছুটা ভাবুক ভঙ্গিতে বলল, ‘হিসেবে তো নেই। মানে আপনার শেষেও আমি, শুরুতেও আমি। মানে আপনি হচ্ছেন আমিময় আপনি।’
‘ওকে ওকে এখন বলো কী শর্ত?’
‘বেশি কিছু না। এক মিনিট…’
অতঃপর ইহান দাঁড়িয়ে নিজের পকেট থেকে প্লাস্টিক ব্যাগ বের করে৷ সেখানে আনহা কিছু ডকুমেন্টস দেখে৷ ইহান সেই কাগজগুলো থেকে একটা সাদা কাগজ বের করে আনহার সামনে টেবিলে রাখে। বলে, ‘এই কাগজে সাইন করে দিন। বাকিটা আমি বুঝে নেব?’
‘কীসের কাগজ এটা?’ ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে আনহা।
ইহান কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলে, ‘আপনাকে বিয়ের কাবিননামায় সাইন করতে বলছি না। খালি কাগজে সই করতে বলছি।’
‘এটা দিয়ে কী করবে তুমি?’
‘সেটা আমার প্রয়োজনের উপর ডিপেন্ডেবল’র। আপাতত এখন আর কিছু বলব না। আপনি সাইন করলে করেন, না করলে আমি চলি। বায়…’
ইহান উঠতে চায়। তখনি আনহা ভীত কণ্ঠে বলে, ‘এই না না আমি সই করে দিচ্ছি।’
অতঃপর ইহানের কাছ থেকে কাগজটা নিয়ে সই করে দেয়। প্রচন্ড বিরক্তি হয়ে মনে মনে বলল, ‘বাসা নিতে গেলে সাইন করতে হবে। যত্তসব।’
‘ডং দেখো! যেন জায়গা-জমি লিখে নিচ্ছি। মন চাচ্ছে না… নো নো… ইহান কুল, ইহান কুল মন যা চাইবে তার করানোর জন্যই তো কাগজে সই নেওয়া। এখন একটু ওয়েট কর।’ কথা গুলো ইহানও মনে মনে আওড়ে নিল।
‘এই নেও হয়ে গেছে।’
ইহানের দিকে কাগজটা এগিয়ে। ইহান বাঁ হাতে কাগজটা হাতে নিয়ে মুখে রুটি দিতে দিতে বলল, ‘গুড। আপনার খাওয়া শেষ এবার দু’জনের বিলটা দিয়ে আসুন।’
‘এই তোমার বিল আমি কেন দেব?’
‘আহা! কথা শোনো। তাহলে আমি রাতের বেলা আপনার জন্য বাসা কেন খুঁজব? খাওয়ার বিল এজেন্ট বিল মনে করে প্রে করে দিন। নাইলে বাসার কথা ভুল যান।’
‘ওকেকক…’ রেগে গিয়ে বলল আনহা। অতঃপর বিল দিতে চলে গেল। দোকানদারকে ২০০টাকা দিয়ে ইহানের কাছে ফিরে এল। ইহান বেশ সময় নিয়ে খাবারটা শেষ করল। অতঃপর আনহাকে বলল, ‘চলুন, এবার যাওয়া যাক।’
‘কোথায়?’
‘আপনার শ্বশুরবাড়ি।’
‘মানে?’
‘আরে দূর বাবা। বাসা নিতে।’
.
.
.
.
.
.
.
.
.
‘এটা কার বাসা? তোমার পরিচিত কারও?’
‘ঠিক জানিনা। তবে হলেও হতে পারে?’
‘তো এখন কী করব?’
‘ওয়েট আ মিনিট।’
সাত তলা একটি বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে ওরা। ইহানকে দেখে মনে হচ্ছে ও কিছুটা দ্বিধান্বিত। আদোও এই বাড়িতে আনহা রাখা ঠিক হবে কি না? কিন্তু এই মুহূর্তে এছাড়া আর কোনো উপায়ও দেখছে না৷
‘কী হলো?’
‘শুনুন বলছি। এই বাড়ির তিনতলার ১ম রুমে আপনি যাবেন। সেখানে সাবলেট ভাড়া দেওয়া হবে। আমি যেতে পারব না। আর আমার দ্বিতীয় শর্ত অনুযায়ী আপনি এটাও বলতে পারবেন না—এই বাড়ির খোঁজ আমি আপনাকে দিয়েছি।’
‘কিন্তু কেন?’
‘শর্ত ইজ শর্ত। মানা না মানা আপনার ব্যাপার। তবে মানলে প্রমিস করতে হবে। রাজি।’
দীর্ঘ শ্বাস ফেলল আনহা। বলল, ‘ঠিক আছে। তাই হবে বলব না।’
‘তাহলে এবার যান। যা বলেছি মনে রাখবেন। বলবেন সাবলেট নিতে এসেছেন।’
‘যদি জিজ্ঞেস করে এত রাতে কেন এসেছি?’
‘ওলেলে.. ছোট বাচ্চাটা কিচ্ছু বুঝে না। এইটুকুও কী ম্যানেজ করতে পারবেন না। আর ভাগ্য ভালো হলে, আপনাকে কোনো প্রশ্ন করবে না। বরং নিজেই সভ প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেবে। এবার যান। এগারোটার পর বাড়িওয়ালা এসে গেট বন্ধ করে দেবে।’
আনহা মাথা নাড়িয়ে বাড়ির দিকে পা বাড়াল। বাড়িতে ঢুকে দেখে ছেলেটা বাইরে এখনো দাঁড়িয়ে আছে। ওর চোখে চোখ পড়তে ইহান ওকে ভিতরে যাওয়ার ইশারা করে। আনহাও ভিতরে চলে যায়।
.
.
.
.
.
.
.
বেশ ভয় লাগছে আনহার। তবুও কিছু করার নেই। তাই মনে সাহস নিয়ে কলিং বেলটা টিপেই দিল। কিন্তু কেউ দরজা খুলল না। তাই আবার বেলে চাপ দিল। এবারেও এক অবস্থা। অতঃপর বেশ কয়েকবার চাপ দেওয়ার পর কেউ একটা দরজা খুলে বলল, ‘কী চাই?’
আনহা মানুষটির দিকে তাকিয়ে স্তম্ভিত হয়ে গেল। আপনাতেই মুখ ফুটে বেরিয়ে এল, ‘ও ও…অন্তি!’
‘আনহা তুই! ও মাই গড! আমি সত্যি দেখছি! সত্যি তুই! এই চিমটি কাট তো।’
আনহাও তাই করল। চিমটি কাটল অন্তিকে। অন্তি চিমটি খেয়ে ব্যথায় ‘আঃ’ করে উঠল। অতঃপর উচ্ছাস করে বলল, ‘তুই এতদিন পর। সেই যে এইচএসসি পরিক্ষার পর হাওয়া হলি প্রায় ৫বছরের কাছাকাছি হলো তোর কোনো খোঁজ-খবর নেই। কোথায় ছিলে এতদিন? আর আজ?’
‘সব কথা বাইরে বসে শুনবি। ভিতরে যেতে দিবি না না কি?’
‘ও সরি, সরি ভিতরে আয়।’
.
.
.
.
.
.
.
.
আনহা বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসে। তখন বিছানায় শুয়ে শুয়ে মোবাইল টিপতে টিপতে অন্তি বলে, ‘এবার বল তুই এখানে কী করে?’
‘আসলে আমি এখানে সাবলেট ভাড়া নিতে এসেছিলাম। কেউ একজন বলেছিল এই প্লাটে সাবলেট দেওয়া হবে তাই। কিন্তু এটা তোর বাসা জানা ছিল না।’
কথাটা মোবাইল থেকে চোখ তুলে আনহার দিকে তাকায়। চিন্তিত কণ্ঠে বলে, ‘এত রাতে?’
‘প্রয়োজন ছিল।’
‘সে ভালোই হয়েছে। আরও ভালো হয়েছে আজ আমি বাড়িতে একা বলে। নাহলে এত রাতে বাসা নিতে আসার জন্য নিশ্চয় উল্টো-পাল্টা ভাবত।’
‘স্বাভাবিক।’ নিস্তরঙ্গ গলায় বলল আনহা।
‘আচ্ছা। বাদ দে। এখন বল তুই এতদিন ছিলি কোথায়?’
‘পরে সময় করে একদিন বলব। এখন অনেক ক্লান্ত লাগছে। আর যদি বলিস বর্তমানের কথা। তাহলে বলব পূবালী বাংলা ইউনিভার্সিটিতে ইংলিশে মাস্টার্সে ভর্তি হয়েছি।’
‘হোয়াট আ সারপ্রাইজ ইয়ার! আমিও ঐ ইউনিভার্সিটিতেই আছি। তবে অর্থনীতিতে। সবে সবে ক্লাস শুরু হয়েছে। তাই যায় নি। তবে এখন থেকে রোজ যাব। তুই আছিস তো।’
বলেই আনহা জড়িয়ে ধরে। এতদিন পর দুজন-দুজনকে পেয়ে কিসের ঘুম কীসের কী সারারাত গল্প করেই কেটে গেছে।
সকালে আনহা ভার্সিটিতে একাই চলে যায়। এত করে ডাকল কিন্তু অন্তির ঘুম তো ভাঙল না তো ভাঙলই না। তাই বাধ্য হয়ে একা একা তৈরি হয়ে চলে যায়। ভার্সিটির ক্লাস শেষ করে বাইরে বেরিয়ে এলে বাইক নিয়ে ওর পথ রোধ করে ইহান।
‘একি তুমি!’
ইহান বাইক থেকে মুখ তুলে আনহার দিকে তাকায়। বাইকের চাবিটা খুলে ভাব নিয়ে বাইক থেকে নামে। আঙুলে চাবিটা ঘুরাতে ঘুরাতে বলে, ‘রণে-বনে, জলে-জঙ্গলে যেখানেই যাইবে, সেখানেই এই অধমকে পাইবেন।’
‘হুমম তো এখন পথের সামনে এসে দাঁড়িয়েছ কেন?’
‘আজব তো উপকার করেছি, তার প্রতিদান নেব না।’
‘এই মানুষ উপকার করে প্রতিদান নেওয়ার কথা বলে। আর কী হুমম? এজেন্ট হিসেবে দুইশো টাকা খাইয়েছি।’
‘আহা! যেন আমি একাই খেয়েছি। সে যাকগে শর্ত অনুযায়ী আপনাকে আমার কথা শুনতে হবে?’
‘এমন শর্ত কোথায় ছিল?’
‘ওই কাগজে…’
‘কোথায় ওটা তো খালি ছিল?’
‘কিন্তু এখন লেখা হয়েছে৷ আমি লিখেছি। শর্ত অনুযায়ী আপনি আমার সব কথা শুনবেন।’
‘পারব না।’ স্পষ্ট জবাব আনহার।
‘এই তো মানুষ বড়ই বেইমান। বিশেষ করে মেয়ে জাতটা। আরমান আলিফের ‘অপরাধী’ গান এমনি এমনি ২৭৬ মিলিয়ন ভিউ পেয়ে নাম্বার এক গান না। এই আপনার মতো মেয়েরা কথা দিয়ে মন ভাঙেন। তাই আমার মতো ছেলেরা সেই ক্ষোভ অপরাধী গান দিয়ে শুনে প্রকাশ করে।’
‘এই কী যা তা বকছ? এই কথা আর সেই কথা এক? আমি কী ছ্যাক দিছি না কি রে ভাই?’
‘ওখানে ছ্যাকের কথা বলা হয়নি। বলছে, মাইয়ারে মাইয়ারে রে তুই অপরাধী রে। কিন্তু অয়ন আরমান আলিফ নয়। তাই গান গাইবে না। প্রতিশোধ নিবে। এখন বলেন আপনি শুনবেন কি না?’
‘নাহ্।’
‘ওকে এরপর আমাকে বলতে পারবেন না।’
‘দেখা যাবে…’
‘এখনি দেখে নিন।’
বলেই আনহার সামনে নীল পাথরের লকেটটা ধরে। সঙ্গে সঙ্গে থমকে যায় আনহা। গলায় হাত দিতেই দেখে ওর লকেট নেই। ও বিস্ফোরিত কণ্ঠে বলে, ‘আমার লকেট তোমার কাছে কেন? দেও বলছি…’
‘সরি, দেওয়া যাবে না।’
‘দেখ…’
‘আচ্ছা আপনি শুধু নিজেকে দেখতে বলেন কেন? লজ্জা করেনা।’
‘এই বাজে কথা বন্ধ করো লকেট দেও।’
‘হা হা হা… এবার মজা বুঝুন। আমার কথা শুনবেন কি না?’
‘আমার লকেট তোমার কাছে কীভাবে?’
‘আরে বাবার পকেট ঝারতে পারলে আপনার লকেট পারব না।’
‘মানে?’
‘কাল আপনার গলা থেকে খুলে নিয়েছিলাম। আপনি টেরও পাননি।’
‘দেখো…’
‘আবার দেখতে হবে?’ বিরক্ত কণ্ঠে বলল। ‘ঠিক আছে দেখি কী দেখাবেন?’
‘দূর, লকেট দেও।’
‘দেব, অয়ন কী দেবে না বলেছে? আমি না চুরি-চামারি করি না। বাটপারির ব্যাপারটা আলাদা।’
‘অসভ্য, চোর বদজাত একটা ছেলে…’
‘টেরা হে, পার তেরা হে।’ বলেই ডেবিল স্মাইল…
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
[বাকিটা পরের পর্বে জানবেন]
ছোট হলেও রেগুলার আছি আমি। তাই একটু কৃপা করে ছোট ছোট পার্ট পড়ুন।