তোমাতে বিলীন পর্ব: ১৬

0
12398

তোমাতে বিলীন
লেখিকা—আমায়া নাফশিয়াত
#পর্ব—|| ১৬ ||

আধাঘন্টা পর চৌধুরী হাউজের গেট দিয়ে গাড়ি ভেতরে ঢুকলো।গাড়ি থামতেই আশিয়ান ঊদিতাকে কোলে নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে এলো।ঊদিতা সেন্সলেস হয়ে গেছে দেখে কেয়া আশিয়ানকে বললো ঊদিতাকে নিজের রুমে নিয়ে যেতে।আশিয়ান মাথা দুলিয়ে সম্মতি দিয়ে দ্রুত ঊদিতাকে নিয়ে বাসার ভেতর প্রবেশ করলো।অতঃপর সিড়ি বেয়ে সোজা নিজের রুমে চলে গেল সে।রুমে ঢুকেই ঊদিতাকে বিছানায় শুয়িয়ে দিলো।এনা আর কেয়া রুমে নক করে প্রবেশ করতেই আশিয়ান তাদের ওপর ঊদিতার দায়িত্ব দিয়ে নিজে ওয়াশরুমে চলে গেল কাপড় পাল্টে ফ্রেশ হয়ে নিতে।অনেক কসরত করে মুখের ওপর পানির ছিঁটে দিয়ে ঊদিতার জ্ঞান ফেরানো হলো।আশিয়ান ততক্ষণে ফ্রেশ হয়ে চলে এসেছে।

ঊদিতা চোখ পিটপিট করে চারপাশে তাকালো।অচেনা পরিবেশ দেখে লাফ মেরে ওঠে বসলো।খেয়াল করলো তার সামনে এনা আর কেয়া বসে আছে।এবং ঊদিতার হিজাব ও নেকাব খুলে দিয়েছে কেয়া।আশিয়ান ঊদিতার দায়িত্ব এনা ও কেয়ার ওপর ছেড়ে দিয়ে সে রুম থেকে প্রস্থান নিলো।কেয়া ঊদিতার সাথে নরম কন্ঠে কথা বলছে।এনাও কথা বলছে তার সাথে।মূলত তারা ঊদিতাকে বিভিন্ন ভাবে শান্তনা দিচ্ছে।ঊদিতা তার পরিবারের সাথে কথা বলতে চায় জানালে কেয়া তার ফোন দিয়ে ঊষার নাম্বারে কল লাগিয়ে ঊদিতার কাছে দিলো।ঊষা কল রিসিভ করতেই ঊদিতা তার সাথে কথা বলতে লাগলো।একে একে পরিবারের সবার সাথে কথা বললো সে।শাহরিয়ার বোনকে নানাভাবে মোটিভেট করলো।ঊদিতাও বর্তমানে শান্ত হয়ে আছে।পরিবারের সবার সাথে কথা বলে নিজেকে এখন অনেক হালকা মনে হচ্ছে তার।

এমনসময় রুমে মিসেস ইয়াসমিন ও আশিয়ানের মেয়ে কাজিন কয়েকজন রুমে প্রবেশ করলো।তারা এসেই ঊদিতার সাথে গল্প জুড়ে দিয়েছে।মিসেস ইয়াসমিন এসে ঊদিতার মাথায় হাত বুলিয়ে বেশ কয়েকটা উপদেশমূলক কথা বলে রুম থেকে চলে গেলেন।ঊদিতা অনেকটা ইজি হয়ে গেছে তাদের সবার সাথে আলাপ করতে গিয়ে।এখন আর তেমন একটা সংকোচ লাগছে না তার।

বেশ কিছুক্ষণ গল্প করার পর মিসেস তারানা আশিয়ানের রুমে আসার আগে একজন সার্ভেন্টকে বলে আসলেন ঊদিতার জন্য রাতের খাবার নিয়ে আসতে।সার্ভেন্ট ওনার পিছু পিছু খাবার নিয়ে রুমে প্রবেশ করলো।মিসেস তারানা ঊদিতাকে নিজহাতে খাবার খায়িয়ে দিলেন।ঊদিতা তাদের সবার আদর ভালোবাসা পেয়ে মুগ্ধ হয়ে গেছে।

“ওরা এত ভালো কেন?কত আন্তরিক ভাবে আমার সাথে কথা বলছেন যেন আমি তাদের কতকালের চেনা!” মনে মনে ভাবছে ঊদিতা।

ঊদিতাকে কেয়া বেশ কিছু কথা বললো আশিয়ানের ব্যাপারে।আশিয়ানের রাগ জেদ সম্পর্কে সব বললো।আশিয়ান কী পছন্দ করে বা কী কী অপছন্দ করে সব বুঝিয়ে দিলো তাকে কেয়া।কেয়াকে মাঝে মধ্যে কথার যোগান দিলো এনা।ঊদিতা মনযোগ দিতে তাদের সব কথা শুনলো।ঊদিতাকে একদম টিপটপ ভাবে রেডি করে ওরা সবাই চলে গেল রুমের বাইরে।বাইরে তুমুল বেগে সবাই আড্ডা দিচ্ছে।সেখানের হইহট্টগোল রুমের ভেতর এসে কানে বাজছে ঊদিতার।

💜💜💜

বিয়ের ভারী লেহেঙ্গা পড়ে বিছানার ওপর গুটিশুটি মেরে বসে আছে ঊদিতা।এনা ও কেয়া বলে গেছে আশিয়ানের জন্য অপেক্ষা করতে। ঊদিতা চারপাশে চোখ বুলিয়ে সারা রুম পর্যবেক্ষণ করছে। রুমটা বিশাল বড়।যেখান দিয়ে বারান্দায় যেতে হয় সেখানটায় সারা দেয়াল জুড়ে থাই গ্লাস লাগানো। তার দুপাশে বিশাল বড় আর লম্বা দুইটা পর্দা ঝুলছে।বাথরুমের সাদা রঙের দরজাটা পর্যন্ত অনেক আকর্ষনীয় আর ডিজাইনকৃত।

ছাদের ওপর বিশাল বড় এক ঝাড়বাতি সারা রুমে তার সাদা ও সোনালি রঙা দ্যুতি ছড়াচ্ছে।সারা রুম জুড়ে ধূসর, কালো আর সাদা কালারের ছড়াছড়ি।
এমনকি সব আসবাবপত্র থেকে শুরু করে রুমের দেয়াল, বিছানার চাদর, কাঁথা, বেড, কোলবালিশের কভার সবকিছুতে সাদা,কালো আর ধূসর এই তিন রঙের বিশেষত্ব।মনে হয় এই রঙগুলো রুমের মালিকের অনেক প্রিয় রঙ,,,ভাবছে সে।

রুমের প্রত্যেকটা আসবাবপত্রই সেই লেভেলের সুন্দর ও দামী দামী।বিছানাটা এত বড় যে এই বিছানায় অনায়াসে ৬-৭ জনের জায়গা হয়ে যাবে।আর বিছানার গদি ভীষণ নরম, বসলে মনে হয় যেন মাখনের মতো গদির ভেতর তলিয়ে গেল। রুমের একটা দেয়াল সারাটা জুড়ে ধূসর রঙা বুকশেলফ রাখা,সেখানে হরেক রকমের বই সাজিয়ে রাখা হয়েছে।বিছানার সামনাসামনি যে দেয়াল সেটাতে আশিয়ানের হাস্যোজ্জ্বল একটা ছবি বড় ফ্রেমে বাধাই করে রাখা।তাকালেই সবার আগে আশিয়ানের ছবিটা চোখে পড়ে।

রুচিসম্মত অনেকগুলো অ্যান্টিক ও দামী শোপিস যেখানেই ফাঁক পাওয়া গিয়েছে সেখানেই রাখা হয়েছে। রুমের চারপাশে এসি লাগানো আছে। দুই কোণায় বড় দুইটা টেবিল ফ্যান ও দেখা যাচ্ছে। বিশাল বড় ড্রেসিং টেবিল সারাটা জুড়ে অনেকগুলো ব্রান্ডেড পারফিউমের বোতল আর প্রায় শ’খানেকের মতো ব্রান্ডেড ওয়াচ সাজিয়ে রাখা হয়েছে। সাথে আছে বিভিন্ন ধরনের সানগ্লাস ও হেয়ার জেলের সমাহার। বডি লোশন,ফেস ক্রিম,গ্লিসারিন,অলিভ অয়েল,হেয়ার অয়েল কী যে নেই সেটা বুঝাই দুষ্কর।ঊদিতা তো কখনোই এসব তেমন একটা ব্যবহার করে না।যার কারণে তার নিজের ড্রেসিং টেবিল সবসময় ফাঁকাই পড়ে থাকে।

আশিয়ানের রুম অনেক সুন্দর করে সাজানো গোছানো আর ভীষণ পরিপাটি করে রাখা। একটা ছেলের রুম এত সুন্দর হতে পারে তা ধারণাতীত মনে হচ্ছে ঊদিতার কাছে।আশিয়ানের রুচি সম্পর্কে অলরেডি একটা স্পষ্ট ধারণা সৃষ্টি হয়ে গেছে তার।মানুষটা যে খুবই ব্যক্তিত্বসম্পন্ন তা বুঝতে আর কোনো অসুবিধা হচ্ছে না ঊদিতার।

বসে বসে চিন্তা করতে করতে ভীষণ বোর হয়ে গেল ঊদিতা। সারা শরীরে চুলকানি শুরু হয়ে গেছে তার। এতক্ষণ লাগে কারও রুমে আসতে ভাবতে পারছে না সে।এতো কেয়ারলেস কেন লোকটা?তার সদ্য বিবাহিত বউটা যে তার অপেক্ষায় সেই কখন থেকে বসে আছে তার সম্পর্কে কী কোনো ধারণাই নেই তার?আজব তো!সাড়ে এগারোটা বেজে গেছে। এখনও এশার নামাজটাও পড়তে পারে নি সে। সেই রাত ৯ টা থেকে টানা অপেক্ষা করছে বসে বসে। এরকম চুপচাপ বসে থাকার অভ্যাস কোনোকালেই ছিল না তার।শুধুমাত্র নতুন বউ দেখে নয়তো কখনই রুম থেকে বেরিয়ে যেতো আর নয়তো ঘুমিয়ে পড়তো সে।উফফ,,, অসহ্য লাগে।

আরো ৫ মিনিট অপেক্ষা করার পরও যখন আশিয়ান এলো না তখন ঊদিতা বিছানা ছেড়ে বসা থেকে ওঠে সাদা রঙের আলমারিটার কাছে গেলো। কেয়া বলে গেছে আলমারিতে ঊদিতা তার প্রয়োজনীয় সবকিছু পাবে।আলমারির একপাট খুলে ঊদিতা অনেকগুলো প্যাকেট করা কাপড় আর শাড়ীর মধ্যে থেকে বেছে বেছে একটা প্যাকেট হাতে নিলো। প্যাকেটটির মধ্যে নীল রঙের লং কামিজ, ঘেরওয়ালা প্লাজু আর বড় একটা ওড়না ছিলো।সাথে ম্যাচিং আন্ডারগার্মেন্টস ও ছিলো।

ঊদিতা সেগুলো নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল। যাবার আগে গয়নাগাটি সব খুলে ড্রেসিং টেবিলের ওপর রেখে গেছে। হিজাব বাঁধার ফলে চুল নিয়ে কোনো প্যাড়ায় পড়তে হয় নি ঊদিতার। আলেয়ার জন্য মনে মনে আফসোস হচ্ছে তার। বেচারি কিবা এখন বসে বসে চুলের জট ছাড়াচ্ছে। ভাবতেই হাসি পেয়ে গেল তার। মেকআপ সব মিটিয়ে হাতমুখ ও পা ভালো করে ধুয়ে ভারী লেহেঙ্গা পাল্টে নরমাল কাপড় গুলো পড়ে নিলো ঊদিতা। তারপর ওযু করে বের হলো সে।

কাবার্ড থেকে একটা জায়নামাজ নিয়ে সেটা রুমের এককোনায় বিছিয়ে নামাজ পড়তে শুরু করলো সে। প্রায় মিনিট পনেরো পর নামাজ শেষে বিছানায় গিয়ে বসলো ঊদিতা। আরও পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করার পর আশিয়ানের আশা ছেড়ে দিয়ে বিছানার একপাশে শুয়ে পড়লো সে। ওড়না খুলে বালিশের মাঝখানে রাখলো। তারপর চুল ছেড়ে দিয়ে বিয়ের ঘটনা স্মৃতিচারণ করতে করতে ঘুমের দেশে পাড়ি জমালো সে।

ঊদিতা ঘুমিয়ে যাওয়ার প্রায় বিশমিনিট পর আশিয়ানের আগমন ঘটলো রুমে। বাসায় আসার পরপরই সে শেরওয়ানি খুলে বাসায় পড়ার গেঞ্জি আর ফোর কোয়ার্টার টাউজার পড়ে নিয়েছিলো। এতসময় বন্ধুদের সাথে ছাদে বসে মদ খেয়ে খেয়ে আড্ডা দিচ্ছিলো। তাসকিন অনেক আগেই চলে গেছে আলেয়ার কাছে। আর আশিয়ান ইচ্ছে করে দেরী করছিলো,রুমে আসার ইচ্ছে ছিলো না তার।এলেই যে ঊদিতাকে নিজের কাছে পেতে মন চাইবে।কিন্তু তার বন্ধুরা জোরজবরদস্তি করে রুমে পাঠিয়ে দিয়েছে তাকে। বাধ্য হয়ে আসতে হয়েছে রুমে।

আজ মদ একটু বেশিই গেলা হয়ে গিয়েছে। একবোতল খেলে অবশ্য তার উপর কোনো এফেক্ট পড়ে না। কিন্তু আজ ২ বোতল খাওয়ার ফলে মাথাটা কেমন জানি চরকার মতো ঘুরছে।হালকা নেশা নেশা লাগছে। এই মুহুর্তে তার একটা কঠিন এবং অদ্ভুত ইচ্ছা পূরন করার কথা মনে আসছে। যা এরআগে কখনো তার মনে আসে নি। তার ইচ্ছা করছে ঊদিতাকে ধরে কষে একখান চুমু খেতে।

এসব আবোল তাবোল ভাবতে ভাবতে রুমের ভেতর প্রবেশ করলো সে।এলোমেলো ভাবে পা ফেলে বিছানার কাছে গিয়েই একপ্রকার থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো৷দুচোখ একবার ভালো করে ডললো,,, নাহ সত্যি সত্যিই একটা অপরুপ সুন্দরী মেয়ে বিছানার ওপর এলোমেলো হয়ে ঘুমিয়ে আছে। আশিয়ান কনফিউজড হয়ে গেছে ও কী সত্যি মেয়ে নাকি কোনো রাজ্যের পরী!ঘোর লেগে গেল আশিয়ানের চোখে। পলকহীন ভাবে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে সে।

হঠাৎ তার চোখ গেল মেয়েটার উন্মুক্ত ফর্সা পেট ও হাটুর দিকে। ঊদিতা ঘুমিয়ে গেলে ওর কাপড় চোপড়ের ঠিক থাকে না। বেঘোরে ঘুমায় তখন সে। মন্ত্র মুগ্ধের মতো তাকিয়ে আছে আশিয়ান ঊদিতার দিকে। কোনো দিক বিবেচনা না করেই সে ঊদিতার পাশে বসে তার উন্মুক্ত ফর্সা হাঁটুতে হাত বুলাতে লাগলো। এক অন্যরকম নেশা কাজ করছে তার মাঝে। হাত বুলাতে বুলাতে ঠোঁট জোড়া ছুয়িয়ে দিলো ওর হাঁটুর ভাজে। ঘুমের মধ্যেই হালকা কেঁপে ওঠলো ঊদিতা। সেখানে বেশ কয়েকবার চুমু দিয়ে ঊদিতার পেটের ওপর নিজের মুখটা নিয়ে আসলো আশিয়ান।হাত দিয়ে ঊদিতার পেট থেকে বাকি কাপড় সরিয়ে একদম উন্মুক্ত করে ফেললো সে।

সারাদিনের ক্লান্তি এসে ভর করায় ঊদিতা এখন মরার মতো ঘুমাচ্ছে। তাকে যে কেউ এমনতর স্পর্শ করছে তা সে বুঝতেই পারছে না।আশিয়ান মোহিত হয়ে ঊদিতার ধবধবে ফর্সা পেটের দিকে তাকিয়ে আছে। কোনোদিকে আর চিন্তা না করেই নরম তুলতুলে পেটের মধ্যে তার মুখটা ডুবিয়ে দিলো। এবার একটু জোরেই ঊদিতা কেঁপে ওঠলো।আশিয়ানের নিঃশ্বাস ঘন হয়ে গেলো।এই মুহূর্তে তার মনে ভয়ংকর ভয়ংকর সব ইচ্ছের উদয় হচ্ছে।ছোট ছোট চুমুতে ভরিয়ে ফেলছে সে ঊদিতার পেট,মাঝেমধ্যে আলতোভাবে কামড়ও দিচ্ছে।

এমন করায় ঊদিতার ঘুম কিছুটা হালকা হয়ে গেল। তবে বেশ কিছুক্ষণ নড়াচড়া করে আবার ঘুমের অতলে হারিয়ে গেল সে৷ঊদিতার নড়াচড়ার ফলে আশিয়ানের আদর করায় কিছুটা ব্যাঘাত ঘটলো।বিরক্তিতে চোখ কুঁচকে গেলো তার।পেট থেকে মুখ সরিয়ে এবার ঊদিতার মুখের দিকে এগিয়ে গেলো সে। ফর্সা গোলগাল মুখখানা ঝাড়বাতির আলোয় এক অন্যরকম নুরের মতো ঝলকাচ্ছে। দ্যুতি বিচ্ছুরিত হচ্ছে যেন তার গা থেকে। ফুলের ঘ্রাণ আর ঊদিতার শরীরের ঘ্রাণ সবমিলে এক অদ্ভুত সুন্দর স্মেল আশিয়ানের নাকে এসে বারবার ধাক্কা খাচ্ছে। পাগল হয়ে যাচ্ছে যেন আশিয়ান।

জীবনের প্রথম কোনো মেয়ের এতোটা কাছে সে। এক অন্যরকম শিহরণ খেলে যাচ্ছে তার শরীরের প্রত্যেকটা শিরায় শিরায়। ইলিয়ানার গালে আর কপালে চুমু খেয়েছে আশিয়ান। আর অবাঞ্চিতভাবে একবার লিপকিস করেছিলো,,, এই শেষ। আর কিছু হয়নি কখনো তাদের মাঝে। আশিয়ান যেমন এসব লুতুপুতু পছন্দ করতো না ইলিয়ানাও তার মতো সেইম।ইলিয়ানা কখনোই এত লুচু টাইপের ছিলো না। শুধু একটাই দোষ তার,, তা হলো সে প্রচন্ড রকমের লোভী।নয়তো অন্য কোনো দোষ ছিলো না তার মাঝে।

আশিয়ান একধ্যানে তাকিয়ে আছে ঊদিতার রক্তলাল টসটসা ঠোঁট জোড়ার পানে। আঙ্গুল দিয়ে আলতো করে স্লাইড করতে লাগলো সে ঊদিতার অধরোষ্ঠের ওপর৷তুলতুলে কমলার কোয়ার মতো নরম ঠোঁট দুটি তাকে খুব আকর্ষণ করছে।এবার সে ঊদিতার ওপর নিজের ভর ছেড়ে দিয়ে ওর ঠোঁটে নিজের ঠোঁট জোড়া পুরোপুরি ভাবে মিশিয়ে ফেললো।

মিনিট দুয়েক যাওয়ার পর ঊদিতার মনে হলো সে শ্বাস নিতে পারছে না। এর কারণ বুঝতে পারলো না সে৷ মনে হচ্ছে যেন তার শরীর পুরো অসার হয়ে গেছে। ঠাস করে চোখ খুলে ফেললো সে। কারো নাকের সাথে নিজের নাক একদম মিশে যেতে দেখে একদম ভরকে গেল ঊদিতা। লাফ দিয়ে উঠতে চাইলো কিন্তু পারলো না। আশিয়ান দুহাত দিয়ে একদম ঝাপটে ধরে রেখেছে তাকে। সে নিজে থেকে না ছাড়লে জীবনেও ছাড়া পাবে না ঊদিতা। তারপরও বৃথা চেষ্টা করতে লাগলো সে অনবরত।আশিয়ান তো ঊদিতাতে মত্ত। তার এখন অন্যকোনো দিকে মোটেও খেয়াল নেই।

বেশ কিছুক্ষণ পর ঊদিতা যখন কান্না করে দিবে ঠিক তখনই আশিয়ান ছাড়লো তাকে৷ ঊদিতা আশিয়ানের চেহারা দেখে কিছুটা শান্ত হয়ে গেল। তারপরও মনে অজানা ভয়ের কারণে ঠকঠক করে কাঁপছে সে রীতিমতো। জীবনের প্রথম কোনো পুরুষ তাকে এভাবে স্পর্শ করলো। তাও ওই পুরুষটা তার স্বামী।আশিয়ানের মুখ থেকে কেমন একটা বিশ্রী গন্ধ আসছে।ঊদিতা বুঝতে পারলো না এটা কীসের গন্ধ। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো;

ঊদিতা:-আ,,আপনি,,আমার ও,,ওপর শুয়ে আছেন,,ক,,কেন? (ভয়ে ভয়ে)

আশিয়ান ঊদিতার দিকে পূর্নদৃষ্টিতে তাকালো৷কোনো জবাব না দিয়ে আঙ্গুল দ্বারা ঊদিতার ঠোঁট আলতো ভাবে মুছে দিতে লাগলো সে।আশিয়ান নিজের মুখ আরেকটু কাছে আনতেই ওই বিশ্রী গন্ধটা প্রকটভাবে ঊদিতার নাকে এসে ধাক্কা মারলো৷ আবারও জিজ্ঞেস করলো;

ঊদিতা:-আ,,আপনি জবাব দিচ্ছেন না কেন?আর,, আপনার মুখে ওটা কীসের গন্ধ করছে?

আশিয়ান এবারও কোনো জবাব না দিয়ে শুধু ঊদিতার ঠোঁটে বৃদ্ধাঙ্গুলি চেপে ধরে মুখ দিয়ে শব্দ করে ফিসফিসিয়ে বললো;

আশিয়ান:-হুশশশ,,,কোনো কথা না।

আশিয়ানের মুখের ওই দুর্গন্ধের কারণে ঊদিতার গা গোলাচ্ছে৷ কিছু বলতে নিবে তখন আবারও আশিয়ান তার ঠোঁটে নিজের ঠোঁটজোড়া ডুবিয়ে দিয়ে আঁকড়ে ধরে ঘনঘন চুমু খেতে লাগলো। ঊদিতার শরীরের সকল লোম দাঁড়িয়ে গেছে এমন স্পর্শে। আশিয়ানকে বাঁধা দিতে গিয়ে মনে পড়লো কেয়ার বলা কথাগুলো।

কেয়া বলেছে আশিয়ান অনেক রাগী একটা ছেলে। তার কাজে কেউ বাঁধা দিলে সে ভীষণ রেগে যায়। আর আশিয়ান যদি তার সাথে কিছু করতে চায় তাহলে তাকে যেন বাঁধা না দেয় ঊদিতা।কারণ স্ত্রীকে স্পর্শ করার হক স্বামীর আছে।তবে ঊদিতা এ বিষয়ে পুরোপুরি অজ্ঞ।তাকে এ বিষয়ে কেউ কিছু তেমন একটা ভেঙে বুঝিয়েও বলেনি।আর বললেও সে ঠিকঠাক বুঝতে পারে নি। যার কারণে সে এখন ভয়ে থরথর করে কাঁপছে।

আশিয়ান প্রায় মিনিট দশেকের মতো ঊদিতার ঠোঁটে চুমু খেয়ে তারপর ক্ষান্ত দিলো। অতঃপর আস্তে করে ঊদিতার গলায় মুখ ডুবিয়ে দিয়ে শান্তিতে চোখ মুদলো। ঊদিতার চোখের ঘুম যেনো একদম হাওয়া হয়ে গেছে।আশিয়ানের দাঁড়ি ঊদিতার গলায় খোঁচা মারছে বারংবার।সেই সাথে এত ভারী একটা লোককে তার পাটকাঠির মতো শরীর কীভাবে সহ্য করবে সে ভাবতে পারছে না। কিছু বলতেও পারছে না তাকে,, যদি সে রেগে যায়!

অস্বস্তিতে সারা শরীর ঊদিতার হিম হয়ে গেছে। লোকটা তার গলার মধ্যে ঠোঁট দিয়ে অনবরত চুমু খাচ্ছে। মাঝেমধ্যে গলার চামড়াও কামড়ে দিচ্ছে।ঊদিতার কান্না করতে মন চাচ্ছে। এত অস্বস্তির মধ্যে জীবনেও কখনো পড়ে নি সে।কীভাবে সরাবে সে লোকটাকে?যে হারে সাপের মতো প্যাঁচিয়ে ধরে রেখেছে।সে খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে যে এখান থেকে ছোটার সাধ্যি তার নেই।

আশিয়ান ঊদিতার গলায় ঠোঁট বুলাতে বুলাতে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে গেল।অতিরিক্ত মদ গেলার ফলে চোখ খুলে রাখা দায় হয়ে গেল তার পক্ষে।আজকে নেশা বেশি হয়ে গেছে। মাথাটা ভীষণ ভার ভার লাগছে।অবশেষে এতবছর পর মহাআরামের ঘুম তার আঁখিদ্বয়ে ধরা দিলো৷ঊদিতাকে টাইট করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে গেলো সে। আশিয়ান ঘুমিয়ে যাওয়ার পর ঊদিতা অনেক চেষ্টা করলো আশিয়ানকে তার উপর থেকে সরানোর জন্য। কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হলো সে। অতঃপর কী আর করা,,, আশিয়ানকে একহাত দিয়ে আলতো ভাবে জড়িয়ে ধরে সেও ঘুমিয়ে পড়লাে।

🍁🍁🍁

পরেরদিন সকাল ৬ টায় ঊদিতার আগে আশিয়ানের ঘুম ভেঙে গেল। ঊদিতা গত দু রাত ঠিকমতো ঘুমাতে পারে নি।আর গতরাতেও আশিয়ানের জন্য অস্বস্তিতে ঘুমাতে পারেনি,,যার ফলে এখনও তার ঘুম ভাঙছে না।রাতে আশিয়ান ঘুমের ঘোরেই ঊদিতার গলা কামড়ে ও চুমু দিয়ে লাল লাল দাগ করে ফেলেছে। যেটাকে সহজ ভাষায় লাভ বাইট বলে আরকি।আশিয়ানের মাথার ভেতর চিনচিনে ব্যথা অনুভব হচ্ছে।রাতে লিমিটের অতিরিক্ত মদ খাওয়ার ফল এটা। কপালে দু আঙ্গুলের ডগা দিয়ে মৃদু ভাবে ঘষা দিলো সে। তারপর ভালো করে চোখ ডললো।

চোখ থেকে হাত সরাতেই তার নজর পড়লো ঊদিতার ঘুমন্ত চেহারার ওপর। এ মুহূর্তে তাকে বাচ্চাদের মতো নিষ্পাপ মনে হচ্ছে। কী ইনোসেন্ট ফেস মেয়েটার! একবার তাকালে শুধু দেখতেই ইচ্ছে করে।আশিয়ান বুকে হাত দিয়ে স্বীকার করতে বাধ্য সে এর আগে এত সুন্দর কোনো মেয়ে দেখে নি। যেমন ফর্সা তেমনি ভীষণ মায়াবি তার মুখের গড়ন।আর দেখতে অনেক নাদুসনুদুস টাইপের।বাচ্চাদের মতো। খালি আদর করতে ইচ্ছে করবে। ইলিয়ানা মোটেও ঊদিতার মতো এত আগুন সুন্দরী নয়। অন্যান্যদের মতো হলুদ ফর্সা আর ওর গড়নও কিছুটা মায়াবি আছে।তারপরও ওর প্রেমে পড়েছিলো আশিয়ান।আসলে প্রেমে পড়তে সৌন্দর্য ফ্যাক্ট না। এক্ষেত্রে মনটাই আসল৷কিন্তু আফসোস সে মানুষ চিনতে ভুল করেছে।

আশিয়ান ঘোরলাগা চোখে ঊদিতার দিকে তাকিয়ে আছে। এতটা আকর্ষণ কখনো কোনোকিছুতে অনুভব করে নি সে৷এই মেয়েতো পুরোই এট্রাকটের ডিব্বা। আশিয়ান আলতো হাতে ঊদিতার গাল স্লাইড করতে লাগলো। নরম তুলতুলে গালে হাত বুলাতে তার ভীষণ ভালো লাগছে।

আশিয়ানের এভাবে গালে হাত বুলানোর তোড়ে ঊদিতার ঘুম ভেঙে গেল। চোখ পিটপিট করে আশিয়ানের দিকে তাকালো সে। হা করে তাকিয়ে আছে সুদর্শন পুরুষটার দিকে ঊদিতা। এই সুদর্শন পুরুষটা যে তারই স্বামী তা ভাবতেই তার কাছে স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে।

আলেয়া ঊদিতাকে সবসময় বলতো যে বেশি সুন্দরী মার্কা মেয়েদের কপালে কালো,বেঁটে,কুৎসিত আর বয়স্ক পাত্র নাকি জুটে!ঊদিতার কপালেও সেরকম কিছু লেখা আছে বলে হান্ড্রেড পার্সেন্ট শিওর সে৷ ঊদিতার এখন আলেয়ার কাছ থেকে খুব জানতে ইচ্ছে করছে যে তার এমন ভবিষ্যৎবাণী কেন ফললো না তার জীবনে?কই তার ভাগ্যে তো ঠিকই সুদর্শন এবং ওয়েল স্টাবলিশ যুবক স্বামী হিসেবে জুটেছে।আহারে আফসোস হচ্ছে বেচারি আলেয়ার জন্য!

ঊদিতার যে ঘুম ভেঙে গেছে আশিয়ানের সেদিকে কোনো খেয়ালই নেই যেন৷ সে পমপমের মতো গালে হাত বুলাতে ব্যস্ত। ঊদিতা শান্ত স্বরে আশিয়ানকে সালাম দিলো। আশিয়ান কিছুটা ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল ঊদিতার সালাম দেয়া শুনে। সালামের জবাব দিতে ভুলে গেছে সে। তাকিয়ে আছে ঊদিতার চোখের দিকে। ঊদিতা এবারও শান্ত কন্ঠে বললো;

ঊদিতা:-কেউ সালাম দিলে তার জবাব দিতে হয়,, জানেন না বুঝি?

আশিয়ান এবার আমতা আমতা করে সালামের জবাব দিলো।ঊদিতা মৃদু হেসে বললো;

ঊদিতা:-সারারাত আমার উপরই ঘুমিয়েছেন আপনি,,,এখনও কী এভাবে থাকার ইচ্ছা আছে আপনার?(মোলায়েম কন্ঠে)

ঊদিতার শান্ত স্বরে কথা বলা শুনে আরেক দফা ক্রাশ খেলো আশিয়ান। মেয়েটার ঘুম ঘুম মোলায়েম কন্ঠের মধ্যে মনে হয় নেশাদ্রব্য মেশানো আছে। নইলে এই ভয়েস এতটা এট্রাক্ট কেন করছে আশিয়ানকে?মেয়েটার সবকিছুই মনোমুগ্ধকর।ওর এই কন্ঠ আজীবন শোনার জন্য প্রস্তুত যেন আশিয়ান।বহুত কষ্টে নিজেকে সামলে নিয়ে ঊদিতার ওপর থেকে সরে গিয়ে ওঠে বসলো সে।

আশিয়ান সরে যাওয়ায় ঊদিতাও ওঠে বসলো। তারপর চুলগুলো হাত খোঁপা বেঁধে ওড়না দিয়ে মাথা ঢাকলো৷আশিয়ান এখনো তাকিয়ে আছে তার দিকে।ঊদিতা ঘড়ির দিকে একপলক তাকিয়ে হতাশার নিশ্বাস ফেললো। আনমনে বললো;

ঊদিতা:-ইশশ,,নামাজটা মিস হয়ে গেল,,। এত ঘুম কীভাবে ঘুমালাম আমি!দুর!

ঊদিতা আস্তে করে বললেও আশিয়ান শুনতে পেল৷কিন্তু কিছু বললো না সে। আশিয়ান মনে মনে কিছুটা লজ্জিত হলো। না জানি মেয়েটার সাথে কী করেছে সে!প্রথমদিনই যা করেছে ওর সাথে,,,মেয়েটা কী ভাববে তাকে কে জানে?ভাবতেই দীর্ঘঃশ্বাস ফেললো আশিয়ান।নিজের মাথাটা টিপে ধরলো একহাতে,, ভীষণ ব্যথা করছে মাথাটা,, মনে হচ্ছে এক্ষুনি ঠাসস করে ফেটে যাবে।আশিয়ানের মাথায় হাত দেয়া দেখে ঊদিতা একটু ব্যস্ত হয়ে বললো;

ঊদিতা:-কী হয়েছে আপনার?মাথা ব্যথা করছে? (উদ্বেগ মেশানো কন্ঠে)

আশিয়ান:-হু,,,

আশিয়ানের সংক্ষেপে জবাব দেয়া দেখে ঊদিতা যা বুঝার বুঝে নিলো। বিছানা ছেড়ে ওঠে দাঁড়ালো সে। নিজেকে ভালো করে পরিপাটি করে মাথায় ওড়না প্যাঁচিয়ে রুম আশিয়ানকে বললো;

ঊদিতা:-আপনি একটু অপেক্ষা করুন,,, আমি আপনার জন্য চা নিয়ে আসছি,,।

এই বলে ঊদিতা রুম থেকে বেরিয়ে এলো। আশিয়ান অবাক হয়ে ঊদিতার যাওয়ার পানে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। মেয়েটা বিয়ের পরেরদিনই তার জন্য এত ব্যাকুল হয়ে চা বানাতে ছুটলো। আদৌ জানে কী সে রান্নাঘর কোথায়??
বেশি না ভেবে আশিয়ান বালিশে হেলান দিয়ে আধশোয়া হয়ে বসলো। চোখটা বন্ধ করে ফেললো মাথার যন্ত্রণায়।

ঊদিতা সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে এলো। বিশাল বড় ডাইনিং রুমে প্রবেশ করলো সে। এরআগে কখনো এত বড় ডাইনিং রুম টিভি ছাড়া অন্য কোথাও দেখে নি। সারা বাড়ি জুড়ে আভিজাত্যের ছাপ স্পষ্ট। প্রত্যেকটা আসবাবপত্র দামী আর ঝকঝকে তকতকে।চারপাশে চিকচিক করছে সবকিছু।ধুলোবালির একটা কণাও নেই কোথাও। বোঝাই যায় যে প্রত্যেকদিনই বেশ কয়েকবার করে এসব ঘষামাজা করা হয়৷

এখনো কেউ ঘুম থেকে ওঠে নি। সারা বাড়ি মনে হচ্ছে ফাঁকা আর একদম নিস্তব্ধ।কোথাও কোনো প্রাণের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। সবাই ঘুমিয়ে আছে। কাল অনেকরাত পর্যন্ত জেগে ছিলো সবাই আর সারাদিন ধরে এত খাটাখাটুনি আর বিয়ের জার্নিতে সবাই ক্লান্ত হয়ে এখনো বিছানায় পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে।

এতবেশি চিন্তাভাবনা না করে আন্দাজের জোরে রান্নাঘরে অবশেষে যেতে পারলো ঊদিতা।রান্নাঘরে ঢুকে বিস্মিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে।এত সুন্দর সাজানো গোছানো আর পরিপাটি সাথে এত বিশাল রান্নাঘর সে এর আগে কখনোই দেখে নি। সবকিছু কী সুন্দর করে ডেকোরেশন করা হয়েছে। ঊদিতার অনেক দিনের স্বপ্ন তার এরকম একটা বিরাট রান্নাঘর থাকবে যেখানে সে মনের মতো করে স্বাচ্ছন্দ্যে ও সাবলীলভাবে মন দিয়ে রান্না করবে।আহ,,,কী নেই রান্নাঘরটায়!রান্নার কাজে লাগে এমন সব কিছুই আছে সেখানে।

কোনোকিছুর কোনো কমতি নেই যেন।বড় বড় পাঁচটা ফ্রিজ একসাথে আছে রান্নাঘরে।প্রায় একমিনিট সবকিছু ঘুরে ঘুরে দেখলো ঊদিতা।তারপর যে কাজের জন্য এসেছিলো সে কাজে মনোনিবেশ করলো। রান্নাবান্নাতে এক্সপার্ট হওয়ার কারণে প্রয়োজনীয় জিনিস খুঁজে পেতে তেমন একটা বেগ পেতে হয়নি তার।তার মামীর কাছ থেকে শেখা একধরনের ভেষজ সুগন্ধি চা বানালো সে। এই চায়ের একটা বিশেষত্ব হলো গিয়ে মাথা ব্যথার জন্য এই চা পান করলে মাথা ব্যথা নিমিষেই কমে যায়। ওর মামী চায়ের এই রেসিপিটা শুধু ঊদিতাকেই শিখিয়েছেন,,,আর কাউকে কখনো শেখান নি। ঊদিতাকে তিনি বড্ড ভালোবাসেন কি না তাই!!

চায়ের সাথে চারটে মেকসিকান স্টাইলের ডিম, মেয়োনেজ,শষা,টমেটো আর পেঁয়াজ দিয়ে স্যান্ডউইচ বানিয়ে সাথে নিলো সে,,,দুটো আশিয়ানের জন্য আর দুটো নিজের জন্য।ঊদিতার অনেক খিদে পেয়েছে,, আপাতত এগুলো খেলে খিদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।আর আশিয়ানের যদি খিদে পায় তবে খাবে। এত সকাল কেউ ঘুম থেকে ওঠবে বলে মনে হয় না।কিছু রান্না করতে হলেও তো সময়ের দরকার। এতসময় সে অপেক্ষা করতে পারবে না।
স্যান্ডউইচের সাথে নিজের জন্য এককাপ কড়া লিকারের দুধ চাও নিলো।এখন চায়ের বড্ড দরকার,,, নইলে এখানেই ঘুমিয়ে পড়বে সে।রাতে ঠিকঠাক মতো ঘুম হয়নি তাই।একটা ট্রে তে করে নাশতা গুলো নিয়ে হেঁটে রুমের উদ্দেশ্যে চলে গেল ঊদিতা।

(সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাকে এতো সাপোর্ট ও এত ভালোবাসা দেয়ার জন্য।এভাবেই সবসময় গঠনমূলক কমেন্ট ও রিয়েক্ট করে পাশে থাকবেন সবাই আশা করছি।আলেয়া একটু বেশি হিংসা করে ঊদিতাকে তাই ঊদিতা আলেয়াকে হেনস্তা হতে দেখলে মজা পায় এতে দোষের কিছু নেই।আর আলেয়া এতটাই খারাপ নয় কিন্তু তবে তারিন আবার খারাপ আছে।বাদবাকিটা গল্প পড়লে জানতে পারবেন।আর আশিয়ানকে এখনও সাইজ করা বাকি।যাইহোক,,ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন সবাই।হ্যাপি রিডিং।)
..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here