তোমাতে বিলীন
লেখিকা—আমায়া নাফশিয়াত
পর্ব—|| ২২
ছাদের উপর কবুতরের থাকার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে।অনেক সুন্দর ছোট ছোট করে কবুতরগুলোর জন্য খুপরি বানানো হয়েছে।যদিও কবুতরকে এখন ছাড়া হবে না।সবকিছু শেষে ঊদিতা বাসায় ঢুকে রুমে চলে এলো।তার গরম লাগছে ভীষণ।রুমে ঢুকে দেখতে পেল আশিয়ান ঘুমিয়ে আছে।ঊদিতা আশিয়ানের পাশে গিয়ে বসে এসির বাতাস খেতে লাগলো।
পাশে কারও বসার অস্তিত্ব টের পেয়ে আশিয়ান সজাগ হয়ে গেল।ঘুরে তাকিয়ে ঊদিতাকে দেখতে পেল সে।ঊদিতাও তাকালো আশিয়ানের দিকে।দুজনের একসাথে চোখাচোখি হতেই ঊদিতা চোখ সরিয়ে ফেললো।দুপুরের ঘটনা মনে পড়ে গেছে তার।লজ্জায় তাকানোর সাহস পাচ্ছে না সে আশিয়ানের দিকে।
আশিয়ান খেয়াল করলো সেটা।শান্ত কন্ঠে বললো;
আশিয়ান:-শুনো,,
ঊদিতা:-জ্বী বলুন!
আশিয়ান:-কালকে রাতে আমার বিয়ে উপলক্ষে একটা পার্টি এরেন্জ করা হয়েছে।তো তোমাকে আর আমাকে কালকের এই পার্টিতে এটেন্ড করতে হবে।অনেক নামীদামী ব্যক্তিবর্গ থাকবেন সেখানে।তারা সবাই আমার ওয়াইফের সাথে পরিচিত হতে চায়।সবাই দেখতে চায় দি গ্রেট আশিয়ান তায়েফ চৌধুরী যে কিনা এত এত মেয়ের প্রপোজাল রিজেক্ট করেছে সে কোন মেয়ের মাঝে নিজেকে বিলীন করে দিয়েছে!জাতি জানতে চায় তা!
আশিয়ানের কথা শুনে এবার তার দিকে সরাসরি তাকালো ঊদিতা।মিষ্টিস্বরে খোঁচা মেরে বললো;
ঊদিতা:-একই কথা কিন্তু আমিও বলতে পারি!দি গ্রেটেস্ট ইশরাত আবিয়াত ঊদিতা এত এত বিয়ের প্রপোজাল পেয়ে সব রিজেক্ট করে তারপর আপনার মতো ছ্যাকাখোরকে কেন বিয়ে করলো!এটাও কিন্তু জাতি জানতে চাইবে।অহংকার করছি না।আমার যখন এগারো বছর বয়স তখন থেকেই বিয়ের প্রপোজাল আসা স্টার্ট হয়েছে।আমাকে যত মহিলারা দেখেছেন তাদের সবাই প্রায় আমাকে তাদের বাড়ির ছেলের সাথে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন।তবে আপনার মতো ছেলেকে আমি কেন বিয়ে করলাম জানা নেই আমার,,যার মনে কিনা এখনও অন্য মেয়ের বসবাস!আমার কোনো অস্তিত্বও নেই আপনার মনে।অথচ আমি আপনার বিবাহিত স্ত্রী!
ঊদিতার কথা শুনে আশিয়ান ত্যাড়ছা দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালো।তার কথা তাকেই ফিরিয়ে দিয়েছে ঊদিতা,, বাহ।ওর সাহস আছে বলতে হবে!আশিয়ানকে মুখের ওপর জবাব দিয়ে দিলো।অবশ্য তার বউ তো তার মতোই ঘাড়ত্যাড়াই হওয়ার কথা।তবে আশিয়ানেরটা প্রকাশ্য আর ঊদিতার ত্যাড়ামি অপ্রকাশিত।ঊদিতা তাকে তাচ্ছিল্য করে বিয়েতে যা যা গিফট পেয়েছিলো সেসব মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে খুলে দেখতে লাগলো।আশিয়ান শোয়া থেকে ওঠে ঊদিতার সামনে নিচে এসে বসলো।ঊদিতা আশিয়ানের দিকে একপলক তাকিয়ে আবারও নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।আশিয়ান ঊদিতার গাল চেপে ধরে নিজের দিকে ফেরালো।চিবিয়ে চিবিয়ে বললো;
আশিয়ান:-এত্তো সাহস!এই আশিয়ানকে এটিটিউট দেখাও তুমি?
ঊদিতা তার গাল আশিয়ানের হাত থেকে এক ঝটকা মেরে ছাড়িয়ে দিয়ে বললো;
ঊদিতা:-সাহস আমার প্রচুর আছে কিন্তু আমি তা দেখাতে পছন্দ করি না।আর আপনাকে কিছু বলতে আমার সাহসের প্রয়োজন নেই।এমনিতেই বলতে পারি।
আশিয়ান:-তাই?তোমাকে দেখলে তো মনে হয় ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানো না।অথচ তুমি ভেতরে ভেতরে ঠিকই ব্রিটিশের মতো চালাক!
ঊদিতা রহস্যময় হাসি দিয়ে বললো;
ঊদিতা:-অনেক ক্ষেত্রে বোকা হাঁদা হতে পারি তবে আমাকে এতটা বোকা ভাবলে নিজেও বোকা প্রমাণিত হবেন।যাইহোক,,কালকে রাতে কয়টার দিকে পার্টিতে যাবেন?
আশিয়ান:-রাত ৮ টার দিকে।এর আগে রেডি হয়ে যেও।
ঊদিতা:-ঠিক আছে তবে আমি আমার পর্দার কোনো খেলাপ করতে পারবো না আগেই বলে রাখলাম!
আশিয়ান:-ঠিক আছে।তোমার জন্য একটা ফুলহাতা লং গাউন ম্যাচিং হিজাব,নেকাব আর জুতা অনলাইনে অর্ডার করেছিলাম।ওটা পড়ে নিও।বোরকার কাজ হয়ে যাবে।এটা পড়লে আর বোরকা পড়তে হবে না।
ঊদিতা:-কখন দিয়েছে ড্রেসটা?আর আপনি অর্ডারই বা করলেন কখন?(জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে)
আশিয়ান:-তোমার ওইসব জিনিসপত্রের সাথে এনে দিয়ে গেছে।আর কখন অর্ডার করেছি সেটা তোমার জানার দরকার মনে করছি না।শুধু এটাই বলবো, টাইমলি রেডি থেকো।সময়ের একটুও যেন এদিক ওদিক না হয়।
ঊদিতা:-ওকে,,,।
আশিয়ান বসা থেকে দাঁড়িয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল ফ্রেশ হতে।ঊদিতা গিফটের প্যাকেট খুলতে খুলতে শহীদ হয়ে যাচ্ছে।এত গিফট দিতে কে বলেছিলো তাদের?আজাইরা পাবলিক!হাতে ব্যথা করছে রেপিং পেপার খুলতে খুলতে।এত প্যাঁচানোর কোনো প্রয়োজনই ছিলো না।
অর্ধেক গিফট খোলার পর আর খুলতে ইচ্ছে করছে না তার।বাকিগুলো পরে খুলবে বলে রেখে দিলো।আর যে গিফটগুলো খুলছে তার মধ্যে দুটো স্বর্নের হার,৫ জোড়া স্বর্নের ঝুমকো,একটা ডায়মন্ড নেকলেস,২০ টা সুতি ও গর্জিয়াস শাড়ি,১০ টা রেডি ও আনরেডি দামী থ্রি পিস,কয়েকটা দামী অ্যান্টিক শো পিস,বিয়ের স্বরণিকা ৫ টা,দামী ২ টা জায়নামাজ,দামী পাথরের তসবিহ,ডিজাইনার বোরকা ও আবায়া ২ টা,১২ পিস কফির মগ,১২ পিস প্লেট,একটা ব্লান্ডার মেশিনের সেট,ছোট ছোট ফেস টাওয়েলের সেট ২ টা,,,বাপরে এতসব দেখে ঊদিতার মাথা নষ্ট।বিয়েতে এত এত মানুষ এসেছিলো আর সবাই কিছু না কিছু গিফট নিয়ে এসেছিলো।গিফটগুলো নিয়ে আসার দায়িত্ব ছিলো মাহবুবের।সেই-ই সব আশিয়ানের রুমে এসে রেখে গেছিলো।
ঊদিতা সবকিছু সুন্দর ভাবে গুছিয়ে তুলে রাখলো।বেশিরভাগ জিনিস অন্য একটি আলমারিতে ঠাঁই পেল।শোপিস যেখানে ফাঁকা জায়গা পেয়েছে সেখানে রেখে দিয়েছে।গহনাগুলোও একটা বক্সে তুলে রেখে দিলো সে।আর থালা বাটি ব্লান্ডার সব সার্ভেন্টের সহায়তায় নিচে নিয়ে এসে বিশাল বড় দেয়াল শোকেসে সাজিয়ে রাখলো।ঊদিতার এসব দেখে মিসেস ইয়াসমিন হাসলেন শুধু কিছু বললেন না।
ঊদিতা মিসেস ইয়াসমিনের হাজার বারণ করা সত্ত্বেও রান্নাঘরে ঢুকে সবার জন্য চটপটি বানালো।আর ফুলকপির বড়া,পুডিং ও লেবুর শরবত বানিয়ে ফেলেছে সে ঝটপট।আশিয়ান সহ বেশ কয়েকজন নিচে এসেছেন সন্ধ্যার নাশতা করতে।ড্রয়িং রুমে বসেছে সবাই।বাসায় তামজিদ,তাসকিন,আলেয়া,মি.মোরশেদ বাদে বাকি সবাই আছেন।ঊদিতা খুবই সুন্দর ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে সবাইকে নাশতা পরিবেশন করলো।আশিয়ানের চটপটির বাটিতে শুকনো মরিচের গুড়া বেশি করে দিয়েছে সে।বড়ার সাথে নিজের হাতে বানানো,, বাসা থেকে নিয়ে আসা টমেটো ও চিলি সস দিয়েছে।সন্ধ্যার নাশতাটা খুবই উপভোগ্য ছিলো।এনা তো নাশতার ছবি তুলে ইন্সটাগ্রাম ও ফেসবুকে পোস্ট করে ফেলেছে,যার ক্যাপশন ছিলো,
“আমার মিষ্টি ভাবীর (আশিয়ান ভাইয়ার স্ত্রী) হাতে তৈরি সুস্বাদু মজাদার সন্ধ্যার নাশতা!”😋🤤
আশিয়ান নাশতা শেষে রুমে চলে গেল।ঊদিতা মিসেস ইয়াসমিন ও মিসেস তারানার সাথে গল্প করতে লাগে।
রাতে সবাই মিলে ডিনার করার পর মি. মোরশেদ বললেন সবার উদ্দেশ্যে;
মি.মোরশেদ:-কালকে সকাল ১১ টায় সবাই রেডি হয়ে থেকো।আশা’দের বাসায় আমাদের সপরিবারে দাওয়াত রয়েছে।শুক্রবার তো সবারই ছুটি আছে।যেতে কোনো প্রবলেম নেই।আর ফরহাদ পইপই করে বলে দিয়েছে সবাইকে নিয়ে যাওয়ার কথা।
আশিয়ান বলে উঠে;
আশিয়ান:-কিন্তু পাপা,,কালকে ঊদিতাকে নিয়ে আমার একটা পার্টিতে যেতে হবে।যদিও সেটা রাতে।তো ফরহাদ আঙ্কেলদের বাসায় মেবি আমরা যেতে পারবো না।তোমরাই বরং চলে যাও।
মি.মোরশেদ:-তোমাদের তো রাতেই পার্টিতে যেতে হবে তাই না?তো দিনের বেলায় আমাদের সাথে তাদের বাসায় যেতে তো কোনো অসুবিধা দেখছি না আমি!দেখো একসাথে দুটো দাওয়াতই গ্রহণ করা সম্ভব তোমাদের পক্ষে।ফরহাদের বাসা থেকেই রাতে তোমরা ওই পার্টিতে এটেন্ড করবে।তারপর পার্টি শেষে সোজা আমাদের বাসায় চলে আসবে।ব্যস হয়ে গেল।
কী আর করবে আশিয়ান বাবার মুখের ওপর তো আর না করা যায় না।অগত্যা তাকে রাজী হতেই হলো।তারিন আলেয়া ও ঊদিতাকে উদ্দেশ্য করে বললো;
তারিন:-আলেয়া আর ঊদিতা তোমরা দুজনেই নতুন বউ।তোমরা আগামীকাল শাড়ি পড়ে দাওয়াতে যাবে।আমারাও শাড়ি পড়ে যাবো।বুঝেছো?
আলেয়া সায় জানিয়ে বললো;
আলেয়া:-ঠিক আছে মেঝোভাবী!আমি পড়বো।কিন্তু ঊদিতা,,!ও তো মনে হয় না পড়বে বলে!(তাচ্ছিল্যের সহিত)
ঊদিতার হয়ে আশিয়ান জবাব দিলো;
আশিয়ান:-নাহ,,।ও শাড়ি পড়বে না।(দায়সারা ভাবে)
তারিন:-কেন পড়বে না শুনি?আমরা সবাই তো পড়বো তাহলে ও কেন পড়বে না?
আশিয়ান:-আমি মানা করেছি তাই।আমি চাই না আমি ব্যতিত তাকে কেউ দেখুক।আশা করি বুঝেছো!
তারিন খোঁচা মেরে বললো;
তারিন:-বাহ,,আশিয়ান!সেদিনও তো তুমি বিয়ে করতে চাইছিলে না,,আর এখন দেখা যায় তুমি দুদিনেই বউ পাগল হয়ে গেছো!এতোটা পরিবর্তন?হাউ?এত জলদি তুমি তোমার অতীত ভুলে গেলে?বাহ,,গ্রেট!
আশিয়ান তীক্ষ্ণ নজরে তারিনকে দেখলো একবার।তারপর কাটখোট্টা স্বরে জবাব দিলো;
আশিয়ান:-আর যাইহোক না কেন!বিয়ের পরও আমি অন্য কারও মতো এক্সের সাথে বেহায়ার মতো রসিয়ে রসিয়ে কথা বলি না।
আশিয়ানের কথা শুনে তারিনের মুখ চুপসে গেল।কারণ এক্সের সাথে রসিয়ে রসিয়ে সে-ই কথা বলেছিলো তবে সেটা আশিয়ান কীভাবে জানলো সেটাই আশ্চর্যের বিষয়!আশিয়ান আবারও বললো;
আশিয়ান:-সে এক্স,মানে সে আমার জন্য বাতিল।মানছি আমি তাকে ভালোবাসতাম।কিন্তু এখন আর বাসি না।আমার স্ত্রী আছে।তাকে নিয়েই আমার বাকি জীবন কাটবে।আমাদের মাঝে কখনো কোনো থার্ড পারসন আসবে না।আর রইলো বউ পাগলের কথা।আমি বউ পাগল নই।তবে আমি কখনো চাইবো না আমার স্ত্রীকে আমি ব্যতিত অন্য কেউ দেখুক।শাড়ি পড়লে ও আমার সামনে পড়বে,,অন্য কারও সামনে নয়।আমি আমার মায়ের পছন্দে বিয়ে করেছি ঠিকই তারমানে এই না যে আমি তাকে ওই কালসাপের জন্য এভোয়েড করবো!বাস্তবতা সম্পর্কে আমার যথেষ্ট জ্ঞান আছে।কোথাকার কোন মেয়ের জন্য আমি আমার নিজের বউকে কষ্ট দিতে পারি না।বিয়ের পর থেকে এই কদিন একবারও আমার ওই লোভী মেয়েটার কথা মনে হয় নি।কারণ এটাই বৈধ সম্পর্কের জোর।আশা করি আর কখনো আমাকে পিন্চ মেরে কথা বলবে না।এখনও সময় আছে মনমানসিকতা ঠিক করো।আর আমার কেয়া ভাবীর মতো হও।
এই বলে আশিয়ান নিজের রুমে গটগট শব্দে চলে গেল।ঊদিতা অবাক নয়নে এতক্ষণ আশিয়ানের দিকে তাকিয়ে ছিলো।মনে মনে একরাশ লজ্জার সৃষ্টি হলো তার।এদিকে তারিনের মুখটা ফাটা বেলুনের মতো চুপসে গেছে।কারণ এই আশিয়ান বহুত গভীর জলের মাছ।কীভাবে যে সবার সব গোপন কথা জেনে যায় সে তা আজ পর্যন্ত কেউ বলতে পারবে না।যে কাউকেই কথার প্যাঁচে ফেলে ইজিলি ব্ল্যাকমেইল করতে পারবে সে।
কেউ আর কোনো কথা বললো না।সবাই চুপচাপ নিজের রুমে চলে গেল।মিসেস ইয়াসমিন ঊদিতার মাথায় সস্নেহে হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন;
মিসেস ইয়াসমিন:-আমার ছেলে অনেক ভালো রে মা।অহংকার করছি না কিন্তু আমি চাই আমার ছেলের মতো সোনার টুকরো ছেলে যেন সবার ঘরে ঘরে জন্মায়।আমার ছেলেটা মনেপ্রাণে ওই মেয়েটাকে ভালোবাসতো মা।সবসময় আগলে রাখতো মেয়েটিকে।আরও কত মেয়ে তার জন্য পাগল ছিলো কিন্তু চোখ তুলেও কোনোদিন কারও দিকে তাকায় নি সে।এটাকেই বোধহয় প্রকৃত অর্থে ভালোবাসা বলে।
মিসেস ইয়াসমিন একটু থেমে আবারও বলতে লাগেন;
মিসেস ইয়াসমিন:-কিন্তু মেয়েটা আমার ছেলেকে ধোঁকা দিয়ে একদম পাথরে পরিনত করেছে।কষ্ট পেতে পেতে ডিপ্রেশনে চলে গেছিলো আমার ছেলেটা।নতুন করে মুভ অন করতে পারছিলো না।কতটা প্রগাঢ় ভাবে মেয়েটিকে ভালোবাসত সে।কষ্টে কষ্টে জর্জরিত হয়ে থাকতো সে প্রতিনিয়ত।মা হয়ে আমি তার জন্য কিছু করতে পারছিলাম না।অনেক অনেক কষ্ট স্বীকার করে আজ সে নিজেকে এই পর্যায়ে এনে দাঁড় করিয়েছে মা।নিজেকে মজবুতভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।আজ সে সফল।যেই টাকার জন্য ইলিয়ানা তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে সেই টাকা এখন তার কোম্পানির প্রায় প্রতিদিনের ইনকাম।হাজার হাজার লোক তার কোম্পানিতে কাজ করে।সব হয়েছে ঠিকই তারপরও সে মারাত্মকভাবে একাকিত্বে ভুগতো।তাই আমি আমার ছেলেকে কিছুটা ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে তোর সাথে ওর বিয়ে ঠিক করি।এতে ও যদি একটু ভালো থাকে।
ঊদিতা মনযোগ দিয়ে ওনার কথা শ্রবণ করছে।তিনি একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে আবারও বলে উঠেন;
মিসেস ইয়াসমিন:-কেন জানি মনে হয়েছিলো আমার ছেলের পাথুরে মনে একমাত্র তুইই ফুল ফোটাতে পারবি!তাই তো একটুও দেরী করি নি।এবং আমি সফল কারণ আমার ছেলের মনে অলরেডি তোর প্রভাব পড়ে গেছে।তোকে নিয়ে পসেসিভ হচ্ছে সে আস্তে আস্তে।একসময় তোকেও সে পাগলের মতো ভালোবাসতে শুরু করবে।আমার একটাই অনুরোধ মা,,,আমার ছেলেটাকে সবসময় এভাবে আগলে রাখিস নিজের ভালোবাসা দিয়ে।ওকে কখনো ভুল বুঝে দূরে সরে যাস না।হাসিখুশি ছেলেটা আমার গম্ভীর হয়ে গেছে পুরো।তবে আমার বিশ্বাস,, তাকে আগের মতো করে তুলতে একমাত্র তুইই পারবি মা।কথা দে,,কখনো আমার ছেলেকে ছেড়ে যাবি না!ওকে নিজের মতো সবসময় আগলে রাখবি?
ঊদিতা মিসেস ইয়াসমিনের দুহাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বললো;
ঊদিতা:-কথা দিলাম মা,,তোমার ছেলেকে আমি কখনো ছেড়ে যাবো না।নিজের সর্বস্ব দিয়ে ওনাকে আগলে রাখবো।মৃত্যু ব্যতিত ওনার থেকে আমাকে কেউ কখনো আলাদা করতে পারবে না।আমি ইলিয়ানার মতো না!খাঁটি ভালোবাসাকে কদর করতে জানি।ওনি একান্তই আমার,,অন্য কাউকে কখনো চোখ তুলেও তাকাতে দেবো না আমি।তুমি নিশ্চিন্তে থাকতে পারো মা।আমি তোমাকে কথা দিলাম।(আশ্বস্ত করে)
মিসেস ইয়াসমিন ঊদিতার কপালে চুমু খেয়ে বললেন;
মিসেস ইয়াসমিন:-দোয়া করি তোদের দুজনের মধ্যে যেন আল্লাহ অনেক অনেক মিল মহব্বত তৈরি করে দেন।আল্লাহ তোদের সুখে রাখুক এই কামনাই করি।
মিসেস ইয়াসমিন চলে গেলেন।ঊদিতাও রুমে চলে এলো।আশিয়ান বিছানায় শুয়ে শুয়ে টিভিতে একটা তামিল মুভি দেখছে।ঊদিতা সেসব খেয়াল না করে ওয়াশরুমে গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে এসে টাওয়েল দিয়ে হাতমুখ মুছতে লাগলো।ঊদিতা চিরুনি দিয়ে চুল যখন আঁচড়াতে লাগে তখন আশিয়ান টিভি দেখা বাদ দিয়ে তার দিকে এক অন্যরকম দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলো।ঊদিতা খেয়াল করলো সেটা কিন্তু কিছু বললো না।
আজ আশিয়ান মসজিদে গিয়ে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়েছে।সব সম্ভব হয়েছে ঊদিতার দ্বারা।আযান হয়ে গেলেই সে এসে তোরজোর শুরু করে তাকে মসজিদে যাওয়ার জন্য।আশিয়ানও মানা করে নি একবারের জন্য।সেও ঊদিতার কথা মতো বাধ্য ছেলে হয়ে নামাজ পড়তে মসজিদে গেছে।মিসেস ইয়াসমিন ও বাকিরা তো অবাক হয়ে গেছিলেন আশিয়ানের এমন পরিবর্তন দেখে।
ঊদিতা চুল খোঁপা বেঁধে বিছানায় এসে বসতেই আশিয়ান ঊদিতার কোলে মাথা রেখে টিভি দেখতে লাগে।ঊদিতা একবার টিভির দিকে তাকায় তো একবার আশিয়ানের দিকে তাকায়।ঊদিতা আশিয়ানের মাথায় আলতো ভাবে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।আশিয়ান মহা আরামে শুয়ে শুয়ে টিভিতে নিথিনের রোমান্টিক মুভি দেখছে।
হঠাৎ একটা কিসিং সিন চলে এলো।নায়ক খুবই রোমান্টিকভাবে নায়িকাকে আদর করছে।ঊদিতা সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে বিরবির করে বললো”নাউজুবিল্লাহ”!আশিয়ান হেসে ফেললো ঊদিতার কথা শুনে।ঊদিতার আবারও দুপুরের কথা মনে পড়ে গেল।শরীরের লোম খাঁড়া হয়ে গেছে তার লজ্জায়।আশিয়ান বহুত কষ্টে নিজেকে সামলে নিয়ে হাসি থামিয়ে ফেললো।তারপর ঊদিতার অস্বস্তি হচ্ছে বুঝতে পেরে টিভি অফ করে দিলো।ঊদিতার কোল থেকে মাথা তুলে তাকে শুয়ে পড়তে বললো সে।ঊদিতা আশিয়ানের কথা মতো শুয়ে পড়তেই সে টেবিল ল্যাম্প অফ করে নিজেও ঊদিতার বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে।ঊদিতা আশিয়ানকে একহাত দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে অপরহাত দিয়ে তার মাথায় হাত বোলাতে লাগলো।আশিয়ান পরম আবেশে চোখ বন্ধ করতেই ঊদিতা তার কপালে চুমু খেয়ে নিজেও চোখ বন্ধ করে ফেলে।
❤️❤️❤️
পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠে ঊদিতা রুমে ও আশিয়ান মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ে এলো।আশিয়ান বাসায় ফিরে দেখে ঊদিতা বসে বসে কোরআন তেলাওয়াত করছে।ঊদিতার সুমধুর কন্ঠ শুনে আশিয়ান পুরোই থমকে গেল।এত সুন্দর সুর করে কেউ তেলাওয়াত করতে পারে জানতো না সে।”এই মেয়েটার আর কত গুণ দেখতে পাবো আল্লাহ জানেন!”বিরবির করে বললো আশিয়ান।
আশিয়ান বিছানায় না গিয়ে ঊদিতার পাশে এসে বসলো তেলাওয়াত শোনার জন্য।ঊদিতা আশিয়ানের দিকে একপলক তাকিয়ে আবারও তেলাওয়াতে মনোনিবেশ করলো।আশিয়ান ধ্যান মেরে শুনে যাচ্ছে সুমধুর তেলাওয়াতটা।বসে বসে শুনতে শুনতে ঊদিতার কাঁধে মাথা রেখে তারপর আবারও শুনতে লাগে সে।এতে কোনো অসুবিধা হয় না ঊদিতার।সে একমনে তেলাওয়াত করেই যাচ্ছে।
প্রায় একঘন্টা পর তেলাওয়াত শেষে কোরআন বই বন্ধ করে আশিয়ানের দিকে তাকাতেই দেখতে পেল আশিয়ান তেলাওয়াত শুনতে শুনতেই ঘুমিয়ে গেছে।ঊদিতা আশিয়ানের মাথায় হাত বুলিয়ে মৃদু হাসলো।কোরআনটা সুন্দর করে পাশের রেকে রেখে দিয়ে আশিয়ানকে সুন্দর মতো নিজের আরও কাছে নিয়ে এলো ঊদিতা।ওর ঘাড়ে যাতে ব্যথা না করে সেজন্য তার মাথা নিজের বুকে নিয়ে এলো।আশিয়ান একটু নড়েচড়ে আবারও ঘুমিয়ে গেছে।ঊদিতা পরম ভালোবাসা নিয়ে আশিয়ানের কপালে গাঢ় করে একটা চুম্বন এঁকে দিলো।আশিয়ানকে বুকে নিয়ে এভাবেই সে দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে রইলো চুপচাপ।একটাসময় তার নিজেরও চোখ লেগে এলো।চারিদিকে আকাশ ফর্সা হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই।পাখির কিচিরমিচিরে মুখরিত পরিবেশ।আর রুমের মধ্যে একজোড়া কপোত-কপোতী একে অপরকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে ব্যস্ত।
কখন যে সকাল সাড়ে নয়টা বেজে গেছে বুঝতেই পারলো না কেউ।আশিয়ানের ঘুম ভেঙে গেছে।চোখ পিটপিট করে বোঝার চেষ্টা করলো সে এমুহূর্তে কোথায় আছে!ঊদিতার বুক থেকে মাথা ওঠাতেই তাকে দেখতে পেল আশিয়ান।মনে পড়লো ঊদিতার তেলাওয়াত শুনতে শুনতে তার কাঁধেই মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছিলো সে।কিন্তু ঊদিতার বুকে কীভাবে এলো বুঝতে পারলো না সে।ঊদিতার ঘুমন্ত মুখ খানা দেখতেই আশিয়ানের হৃদয়ে একঝাঁক প্রশান্তি কানাকানি করে গেল।মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে ঊদিতার দিকে।বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টে ঘুমাচ্ছে সে।ভ্রু জোড়াও কিঞ্চিৎ কুঁচকে আছে তার।খুবই মিষ্টি দেখাচ্ছে তাকে এখন।আশিয়ান ঊদিতার হিজাব ঠেলে বেরিয়ে আসা চুলগুলো কপালের উপর থেকে সরিয়ে দিলো।তারপর ঊদিতার কপালে ঠোঁট বোলালো সে।
এই স্পর্শেই ঊদিতার ঘুমটা ভেঙে গেল।চোখ মেলে দেখতে পেল আশিয়ান আর তার মধ্যে এক ইঞ্চি পরিমাণও দূরত্ব নেই।আশিয়ানের গালে হাত বুলিয়ে ঊদিতা তাকে সালাম দিলো।আশিয়ান সেদিনের মতো আবারও থতমত খেয়ে সালামের জবাব দিলো।আশিয়ান উঠে পড়লো বসা থেকে।আশিয়ান উঠে একহাত বাড়িয়ে দিলো ঊদিতার দিকে।ঊদিতা আশিয়ানের হাত ধরে বসা থেকে ওঠে পড়লো।ঊদিতা নামাজের হিজাব খুলে ওয়াশরুমে গিয়ে ৫ মিনিটে ফ্রেশ হয়ে এলো।ঊদিতা এসে আশিয়ানকে জিজ্ঞেস করলো যে সে সকালের নাশতায় কী খেতে চায়!আশিয়ান জবাব দিলো ডিমের ওমলেট,নুডুলস,সাথে ওই সুগন্ধি চা!
ঊদিতা মাথা নেড়ে সায় জানিয়ে নিচে চলে গেল।রান্নাঘরে গিয়ে আশিয়ানের কথামতো সেগুলো বানাতে লাগলো সে।১৫ মিনিটের মধ্যে সেসব বানিয়ে রুমে চলে এলো ঊদিতা।আজকে সবাই ৯ টা তেই সকালের নাশতা সেড়ে ফেলেছে।শুধু ঊদিতা আর আশিয়ানই এখনও কিছু খায় নি।ঊদিতা নিজের জন্য এককাপ দুধ চা আর রুটি ভাজি ও মাংস নিয়ে এলো।দুজনে রুমে বসেই সকালের নাশতা করে ফেললো।
বেলা সাড়ে দশটায় আশিয়ানের আনা ড্রেস পড়ে ঊদিতা পুরোপুরি রেডি হয়ে বিছানায় বসে রইলো।আজ ঊদিতা ওল্ড রোজ কালারের একটা ফুলহাতা গর্জিয়াস স্টোনের কারুকাজ করা গাউন পড়েছে।যদিও তা আরামদায়ক।সাথে পাথরের কারুকাজ করা সেইম কালার হিজাব ও নেকাব।এবং একই রঙের নরমাল জুতো পড়েছে সে।মিসেস ইয়াসমিনের কথা মতো একটা ডায়মন্ডের নেকলেস ও কানের দুল,নোজপিন,স্বর্নের চিকন কয়েক জোড়া চুড়ি ও আংটি পড়েছে সে।যেহেতু নতুন বউ।
আশিয়ান ধীরে সুস্থে একটা ওল্ড রোজ কালারের শার্ট ও এর ওপর কালো কোর্ট পরিধান করেছে।সাথে কালো প্যান্ট,পায়ে কালো শু’জ,হাতে কালো ঘড়ি ও চোখে কালো সানগ্লাস পড়েছে।চুলগুলো জেল দিয়ে সেট করেছে সাথে একগাদা পারফিউম তো আছেই।ঊদিতা বসে বসে শুধু আশিয়ানের কীর্তিকলাপই দেখে যাচ্ছে।কারণ আশিয়ানের থেকে অনেক কম সময়ে ঊদিতা তৈরি হয়ে বসে আছে।সে ভেবে পাচ্ছে না ছেলে মানুষের রেডি হতে আবার এত টাইম লাগবে কেন?ওরা তো মেয়েদের থেকে কম সময়ে রেডি হবে!
ঊদিতার চিন্তাভাবনার অবসান ঘটিয়ে আশিয়ান পুরোপুরি তৈরি হয়ে ঊদিতার সামনে এসে দাঁড়িয়ে হাত বাড়ালো।ঊদিতা আশিয়ানের দিকে একবার ও তার হাতের দিকে একবার তাকিয়ে তারপর নিজে হাত বাড়িয়ে আশিয়ানের হাত ধরলো।তারপর ঊদিতাকে নিয়ে আশিয়ান রুম থেকে বেরিয়ে রুমে কম্বিনেশন লক লাগিয়ে তারপর নিচে নেমে এলো।আস্তে আস্তে সবাই তৈরি হয়ে নিচে নেমে এলো।ঊদিতা আর এনা বাদে বাকিরা শাড়ি পড়েছেন।বাকিরা মার্জিত ভাবে পড়লেও আলেয়া আর তারিন মডেলের মতো স্টাইল করে শাড়ি পড়েছে।দুজনেরই কালার করা চুল ছেড়ে রাখা,শাড়ির সাথে সেই লেভেলের গর্জিয়াস মেকআপ লুক নিয়েছে ওরা।যদিও দুজনকে হুরপরীর মতো সুন্দরী লাগছে দেখতে।
আশিয়ান ঊদিতার হাত ধরে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলো।আশিয়ান তার নিজের গাড়ি নিয়ে যাবে।গ্যারেজ থেকে নিজের কালো রঙের বিএমডব্লিউ গাড়িটি বের করে নিয়ে এলো আশিয়ান।সে ড্রাইভিং সিটে বসে ঊদিতাকে নিজের পাশের সিটে বসিয়ে নিজে সিটবেল্ট বেঁধে দিলো।আর পিছনে তাশজিদ আর এনা বসেছে।দুইটাই হুদা ঝগড়া করছে।পরে আশিয়ানের ধমক খেয়ে ওরা থামলো।
আশিয়ান গাড়ি স্টার্ট দিয়ে বাসার গেটের বাইরে বেরিয়ে এসে ধীরে সুস্থে ড্রাইভ করতে লাগলো।মাঝেমধ্যে আরচোখে ঊদিতার দিকে তাকাচ্ছে সে।ঊদিতা সেটা খুব ভালোই বুঝতে পারছে।
প্রায় ৪৫ মিনিট পর আশা’দের বাসার গেটের ভেতর আশিয়ান গাড়ি ঢুকালো।ওদের বাসায় আসতে একটু দেরীই হয়েছে জ্যামের কারণে।নয়তো আরও আগেই আসতে পারতো।আশা বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।ঊদিতা আর আশিয়ান গাড়ি থেকে নামতেই ছুটে এলো সে।আশিয়ানকে জড়িয়ে ধরতে আসতেই ঊদিতা আশিয়ানের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে আশিয়ানের বদলে সে কোলাকুলি করতে লাগলো।তাশজিদ আর এনা মুখ টিপে হাসছে।আশিয়ান বহু কষ্টে নিজেকে গম্ভীর রাখলো।কারণ ঊদিতার কান্ড দেখে তার মাটিতে গড়াগড়ি দিয়ে হাসতে ইচ্ছে করছে।
ঊদিতা আশিয়ানের কাছেই ঘেঁষতে দিলো না আশাকে।বেচারি আশা মনে মনে ঊদিতার পিন্ডি চটকাচ্ছে।বাকি দুটো গাড়ি এসে ঢুকতেই ফরহাদ ও তার স্ত্রী বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এলেন অতিথিদেরকে অভ্যর্থনা জানাতে।আশার মাকে দেখে ঊদিতা অবাক।মহিলা যদি এই বয়সেই এত স্টাইলিশ হয়ে থাকে তাহলে তার মেয়ে কী হবে বোঝাই যায়।
ফরহাদ এসে বন্ধুর সাথে কোলাকুলি করতে ব্যস্ত।আশার মা আলো বাকিদের সাথে খুবই আন্তরিক ভঙ্গিতে কথা বলছেন।তবে ঊদিতার দিকে কেমন করে যেন তাকাচ্ছেন উনি।চোখে মুখে কিছুটা বিরক্তির আভা ফুটে ওঠলো ওনার।আশা তো আশিয়ানের সাথে চিপকানোর সুযোগ খুঁজছে কিন্তু ঊদিতার জন্য পারছে না।ফরহাদ ও আলো সবাইকে সাথে নিয়ে বাসার ভেতর প্রবেশ করলেন।আশিয়ান ঊদিতার হাত শক্ত করে ধরে বাসার ভেতর প্রবেশ করলো তাদের পিছু পিছু।
#চলবে