অচেনা তুমি পর্বঃ৩৮

0
1422

#অচেনা_তুমি
#লেখিকাঃমহিমা_হাছনাত_মাহি
#পর্বঃ৩৮

কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে এসে ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়ে কুবরা। কিছুক্ষন পর বাড়ির কলিং বেল বেজে উঠাতে চট করে ঝিমিয়ে আসা আধঘুম টা ভেঙে গেলো তার। ড্রয়িংরুম থেকে সাদাফের মায়ের উৎসাহিত কন্ঠ শুনে কৌতুহল বশত পর্দার আড়াল থেকে গিয়ে দেখতে যায় কে এসেছে।

কুবরা দেখে নিজের চোখে বিশ্বাসই করতে পারছে না যে নাদিম এসেছে। ফরমাল ড্রেস আপেই একেবারে চলে এসেছে। এর মানে অফিস থেকে ডিরেক্ট এখানেই চলে এসেছে। খুশি তে যেন তার এখনই নাচতে ইচ্ছে করছে। ইশশ কতোদিন পর দেখছে সে তার প্রানপ্রিয় মানুষটিকে। কিন্তু হঠাত করেই এই খুশির রেখার হাসিটা যেন আবার মিইয়ে গেলো।

[[ ধ্যাত….. আমার কেন এতো খুশি লাগছে!! আমার সাথে দেখা করতে এসেছে নাকি আমার জন্যই এসেছে যে এতো লাফাচ্ছি?? একদম সামনেই যাবো না। থাকুক নিজের মতো নিজে। কথা ও বলবো না, সামনে ও যাবো না ]] { মনে মনে বলে কুবরা }

কাল থেকে কুবরা নাদিমের না মেসেজের রিপ্লে দিচ্ছে না কল রিসিভ করছে। চারদিক থেকে হঠাত সব যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ার মানেই বুঝে উঠতে পারছে না সে। বেচারা নাদিম এই চিন্তায় অফিসে মিটিংয়ে এটেন্ড করেছে ঠিকি কিন্তু মন ছিলো শুধু এই বাড়িতে। তাইতো সোজা অফিস থেকে আগে কুবরার সাথে দেখা করার জন্য এখানে চলে এসেছে।

নাদিম এসেছে অনেক্ষন হলো। সাদাফ আর শুভ্রার মা নাদিমের সাথে বসে কথা বলছে। শুভ্রা নাস্তা বানাচ্ছে। কিন্তু নাদিমের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি একমাত্র কুবরার রোমের দরজার দিকে। দরজা খুলাই আছে তবে পর্দা দেওয়ার কারনে ভেতরে কিছু দেখাও যাচ্ছে না। কথা বলতে বলতে কিছুক্ষন পর সাদাফ চলে আসে। দুই বন্ধু কোশল বিনিময় করে সাদাফ ফ্রেশ হতে চলে যায়।

সাদাফ ফ্রেশ হয়ে আসতে আসতে মাগরিব হয়ে যায়। ততোক্ষনে শুভ্রা ও সন্ধ্যার জন্য নাস্তা তৈরি করে সকলের জন্য। সাদাফ নাদিমের সাথে কথা বলতে আসায় দেখে সে এখনো কুবরার ঘরে উকি দিতে ব্যাস্ত।

সাদাফঃ কি রে নাদিম্মা আসছি থেকে দেখছি ওইদিকে উকি দিচ্ছিস। সমস্যা কি বল তো দুজনের?? কিছু হয়েছে??

নাদিমঃ ভাই তোর এই বোন বেশি ট্যারা। কখন কি জন্য হুট করে রাগ করে উল্টে থাকে বুঝি না। আমি নিশ্চিত কোনো কারনে রেগে আছে বলেই কাল থেকে সব যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু আমি তো কিছুই করি নাই ভাই।

সাদাফঃ দেখ আমি কিন্তু বলেছি ও এখনো খুব ছোট। তুই আগে যা করেছিস তা করেছিস। কিন্তু ভাই আমার এই ছোট্ট বোনটার সাথেও খেলা করিস না।

নাদিমঃ ভাই আমি রিয়েলি কুবরাকে লাভ করি। বিশ্বাস কর আমি একদম পালটে গেছি। আগের মতো নেই। আমি ভাই এখন কোনো মেয়ের দিকেই চোখ তুলে তাকাই ই না। শুধুমাত্র এই তোর বোনটি ছাড়া। ভাই কি করবো বল না। দেখ আমি এতোক্ষন হলো আসলাম ও কি খবর পাই নি? কেন কাল রাত থেকে এমন করছে বুঝছি না। ( চিন্তিত ভঙ্গিতে)

সাদাফঃ আমি বলছি কি আর দেরি করিস না। প্রপোজ টা করে ফেল। দেখ ও তো সিউর না যে তুই সত্যিই ওকে লাভ করিস। দেখ না হয় হয়ত তোকে নিয়ে ইনসিকিউর না।

সাদাফের কথায় নাদিম আরো চিন্তিত হয়ে পড়ে। তাহলে কুবরা তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছে?

দুই বন্ধু আরো কিছুক্ষণ কথা বলার পরে কুবরার আসার নাম গন্ধ নেই।

শুভ্রার মাঃ এই কুবরা… আয় না নাস্তা করে যা।

ভেতর দিয়ে কুবরা ডাক পাড়ে যে ” না আম্মু খেতে ইচ্ছে করছে না আমার অনেক পড়া “।

কুবরার কথা শুনে ড্রইংরুমে উপস্থিত সকলেই একে অপরের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয় বারবার।

শুভ্রার মাঃ বলছি যে ভাবি….. আমি ঠিল শুনলাম তো??

সাদাফের মাঃ আমিও তো তেমনই শুনলাম নাজু। ( অবাক হয়ে)

শুভ্রার মাঃ যে মেয়ে ১০ মিনিট পড়তে বসলে ২০ বার উঠে খিদে লেগেছে খিদে লেগেছে বলে বলে সে মেয়ে নাকি বলছে নাস্তা করবে না, পড়া আছে!!

সাদাফঃ কিন্তু আমি তো ওকে কাল রাত পড়াইও নি। শুভি কাল কি কোনো টেস্ট আছে?

শুভ্রাঃ উহু না তো আজ তো মাত্র দুটো ক্লাস হয়েছে। পড়াও তেমন দেননি। ( ঠোঁট উলটে)

নাদিম এবার বেশ বুঝতে পেরেছে যে কুবরা যেন তার সামনে না আসে তাই ইচ্ছে করেই সামনে আসছে না। যন্ত্রণায় ইচ্ছে করছে সটান তার রুমে গিয়ে জিজ্ঞেস করতে সমস্যা কি। কিন্তু সামনে বড়রা উপস্থিত থাকায় মানসম্মান বজায় রেখে চুপচাপ ই বসে রয় নাদিম।

প্রায় দু ঘন্টা হয়ে গেলো কুবরার রুম থেকে বের হওয়ার নাম নিশ্বাস নেই। রীতিমতো বিরক্তি আর রাগ হচ্ছে তার। ৯ টা বাজে প্রায়। আর বসে থাকতে না পেরে চলে যাওয়ার জন্য উঠে।

নাদিমঃ আচ্ছা মামনো আজ আসি। পরে আবার আসবো।

সাদাফের মাঃ সে কিরে ডিনার করে যা। এতো রাত হলো না খেয়ে যাবি?

নাদিমঃ না গো মামনী বাসায় আব্বু একা। অসুস্থ মানুষ অনেক্ষন বাড়িতে একা রাখলে ভয় করে।

সাদাফের মাঃ হুম তাও বলেছিস। ভাইজান কে দেখি না অনেকদিন।। সে কবে দেখেছিলাম। এখন কি আগের চেয়ে সুস্থ আছে?

নাদিমঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালোই আছে আগের চেয়ে। এখন তো আগের মতো আর কাজের প্রেশার নেই। তাই মাইন্ড এখন হাল্কা। কিন্তু সারাদিন একা একাই বাসায় থাকে। ভালো লাগে না, আমিও সারাদিন অফিসে থাকি।

সাদাফের মাঃ হুমম বুঝেছি তোর জন্যেও একটা মিষ্টি বউ দেখতে হবে। তোর আর ভাইজানের সময় কাটানোর জন্য। আমি আজই তোর জন্য বউ খুজা শুরু করবো। আচ্ছা বল তোর কি কোনো পছন্দ আছে? আমরা কথা বলবো বল।

সাদাফের মায়ের কথা শেষ হতেই নাদিম কুবরার রুমের দিকে তাকায়। দেখে কুবরা পর্দার আড়ালে দাঁড়িয়ে নাদিম কে চুপি চুপি দেখছিলো দুজনের চোখাচোখি হতেই হুট করে লুকিয়ে পড়ে কুবরা।

নাদিম মুচকি হেসে মনে মনে বলে” হুম বাছা ভাঙবে তবু মচকাবে না। এমনিতো আমায় দেখার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে পড়েছো। দাড়াও আমি কি করি “।

নাদিমঃ পছন্দ আর কি। একজন তো আছেই। তবে সে নিশ্চয় ঘর মাতিয়ে রাখার মতো মিষ্টি একটা মেয়ে। যদি তোমাদের আপত্তি না থাকে তবে বিয়ে করে নিতেই পারি ( কুবরার রুমের দিকে তাকিয়ে একটু জোর গলায়)

সাদাফদের মাঃ বাহহহ ছেলে আমার দুটোই কত্তো বড় চ্যাম্পিয়ন। বড়দের কষ্ট হওয়ার আগে থেকেই সব ভালো দিক বিবেচনা করে ঠিক করে ফেলিস। তুই যাতে খুশি নিশ্চয় আমরা তা খুশি মনে মেনে নিবো।এবার আরেকটু বস শুভ্রাকে বলছি তোদের জন্য খাবার টিফিন করে দিতে। এতো রাতে আর ঝামেলা পোহাতে হবে না। একটু অপেক্ষা কর। ( নাদিমের মাথায় হাত বুলিয়ে)

নাদিমঃ ইশশ মামনী তুমি যে এত্তো ভালো না!! তাই তো তোমায় এতো ভালোবাসি। তুমি কখনো আমার মায়ের অভাব টা বুঝতেই দাও না। তাই তো ভালো না লাগলে তোমার কাছে ছুটে চলে আসি।

শুভ্রা আর তার মা মুগ্ধ নয়নে নাদিম আর সাদাফের মায়ের কথা শুনছে। তাদের দেখে কেউ বলবেই না যে নাদিম একজন বাইরের ছেলে। ঠিক যেমন সাদাফ যেমন নাদিমের ও সাথে। আজকাল তো মানুষ নিজের বাড়ির লোকের সাথেও স্বার্থপরতা করে। সেখানে নাদিমের সাথে কতো সুন্দর একটা সম্পর্ক!!

সাদাফের মাঃ দেখিস আবার বউ পেলে আমাদের ভুলে যাস না একদম। সবই তো দেখি আশেপাশে বউ পেলে ছেলেরা কিভাবে মা বাবাদের পর করে দেয়।

সাদাফঃ এই কি বললে আম্মু!!! তার মানে তুমি এটা আমাকে ইন্ডিকেট করে বললে!! বিয়ে তো আমিও করেছি আমি কি পর করে দিয়েছি তোমাদের??

সাদাফের মাঃ আমি কি তোর নাম বলেছি নাকি?? আর আমার শুভি মোটেও ওমন মেয়ে নয় যে মা বাবা পর করিয়ে দিবে।

সাদাফঃ ওও সব ক্রেডিট শুভির না এখন!! ( কোমরে দুই হাত দিয়ে) এই যা সর তো সবসময় আম্মুর আদর খেয়ে খেয়ে আমার বদনাম করাবি ( নাদিম কে সাদাফের মায়ের কাছ থেকে সরিয়ে দিয়ে)

নাদিমঃ তুই সর তোকে তো মামনি রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছিল। তো মামনি পালছে যে ( ভাব নিয়ে)

সাদাফঃ তোকে তো আমি……৷ ( এই বলে সাদাফ নাদিমের পিঠে আলতো হাতে ঠাস ঠুস দুটো দেয়। )

ড্রইংরুম থেকে এতো হাসি উল্লাসের আওয়াজ শুনে নিজের রুমে আর বদ্ধ হয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে না কুবরার। ওদের সাথেও শামিল হতে কতো জোরপ্রানে মন চাইছে। তবু নিজের জিদ কে জিতিয়ে যাওয়ার জন্য গুম মেরে বসে রইছে আর নাদিমের বলা ওই পছন্দের মেয়ের কথা মনে পড়ছে।

[ উফফ এই পচা বাদাম আমার জীবন টাকে ত্যানা ত্যানা করে ছাড়লো। বিয়ে করার খুব শখ না আমি দেখাবো বিয়ে কি করে , করে। আমাকে ছাড়া যদি অন্য কোনো মেয়েকে বিয়ে করতে যায় না সোজা বিষ দিয়ে মেরে ফেলবো। এই আমি বলে দিলাম। ] {নিযে নিজে আওড়াতে থাকে কুবরা }

নাদিম আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে করতে শুভ্রা খাবার টিফিন বক্স করে নিয়ে আসে। তারপর সবাইকে হাসিমুখে বিদায় জানিয়ে চলে আসে। কিন্তু বাহির থেকে হাসি মুখে হলেও অন্তরে যে জ্বালা মেটাতে গিয়েছিল তাই ই তো মেটানো হয় না। দুঃখভরাক্রান্ত মন নিয়ে চলে আসে নিজ বাড়ি।

বাড়ি ফিরে কলিং বেল দিচ্ছে ৫ মিনিট হলো। কিন্তু ভেতর থেকে কোনো সাড়া নেই। আরো কিছুক্ষণ কলিং বেল চাপতেই আছে কিন্তু তবুও দরজা খুলছে। টেনশনে এবার নাদিমের ঘাম ছুটতে শুরু করে। বাবা টা বাসায় একাই ছিলো। এতোক্ষন হলো দরজা খুলছে না কেন? এবার তো রীতিমতো তার ভয় হচ্ছে। আরও কয়েকবার বেল দেওয়ার পর আচমকাই দরজার হুকের আওয়াজ শুনতে পায় নাদিম।

ভয়ার্ত চোখে দরজার ওপারে মানুষটাকে জলজ্যান্ত দেখে মনে যেন এক সাগর পানি ফিরে পেল নাদিম। অশ্রুভরা চোখে আনমনেই কেদে দিয়ে জড়িয়ে ধরে তার একমাত্র বাবাকে।

নাদিমঃ এতোক্ষন লাগে আব্বু ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম তো।

নাদিমের বাবাঃ ভয় নেই রে এতো তাড়াতাড়ি কি আর মরবো রে? আগে তো আমার তোর বউ নাতি নাতনির মুখ দেখতে হবে না কি! ও ওষুধ খেয়েছিলাম তো ঘুম পেয়ে গিয়েছিলো একটু ( নাদিম কে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে)।

নাদিমের বাবার বয়স মুটামুটি পঞ্চাশোর্ধ হবে। তার মা ও তো সে যখন খুব ছোট ছিলো তখন এক্সিডেন্ট করে পরপারে চলে যান। সেই থেকে তার একমাত্র সম্বল তার এই বাবা। তার বাবা মায়ের বিয়ের বহু বছর পর ই সে জন্ম নিয়েছিলো। নাদিমের বাবার তাকে নিয়ে খুব স্বপ্ন। নিজের সমস্ত শ্রম দিয়ে ছেলেকে কোনো কষ্ট না দিয়ে তীলে তীলে সবকিছু করেছেন এতোদিন৷ কিন্তু এবার যেন সত্যিই সব কিছু অবশ হয়ে আসছে তার। না পেরে এবার বাধ্য হোন তিনি সকল দায়িত্বের ভার ছেলের উপর চাপিয়ে দিতে।

নাদিমঃ খাও নি নিশ্চয়! এই দেখো মামনী তোমার জন্য খাবার পাঠিয়েছে। এসো আমি রেডি করছি।

নাদিমের বাবাঃ হুম এটাই আমার এখন শেষ ভরসা। আমি মরেও গেলেও তোকে নিশ্চিত তারা আগলে রাখবে।( নাদিমের মাথায় হাত বুলিয়ে)

নাদিমঃ একদম এসব উলটা পালটা কথা বলবে না আব্বু। সবসময় এইসব কথা ছাড়া আর কি কিছুই ভালো কথা বলতে পারো না? চলো আসো তো।

এর পর বাপ ছেলে বসে মিলে একসাথে রাতের খাবার খেয়ে নেয়। খাওয়া শেষে বাবাকে ওষুধ খাইয়ে দিয়ে নিজেও এসে বিষন্ন মনে শুয়ে পড়ে।

দিনকাল এবার সত্যিই পানসে হয়ে উঠছে তার। আজকাল ব্যস্ততা আর কাজের জন্য প্রিয় মানুষগুলোকে ঠিক মতো সময় ও দিতে পারছে না সে৷ যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব এর একটা সমাধান বের করতে হবে। ভাবতে ভাবতে ক্লান্ত মন আর শরীর দুটোই এলিয়ে পড়ে ঘুমেত অতল গভীর রাজ্যে।

খাওয়াদাওয়া শেষে সকলে নিজ নিজ রুমে চলে আসে। আজ সন্ধ্যা থেকেই তলপেটের নিচের দিকটায় কেমন ব্যাথা ব্যথা অনুভব হচ্ছিলো শুভ্রার। নাদিম আসায় তবু যথাসম্ভব চেষ্টা করে রান্নাবান্না করে কোনো রকম কাজ সারে সে। কিন্ত এখন যেন আর পারা যাচ্ছে না।

নিজ রুমে এসে বাথরুমে ফ্রেশ হতে গিয়ে দেখে নারী জাতির সেই একমাত্র ব্যাথাময় মাসিক সমস্যা। যদিও প্রত্যেক মাসে এমন হয় না তবে এই মাসে তার খুব ব্যাথা হচ্ছে। যেন হাটার ই কোনো উপক্রম নেই। কোনো রকম দেওয়াল ধরে ধরে বিছানার দিকে এগিয়ে যেতে চাচ্ছে সে ।

সাদাফ পানির বোতল নিয় রুমে ঢুকতে ঢুকতে দেখে শুভ্রা পেটে হাত দিয়ে চোখমুখ খিচে কোনো রকম দেওয়াল ধরে বিছানার দিকে এগিয়ে আসছে।

সাদাফ আগে পানির বোতল রেখে শুভ্রাকে ধরে ধরে বিছানায় বসায়।

সাদাফঃ একি শুভি কি হয়েছে তোমার। শরীর খারাপ লাগছে খুব??

শুভ্রাঃ না না তেমন কিছু না আসলে পেট ব্যথা করছে আহহহহহ( বসা মাত্রই)

সাদাফঃক.. কি হলো হটাৎ করে শুভি? বদহজম হয়েছে? কিন্তু তুমি তো ঠিক মতো সবই খাও।

শুভ্রাঃ না না আসলে সেরকম না… মানে মানে হচ্ছে..

শুভ্রা কথা বলতে গেলে বার বার অস্বস্তিবোধ করছে। বিয়ের পর এইবারই প্রথম তার। কিন্তু সাদাফ কে এখন বলতে গেলেও লজ্জা লাগছে তার।

শুভ্রাকে এদিক ওদিক তাকিয়ে থাকতে দেখে তার চোখেমুখে অস্বস্তি স্পষ্ট ভেসে উঠেছে। কিছু একটা বলতে গিয়েও বলতে পারছে না। ভ্রু কুচকে কিছুক্ষণ শুভ্রার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে থাকার পরেও দেখছে শুভ্রা মাথা নিচু করে পেট চেপে বসে আছে।

সাদাফঃ দেখি উঠো, বিছনা ঠিক করে দিই ওষুধ খেয়ে শুয়ে পড়ো। ঠিক হয়ে যাবে।

এবার শুভ্রা পড়ে গেলো মহা জ্বালায়। বসা থেকে উঠলেই তো সাদাফ এখন বিছানায় দাগ দেখতে পাবে। লজ্জায় তখন আর মুখ দেখানোরই অবস্থা থাকবে না।

শুভ্রাঃ বলছি যে আপনি একটু বাইরে যান আমি ততোক্ষণে বিছানা ঝেড়ে ঠিক করে নিচ্ছি।

সাদাফ কিছু না বলেই মুচকি হেসে শুভ্রাকে কোলে তোলে নেয়।

শুভ্রাঃ এই এই এই কি করছেন কি!! ( শুভ্রাকে কোলে তোলা মাত্রই বিছানায় লাল রক্তিম দাগ স্পষ্ট ভেসে উঠেছে। লজ্জায় কুকড়ে মুখ ঢেকে ফেলে সে)

সাদাফ শুভ্রার কানে কানে এসে বলে” সামান্য এই বিষয়ে এতো লজ্জা পাওয়ার কি আছে শুভি। আমি তো তোমারই একমাত্র বর। তোমায় আমি বুঝবো না তো আর কে বুঝবে? এটা তো সকল মেয়েদেরই কমন বিষয়। এভাবে লজ্জা পেলে হয় কি করে? বসো আমি বিছানা গুছিয়ে দিচ্ছি। ”

এরপর সাদাফ শুভ্রাকে আলতভাবে নামিয়ে দেয়। তারপর ড্রয়ার থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।

সাদাফ ততোক্ষনে নতুন চাদর বিছিয়ে বিছানা গুছিয়ে রেডি হয়ে নেয়। তারপর শুভ্রা আসলে সাদাফ পানির বোতল ধরিয়ে দিয়ে একটা প্যারাসিটামল দেয়।

সাদাফঃ এই নাও এটা খেয়ে নাও সকাল হতে হতে দেখবা একটু ব্যাটার লাগবে।

শুভ্রা লক্ষি মেয়ের মতো চুপচাপ ওষুধ টা খেয়ে শুয়ে পড়ে সাদাফের সাথে আর কোনো কথাই বলে না। সাদাফ ও মুচকি মুচকি হেসে তাকে টেনে বুকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।

🌄🌄🌄🌄

সকালবেলা প্যাটের ব্যথা একটু কমলেও পুরোপুরি কমে নি। ব্যাথা এখনো আছে একটু একটু। আর প্যারাসিটামল খাওয়ায় ঘুমটাও খানিক বেশি লেগে এসেছিলো। উঠে ঘড়ির পানে তাকিয়ে দেখে ৯ টা বেজে গিয়েছে অলরেডি। পাশে ফিরে দেখে সাদাফ ও নেই। এতোক্ষনে মনে হয় অসিফে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে নিচ্ছে। কিঞ্চিৎ ভেবেচিন্তে ফ্রেশ হতে চলে যায় শুভ্রা। বসে উঠা মাত্রই ব্যাথা যেন আবারো নাড়া দিয়ে উঠে। কোনো রকম ওয়াশ রুমে চলে যায় ফ্রেশ হতে।

শুভ্রা ফ্রেশ হয়ে এসে ওয়াশরুমের দরজা বন্ধ করতে করতেই সাদাফ হাতে ট্রে নে রুমে ঢুকে।

সাদাফঃ একি তুমি উঠে গিয়েছো শুভি। ব্যাথা কমেছে?

শুভ্রা শুধু না বোধক মাথা নাড়ায়।

সাদাফঃ দাড়াও আমি হেল্প করছি আসো। ( বলে সাদাফ শুভ্রাকে ধরে ধরে বিছানায় বসায়)

তারপর একটা গরম পানির ব্যাগ শুভ্রার পেটের উপর রাখতে রাখতে বলে ” প্রত্যেক মাসে কি এমন হয় তোমার? এর আগে তো তোমাকে এমন উইক দেখি নি.।”

শুভ্রাঃ না আসলে আগে হতো কিন্তু তাও অনেক আগে। হঠাৎ করে এইবারে খুব বেশি পেইন হচ্ছে।

সাদাফঃ আচ্ছা আগে একটু কিছু খেয়ে নাও। আরেকটা ওষুধ খেয়ে নাও দুপুর হতে হতে যদি না কমে তবে ডাক্তার দেখাতে হবে।

শুভ্রাঃ এখানে নিয়ে আসার কোনো দরকার ছিলো? আমি গিয়েই তো খেতে পারতাম।

সাদাফঃ এহহ হাটার দম নেই আবার বলে গিয়েই খেতে পারতাম। চুপচাপ খাও আর ওষুধ টা খেয়ে শুয়ে পড়ো। আমি আছি আজ।

খাওয়া শেষে শুভ্রা সাদাফের কথামতো শুয়ে পড়ে। আর সাদাফ ও শুভ্রার মাথায় হাত বুলিয়ে শুভ্রার পাশে খাটে হেলান দিয়ে বসে থাকে।

➡️➡️➡️➡️➡️➡️

“{{“উফফফ এভাবে কি আর বাসায় বসে থাকা যায় নাকি আমি একা যেতে পারবো তো আমি। কলেজ কি আর এত্তো দূরে নাকি যে যেতে পারবোনা?? “‘}}} [ কুবরা]

শুভ্রার মাঃ তো একা গিয়ে কি করবি? সাদাফ তো বললোই শুভ্রা অসুস্থ। আজ না গেলেই নয়!?

কুবরাঃ আমার একা একা ভালো লাগছে না। আর আমি তো যেতে পারবো। ও বাবাই, বাবাই প্লিজ বলো না আম্মুকে ( আবদারের সুরে)

সাদাফের বাবাঃ হ্যা রে নাজু কি সমস্যা তোর। সত্যিই তো মেয়েটা তো বাসায় একা বোর হয়ে যাবে। আর কলেজ তো এখান থেকে এখানেই। আর তাছাড়াও এই বয়সে কি বাসায় গুপটি মেরে বসে থাকা যায়? কলেজে গেলে একটু ভালো লাগবে।

শুভ্রার মাঃ কিন্তু একা একা কি যেতে পারবে, নতুন শহর?

কুবরাঃ কিচ্ছু হবে না আম্মু। বাবাই পারমিশন দিয়েছে মানে যাবোই আমি। থেংকিউ বাবাই ( সাদাফের বাবাকে জড়িয়ে ধরে) আসি আম্মু, আসি বাবাই মামনি, বাইইইই।

কুবরা আর তার মাকে কিচ্ছু বলতে দেওয়ার সুযোগ না দিয়ে দৌড়ে চোখের অগোচরে হয়ে যায়।

আকাশে সূর্যমামা তীর্যক ভাবে কিরন দিচ্ছে। চারদিকে শীতের ঠান্ডাময় ঝিরিঝিরি বাতাস। গাছের অধিকাংশ পাতাই শুকিয়ে বৃষ্টির ন্যায় মাথার উপর ঝরে ঝরে পড়ছে। এমন চঞ্চলতাপূর্ণ পরিবেশেও কুবরা মুখ গুমড়া করে ক্লাসে জানালার বাইরে মুখ বেরিয়ে বাইরের পরিবেশ দেখছে। বিকেল ঘনিয়ে আসার এই ঠান্ডা বাতাসে খানিক গা কাপিয়ে ও উঠছে তার।

সাফিয়াঃ কি হলো বল তো আজকাল তোর। এরম মন মরা হয়ে কেন থাকিস বল তো?

কুবরাঃ ভাই মন মরা আবার কি হবে। এমনিই ভালো লাগছেনা। তোরা যা খেয়ে আয়। আমার খিদে নেই।

সাফিয়াঃ খিদে নেই মানে? প্রতিদিন একসাথে আড্ডা দেই, টিফিন করি আজ আবার শুভ্রা ও আসে নি আর তুই ও বলছিস যাবি না। ভাই তাহলে আমরাও খাবো না আজ। বলে দিলাম।

কুবরাঃ তুই না খুব ঘাড়ত্যাড়া বুঝলি তো। একদম সিচুয়েশন বুঝতেই চাস না। সত্যিই খিদে নেই আমার।

হীরাঃ খিদে নেই বললে কি করে হবে? এই দেখ আমরা নিয়ে এসেছি। চল আয়। যেতে যখন চাইছিস না একেবারে এখানেই নিয়ে এলাম। এই আয় আজ আমি সবার জন্য বিরিয়ানি নিয়ে এসেছি।

সাফিয়াঃ ওমাগো….. আহ আন্টির হাতের রান্না কতোদিন পর। খুব মিস করছিলাম সেদিনের বিরিয়ানিটা। তোরা তো হারামি দুই বোন কোনো দিন দাওয়াত ই দিস না।

মুক্তাঃ এহহহহ আমাদের উপর তুলে দিবি না। এতোবার ডাকি সেটা চোখে পড়ে না? নিজে তো প্রাইভেট, টিউশন, বলে সময় পাস না বলে পালিয়ে যাস।

সাফিয়াঃ রাখ আগে ওসব কথা। আগে খাবো। চামচটা দে। এই কুবরা আয় এবার একটু হলেও খেয়ে দেখ।

তারপর মুক্তা কুবরাকে জোরপূর্বক চামচ ধরিয়ে দিয়ে প্রথম চামচেই খেয়ে দেখে আসলে অনেক মজার হয়েছে।

হীরাঃ ইশশ শুভ্রাটা মিস করে গেলো। থাক তবু আরেকবার আনবো।

এভাবে আড্ডা দিতে দিতে কুবরার মন ভালো হয়ে যায়। এই কদিনে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে খারাপ সময়টাও তারা নিমেষে ভালো করে দিতে পারে। তা যেভাবেই হোক।

কলেজ ছুটি হয়ে ক্লাস থেকে বের হওয়ার সময় গেটের দিকে চোখ পড়াতে দেখে একজন সুদর্শন পুরুষ কালো শার্ট, কালো জিন্স, কালো ঘড়ি, কালো সানগ্লাস পড়ে, পেছনে বিরাট কালো মোটরসাইকেলে হেলান দিয়ে মোবাইল স্ক্রল করছে। ধবধবে ফর্সা শরীরের উপর কালো রঙের এই লুক টা যেন আরও আকর্ষণীয় করে তোলে তাকে। তবে সে আর কেউ নয় আমাদের একমাত্র নাদিমই।

দেখা মাত্রই পরিবেশটা আচমকা থেমে যায় কুবরার। দেখে যেন চোখ ফেরাতেই পারছে না। আর সেটা যদি তার অত্যান্ত কাছের মানুষ হয় তবে তো না পারার ই কথা। আজ যেন আবার নতুন করে ক্রাশ খেয়ে ফেলে কুবরা তার উপর।

কুবরাকে হঠাত দাঁড়িয়ে যেতে দেখে ডাকতে থাকে সাফিয়া। ডাকার পরেও কোনো সাড়া নেই। এক দৃষ্টে চেয়ে আছে সামনের দিকে। কুবরার নজর অনুসরন করে সাফিয়া ও গেটের দিকে তাকালে সে নিজেও একদফা ধাক্কা খায় নাদিমকে দেখে।

সাফিয়াঃ ওয়াওওওও এই দেখ দেখ একটা চকলেট বয় পুরাই হিরো রে… উফফফ আমি তো ক্রাশ খাই গেলাম। ( তালি মেরে) হ্যারে তুই ও ক্রাশ খেলি নাকি? ( কুবরাকে ধাক্কা দিয়ে)

হীরাঃ হেহ এতো লাফাচ্ছিস কি জন্য। উনাকে দেখে আমদের অনেক সিনিয়র মনে হচ্ছে নিশ্চয় কলেজের নয়। দেখ কোনো গার্লফ্রেন্ডের সাথেই মিট করতে এসেছে নাকি। ( ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)

ওদের বলা কোনো কথায়ই কুবরার মাথায় কিংবা কানে ঢুকছে না এই মূহুর্তে। সে তো নিজ মনে আপন ধ্যানে নাদিম কে দেখতে ব্যাস্ত

সাফিয়াঃ দিলি তো মেরা দিল দোখাকে। একদম বেরসিক তুই। চল তো দেরি হয়ে যাচ্ছে আমার টিউশনির। এই চল কুবরা যাওয়ার সময় সেদিক দিয়ে তোকে এগিয়ে দিয়ে আসতে পারবো। আর দেখিস না দেখেই মনে হচ্ছে বুকিং। আর ক্রাশ খাই লাভ নেউ ( কুবরাকে টেনে নিয়ে যেতে যেতে)

সাফিয়ার টেনে নিয়ে যাওয়াতে হুশ ফিতে কুবরার। তারপর সে ও এমন ভান করলো যেন সে নিজেও নাদিমকে চেনেই না।

ছুটির ঘন্টা বাজতেই নাদিম ফোনটা পকেটে ভরে নিয়ে এবার গেটের ভিতর কলেজের দিকে মন দিয়ে দেখতে শুরু করে। তারপর দেখে কিছুদূরেও কোবরা বান্ধবীদের সাথে কথা বলতে বলতে চলে আসছে। কুবরার হাসিময় এই মুখটা দেখলেই নাদিমের মন টা আপনা আপনি খুশি তে ভরে উঠে। কোনো কারণ ছাড়াই কুবরা একমাত্র নাদিমের মন ভালো করে দেওয়ার জন্য দায়ী।

গেটের দিকে এসে সাফিয়া আড়চোখে দেখে নাদিম কুবরার দিকেই একমনে দেখতে ব্যাস্ত। কিন্তু কুবরা দেখেও যেন একদম নাদিমকে দেখেনি এমন ভান করে নাদিমের পাশ কাটিয়ে চলে যায়।

নিমিষেই নাদিমের হাসি টা মুখের কোনা থেকে বিলিন হয়ে যায়।

“কুবরা!!” ( বড় করে বলে উঠে নাদিম)

কুবরা নিজের নাম শুনে আতকে উঠে হঠাত। তবুও শুনে নি মতো করে এগিয়ে যায়। আর এদিকে তো বাকি তিনজন হা হয়ে একবার পেছন ফিরে নাদিমের দিকে তাকাচ্ছে আরেকবার লুকায়িত কুবরার দিকে।

সাফিয়াঃ ভাইইই তোকে ডাকছে ওই লোকটা!! তার মানে তুই চিনিস?? ( অবাক হয়ে)

কুবরাঃ কচু ডাকছে। ভুল শুনেছিস। চল আগে একান থেকে ( আস্তে আস্তে ফিসফিসিয়ে)

সাফিয়াঃ এভাবে কেন কথা বলছিস তুই। আর আমি কি আমরা সবাই শুনেছি উনি তোর নাম ধরে ডেকেছে।

কুবরাদের কোনো সাড়া না পেয়ে নাদিম এবার নিজে কুবরার সামনে এসে দাঁড়ায়।

নাদিমঃ কুবরা আমার তোমার সাথে কিছু কথা আছে। একটু এদিকে আসো।

কুবরাঃ আমার বাড়ি যেতে হবে তাড়াতাড়ি। কোনো কথা বলতে পারবো না। ( অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে)

নাদিমঃ সে আমি মেনেজ করে নিবো। সাদাফের সাথে আমার কথা হয়েছে, আসো। ( এই বলে নাদিম কুবরার হাত ধরে বাকিদের “এক্সকিউজ মি ” বলে টেনে বাইকের সামনে এসে দাড় করায়। )

নাদিমঃ বাইকে উঠো ( নাদিম উঠার পর)

কুবরাঃ যাবো না আমি আপনার সাথে। আমি একাই যখন আসতে পেরেছি একাই যেতে পারবো।

নাদিমঃ ত্যাড়ামি কিন্তু আমিও করতে পারি কুবরা। এক্ষুনি পাবলিক প্লেসে এমন কিছু করে ফেলবো না কাল থেকে বন্ধুদের সামনে ও মুখ দেখাতে পারবে না। ( চোখ রাঙিয়ে)

নাদিমের হুমকি স্বরুপ কথা শুনে কুবিরার তো ভেতর ভেতর কাপাকাপি শুরু হয়ে যায়। কারন সে জানে নাদিম মুখ থেকে যা বের করে তা অবশ্যই করেই ছাড়ে। আর কিচ্ছু বলে চুপচাপ নাদিমের পেছনের সিটে বসে পড়ে কুবরা।

তবুও যা বসে নাদিমেত থেকে অনেক ডিসটেন্স বজায় রেখে। যেন একদম স্পর্শই হয় না এমন। নাদিম বিষয়টা টের পেয়ে গাড়ি এমন জোরে স্টার্ট দেয় যার কারনে কুবরা হুমড়ি খেয়ে নাদিমের সাথে লেপ্টে তো যায় আরো ভয়ে নাদিম কে চেপে ধরে।
নাদিম সেই এক স্টার্টএই ক নিমিষেই দ্রুত গতিতে চোখের অগোচরে হয়ে যায় ।

আর এদিকে তো সাফিয়া,মুক্তা, হীরা শুধু অবাক হয়ে তাদের যাওয়ার পানে চেয়ে থাকে। এই কয়েক মিনিটে যেন তারা ছোট খাটো একটা শর্ট ফিল্ম দেখে ফেললো বলতে গেলে। তবে নাদিমের কুবরার সাথে এমন কথা আর একসাথে চলে যাওয়ার কোনো কিছুই তাদের মাথায় ঢুকছে না।

#চলবে।

( দেরি করে দেওয়ার জন্য খুব খুব দুঃখিত আমার প্রিয় পাঠক পাঠিকা গন। তবে আপনাদের জন্য বোনাস হিসেবে আজ শুক্রবারে এই পর্ব অনেক বড় করে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কেমন লেগেছে তা কিন্তু অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন । আর আগামী পর্বে নাদিম আর কুবরাকে নিয়ে ধামাকাদার সারপ্রাইজ রয়েছে। )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here